চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন সেবার মাশুল বাড়াচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে মাশুল বাড়ানো প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে সেবার নতুন হার নির্ধারণের দায়িত্ব। বন্দর ব্যবহারকারী ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর কাছেও মতামত চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির এই সময়ে মাশুল বাড়ানোর সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নেতারা বলছেন, মাশুল বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। বন্দরের কাজ হলো সেবা দেয়া; ব্যবসা করা নয়।
তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ১৯৮৬ সালের মাশুল আর কত দিন চলবে? বন্দরে সেবার বিনিময়ে কেবল খরচ আদায় করা হয়। বর্তমানে আদায় করা মাশুলের পরিমাণ খরচের চেয়ে অনেক কম। নতুন হিসাবে খরচ অনুযায়ী মাশুল আদায় হবে।
১৯৮৬ সালে নির্ধারিত হারে এত দিন মাশুল আদায় করে আসছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রায় তিন যুগ পর ২০১৯ সালে মাশুল আদায়ের হার যুগোপযোগী করতে উদ্যোগ নেয়া হয়, তবে তখন তা বাস্তবায়ন করা যায়নি।
বন্দর কর্তৃপক্ষ ১৫টি সেবার বিপরীতে বিভিন্ন উপখাতে ৩৩ থেকে ৪৮৮ শতাংশ পর্যন্ত মাশুল বাড়ানোর চিন্তা করছে বলে জানা গেছে।
তার মধ্যে রয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ পোর্ট ডিউজ, পাইলটেজ ফি, বার্থিং-আনবার্থিং ফি, বার্থে অবস্থান, মুরিংয়ে অবস্থান, পানি সরবরাহ চার্জ, রিভার ডিউজ (প্রথাগত) ও ল্যান্ডিং অথবা শিপিং চার্জ (প্রথাগত), বন্দরের স্থান ব্যবহার ভাড়া (স্পেস রেন্ট), কনটেইনার বোঝাই ও খালাসকরণ, রেফার কনটেইনার সেবা, রিভার ডিউজ (কনটেইনারাইজড), লিফট অন/লিফট অফ চার্জ (চট্টগ্রাম বন্দর), লিফট অন/লিফট অফ চার্জ (ঢাকা আইসিডি) ও ঢাকার আইসিডিতে কনটেইনারের স্টোরেজ সেবা খাত।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খরচ অনুযায়ী (কস্ট বেইজড) ট্যারিফ নির্ধারণে বিদেশি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গঠন করা হয়েছে পরামর্শক টিম। স্পেনের মেসার্স আইডিওম কনসালটিং, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড আর্কিটেকচার এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস লজিকফ্রুম লিমিটেড সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজটি করছে।
এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে তাদের মতামত নেয়ার পর কাজ চলছে। চলতি মাসে প্রাথমিক প্রস্তাব দেয়ার কথা রয়েছে। সেটি বন্দর কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করলে আগামী বছরের মার্চে নতুন মাশুল চূড়ান্ত হবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মানের একটি ট্যারিফ কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। তবে মাশুল নির্ধারণ হবে আঞ্চলিক বন্দরগুলোর সঙ্গে তুলনা করে। আশপাশের বন্দরে মাশুল আদায়ের হার এরই মধ্যে পর্যালোচনা করা হয়েছে। প্রতিটি খাতের সেবায় খরচ অনুযায়ীই মাশুল আদায় করা হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবসা করবে না, তবে বন্দরের উন্নয়ন করতে হলে ব্যাপক বিনিয়োগ করতে হবে। সেবা দিয়েই সেই টাকা তুলে নিতে হবে। যৌক্তিক হারেই মাশুল বাড়ানো হবে।
তবে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর সেবাদানকারী সংস্থা। ব্যবহারকারীদের সেবা দিয়ে যাবেন, লাভ-ক্ষতি নিয়ে চিন্তার তো দরকার নেই। ১৯৮৬ সালে ডলারের বিনিময় হার ছিল ৩০ টাকা, এখন ৮৮ টাকা। আধুনিক যন্ত্রপাতি যুক্ত হয়েছে। সেই হিসাবে তো মাশুল আরও কমানোর কথা, সেখানে বাড়বে কেন?’
