৩০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন নয় এমন কোম্পানিতে এক বছরের মধ্যে এই পরিমাণ মূলধন সংগ্রহে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির আদেশের প্রতিক্রিয়া পুঁজিবাজরে এই ধরনের কোম্পানির শেয়ারে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। মৌলভিত্তি, আয়, লভ্যাংশের ইতিহাস বিবেচনায় নিলে এমনিতেই শেয়ার মূল্য সার্বিক বাজারের তুলনায় বেশি। এবার তা দিয়েছে আরও লাফ।
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার সবচেয়ে বেশি শেয়ারদর বেড়েছে, এমন ৪০টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টিই ছিল স্বল্প মূলধনি। এদের মধ্যে বেশিরভাগের ব্যবসার পরিধি, শেয়ার প্রতি আয়, লভ্যাংশের ইতিহাস তেমন একটা ভালো নয়। কোনো কোনো কোম্পানি ১০ বছরেও লভ্যাংশ দেয়নি।
তবে এসব কোম্পানির দর বৃদ্ধির প্রভাব সূচকে পড়ে খুবই কম। বহুজাতিক তিনটি স্বল্প মূলধনি কোম্পানি, একটি কাগজ খাতের কোম্পানি ছাড়া সূচক বৃদ্ধিতে বাকিগুলো অবদান রাখতে পারেনি বললেই চলে।
বিপরীতে বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোর সিংহভাগই শেয়ারদর হারিয়েছে। সব মিলিয়ে সূচকের পতনে প্রধান ভূমিকায় থাকা ১০টি কোম্পানির মধ্যে ৯টি এবার ভালো লভ্যাংশ ঘোষণা করেছ। চলতি অর্থবছরেও ভালো আয় করে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছিল। অন্য একটি কোম্পানি মৌলভিত্তির হলে সেটি আইনি জটিলতায় লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। তবে সম্প্রতি শেয়ারদরে উল্লম্ফন দেখা গিয়েছে।
এটা স্পষ্ট যে বিনিয়োগকারীরা হাতে থাকা বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ার কম দামে হলেও বিক্রি করে গিয়ে স্বল্প মূলধনিতে বিনিয়োগ করছেন।
এই পরিস্থিতিতে সূচকের বড় পতনের মধ্য দিয়েই শুরু হলো সপ্তাহের লেনদেন। যত শেয়ারের দর বেড়েছে, তার দ্বিগুণেরও বেশি শেয়ারের দরপতনে সূচক থেকে হারিয়ে গেছে ৬৪ পয়েন্ট।
সব মিলিয়ে বেড়েছে ৯৯টি কোম্পানির শেয়ারদর, কমেছে ২৪২ টির দর। দাম ধরে রাখতে পেরেছে ৩৫টি কোম্পানি।
তবে স্বল্প মূলধনি কোম্পানিতে ব্যাপক আগ্রহের কারণে লেনদেনে দেখা গেছে গতি।
বৃহস্পতিবার লেনদেন ছিল এক হাজার ৪৩ কোটি ৪৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। সেখান থেকে বেড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১৮৪ কোটি ২৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।
গত বৃহস্পতিবার বিএসইসি এক আদেশে স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোকে কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহের নির্দেশ দেয়। যাদের মূলধন ২০ কোটি টাকার বেশি, তাদেরকে ৬ মাস, আর যাদের মূলধন ২০ কোটি টাকার কম, তাদেরকে সময় দেয়া হয় এক বছর।
এই মূলধন সংগ্রহে বোনাস ও রাইট শেয়ার বা রিপিট আইপিও করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে।
পুঁজিবাজারে ৩০ কোটি টাকার কম মূলধনের কোম্পানি আছে মোট ৬৪টি। এর মধ্যে ২০ কোটি টাকার বেশি আর ৩০ কোটি টাকার কম, এমন কোম্পানির সংখ্যা ১৪টি।
পরিশোধিত মূলধন ১০ থেকে ২০ কোটি টাকা- এমন কোম্পানির সংখ্যা ২০টি। ৫ থেকে ১০ কোটি টাকা মূলধনের কোম্পানির সংখ্যা ১৭টি আর ৫ কোটি টাকার নিচে মূলধনের কোম্পানি ১৩টি।
এসব কোম্পানির মধ্যে বহুগুলো লোকসানি, বছরের পর বছর লভ্যাংশ দিতে পারেনি। কোনো কোনোটির উৎপাদন বন্ধ, ঋণে জর্জর। কিন্তু দাম বেড়েছে প্রায় সবগুলোর।
দিন শেষে সূচক পড়লেও শুরু হয়েছিল উত্থানের মধ্য দিয়ে। বেলা ১০টা ৫ মিনিটে আগের দিনের চেয়ে ৩৭ পয়েন্ট বেশি ছিল সূচক। কিন্তু পরের পুরোট সময় কমে কিছুটা উঠে আবার পড়ে সূচক।
