× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
December 7 was a milestone in the war of liberation
google_news print-icon

মুক্তিযুদ্ধে ৬ ডিসেম্বর ছিল মাইলফলক

মুক্তিযুদ্ধে-৬-ডিসেম্বর-ছিল-মাইলফলক
পশ্চিমবঙ্গের শিকারপুর ট্রেনিং ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুশীলন। ছবি: সংগৃহীত
যখন মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ল এবং একটি পর্যায়ক্রমিক অবস্থান তৈরি করল, সে সময় ভারত ওই অবস্থাতেই বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দিল। এতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ন্যায্যতা পেল।

৬ ডিসেম্বরকে বাংলাদেশ ও ভারতের মৈত্রী দিবস হিসেবে পালন করছে ঢাকা ‍ও দিল্লি। কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দিনটিকে পালনের সিদ্ধান্ত হয় চলতি বছরের মার্চে ভারতের নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময়।

ভারত ও বাংলাদেশ ছাড়াও আরও ১৮টি দেশ এই মৈত্রী দিবস পালন করবে। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বেলজিয়াম, কানাডা, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্র।

১৯৭১ সালের ডিসেম্বর টালমাটাল ছিল পরিস্থিতি। স্নায়ুযুদ্ধের সেই সময়ের সমীকরণে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন তখন পাকিস্তানের পক্ষে।

অন্যদিকে ভারত এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন অবস্থান নেয় বাংলাদেশের পক্ষে। সম্প্রতি প্রকাশিত দলিলপত্রে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সনের কাছে মার্চের আগেই বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের আগমনের সংবাদ দেন তাদের কূটনীতিক হেনরি কিসিঞ্জার।

অন্যদিকে আগস্টের মাঝামাঝি বেইজিংয়ে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত খাজা মোহাম্মদ কায়সারকে ডেকে চীনের প্রেসিডেন্ট চৌ এন লাই সাফ জানিয়ে দেন, চীন পাকিস্তানের পক্ষে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেবে না। এ সংবাদ জেনেভায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত পি কে হালদারকে জানিয়ে দেন সেখানে নিযুক্ত পূর্ব পাকিস্তানের তরুণ কূটনীতিক ওয়ালিউর রহমান।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন যতই যুদ্ধবিরতির দাবি তুলুক না কেন, দিল্লি ও মস্কোর দাবি ছিল আগে আত্মসমর্পণ, পরে যুদ্ধবিরতি।

মুক্তিযুদ্ধে ৬ ডিসেম্বর ছিল মাইলফলক
জাতিসংঘে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা চালিয়ে গেছে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধবিরতির। ছবি: সংগৃহীত

সেই সময় সম্পর্কে লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ তার অপারেশন ভারতীয় হাইকমিশন বইয়ে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ নিয়ে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে একটা ছায়াযুদ্ধ বা প্রক্সি ওয়ার চলছিল কয়েক মাস ধরে। ৩ ডিসেম্বর শুরু হয়ে যায় সরাসরি যুদ্ধ। ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতীয় স্থায়ী প্রতিনিধি সমর সেন জাতিসংঘে একটি বিবৃতি দেন।

মুক্তিযুদ্ধে ৬ ডিসেম্বর ছিল মাইলফলক
৩ ডিসেম্বর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ভারত। ছবি: সংগৃহীত

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সামরিক নির্যাতন ও গণহত্যার বিষয়টিকে ভারত-পাকিস্তানের বিরোধ হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একদিন সত্যি সত্যিই স্বাধীন হবে…ভারত চেয়েছে বলেই বাংলাদেশ স্বাধীন হবে না, যদিও ভারত তাকে সাহায্য দিয়ে যাবে।

‘১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিল । আজ তিনি জেলে পচছেন। তার কী অবস্থা কেউ জানে না। কোনো নারী, পুরুষ বা শিশু বলতে পারবে না—আমি শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি। পাকিস্তানের সৈন্যরা যে ভয়াবহ নৃশংসতা চালাচ্ছে, মানব ইতিহাসে তা নজিরবিহীন। গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, শিশুদের খুন করা হচ্ছে, নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। আপনারা এসব ঘটনার ছবি দেখেছেন, যা এসবের সাক্ষী। পাকিস্তানে একটা বিয়োগান্তক ঘটনা ঘটছে বললে যথেষ্ট বলা হবে না। এ ব্যাপারে আমাদের সহানুভূতি থাকা এবং এসব ভুলে যাওয়া উচিত—এ রকম মনে করলে হবে না। এসব নৃশংসতা ঘটেছে এবং এক কোটি মানুষ পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।’

