টিকে থাকার প্রয়োজনে জীবের বংশবৃদ্ধি আবশ্যিক প্রাকৃতিক ঘটনা। তবে এই প্রথম জৈবিক প্রজননে সক্ষম রোবট উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, এই জীবন্ত রোবট ক্রমাগত তৈরি করতে পারে নিজের প্রতিলিপি।
যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানীর তৈরি রোবট এক ধরনের জেনোবট (জীবন্ত রোবট) । তবে রোবট বলতে প্রচলিত অর্থে আমরা যা বুঝি এই জেনোবট ঠিক তেমন নয়। সুপার কম্পিউটারের ডিজাইন অনুসারে জৈবিক বংশবিস্তারের এক নতুন কৌশল কাজে লাগানো হয়েছে এ ক্ষেত্রে।
গবেষণাগারে এই ডিজাইন মেনে বিশেষ এক ধরনের ব্যাঙের কোষ নতুন ধরনের প্রাণ তৈরি করেছে। অতি ক্ষুদ্র এই জীবসত্তা (অর্গানিজম) ক্ষুদ্র থালায় সাঁতার কাটতে পারে, নতুন একক কোষ খুঁজে বের করতে পারে ও এক সঙ্গে শত শত একত্রিত হতে সক্ষম।
এক মিলিমিটারের চেয়েও ছোট (০.০৪ ইঞ্চি) জেনোবটগুলো শিশু জেনোবট তৈরি করতে পারে। এসব শিশু জেনোবট এরপর আবার নতুন কোষ খুঁজে বের করে নিজেদের প্রতিলিপি তৈরি করতে সক্ষম। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই জেনোবট সনাতনি ধরনের রোবট যেমন নয়, তেমনি আবার কোনো প্রচলিত প্রাণীও নয়। কম্পিউটারে তৈরি ডিজাইন অনুসারে এটি কাজ করে এবং অতিক্ষুদ্র এই জীবসত্তার মাধ্যমে আগামীতে মানবদেহের অভ্যন্তরে ওষুধ পরিবহন সম্ভব।
গবেষণা দলের সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ভারমন্টের (ইউভিএম) কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও রোবটিকস বিশেষজ্ঞ জশুয়া বোনগার্ড বলেন, ‘সঠিক ডিজাইন করা গেলে জেনোবটগুলো নিজে থেকেই নিজেদের প্রতিলিপি তৈরি করবে।’
তাদের গবেষণার ফল গত ২৯ নভেম্বর প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে।
জেনোবট তৈরিতে বেছে নেয়া হয়েছে আফ্রিকান ব্যাঙের প্রজাতি জেনোপাস লিভিসের বিশেষ ধরনের কোষ। এই ভ্রূণ কোষগুলো পরে ব্যাঙের ত্বকে পরিণত হয়।
গবেষণা দলের আরেক সদস্য ম্যাসাচুসেটসের টাফটস ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক মাইকেল লেভিন বলেন, ‘বিশেষ ভ্রূণকোষগুলো ব্যাঙাচি জন্মের ত্বক আবরণ তৈরি করে। এই কোষ শ্লেষাজাতীয় পদার্থের নিঃসরণ ঘটিয়ে ব্যাঙকে রোগজীবাণুর হাত থেকে সুরক্ষিত রাখে। তবে ল্যাবরেটরিতে আমরা এদের নতুন একটি পরিস্থিতিতে রেখেছি। এগুলোর বহুকোষী বৈশিষ্ট্যকে নতুন ভাবে কাজে লাগানোর সুযোগ তৈরি করেছি। এর ফলে কোষগুলো নতুন যা তৈরি করছে তা ত্বক থেকে একেবারে আলাদা।’
গবেষক দলের সদস্য টাফটস ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী ডগলাস ব্ল্যাকিস্টন বলেন, ‘এতদিন মানুষের ধারণা ছিল, জীবনের বিস্তার বা বংশবৃদ্ধি কীভাবে ঘটে সে বিষয়ক সব রহস্য ভেদ করে ফেলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের এই পরীক্ষা এমন কিছু পাওয়া গেছে যা আগে কখনও দেখা যায়নি।’
বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে গবেষক দলটি। অধ্যাপক মাইকেল লেভিন বলেন, ‘এই কোষগুলোতে ব্যাঙের জিনোম রয়েছে, কিন্তু এরা ব্যাঙাচিতে পরিণতা হওয়ার দায়িত্ব থেকে মুক্ত। ফলে এরা যৌথ বুদ্ধিমত্তা, নমনীয়তা প্রয়োগ করে অবাক করার মতো অনেক কিছু ঘটাতে সক্ষম।’
গবেষণায় দেখা গেছে, কম্পিউটারে ডিজাইন করা কোষগুলো নিজে থেকেই নিজের প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে।
গবেষণা দলের প্রধান স্যাম ক্রিগম্যান বলেন, ‘ব্যাঙের এই কোষগুলো নিজেদের প্রতিলিপি তৈরি করছে এক দম আলাদা পদ্ধতিতে। ব্যাঙের দেহে সাধারণভাবে প্রতিলিপি তৈরির চেয়ে এই প্রক্রিয়া একেবারে ভিন্ন।’
জেনোবটের জনক কোষ নিজে থেকেই ৩ হাজার কোষের সমন্বয় ঘটিয়ে একটি বৃত্ত তৈরি করে।
ক্রিগম্যান বলেন, ‘এগুলো সন্তান তৈরি করতে পারে, কিন্তু এর পরই প্রক্রিয়াটির অবসান ঘটে। এই প্রক্রিয়াটি অব্যাহত রাখার পদ্ধতিটি খুবই জটিল।’
জেনোবটের আকৃতি তৈরির জন্য গবেষণায় ডিপ গ্রিন সুপার কম্পিউটারে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রোগ্রামের নতুন ধরনের এলগরিদম ব্যবহার করা হয়েছে। কোন আকৃতি বংশবিস্তারের জন্য উপযোগী সেটি জানতে ত্রিভূজ, চতুষ্কোণ, পিরামিড বা তারকাকৃতি তৈরি করা হয়েছে।
