বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসিকে নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সংক্রান্ত এক্সপোজার লিমিট গণনা পদ্ধতি নিয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসার পর সূচকের পর দিনই ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই পক্ষকে নিয়ে বসবেন- এমন একটি খবর প্রকাশ হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হওয়ার পর বেড়েছে বেশিরভাগ শেয়ারের দর।
আগের দিন ৯৬ পয়েন্ট পতনের স্মৃতি নিয়ে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার সকালে লেনদেন শুরুই হয় সূচক বেড়ে। আধা ঘণ্টার মধ্যে সূচক বেড়ে যায় ৭৪ পয়েন্ট। কিন্তু পরে সেখান থেকে কিছুটা কমে ৩২ পয়েন্ট যোগ করে শেষ হয় লেনদেন।
দিন শেষে সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৮৪ পয়েন্ট। বেড়েছে ২১৪টি কোম্পানির শেয়ারদর, কমেছে ১০৬টির। অপরিবর্তিত ছিল ৫৭টির দর।
গত মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বিএসইসি, আইসিবি ও এনবিআরকে নিয়ে বৈঠক শেষে কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দেয়া হয়নি। জানানো হয়, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট ক্রয়মূল্য নাকি বাজারমূল্যে হবে, বন্ডে বিনিয়োগ এই সীমার বাইরে থাকবে কি না, এসব বিষয়ে আরও একটি বৈঠক করতে হবে। সেটি চলতি মাস বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে। সেই বৈঠকের পর দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে।
তবে এই বৈঠকের ফলাফলে হতাশ হয় বিনিয়োগকারীরা। বুধবার বড় দরপতন ঘটে পুঁজিবাজারে। এক দিনেই দর হারায় ২৫৭টি কোম্পানি।
লেনদেন শেষে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ আসে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ও বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামকে নিয়ে বৈঠক করবেন। তার আগে সরকার প্রধান আলাদা বসবেন গভর্নরের সঙ্গে।
এই বৈঠকের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি কোনো পক্ষ থেকে। নিউজবাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে বিএসইসি প্রধান বলেন, ‘বিষয়টি খুবই গোপনীয়’।
বৈঠক ডাকার এই বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের মনে যে চিড় ধরা আত্মবিশ্বাস কিছুটা হলেও ফিরিয়ে দিতে পেরেছে, সেটি সপ্তাহের শেষ দিনের লেনদেনেই স্পষ্ট।
তবে এখনও বিনিয়োগকারীরা নতুন করে লেনদেনে না গিয়ে পরিস্থিতি যে পর্যবেক্ষণে রাখছেন, সেটিও বোঝা যায়। লেনদেন কোনো রকমে এক হাজার কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করেছে।
বেশ কয়েক মাস পর লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে বস্ত্র খাত। গত দুই সপ্তাহ ধরে শীর্ষে অবস্থানকারী ব্যাংক খাত নেমে এসেছে দ্বিতীয় অবস্থানে। তৃতীয় অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত।
এই তিনটি খাতেই লেনদেন হয়েছে একশ কোটি টাকার বেশি। আগের দিন চার খাতে এবং তারও আগের দিন পাঁচটি খাতে লেনদেন ছিল শত কোটি টাকার বেশি।
শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, স্বল্প মূলধনি ও লোকসানি কোম্পানির দাপট ফিরে এসেছে। গত জুলাই থেকে এই ধরনের কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর ক্রমেই কমছিল। গত তিন দিন ধরে আবার দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র।
খাতওয়ারি বিবেচনা করলে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শেয়ারের দর বেড়েছে বস্ত্র, বিবিধ খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। প্রকৌশল, সিমেন্ট, ওষুধ ও রসায়ন খাতেও দিনটি খারাপ যায়নি।
অন্যদিকে ব্যাংক, আর্থিক, বিমা খাতে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। এর মধ্যে ব্যাংকে দর বৃদ্ধির হারও বেশি নয়, যেগুলোর দর কমেছে, সেগুলোও খুব বেশি দর হারায়নি।
