রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর একাধিক মামলার আসামি হওয়া ও কাউন্সিলরদের অনাস্থার মুখে এ সিদ্ধান্ত এসেছে।
বৃহস্পতিবার জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
কাটাখালীর পৌর মেয়র আব্বাস আলী সম্প্রতি একটি আলোচনায় নিজ এলাকায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের বিরোধিতা করে কথা বলেন। সে আলোচনার অডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
গত ৩ নভেম্বর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। ২২ নভেম্বর প্রথমে তাকে পৌর আওয়ামী লীগ এবং ২৬ নভেম্বর তাকে জেলা আওয়ামী লীগের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। আব্বাসের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানান পৌর কাউন্সিলররা। সে জন্য তারা জেলা প্রশাসককে চিঠিও দেন।
মূলত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। সে উদ্দেশ্যে তিনি বেশ কিছুদিন ঢাকায় হোটেলে অবস্থান করছিলেন। এরই এক পর্যায়ে ১ ডিসেম্বর সকালে আব্বাস আলীকে কাকরাইলের রাজমনি ঈশা খাঁ হোটেল থেকে র্যাব আটক করে। সে সময় তার পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আব্বাস আলী ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ডটি তার বলে স্বীকার করেছেন।
সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘আব্বাস আলী, পিতা-মৃত আশরাফ আলী, সাং-কাটাখালী (বাখরাবাজ), থানা-কাটাখালী, রাজশাহী বর্তমানে রাজশাহী জেলাধীন কাটাখালী পৌরসভার মেয়র। বায়োলিয়া মডেল থানায় আপনার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ২১(২)/ ২৫(১) (ক)/২৮(২)/৩১(২) ধারায় মামলা (মামলা নং-৬২) হয়েছে। মামলায় আপনি একমাত্র আসামি।
‘বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে আপনার বিতর্কিত অডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় বায়োলিয়া মডেল থানার মামলায় আপনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তার জবাব পাওয়া যায়নি।
‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে কটুক্তি ও অশালীন বক্তব্য, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে কাটাখালী পৌরসভার মেয়রের পদ থেকে আপনাকে অপসারণের জন্য পৌরসভার ১২ জন কাউন্সিলর আপনার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন।
‘স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন-২০০৯ এর ৩১(১) ধারা অনুযায়ী, যেক্ষেত্রে কোন পৌরসভার মেয়র অথবা কোন কাউন্সিলরের অপসারণের কার্যক্রম আরম্ভ করা হয়েছে অথবা তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে গ্রহন হয়েছে, সেক্ষেত্রে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় মেয়র অথবা কাউন্সিলরের ক্ষমতা প্রয়োগ পৌরসভার স্বার্থের পরিপন্থী অথবা প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন না হলে, সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমে মেয়র অথবা কাউন্সিলরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে পারবে।’
প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, ‘যেহেতু, আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে বায়োলিয়া মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর ২১(২)/ ২৫(১) (ক)/২৮(২)/৩১(২) ধারায় মামলা হয়েছে এবং তিনি গ্রেপ্তার হওয়ায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত। এ অবস্থায় পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পৌরসভার সেবা গ্রহণকারী সাধারণ নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যা পৌরসভার স্বার্থের পরিপন্থী ও প্রশাসনিক দৃষ্টিকোন থেকে সমীচীন নয় বলে প্রতীয়মান। বিধায় পৌর মেয়রের পদ থেকে সাময়িকভাবে তাকে বরখাস্ত করা যুক্তিযুক্ত।
‘সেহেতু, মো. আব্বাস আলীকে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩১ উপ-ধারা (১) প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নির্দেশক্রমে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।’
