× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Cyclone Jawad Southern farmers worried about paddy and winter vegetables
google_news print-icon

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ: ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় উপকূলের কৃষক

ঘূর্ণিঝড়-জাওয়াদ-ফসল-নিয়ে-দুশ্চিন্তায়--উপকূলের-কৃষক
রাজবাড়ীতে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ক্ষেতে কেটে রাখা আমন ধান। ছবি: নিউজবাংলা
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে সোমবার। সেই নিম্নচাপের প্রভাবে রোববার থেকেই থেমে থেমে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয়। সোমবার সারা দিন এই বৃষ্টি ছিল। টানা দুই দিনের বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো বাতাসে উপকূলীয় অঞ্চলে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদের’ প্রভাবে সৃষ্ট বৈরি আবহাওয়ায় দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমন ওঠার এই সময়ে ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টি অনেক এলাকার ধান গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। ক্ষেতে পানি জমে শীতের সবজিও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে সোমবার। তবে নিম্নচাপের প্রভাবে রোববার থেকেই থেমে থেমে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয়। সোমবার সারা দিন এই বৃষ্টি ছিল।

টানা দুই দিনের বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো বাতাসে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা তাই কৃষকদের। এরই মধ্যে অনেক এলাকায় ফসলের বেশ ক্ষতি হয়েছে। তবে বৃষ্টি না কমা পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

নিউজবাংলার বরগুনা, পটুয়াখালী ও রাজবাড়ি জেলা প্রতিনিধির পাঠানো খবর-

বরগুনা: উপকূলীয় জেলা বরগুনার অনেক এলাকায় এরই মধ্যে নুয়ে পড়েছে আমন ধান। ক্ষেতে পানি জমায় ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন এখানকার কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের (খামার বাড়ি) তথ্যমতে, বরগুনায় এ বছর ৯৮ লাখ ৮০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে।

কৃষিবিভাগ জানিয়েছে, উপকূলীয় এলাকার কৃষকদের প্রধান ফসল রোপা আমন। বিভিন্ন এলাকার মাটির ধরন অনুযায়ী জেলার ৫৫ ভাগ জমিতে বিআর, ব্রি ও বিনা এই তিন জাতের উফশী আবাদ হয়েছে। বাকি ৪৫ ভাগ জমিতে স্থানীয় জাতের রোপা আমনের আবাদ হয়েছে।

কৃষকরা জানান, তিন দিনের বৃষ্টি ও বাতাসে হেলে পড়েছে ধান গাছ। মাঠে পানি জমায় ওই ধান পচে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ: ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায়  উপকূলের কৃষক
ঝোড়ো বাতাসে নুয়ে পড়েছে ক্ষেতের ধান গাছ

বরগুনা সদর উপজেলার ক্রোক বৈঠাকাটা এলাকার কৃষক আলম মিয়া জানান, ‘মুই এই বচ্ছর চাইর একর জমিনে রোপা আমন আবাদ করছি। গত দুই দিনের দেওই আর বাতাসে মোর জমির এক তিনের দুই ভাগ ধান সব মাডিতে পইর‌্যা গ্যাছে।’

একই অবস্থা ওই এলাকার কৃষক শাহজাহান, মজিদ, আফজাল, কুদ্দুস ও কামালসহ প্রায় সব আমনচাষির।

পাথরঘাটার কালমেঘা ইউনিয়নের কৃষক আইয়ুব আলী হাওলাদার বলেন, ‘গত কয় দিনের দেওই আর বাতাসে মোর খ্যাতের অর্ধেক ধান নুইয়া মাডিতে পইর‌্যা গ্যাছে। পানি জইম্মা গ্যাছে কোলায় (গোড়ায়)। এহন হেই পানতে ধান হুইয়া পইর‌্যা নষ্ট অইয়া যাইতে আছে।’

তালতলীর নিশানবাড়িয়া এলাকার আবদুল হক মিয়া বলেন, ‘মোগো এই ধানই মেরুদণ্ড। ধানে কেবল পাইক্কা আইছে এই সোমায় মোর ধানগুলা বেবাক খ্যাতে হুইয়া পড়ছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুর রশীদ বলেন, ‘আমন মৌসুমে রোপা আমনের ধান পোক্ত হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই ধান কাটা শুরু হবে। এ অবস্থায় জাওয়াদের প্রভাবে ধান গাছ মাটিতে হেলে পড়েছে।