ক্রিগম্যান বলেন, ‘আমরা কম্পিউটারকে বলেছিলাম, জনকের আকৃতি ঠিক করতে। এআই কয়েক মাস চেষ্টার পর কয়েকটি অদ্ভূত ধরনের আকৃতি তৈরি করে, যার একটি দেখতে প্যাক-ম্যানের (ভিডিও গেইম চরিত্র) মতো। এটা সে সজ্ঞানে করেনি। এরপর ওই জনক থেকে সন্তান তৈরি হলো। তাদের থেকে আবার সন্তান ও তাদের থেকে আবারও। এক কথায় সঠিক ডিজাইনের কারণে বংশবিস্তার কয়েক প্রজন্ম পর্যন্ত চলেছে।’
বোনগার্ড বলেন, ‘আমরা আবিষ্কার করেছিম অর্গানিজম বা কোনো কোষীয় জীবন ব্যবস্থার মধ্যে এমন সব জায়গা রয়েছে যার সম্বন্ধে আমরা জানতাম না। এর আগে আমরা হাঁটতে পারে এমন রোবট পেয়েছি। সাঁতরাতে পারে এমন রোবট পেয়েছি। আর এই গবেষণায় পেলাম এমন কিছু জেনোবট যারা নিজেদের প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে।’
নতুন জেনোবটের সম্ভাবনা নিয়ে বোনগার্ড বলেন, ‘নতুন ওষুধ তৈরি করা বা পানি থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক পরিষ্কার করার কাজে এ যন্ত্রগুলোকে ব্যবহার করা যাবে। আমরা চাই যে হারে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, ঠিক একই হারে প্রযুক্তিগত সমাধান খুঁজে বের করতে।’
আরও পড়ুন:মহাশূন্যে সেলফি তুলে পাঠিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর সৌরযান আদিত্য এল-১। চন্দ্রাভিযানের ঠিক পর পরই সৌর অভিযানে নেমেছে দেশটি।
ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট ‘এল-১’-এর পথে রওনা দেয়ার সময় পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে পৃথিবী ও চাঁদের সঙ্গে ছবি তুলে পাঠিয়েছে ওই সৌরযান।
বৃহস্পতিবার ইসরো এ ছবি প্রকাশ করেছে বলে এনডিটিভর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। টুইটারে ছবিগুলো ভিডিও আকারে প্রকাশ করেছে ইসরো।
পোস্টে লেখা হয়েছে, আদিত্য এল-১ অভিযান: প্রত্যক্ষদর্শী! আদিত্য এল-১ সূর্যের ল্যাগ্রেঞ্জ এল-১ পয়েন্টের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। পথে সেলফি তুলল, ছবি তুলল পৃথিবী এবং চাঁদেরও।
৪১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওর শুরুতে ভারতীয় সৌরযানের তোলা সেলফি তুলে ধরা হয়েছে। তাতে সৌরযান আদিত্য-এর ভিইএলসি এবং সুইট দৃশ্যমান।
এর পর ভারতীয় সৌরযানে বসানো ক্যামেরার তোলা পৃথিবী এবং চাঁদের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যায়, ঘন কালো আকাশে আলোয় উদ্ভাসিত পৃথিবীর একদিক। তার ডানদিকে চোখে পড়ছে একটি চলমান বিন্দু। সেটি চাঁদ বলে জানিয়েছে ইসরো। পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার মুহূর্ত ধরা পড়েছে ক্যামেরায়।
গত ২ সেপ্টেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে আদিত্য এল-১ সৌরযানের উৎক্ষেপণ হয়। এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর চারদিকে দুবার চক্কর কেটেছে সেটি।
সূর্যের ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট এল-১-এ পৌঁছানোর আগে, আরও দুবার গতি বাড়িয়ে চক্কর কাটবে এই যান। ১২৫ দিন পর ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট এল-১-এ পৌঁছনোর কথা ভারতের সৌরযানের।
মহাশূন্যে সূর্য এবং পৃথিবীর মতো দুই বস্তুর পারস্পরিক আকর্ষণ এবং বিকর্ষণের ফলে যে স্থিতিশীল অঞ্চল গড়ে ওঠে, তাকেই বলে ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট। এই ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্টকে মহাকাশযানের পার্কিং স্পটও বলা হয়। সেখানে কম জ্বালানি খরচ করে, মহাজাগতিক কর্মকাণ্ডের ওপর নির্বিঘ্নে নজরদরি চালানো যায়।
সূর্যের ওপর নজরদারি চালানোর জন্য, গণিত বিশারদ জোসেফ লুইস ল্যাগ্রেঞ্জ এই ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট এল-১ আবিষ্কার করেন।
ইসরো জানিয়েছে, ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট এল-১ থেকে কোনো রকম বাধা-বিঘ্ন ছাড়াই সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। এর মাধ্যমে সূর্যের বায়ুমণ্ডলে ঠিক কী ঘটছে, মহাকাশের সার্বিক আবহাওয়ায় তার কী প্রভাব পড়ছে, তৎক্ষণাৎই সব তথ্য হাতে পাওয়া সম্ভব।