এর দুই দিন পর ৬ ডিসেম্বর প্রেক্ষাপট পাল্টে যায়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ভারত কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে। ওই দিন নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে একটি বিবৃতি দেন সমর সেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর সরে যাওয়া উচিত। শেখ মুজিবুর রহমানকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে। ২৫ মার্চের পর থেকেই তিনি জেলে পচে মরছেন। পাকিস্তানিদের উচিত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া। এ কাজগুলো এখনও করা সম্ভব। এখনও যথেষ্ট সময় আছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এ পদক্ষেপগুলো নিতে পাকিস্তান সরকারকে পরামর্শ দিতে পারে।’

ওই সময় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুধু বাংলাদেশ সীমান্তেই নয়, পশ্চিম সীমান্তেও ছড়িয়ে পড়েছিল। যুদ্ধবিরতি ঘোষণার জন্য উভয় দেশের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ ছিল। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি জর্জ বুশ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিকে একটি চিঠি দেন।

চিঠিতে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের একটি পক্ষ পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। কিন্তু অপর পক্ষ ভারত এখনও মেনে নেয়নি। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে বিশ্বশান্তির লক্ষ্যে নিরাপত্তা পরিষদের কর্তব্য হলো জরুরি ভিত্তিতে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকা।’

একই দিন সমর সেন জাতিসংঘের মহাসচিব উ থান্টকে একটি চিঠি দেন। তিনি জর্জ বুশের বক্তব্যের ইঙ্গিত দিয়ে যুদ্ধবিরতির প্রশ্নে ভারতের ভূমিকা ব্যাখ্যা করেন। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পেছনে যে সূক্ষ্ম রাজনীতি কাজ করেছিল, তা আন্তর্জাতিক কূটনীতির পরিপ্রেক্ষিতে বিধিসম্মত মনে হলেও এর শিকার হতো বাংলাদেশ।

জাতিসংঘ মহাসচিবকে লেখা চিঠিতে সমর সেন বলেন, ‘যদি একটি রাষ্ট্রের ওপর ওই রাষ্ট্রের একটি অঞ্চলের জনগণের আস্থা না থাকে—যেটা বাংলাদেশের বেলায় হয়েছে, তাহলে একটা আলাদা রাষ্ট্রের জন্মের শর্ত তৈরি হয়ে যায়।

‘ভারত মনে করে, ঠিক এটাই ঘটছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশ নামে নতুন একটি রাষ্ট্র তৈরির ঘোষণা দিয়েছে। ভারত এই রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। নতুন এই রাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী পশ্চিম পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের বক্তব্য না শুনে ভারতকে যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বলা কি বাস্তবসম্মত?’

গবেষক মঈদুল হাসান তার মূলধারা ’৭১ বইয়ে লিখেছেন, ৩ নভেম্বর পাকিস্তানে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত বেঞ্জামিন ওয়েলার্ট সীমান্ত অঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের ব্যাপারে ভারতের অসম্মতির তীব্র সমালোচনা করেন এবং অযাচিতভাবে ১৯৫৯ সালের পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র চুক্তির অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, “পাকিস্তান যেকোনো রাষ্ট্র কর্তৃক আক্রান্ত হওয়ার পর এই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজের অস্ত্র ও সৈন্যবল সহযোগে পাকিস্তানকে সাহায্য করার ব্যাপারে অঙ্গীকারাবদ্ধ।”’

ওয়েলার্টের বিবৃতিতে স্পষ্ট হুমকি দেয়া হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকি। সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারত এমন এক চুক্তি সই করে, যাতে দিল্লি আক্রান্ত হলে মস্কো মনে করবে তারা আক্রান্ত হয়েছে।