সূচক বাড়ায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো। কোম্পানিটির ১.৪৭ শতাংশ দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ৭.৬৪ পয়েন্ট। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ওয়ালটনের দর ১.২৪ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ৬.৬১ শতাংশ।
বিকন ফার্মা, আইসিবি, রেকিড বেনকিনজার, লিনডে বিডি, স্কয়ার ফার্মা ইউনিলিভার, ইউনাইটেড পাওয়ার ও ব্র্যাক ব্যাংকের দর বাড়ার কারণেও সূচকে পয়েন্ট যোগ হয়েছে।
এই ১০টি কোম্পানির দর বৃদ্ধিতেই সূচকে যোগ হয়েছে ২৬.৩৩ পয়েন্ট।
অন্যদিকে লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট, গ্রামীণ ফোন, ডেল্টালাইফ ইন্স্যুরেন্স, বেক্সিমকো ফার্মা, তিতাস গ্যাস, ওরিয়ন ফার্মা, জিপিএইচ ইস্পাত, সোনালী পেপার, ইস্টার্ন ব্যাংক ও ওয়ান ব্যাংকের দরপতনের কারণে সূচক থেকে পয়েন্ট কমেছে সবচেয়ে বেশি।
তবে দরপতনের হার খুব বেশি না হওয়ায় সূচক কমেছেও কম। ১০টি কোম্পানি মিলিয়ে সূচক ফেলেছে ৬.২১ পয়েন্ট।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ দশে স্বল্প মূলধনি-দুর্বল কোম্পানির প্রাধান্য
পর পর তিন দিন এই বিষয়টি দেখা গেল। গত জুন থেকেই এই ধরনের কোম্পানিগুলো ক্রমাগত দরপতনের মধ্য দিয়ে গেছে। এই কয়েক মাসে কোনো কোনো কোম্পানি ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দর হারিয়েছে।
দিনের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল ওটিসি ফেরত তমিজ উদ্দিন টেক্সটাইল। শেয়ার দর বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ। শেয়ার দর ১৪০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫৪ টাকা।
বিবিধি খাতের দুর্বল কোম্পানি এসকে ট্রিমসের শেয়ারদর গত ছয় মাসে তার সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে ৫০ শতাংশেরও বেশি দর হারিয়েছিল। ৬২ টাকা থেকে ২৫ টাকায় নামার পর গত ২৮ নভেম্বর থেকেই আবার ঊর্ধ্বগামী যাত্রা শুরু হয়।
এই কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৯.৮৩ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ৩০ টাকা ৫০ পয়সা। বাড়ার সুযোগ ছিল ৩ টাকা। বেড়েছেও ততটাই। দিন শেষে দাম দাঁড়িয়েছে ৩৩ টাকা ৫০ পয়সা।
নয় শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে আরও একটি কোম্পানির। সেটি ছিল সায়হাম টেক্সটাইল। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৮০ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ারদর গত তিন মাসে বেশ খানিকটা কমে গিয়েছিল। আগের দিন দর ছিল ২০ টাকা ৪০ পয়সা। এক দিনেই বেড়েছে ২ টাকা।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা স্বল্প মূলধনি জেমিনি নি ফুডের দর বেড়েছে ৮.৭৩ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার দর ২৬১ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৮৩ টাকা ৮০ পয়সা।
আরেক স্বল্প মূলধনি এএমসিএল (প্রাণ) শেয়ার দর বেড়েছে ৮.৫৯ শতাংশ। এক সপ্তাহ ধরেই কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে।
৭ শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে পাঁচটি কোম্পানির। এর মধ্যে স্বল্প মুলধনি লিবরা ইনফিউশনের দর বেড়েছে ৭.৪৯ শতাংশ, লোকসানি সোনারগাঁও টেক্সটাইলের দর বেড়েছে ৭.২২ শতাংশ, আরেক লোকসানি স্বল্প মূলধনি অনালিমা ইয়ার্নের দর বেড়েছে ৭.০৩ শতাংশ। স্বল্প মূলধনি বিডি ল্যাম্পসের দর বেড়েছে ৭.০৩ শতাংশ।
গত কয়েক মাসে ব্যাপক হারে মূল্য সংশোধন হওয়া এমএল ডাইংয়ের দর বেড়েছে ৭.২২ শতাংশ।
শীর্ষ দশের বাইরে ছয় শতাংশের বেশি শেয়ার দর বৃদ্ধি পাওয়া চারটি কোম্পানির মধ্যে লোকসানি বিচ হ্যাচারির দর ৬.৬৪ শতাংশ, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের দর ৬.৫৭ শতাংশ, দুই স্বল্প মূলধনি রংপুর ফাউন্ড্রির ৬.৩৫ শতাংশ ও মুন্নু এএমজেএলের দর বেড়েছে ৬.০৫ শতাংশ।