এশিয়া কাপে লড়ছে বাংলাদেশ দল। তাদের অনুপ্রাণিত করতে ভক্তদের নিয়ে ‘চার্জ-আপ বাংলাদেশ’ কনসার্টের আয়োজন করতে যাচ্ছে তরুণদের পছন্দের স্মার্টফোন ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স।
আগামী শুক্রবার ঢাকার কেআইবি কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হবে এ কনসার্ট। বিকেল ৩টায় ভেন্যুর প্রবেশদ্বার খুলে দেয়া হবে।
কনসার্টে পরিবেশনা থাকবে জনপ্রিয় ব্যান্ড ম্যানবটস, দ্য লং রোড, মরুভূমি ও শিরোনামহীনের। ইনফিনিক্স নোট ৩০ সিরিজ আয়োজিত এই অনুষ্ঠান উপভোগ করার পাশাপাশি তাসকিন ও বাংলাদেশ দলকে উৎসাহ জোগাবে ফ্যানরা।
নোট ৩০ সিরিজ বাজারে আসা উপলক্ষে ভক্তদের জন্য ইতোমধ্যে বেশ কিছু আয়োজন করেছে ইনফিনিক্স। এই কনসার্টও সেই উদ্যোগের অংশ। আগামী ৬ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার ছয়টি ইনফিনিক্স আউটলেট এবং অনলাইনে getsetrock.com ওয়েবসাইটে কনসার্টের টিকিট পাওয়া যাবে। নোট ৩০ সিরিজের ক্রেতারা বিনা মূল্যে পাবেন একটি ভিআইপি প্রিমিয়াম পাস। এ ছাড়া ফ্যানদের জন্যও এই বিশেষ পাসটি জেতার সুযোগ থাকছে। সে জন্য তাদের একটি শেয়ারিং কনটেস্টে অংশ নিতে হবে।
#ChargeUpBangladesh হ্যাশট্যাগের সঙ্গে নিজেদের ফেসবুক পেজে ইভেন্টটি শেয়ার করা ভক্তদের মধ্য থেকে বিজয়ীদের নির্বাচন করা হবে। প্রতিযোগিতার ফল প্রকাশ করা হবে ৭ সেপ্টেম্বর।
অনুষ্ঠানের অন্যান্য স্পন্সরদের মধ্যে আছে এইচজি, ভিশন, টেকল্যান্ড, এনইও, এএএনটি, কেএসএমএল, ব্রুভানা ও পোলার।
অল-রাউন্ড ফাস্ট চার্জিং সুবিধাযুক্ত ইনফিনিক্স নোট ৩০ সিরিজ বাজারে আসে জুলাইয়ে। এই সিরিজে আছে দুটি মডেল—নোট ৩০ ও নোট ৩০ প্রো। সেই মাসেই ফ্যানদের জন্য বসুন্ধরা সিটির টগি ওয়ার্ল্ডে ‘ফাস্ট চার্জ, ফাস্ট ফান’ ও স্টার সিনেপ্লেক্সে ফ্যান ইভেন্টসহ বেশকিছু আয়োজন করে ইনফিনিক্স। সাশ্রয়ী মূল্যে অসাধারণ সব ফিচার ও নোট ৩০ প্রোর ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির কারণে সিরিজটি তরুণদের কাছে অল্প সময়ে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশে নোট ৩০ প্রো স্মার্টফোনের দাম ২৭ হাজার ৯৯৯ টাকা। এর সঙ্গে ক্রেতারা বিনা মূল্যে পাচ্ছেন ২ হাজার টাকা সমমূল্যের একটি ওয়্যারলেস চার্জার। নোট ৩০-এর ৮ জিবি+১২৮ জিবি এবং ৮ জিবি+ ২৫৬ জিবির দুটি ভার্সন যথাক্রমে ১৮ হাজার ৯৯৯ এবং ২৩ হাজার ৯৯৯ টাকায় বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:রাজশাহী শহরে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নভোথিয়েটার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার।’
আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজশাহীর গণপূর্ত অধিদপ্তর চলতি বছরের জুলাইয়ে নভোথিয়েটারটির পুরো কাজ শেষ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর শিডিউল অনুযায়ী যেকোনো সময় নভোথিয়েটারটির উদ্বোধন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০১৮ সালে রাজশাহীর শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার সামনের অংশে শুরু হয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার’-এর নির্মাণকাজ।
করোনাভাইরাস মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধসহ নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির কাজ শেষ হয় চলতি বছরের জুলাইয়ে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা দেশের সর্ববৃহৎ পরিধির এ প্রকল্পের মূল আকর্ষণ হিসেবে থাকছে প্ল্যানেটেরিয়ামসহ ফাইভজি হল ও আধুনিক অবজারভেটেড টেলিস্কোপ, যা দেশে প্রথম। এটি দিয়ে গবেষকরা নভোমণ্ডলের গবেষণা আরও এগিয়ে নিতে পারবেন।
এ নভোথিয়েটারে সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে তিন তলায় যেতে ভেতরে দুটি বড় সিঁড়ি ছাড়াও রয়েছে লিফট ও এস্কেলেটর। তৃতীয় তলায় পূর্ব-উত্তর কোনায় বসানো হয়েছে ডোম বা গম্বুজ। সফটওয়্যার চালুর সঙ্গে সঙ্গে ক্লিক করলেই গম্বুজের চারপাশ থেকে হালকা আলোয় আলোকিত হতে শুরু করবে মাথার ওপরের সাদা পর্দা।