চীন আগেই পাকিস্তানকে বলেছিল, যুদ্ধে জড়াবে না

মুক্তিযুদ্ধের ওই সময়টাকে অন্যভাবে দেখেন তখনকার তরুণ কূটনীতিক ওয়ালিউর রহমান। জেনেভায় পাকিস্তানের স্থায়ী মিশনের এ কর্মকর্তা সেই সময়টা স্মরণ করতে গিয়ে বলেন, ‘পাকিস্তান যখন ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে তাদের সেনাদের লেলিয়ে দিল, তখন কেবল জেনোসাইডই ঘটল না, আরো দুটো ঘটনা ঘটল। মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করলেন। তখন থেকে আমরা হলাম পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ। আর সীমান্তের ওপারে ভারত বিষয়টি খুব সতর্কতার সঙ্গে দেখছিল। স্টাডি করছিল। তারা জানত, এখানে কী হচ্ছে বা হতে যাচ্ছে। তারা আমাদের বন্ধু ছিল। কোনো সন্দেহ নাই।

‘কিন্তু এটাও ঠিক যে, ঐতিহাসিকভাবে পিওরলি স্ট্র্যাটেজিক্যালি রাষ্ট্রে ব্যক্তির কোনো জায়গা নেই। যখন অবস্থার অবনতি হলো, যুদ্ধ হলো, যুদ্ধের শুরুতেই তখন আমরা সবাই বুঝলাম, পাকিস্তান সব কিছু হারাচ্ছে। এর কারণ আমাদের মুক্তিবাহিনী। প্রথমে তারা একটু সমস্যায় ছিল, কিন্তু যখন মুক্তিবাহিনী এক থেকে দেড় মাসের প্রশিক্ষণ শেষে একেকজন ফিরছিল, তখনই তারা দক্ষতার প্রমাণ রাখছিল। যখন এই সংখ্যা এক লাখ পেরোল, তখন ভারত আমাদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া শুরু করল। তারা আমাদের এক কোটি শরণার্থী আশ্রয় দিয়েছে, মুক্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। অস্ত্র দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য বিশাল পাওয়া ছিল।’

তিনি বলেন, “প্রশ্ন হলো ভারত কেন এটা করল? তারা আমাদের সহায়তা করেছে আমাদের চাওয়ার কারণেই। আমরা চেয়েছি। আর ভারত চেয়েছে শরণার্থীর হাত থেকে রক্ষা পেতে। শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী আমেরিকা, ইউরোপ সফর করেছেন। আর বলেছেন, এই ১ কোটি শরণার্থী আমি খাবার দিতে পারব না। তিনি আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে বললেন, ‘আপনারা যদি অ্যাকশন না নেন, তাহলে আমি অ্যাকশানে যাব। এটা আমাদের অস্তিত্বর জন্য। কেননা ১ কোটি শরণার্থীকে আমি খাওয়াতে পারব না।’”

“যুদ্ধ শেষ হতে লাগল। বিশেষ করে নভেম্বরের শেষের দিকে। আমরা কিন্তু যুদ্ধ জিতছি। এ সময় যে বড় যুদ্ধটা হলো, সেটা হলো আখাউড়ায়। সে সময়ই কিন্তু ভারত-বাংলাদেশের মিত্রবাহিনী একই সঙ্গে মেঘনা নদী পার হলো, যদিও তখন পশ্চিম সীমান্তে ভারত ধীরে এগিয়েছে, যদিও সেখানে তাদের ৫ হাজার কিলোমিটার সীমান্ত আছে।”

মুক্তিযুদ্ধে ৬ ডিসেম্বর ছিল মাইলফলক
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ব জনমত তৈরির জন্য ইন্দিরা গান্ধী কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করেন। ছবি: সংগৃহীত

ওয়ালিউর রহমান বলেন, ‘ডিসেম্বরের শুরুতে ভারত প্রথম বাংলাদেশকে ভুটানকে দিয়ে স্বীকৃতি দেয়ালো। নিজেরা আগে দিল না। এই কারণে যে, এটা করলে যাতে তারা চাপে না পড়ে। কিন্তু ভুটানের সাত ঘণ্টা পর তারা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিল।