‘এতে কিছু ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে, তবে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। আমরা কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে ধানগাছগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও মাঠের পানি অপসারণের পরামর্শ দিচ্ছি।’

এদিকে জাওয়াদের প্রভাবে সোমবার বিকেল পর্যন্ত বরগুনায় গুঁড়িগুঁড়ি ও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে বেড়েছে শীতের তীব্রতাও।

এতে ভোগান্তিতে পড়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও নিম্নআয়ের সাধারণ মানুষ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সারা দিন বৃষ্টিপাত হতে পারে দেশের অনেক জায়গায়। মঙ্গলবার থেকে দেশের বেশিরভাগ এলাকার আকাশ পরিষ্কার হতে থাকবে। আগামী দুই-এক দিন পর থেকে বাড়বে শীতের প্রকোপ।

পটুয়াখালী: জেলায় আমন, ডাল ও তরমুজের ক্ষতির আশঙ্কার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

ক্ষেতের জমানো পানি নেমে গেলে অবশ্য তেমন একটা ক্ষতি নাও হতে পারে বলে জানিয়েছেন পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক একেএম মহিউদ্দিন। সোমবার সকাল থেকে কলাপাড়া ও গলাচিপার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

মহিউদ্দিন জানান, জেলায় এবার ১ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হলেও এরই মধ্যে প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর জমির ধান ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। বাকি যে আমন মাঠে রয়েছে তার মধ্যে শুধু দেশি জাতের ধান বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তা ছাড়া বেড়িবাঁধের বাইরে যে সব এলাকায় পাকা ফসল ক্ষেত রয়েছে সেখানে পানি জমলে ক্ষতি হতে পারে। তারমতে, এ অঞ্চলের জমিতেই খুব একটা পানি জমে না, এ জন্য আমনের তেমন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম।

এ কৃষি কর্মকর্তা অবশ্য খেসারি ডালের ভালো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

তিনি জানান, জেলায় এ বছর ৪ হাজার হেক্টর জমিতে খেসারি ডালের আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হতে পারে। আগামী দুই-এক দিনেরও বৃষ্টি হলে এ ক্ষতি হতে পারে বলে শঙ্কা তার।

তবে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির ডালে তেমন ক্ষতি হবে না বলে দাবি করেন তিনি।

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ: ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায়  উপকূলের কৃষক
ক্ষেতে পানি জমায় শঙ্কা দিয়েছে চারা নষ্ট হওয়ার

মহিউদ্দিন আরও জানান, রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়ার চাষিরা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম তরমুজ চাষ করেছেন। এর মধ্যে গত দুই দিনে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিতে তরমুজ গাছের ক্ষতি হয়েছে।

বিশেষ করে বেড়িবাঁধের বাইরের অনেক স্থানে বীজ নষ্ট হবার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আগামী দুই-এক দিন না গেলে বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতির হিসাব বের করা সম্ভব না বলে জানান তিনি।

জেলা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা জানান, সোমবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পটুয়াখালীতে ২৯ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত আরও ২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও জেলায় ভারী বর্ষণের আভাস রয়েছে।

রাজবাড়ী: টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে রাজবাড়ীতে পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন ও শীতকালীন ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

সোমবার সদর উপজেলার রামকান্তপুরের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ক্ষেতে কেটে রাখা পাকা ধান পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়া বাঁধাকপি ও ফুলকপি ক্ষেতে পানি জমে গেছে।

সদরের রামকান্তপুরের কৃষক কলি শেখ জানান, দুই দিন আগে পাকা ধান কেটে জমিতে রেখেছিলেন শুকানোর জন্য। এরপর থেকেই বৃষ্টি হওয়ায় ক্ষেতের সব ধান পানিতে ডুবে গেছে। এতে ধান ঘরে তুলতে পারবেন কি না এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এই ধান দুই-এক দিনের মধ্যে ঘরে তুলতে না পারলে এখানেই নষ্ট হয়ে যাবে। আমার ২ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সারা মৌসুমের কষ্ট বৃথা যাচ্ছে।’

একই এলাকার কৃষক দেনেশ নারায়ন জানান, তিনিও ৩ দিন আগে ধান কেটে আটি বাঁধার জন্য জমিতে রেখে দিয়েছিলেন, কিন্তু বৃষ্টিতে ৩ বিঘা জমির পাকা ধান এখন পানির নিচে। এতে সব ধান নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে ভয় তার।

