পুঁজিবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসিকে নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের আগের দিন পুঁজিবাজারে লেনদেনের গতি আরও কমেছে।
যত কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে, বেড়েছে তার প্রায় দ্বিগুণ। কিন্তু সূচকে তার প্রভাব পড়েছে কমই। বরং দিনভর লড়াই করে সূচকের অবস্থান ধরে রাখাটা কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে।
দিন শেষে বেড়েছে ২১৮টি কোম্পানির শেয়ার দর, কমেছে ১১৮টির। দর ধরে রাখতে পেরেছে আরও ৩৫টি। আর সূচকে যোগ হয়েছে ১২.৯০ পয়েন্ট।
এ নিয়ে পতনমুখি পুঁজিবাজারে টানা চার কর্মদিবস সূচক বাড়ল। সব মিলিয়ে যোগ হয়েছে ২৭৫ পয়েন্ট।
তবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে খুব একটা স্বস্তি আছে এমন নয়, বরং কিছুটা উদ্বেগ উৎকণ্ঠা নিয়ে মঙ্গলবার বহুল আলোচিত বৈঠকের অপেক্ষায় তারা। এ কারণে নতুন করে বিনিয়োগে না দিয়ে কী বার্তা আসে-সেটি পর্যবেক্ষণে রাখায় লেনদেন ক্রমেই কমছে।
তিন কর্মদিবস এক হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হওয়ার পর রোববার তা নেমে আসে ৮৯৪ কোটি ৯৮ লাখ ২৫ হাজার টাকায়।
সোমবার তা আরও খানিকটা কমে দাঁড়িয়েছে ৮৮৭ কোটি ১৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।
আড়াই মাস ধরে দর সংশোধনে থাকা পুঁজিবাজারে সম্প্রতি টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয় বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে বিরোধ ইস্যুতে।
গত ৩০ ডিসেম্বর দুই পক্ষের বৈঠকের পর পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা যা এক্সপোজার লিমিট ও বন্ডে বিনিয়োগ নিয়ে মতভিন্নতার অবসানের আশা তৈরি হয়।
সেই বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কেউ বক্তব্য না দিলেও বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ জানান, শেয়ারের ক্রয়মূল্যে এক্সপোজার লিমিট গণনা ও বন্ডে বিনিয়োগ ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। তারা নীতিগতভাবে এসব বিষয়ে একমত হয়েছেন।
পরদিন পুঁজিবাজারে হয় উত্থান। এক দিনেই সূচক বাড়ে ১৪৩ পয়েন্ট। তবে সেদিন সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেক বিজ্ঞপ্তিতে তৈরি হয় উদ্বেগ।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিএসইসি কমিশনারের বরাত দিয়ে যেসব সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, সেসব সঠিক নয়।
এই খবরে বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে লেনদেন শুরুই হয় ৮৪ পয়েন্ট পতনের মধ্য দিয়ে। তবে এ সময় তার আগের রাতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি আদেশ তুমুল আলোচনা তৈরি করে, ঘুরে দাঁড়ায় বাজার। শেষ পর্যন্ত লেনদেন শেষ হয় ৮৯ পয়েন্ট সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে।
আগামী ৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পুঁজিবাজার নিয়ে বৈঠক ডেকেছে মন্ত্রণালয়। এতে বিএসইসি চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ডাকা হয়েছে।
ওই বিকেলে রাজধানীতে এক আলোচনায় বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ে সরকারের যে আন্তরিকতা আছে, তা প্রকাশ হবে সামনের কিছু দিনে।
এসব ঘটনার পর শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটিতে যায় পুঁজিবাজার। এই সময়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নানা আলোচনা, পর্যালোচনা, তর্ক-বিতর্ক তৈরি হয়। বাজার নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত কী আসছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থান পাল্টাবে কি না, বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হবে- এ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হতে থাকে পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক বিভিন্ন ফেসবুক পেজে।
এই বৈঠকে কী হয়, এ নিয়ে বড় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে অপেক্ষা, তার নমুনা দেখা গেছে রোববার। সেদিন সূচক বাড়লেও কমে যায় লেনদেন, যা আরও কমেছে পরদিন।
লেনদেনে আবার সবাইকে ছাড়িয়ে ব্যাংক খাত। তবে দিনের একটি বড় সময়ে সবার ওপরে ছিল বস্ত্র খাত। বেশি কিছু দিন পর এই খাতে আগ্রহ দেখা গেছে।
আলোচিত কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার তুলনামূলক কম হাতবদল হওয়ায় বিবিধ খাতের লেনদেন নেমে এসেছে একশ কোটি টাকার নিচে।
আগের দিন বিমা খাতের শেয়ারগুলো তেজী হয়ে উঠলেও দ্বিতীয় দিনেই দেখা গেছে উল্টো চিত্র। এদিন খাতওয়ারি সবচেয়ে ভালো দিন গেছে বস্ত্রে। ওষুধ ও রসায়ন এবং প্রকৌশল খাতেও বেড়েছে বেশিরভাগ শেয়ারের দর।
ভালো দিন গেছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, আর্থিক ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতেও।
লেনদেনে সেরা হলেও ব্যাংক খাতের বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। তবে দর হারানোর শতকরা হার একেবারেই কম।