‘এটা বুঝতে হবে যে, ভারত সরকারের নীতির বাইরেও ইন্দিরা গান্ধীর আলাদা লক্ষ্য ছিল। আর তা হলো একদিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া, অন্যদিকে যুদ্ধ চালিয়ে গিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করা। সে সময় চীনের আগ্রহে নিরাপত্তা পরিষদে জোর আলোচনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র তাতে সমর্থন দিচ্ছে। তারা চাচ্ছে, যুদ্ধবিরতি। ইন্দিরা গান্ধী ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্থায়ী প্রতিনিধিকে জানালেন, আলোচনা করো, নো সিসফায়ার উইদাউট স্যারেন্ডার অফ পাকিস্তানি সোলজারজ। পাকিস্তানি সেনাদের ১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণের পরই কিন্তু যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয় এবং রেজুলেশনে স্বাধীন বাংলাদেশে সব ধরনের মানবিক সহায়তা দেয়ার জন্য সব দেশ রেজুলেশনে সই করে।’

ওয়ালিউর বলেন, ‘অগাস্ট ১৯৭১। ২১ ও ২২ তারিখে জেনেভায় একটি বৈঠক হলো। যেখানে পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ সব দেশকে ডাকল। সেখানে আমাকে দায়িত্ব দেয়া হলো জাস্ট টু টেক অ্যা নোট। সবাই ভয় পাচ্ছিল, চীন হয়তো পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে। উত্তর-পশ্চিম বা উত্তর সীমন্ত দিয়ে হয়তো তারা আক্রমণ করবে। খাজা মোহাম্মদ কায়সার ছিলেন আমাদের (পাকিস্তান) রাষ্ট্রদূত। তিনি বেইজিং থেকে এসেছিলেন। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানি। আমার সঙ্গে তার পরিচয় ছিল। রাত্রে আমরা কথা বললাম। আমরা হোটেলে গেলাম। ইন্টার কন্টিনেন্টাল। তিনি আমাকে বললেন, বয় তুমি হোটেলে ফিরে যাও। চায়না পাকিস্তানের পক্ষে সরাসরি যুদ্ধে জাড়বে না।

‘আমি হোটেলে ফিরে গেলাম। রাত্রে ভালো ঘুম হলো। পরের দিন সকালে মিটিং শুরু হলো। কায়সার প্রথমেই পাকিস্তান সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান জেনারেল গোলাম মোহাম্মদকে বললেন, চীন পাকিস্তানকে সরাসরি যুদ্ধে সহায়তা করবে না এবং যুদ্ধে অংশও নেবে না। গোলাম মোহাম্মদ পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে জেনেভায় এসেছিলেন। খাজা মোহাম্মদ বললেন, আমি জেনেভায় রওনা দেয়ার আগের দিন চীনা প্রেসিডেন্ট চৌ এন লাই আমাকে ব্রেকফাস্ট মিটিংয়ে ডেকেছিলেন এবং চীনের এই মনোভাবে কথা জানিয়ে দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি সেই মোস্ট স্কুপ ও ইম্পোর্টেন্ট খবরটি কলকাতা পাঠাই ও বলি এটা দিল্লিকে জানাতে। এটা ছিল নয় মাসের যুদ্ধের মধ্যে সবচেয়ে জরুরি খবর। কারণ চীন পাকিস্তানের সঙ্গে জড়াতে রাজি হয়নি। আমি তখন জেনেভায়। আমি সুইস সরকারকে নোটিশ দিয়েছি, চাকরি ছাড়ার। কিন্তু মুজিবনগর সরকার আমাকে বলছে যে, তুমি মিটিং শেষ করে পাকিস্তান সরকারের চাকরি ছাড়। আমি ওয়াশিংটন ডিসিতে কিবরিয়াকে ও কলকাতায় হোসেন আলিকে খবর দেই। দিল্লিকে এই খবর বলে দিতে বলি। একই সময় জেনেভায় ভারতের রাষ্ট্রদূত পি কে হালদারকেও এ কথা জানাই।’

ভারত জানত বাংলাদেশ স্বাধীন হবেই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমদ বলেন, ভারত জানত, বাংলাদেশের স্বাধীন না হওয়ার কারণ নেই।