চার পাশের মোট পাঁচটি প্রজেক্টর একসঙ্গে চালু হয়ে শুরু হবে পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য দ্য বিগ ব্যাং শো। কক্ষটিতে প্রবেশ করতে হচ্ছে জুতা খুলে। কারণ ভেতরে খুবই স্পর্শকাতর যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে।
নভোথিয়েটারটি প্রতিটি ফ্লোরে লাইটিং, ভবনের সামনে সুদৃশ্য পানির ফোয়ারাসহ করা হয়েছে আধুনিক ডেকোরেশন। পুরো ভবনে সেন্ট্রাল এসি স্থাপন, টিকেটিং সিস্টেম পুরোপুরি অটোমেটেড ও ডিজিটাল। এ ছাড়া মেঝেতে বিছানো হয়েছে মূল্যবান মাদুর।
বসার জন্যে সারি সারি লাল রঙের আরামদায়ক চেয়ার স্থাপন করা হয়েছে।
পুরো নভোথিয়েটারে আধুনিক ফায়ার প্রটেকশন ও ডিটেকশন ব্যবস্থাসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লাগানো হয়েছে ১৪০টির বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা। দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে অন্তত ১০০টি কার পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
সম্প্রতি পরীক্ষামূলক প্রদর্শনীতে দেখা যায়, নভোথিয়েটারে মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য থেকে পৃথিবীর সৃষ্টি, সূর্য, চাঁদ, গ্রহ, নক্ষত্র সবই এক পর্দায় ভেসে উঠছে নিমেষেই। নিখুঁত সাউন্ডের জন্য পুরো হলে লাগানো হয়েছে ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম, যা দর্শকদের প্রদর্শনীর মাধ্যমে নিয়ে যাবে সরাসরি মহাশূন্যে গ্রহ-নক্ষত্রের খুব কাছে।
একসঙ্গে ১৫০ জন আসনগুলোতে বসে অসীম মহাকাশের গ্রহ-নক্ষত্রের খুঁটিনাটি সম্পর্কে জানতে ও দেখতে পারবেন। এখানে দিনে অন্তত ছয় থেকে সাতটি শো চালানো সম্ভব বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এ বিজ্ঞান গবেষণা ও মহাকাশ প্রদর্শনী কেন্দ্রটি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আধুনিক ভবন হতে যাচ্ছে জানিয়ে রাজশাহী গণপূর্ত-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, প্রকল্পে শুধু ভবন তৈরিতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। বাকি অর্থ ব্যয় হয় নভোথিয়েটারের যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য খাতে। শুধু প্ল্যানেটেরিয়াম ছাড়াও এখানে রয়েছে বিশাল জায়গা। যেকোনো বিজ্ঞান প্রদর্শনী ছাড়াও চাইলে শিক্ষাবিষয়ক নানা অনুষ্ঠান এখানে করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান রাজশাহী এসে নভোথিয়েটার পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিস্তারিত অবহিত করে উদ্বোধনের জন্য শিডিউল নেবেন। প্রধানমন্ত্রীর শিডিউল পেলে চলতি সেপ্টেম্বর মাসেই নভোথিয়েটারটির উদ্বোধন হবে।’
স্থপতি ইয়াফেস ওসমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাজশাহী শিক্ষানগরী হওয়ায় স্থানীয় ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তুলতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে নভোথিয়েটারটি।’
ঢাকার পরে দ্বিতীয় বিভাগীয় শহরে নভোথিয়েটার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষানগরী ও প্রকৃষ্ট জায়গা বলেই ঢাকার বাইরে রাজশাহীকে নভোথিয়েটার নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে নভোথিয়েটার অত্যন্ত প্রয়োজন। এটা আরও আগে হওয়া উচিত ছিল।’
আরও পড়ুন:‘নতুন সময়ের নয়া প্রযুক্তি, নবপ্রজন্মের সবুজ পৃথিবী’ এ স্লোগান নিয়ে তৃতীয়বারের মতো শুরু হলো ওয়ালটন ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওয়ালটন করপোরেট অফিসে অনুষ্ঠিত এক লঞ্চিং প্রোগ্রামে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
আগের দুটি সিজন সফলভাবে পরিচালনার পর এরই ধারাবাহিকতায় ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফারের সিজন-৩ চালু করলো ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
