একের পর এক গ্যাস বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনা প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দাদের জন্য। এ ধরনের ঘটনায় ওই জেলায় দুই বছরে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১১৮ জন। দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন শতাধিক মানুষ।
বেশির ভাগ ঘটনাতেই থানায় অপমৃত্যুর মামলা হলেও এগুলোর যথাযথ তদন্ত হয়নি। ফলে এত মৃত্যুর পরও দায়ীদের চিহ্নিত করার কোনো উদ্যোগ নেই। এতে এ ধরনের দুর্ঘটনা একের পর এক ঘটেই চলছে।
চলতি বছর এই জেলায় ১১৭টি দুর্ঘটনায় অন্তত ৭৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। দগ্ধ ও আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে আরও অর্ধশত মানুষকে। ২০২০ সালেও একই রকম ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৪ জন।
এসব তথ্য ফায়ার সার্ভিসের তালিকায় উল্লেখ থাকলেও দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া অনেকের তথ্য অন্তর্ভুক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বাসাবাড়িতে গ্যাস পাইপ লিক করে বিস্ফোরণের অধিকাংশ কারণ অসচেতনতা ও অবহেলা। দেখা যায়, অনেকে বাড়ির লাইনে লিকেজের কথা জেনেও তা মেরামত করেন না। দীর্ঘদিনের পুরোনো হওয়ায় তিতাস গ্যাসের পাইপগুলোতে প্রায়ই লিকেজ হয়ে যায়।’
তিনি জানান, ফ্ল্যাটের দরজা-জানালা বন্ধ অবস্থায় তিতাসের গ্যাসলাইন বা গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপ লিক হয়ে রুমে গ্যাস জমে গেলেই বিপদ। কারণ এ সময় বৈদ্যুতিক সুইচ কিংবা চুলা জ্বালানো হলেও বিস্ফোরণ ঘটে আগুন ছড়িয়ে যাবে এবং মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই সেখানে থাকা মানুষ দগ্ধ হবেন।
ফায়ার সার্ভিসের তালিকায় আছে, ২০২১ সালের ৩১ সেপেম্বর পর্যন্ত রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ১৮টি ঘটনা ছাড়াও তিতাসের লাইনের ত্রুটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে ৭১টি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বয়লার বিস্ফোরণ ও বৈদ্যুতিক কারণে আরও ২৩টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এ ছাড়া নভেম্বরের শুরু থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও ৫টি ঘটনা মিলে মোট ১১৭টি দুর্ঘটনা ঘটেছে এ বছর।
এসব ঘটনায় অন্তত ৭৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ।
এর মধ্যে গত ৬ ডিসেম্বর ভোরে আড়াইহাজারের কুমারপাড়া গ্রামের একটি বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার লিক করে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে দুই শিশুসহ এক পরিবারের চারজন দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে সোলাইমান নামের একজনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার এক দিন আগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বিলাসনগর এলাকায় একটি ছয়তলা ভবনে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হন চারজন।
গত ২৫ নভেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জের আদনান টাওয়ারের চতুর্থ তলায় গ্যাসের পাইপ লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটলে পারভেজ ও মামুন নামে দুই পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার চার দিন আগে রূপগঞ্জে সিটি অটো রাইস মিলে বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ২ শ্রমিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
১২ নভেম্বর ফতুল্লার পূর্ব শেয়াচরের লালখা এলাকায় একটি ৫ তলা বাড়ির নিচ তলায় গ্যাস পাইপের লিকেজ থেকে জমে থাকা গ্যাসে বিস্ফোরণে মায়া রানী দাস, মঙ্গলী রানী দাস, ঝুমা রানী ও তুলসী রানী নামে চার নারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
৯ মার্চ রাতে ফতুল্লার মাসদাইরের পতেঙ্গা এলাকায় ছয়তলা ভবনের ষষ্ঠতলার একটি ফ্ল্যাটে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৬ জন দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পোশাক শ্রমিক মো. মিশাল, শিশুপুত্র মিনহাজ, চাচাতো ভাই মাহফুজ ও স্কুলছাত্র সাব্বির হোসেনের মৃত্যু হয়।
শহরের আমলাপাড়ায় গ্রিন জিএম গার্ডেন নামের একটি ভবনের আটতলায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটলে দগ্ধ দুজনের মধ্যে চিকিৎসাধীন একজন মারা যান।
এর আগে শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকায় তিনতলা ভবনের একটি ফ্ল্যাটে লিকেজ থেকে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে শিশুসহ দুটি পরিবারের ১১ জন দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে হাবিবুর রহমান ও তার স্ত্রী আলেয়া বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
