নারীর প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে তীব্র সমালোচিত ডা. মুরাদ হাসান প্রতিমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তাকে পদত্যাগ করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেয়ার পর আলোচিত টকশোটির সঞ্চালক নাহিদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগে দম্ভের প্রশ্রয় নেই।’
গত ১ ডিসেম্বর রাতে ‘অসুস্থ খালেদা, বিকৃত বিএনপির নেতাকর্মী’ শিরোনামে এক ফেসবুক লাইভে যুক্ত হন মুরাদ। লাইভটির সঞ্চালক ছিলেন ইউটিউবার ও ফেসবুকার নাহিদ।
লাইভে বিএনপির রাজনীতি সমালোচনার একপর্যায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ও দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেন মুরাদ হাসান। এ ছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্ম ও পরিবার নিয়েও কথা বলেন তিনি।
মুরাদ হাসানের আপত্তিকর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
এর মধ্যে রোববার রাতে আবারও নাহিদের সঙ্গে লাইভ আলোচনায় আসেন মুরাদ। তার ওই লাইভেও ছিল বিতর্কিত অজস্র মন্তব্য। এ ছাড়া তার ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপ নিয়েও শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।
এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবারের মধ্যে মুরাদকে প্রতিমন্ত্রীর পদ ছাড়ার নির্দেশ দেন বলে সোমবার জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এর পরপরই ফেসবুকার ও ইউটিউবার নাহিদ তার ফেসবুক পেজ নাহিদরেইনসে এক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘আওয়ামী লীগ, দাম্ভিকতা ও অশ্লীলতাকে প্রশ্রয় দেয় না। আগামীকালের (মঙ্গলবার) মধ্যে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।’
স্ট্যাটাস দেয়ার পর লাইভেও আসেন নাহিদ। তিনি দাবি করেন, মুরাদের বক্তব্য আপত্তিকর মনে হলেও প্রতিমন্ত্রী হওয়ার কারণে তাকে থামাতে পারেননি।
নাহিদ বলেন, ‘আমার খুব বেশি যে কন্ট্রোল আছে তা না, হি ইজ আ মিনিস্টার, কাম-অন। আই অ্যাম জাস্ট গাই নেক্সট ডোর। আমি যত কথাই বলি না কেন, আমার কথায় খুব বেশি কিছু একটা হবে না। হি হ্যাজ টু কন্ট্রোল হিমসেলফ’।
‘তাও বলব, আমার লাইভে যেহেতু হয়েছে অ্যান্ড আই ওয়াজ হোস্টিং ইট, আমারও কিছু দায় আছে ওনাকে থামিয়ে দেয়ার। আমাদের দেশের একটা মন্ত্রীকে থামিয়ে দেয়ার প্র্যাকটিসটা আমরা এখনও করে উঠতে পারিনি। আই লার্নড মাই লেসন। আমি একটা জিনিস শিখেছি যে, আমার যখন থামানো উচিত মনে হবে, তাকে থামিয়ে দিতে হবে।’
মুরাদ যা বলেছেন তার প্রতি কোনো সমর্থন নেই বলেও জানান নাহিদ। তিনি বলেন, ‘তিনি যা করেছেন এটা আমি মোটেও তা সাপোর্ট করি না। ডেফিনিটলি ইটস রিয়েলি ব্যাড। তিনি ক্ষমা চাইবেন এ ব্যাপারে। আমার রেসপনসিবিলিট হচ্ছে আমার শোতে হয়েছে। আই অ্যাম রিয়েলি স্যরি ফর দ্যাট।’
ঘটনার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে নাহিদ বলেন, বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে জানতে চাওয়া হয় প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের কাছে, কিন্তু মুরাদ হাসান যে ভাষায় উত্তর দিয়েছেন, সেটা ছিল অপ্রত্যাশিত।
তিনি বলেন, ‘এ রকম একটা লাইভ শোতে আসলে, যখন এটি ভয়েস কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে হয়, তখন অপজিট গেস্টকে কন্ট্রোল করা অনেক টাফ হয়। আমরা জানি যে ডা. মুরাদ হাসান একটু হাইপার টাইপের মানুষ। উনি অনেক বেশি এক্সাইটেড থাকেন সব সময়। ইফ হি হ্যাজ আ মাইক, যখন তিনি একটা টকশোতে থাকেন, তখন আরও বেশি হাইপার থাকেন।’
জাইমা রহমান ইস্যুতে রাখা বক্তব্য নিয়ে ডা. মুরাদ হাসানের উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করা হয়েছিল বলেও দাবি করেন নাহিদ।