তিনি বলেন, ‘একটা জিনিস হলো, যেহেতু ১৯৭১ সাল একটা স্নায়ুযুদ্ধের সময় ছিল, বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটা যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব ছিল, দুপক্ষই সে সময় এমন ছিল একজন এক পক্ষ হলে অন্যজন অন্যপক্ষ, তখন ভারত ঠিকই বুঝতে পেরেছিল, তাদের কী করতে হবে এবং বাংলাদেশের মানুষ কী চায়, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠে ৭ মার্চের ভাষণ শোনার পর। জেনোসাইড যখন হলো হলো (২৫ মার্চের গণহত্যা), ১০ মিলিয়ন শরণার্থী যখন তাদের দেশে গেল, ভারতের তখন বুঝতে কষ্ট হয়নি, কী ঘটতে যাচ্ছে। সম্ভবত এপ্রিল মাসেই তাদের ইন্টেলিজেন্স গুরু যাকে বলা হয়, সেই কে সুব্রমানিয়াম তার রিপোর্টে বলেছিলেন, নতুন এক বাংলাদেশ হচ্ছে। একইভাবে আমেরিকার হেনরি কিসিঞ্জার ৭ মার্চের আগেই রিপোর্টে বলে দিয়েছিলেন, বাংলাদেশ নতুন দেশ হচ্ছে। বর্তমান প্রকাশিত রিপোর্টগুলোতে তাই দেখা যাচ্ছে। ফলে ইন্দিরা গান্ধীর কাছে কিন্তু রিপোর্ট ছিল সীমান্তের এপারে কী ঘটতে যাচ্ছে। তাই সবাই বুঝে গিয়েছিল, বাংলাদেশের মানুষ আর পাকিস্তানের সঙ্গে থাকছে না। আর গণহত্যার পর তো তা সম্ভবও ছিল না।

‘ইন্দিরা গান্ধীর তখন কেবল দরকার ছিল আন্তর্জাতিক সমর্থন। কেননা আমেরিকা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করছিল এবং চীনেরও পাকিস্তানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল, যে কারণে ভারত সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হলো এবং একটি চুক্তিও করল। সেই ফ্রেন্ডশিপ চুক্তিটায় বলা হলো, ভারতকে যদি কেউ আক্রমণ করে, তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন মনে করবে, তার গায়েই আঘাত লেগেছে এবং সে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে ও ভারতকে সব ধরনের সহায়তা করবে। তাই বাংলাদেশের যুদ্ধে জড়ানো ভারতের জন্য বড় ঝুঁকি ছিল এটা বলা মনে হয় না ঠিক হবে। কেননা বাংলাদেশের মানুষ তখন মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা দেয়ায় গ্রাম অঞ্চল তখন প্রায় মুক্তিবাহিনীরই অধীনে ছিল।’

তিনি বলেন, ‘দিল্লির তখন দরকার ছিল কেবল ঢাকার পতন। কারণ ঢাকার পতন না হলে যুদ্ধটা অন্যদিকে মোড় নিতে পারত। কারণ জাতিসংঘে তখন কেবল যুদ্ধবিরতির কথা উঠছিল। দিল্লি আর মস্কো তখন বলছিল, ঢাকার পতন হলেই কেবল যুদ্ধবিরতি হতে পারে। পাকিস্তানিদের জন্যও দরকার ছিল ভারতীয় সৈন্যদের হাতে আত্মসমর্পণের। কেননা মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে পড়লে তাদের বেঁচে থাকাটা কঠিন হতো।

‘বিশেষ করে ২৫ মার্চের গণহত্যার পর থেকে তারা বাঙালিদের ওপর যে হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতন চালিয়েছিল। তাই যখন তাদের আল্টিমেটাম দেয়া হয়, তারা দ্রুত রাজি হয়ে যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন না হওয়ার কোনো কারণই ছিল না, যখন গুটিকয় মানুষ ছাড়া সারা বাংলাদেশই স্বাধীনতার জন্য উন্মুখ ছিল।’

ভারতের স্বীকৃতি ছিল মুক্তিযুদ্ধে ন্যায্যতার স্বীকৃতি

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ যে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সূচনা হওয়ার পরই মুক্তিযুদ্ধের ন্যায্যতা ও স্বীকৃতি জরুরি ছিল। যেহেতু তখন বিশ্ব ছিল স্নায়ুযুদ্ধের যুগে। বিশ্ব ছিল দ্বিধাবিভক্ত এবং পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। আমরা দেখলাম, যখন মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ল এবং একটি পর্যায়ক্রমিক অবস্থান তৈরি করল, সে সময় ভারত ওই অবস্থাতেই বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দিল। এতে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা পেল। এতে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব তৈরি হলো। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ন্যায্যতা পেল।

