সমুদ্রপথে ট্রানজিট সুবিধা সৃষ্টির মাধ্যমে বন্দরকেন্দ্রিক বড় অঙ্কের আয়ের সুযোগ থেকে এখনও বেশ দূরে বাংলাদেশ। কারণ বিশ্বের বড় বড় জাহাজ (মাদার ভেসেল) সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারে না। ফলে এসব জাহাজের পণ্য বন্দরের জেটিতে আনতে দরকার পড়ে একাধিক মাঝারি (সিস্টার ভেসেল) কিংবা ছোট (লাইটার) জাহাজের। এতে পণ্য খালাসে ঝুঁকি ও জটিলতার পাশাপাশি বাড়ে ব্যয়ও।
একই কারণে বন্দরকেন্দ্রিক অন্যান্য বাণিজ্যে (যেমন: বড় বড় জাহাজ রিফুয়েলিং) পিছিয়ে বাংলাদেশ, তবে আশা জাগাচ্ছে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প। এটি বাস্তবায়ন হলে সমুদ্র অর্থনীতিতে নতুন যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ।
এই সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ পাবে ভারত, নেপাল, ভুটানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলো। এতে ট্রানজিট মাশুল থেকে বিপুল রাজস্ব আয়ের দ্বার উন্মোচন হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি জাপানি কোম্পানি গভীর সমুদ্রবন্দরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছে। এতে সময় লাগবে বছরখানেক।
২০২২ সালের শেষের দিকে মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ গুছিয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পুরোদমে শুরু হবে গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ। কাজ শেষ হবে ২০২৬ সালের মধ্যে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গভীর সমুদ্রবন্দর হলে ভবিষ্যতে মাতারবাড়ী হবে বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড।
গভীর সমুদ্রবন্দরের আলোচনা যখন শুরু
চট্টগ্রাম বন্দরের সূচনা ১৮৮৭ সালে। এ বন্দরের জোয়ারের সময় সর্বোচ্চ গভীরতা হয় সাড়ে ৯ মিটারের মতো। ফলে সেখানে বড় জাহাজ ভিড়তে পারে না। এ অবস্থায় দেশে যে বাড়তি গভীরতার বন্দর দরকার, তা প্রথম উপলব্ধিতে আসে ১৯৭৮ সালে।
চট্টগ্রাম বন্দরের পুরোনো এক প্রকাশনায় দেখা যায়, ওই বছর নেদারল্যান্ডস ইকোনমিক ইনস্টিটিউট নামের একটি সংস্থা ১১টি স্থান পরিদর্শন করে কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে গভীর পানির টার্মিনাল নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার সুপারিশ করে। যদিও সেই উদ্যোগ আর বাস্তবায়ন হয়নি।
এরপর ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো দেশে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। তখন এটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপে। পরে আলোচনায় আসে পটুয়াখালীর পায়রা। সবশেষে সিদ্ধান্ত হয় কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মাতারবাড়ীতেই হবে গভীর সমুদ্রবন্দর। অবশেষে গত বছরের মার্চে প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। আগামী বছরের জুলাইয়ে শুরু হবে টার্মিনাল নির্মাণের কাজ।
যে প্রক্রিয়ায় কাজ এগোচ্ছে
মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ দুই ধাপে বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রথম ধাপের কাজ শুরু হয়েছে। এ ধাপে সম্পন্ন হবে নকশা প্রণয়ন ও দরপত্রের প্রক্রিয়া। আর দ্বিতীয় ধাপে নির্মাণ হবে একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল ও একটি কনটেইনার টার্মিনাল। একই সময়ে চলবে চ্যানেল তৈরির কাজও।
পুরো প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। শুরুতে ‘মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে কাজ শুরু হলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি হবে গভীর সমুদ্রবন্দর। কেননা কোনো বন্দরে ১৪ মিটার গভীরতার জাহাজ ভেড়ার সক্ষমতা থাকলেই সেটিকে গভীর সমুদ্রবন্দর হিসেবে ধরা হয়। মাতারবাড়ীতে ১৮ মিটার গভীরতার জাহাজও ভিড়তে পারবে।
যেসব কারণে গভীর সমুদ্রবন্দর