সূচকের পতনে প্রধান ভূমিকায় ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। ২.২ শতাংশ দরপতনে এই একটি কোম্পানির কারণে সূচক কমেছে ৯.২২ পয়েন্ট। একই গ্রুপের বেক্সিমকো ফার্মার ২.৭২ শতাংশ দরপতনের কারণে সূচক পড়েছে ৭.৩ পয়েন্ট।
পাওয়ারগ্রিড, ওয়ান ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ডেল্টা লাইফ, আইএফআইসি ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, আইসিবি ও বিকন ফার্মার দরপতন সূচক কমায় রেখেছে প্রধান ভূমিকায়।
এই ১০টি কোম্পানির কারণেই সূচক থেকে হারিয়েছে গেছে ৪৬.০৮ পয়েন্ট।
বিপরীতে সূচকে সবচেয়ে বেশি ১৩.৮৮ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি। স্বল্প মূলধনি বহুজাতিক তিন কোম্পানি লিনডে বিডি, বার্জার পেইন্টস, ইউনিলিভার, রেটিক বেনকিনজারও ছিল এই তালিকায়।
সোনালী পেপার, ওয়ালটন ইন্ডাস্ট্রিজ, রবি, জেনেক্স ইনফোসিস ও ফরচুন সুজও বাড়িয়েছে সূচক।
এই ১০ কোম্পানি মিলিয়ে সূচক বাড়িয়েছে ৩৭.৭৪ পয়েন্ট।
সূচকের পতনের দিনে লেনদেনে শীর্ষস্থান এক দিন পরেই ফিরে পেয়েছে ব্যাংক খাত। গত বৃহস্পতিবার শীর্ষে উঠে আসা বস্ত্র খাত এদিন ছিল তৃতীয় অবস্থানে। সব মিলিয়ে তিনটি খাতে একশ কোটি টাকার বেশি, ৭০ কোটি টাকার বেশি আরও তিন খাতে, ৬০ কোটি টাকার বেশি দুটি খাতে এবং ৫০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে আরও দুটি খাতে।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রায় সবই স্বল্প মূলধনি
৬ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের আমারিম লিমিটেড দর বৃ্দ্ধির শীর্ষ অবস্থানে। বৃহস্পতিবার শেয়ারদর ছিল ৩২৪ টাকা, বাড়া সম্ভব ছিল ৩৫৩ টাকা পর্যন্ত। হয়েছেও তা। শতকরা হিসেবে বেড়েছে ৮.৭৪ শতাংশ।
কোম্পানিটির কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই, ব্যবসা বৃদ্ধির কোনো ঘোষণা নেই। তারপরেও শেয়ারদরে এই লাফ দেয়ার কারণ শেয়ার সংখ্যা বাড়ানোর আদেশ।
৬০ লাখ শেয়ার আছে কোম্পানিটির। বিএসইসির আদেশ অনুযায়ী সেটিতে তিন কোটিতে নিয়ে যেতে হবে আগামী এক বছরে।
২ কোটি ২৩ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ৬৩ হাজার ২৫৭টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
এদিন নয় শতাংশ বা দশ শতাংশ পর্যন্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার দর বাড়েনি। আট শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে চারটি কোম্পানির, যার প্রতিটির শেয়ার সংখ্যা কম।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ২ কোটি ৪০ লাখ শেয়ারের কোম্পানি অ্যামবি ফার্মার দর বেড়েছে ৮.৭৩ শতাংশ। ৩৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা লেনদেন হয়েছে কোম্পানিটিতে, হাতবদল হয়েছে মোট ৮ হাজার ২৫২টি শেয়ার।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের রহিম টেক্সটাইলের শেয়ার দর বেড়েছে ৮.৭১ শতাংশ। শেয়ার দর ২৫৮ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৮০ টাকা ৬০ পয়সা। ৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকায় হাতবদল হয়েছে ৩ হাজার ৪৭৮টি শেয়ার।
৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের মনোস্পুল পেপারের দর বেড়েছে ৮.১৫ শতাংশ। লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৬০ হাজার ১৮০ টি শেয়ার।
১০ কোটি ৯১ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের ইনফরমেশন সার্ভিস নেটওয়ার্কের দর বেড়েছে ৭.৯৬ শতাংশ। ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকায় হাতবদল হয়েছে ৫ লাখ ২ হাজার ৮৫৭টি শেয়ার।
৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের এপেক্স ফুডের দর বেড়েছে ৭.৫৪ শতাংশ। ১৪৮ টাকা ৬০ পয়সার শেয়ারদর বেড়ে হয়েছে ১৫৯ টাকা ৮০ পয়সা।