সূচক বেলা শেষে ইতিবাচক থাকার পেছনে প্রধান ভূমিকায় ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো, যার দর ১.১৪ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ৪.৬ পয়েন্ট।
ব্র্যাক ব্যাংক, জেনেক্স ইনফোসিস, শাহজিবাজার পাওয়ার, লাফার্ম হোলসিম সিমেন্ট, এনআরবিসি, ম্যাকসন্স স্পিনিং, সিভিও পেট্রোক্যামিকেলস, তিতাস গ্যাস ও ম্যারিকোর শেয়ারদর বাড়ার কারণেও সূচক বেড়েছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানিই সূচক বাড়িয়েছে ১২.০১ পয়েন্ট।
অন্যদিকে সূচক নিচের দিকে টেনে নামানোর প্রধান ভূমিকায় ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার। কোম্পানিটির ১.৩৬ শতাংশ দরপতনে সূচক পড়েছে ২.৩৭ পয়েন্ট।
গ্রামীণ ফোন, স্কয়ার ফার্মা, রবি, বেক্সিমকো, বাংলাদেশ সাবমেরিন কোম্পানি, বার্জার পেইন্টস, বেক্সিমকো ফার্মা, আইএফআইসি ব্যাংক ও বিএসআরএম স্টিলও সূচক কমানোয় রেখেছে ভূমিকা।
এই ১০টি কোম্পানির কারণে সূচক পড়েছে ১১.৮৫ শতাংশ।
দর বাড়ার শীর্ষে ১০ কোম্পানি
এই তালিকায় কোনো একক খাতের প্রাধান্য দেখা যায়নি। বিমা খাতের নতুন তালিকাভুক্ত সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের দর টাকা ২২ তম কর্মদিবসে বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ। ১০ শতাংশ বেড়ে শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ৭৯ টাকা ২০ পয়সায়। ২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকায় হাতবদল হয়েছে ৩৬ লাখ ৬৩১টি শেয়ার।
বাকি ৯টি কোম্পানির মধ্যে তিনটি বস্ত্র খাতের, দুটি তথ্য প্রযুক্তির এবং একটি করে আছে জ্বালানি, কাগজ, চামড়া ও প্রকৌশল খাতের।
এর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯.৯৫ শতাংশ বেড়েছে জ্বালানি খাতের সিভিও পেট্রোক্যামিকেলের দর। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯.৮৭ শতাংশ বেড়েছে কাজগ খাতের হাক্কানি পাল্পের দর।
আমরা নেটওয়ার্ক ও আইএসএন লিমিটেডের দরও বেড়েছে এক দিনে যত বাড়া সম্ভব, ততটাই। দুই দিনে এই দুটি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ।
বস্ত্র খাতের তিন কোম্পানি মেট্রো স্পিনিং, ম্যাকসন্স স্পিনিং ও তুংহাই নিটিংয়ের দরও বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ। এর মধ্যে মেট্রোর দর ৯.৫৭ শতাংশ, ম্যাকসন্সের দর ৯.৫২ শতাংশ আর তুংহাই নিটিংয়ের দর বেড়েছে ৮.৬২ শতাংশ।
নবম ও দশম স্থানে ছিল যথাক্রমে সমতা লেদার ও ডমিনোজ স্টিল, যেগুলোর দর বেড়েছে যথাক্রমে ৮.০২ ও ৭.২৫ শতাংশ।
আরও দুটি কোম্পানির দর ৭ শতাংশের বেশি, ১২টির দর ৬ শতাংশের বেশি, ১৪টির দর ৫ শতাংশের বেশি, ১৭টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ২৭টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ৩৩টির দর ২ শতাংশের বেশি এবং ৫৫টির দর বেড়েছে ১ শতাংশের বেশি।
দরপতনের শীর্ষ ১০
যেসব কোম্পানির দর কমেছে, সেগুলোর দাম শতকরা হারে খুব একটা বেশি কমেনি।
মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩.২১ শতাংশ দর হারিয়েছে মেঘনা সিমেন্ট। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ২.৮৬ শতাংশ।
এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স, বিচ হ্যাচারি, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স ও ওরিয়ন ইনফিউশনের দর কমেছে ২ শতাংশের বেশি।
শীর্ষ দশে থাকা বাকি তিন কোম্পানির মধ্যে সাবমেরিন ক্যাবল ১.৯৫ শতাংশ, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স ১.৯ শতাংশ, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ ১.৮৮ শতাংশ এবং জনতা ইন্স্যুরেন্স দর হারিয়েছে ১.৭৮ শতাংশ।
আরও ৩৭টি কোম্পানি এক শতাংশের বেশি দর হারিয়েছে। বাকি কোম্পানির দর কমেছে এক শতাংশের কম।
লেনদেনের শীর্ষ ২০
লেনদেনের শীর্ষে থাকা বিবিধ খাতের বেক্সিমকো লিমিটেডের লেনদেন বহুদিন পর নেমে এসেছে একশ কোটি টাকার নিচে। ৭৯ কোটি ৮৩ লাখ ১০ হাজার টাকায় হাতবদল হয়েছে ৪৭ লাখ ৯৭ হাজার ১৫৪টি শেয়ার।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জেনেক্স ইনফোসিসে লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
শীর্ষ দশের ব্যাংক খাতে ছিল সর্বোচ্চ ৩টি কোম্পানি। বাকি ৭টি কোম্পানি ৭টি খাতের।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা ব্যাংক খাতের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
নতুন তালিকাভুক্ত সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সে ২৭ কোটি ৯০ লাখ, ওয়ান ব্যাংকে ২৭ কোটি ৭৮ লাখ, ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ে ২৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা, সোনালী পেপারে ২১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, ফরচুন সুজে ১৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মায় ১৮ কোটি ৩৭ রাখ টাকা এবং আইএফ আইসি ব্যাংকে লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে ২৯৭ কোটি ২ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৩৩.৪৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য