শীতকালীন সবজি চাষি বক্কার শেখ জানান, তার ফুলকপি ক্ষেতে পানি আটকে আছে। গাছগুলো এরই মধ্যে নেতিয়ে পড়েছে। গাছগুলো মরে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তার।

দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনে শীর্ষ জেলারগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে আছে রাজবাড়ী। এ বছর জেলায় ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের বীজ রোপন করা হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে এখন দুশ্চিন্তায় জেলার পেঁয়াজ চাষিরা।

জেলা কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, জেলায় এ বছর প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে সবজি রয়েছে, যেখানে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপপরিচালক এসএম শহীদ নূর আকবর জানান, তাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন এলাকায় তথ্য সংগ্রহ করেছেন। বৃষ্টি শেষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। তবে এরই মধ্যে ক্ষয়ক্ষতি কিছু তথ্য মিলেছে।

প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন বরগুনা প্রতিনিধি রুদ্র রুহান, পটুয়াখালী প্রতিনিধি জাকারিয়া হৃদয় ও রাজবাড়ী প্রতিনিধি রবিউল আউয়াল।

আরও পড়ুন:
জাওয়াদ: সুন্দরবনে শুঁটকিপল্লিতে ‘ব্যাপক ক্ষতি’
‘বৃষ্টি থামার লক্ষণ নেই, সঙ্গে কী যে ঠান্ডা পড়িছে’
শক্তি হারিয়ে ‘জাওয়াদ’ এখন গভীর নিম্নচাপ, ঝরাবে বৃষ্টি

মন্তব্য

আরও পড়ুন

কুমিল্লায় ৪ জনের নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত

কুমিল্লায় ৪ জনের নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত

কুমিল্লায় চার জনের শরীরে নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে এক নারী চিকিৎসকসহ তিনজন পুরুষ রয়েছেন।

শনিবার (১৪ জুন) কুমিল্লা সিটি স্ক্যান এমআরআই স্পেশালাইজড অ্যান্ড ডায়ালাইসিস সেন্টারে করোনা পরীক্ষা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

করোনায় আক্রান্তরা হলেন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আবদুল মোমিন (৭০), কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার ডা. সানজিদা (৩০), বুড়িচং উপজেলার মো. হেলাল আহমেদ (৩৮) এবং সদর উপজেলার মো. ইবনে যুবায়ের (৩৯)।

সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির বলেন, গত তিন দিনে কুমিল্লায় ১৩ জন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা কয়। পরীক্ষা শেষে তাদের মধ্যে চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বাকিদের নগরীর একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নমুনা পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

তিনি বলেন, চারজনই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দুজন এরই মধ্যে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় চলে গেছেন।

তবে আরেকজনের বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি সিভিল সার্জন।

করোনার প্রথম ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর এতদিন কুমিল্লায় নতুন করে কেউ শনাক্ত হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু এখন আবার নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি দ্বিতীয় ধাপের শুরু হতে পারে এবং এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In Chittagong six days Karona identifies 3 

চট্টগ্রামে ছয় দিনে করোনা শনাক্ত ৯ 

চট্টগ্রামে ছয় দিনে করোনা শনাক্ত ৯ 

চট্টগ্রামে নতুন করে আরো একজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত ছয় দিনে মোট ৯ জনের শরীরে এ ভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার সকাল আটটা) ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। ৪০ বছর বয়সী আক্রান্ত ওই ব্যক্তি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেহাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তিনি শুক্রবার নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা করান। সেখানেই তার শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়।

এদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্ত নয়জনের মধ্যে পুরুষ ৫ জন এবং নারী ৪ জন। এদের মধ্যে ৭ জন নগরের এবং ২ জন উপজেলার বাসিন্দা।

অন্যদিকে, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত বেসরকারি পর্যায়ে করোনা শনাক্তকরণের পরীক্ষা চালু আছে। তবে শিগগিরই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) আরটি–পিসিআর পরীক্ষা শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Daudkandi Upazila Health Complex was injured in the fire

