পুঁজিবাজার নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংককে নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের আগে আগে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারে নতুন করে বিনিয়োগ না করে অপেক্ষায় আছেন।
বৈঠকে ভালো কিছু হবে, এমন আশায় বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ছাড়তে রাজি হচ্ছেন না, তবে কেনাবেচা বেশ কম। তিন কর্মদিবস পর লেনদেন আবার নেমে এসেছে হাজার কোটি টাকার নিচে।
রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ৩ মিনিটেই সূচক ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে শুরু হয় লেনদেন। বেলা সোয়া ১১টায় সূচক বেড়ে যায় ৪৮ পয়েন্ট। তবে সেখান থেকে দুপুর ১২টা ৭ মিনিট পর সূচক টানা পড়তে থাকে।
আগের দিনের চেয়ে সূচকের অবস্থান ৫ পয়েন্ট কম ছিল সে সময়। এরপর আবার পতনের আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। আগের দিনের চেয়ে ২৯ পয়েন্ট বেড়ে শেষ পর্যন্ত সূচকের অবস্থান দাঁড়ায় ৬ হাজার ৯৬৫ পয়েন্টে।
এ নিয়ে টানা তিন কর্মদিবসে সূচক বাড়ল ২৬২ পয়েন্ট। তবে লেনদেনে পড়েছে ভাটা। বৃহস্পতিবার ১ হাজার ২৪৫ কোটি ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা ছিল লেনদেন। সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ৮৯৪ কোটি ৯৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
দিন শেষে বেড়েছে ২৪৫টি কোম্পানির দর, কমেছে ৭৯টির। দর ধরে রাখতে পেরেছে আরও ৪৯টি।
প্রায় সব খাতেই গেছে ভালো দিন। তবে প্রধান খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো গেছে বিমায়। বেশ কিছুদিন পরে বস্ত্র খাতে একটি ভালো দিন দেখলেন বিনিয়োগকারীরা। প্রকৌশল, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিনিয়োগকারীরাও হাসিমুখে শেষ করেছেন লেনদেন।
লেনদেনে সেরা ব্যাংক খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতের প্রধান কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার দিনভর ওঠানামা করেছে। শেষ পর্যন্ত ২০ পয়সা কমেছে শেয়ার দর।
আড়াই মাস ধরে দর সংশোধনে থাকা পুঁজিবাজারে সম্প্রতি টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয় বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে বিরোধ ইস্যুতে।
গত ৩০ ডিসেম্বর দুই পক্ষের বৈঠকের পর পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা যা এক্সপোজার লিমিট ও বন্ডে বিনিয়োগ নিয়ে মতভিন্নতার অবসানের আশা তৈরি হয়।
সেই বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কেউ বক্তব্য না দিলেও বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ জানান, শেয়ারের ক্রয়মূল্যে এক্সপোজার লিমিট গণনা ও বন্ডে বিনিয়োগ ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। তারা নীতিগতভাবে এসব বিষয়ে একমত হয়েছেন।
পরদিন পুঁজিবাজারে হয় উত্থান। এক দিনেই সূচক বাড়ে ১৪৩ পয়েন্ট। তবে সেদিন সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেক বিজ্ঞপ্তিতে তৈরি হয় উদ্বেগ।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিএসইসি কমিশনারের বরাত দিয়ে যেসব সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, সেসব সঠিক নয়।
এই খবরে বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে লেনদেন শুরুই হয় ৮৪ পয়েন্ট পতনের মধ্য দিয়ে। তবে এ সময় তার আগের রাতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি আদেশ তুমুল আলোচনা তৈরি করে, ঘুরে দাঁড়ায় বাজার। শেষ পর্যন্ত লেনদেন শেষ হয় ৮৯ পয়েন্ট সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে।
আগামী ৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পুঁজিবাজার নিয়ে বৈঠক ডেকেছে মন্ত্রণালয়। এতে বিএসইসি চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ডাকা হয়েছে।