আরও পড়ুন:গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় বৈদ্যুতিক মোটর চালু করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক স্কুলশিক্ষক ও তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের সেলদিয়া গ্রামে শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে বলে জানায় কাপাসিয়া থানা পুলিশ।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন কাপাসিয়ার কির্তুনীয়া ইছব আলী ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া (৫৫)। তাকে বাঁচাতে গিয়ে স্ত্রী ফেরদৌসি আক্তারেরও (৪০) মৃত্যু হয়।
স্বজনদের বরাতে পুলিশ জানায়, গতকাল বিকেলে শহীদুল্লাহ বাড়ির পাশে ছোট একটি পুকুর থেকে মাছ ধরতে পানি সেচের জন্য বৈদ্যুতিক মোটর স্থাপন করেন। মোটরটি চালু করতে গিয়ে শহীদুল্লাহ প্রথমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাকে বাঁচাতে গিয়ে পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা স্ত্রী ফেরদৌসি এগিয়ে গেলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত হন। পরে গুরুতর অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তারা মিয়া নামে অপর একজন প্রতিবেশী আহত হন।
শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া স্থানীয় কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। তিনি তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
কাপাসিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হালিম বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রীর লাশ থানায় নিয়ে এসেছেন স্বজনরা। স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন নরসিংহপুর এলাকার একটি বাসায় শুক্রবার রাতে রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নারী ও শিশুসহ ১১ জন দগ্ধ হয়েছে।
দগ্ধদের রাত পৌনে একটার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসার জন্য আনা হয়। তাদের মধ্যে ৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। বাকি দুজনকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।
দগ্ধদের মধ্যে চার বছর বয়সী মমিনের দেহের ২০ শতাংশ, ৯ বছরের মাহাদীর ১০ শতাংশ, ১৫ বছরের শামীমের ১৪ শতাংশ, চার বছরের সোয়াইদের ২৭ শতাংশ, তিন মাস বয়সী সুমাইয়ার ৯ শতাংশ, ৫০ বছরের সূর্য বানুর ৭ শতাংশ, ৩২ বছরের শিউলি আক্তারের ৯৫ শতাংশ, ৩৫ বছরের মোছাম্মৎ শারমিনের ৪২ শতাংশ, ৩৮ বছরের মোহাম্মদ সোহেল রানার ১০ শতাংশ, ৩২ বছরের মোহাম্মদ সুমন মিয়ার ৯৯ শতাংশ এবং ৭০ বছর বয়সী জহুরা বেগমের দেহের পাঁচ শতাংশ পুড়ে যায়।
দগ্ধদের বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা আবু ইসহাক জানান, আশুলিয়ার নরসিংহপুরের গোমাইল এলাকার একটি বাসার দ্বিতীয় তলায় শবে বরাত উপলক্ষে পিঠা তৈরির সময় হঠাৎ বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। এতে একই পরিবারের নারী ও শিশুসহ ১১ জন দগ্ধ হয়। সেখান থেকে তাদের প্রথমে সাভারের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে এলে তাদের ভর্তি রাখা হয়।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান জানান, আশুলিয়া থেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ১১ জনের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুজনকে অবজারভেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনের শ্বাসনালি দগ্ধ হয়েছে।
দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর পর টেকনাফের নাফ নদীতে জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি মিলেছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচার বন্ধের কারণ দেখিয়ে ২০১৮ সালে নাফ নদীতে স্থানীয় জেলেদের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। তখন থেকে প্রান্তিক জেলেরা আর্থিক সংকটের মুখে পড়েন।