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগুন, আহত ৩

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগুন, আহত ৩

কুমিল্লার দাউদকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দূর্ঘটনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। তবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোগীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে গিয়ে হাসপাতালের তিনজন কর্মী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা ছুটে আসে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আহতরা হলেন ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১৪জুন) বেলা ১১টায় দাউদকান্দি উপজেলা গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় ষ্টোর রুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে হাসাপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের এবং বহিঃবিভাগে চিকিৎসা সেবা প্রায় দুই ঘন্টা বন্ধ থাকে৷ খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ১১ টার দিকে হাসপাতালের তিনতলার ষ্টোর রুমে আগুনের ধোয়া দেখা যায়। ধোয়া দেখে পাশের ওয়ার্ডের রোগীর স্বজন ও নার্সরা আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করে। এ সময় হাসপাতালে থাকা রোগী ও তাদের স্বজনরা দৌঁড়াদৌড়ি শুরু করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পল্লী বিদ্যু ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা নামে তিন কর্মচারী আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মোঃ ইদ্রিস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসার পর স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। প্রাথমিক ধারনা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনে সূত্রপাত, পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে মূল কারণ জানা যাবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালের ৩য় তলায় ডেঙ্গু রোগীদের ওয়ার্ডের পাশের কক্ষে ষ্টোর রুমে ঔষধসহ রোগীদের সেবার কাজে ব্যবহৃত সব ধরনের মালামালের সাথে কিছু দামী সরঞ্জামও ছিল। ওই কক্ষে আগুনে অধিকাংশ মালামালই পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু মালামাল বের করতে পারলেও তা ভালো আছে কিনা পরবর্তীতে যাচাই করে বলেতে পারবো । আগুনে ক্ষতির পরিমান এখন নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আর আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং মালামাল বিশেষ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার বের করতে গিয়ে আমাদের আউটসোর্সিংয়ে কাজ করা তিনজন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন৷

মন্তব্য

বাংলাদেশ
What are the obstacles to the smuggling and the loot of the stone?
জাফলংয়ে হামলা

চোরাচালান ও পাথর লুট নির্বিঘ্ন করতেই কী পর্যটকদের বাধা?

চোরাচালান ও পাথর লুট নির্বিঘ্ন করতেই কী পর্যটকদের বাধা? জাফলংয়ের পাথুরে নদী। ছবি: নিউজবাংলা

ঈদের ছুটিতে সিলেটে বেড়াতে এসে হেনস্তার শিকার হয়েছেন পর্যটকরা। একদিনের ব্যবধানে জাফলংয়ে পর্যটকদের উপর হামলা ও কোম্পানীগঞ্জে পর্যটনকেন্দ্র থেকে পর্যটকদের বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। দুটি ক্ষেত্রেই পর্যটকদের বিরুদ্ধে অশ্লীলতা ও পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ তোলা হয়েছে। যদিও স্থানীয় একটি অংশের অভিযোগ, নির্বিঘ্নে চোরাচালান ও পাথর লুট করতেই পর্যটকদের বাধা দেয়া হচ্ছে। পর্যটক সমাগম বাড়লে লুটপাট ও চোরাকারবারে সমস্যা হয়। তাই পর্যটকদের আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে দাবি তাদের।

অশ্লীলতার অভিযোগ এনে সোমবার রাতে মৌলভীবাজারের রাজনগরে “রাজনগর রিসোর্ট এন্ড কফি হাউজে” তালা দিয়েছে স্থানীয় একদল লোক। এসময় স্থানীয় থানার পুলিশ সদস্যদেরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দুটি স্থান জাফলং ও কোম্পানীগঞ্জ। সবসময়ই এই দুই এলাকায় পর্যটকদের ভিড় থাকে। ঈদের মতো বড় ছুটিতে ভিড় কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সীমান্তবর্তী এই দুই এলাকা দিয়েই ভারত থেকে দেদারছে চোরাই পণ্য আসে। এছাড়া এসব এলাকার পাথুরে নদী ও ছড়া থেকে পাথর লুটপাটও নিত্তকার ঘটনা। গত বছরের ৫ আগস্টের পর চোরাচালান ও পাথর লুট অনেকটা বেড়ে গেছে। প্রশাসনও লুটপাটকারী ও চোরাকারবারীদের ঠেকাতে পারছে না।