ওই বিকেলে রাজধানীতে এক আলোচনায় বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ে সরকারের যে আন্তরিকতা আছে, তা প্রকাশ হবে সামনের কিছু দিনে।
এসব ঘটনার পর শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটিতে যায় পুঁজিবাজার। এই সময়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নানা আলোচনা, পর্যালোচনা, তর্ক-বিতর্ক তৈরি হয়। বাজার নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত কী আসছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থান পাল্টাবে কি না, বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হবে- এ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হতে থাকে পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক বিভিন্ন ফেসবুক পেজে।
দিনভর উত্থান-পতনে থাকা পুঁজিবাজার শেষ পর্যন্ত ইতিবাচক অবস্থান নিয়ে লেনদেন শেষ করতে পারার পেছনে প্রধান অবদান ছিল ওয়ালটনের। ৩.৪ শতাংশ দর বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১০.৩৩ পয়েন্ট।
গ্রামীণফোন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি, রবি, একমি ল্যাবরেটরিজ, সিটি ব্যাংক, গ্রিনডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, ব্র্যাক ব্যাংক, সোনালী পেপার ও ওরিয়ন ফার্মা ছিল সূচক বাড়াতে প্রধান ভূমিকায়।
এই ১০টি কোম্পানির কারণেই সূচকে যোগ হয়েছে ২৩.২৭ পয়েন্ট।
অন্যদিকে সূচক নিচের দিকে টেনে নামানোর প্রধান চেষ্টায় ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার, যেটির ১.০৭ শতাংশ দরপতনে সূচক পড়েছে ১.৪২ পয়েন্ট।
বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি, সামিট পাওয়ার, এমজেএলবিডি, শাহজিবাজার পাওয়ার, পাওয়ারগ্রিড, বেক্সিমকো ফার্মা, বিএসআরএম লিমিটেড, বিকন ফার্মা ও রেনাটাও ছিল একই ভূমিকায়।
তবে দরপতনের হার বেশি না হওয়ায় এই ১০টি কোম্পানি সূচক নিচে নামাতে পেরেছে কমই। সব মিলিয়ে কমেছে ৭.৫৩ পয়েন্ট।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
এই তালিকায় কোনো একক খাতের প্রাধান্য দেখা যায়নি। তবে সবচেয়ে বেশি ছিল বিমা খাতের ৩টি কোম্পানি।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দাম বেড়েছে এশিয়ার ইন্স্যুরেন্সের। শেয়ারদর ৮২ টাকা থেকে ৮ টাকা ২০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৯০ টাকা ২০ পয়সা।
কোম্পানিটির ৪ রাখ ৩৩ হাজার ৫৭১ টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকায়।
দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল কাগজ ও প্রকাশনা খাতের পেপার প্রসেসিং। ওটিসি ফেরত কোম্পানিটি চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশ ভালো আয় করেছে। এই খবর প্রকাশের পর শেয়ারদর এক দিনে যত বাড়া সম্ভব, বেড়েছে ততটাই। ৯.৯৮ শতাংশ বেড়ে ১৪৫ টাকা ২০ পয়সা থেকে শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ১৫৯ টাকা ৬০ পয়সা।
তৃতীয় অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাতের স্ট্রাইলক্রাফট। লোকসানি কোম্পানিটির শেয়ারদর সম্প্রতি অনেকটাই কমেছে। এক দিনে ৯.৯৫ শতাংশ বেড়ে ৯৭ টাকা ৪০ পয়সা থেকে হয়েছে ১০৭ টাকা ১০ পয়সা।
চতুর্থ অবস্থানে ছিল নতুন তালিকাভুক্ত সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স। গত ৭ নভেম্বর ১০ টাকায় লেনদেন শুরুর পর প্রতিদিনই সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে শেয়ারদর এখন দাঁড়িয়েছে ৭২ টাকা।
আজ বেড়েছে ৯.৯২ শতাংশ। ৪৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকায় হাতবদল হয়েছে ৬ লাখ ৯২ হাজার ৬৬৯টি শেয়ার। আগের দিন ৬৫ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছিল ৪৫ লাখ ৫৫ হাজার ৯০৪টি শেয়ার।