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বেড়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষে বাড়তি চাপ সামলানো কঠিন হচ্ছে। বন্দরটির অবকাঠামোগত সক্ষমতা তেমন একটা বাড়ানোরও সুযোগ নেই। তাই একটি গভীর সমুদ্রবন্দর এখন সময়ের দাবি।
দেশের নতুন ইকোনমিক জোনগুলো পুরোদমে চালু হলে শিল্পপণ্য আমদানি-রপ্তানি ব্যাপক হারে বাড়বে। এমন বাস্তবতায় গভীর সমুদ্রবন্দর অনেকটা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরে দুই থেকে আড়াই হাজার কনটেইনারবাহী জাহাজ ভিড়তে পারে। আর গভীর সমুদ্রবন্দরে সহজেই ভিড়তে পারবে ৮ থেকে ১০ হাজার কনটেইনারবাহী জাহাজ।
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে বর্তমানে নদীপথে যুক্ত। পরে সড়ক ও রেলপথও যুক্ত হবে।
মাতারবাড়ী নিয়ে জাপানভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকার সমীক্ষায় বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে মাতারবাড়ী টার্মিনালে সমুদ্রপথে প্রতি ২০ ফুট কনটেইনারে খরচ কমবে ১৩১ ডলার। আর ৪০ ফুট কনটেইনারে কমবে প্রায় ২০০ ডলার।
জাপানের বিগ-বি মাতারবাড়ীতে
এর আগে অনেক দেশ বাংলাদেশে গভীর সমুদ্রবন্দর বানানোর আগ্রহ দেখালেও সবশেষ জাপান হাজির হয় ‘বিগ বি’ ধারণা নিয়ে, যা ‘দ্য বে অফ বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট’ হিসেবে পরিচিত। এ কৌশলগত পরিকল্পনায় ওই এলাকায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি, বন্দর, যোগাযোগ, শিল্পাঞ্চলসহ সমন্বিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা বলা হয়। এর বাস্তব রূপ দিতে ২০১৬ সালে জাইকা একটি জরিপ চালায়, যাতে মাতারবাড়ীতে বন্দর নির্মাণের পরামর্শ দেয়া হয়। এরপর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ‘মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প’ নেয়, যা যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
যদিও চট্টগ্রাম বন্দরের আওতাধীন হওয়ায় নথিপত্রে এটিকে মাতারবাড়ী টার্মিনাল বলা হচ্ছে। কার্যত এটিই হবে বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর।
প্রকল্পে ব্যয় কত
গভীর সমুদ্রবন্দরের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সড়ক নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৮ হাজার ৮২১ কোটি টাকা। আর ৮ হাজার ৮২০ কোটি টাকা ব্যয় হবে বন্দর নির্মাণে। প্রকল্প ব্যয়ের ১২ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা স্বল্প সুদে ঋণ দিচ্ছে জাপান।
গভীর সমুদ্রবন্দর এলাকার চিত্র
কর্ণফুলী নদী থেকে সাগরপথে মাতারবাড়ীর দূরত্ব প্রায় ৮০ কিলোমিটার। সেখানে গিয়ে দেখা মেলে ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নৌপথের। সাগর থেকে উপকূল পর্যন্ত পাথর দিয়ে তৈরি বাঁধ থাকায় নৌপথে তেমন ঢেউ নেই। এতে জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো-নামানোয় পাওয়া যাবে বাড়তি সুবিধা।
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর এলাকায় পানি পুরো নীল। দেশের আর কোনো বন্দরে এমন নীল পানি নেই। নীল পানি থাকা মানে নৌপথের বড় অংশে পলি জমার আশঙ্কা কম।
এই নৌপথে ঢোকার ডান পাশে যেখানে বন্দর নির্মাণ হবে, সেখানে এখনও স্থাপনা নেই। কিছুদূর পরপর চোখে পড়ল লাল কাপড় টাঙানো ছোট্ট খুঁটি। আছে ছোট একটি টাওয়ার। নৌপথের এই পাশে একটি ৩০০ মিটার এবং আরেকটি ৪৬০ মিটার জেটি নির্মাণ হবে। এই দুটি জেটি নিয়েই হচ্ছে প্রথম টার্মিনাল।