জানা যায়, ঈদের পরদিন রোববার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের পাহাড় থেকে নেমে আসা পাথুরে ছড়া উৎমাছড়া পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় করেন অনেক পর্যটক। বিকেলে সেখানে কিছু সংখ্যক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও স্থানীয় কিছু লোক জড়ো হয়ে পর্যটকদের বের করে দেয়। এ রকম একটি ভিডিও সোমবার রাত থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। জড়ো হওয়া যুবকরা পর্যটকদের বিরুদ্ধে অশ্লীলতা, মদ্যপান ও এলাকার পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ করেন।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পর্যটকদের বের করে দেয়ার একটি ভিডিওতে এক যুবককে বলতে শোনা যায়, 'এই এলাকা আলিমদের এলাকা, দ্বীনদার এলাকা। কিন্তু এইখানে অনেকে অনেক পরিবেশে থেকে আসে। এসে মদ খায়, আরও অনেককিছু করে, এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়। তাই আমাদের আবেদন, আপনারা এখানে আর আসবেন না। তাছাড়া এটি পর্যটনভুক্ত এলাকাও নয়'।

ভিডিওতে আরও বলতে শোনা যায়, ‘এই এলাকার আলেম-ওলামা ও স্থানীয়রা সিদ্ধান্ত নিয়েছে উৎমাছড়াকে পর্যটন করা যাবে না। তাই আপনারা যারা এখানে এসেছেন দয়া করে এখান থেকে চলে যান। আপনারা এখানে থেকে এখানের পরিবেশ নষ্ট করবেন না। এই এলাকার পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য আমরা এখানে পর্যটকদের আসতে নিরুৎসাহিত করছি আজকের পর আপনারা এখানে আর কোনদিন আসবেন না’।

পর্যটকদের বের করে দেয়ার এই ভিডিও যুক্ত করে পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম ফেসবুকে লিখেন, ‘একদিকে চলবে পর্যটক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা অন্যদিকে পর্যটনে বাঁধা! দেশের ভেতরে সরকার ঘোষিত সংরক্ষিত এলাকা ও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী মালিকানাধীন জায়গা ব্যতীত কোথাও জনসাধারণের প্রবেশে বাঁধা দেয়া মানুষের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ। মানুষের চলাচলে বাঁধা প্রদান ও হুমকি প্রদান দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু সিলেটে এই অপরাধ ইতিপূর্বেও ঘটেছে।

কিম লিখেন, 'বছর কয়েক পূর্বে গোয়াইনঘাট উপজেলায় এক ঈদে মায়াবন নামে পরিচিত যুগীরকান্দি জলারবনে পর্যটকদের উপর হামলা করা হয়েছিল। এরপর থেকে ওই বনে কোন পর্যটক আর পা রাখেনি। স্থানীয় মাদ্রাসা ওই জলার বনের মাছ ভোগ করে বলে এখানে পর্যটক আসুক তা চায় না। অশ্লীলতার দোহাই দিয়ে যুগীরকান্দি বন বা মায়াবন সবার দৃষ্টির আড়ালে নিয়ে যাওয়া হয়। উতমাছড়ার পাথর লুটে ওই মাদ্রাসার সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তা জানা প্রয়োজন।'

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ বলেন, ‘উৎমাছড়ায় বেড়াতে যাওয়া জন্য নির্দিষ্ট কিংবা উপযুক্ত রাস্তা নেই। এ জন্য পর্যটকেরা স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর মাড়িয়ে যাতায়াত করেন। এতে তারা অসুবিধায় পড়েন। বৈঠকে এমন দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই এলাকায় মাদক সেবন ও অশ্লীলতা হয়, এমনটিও দাবি করা হয়েছে’।

উৎমাছড়ায় পর্যটকদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ‘এ অঞ্চলে এমন ঘটনা আগে কখনোই ঘটেনি। বিষয়টি ইউএনওকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তিনি তদন্ত করে দেখছেন। ইউএনও জানার চেষ্টা করছেন, বিষয়টি কী?’

এদিকে, সিলেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে পর্যটকদের উপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয় কিছু লোক। হামলাকারীরা চোরাকারবারের সাথে সম্পৃক্ত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। সোমবার বিকেলে জাফলং বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কবির হোসেন বলেন, স্থানীয় বখাটেরা পর্যটকদের ওপর হামলা করেছে। পরে সাংবাদিক ও ইউপি সদস্য মিলে ঘটনাস্থলেই বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, ‘তুচ্ছ বিষয় নিয়ে পর্যটকদের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গেই সমাধান হয়ে গেছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় অনেকের ভুল ধারণা হয়েছে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Hundreds of families on Shahpir Island are now sheltered
প্রবল জোয়ার ও টানা বৃষ্টি