তিনি বলেন, ‘উই ট্রাইড টু মেক হিম আন্ডারস্ট্যান্ড, মেক হিম কাম অ্যাবাউট হিজ স্টেটমেন্ট। এবং উনি আসলে কোন প্রশ্নের কী জবাব দেবেন সেটা সম্পূর্ণ ওনার ব্যক্তিগত মতামত ছিল। যেখানে আমাদের বা আমার কোনো কন্ট্রোল ছিল না। আই অলওয়েজ ট্রাইড মাই বেস্ট। আমি ওনাকে প্রশ্ন করেছি একটা, উনি জবাব দিছ্ছিলেন আরেকভাবে। হি ওয়াজ ইন হাইপার মুড।’
জাইমাকে নিয়ে মুরাদ হাসানের বক্তব্যের কড়া সমালোচনাও করেন নাহিদ। তিনি বলেন, ‘জাইমাকে নিয়ে অনেকগুলো কমেন্ট করেছেন মে বি ফিউ সেকেন্ডসের মধ্যে, যে কমেন্টগুলো হি ওয়াজ নট দ্যাট আই ওয়াজ সাপোর্টিং হিম, ইট ওয়াজ বিকজ সো আনএক্সপেক্টেড।’
মুরাদ যখন জাইমা রহমানকে নিয়ে কথা বলছিলেন, তখন টকশো সঞ্চালক নাহিদকে হাসতে দেখা যায়। বিষয়টি অস্বীকার করেননি নাহিদ নিজেও। আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিনি দাবি করেন, সে সময় কী করা উচিত বুঝে উঠতে পারছিলেন না।
তিনি বলেন, ‘আমি যে প্রশ্ন করেছিলাম, সেই প্রশ্নের উত্তরে খুবই আনএক্সপেক্টেড ছিল। আই ওয়াজ অ্যাকচুয়ালি বিগ সারপ্রাইজড। আই ডিডনট নো হোয়াট টু ডু। আই ওয়াজ অ্যাকচুয়েলি লাফিং।’
তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে মুরাদ হাসানের করা মন্তব্য সমর্থনযোগ্য নয় বলেও জানান নাহিদ।
তিনি বলেন, ‘ওনার স্টেটমেন্টগুলো অনেককেই হার্ট করেছে। যে কারণে আমি ওনাকে আবারও দুদিন পরে লাইভে আসার জন্য রিকোয়েস্ট করেছিলাম। যাতে উনি স্যরি বলেন সবাইকে।’
আওয়ামী লীগের অনেক নেতাসহ আরও অনেকে রোববার রাতের লাইভে আসার জন্য মুরাদ হাসানকে অনুরোধ করেন বলেও দাবি করেন নাহিদ।
তিনি বলেন, ‘কষ্ট করে বুঝিয়ে রাজি করে বলেছিলাম যে ইউ হ্যাভ টু সে স্যরি। আপনি যে স্টেটমেন্ট দিয়েছেন, সেই স্টেটমেন্টটা নট আপ টু দ্য স্ট্যান্ডার্ড। আপনার স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে যায় না। আওয়ামী লীগের স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে যায় না। ইউ হ্যাভ টু সে স্যরি।’
নাহিদ বলেন, ‘এটা শেইমিং হয়ে গেছে, ক্যারেক্টার শেইমিং হয়ে গেছে। এটা ডেফিনিটলি নট আ গুড থিং। বিশেষ করে আমাদের নারী সমাজের জন্য।’
রোববার রাতে লাইভে আসার পরে মুরাদ হাসান দুঃখ প্রকাশে আগ্রহী ছিলেন বলেও মন্তব্য করেন নাহিদ। তবে লাইভ শুরুর পর সেটি আর ঘটেনি।
নাহিদ বলেন, ‘লাইভে আসার পরে, হি ওয়াজ সাপোসড টু সে স্যরি। আমি অনেকবার চেষ্টাও করেছি, উনি যেন স্যরিটা বলে অ্যাজ হি প্রমিজড, অ্যাজ হি সেইড। উনি স্যরি বলবেন সবাইকে টু কাম পিপল ইউ নো। বাট উনি ওইদিকে যাননি।
‘উনি বেসিক্যালি ওনার মতোই উত্তেজিত ছিলেন। যদিও উনি কিছু স্যরি বলার চেষ্টা করেছেন, বাট হি ওয়াজ নট রিয়েলি অ্যাপোলজিটিক। ওনার হয়ে আমি নিজেই স্যরি বলেছিলাম। বিকজ দ্যাটস দ্য লিস্ট আই ক্যান ডু। আমি একজন মন্ত্রীকে ফোর্স করতে পারি না। উনি কী স্টেটমেন্ট দেবেন না দেবেন সেটা সম্পূর্ণ ওনার ব্যক্তিগত মতামত।’
নাহিদ বলেন, ‘সেই লাইভেও অনেক কথাবার্তা চলে এসেছে। উনি স্যরি বলার ভাবটা আনার পরেও ইনফ্যাক্ট আরও অনেক কথাবার্তা চলে এসেছে, হুইচ আই রিয়েলি ডিডনট লাইক। যেগুলো বেসিক্যালি নারীদের হার্ট করবে। নারী অধিকারকে হার্ট করবে। শেইমিং করবে। দ্যাটস হোয়াই আই ডিলিটেড দ্য লাইভ ইয়েস্টার ডে।’
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদের আকস্মিক পদত্যাগ নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
পোস্টে সৈয়দ জামিলের কাজের দক্ষতার প্রশংসা করলেও নাটকীয় পদত্যাগ নিয়ে তিনি ডাহা মিথ্যাচার করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন এ উপদেষ্টা।
নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজে শনিবার বেলা একটার দিকে একটি পোস্টে ফারুকী এমন অভিযোগ করেন।
