কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ইংরেজি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার খাতা যথাযথ মূল্যায়ন না করার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীর কাছে এ অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের এবং ইংরেজি বিভাগের একমাত্র স্বর্ণপদক জয়ী শিক্ষার্থী মেরিয়া নুসরাত সরকার।
বৃহস্পতিবার বিকেলে লিখিত অভিযোগ জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দপ্তর।
অভিযোগ পত্রে ওই সাবেক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘আমার পরীক্ষা যথেষ্ট ভালো হয়েছিল। তবে আমাকে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি। আপনি জেনে অবাক হবেন যে, লিখিত পরীক্ষার পর কয়েকজন প্রার্থী মাত্র দুইটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিল বলে আমাকে জানায়। অথচ তারাও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত একজন শিক্ষার্থী হিসেবে মনে করি পরীক্ষা যথেষ্ট ভালো দেয়ার পরও আমার খাতা ইচ্ছাকৃতভাবে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় নি।’
মেরিয়া নুসরাত সরকার কুবির ইংরেজি বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ইংরেজি বিভাগ থেকে প্রথম এবং একমাত্র স্বর্ণপদক পেয়েছেন। ইতোমধ্যে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় বছর ধরে তিনি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া তার একাধিক মৌলিক প্রকাশনাও রয়েছে।
এদিকে, স্বর্ণপদক জয়ী একজন শিক্ষার্থীকে লিখিত পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ দেখানোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ক্ষোভ জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক পদের এক শিক্ষক বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকেই একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ফলাফল করেছে। আমরাই তাকে শ্রেষ্ঠত্বের খেতাব দিয়েছি। আবার আমরাই তাকে লিখিত পরীক্ষায় বাতিল ঘোষণা করছি। এর মতো লজ্জাজনক কর্মকাণ্ড আর কিছু হতে পারে না।’
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সহকারী অধ্যাপক পদের আরেক শিক্ষক বলেন, ‘দীর্ঘদিন পড়াশোনার বাইরে থেকেও কোনো শিক্ষকের আত্মীয়তার সূত্রে নিয়োগ পেয়েছে এমন শিক্ষকও তো আমাদের মধ্যে রয়েছে। যে শিক্ষার্থীর কথা হচ্ছে সে তো একজন স্বর্ণপদক জয়ী শিক্ষার্থী এবং সে একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে পড়াচ্ছেও। তাহলে তাকে লিখিত থেকে বাদ দেয়ার বিষয়টি চক্রান্ত ছাড়া আর কিছু দেখছি না। এরকম চলতে থাকলে শিক্ষার্থীরা আর পড়ালেখার দিকে আগ্রহী হবে না।’
এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. বনানী বিশ্বাস বলেন, ‘লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত ছিলাম না। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। আর এগুলো গোপনীয় বিষয় তাই আমি কিছু বলতে পারছি না।’
অভিযোগের বিষয়ে কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শরীফুল করীম বলেন, ‘রিটেন যে পরীক্ষা হয়েছে ওইটার খাতা তো কোডিং করে হয়েছে। কারও নাম, রোল নম্বর দিয়ে হয়নি। তাই বিষয়টা অন্যভাবে চিন্তা করা সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না।’
এ বিষয়ে কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি লিখিত পরীক্ষার স্বচ্ছতার কথা ব্যাখ্যা করে পরীক্ষার বাছাই পদ্ধতি নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠতে পারে না বলে দাবি করেন।
আরও পড়ুন:মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় পাচ্ছে মেহেরপুর জেলা। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এ লক্ষ্যে একটি বিল পাস হয়েছে।
অধিবেশনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ‘মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মেহেরপুর বিল-২০২৩’ উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের আগে জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধী দলীয় সদস্যরা। তাদের প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এরপর বিলের ওপর আনীত সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন স্পিকার।
১০ জানুয়ারি সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আদেশ-১৯৭৩ এর বিধানাবঈ পরিপালন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য।
আচার্য নির্ধারিত শর্তে স্বনামধন্য একজন শিক্ষাবিদকে চার বছরের জন্য উপাচার্য পদে নিয়োগ দেবেন। কোনো ব্যক্তি একাদিক্রমে বা অন্য কোনোভাবে উপাচার্য হিসেবে দুই মেয়াদের বেশি নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না। আচার্য যেকোনো সময় উপাচার্যের নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
বিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কর্মচারীদের চাকরির শর্তাবলী নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বেতনভোগী শিক্ষক ও কর্মচারী, সংসদ সদস্য বা স্থানীয় সরকারের কোনো পদে নির্বাচিত হতে প্রার্থী হতে চাইলে ওই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে ইস্তফা দেবেন।
বিলে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনে আচার্যের অনুমোদন নিয়ে ‘বিজনেস ইনকিউবেটর’ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। বিজনেস ইনকিউবেটর হলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক স্থাপিত বা পরিচালিত কোনো বিজনেস ইনকিউবেটর, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে সব সহযোগিতা দেয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা শিক্ষার্থী কর্তৃক কোনো উদ্ভাবন, মেধাস্বত্ব, আবিষ্কার বা প্রক্রিয়া, বাজারজাত এবং বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য সহযোগিতা প্রদান।
আরও পড়ুন:শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই সংস্কারের কাজের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার রাত ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ও ছাত্রা বাস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিন দুপুর ৩টায় জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয় সর্বোচ্চনীতি নির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, 'সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একমাস বন্ধ থাকবে ইনস্টিটিউট। এ সময় অনলাইনে ক্লাস নেবেন শিক্ষকরা। পাশাপাশি আজ রাত ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের চারুকলা ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশনাও দিয়েছে সিন্ডিকেট।'
এর আগে গত বছরের ২ নভেম্বর থেকে ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাসবর্জন শুরু করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন দাবি মানতে ইতিবাচক সাড়া দিলেও পরে ২২ দফা দাবি হঠাৎই মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দাবিতে রূপ নেয়। শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, মূল ক্যাম্পাস ছাড়া তাদের এই ২২ দফা দাবির সবগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়। আন্দোলন নিয়ে গত ২১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। পরদিন অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামী এর সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে আলোচনার পর আন্দোলন স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। তবে শর্তপূরণ না হওয়ায় গত মঙ্গলবার থেকে ফের আন্দোলনে নামেন তারা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মূল ক্যাম্পাস শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারীতে অবস্থিত। ২০১০ সালে চবি চারুকলা বিভাগ এবং চট্টগ্রাম সরকারি চারুকলা কলেজকে একীভূত করার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নগরীর বাদশাহ মিয়া চৌধুরী সড়কে বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের (সিইউবি) প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গলবার। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এবং শিশু অধিকার কর্মী কৈলাস সত্যার্থী।
রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে বলেন, ‘এটিই হয়তো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে আমার শেষ উপস্থিতি। দেশজ নাম ও ব্র্যান্ডকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে এবং গর্বের সঙ্গে নিজেদের পণ্যকে ধারণ করতে হবে।’
আবদুল হামিদ বলেন, ‘কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বহু বছর সাফল্যের সঙ্গে কানাডায় নিজের ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। এখন তিনি দেশে ফিরে বিভিন্ন খাতে বিপুল বিনিয়োগ করছেন। আমি প্রবাসী সব ব্যবসায়ীকে আহবান জানাই দেশে বিনিয়োগ করার জন্য।’
সমাবর্তন বক্তা নোবেল বিজয়ী কৈলাস সত্যার্থী শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করে বলেন, ‘আপনাদের স্বপ্ন দেখতে হবে, নিজেকে আবিষ্কার করতে হবে। যে কোনো ভালো কাজের উদ্যোগ নিয়ে তা বাস্তবায়িত করতে হবে। হয়তো কোনো একদিন এই কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশেরই এক ছাত্র নোবেল বিজয়ী হবে। আমি সেদিন নিজে আসব বিজয় উৎসবে অংশ নিতে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সরকার প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট-২০১০, জাতীয় শিক্ষা নীতি-২০১০, উচ্চ শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশনসহ নানা শিক্ষাবান্ধব উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশে শিক্ষার হার প্রশংসনীয়ভাবে বেড়েছে। আমরা এখন দক্ষ জনবল সরবরাহ করি। যারা এখন সারাবিশ্বেই তাদের কর্মদক্ষতার পরিচয় দিয়ে বিশ্বের বুকে স্থান করে নিচ্ছে।’