৭ জানুয়ারি ফতুল্লার বিলাসনগরে একটি দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে রফিক উল্লাহ নামের এক মিস্ত্রি মারা যান। আড়াইহাজারে একটি রেস্তোরাঁয় গ্যাসের লাইনে বিস্ফোরণে তিনজন দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন ১ জনের মৃত্যু হয়।
বন্দরের লক্ষণখোলা এলাকায় একটি তুলার গোডাউনে আগুন লাগলে আমেনা বেগম নামের এক নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
২৩ জুন ফতুল্লায় একটি ডাইং কারখানার বয়লার বিস্ফোরণে শরীফ মিয়া নামের এক শ্রমিক মারা যান। তা ছাড়া বন্দরে রান্না ঘরের গ্যাসের আগুনে ৫ জন দগ্ধ হন। সোনারগাঁর নয়াবাড়ি এলাকায় একটি ডাইং কারখানায় গ্যাস রাইজারের আগুনে দগ্ধ হন আরও পাঁচজন। শহরের চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় অ্যাপোলো নামের একটি ক্লিনিকে অক্সিজেন সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দুজন ওয়ার্ড বয়ও দগ্ধ হয়েছেন।
তবে এ বছরের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ঘটে রূপগঞ্জের হাসেম ফুডের কারখানার অগ্নিকাণ্ডে। ওই ঘটনায় নিহত ৫৪ জনের দেহাবশেষ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের ২০২০ সালের খাতায় দেখা গেছে, এ জেলায় গ্যাস থেকে ১০৬টি বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ওই সব অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৪৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। দগ্ধ ও আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে অন্তত ২৬ জনকে।
এর মধ্যে তল্লায় মসজিদে এক বিস্ফোরণেই মৃত্যু হয় ৩৭ জনের। ওই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি ভোরে সদর উপজেলার সাহেবপাড়া এলাকায় পাঁচতলা ভবনের নিচতলার ফ্ল্যাটে লাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস ছড়িয়ে বিস্ফোরণ ঘটলে একই পরিবারের ৮ জন দগ্ধ হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃত্যু হয়। একই বছর রূপগঞ্জে একটি রড প্রস্তুতকারক কারখানায় গলিত লোহা বার্টি বিস্ফোরণে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আরও চারজন শ্রমিক দগ্ধ হন।
আরও পড়ুন:আগামী জুনের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করবে সরকার। সে জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেন, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কেউ যেন প্রতারিত না হয় কিংবা কেউ যেন প্রতারণা না করতে পারে সে জন্য সরকার সব ব্যবস্থা নেবে। আগামী জুনের মধ্যেই ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরিদর্শন করেছি। সেখানে খুব ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, তবে এ বছর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম।’
এ সময় প্রতিমন্ত্রী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ও শেষ ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় আজ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে লিখিত পরীক্ষা।
এ ধাপে কুমিল্লা জেলায় ৩২ হাজার ১৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ১৪ হাজার ৭৬৭ জন এবং পুরুষ ১৭ হাজার ৪৩২ জন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার বরুড়ায় ভাইকে হত্যার দায়ে ছোট ভাই, বোন ও ভগ্নিপতিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উপজেলার শালুকিয়া গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বুধবার সকালে নিজ বসতঘর থেকে শরিফ হোসেন (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন শরিফের ছোট ভাই আরিফ হোসেন, বড় বোন খুকি আক্তার ও ভগ্নিপতি নাছির উদ্দিন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর বুধবার নিহত শরীফের মা বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, ‘শরীফ মাদকাসক্ত ছিল। কিছুদিন আগে শরীফ মাদকের টাকা যোগাড়ের জন্য ভাই আরিফের অটোরিকশা বিক্রি করে দেয়। মাদকের টাকার জন্য মাকেও মারধর করত সে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে শরিফের ছোট ভাই আরিফ ও তার বোন খুকি মিলে পরিকল্পনা করে শরীফকে পঙ্গু করে ঘরে রেখে দেবে। বাকি জীবন তাকে ঘরে বসিয়ে খাওয়াবে। পরিকল্পনা মোতাবেক ২৬ মার্চ রাত ১ টার দিকে পুকুরপাড়ে শরীফকে হাত পা বেঁধে পেটানো হয়। বাড়িতে এনে আরেক দফা পেটানো শেষে হাত পা বেঁধে ঘরের ভেতর ফেলে রাখা হয়। এ অবস্থায় শরীফ মারা যায়।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল জানান, তথ্য প্রযুক্তিসহ নিজস্ব গোয়েন্দা ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের আদালতে প্রেরণ করলে সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার শহরে বুধবার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ভেতরে গ্রাহককে অজ্ঞান করে ৮১ হাজার টাকা লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তানভীর হাবিব চৌধুরী রুমেল নামের ওই গ্রাহক মৌলভীবাজার মডেল থানায় অভিযোগটি করেন।