আরও আটটি কোম্পানির দর ৫ শতাংশের বেশি, ১৭টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ১৬টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ৩০টির দর ২ শতাংশের বেশি, ৬০টির দর ১ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
দর পতনের শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ৫.৫৮ শতাংশ কমেছে সুহিৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের দর। গত কয়েক দিন টানা উত্থান হওয়া কোম্পানিটির শেয়ার মূল্য ১৯ টাকা ৭০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৮ টাকা ৬০ পয়সা।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ডমিনোজ স্টিলের দর ৫.৩০ শতাংশ কমে ২৮ টাকা ৩০ পয়সা থেকে হয়েছে ২৬ টাকা ৮০ পয়সা।
ফার্স্ট ফাইন্যান্সের শেয়ার দর ৪.৮৭ শতাংশ, অ্যাপোলো ইস্পাতের দর কমেছে ৪.৬৭ শতাংশ কমেছে। ফু ওয়াং সিরামিকের শেয়ার দর ১৯ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ৪.৫৯ শতাংশ কমে হয়েছে ১৮ টাকা ৭০ পয়সা। ফু ওয়াং ফুডের দর ৪.৩৯ কমেছে।
নতুন তালিকাভুক্ত সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দর হারিয়েছে। ৩.৮৬ শাতংশ কমে ৮২ টাকা ২০ পয়সার শেয়ার দিন শেষে হয়েছে ৭৯ টাকা ৫০ পয়সা।
অলেম্পিক একসেসোরিজের দর ৩.৮১ শতাংশ হারিয়ে ১৩ টাকা ১০ পয়সা থেকে হয়েছে ১২ টাকা ৬০ পয়সা।
এ ছাড়া দুই শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমা কোম্পানি ছিল আটটি। আরও ৩০টি কোম্পানির দর কমেছে ১ শতাংশের বেশি।
লেনদেনে এগিয়ে থাকা ১০ কোম্পানি
আগের বেশ কয়েকটিদের মতো এদিনও লেনদেনে এগিয়ে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। মোট লেনদেন হয়েছে ৭৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। মোট হাতবদল হয়েছে ৪৪ লাখ ৭০ হাজার ১৯৭টি।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা জিএসপি ফাইন্যান্সে লেনদেন হয়েছে ৪০ কোটি ১৯ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে মোট ১ কোটি ৪৬ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯৪টি।
জেনেক্স ইনফোসিসে লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ২ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ১৬ লাখ ৩২ হাজার ৯৭৬ টি শেয়ার।
ডেল্টা লাইফে লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৭ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৯ লাখ ৫৬ হাজার ১০টি শেয়ার।
ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোতে লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৪২৯টি শোর।
ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকের ১ কোটি ২২ লাখ ৮৯ হাজার ৮১৯টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে, যার বাজার মূল্য ছিল ১৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
সাফকো স্পিনিংয়ে লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আরও ১৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি টাকার বেশি।
১০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে চারটি ছিল ব্যাংক খাতের। এগুলো হচ্ছে ওয়ান ব্যাংক, যার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকার।
আইএফআইসি ব্যাংকের ১২ কোটি ৬৩ লাখ টাকার, ব্র্যাক ব্যাংকের ১১ কোটি ৯২ লাখ টাকার এবং এনআরবিসি ব্যাংকের ১১ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
নয় কোটি টাকার বেশি লেনদেন হওয়া তিনটি কোম্পানির মধ্যে দুটি ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের স্কয়ার ফার্মা ও ফার্মা এইড। একটি ছিল ট্যানারি খাতের ফরচুন সুজ।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
মন্তব্য