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সময়মতো টার্মিনালের কাজ শেষ হলেও পণ্য পরিবহনের পুরোপুরি সুফল পেতে অপেক্ষা করতে হবে এক থেকে দেড় বছর। কারণ টার্মিনাল থেকে সড়কপথে পণ্য আনা-নেয়ার জন্য প্রায় ২৮ কিলোমিটার সড়ক প্রস্তুত হবে বন্দরের প্রথম জেটি নির্মাণের দেড় বছর পর। বর্তমানে সড়কের নকশা প্রণয়ন ও জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জাপানি কোম্পানি বন্দরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর প্রতিবেদন দিলে আগামী বছরের শেষের দিকে কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। আশা করি এরপর চার বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হবে। আর এটি হলে বড় বড় জাহাজ একেবারে বন্দরের টার্নিমালে ভিড়তে পারবে। এতে পণ্য ওঠানো-নামানোর খরচ কমে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ভোক্তারাও লাভবান হবেন।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা উন্নত দেশের যে স্বপ্ন দেখছি, তার ভিত্তি তৈরি করবে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর। এটি ব্যবহার করে শুধু আমরাই না, পাশের বেশ কয়েকটি দেশও উপকৃত হবে।
‘গভীর সমুদ্রবন্দরে যেহেতু বড় বড় জাহাজ ঢুকতে পারবে, সেহেতু আমাদের দেশেই বড় বড় জাহাজের মালিক গড়ে উঠবে। বড় বড় জাহাজের ব্যবসা গড়ে উঠবে। শুধু তা-ই নয়, এসব জাহাজ তৈরির কারখানাও গড়ে উঠবে। সব মিলিয়েই এই মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর আমাদের অর্থনীতির পথনকশা বদলে দেবে।’
একই এলাকায় চলমান কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন গভীর সমুদ্রবন্দরের বিষয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায় গভীর সমুদ্রবন্দরের বেশিরভাগ কাজ হয়েই আছে। পরে আর কিছু কাজ করলেই এটি শতভাগ গভীর সমুদ্রবন্দরে রূপান্তর হবে।’
তিনি জানান, ২৫০ মিটার প্রশস্ত বন্দরের চ্যানেলটি আরও ১০০ মিটার বাড়ানোর কাজ চলছে। বর্তমানে যে প্রশস্ততা রয়েছে, সেখানে প্যানাম্যাক্স ভেসেল ঢুকতে পারে। এরই মধ্যে ৩৭টি বড় মাদার ভেসেল এখানে পণ্য খালাস করেছে।
আরও পড়ুন:ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শুরু হয়েছে পতন দিয়ে।
লেনদেনের শুরুর ঘণ্টাতেই পয়েন্ট কমে তিনটি সূচকের।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সোমবার লেনদেন শুরুর পর থেকেই সূচক কমতে থাকে।
প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৬ পয়েন্ট। আর বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএসই-৩০ কমেছে ২ পয়েন্ট।
পতনের ধারা অব্যাহত ছিল শরিয়াহভিত্তিক শেয়ারের সূচকে। ডিএসইএসের সূচক কমে দশমিক ১৩ পয়েন্ট।
শুরুর ঘণ্টায় বাজারে লেনদেন হয় প্রায় ৮০ কোটি টাকার। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে দাম কমে ১৫৪টি এবং বাড়ে ১২২টি শেয়ারের। দাম অপরিবর্তিত ছিল ৮০টি শেয়ারের।
দামের দিক থেকে ভালো অবস্থানে ছিল অটোমোবাইল, পেপার মিলস, ফেব্রিকস ও প্রকৌশল কোম্পানির শেয়ারের দাম। দিনের শুরুতে শীর্ষ ২০ ব্যাংক খাতের শেয়ারের সংখ্যা তিনটি।
এদিকে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজার সূচক হারিয়েছে ৩৮ পয়েন্ট। দুই দিনের পতনে বর্তমানে প্রধান সূচক কমে নেমেছে ৫ হাজার ১৫৫ পয়েন্টে।
পতনের ধারা অব্যাহত আছে চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় নিম্নমুখী ছিল প্রধান সূচক।
এ পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতেই দাম কমেছে ৪১টি এবং বেড়েছে ২৭টি কোম্পানির শেয়ারের। প্রথম ঘণ্টায় লেনদেন হয়েছে ৪৭ কোটি টাকার শেয়ার ও বন্ডের।
আরও পড়ুন:বাংলা ট্র্যাক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ‘আমি প্রবাসী’, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এ চুক্তির মাধ্যমে ‘গার্ডিয়ান প্রবাসী প্রহরী’ নামে একটি বিশেষ বিমা সেবা চালু করেছে, যা বিশেষভাবে প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের পরিবারকে সুরক্ষা দেবে।
আমি প্রবাসীর পক্ষে বাংলা ট্র্যাক গ্রুপের গ্রুপ হেড অফ ইনোভেশন এম তানভীর সিদ্দিকি ও গার্ডিয়ান লাইফের সিইও শেখ রকিবুল করিম, এফসিএ সম্প্রতি চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