ব্যাংকের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, বুধবার বেলা ১১টা সাত মিনিটে ঘটনাটি ঘটে।
অভিযোগের বিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি কে এম নজরুল বলেন, ‘মৌলভীবাজারের শহরের সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসিতে বুধবার সকালে ১১টার দিকে প্রবাস থেকে আসা টাকা তুলতে যান ব্যবসায়ী তানভীর। দুই লাখ টাকা তুলে তানভীর এক হাজার টাকার নোট দেয়ার জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাকে বলেন। এ সময় ব্যাংক কর্মকর্তা এক হাজার টাকার বান্ডিল দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে তাকে ৫০০ টাকা নোটের বান্ডেল প্রদান করেন।
‘তখন কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একজন রুমেলকে বলেন, তিনি এক হাজার টাকার বান্ডেল এক্সচেঞ্জ করবেন। তখন রুমেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তিনি গুনতে থাকেন। টাকা হাতে নেয়ার পর রুমেল কিছু সময়ের জন্য অজ্ঞান অনুভব করেন। তখন ওই চক্র ৮১ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।’
অভিযোগকারী রুমেল বলেন, ‘ওই ব্যক্তির হাতে থাকা টাকার বান্ডেল আমাকে গুনতে দিয়ে আমাকে একটি চেয়ারে নিয়ে বসান। আমি টাকা হাতে নেয়ার পর নিস্তেজ অনুভব করি। সবকিছু আমার কাছে কিছু সময়ের মধ্যে এলোমেলো মনে হয়। প্রায় পাঁচ মিনিট পরে একটু স্বাভাবিক হলে গুনে দেখি, তারা আমার কাছ থেকে ৮১ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।
‘পরবর্তী সময়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, তারা ১১টা সাত মিনিটে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যায়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ওই চক্রের ছবি শনাক্ত করা হয়।’
ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসির মৌলভীবাজার শাখা ব্যবস্থাপক আবদুল কাদের বলেন, ‘সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখলাম, ব্যাংকের একজন গ্ৰাহকের সঙ্গে কয়েকজন লোক গল্পগুজব করে উনার সঙ্গে বিদায় নিয়ে চলে গেছে। এরপর তিনি বুঝতে পারেন, উনার টাকা নিয়ে চলে গেছে। তিনি পুলিশে অভিযোগ করেন।’
মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি কে এম নজরুল বলেন, ‘একজন ব্যাংক গ্ৰাহক অভিযোগ করেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।’
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় নদীতে গোসল করতে নেমে বজ্রপাতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চর বাউশিয়া বড়কান্দি গ্রাম সংলগ্ন গোমতী নদীতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। প্রাণ হারানো শাহেদ (১৪) ওই গ্রামের মোশারফ মিয়ার ছেলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিকেলে গোমতী নদীতে বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে যায় শাহেদ। ওই সময় হঠাৎ করে বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতে মারা যায় সে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানা যায়, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাদের হাসপাতালে শাহেদকে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আজাদ রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত রয়েছি, নিহতের লাশ গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে।’
নিহতের পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীতে মোটরসাইকেলে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় এক প্রবাসী যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা শহর মাইজদীর টোকিও ফুডসের সামনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আনোয়ার হোসেন অনিক (২২) কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ জগদানন্দ গ্রামের মাজারুল হক মন্টু মিয়ার ছেলে।
সুধারাম থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি বলেন, আবুধাবি প্রবাসী অনিক দুই মাস আগে দেশে এসে বিয়ে করেন। সন্ধ্যায় বন্ধুদের ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে মোটরসাইকেলে গ্রামের বাড়ি থেকে জেলা শহর মাইজদীতে আসেন তিনি। ওই সময় মাইজদীর টোকিও ফুডসের সামনে রাস্তার উল্টোপথে যাওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নামে পাবনায় ভুয়া জন্মসনদ তৈরির ঘটনায় জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