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ‘গেস্ট অফ অনার’ হিসেবে যোগদান করেন। তিনি কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত তার বক্তব্যে বলেন, ‘কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশে রয়েছে আধুনিক সময়োপযোগী বিভিন্ন বিভাগ। শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে রয়েছে বৃত্তির সুযোগ। ইনফরমেশন সিস্টেমস অডিট অ্যান্ড কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। এছাড়া কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।’
মালয়েশিয়ার বিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য যোসেফ আদাইকালাম, অ্যারো বিজনেস এবং জিই গ্যাস পাওয়ারের সিইও দিপেশ নন্দ বিশেষ বক্তা হিসেবে যোগ দেন সমাবর্তনে।
সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ৪৩০ জন গ্রাজুয়েট রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ডিগ্রি গ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে চারজন- সামিয়া বিনতে নাঈম, সুমাইয়া সুলতানা, ফারজানা বিন্ত মোহাম্মদ ও মো. সাখাওয়াত হোসেন স্বর্ণপদক পান।
আরও পড়ুন:শিক্ষা নিয়ে ব্যবসার মানসিকতা পরিহার করতে এই খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত না করে জ্ঞান বিতরণ ও একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী গ্রাজুয়েট তৈরির প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ (সিইউবি)-এর প্রথম সমাবর্তনে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য আবদুল হামিদ বলেন, ‘শিক্ষাকে নিয়ে ব্যবসা করার মন-মানসিকতা পরিহার করা সবার জন্যই মঙ্গল।’
উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আইন ও বিধি-বিধান মেনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবেন। নিজেদের ইচ্ছে আর সুবিধামতো বিশ্ববিদ্যালয় চালানো যাবে না।
‘প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হোক সেটা চাই না। আবার এটাও চাই না যে শিক্ষাকে পণ্য বিবেচনা করে শিক্ষার নামে বিশ্ববিদ্যালয়কে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হোক।’
দেশে বর্তমানে দেড় শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘পত্রপত্রিকা খুললেই দেখা যায় কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রির নামে সার্টিফিকেট বিতরণ করে চলেছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট তৈরির কারখানা খুলে বসেছে।
‘একবিংশ শতাব্দীতে বৈশ্বিক অগ্রযাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে, জাতির উন্নয়ন, উন্নত সমাজ গঠন এবং বিশ্বমানের গ্রাজুয়েট তৈরির লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুণগত মান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
‘গুণগত মান ছাড়া উচ্চশিক্ষা মূল্যহীন। তাই, উচ্চ শিক্ষা যাতে কোনোভাবেই সার্টিফিকেট-সর্বস্ব না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।’
গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দেশে উচ্চ শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শিক্ষার সঙ্গে কর্মের সংযোগ ঘটাতে না পারলে ভবিষ্যতে হয়তোবা শিক্ষার্থীর অভাবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে হবে।
রাষ্ট্রপ্রধান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিজস্ব ক্যাম্পাস ও অবকাঠামো নির্মাণে পদক্ষেপ নেয়ারও তাগিদ দেন।
স্নাতক ডিগ্রিধারীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ভবিষ্যতে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিতকরণে তোমাদেরকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। তোমাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।
‘প্রত্যাশা করি, দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে লালন করে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় সমৃদ্ধ হয়ে তোমরা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বলেন, ‘শিক্ষার্থীদেরকে শুধু পাঠ্যপুস্তক অধ্যয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেই চলবে না, পাঠ্য বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গে বহির্জগতের জ্ঞান ভাণ্ডার থেকে জ্ঞান আহরণ করতে হবে।
‘নিজেকে কর্মবীর ও জ্ঞানী করে তোলাই হবে শিক্ষার মূল লক্ষ্য। উচ্চ চিন্তা ও সহজ জীবনাচরণ তোমাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। সদাচরণ আর সদালাপ হচ্ছে শিক্ষা জীবনের ভূষণ।’
শিক্ষকদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আপনারা উন্নত জাতি তৈরির মহান কারিগর। আপনাদের হতে হবে নৈতিকভাবে বলিষ্ঠ চরিত্রের অধিকারী, নিরপেক্ষ, অকুতোভয় এবং সত্যবাদী।’