ফারুকী বলেন, ‘সৈয়দ জামিল আহমেদের কাজের একজন গুণমুগ্ধ আমি। সম্ভবত উনার কাজ নিয়ে বাংলাদেশে কোনো পত্রিকায় ছাপা হওয়া সবচেয়ে বিস্তারিত লেখাটা আমি লিখেছিলাম যায় যায় দিনের এন্টারটেইনমেন্ট ম্যাগাজিন মৌচাকে ঢিলের জন্য। এর পরেও বাংলা, ইংরেজি অনেক কাগজে লিখেছি।
‘এখনও আমি তাকে বাংলাদেশের থিয়েটারের সবচেয়ে মেধাবী নির্দেশক মনে করি। কয়দিন আগেও জামিল আহমেদের সামনেই একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেছি উনাকে দিয়ে তাদের দেশে একটা থিয়েটার প্রোডাকশন করাতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু ভালো শিল্পী হওয়া আর আমলাতন্ত্রকে কনফিডেন্সে নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালানো দুইটা দুই রকম আর্ট। দ্বিতীয় কাজটা করবার জন্য লাগে ধৈর্য এবং ম্যানেজারিয়াল ক্যাপাসিটি। কলিগদের বুলিং না করে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা দিয়ে অনেক কাজ আদায় করে নেওয়া যায়।
‘পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গেলে যে কম্পোজার লাগে, সেটার সাথে কোনো একটা থিয়েটার দলে নির্দেশনা দেওয়ার টেম্পারামেন্ট এক না। আমার ফিল্ম ইউনিটে আমি যা করতে পারি, একটা সরকারি প্রতিষ্ঠানে আমি তা করতে পারি না।’
এ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি জামিল ভাইয়ের নাটকীয় পদত্যাগ নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলাম না। কারণ তাতে আমাকে এমন কিছু রেফারেন্স টানতে হবে যেটা তার জন্য অস্বস্তিকর হবে। আমি চাচ্ছিলাম না কারণ আমি তাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু ফর রেকর্ডস আমাকে আসলে এগুলো বলতেই হবে। আজকে আমাদের অনেকগুলা কাজ আছে। এটা শেষ করে সময় পেলে লিখব।’
তিনি বলেন, ‘শুধু এইটুকু আপাতত বলে রাখি উনার বলা অনেকগুলা কথা পুরো সত্য নয়, অনেকগুলা কথা ডাহা মিথ্যা এবং কিছু কথা পরিস্থিতি ডিল না করতে পারাজনিত হতাশা থেকে বের হয়ে আসা বলে মনে হচ্ছে। আমার বিস্তারিত লেখা হয়তো উনাকে বিব্রত করতে পারে। কিন্তু আমাকে আপনি এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছেন, যেখানে আমাকে বিব্রতকর হলেও সত্য বলতে হবে, জামিল ভাই।’
আরও পড়ুন:নিজ স্বার্থে কোনো সরকার যেন ইন্টারনেট শাটডাউন করতে না পারে, সে জন্য বাংলাদেশে ইলন মাস্কের স্টারলিংক ইন্টারনেট পরিষেবা আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মঙ্গলবার এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
ফেসবুক পোস্টে প্রেস সচিব লিখেন, ‘ইলন মাস্কের স্টারলিংককে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানো এবং চালু করার মূল কারণ হলো অনলাইন ব্যবসা চিরতরে বন্ধ করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে একাধিকবার ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিক্ষোভ দমন বা বিরোধীদের বড় কোনো আন্দোলন দমন করার জন্য ইন্টারনেট শাটডাউন স্বৈরশাসক ও স্বৈরাচারীদের একটি প্রিয় হাতিয়ার। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় কয়েক হাজার ফ্রিল্যান্সার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কেউ কেউ তাদের চুক্তি এবং চাকরি চিরতরে হারান।
‘বাংলাদেশের বাজারে স্টারলিংকের আগমন মানে ভবিষ্যতের কোনো সরকার ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ করতে পারবে না। অন্তত বিপিও ফার্ম, কল সেন্টার এবং ফ্রিল্যান্সাররা নেট বন্ধ করার নতুন কোনো প্রচেষ্টায় কখনোই আঘাত পাবে না।’
আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে স্টারলিংক বাংলাদেশে চালু করার জন্য ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আরও পড়ুন:সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে গুজব ও উসকানিমূলক কনটেন্ট ছড়ানো বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