অনুষ্ঠানে ওয়ালটনের পক্ষ থেকে এ ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফার সম্পর্কে জানানো হয়, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ই-বর্জ্য সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিবেশ সুরক্ষায় ওয়ালটনের এ উদ্যোগ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ওয়ালটন ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফার সিজন-৩ এর উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম এবং পরিচালক এস এম মঞ্জুরুল আলম অভি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল আলম এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও জনপ্রিয় অভিনেতা আজিজুল হাকিম।
অনুষ্ঠানে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে এক্সচেঞ্জ অফারের বিস্তারিত তুলে ধরেন ওয়ালটন কম্পিউটার পণ্যের চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) তৌহিদুর রহমান রাদ।
তিনি জানান, ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, অল-ইন-ওয়ান পিসি, মনিটর, প্রিন্টার ও ট্যাব ক্রয়ের ক্ষেত্রে গ্রাহকরা একচেঞ্জ সুবিধা পাচ্ছেন। এক্ষেত্রে উল্লেখিত পণ্যগুলো ক্রয়ের ক্ষেত্রে যে কোনো ব্র্যান্ডের (সচল কিংবা অচল) সমজাতীয় পণ্য ওয়ালটন প্লাজায় জমা দিয়ে এক্সচেঞ্জ সুবিধা গ্রহণ করা যাবে। তবে মনিটর ক্রয়ের ক্ষেত্রে টিভি এবং ট্যাবের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন এক্সচেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে তিনি আরও জানান, এ ক্যাম্পেইনের আওতায় যে কোনো ব্র্যান্ডের সচল বা অচল আইটি পণ্য জমা দিয়ে সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকা ডিসকাউন্টে ওয়ালটনের নতুন ডিজিটাল ডিভাইস কেনা যাবে। এমনকি এ সুবিধায় কেনা ওয়ালটন কম্পিউটার পণ্যের মূল্য ৩ মাসের কিস্তি সুবিধায় পরিশোধ করার সুযোগ রয়েছে। দেশের সব ওয়ালটন প্লাজা থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত গ্রাহকরা এসব সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি না। বাংলাদেশ এখন মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে পরিচয় করে দেবে এমন একটি প্রতিষ্ঠান আমরা খুঁজছিলাম। আমরা ওয়ালটনকে সেই জায়গায় পেয়েছি। বাংলাদেশে ডিজিটাল ডিভাইসের কোনো কোম্পানির নাম নিতে হলে সবার আগে ওয়ালটনের নাম নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশের সফলতা, কর্মসংস্থান এবং উদ্ভাবনের কথা বলতে গেলে ওয়ালটনের কথা বলতে হবে। বাংলাদেশে একটি প্রতিষ্ঠান যদি ইনোভেশনে নেতৃত্ব দিতে পারে, তবে সেটি ওয়ালটন। ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ স্লোগান মানেই ওয়ালটন।
তিনি আর বলেন, ‘বাংলাদেশে ই-বর্জ্য ও রিসাইক্লিংয়ের প্রথম উদ্যোগ নিয়েছে ওয়ালটন। ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফারের এই উদ্যোগ অভিনব। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ওয়ালটনের ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফার দেশের সামগ্রিক মঙ্গল বয়ে আনবে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল ডিভাইসের ক্রেতারা শুধু আর্থিক সুবিধাই পাচ্ছেন না বরং দেশ ও পরিবেশের সুরক্ষায় অবদান রাখছেন।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, ‘দেশকে দূষণমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পুনঃব্যবহারে প্রতিনিয়ত আমাদের নানান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর আগে এয়ারকন্ডিশনার, টেলিভিশনসহ অন্যান্য পণ্য ক্রয়েও আমরা ক্রেতাদের এক্সচেঞ্জের সুবিধা দিয়েছি। পণ্য উৎপাদন ও বিপণনে আমরা পরিবেশের সুরক্ষার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছি। যার প্রেক্ষিতে জাতীয় পরিবেশ পদকসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় পদকে ওয়ালটন ভূষিত হয়েছে। ল্যাপটপ এক্সচেঞ্জ অফারের এ উদ্যোগ দেশকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমি আশা করি।’