‘যারা তখন বাংলাদেশের গণহত্যা সম্পর্কে জানত না, তাদের কাছেও সেই বার্তা পৌঁছে গেল। এটা ছিল ভারতের সময়োপোযোগী সিদ্ধান্ত। প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ ভারত সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে আগস্টের ৪ তারিখে চিঠি লিখেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত বছর বাংলাদেশ সফরের সময় দিনটিকে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর দিন হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়। তাই দুই দেশ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাসে এটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।’

তিনি বলেন, ‘যারা পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেয়, তারা বলতে থাকে, এটা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এর বিরুদ্ধে ভারত শক্ত অবস্থান নেয়। অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র সফরেই ইন্দিরা গান্ধী ঘোষণা করেন, কেউ কোনো অবস্থান না নিলেও তিনি বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেবেন। সেখানে যে গণহত্যা চলছে, তাতে সবাই চোখ বুজে থাকলেও ভারত বসে থাকবে না। কেননা এক কোটি শরণার্থীর বোঝা বহন করা তার পক্ষে সম্ভব হবে না। তিনি সবার চাপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন।’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
There is no alternative to open reservoirs to resolve the domestic fish crisis Fisheries and Livestock Advisor

দেশীয় মাছ সংকট নিরসনে উন্মুক্ত জলাশয়ের বিকল্প নেই: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

দেশীয় মাছ সংকট নিরসনে উন্মুক্ত জলাশয়ের বিকল্প নেই: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, সারা দেশে দেশীয় মাছের সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। এই সংকট নিরসনে উন্মুক্ত জলাশয়ের কোন বিকল্প নাই। সরকার দেশের নদ-নদীতে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করতে কার্যক্রম গ্রহণ করছে।

উপদেষ্টা আজ সকালে কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান,নারী কৃষক এবং স্হানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আলোচনা সভার আয়োজন করে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বন্যায় নদীগুলোতে পলি পরার কারণে নাব্যতা হ্রাস, পানি দূষণ, চায়না জাল ব্যবহার ও ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে মাছ কারণে দিনদিন মাছের পরিমাণ কমছে। জোরালো অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ মাছ ধরার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করতে হবে। অভিযান চলমান রাখতে নদীগুলোতে স্পীড বোটের ব্যবহার করা হবে।

চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে তারা সরকারি অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া তিনি প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান।

খামারিদের উৎপাদিত দুধ সংরক্ষণ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, যথাযথ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের অভাবে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই এই অঞ্চলে চিলিং সেন্টার স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

জুলাই যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ প্রসঙ্গে বলেন, জুলাই যোদ্ধাগণ অনেকে জীবন উৎসর্গ করেছেন আবার অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের এই ঋণ ভুলবার নয়। এজন্য তিনি সরকারি ও এনজিওর উদ্যোগে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানান।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজের সভাপতিত্বে আরো উপস্হিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোক্তাদির খান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণের অতিরিক্ত উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ রানাসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

এরপর উপদেষ্টা কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছি ইউনিয়নের ছড়ারপাড় গ্রামে নারী কৃষকের বাড়ি পরিদর্শন করেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
New Member of the Press Council Matiur Rahman Chowdhury

প্রেস কাউন্সিলের নতুন সদস্য মতিউর রহমান চৌধুরী

প্রেস কাউন্সিলের নতুন সদস্য মতিউর রহমান চৌধুরী

সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’

বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।

এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Meeting the Religion Advisor with the Prime Minister of Pakistan

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।

এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Decision to form an independent investigation service of the police

পুলিশের স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত

পুলিশের স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত

পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।

পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’

সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Basic training duration of cadre officers is 6 months

ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ৪ মাস নির্ধারণ

ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ৪ মাস নির্ধারণ

ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।

সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।

সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র‌্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’

সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।

কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Literature of the National Writers Forum

জাতীয় লেখক ফোরামের সাহিত্য আড্ডা

জাতীয় লেখক ফোরামের সাহিত্য আড্ডা

জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The government will take drastic action to collect interest free loans M Sakhawat Hossain

সুদমুক্ত ঋণ আদায়ে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে: এম সাখাওয়াত হোসেন

সুদমুক্ত ঋণ আদায়ে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে: এম সাখাওয়াত হোসেন

শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।

ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।

তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।

উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"

তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।

এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

p
উপরে