এসব প্রচেষ্টা বর্তমান সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিরতা কমাতে এবং অর্থনীতিতে এর ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করে সংগঠনটি।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দেশি ও বিদেশি নানা উৎস থেকে যাচাইহীন ও উসকানিমূলক কনটেন্ট প্রচার হয়েছে। দেশের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিতে এটি বড় ভূমিকা রেখেছে।
‘এর ফলে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এবং বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি হয়। ফলে অর্থনৈতিক উন্নতিও বাধাগ্রস্ত হয়েছে।’
মহিউদ্দিন বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোর সংবাদমাধ্যম এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রবাসীসহ কিছু বিদেশি উৎস থেকে পাওয়া তথ্য প্রচারের উদ্দেশ্য ছিল উসকানি দেয়া এবং নাগরিকদের মধ্যে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেয়া।’
দেশের ডিজিটাল ও সাইবার নিরাপত্তা আইন সংশোধনে এ সময়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কনটেন্ট প্রচার বন্ধ করে জাতীয় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।’
আরও পড়ুন:কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে বাংলাদেশে বন্ধ হওয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বুধবার ফের চালু হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই রাত থেকে দেশে বন্ধ ছিল মোবাইল ইন্টারনেট। তখন থেকে বন্ধ হয়ে যায় ফেসবুকসহ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম।
মেটা ও টিকটকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বুধবার বৈঠক শেষে বিটিআরসি ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছিলেন, বিকেলের মধ্যে চালু হচ্ছে ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউব।
তার ওই বক্তব্যের পর দুপুর থেকেই ফেসবুক চালু হয় দেশে।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে দেশে জনপ্রিয় তিন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ফের চালু করা নিয়ে পলক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমরা যে সকল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিছুটা সময়ের জন্য আসলে সাময়িকভাবে আমরা তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনার ব্যাপারে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিলাম বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) পক্ষ থেকে। আমরা সার্বিক বিবেচনা করে, আমাদের ফ্রিল্যান্সার, ই-কমার্স উদ্যোক্তা, আমাদের ব্যবসায়িক সম্প্রদায় এবং হয়তো স্কুল, কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এগুলো এখন সাময়িকভাবে বন্ধ আছে, কিন্তু আমাদের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, গবেষক বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কিন্তু তারা শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে চায়।
‘সে ক্ষেত্রেও কিন্তু ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব—এই প্ল্যাটফর্ম বেশ প্রয়োজনীয় প্ল্যাটফর্ম। এটা আমরা মনে করি। তো সাময়িকভাবে কিছু বিধিনিষেধ আমরা আরোপ করতে বাধ্য হয়েছিলাম, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে আমি আপনাদেরকে জানাতে চাচ্ছি যে, আজকে আমরা সেই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি এবং বাংলাদেশে আমাদের সাইবার স্পেসে আমরা ফেসবুক, টিকটক এবং ইউটিউবের কার্যক্রম পরিচালনা করতে আর কোনো বাধা রাখছি না। এটা সম্পূর্ণভাবে সবগুলো অ্যাপ্লিকেশন আমরা ওপেন করে দিচ্ছি।’