বিমা খাতের আরেকটি কোম্পানি প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের দরও বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত। ৯.৯০ শতাংশ বেড়ে ৫৪ টাকা ৫০ পয়সা থেকে হয়েছে ৫৯ টাকা ৯০ পয়সা।
দিনের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমায় ছিল তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আইএসএনও। ৯.৮৮ শতাংশ বেড়ে ৩৫ টাকা ৪০ পয়সা থেকে হয়েছে ২৮ টাকা ৯০ পয়সা।
একই খাতের আমরা নেটওয়ার্কের দরও বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত। ৯.৮১ শতাংশ বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ারদর।
এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের দর ৯.২১ শতাংশ, জেমিনি সি ফুডের দর ৮.৭২ শতাংশ এবং রহিমা ফুডের দর বেড়েছে ৮.৬২ শতাংশ।
শীর্ষ ১০ ছাড়া অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৮ শতাংশের বেশি ৩টির, ৭ শতাংশের বেশি ৬টির, ৬ শতাংশের বেশি ৫টির, ৫ শতাংশের বেশি ১৩টির, ৪ শতাংশের বেশি ২৫টির, ৩ শতাংশের বেশি ২৬টির, ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে ৪৯টি কোম্পানির দর।
দরপতনের শীর্ষ ১০
এই তালিকার শীর্ষে ছিল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ভ্যানগার্ড বিডি ফাইন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান। ফান্ডটি এবার ইউনিটপ্রতি লভ্যাংশ দিয়েছে দেড় টাকা। এরপর দুই দিনে শেয়ারদর কমল ১ টাকা ৬০ পয়সা।
দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের শাহজিবাজার পাওয়ার, যার দর কমেছে ৪.৩৭ শতাংশ।
তৃতীয় অবস্থানে ছিল ইমাম বাটন, যার দর কমেছে ৩.৭৫ শতাংশ; চতুর্থ অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ সাবমেরিন কোম্পানি, যার দর কমেছে ৩.২৫ শতাংশ।
দরপতনের পঞ্চম স্থানে ছিল ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, যার দর কমেছে ৩.২৪ শতাংশ।
এছাড়া এনভয় টেক্সটাইলের দর ৩.০৪ শতাংশ, এমজেএল বিডির দর ২.৯৬ শতাংশ, নতুন তালিকাভুক্ত একমি পেস্ট্রিসাইডসের দর ২.৭১ শতাংশ, ওয়ান ব্যাংকের দর ২.৬০ শতাংশ এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দর ২.৫৯ শতাংশ কমেছে।
শীর্ষ দশের বাইরে আরও ৫টি কোম্পানির দর ২ শতাংশের বেশি এবং ২৭টির দর ১ শতাংশের বেশি কমেছে।
লেনদেনে সেরা
এই তালিকায় আবার বেক্সিমকো লিমিটেড। শেয়ারদর ২০ পয়সা হারালেও লেনদেন হয়েছে ১১৭ কোটি ৩০ লাখ ৪৯ হাজার টাকার। দিনভর শেয়ারদর ১৭১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১৬৪ টাকা পর্যন্ত উঠানামা করেছে। দিন শেষে দর দাঁড়িয়েছে ১৬৮ টাকা।
দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল সাম্প্রতিক সময়ে তুমুল আগ্রহ তৈরি করা ওয়ান ব্যাংক। শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা দর হারানো কোম্পানিটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৮ কোটি ৮৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। হাতবদল হয়েছে ২ কোটি ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৮১২টি শেয়ার।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকে লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি ১৪ লাখ ২৪০ টাকা।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সে লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ১৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
পঞ্চম স্থানে ছিল পাওয়ারগ্রিডে লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৭২ লাখ ৩ হাজার টাকার।
শীর্ষ দশের অন্য পাঁচটি কোম্পানি হলো ফরচুন সুজ, আইএফআইসি ব্যাংক, ওরিয়ন ফার্মা, সোনালী পেপার ও একমি পেস্ট্রিসাইডস।
সব মিলিয়ে ১০টি কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে ২৪৫ কোটি ২৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ২৭.৪০ শতাংশ।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
মন্তব্য