মাশুল না বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্সের সহসভাপতি মাহবুব চৌধুরী।
করোনা সংকটের এই সময়ে মাশুল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিজিএমইএ প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
আর ট্যারিফসংক্রান্ত মতামতের চিঠির উত্তরে মাশুল না বাড়িয়ে বন্দরের সেবাকে গতিশীল করার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘১৯৮৬ সালের ট্যারিফ দিয়ে আর কত চলবে। এ ছাড়া বন্দর লাভের জন্য ট্যারিফ পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়নি। কেবল সেবা দিতে গিয়ে যে খরচ হবে, সেটি আদায় করবে। সে হিসাবেই (কস্ট বেইজড) ট্যারিফ নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে সেবার বিপরীতে যে মাশুল আদায় করা হয় তা খরচের চেয়ে অনেক কম। এর পরও ট্যারিফ নির্ধারণের পর ব্যবসায়ীদের মতামত নেয়া হবে। তাদের পরামর্শ বিবেচনায় রেখে চূড়ান্ত হবে। ব্যবসার ক্ষতি হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত বন্দর কর্তৃপক্ষ নেবে না।’
আরও পড়ুন:ছাত্র-জনতা হত্যার বিচারে তিন বিচারকের সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) পুনর্গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। চলতি মাসেই এ আদালত বিচার কার্যক্রম শুরু করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার সন্ধ্যার পর সচিবালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা এ কথা জানান।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে আমরা হাইকোর্টের দুজন বিচারপতি এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজকে নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের কাজ সম্পন্ন করেছি।
‘এই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। এছাড়া সদস্য হিসেবে আছেন হাইকোর্টের আরেকজন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘বিচার কাজ শুরুর ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের যা করার ছিল, এর মাধ্যমে তার একটা বড় ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। আমরা আশা করবো খুব শিগগির বিচার কাজ শুরু হয়ে যাবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গেল জুলাই ও আগস্ট মাসে গণহত্যার অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব অভিযোগের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এরই অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠিত হয়েছে। বিচারের জন্য আইন সংশোধন এবং ভবন মেরামতের কাজও চলমান। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাইব্যুনালে বিচারক নিয়োগ দেয়া হলো।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ সরকারের ৫০ জনের বেশি মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে।
আরও পড়ুন:বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব অনিয়ম ও ব্যত্যয় ঘটেছে সেগুলো নির্বাচন কমিশন সংস্কার বিষয়ক কমিটি চিহ্নিত করবে। এসব নির্বাচনে ভালো কিছু হয়ে থাকলে সেগুলোও চিহ্নিত করা হবে।
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটির প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার সোমবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। এ সময় তিনি কমিশনের অন্যান্য কার্যক্রমও তুলে ধরেন।
বদিউল আলম বলেন, ‘নির্বাচনি প্রক্রিয়াটা একদিনের বিষয় নয়। এটি একটি সাইকেল। এই সাইকেল পর্যালোচনা করে ব্যত্যয় যা ঘটেছে তা চিহ্নিত করে আমরা সুপারিশ করব।’
নির্বাচনে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হবে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সুপারিশ থাকবে। তবে সে কথা বলার সময় এখনও আসেনি। আমরা কর্মকর্তা এবং কমিশনের বিষয়ও পর্যালোচনা করব।’
বদিউল আলম বলেন, ‘কমিটি নির্বাচনি আইন-কানুন ও বিধিমালা পর্যালোচনা করছে। একটি ওয়েবসাইট তৈরি করছি। এতে কী থাকা উচিত তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের ফেসবুক পেজ হবে, ই-মেইল ঠিকানাও হবে।
‘সবার কাছ থেকে তথ্য, প্রস্তাব, সুপারিশ- এগুলো আমরা চাইব। ওয়েবসাইটটি ইসির ওয়েবসাইটের সাব-ডোমেইন হবে। এক সপ্তাহের মধ্যেই এসব হয়ে যাবে।’
ওয়েবসাইটে কী বিষয়ে মতামত চাওয়া হবে, সংবিধান সংস্কার নিয়ে কী আলোচনা করা হয়েছে- এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা লাইন ধরে ধরে পর্যালোচনা করছি। সুনির্দিষ্ট কোনো কিছু নয়। যেদিন আমরা সুপারিশ সরকারের কাছে পাঠাব, সেদিন এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে।’