কখন থেকে প্ল্যাটফর্মগুলো চালু করা হবে, তা নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এটা আমরা এখনই এই প্রেস কনফারেন্স শেষে আমরা নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি বিটিআরসিকে। হয়তো কিছুটা সময় লাগবে। হয়তো এক ঘণ্টা বা দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। আশা করছি আজকে বিকেলের মধ্যে আমরা সবগুলো অ্যাপ্লিকেশন ওপেন করে দিতে পারব।’
আরও পড়ুন:কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে বাংলাদেশে বন্ধ হওয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউব বিকেলের মধ্যে চালু হচ্ছে বলে বুধবার জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
মেটা ও টিকটকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিটিআরসি ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
দেশে জনপ্রিয় তিন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ফের চালু করা নিয়ে পলক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যে সকল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিছুটা সময়ের জন্য আসলে সাময়িকভাবে আমরা তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনার ব্যাপারে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিলাম বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) পক্ষ থেকে। আমরা সার্বিক বিবেচনা করে, আমাদের ফ্রিল্যান্সার, ই-কমার্স উদ্যোক্তা, আমাদের ব্যবসায়িক সম্প্রদায় এবং হয়তো স্কুল, কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এগুলো এখন সাময়িকভাবে বন্ধ আছে, কিন্তু আমাদের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, গবেষক বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কিন্তু তারা শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে চায়।
‘সে ক্ষেত্রেও কিন্তু ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব—এই প্ল্যাটফর্ম বেশ প্রয়োজনীয় প্ল্যাটফর্ম। এটা আমরা মনে করি। তো সাময়িকভাবে কিছু বিধিনিষেধ আমরা আরোপ করতে বাধ্য হয়েছিলাম, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে আমি আপনাদেরকে জানাতে চাচ্ছি যে, আজকে আমরা সেই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি এবং বাংলাদেশে আমাদের সাইবার স্পেসে আমরা ফেসবুক, টিকটক এবং ইউটিউবের কার্যক্রম পরিচালনা করতে আর কোনো বাধা রাখছি না। এটা সম্পূর্ণভাবে সবগুলো অ্যাপ্লিকেশন আমরা ওপেন করে দিচ্ছি।’
কখন থেকে প্ল্যাটফর্মগুলো চালু করা হবে, তা নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমরা এখনই এই প্রেস কনফারেন্স শেষে আমরা নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি বিটিআরসিকে। হয়তো কিছুটা সময় লাগবে। হয়তো এক ঘণ্টা বা দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। আশা করছি আজকে বিকেলের মধ্যে আমরা সবগুলো অ্যাপ্লিকেশন ওপেন করে দিতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি যে, এগুলো বিধিনিষেধ আরোপের ফলে ভিপিএন অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহার করে অনেক ব্যান্ডউইথ ট্রাফিক দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে এবং সেটা একটা নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি। অপর দিকে আর্থিকভাবেও ক্ষতি। সবকিছু মিলিয়ে আমরা একটাই অনুরোধ করব আমাদের গণমাধ্যমের সাংবাদিক বন্ধুদের মাধ্যমে আমাদের দেশের সকল নাগরিকের কাছে যে, আপনারা কোনো মিথ্যা, গুজব, কোনো মিথ্যা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না।
‘আপনারা দয়া করে আমাদের যদি কোনো কর্মকাণ্ডে আপনারা ক্ষুব্ধ হয়ে থাকেন, আমাদের কোনো আচরণে বা কথায় যদি আপনারা মনঃক্ষুণ্ন হয়ে থাকেন, আপনারা আপনাদের মত প্রকাশ করবেন, সমালোচনা করবেন। সেই স্বাধীনতা আমাদের আছে বাংলাদেশে, কিন্তু কেউ আপনারা সহিংসতাকে উৎসাহ দেবেন না।’