স্থানীয় সরকার বিভাগ পাবনার উপপরিচালক সাইফুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তদন্ত প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে জমা দেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জালিয়াতির মাধ্যমে ট্রুডোর নামে ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করা হয়। এতে বহিরাগত কম্পিউটার অপারেটর নিলয় পারভেজ ইমন জড়িত।
প্রতিবেদনে জেলার সুজানগরের আহম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুর রউফ মোল্লা ও সচিব আওলাদ হাসানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল, যার জবাব দিয়েছেন তারা।
পাবনার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নামে ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরির ঘটনায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের নির্দেশে ঘটনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
‘পাবনার স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক সাইফুর রহমানকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনি জমা দেন। আমি প্রতিবেদনটি এখনও দেখিনি। দেখার পর বিস্তারিত জানাতে পারব।’
স্থানীয় সরকার বিভাগ পাবনার উপপরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমি সুজানগরের সেই আহম্মদপুর ইউনিয়নে গিয়ে সব বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। সেখানে বেশ কিছু অসঙ্গতি ও অনিয়ম পেয়েছি। দোষীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুখময় সরকার বলেন, ‘সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ইউনিয়নটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুর রউফ মোল্লা ও সচিব আওলাদ হাসানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। তারা সেটির জবাব দেন।
‘এটা (তদন্ত প্রতিবেদন) আমরা জেলা প্রশাসকের নিকট জমা দিই। জেলা প্রশাসক দেখার পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিব কারণ দর্শানোর নোটিশের যে জবাব দিয়েছেন, তা সন্তোষজনক কি না, সে বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘সব বিষয় ডিসি স্যার বলতে পারবেন।’
পাবনার সুজানগর উপজেলার আহমেদপুর ইউনিয়নে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নামে ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করা হয়। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে আসার পর সারা দেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়। পরে জন্মনিবন্ধনের সার্ভার থেকে ভুয়া সনদটি সরানো হয়।
এ ঘটনায় নিলয় পারভেজসহ কয়েকজনকে আসামি করে আমিনপুর থানায় মামলা করা হয়।
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সংঘবদ্ধ পিটুনিতে দুজন নিহত হয়েছেন।
উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পিটুনির শিকার দুজনের মধ্যে একজন নিহত হন সিংহশ্রী ইউনিয়নের নামিলা গ্রামের চান মিয়ার বাড়িতে। অন্যজন একই ইউনিয়নের বড়িবাড়ি গ্রামের ধানক্ষেতে প্রাণ হারান।
তাৎক্ষণিকভাবে নিহত দুজনের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয়দের ভাষ্য, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নামিলা গ্রামে চান মিয়ার বাড়িতে অজ্ঞাত পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি গরু চুরির উদ্দেশ্যে ঢোকেন। বিষয়টি টের পেয়ে চান মিয়া ডাকাডাকি করলে স্থানীয়রা জড়ো হন। ওই সময় একজনকে ধরে সংঘবদ্ধ পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা আরও জানান, স্থানীয়দের ধাওয়া খাওয়া অপরজন পার্শ্ববর্তী বড়িবাড়ি গ্রামে ধানক্ষেতের আড়ালে লুকিয়ে পড়েন। ওই সময় উত্তেজিত লোকজন ক্ষেতের আড়াল থেকে খুঁজে বের করে পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
সিংহশ্রী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার পারভেজ জানান, গরু চুরি রোধে এলাকায় গ্রামবাসী পাহারা বসিয়েছিল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গাড়িতে করে এক কৃষকের গরু চুরি করতে যান কয়েকজন। বিষয়টি টের পেয়ে একজোট হয়ে দুজনকে পিটুনি দেয় গ্রামবাসী। এতে নামিলা গ্রামে একজন ও বড়িবাড়ি গ্রামের ধানক্ষেতে আরেকজন নিহত হন।
চেয়ারম্যান আরও জানান, গ্রামে গরু চুরি করতে আসা আরও চার থেকে পাঁচজন আছেন, যাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ওসি আবু বকর মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
কাপাসিয়া থানার ডিউটি অফিসার এসআই আরিফ হোসেন জানান, গরু চোর সন্দেহে গ্রামবাসীর সংঘবদ্ধ পিটুনিতে দুজন নিহত হন, যাদের মরদেহ গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য