দেশের তরুণ প্রজন্মকে যুগোপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অনুরোধ জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আমাদের গর্বের বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা বিস্তারের কোনো বিকল্প নেই।’
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ন্যানো টেকনোলজি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর মতো বিষয়গুলোকে মাথায় রেখে যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম প্রণয়নেরও নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপতি।
সমাবর্তনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী ও অধিকার কর্মী কৈলাস সত্যার্থী।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ-এর চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিস সরাফাত, সিইউবি উপাচার্য প্রফেসর ড. এইচএম জহিরুল হক, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শেখ মামুন খালেদ, উপদেষ্টা প্রফেসর ড. রিদওয়ানুল হক এবং মার্শাল (প্রফেসর সৈয়দ আখতার হোসেন) প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:প্রথম শ্রেণিতে ৪১ সহোদর ও জমজকে ভর্তি নিতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
শিক্ষার্থীদের পক্ষে তাদের অভিভাবকের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের এবং বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন ও আইনজীবী শফিকুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন জানান, বেসরকারি স্কুল, স্কুল অ্যান্ড কলেজ (মাধ্যমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও সংযুক্ত প্রাথমিক স্তর) শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা-২০২২ অনুসারে কোনো প্রতিষ্ঠানে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সহোদর/সহোদরা বা জমজ ভাই/বোন যদি আগে থেকে অধ্যয়নরত থাকে, সেসব সহোদর বা জমজকে সংশ্লিষ্ট ভর্তি কমিটি আবেদন যাচাই-বাছাই করে ভর্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এই বিধান অনুযায়ী, ৪১ জন সহোদর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করে, কিন্তু ১৬ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র দেয়। যেখানে বলা হয়, শুধুমাত্র ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি শ্রেণিসহ অন্য শ্রেণিতে মোট আসনের অতিরিক্ত ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী সহোদর ও জমজ ভর্তির জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে ভর্তি করাতে পারবে। এ বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। কারণ তারা যখন আবেদন করে, তখন ৫ শতাংশের বিধান ছিল না। এ কারণে আদালত এই ৪১ জনের ক্ষেত্রে ওই বিধান স্থগিত করে রুল জারি করেছেন। পাশাপাশি তাদের ভর্তি করাতে নির্দেশ দিয়েছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষে তিন ইউনিটে ১৫৪টি আসন ফাঁকা রয়েছে। নবম মেধা তালিকা থেকে ভর্তির পরও আসন ফাঁকা থাকায় এসব আসন পূরণে তাৎক্ষণিক সাক্ষাৎকারে ভর্তি বা স্পট অ্যাডমিশন নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার দিনব্যাপী এ তাৎক্ষণিক সাক্ষাৎকারে ভর্তি কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান ও একাধিক অনুষদের ডিন।
রেজিস্ট্রার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষে এ, বি ও সি ইউনিটে নবম মেধাতালিকা থেকে ভর্তির পর বিভিন্ন ইনস্টিটিউট ও বিভাগে বিদ্যমান শূন্য আসনে মেধাক্রমের ভিত্তিতে তাৎক্ষনিক ভর্তি বা স্পট অ্যাডমিশন নেয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা আসছে এবং তাদের ভর্তি নেয়া হচ্ছে। পরে আমরা বিষয়সহ মেধাতালিকা প্রকাশ করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি জানায়, ‘এ’ ইউনিটের শিক্ষার্থীদের মেধাক্রম ৫৪৬৬ থেকে ১০০০০ পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে সাক্ষাৎকার ও ভর্তি চলবে। একই সময়ে ‘বি’ ইউনিটের মেধাক্রম ২০৪৪ থেকে ৩০০০ পর্যন্ত ভর্তি চলবে কলা অনুষদ অফিসে। আর ‘সি’ ইউনিটের ৯০৩ থেকে ১১০০ পর্যন্ত ভর্তি চলবে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ অফিসে। আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে বিষয় বরাদ্দ দেয়া হবে।
কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি আরও জানায়, মঙ্গলবার দুপুর ২টায় বিষয় বরাদ্দ তালিকা প্রকাশ করা হবে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনলাইনে মোট ভর্তি ফি জমা দিয়ে সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ডিন অফিসে সনদপত্রাদি জমা দিয়ে এবং যারা ইতোমধ্যে জিএসটি গুচ্ছের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আছে, তারা অনলাইনে অবশিষ্ট ভর্তি ফি জমা দিয়ে পূর্বে জমাকৃত ভর্তি ফিসের স্লিপ সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং ডিন অফিসে জমা দিয়ে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।