আরও পড়ুন:সারা দেশে বাসাবাড়িতে আজ বুধবার রাত থেকেই পরীক্ষামূলকভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হবে। আর মোবাইল ডাটা ইন্টারনেট আগামী সপ্তাহের রোববার বা সোমবার চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমন তথ্য জানিয়েছেন।
বুধবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনের প্রধান সম্মেলন কক্ষে বক্তব্য দেন প্রতিমন্ত্রী।
ইন্টারনেট সেবা সম্পর্কিত সার্বিক বিষয়াবলী নিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে (বুধবার) রাত থেকে ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি বাড়ানো হবে। সারা দেশের বাসা-বাড়িতে আজ রাত থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ব্রডব্যান্ড চালু হবে, যা আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আমরা পর্যবেক্ষণ করব।’
আগামী রবি বা সোমবার সারা দেশে মোবাইল ইন্টারনেট চালু হতে পারে জানিয়ে পলক বলেন, ‘আমরা দৈনিক ৭০-৮০ কোটি টাকা ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছি। এছাড়া ফেসবুক ও ইউটিউব কোনোভাবেই বাংলাদেশের আইন মানছে না। এমনকি তারা তাদের নিজেদের পলিসিও মানছে না।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ফেসবুক আমেরিকার কোম্পানি। তারা সে দেশের সরকারের আইন অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। কিন্তু আমাদের দেশের পলিসি মানে না। আমাদের সাইবার স্পেস ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করতে হলে দেশের আইন মেনে ফেসবুককে সোশ্যাল মিডিয়া চালাতে হবে। তারা (ফেসবুক) নিজেদের ব্যবসার কথা চিন্তা করে; কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের কথা চিন্তা করে না।’
প্রতিমন্ত্রী পলক আরও বলেন, ‘সহিংসতার বিষয়ে ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউবকে চিঠি দেয়া হবে। তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশীয় উদ্যোক্তারা ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউবের বিকল্প হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ তৈরি করলে আমরা সহযোগিতা করব।’
‘৪৮ ঘণ্টায় ৩৫ শিশু নিখোঁজ’- শনিবার (৬ জুলাই) সকাল থেকে এমন একটি পোস্ট দেখা যেতে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ ও ব্যক্তিগত আইডিতে।
পোস্টগুলোতে বলা হয়, ‘ব্রেকিং নিউজ, গত ৪৮ ঘণ্টায় ঢাকা ও চট্টগ্রামে ৩৫ শিশু নিখোঁজ হয়েছে।’
ফেসবুকে ব্যাপকভাবে এই তথ্য ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবকরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
তবে এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপি জানায়, তদন্তে দেখা গেছে একের পর এক শিশু নিখোঁজ হওয়ার এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। নিখোঁজ হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ করে পোস্ট করা হয়েছিল তাদের অনেককে পরে পাওয়া গেছে। আবার অনেককে পাওয়া গেলেও তা আর জানানো হয় না।
আদাবর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা এ ধরনের কোনো তথ্য পাইনি।’
একই বক্তব্য দেন শাহবাগ থানার ওসি নূর আলম।
এ প্রসঙ্গে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টায় ৩৫ শিশু নিখোঁজ হয়েছে এমন কোনো তথ্য ডিএমপির কাছে নেই।’
তিনি জানান, ৪ থেকে ৬ মে পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টায় বিভিন্নভাবে শিশু নিখোঁজের ঘটনায় বিভিন্ন থানায় ৩৩টি জিডি করা হয়েছে। জুন মাসের ৪ থেকে ৬ তারিখ পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টায় জিডি করা হয়েছে ৩৬টি। একইভাবে ৪ থেকে ৬ জুলাই ৭২ ঘণ্টায় ৩২টি জিডি করা হয়।
ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়া ‘৪৮ ঘণ্টায় ৩৫ শিশু নিখোঁজ হয়েছে’ এমন তথ্য সঠিক নয়। এছাড়া নিখোঁজ হওয়া শিশুদের পরবর্তীতে সন্ধান পাওয়া গেছে।”
আরও পড়ুন:
মন্তব্য