বিশেষ এ বিমা সেবাটি প্রবাসীদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সুবিধা দেবে। এসবের মধ্যে রয়েছে বিদেশে হাসপাতাল সেবার খরচ, মৃত্যুজনিত কভারেজ, স্থায়ী বা আংশিক অক্ষমতার কভারেজ, বিনা মূল্যে টেলিমেডিসিন সেবা, ইনকাম লসের কভারেজ, মৃতদেহ দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা ও দাফন সেবা।
এসব সুবিধা প্রবাসী বাংলাদেশিদের আর্থিক সুরক্ষা এবং মানসিক শান্তি নিশ্চিত করে তাদের সার্বিক ভালো থাকা নিশ্চিত করবে।
এ বিষয়ে বাংলা ট্র্যাক গ্রুপের গ্রুপ হেড অফ ইনোভেশন এম তানভীর সিদ্দিকি বলেন, ‘চুক্তিটি আমাদের প্রবাসীদের ক্ষমতায়নের প্রতি প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা এমন একটি সল্যুশন আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে সহায়তা করবে, যাতে তারা নির্বিঘ্নে কাজ করে তাদের উপার্জনে মনোনিবেশ করতে পারেন।’
গার্ডিয়ান লাইফের সিইও শেখ রকিবুল করিম বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সবসময় বিমাকে সহজলভ্য ও অর্থবহ করে তোলা। এ চুক্তির মাধ্যমে আমরা প্রবাসীদের চাহিদা পূরণে কাজ করব যাতে তারা পৃথিবীর যেখানেই থাকুক না কেন, সুরক্ষিত অনুভব করতে পারেন।’
অনুষ্ঠানটিতে আরও উপস্থিত ছিলেন আমি প্রবাসীর পক্ষে মো. সাজেদুল হক (চিফ টেকনোলজি অফিসার), আহসানুল হক (হেড অফ বিজনেস অপারেশনস), সিয়াম আহম্মদ (অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট) এবং মো. সাইফ-উল-আলম (কমিউনিকেশন লিড)।
গার্ডিয়ান লাইফের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আবদুল হালিম (এসভিপি এবং হেড অফ মাইক্রো ইন্স্যুরেন্স), মো. জালাল উদ্দিন (ম্যানেজার, মাইক্রো ইন্স্যুরেন্স ডিপার্টমেন্ট), নওশীন নাহার হক (এভিপি, মাইক্রো ইন্স্যুরেন্স ডিপার্টমেন্ট) এবং শারমিন আক্তার শাওন (বিজনেস রিলেশনশিপ ম্যানেজার, মাইক্রো ইন্স্যুরেন্স ডিপার্টমেন্ট)।
আরও পড়ুন:আরআর ইম্পেরিয়াল ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেডের ন্যাশনাল পার্টনার সম্মেলন-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজধানীর শাহবাগের শহীদ আবু সাঈদ আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে গত ৯ জানুয়ারি এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ম্যানেজিং ডিরেক্টর এম. হারেস আহমেদ এবং ডিরেক্টর ও সিইও মাহবুব হোসেন মিরদাহর উপস্থিতিতে ২৫৫ জন আঞ্চলিক বিজয়ী এবং ১৬ জন জাতীয় বিজয়ীকে তাদের অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য সম্মানিত করা হয়।
আরআর ইম্পেরিয়ালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এম. হারেস আহমেদ তার বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানটির পণ্য তালিকা সম্প্রসারণের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন।
আরআর ইম্পেরিয়ালের ডিরেক্টর ও সিইও মাহবুব হোসেন মিরদাহ প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাদের সহযোগিতার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আরআর ইম্পেরিয়ালের ডিরেক্টর এ.এন.এম. মনজুর মুর্শেদ উপস্থিত হতে পারেননি অনুষ্ঠানে। তিনি প্রেরণাদায়ক ভিডিও বার্তা শেয়ার করেন, যেখানে তিনি বৈদ্যুতিক খাতের অগ্রগতির জন্য সহযোগিতা, নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আহমেদ আশফাকুর রহমান ও এ.এম. আহসানুল বারীও অনুষ্ঠানটিতে অংশ নেন।
আরআর ইম্পেরিয়াল ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড আরআর ক্যাবল এবং আরআর শ্রমিক ব্র্যান্ডের অধীনে বৈদ্যুতিক তার, অন্যান্য ক্যাবল ও এনামেল পণ্য তৈরি করে।
রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থের ৮০ শতাংশ ফেরত আনা হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বাকি অর্থ আদায়ে মামলা চলছে। মামলায় জিতে বাকি অর্থও ফেরানো সম্ভব।