এত বছর ধরে অনেক দেন-দরবারেও জেলেরা আর নামতে পারেননি নাফ নদীতে। বৃহস্পতিবার কক্সবাজার জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, ‘সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমানার অভ্যন্তরে নাফ নদীতে শাহপরীর দ্বীপ হতে টেকনাফ জেটিঘাট পর্যন্ত মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা।
‘জেলেরা মাছ ধরতে যাওয়ার সময় বিজিবির পাঁচটি নির্ধারিত পোস্টে টোকেন বা পরিচয়পত্র দেখাবেন এবং মাছ ধরা শেষে ফেরত আসার পর বিজিবির পোস্টে তল্লাশি করার ব্যাপারে বিজিবি সদস্যকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। কোনো জেলে চেক পোস্টে না জানিয়ে মাছ ধরতে পারবেন না। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করা যাবে না।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘মৎস্য অধিদপ্তরের হালনাগাদকৃত নিবন্ধিত জেলেদের তালিকা বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে প্রদান করা হবে, যাতে কোনোক্রমেই নিবন্ধিত জেলে ব্যতীত কেউ নাফ নদীতে মাছ ধরতে না পারে।
‘এই অনুমোদন সম্পূর্ণ সাময়িক। আগামী তিন মাস পর সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ অনুমতি নবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, জেলেদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
টেকনাফ মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আমান উল্লাহ বলেন, ‘নাফ নদীতে মাছ ধরার জন্য প্রাথমিকভাবে অনুমতি মিলেছে। এতে জেলেরা খুশি।
‘রাতে মাছ ধরার অনুমতি না পেলে জেলেদের পোষাবে না। কারণ রাতে বেশি মাছ পাওয়া যায়।’
আরও পড়ুন:হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে দুই সন্তানকে বিষ পান করিয়ে হত্যার পর বাবা একই উপায়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
চুনারুঘাটের আতিকপুর গ্রামে শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
ওই তিনজন হলেন চুনারুঘাট উপজেলার আতিকপুর গ্রামের আবদুর রউফ (৩২) এবং তার দুই সন্তান আয়েশা আক্তার (৩) ও খাদিজা আক্তার (৫)।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, আবদুর রউফ বিদেশে যাওয়ার জন্য স্থানীয় এক দালালের কাছে টাকা দিলেও বিষয়টি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। এ নিয়ে সম্প্রতি তার স্ত্রী হাফসার সঙ্গে ঝগড়া হয়। এর জেরে দুই দিন আগে হাফসা দুই শিশু সন্তানকে রেখে এক বছরের অপর শিশুকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান।
পুলিশ আরও জানায়, পারিবারিক বিষয় নিয়ে ক্ষোভ ও অভিমানে আবদুর রউফ শুক্রবার ভোররাতে প্রথমে তার দুই সন্তানকে বিষ পান করিয়ে নিজে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি টের পেয়ে পরিবারের লোকজন তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রথমে দুই সন্তান ও পরে আবদুর রউফকে মৃত বলে জানান।
খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নূর আলম জানান, পারিবারিক কলহের জেরে আবদুর রউফ সন্তানদের বিষ পান করানোর পর নিজেও বিষ পানে আত্মহত্যা করেন।
আরও পড়ুন:ভোলার তজুমদ্দিনে স্থানীয়দের সংঘবদ্ধ পিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন।
সোনাপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভূঁইয়া বাড়িতে বৃহস্পতিবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
পিটুনিতে প্রাণ হারানো দুজন হলেন তজুমদ্দিনের বালিয়াকান্দি গ্রামের মো. নয়ন (৩০) ও বোরহানউদ্দিন উপজেলার খাসমহল এলাকার আমির হোসেন (২৮)। তারা নিয়মিত গরু চুরি করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ প্রতিবেদন লেখার সময় পিটুনিতে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয়দের ভাষ্য, ভূঁইয়া বাড়িতে একদল ব্যক্তির গরু চুরি করতে ঢোকেন। বিষয়টি টের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা চিৎকার করলে গ্রামবাসী জড়ো হয়ে চোরদের ধাওয়া করেন। এর একপর্যায়ে জনতার হাতে দুই যুবক ধরা পড়ে, যাদের সংঘবদ্ধভাবে পেটানো হয়।