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটির প্রধান বলেন, ‘সবচেয়ে বড় আইন হলো গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)। আরপিও আমরা গভীরভাবে পর্যালোচনা করছি। জাতীয় নির্বাচনের জন্য এটা মাদার অব ল।
‘এরপর সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন আছে, ভোটার তালিকা আইন আছে, ইসি সচিবালয় আইন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন আছে। এগুলো পর্যালোচনা করতে হবে। পর্যালোচনা করে সে বিষয়ে সুপারিশ করতে হবে। কমিশনের নিয়োগের আইন অগ্রাধিকার। সরকার যখন চাইবে আশা করি তখনই আমরা তাদের (উপদেষ্টা) একটা খসড়া দিতে পারব।’
‘না’ ভোট রাখার বিধানের বিষয়টি নজরে আনলে তিনি বলেন, ‘আমরা সবকিছুই বিবেচনায় নেব। যত মতামত আসবে পর্যালোচনা করব। নির্বাচন বিষয়ে যে কেউ যে কোনো মতামত দিতে পারবেন। উন্মুক্ত মতামত নেয়া হবে।’
বদিউল আলম আরও বলেন, ‘আমরা তো নিশ্চিত করতে পারব না যে কেউ অপকর্ম করবে না। তবে আমরা গাইডলাইন তৈরি করব। সিঁড়ির পাশ দিয়ে যেমন ব্যারিয়ার থাকে। কেউ যেন পড়ে না যায়। কেউ যদি ঝাঁপ দিতে চায় তাহলে তো কিছু করার নেই। কিন্তু আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করব এমন সব সুপারিশ করার, যেন একটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত হয়।’
আরও পড়ুন:দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কারের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ ও মতামত চেয়েছে দুদক সংস্কার কমিশন।
সোমবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনকে কার্যকর, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাবের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত দুদক সংস্কার কমিশন সবার অভিজ্ঞতালব্ধ সুনির্দিষ্ট পরামর্শ জানতে আগ্রহী।
দুদক সংস্কারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দুদক সংস্কার কমিশনকে ই–মেইলের মাধ্যমে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে জানাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
পরামর্শ পাঠানোর ই-মেইল ঠিকানা: [email protected]
প্লাস্টিক, পলিথিন কিংবা আধুনিক বর্জ্য থেকে পরিবেশ রক্ষায় রিসাইক্লিং, মনিটর ও সার্টিফাইড ব্যবস্থা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
আন্তর্জাতিক ই-বর্জ্য দিবস উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘ফরমাল ই-ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ২০২৪’ শীর্ষক সেমিনারে অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এসব বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘প্লাস্টিক শিল্পের জন্য পরিবেশ রক্ষায় খসড়া নীতি নির্ধারণ প্রয়োজন। পরিবেশে আধুনিক বর্জ্যের যে সমস্যা তা স্বীকার করতে হবে। ফলে আধুনিক বর্জ্য আইন ২০২১ বাস্তবায়ন করতে হবে।
‘আধুনিক বর্জ্য সংগ্রহ, অপসারণ ও আইনের ব্যবহারের জন্য দ্রুত স্টেকহোল্ডারদের কাজ করা প্রয়োজন। ই-বর্জ্য পুনরায় ব্যবহারের জন্য তত্ত্বাবধানসহ প্রচার চালাতে হবে, যাতে দ্রুত এর ক্ষতিকর প্রভাবগুলো সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা যায়।’
পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, ‘পলিথিন শপিং ব্যাগের বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা নভেম্বর থেকে সারা দেশে কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। কিছু মার্কেট পলিথিনের বিকল্প ব্যাগ দিতে শুরু করেছে। মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টকে অনুরোধ করব পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ছাড়া যেন পরিবেশ দূষণের কোন প্রকার ব্যাগ কেউ ব্যবহার না করতে পারে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে।
‘প্লাস্টিক, পলিথিন রিসাইক্লিং প্রক্রিয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো মনিটর ও সার্টিফাইডের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা, যাতে আগামীতে সমস্যাগুলো আর বৃদ্ধি না পায়।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী। এছাড়াও ডব্লিউইইই সোসাইটি-বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ সাবির বক্তব্য দেন। বুয়েটের রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর ইসলাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সেমিনারে নীতিনির্ধারক, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং শিল্প নেতৃবৃন্দ ই-ওয়েস্ট ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন।