রাজধানীর একটি হোটেল শনিবার ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা হওয়ায় দেশ থেকে টাকা পাচার বন্ধ হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও রেমিট্যান্স প্রবাহ স্মরণকালের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের একটি প্রতিষ্ঠানই ২০ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করেছে। সেসব অর্থ উদ্ধারে কাজ চলছে। বিদেশিরাও সহযোগিতা করছেন।
গভর্নর বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন তথা এফবিআইসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। বিদেশি আইনজীবীও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
রেমিট্যান্স প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আনতে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ায় বছরে সরকারের ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। গত ৫ মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩০০ কোটি ডলার। রপ্তানি বেড়েছে ২৫০ কোটি ডলার।
তিনি বলেন, প্রশিক্ষিত কর্মী বিদেশে পাঠাতে পারলে রেমিট্যান্স বছরে ৬০০ কোটি ডলারে উন্নীত করা সম্ভব হবে।
সৌদি আরবকে টপকে রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষে উঠে এসেছে দুবাই।
একে আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে গভর্নর জানান, সৌদি আরব থেকে অর্থ প্রথমে দুবাইয়ে আসছে। সেখান থেকে বাংলাদেশে আসছে। দুবাইয়ের কিছু প্রতিষ্ঠান এই সুযোগে মুদ্রা বিনিময় হার ম্যানুপুলেট (হস্তক্ষেপ) করার চেষ্টা করছে।
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ২ হাজার ৪৯০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। এ ছাড়া বিপিএম-৬ গণনার মান অনুযায়ী রিজার্ভ এখন দুই হাজার কোটি ডলার হয়েছে।
গত ৮ জানুয়ারি বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬৫৭ কোটি ডলার। আর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ১৬৭ কোটি ডলার।
এ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, ‘চার মাস চলার মতো রিজার্ভ আছে। তাই ভয়ের কিছু নেই।’
আরও পড়ুন:নতুন বছরে প্রথম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে পদ্মা ব্যাংক পিএলসির, যা ব্যাংকটির ১২১তম সভা।
ব্যাংকের হেড অফিসে গত ৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় সভাটি।
মো. শওকত আলী খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পদ্মা ব্যাংকের পর্ষদ সভায় অন্য পরিচালকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মজিবর রহমান, অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেন, তামিম মারজান হুদা, শাহনুল হাসান খান, ডা. ফারহানা মোনেম, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান, ব্যারিস্টার-এট-ল’ এবং এইচএম আরিফুল ইসলাম এফসিএ।
সভা পরিচালনা করেন পদ্মা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মো. তালহা (চলতি দায়িত্বে)।
বাংলাদেশে গ্লোবাল ব্র্যান্ড কেএফসির একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি ট্রান্সকম ফুডস লিমিটেড ২০০৬ সাল থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
কেএফসি দেশে প্রথমবারের মতো গ্রাহকদের জন্য নিয়ে এলো দুর্দান্ত স্বাদে ভরপুর আমেরিকান ফ্লেভারে তৈরি হট ন্যাশভিল যিঙ্গার।
বার্গারটি সুস্বাদু টক-ঝাল স্বাদের সংমিশ্রণে তৈরি, যা বিখ্যাত আমেরিকান শহর ন্যাশভিলের অনন্য স্বাদের অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।
মজাদার এই ন্যাশভিল যিঙ্গারে রয়েছে নরম তুলতুলে ৪.৫'' ক্যারামেলাইজড বান, ফ্রেশ পেঁয়াজ, লেটুস, টমেটো, ক্যাপসিকাম ও ঝাঁঝালো হ্যালাপেনো, চিজ ও ক্রিস্পিচিকেনফিলে। এর প্রতিটি বাইটে রয়েছে ঝাঁলও মচমচে স্বাদের দারুণ কম্বিনেশন।