শাহপরীর দ্বীপে শত শত পরিবার এখন আশ্রয়হীন

খোলা আকাশের নিচে জীবনযাপন
শাহপরীর দ্বীপে শত শত পরিবার এখন আশ্রয়হীন শাহপরীর দ্বীপ। ছবি: নিউজবাংলা

নাফ নদীর ভাঙন যেন থামছেই না। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জালিয়া পাড়ায় প্রতিদিনই নদীর গর্ভে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ভেঙে যাচ্ছে স্বপ্ন। কিছুদিন আগেও যেখানে ছিল ঈদের প্রস্তুতি, হাসি-আনন্দে মুখর পরিবার—আজ সেখানে কান্না আর হাহাকার। প্রবল জোয়ার ও টানা বৃষ্টির তোড়ে শত শত পরিবার এখন আশ্রয়হীন, চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে। বসতভিটা হারিয়ে কেউ খোলা আকাশের নিচে, কেউ গাছতলায় কিংবা নদীর পাড়েই মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজছে।

‘নাফের পানি ও তুফানে আমার ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। ঈদের দিনেও কোরবানি দিতে পারিনি, ছেলেমেয়েদের নতুন জামা কিনতে পারিনি। এর চেয়ে বড় কষ্ট কিছু হতে পারে না।’-বলেন ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা আবুল আলী। আলোকিত শহরের ঈদ আনন্দের বিপরীতে এই দ্বীপে নেই রান্নার হাঁড়ি, নেই নতুন জামার ঝলক, শুধু অসহায়ত্ব আর কান্নার সুর।

ভাঙনের মধ্যে দাঁড়িয়ে এক বৃদ্ধের আহাজারি

বৃদ্ধ আবুল আলী, কাঁপা গলায় হাতের ইশারায় দেখালেন যে জায়গাটিতে দাঁড়িয়ে আছেন, সেখানেই ছিল তার ছোট্ট ঘর। নাফের পানি একরাতে সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ঘর, চুলা, শোবার জায়গা, কিছুই নাই আর। কতবার ঘর তুলুম? আমাদের দেখার কেউ নাই। বারবার আশার বাণী শুনিয়েছেন প্রশাসন। কেউ আজো কিছু দেয়নি। তবে কিছু করবে এমন আশায় আছি।’

ঈদের রান্নাও থেমে গেছে

বৃদ্ধা চলেমা খাতুন বলেন, ‘নাফের পানি চুলোতে ঢুকে ভেঙ্গে গেছে। এখনো রান্না করতে পারি না। ঈদের দিনেও ছেলে-মেয়েদের মুখে ভাত দিতে পারি নাই। নতুন কাপড় তো দূরের কথা। কোরবানিও করা সম্ভব হয় নাই। সাহায্য আসলেও তা আমরা পাই না।’

শুধু আবুল আলী বা চলেমা খাতুনই নন, এমন গল্প আজ জালিয়াপাড়ার শত শত পরিবারের। ঈদের সময় যখন দেশের অন্যপ্রান্তে আনন্দে মুখর প্রতিটি বাড়ি, তখন এই দ্বীপে ঈদ মানে কষ্ট, ভাঙা ঘর, খালি পেট, আর ভেজা চোখ।

আশ্বাস, প্রতিশ্রুতি—কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নেই

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, বহুবার প্রশাসনের লোকজন এসেছেন, ছবি তুলেছেন, কথা দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে কোনো সহায়তা তারা পাননি। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন,

‘কেবল ছবি তুললে আর রিপোর্ট করলেই কি ঘর ফিরে পাই? আমরা তো বাস্তব সাহায্য চাই।’ এক দশকের বেশি সময় ধরে চলছে নদীভাঙনের আতঙ্ক। শাহপরীর দ্বীপে নাফ নদীর ভাঙন নতুন নয়। ২০১২ সালের ভয়াবহ সামুদ্রিক জোয়ারে এই দ্বীপের চারটি পাড়ার অনেক ঘরবাড়ি, মসজিদ, দোকান সাগরে বিলীন হয়ে যায়। নোনা পানি নষ্ট করে দেয় কৃষিজমি, নিশ্চিহ্ন হয় গ্রাম, গৃহহীন হয়ে পড়ে হাজারো মানুষ। কিন্তু এত বড় অভিজ্ঞতার পরও দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