বক্তারা অনানুষ্ঠানিক রিসাইক্লিং প্রক্রিয়া, যেমন উন্মুক্ত স্থানে পোড়ানোর মাধ্যমে বর্জ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের কারণে সৃষ্ট দূষণ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন:চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইলিংসহ নানারকম হয়রানির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন থানায় মামলা করার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইলিংসহ নানারকম হয়রানি করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক মামলা দায়ের বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ফৌজদারি অপরাধ।
এসব কর্মকাণ্ডে জড়িতদের কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি প্রদানসহ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এসব অপতৎপরতার বিরুদ্ধে জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’–এ অভিযোগ বা তথ্য আনানোর জন্য এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনীকে অবহিত করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মিয়ানমারের রাখাইনে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য জাতিসংঘের দ্বারা গ্র্যান্টেড নিরাপদ অঞ্চল তৈরি এবং তাদের সহায়তার উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার থমাস অ্যান্ড্রুজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এই আহ্বান জানান।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎকালে ড. ইউনূস বলেন, জাতিসংঘের দ্বারা গ্র্যান্টেড নিরাপদ অঞ্চল তৈরি করাটা রাখাইনে বিদ্যমান সংকট সমাধানে একটি ভালো সূচনা হতে পারে এবং তা বাংলাদেশে হাজার হাজার নতুন শরণার্থীর প্রবেশ ঠেকাতে পারবে।
থমাস অ্যান্ড্রুজ রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে গত মাসে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাইডলাইনে বৈঠক করেন এবং এ সময় তিনি জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থাপিত তিন দফা প্রস্তাবের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বড় ধরনের সংকট তৈরি করেছে এবং এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাসহ বাস্তুচ্যুত ও অনাহারী মানুষের জন্য জরুরিভিত্তিতে মানবিক সহায়তার প্রয়োজন।’
বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার জানান, মিয়ানমারের অন্তত ৩.১ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার মধ্যে রাখাইন রাজ্যের রয়েছে কয়েক লাখ। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো এখানে দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে।
তিনি উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তবে কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরগুলোতে ইতোমধ্যে দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বসবাস করছে।
অধ্যাপক ইউনূস রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ ও বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দেন। তিনি হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসন ত্বরান্বিত করতে বিশেষ র্যাপোর্টিয়ারের সহায়তা চান।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তদন্ত এবং বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন:প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতর বা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের (ডিজিএফআই) নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম। সোমবার ডিজিএফআই’র প্রধান পদে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।
অন্যদিকে ডিজিএফআই’র বর্তমান ডিজি মেজর জেনারেল ফয়জুর রহমানকে লে. জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল করা হয়েছে।
এছাড়া ২৪ ইনফ্রেন্টি ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মাইনুর রহমানকে লে. জেনারেল পদোন্নতি দিয়ে আর্টডক-এর জিওসির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১২ আগস্ট মো. ফয়জুর রহমানকে ডিজিএফআই’র মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। তিনি মেজর জেনারেল হামিদুল হকের স্থলাভিষিক্ত হন।
মন্তব্য