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন দুজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ভোরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গণপিটুনির শিকার দুই যুবককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।’
ওসি জানান, ময়নাতদন্তের জন্য দুজনের মরদেহ ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ছিল চ্যালেঞ্জিং পেশা বেছে নেওয়ার। সে ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। এক দশকের বেশি সময় ধরে ট্রেনচালক হিসেবে কাজ করছেন ফরিদা আক্তার।
লালমনিরহাট রেল বিভাগে একমাত্র নারী ট্রেনচালক (এলএম) ফরিদা। নানা প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালনে অনড় ৪ সন্তানের এ জননী।
মাত্র ১০ মাসের সন্তানকে বাড়িতে রেখে নিয়মিত ট্রেন চালাচ্ছেন ফরিদা। তার এ সাহসিকতা ও আত্মবিশ্বাসে মুগ্ধ রেল বিভাগ।
স্বামী টুটুল ও চার সন্তান নিয়ে লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনের সরকারি কোয়ার্টারে বসবাস করেন ফরিদা আক্তার। তার বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। টুটুল লালমনিরহাটে বেসরকারি চাকরি করেন।
ফরিদা আক্তার বলেন, ‘কাজটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে আমি বেছে নিয়েছি। ছোট থেকে ইচ্ছা ছিল চ্যালেঞ্জিং পেশায় যাব। ২০১৪ সালে ট্রেনচালক হিসেবে রেল বিভাগে যুক্ত হই।’
তিনি বলেন, ‘পরিবার যদি সাপোর্ট না করে, তাহলে আপনি এ পেশায় আসতে পারবেন না। পাশাপাশি একজন পুরুষ ট্রেনচালকেরও সাপোর্ট প্রয়োজন আছে।
‘একজন নারী ট্রেনচালক হিসেবে সমাজে কে কী বলল, সেটা নিয়ে আমি ভাবি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। সবচেয়ে ছোট ১০ মাসের মেয়েকে রেখে আমি ট্রেন চালাতে আসি। কাজে বের হলেও তারা কোনোদিন বিরক্ত হয় না।’
লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেন ফরিদা আক্তার। চার সন্তানের মা হয়েও তিনি বেছে নেন ট্রেন চালানোর মতো চ্যালেঞ্জিং পেশা।
শুরুর দিকে একটু ভয় পেলেও এখন ট্রেনের স্টেশন থেকে স্টেশনে ছুটে চলার কাজটিকে ভালোবেসে ফেলেছেন ফরিদা। ২০১৪ সালে চাকরিতে যোগ দিয়ে ১০ বছরের বেশি সময় অতিক্রম করে ফেলেছেন এ নারী।
নারী হওয়ায় দায়িত্ব পালনে তাকে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, কিন্তু সেসব নিয়ে কখনও দমে যাননি ফরিদা।
তিনি জানান, ট্রেনের যান্ত্রিক ত্রুটি হলে নিজেই তা সমাধানের চেষ্টা করেন।
লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় লোকো ইনচার্জ কাজী সুমন বলেন, ‘নারীরা এখন আর ঘরের মধ্যে বন্দি নেই। তারা অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
‘নারী চালকদের কাজে কোনো গাফিলতি নেই। ফরিদার মতো নারীরা দেখিয়ে দিচ্ছেন, কোনো পেশাই নারীদের জন্য অসম্ভব নয়।’
আরও পড়ুন:মেহেরপুরে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা এবং পরিবেশ দূষণের ঘটনায় ভ্রাম্যমান আদালত চারটি ইটভাটাকে সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা করেছে।
ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের শুকুরকান্দি গ্রামে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত চারটি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানটি পরিচালনা করেন গাংনী উপজেলা (ভূমি) সহকারী কমিশনার ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাদ্দাম হোসেন ।
অভিযানে দেখা যায়, ভাটাগুলোতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছিল না এবং জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছিল। এর ফলে পরিবেশের ওপর গুরুতর প্রভাব পড়ছিল।
ইটভাটাগুলোর মধ্যে থ্রি স্টারকে ১ লাখ টাকা, জনতা ব্রিকসকে ১ লাখ, রুপসা ব্রিকসকে ১ লাখ এবং সমতা ব্রিকসকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সহযোগিতায় ইটভাটাগুলোর চুলা পানি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাঁচা ইটগুলো পানি দিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হয়।
ভ্রাম্যমান আদালত জানিয়েছে, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য