২০২৫ সালের এই ঈদুল আজহার সময়, ইতিহাস যেন আবার নিজের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে—আর এই পুনরাবৃত্তি শুধু কষ্টের, শুধু কান্নার। ধ্বংসের চিত্র এখনো স্পষ্ট জালিয়াপাড়ার বিভিন্ন স্থানে এখনো পড়ে আছে ভাঙা কাঠামো, উপড়ে যাওয়া গাছের শিকড়, পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া ঘরের চিহ্ন। পথচারীদের চোখে-মুখে শোক, মুখে একটাই প্রশ্ন—‘এই ভাঙন কি আর থামবে না?’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়া পাড়ায় যেসব বাংলাদেশি নাফ নদীর ভাঙনে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে তাদের তালিকা করে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The bodies of the EasyBike driver recovered from the Chandana River

চন্দনা নদী থেকে ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার

চন্দনা নদী থেকে ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার চন্দনা নদী থেকে মো. আসলাম প্রামানিক (৪২) নামে এক ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে কালুখালী থানা পুলিশ।
বুধবার (১১ জুন) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের চন্দনা ব্রিজের নিচ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আসলাম শেখ পাংশা উপজেলার চরলক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং পিয়ার আলী প্রামানিকের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসলাম শেখ গত মঙ্গলবার ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাত পর্যন্ত তিনি আর বাড়িতে ফেরেননি। বুধবার সকালে স্থানীয়রা চন্দনা ব্রিজের নিচে একটি মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে মরদেহটি আসলাম শেখের বলে শনাক্ত করেন।
এ বিষয়ে রাজবাড়ীর সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) দেবব্রত সরকার জানান, “প্রথমে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, ইজিবাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে আসলাম শেখকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
পুলিশ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Narayanganj battery chasit Atorixa and Microbes clash killed 2

নারায়ণগঞ্জে ব্যাটারী চা‌লিত অ‌টোরিক্সা ও মাই‌ক্রোবা‌সের মু‌খোমু‌খি সংঘর্ষ : নিহত ২

নারায়ণগঞ্জে ব্যাটারী চা‌লিত অ‌টোরিক্সা ও মাই‌ক্রোবা‌সের মু‌খোমু‌খি সংঘর্ষ : নিহত ২

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ব্যাটারী চা‌লিত অ‌টোরিক্সা ও মাই‌ক্রোবা‌সের মু‌খোমু‌খি সংঘর্ষে ২ জন নিহত হ‌য়ে‌ছে।

সোমবার রা‌তে উপ‌জেলার তারা‌বো এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘ‌টে। নিহতরা হলেন, তারা‌বো সুলতানবাগ এলাকার দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সাবেক রূপগঞ্জ প্র‌তি‌নি‌ধি মরহুম আবুল হাসান আসিফের ছেলে শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও অ‌টো‌রিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার রা‌তে তারা‌বো বিশ্ব‌রোড এলাকা থে‌কে অ‌টো‌রিক্সা যোগে তারা‌বো সুলতানবাগ এলাকার বা‌ড়ি‌তে ফির‌ছি‌লেন শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তা‌মিম সরকার (২৯)। প‌থিম‌ধ্যে সাই‌ফিং ফ্যাক্টরীর সাম‌নে এক‌টি হাই‌য়েস মাই‌ক্রোবা‌সের সা‌থে অ‌টো‌রিক্সা‌টির মু‌খোমু‌খি সংঘর্ষ হয়। সংঘ‌র্ষে অ‌টো‌রিক্সাটি দুম‌ড়েমুচ‌ড়ে যায়।

এ সময় ঘটনাস্থ‌লেই নিহত হয় অ‌টো‌রিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫) এবং আহত হয় অ‌টো‌রিক্সার যাত্রী শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তা‌মিম সরকার (২৯)। তা‌দের ম‌ধ্যে শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশ ও তার বন্ধু তা‌মিম সরকারকে গুরুত্বর আহত অবস্থায়

স্থানীয়রা উদ্ধার ক‌রে ঢাকা মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে নি‌য়ে গে‌লে চি‌কিৎসকরা শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশকে মৃত ঘোষনা ক‌রেন।

এ ব্যাপা‌রে রূপগঞ্জ থানার অ‌ফিসার ইনচার্জ (ও‌সি) লিয়াকত আলী ব‌লেন, দূর্ঘটনার পর হাই‌য়েস মাই‌ক্রোবা‌সের চালক মাই‌ক্রোবাসটি নি‌য়ে পা‌লি‌য়ে যাওয়ায় তা‌কে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নি।

মন্তব্য

p
উপরে