২১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের সোনালী পেপারের দর ৭.৪৯ শতাংশ দর বেড়েছে। ৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকায় হাতবদল হয়েছে ৫ লাখ ৮৪ হাজার ১৬১টি শেয়ার।
এছাড়া ২ কোটি ৭৩ লাখ পরিশোধিত মূলধনের মুন্নু অ্যাগ্রোর দর ৭.৫০ শতাংশ, ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের লিব্রা ইনফিউশনের দর ৭.৪৯ শতাংশ, ৩ কোটি ১২ লাখ টাকার ফার্মা এইডের দর ৭.৪৫ শতাংশ বেড়েছে।
স্বল্প মূলধনি ন্যাশনাল টি, আজিজ পাইপ, ইমাম বাটন, মেঘটা পেট, বিডি ল্যাপস, হাক্কানি পাল্প, এপেক্স স্পিনিং, সোনালী আঁশ, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকসের দরও বেড়েছে স্বল্প মূলধনির মুলধন বৃদ্ধির ইস্যুতে।
দর পতনের দশ কোম্পানি
এই তালিকায় শীর্ষে ছিল গত এক মাসে ব্যাংক খাতে সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ওয়ান ব্যাংক। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাবলেও শেয়ারদর কমেছে ১০ শতাংশের কাছাকাছি। আগের দিনের চেয়ে ৯.৮৩ শতাংশ দর হারিয়ে হাতবদল হয়েছে ৫ কোটি ৩০ লাখ ২৬ হাজার ১৯টি শেয়ার।
দ্বিতীয় অবস্থানে ফিনিক্স ফাইন্যান্সের শেয়ার দর কমেছে ৫.৯২ শতাংশ। ২৭ টাকা থেকে কমে হয়েছে ২৫ টাকা ৪০ পয়সা।
তৃতীয় অবস্থানে ছিল নতুন তালিকাভুক্ত সেনাকল্যাণ ইন্সুরেন্স। শেয়ার দর ৭৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৫.৯১ শতাংশ কমে হয়েছে ৭৪ টাকা ৮০ পয়সা।
আরেক নতুন তালিকাভুক্ত একমি পেস্টিসাইডসের শেয়ার দর ৫.৬৮ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর ৫.৮৮ শতাংশ, অলিম্পিক এক্সেসরিসের শেয়ার দর কমেছে ৫.৫৫ শতাংশ।
পাঁচ শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমেছে এমন আরও তিনটি কোম্পানি ছিল। এগুলো হচ্ছে এসকে ট্রিমস, তওফিকা ইন্ডাস্ট্রিস, আরামিট সিমেন্ট।
চার শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমেছে ২৩টি কোম্পানির। এছাড়া দুই শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমেছে ২৯টি কোম্পানির। এক শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমেছে ৭৬টি কোম্পানির।
লেনদেনে এগিয়ে থাকা ১০ কোম্পানি
লেনদেনে এগিয়ে থাকা ১০টি কোম্পানির মধ্যে ব্যাংক খাতেরই আছে তিনটি, যার প্রতিটির দর কমেছে।
সবচেয়ে বেশি লেনদনে হওয়া ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে দিনের সবচেয়ে বেশি। আর লেনদনে হয়েছে ৮৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকে যার ২৩ কোটি ৩১ লাখ টাকায় ১ কোটি ৭০ লাখ ৮১ হাজার ৩৯৪টি আর আইএফআইসি ব্যাংকে ২২ কোটি ৭৮ লাখ টাকায় হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ ৯৭ হাজার ৮৪৩টি শেয়ার।
সবচেয়ে বেশি লেনদেনের দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। ৫৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকায় হাতবদল হয়েছে ৩৪ লাখ ৭২ হাজার ৫১৫টি শেয়ার।
সাইফ পাওয়ারটেকে লেনদেন হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। হাতবদল হয়েছে ৫ লাখ ৮৪ হাজার ১৬১টি শেয়ার।
সোনালী পেপারে লেনদেন হয়েছে ৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৪১৬টি শেয়ার।
ফরচুন সুজে লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো বাংলাদেশ (বিএটিবিসি) শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকার।
এছাড়া ডেল্টা লাইফে ২০ কোটি ১৯ লাখ টাকা আর জিএসপি ফাইন্যান্সে লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ২০ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য