‘এ’ ইউনিটের বাংলা, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ইসলামিক স্টাডিজ, দর্শন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, সমাজবিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ, মনোবিজ্ঞান, এডুকেশন (আইইআর) ও ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ (আইএমএল) বিভাগের আসন ফাঁকা রয়েছে।
এ ছাড়া ‘বি’ ইউনিটে ইসলামিক স্টাডিজ ও ‘সি’ ইউনিটে ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ (আইএমএল) বিষয়ে ভর্তি নেয়া হবে। ভর্তির জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীকে নগদ, বিকাশ, রকেট বা শিওর ক্যাশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভর্তি ফি জমা দিতে হবে।
শুধুমাত্র নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য মনোনয়নপ্রাপ্ত বিভাগে সনদপত্র ও কাগজপত্রাদি জমা দিতে হবে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শক কর্তৃক স্বাক্ষরিত এডমিট কার্ড, অনলাইন হতে প্রিন্টকৃত ভর্তি ফরম ও ৪ কপি সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার মূল সনদপত্র ও নম্বরপত্র এবং প্রতিটির একটি করে সত্যায়িত ফটোকপি, এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার মূল নম্বরপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড এবং প্রতিটির একটি করে সত্যায়িত ফটোকপি।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি বিভাগীয় শিক্ষকদের সহযোগিতায় যাচাই-বাছাই পূর্বক ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সব অনুষদ, ইনস্টিটিউট ও বিভাগীয় দপ্তরে শেয়ারকৃত অনলাইন প্যানেলে ভর্তিকৃত বা বাতিলকৃত শিক্ষার্থীদের তথ্যাদি যথাসময়ে ও সতর্কতার সঙ্গে ইনপুট দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হলো।
আরও পড়ুন:প্রতিষ্ঠার মাত্র ৭ বছরেই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে দেশের স্বনামধন্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ (সিইউবি)। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার এই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে থাকবেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ও ভারতের শিশু অধিকারকর্মী কৈলাস সত্যার্থী।
সমাবর্তন কেন্দ্র করে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসটি সাজানো হয়েছে নয়নাভিরাম সাজে। আর রাজধানীর পূর্বাচলে নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হবে সমাবর্তন-পরবর্তী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
প্রথমবারের মতো এই সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন প্রায় পাঁচশ’ গ্র্যাজুয়েট। প্রথম সমাবর্তন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাই উদ্বেলিত। রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ডিগ্রি নেয়ার অপেক্ষায় আছেন গ্র্যাজুয়েটরা।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এ বিষয়ে বলেন, ‘সমাবর্তনের দিনটি আমাদের জন্য এক বিশেষ মাইলফলক। কারণ এই অল্প সময়ের মধ্যে আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে সমাবর্তনের মাধ্যমে সার্টিফিকেট তুলে দিতে পারছি। এর জন্য আমি আমাদের ফ্যাকাল্টি, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী, অ্যালামনাইসহ সিইউবি-সংশ্লিষ্ট সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’
তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসটি হবে পরিবেশবান্ধব। এখানে আধুনিক ভবন, দৃষ্টিনন্দন লেক ও বিশাল খেলার মাঠ থাকবে। সর্বাধুনিক ল্যাব, স্টুডিও, লাইব্রেরি, থিয়েটার, স্টাডি জোনের সঙ্গে থাকছে শিক্ষার্থী লাউঞ্জ, অবসর কাটানোর জায়গা, জিম, ফুড লাউঞ্জসহ বিভিন্ন সুবিধা। বিশ্বমানের স্থাপত্য নকশায় গড়ে তোলা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টির নান্দনিক স্থায়ী ক্যাম্পাস।
সিইউবিতে রয়েছে আধুনিক সময়ের উপযোগী বিভিন্ন বিভাগ যেমন- শিপিং ও মেরিটাইম সায়েন্স, বিবিএ, এমবিএ ও ইএমবিএ, সিএসই, ইইই, এলএলবি, ইংলিশ, মিডিয়া কমিউনিকেশন ও জার্নালিজম, মাস্টার্স ইন মেরিটাইম ট্রান্সপোর্টেশন ও লজিস্টিকস। শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে রয়েছে বৃত্তির সুযোগ।
বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। এ ছাড়া কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ আছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংগতি রেখে সাজানো হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের পাঠক্রম।
মন্তব্য