এস এম রেজাউল আলম বলেন, ‘রান্নাঘরের বর্জ্যকে সঠিক ব্যবস্থাপনা না করা হলে ঘরে থাকা যায় না। তেমনিভাবে আমাদের ঘর কিংবা কর্মস্থলে যেসব ই-বর্জ্য থাকে, সেগুলোরও সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা করা প্রয়োজন। আমরা প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহার করে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাবো। একইসঙ্গে প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিকগুলো যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চলবো। আমরা ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু পুরনো ও আমদানি নিষিদ্ধ রিফারবিশড পণ্য দেশে প্রচুর পরিমাণে ঢুকছে। যা দেশের ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে কঠিন করে তুলছে। এটি শিল্প ও মানুষের জীবনের জন্য হুমকি এবং দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ ও নজরদারি বাড়ানো এবং মানুষের সচেতনতা প্রয়োজন বলে মনে করি।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন প্লাজার সিইও মোহাম্মদ রায়হান, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ইবনে ফজল শায়েখুজ্জামান, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার, ইভা রিজওয়ানা নিলু ও মো. হুমায়ুন কবীর, ওয়ালটন ডিজি-টেকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী লিয়াকত আলী, ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর দিদারুল আলম খান, মোহাম্মদ শাহজাদা সেলিম ও রফিকুল ইসলাম, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মফিজুর রহমান জাকির ও জিনাত হাকিমসহ অনেকে।
চাঁদের রহস্যে ঘেরা দক্ষিণ মেরুতে প্রথম কোনও দেশ হিসেবে পা রাখলো ভারত।
বুধবার ভারতের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় দেশটির চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম অবতরণ করতে শুরু করে। ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের মাটি স্পর্শ করে ইতিহাস গড়ে চন্দ্রযান-৩।
পৃথিবীর আর কোনও দেশ সেখানে এখন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। ভারতের কোটি কোটি মানুষের চোখ ছিল চন্দ্রপৃষ্ঠের সেই অনাবিষ্কৃত দক্ষিণ মেরুতে।
ঐতিহাসিক এই অভিযানের চূড়ান্ত মুহূর্ত সরাসরি সম্প্রচার করছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা-ইসরো।
ভারতের দেড় শ’ কোটি মানুষ সম্মিলিতভাবে প্রতীক্ষা করে ছিল এই মহার্ঘ প্রহরের জন্য। চন্দ্রযানের চূড়ান্ত সাফল্যের কামনায় নমাজ, বিশেষ পূজা থেকে শুরু করে স্কুলে স্কুলে লাইভ অবতরণ দেখানোর ব্যবস্থা ছিল।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার টুইটার অ্যাকাউন্টে সব বিভেদ ভুলে দেশবাসীকে একসঙ্গে চন্দ্রযানের সাফল্য কামনার আবেদন জানান। ভূয়সী প্রশংসা করেন বিজ্ঞানীদের।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘোষণা করেন, রাজ্যের সব সরকারি স্কুলে চন্দ্রযানের চন্দ্রাবতরণ সরাসরি দেখানো হবে।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে জানান, রাজ্যবাসীকে নিয়ে তিনিও চন্দ্রযানের চন্দ্রে অবতরণকে উদযাপন করবেন।
এ ছাড়া সাধারণ মানুষের মধ্যে উন্মাদনা ছিল যেন আরও কয়েক গুণ বেশি। আজমীর শরিফের পাশাপাশি লখনউয়ে ইসলামিক সেন্টার অফ ইন্ডিয়া আয়োজন করা হয়েছিল বিশেষ নমাজের। সেখানে বহু মানুষ চন্দ্রযানের সাফল্য কামনা করেন।
মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে বিশেষ ভস্ম আরতির আয়োজন করা হয়। উত্তরাখণ্ডের ঋষিকেশের পরমার্থ নিকেতন ঘাটে জাতীয় পতাকা হাতে গঙ্গা আরতিতে অংশ নেন বহু সাধারণ মানুষ।
আসানসোলে চন্দ্র অভিযানে ভারতের বৈজ্ঞানিক গবেষণার সাফল্য কামনায় মহাযজ্ঞের আয়োজন করা হয়। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে মণ্ডপ বেঁধে মন্দিরের সামনে হোমযজ্ঞ অনুষ্ঠান পালন করা হয়। সব মিলিয়ে চাঁদের মাটিতে ভারতের চন্দ্রযানের পা দেয়া ঘিরে উন্মাদনায় টগবগ করে ফুটেছে গোটা ভারত।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) আগে থেকেই ঘোষণা দেয়, ২৩ অগস্ট চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে ল্যান্ডার।
চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে ‘বিক্রম’। সেখানে এখনও পর্যন্ত কোনো দেশের কোনো মহাকাশযান নামতে পারেনি। ইসরো চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে ল্যান্ডার নামাতে সক্ষম হওয়ায় ইতিহাস তৈরি করেছে ভারত।
গত ১৪ জুলাই ভারত চাঁদের উদ্দেশে তৃতীয় অভিযান শুরু করে। ওই দিন দুপুরে অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটা উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে চাঁদের দিকে রওনা দেয় চন্দ্রযান ৩। একটি এলভিএম ৩ রকেট দিয়ে চাঁদের উদ্দেশে চন্দ্রযানটিকে উৎক্ষেপণ করা হয়।
চন্দ্রাভিযানে রয়েছে একটি ল্যাণ্ডার ও একটি রোভার। ল্যাণ্ডার চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে আর রোভার চাঁদের মাটিতে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকবে। ইসরোর প্রতিষ্ঠাতা বিক্রম সারাভাইয়ের নামে ল্যাণ্ডারটির নাম রাখা হয়েছে ‘বিক্রম’ আর রোভারটির নাম ‘প্রজ্ঞান’।
এই অভিযানে সফল হওয়ায় চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণকারী চতুর্থ দেশ হলো ভারত। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীন চাঁদে নামতে সফল হয়েছিল।
আগের অভিযানে ২০১৯ সালে ঠিক চাঁদের মাটি ছোঁয়ার সময় ল্যাণ্ডার-রোভারটি ধ্বংস হয়ে যায়। তবে চন্দ্রযান-২-এর সেই অরবিটার এখনও চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে এবং ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর বেস-স্টেশনে নিয়মিত তথ্য পাঠিয়ে চলেছে।
চন্দ্রপৃষ্ঠের দক্ষিণ মেরু অঞ্চল নিয়ে এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে চন্দ্রযান-৩ ওই অঞ্চলে অবতরণের ফলে চাঁদের বিজ্ঞানীদের সেই ধাঁধাঁ ঘুচবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চন্দ্র পৃষ্ঠের রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে চাঁদের বয়স আবিষ্কারেরও চেষ্টা হবে বলে ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।
দিল্লির শিব নাদার বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিক্সের শিক্ষক ড. আকাশ সিনহা বলছেন, চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অবতরণের ঝুঁকি যেমন আছে, তেমনই বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সম্ভাবনাও এই অঞ্চলেই বেশি।
চন্দ্রপৃষ্ঠের ওই দক্ষিণ মেরু অংশেই ২০০৮ সালে জলের সন্ধান পেয়েছিল চন্দ্রযান-১।
আরও পড়ুন:আইফোন চার্জে থাকার সময় তা সঙ্গে না নিয়ে ঘুমাতে ব্যবহারকারীদের পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান অ্যাপল।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ফোন কাছাকাছি রেখে ঘুমালে সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে এরই মধ্যে অনেক গবেষণা হয়েছে। বিষয়টি সামনে এনে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছে অ্যাপল।
আইফোনের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল সম্প্রতি ব্যবহারকারীদের এ সতর্কবার্তা দেয়।
যারা স্মার্টফোন সঙ্গে নিয়ে ঘুমান, বিশেষ করে যারা তাদের স্মার্টফোন চার্জে লাগিয়ে সঙ্গে নিয়ে ঘুমান, তাদের জন্য এ সতর্কবার্তা দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
এই সতর্কবার্তা অ্যাপলের অনলাইন ব্যবহারিক গাইডেও যুক্ত করা হয়েছে।
অ্যাপলের পক্ষ থেকে বলা হয়, বায়ু চলাচল ভালোভাবে করতে পারে, এমন জায়গায় রাখা উচিত আইফোনকে। এ ফোনকে টেবিলের মতো শক্ত ও সমতল পৃষ্ঠে রেখে চার্জ দেয়া উচিত।
কম্বল, বালিশ বা শরীরের মতো নরম পৃষ্ঠে রেখে ফোন চার্জ করা ঠিক না বলে জানানো হয় নির্দেশিকায়।
আইফোনের নির্দেশিকাতে উল্লেখ আছে, চার্জ হওয়ার সময় তাপ উৎপন্ন করে আইফোন। তাপ নির্গমন যথাযথভাবে না হলে এটি পুড়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। তাই কম্বল, বালিশ বা শরীরের কাছাকাছি ফোন রেখে ঘুমানো অনিরাপদ।
আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য প্রাথমিক বার্তাটি ছিল, ‘পাওয়ার অ্যাডাপটার বা ওয়্যারলেস চার্জারে যুক্ত থাকা অবস্থায় কোনো ডিভাইস সঙ্গে নিয়ে ঘুমাবেন না।’
এতে বলা হয়, বিদ্যুৎ সংস্পর্শে থাকা অবস্থায় ফোনকে কম্বল, বালিশ বা শরীরের নিচে রাখা যাবে না।
আরও পড়ুন:পৃথিবীর কক্ষপথ ছেড়ে চাঁদের কক্ষপথে রওনা হওয়ার পর ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তৈরি চন্দ্রযান-৩ এবার চাঁদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার মহাকাশযানটি থেকে ল্যান্ডার আলাদা হয়ে গেছে। চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ আগামী বুধবার চাঁদে নামবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ মূল মহাকাশযান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর এর প্রাথমিক গন্তব্য হবে চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০ কিলোমিটার উপরের কক্ষপথে। সেখান থেকে ধাপে ধাপে সেটিকে নামানো হবে চাঁদের মাটিতে। চন্দ্রযান-৩ থেকে ‘বিক্রম’ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) আগে থেকেই ঘোষণা করে রেখেছে, আগামী ২৩ অগস্ট চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে ল্যান্ডার। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন, নির্ধারিত সময়ের আগে চাঁদে নেমে পড়তে পারে ‘বিক্রম’।
মূল মহাকাশযান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ‘বিক্রম’কে চাঁদে নামানোর জন্য ইসরোর হাতে এখনও ছয়দিন সময় আছে। তবে বিচ্ছেদের পর অবতরণ প্রক্রিয়ায় সাধারণত এত সময় লাগে না। ফলে সময়ের আগেই চাঁদে ‘বিক্রম’ নামবে কি না, সে দিকে নজর থাকবে।
‘বিক্রম’-এর মূল গন্তব্য চাঁদের দক্ষিণ মেরু। সেখানে এখনও পর্যন্ত কোনো দেশের কোনো মহাকাশযান নামতে পারেনি। ইসরো চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল ভাবে ল্যান্ডার নামাতে সক্ষম হলে ইতিহাস তৈরি করবে ভারত।
বিবিসি জানিয়েছে, গত ১৪ জুলাই ভারত চাঁদের উদ্দেশে তৃতীয় অভিযান শুরু করে। ওই দিন দুপুরে অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটা উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে চাঁদের দিকে রওনা দেয় চন্দ্রযান-৩। একটি এলভিএম-৩ রকেট দিয়ে চাঁদের উদ্দেশে চন্দ্রযানটিকে উৎক্ষেপণ করা হয়।
চন্দ্রাভিযানে রয়েছে একটি ল্যাণ্ডার ও একটি রোভার। ল্যাণ্ডার চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে আর রোভার চাঁদের মাটিতে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকবে। ল্যাণ্ডারটি আগস্টের ২৩-২৪ তারিখে চাঁদের পিঠে নামার কথা। ইসরোর প্রতিষ্ঠাতা বিক্রম সারাভাইয়ের নামে ল্যাণ্ডারটির নাম রাখা হয়েছে ‘বিক্রম’ আর রোভারটির নাম ‘প্রজ্ঞান’।
এই অভিযানে সফল হলে ভারত চতুর্থ দেশ হবে, যারা চাঁদের পিঠে পৌঁছাবে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীন চাঁদে নামতে সফল হয়েছে।
আগের অভিযানে ২০১৯ সালে ঠিক চাঁদের মাটি ছোঁয়ার সময়ে ল্যাণ্ডার-রোভারটি ধ্বংস হয়ে যায়। তবে চন্দ্রযান-২-এর সেই অরবিটার এখনও চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে এবং ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর বেস-স্টেশনে নিয়মিত তথ্য পাঠিয়ে চলেছে।
তৃতীয় চন্দ্রাভিযানে ল্যাণ্ডার-রোভারটির অবতরণ করার কথা চন্দ্রপৃষ্ঠের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে, যে জায়গাটি সম্বন্ধে এখনও বিস্তারিত জানা যায় না। চাঁদের পৃষ্ঠের রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে চাঁদের বয়স আবিষ্কারেরও চেষ্টা হবে বলে ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।
দিল্লির শিব নাদার বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিক্সের শিক্ষক ড. আকাশ সিনহা বলছেন, চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অবতরণের ঝুঁকি যেমন আছে, তেমনই বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সম্ভাবনাও এই অঞ্চলেই বেশি।
চন্দ্রপৃষ্ঠের ওই দক্ষিণ মেরু অংশেই ২০০৮ সালে জলের সন্ধান পেয়েছিল চন্দ্রযান-১।
মন্তব্য