ভোক্তারা দেশের যেকোনো স্থান থেকে আইটেমটি টেস্ট করতে পারেবন। কারণ প্রতিটি কেএফসি আউটলেটে ন্যাশভিল যিঙ্গার পাওয়া যাচ্ছে।
এ ছাড়াও কাস্টমাররা তাদের পছন্দ ও সুবিধা অনুযায়ী ডাইন-ইন, টেকঅ্যাওয়ে, অনলাইন অর্ডার, কল ফর ডেলিভারি এবং কেএফসি অ্যাপেও অর্ডার করতে পারবেন।
অনলাইন অর্ডার করতে ভিজিট করুন www.kfcbd.com/menu/hot-nashville-zinger ওয়েবসাইটে।
আরও পড়ুন:বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাত।
সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকালে এ সাক্ষাৎ হয়।
ওই সময় বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য দুই বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলারে উন্নীত করার বিষয়ে আগ্রহের কথা জানান তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী।
সাক্ষাৎকালে তারা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের আকার বৃদ্ধি, বাংলাদেশে তুরস্কের বিনিয়োগ সম্ভাবনা, হালাল ফুড সনদ প্রাপ্তি ও ইকোনমিক কমিশন গঠন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, তুরস্ক বাংলাদেশের জন্য ভাতৃপ্রতিম দেশ। বিভিন্ন খাতে দীর্ঘদিনের সহযোগিতার ইতিহাস রয়েছে বাংলাদেশ ও তুরস্কের। এর মধ্যে ব্যবসা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি অন্তর্ভুক্ত।
তিনি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণকে উৎসাহিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তুরস্ককে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ হালাল রপ্তানিকারক দেশ উল্লেখ করে বাংলাদেশের হালাল খাবারের বাজার সম্প্রসারণে তুরস্কের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হালাল সনদ প্রাপ্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে তুরস্কের হালাল অ্যাক্রিডিটেশন অথরিটি ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের মধ্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হালাল সনদ প্রাপ্তি সহজ করবে। হালাল খাবার রপ্তানি দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে চমৎকার বিনিয়োগ পরিবেশ রয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ এখন অনেক সহজ করা হয়েছে। বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধাও দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ শিল্প, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, সেবা, নির্মাণশিল্প এবং তৈরি পোশাক খাতে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
ওই সময় তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে তুরস্কের বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাত বলেন, বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে দুই বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ তুরস্ক থেকে আমদানির চেয়ে রপ্তানি বেশি করে। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে।
তিনি জানান, বর্তমানে তুরস্কের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য মূলত টেক্সটাইল খাতকেন্দ্রিক। তুরস্ক বাংলাদেশে টেক্সটাইল খাতের বিভিন্ন যন্ত্র ও কেমিক্যাল রপ্তানি করে। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক তৈরি পোশাক আমদানি করে। তুরস্ক কেবল টেক্সটাইল খাতে সীমাবদ্ধ না থেকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বহুমুখীকরণ করতে চায়।
তিনি বাংলাদেশে রিনিউবল এনার্জি, গাড়ি নিমাণ শিল্প, ফার্মাসিটিক্যালস, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাত, লজিসটিক্স ও নির্মাণ শিল্প খাতে তুরস্কের বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী মুস্তাফা তাজকু এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব ) মো. আবদুর রহিম খান।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য