করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে নির্ধারিত সময়ের আট মাস পর শুরু হলো এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় বসছেন প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী।
সূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থবিজ্ঞানের পরীক্ষায় বসেছেন শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষা হবে দুই শিফটে। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া প্রথম শিফটের পরীক্ষা শেষ হবে সাড়ে ১১টায়। দ্বিতীয় শিফট দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে সাড়ে ৩টায়।
এবারের এইচএসসি পরীক্ষা অন্যান্য বছরের মতো হচ্ছে না। পরীক্ষা হবে শুধু নৈর্বাচনিক বিষয়ে। আর আবশ্যিক বিষয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেয়া হবে। এ ছাড়া চতুর্থ বিষয়েরও পরীক্ষা নেয়া হবে না।
দেশে গত দেড় বছরে এসএসসির পর এটি দ্বিতীয় পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাধারণত প্রতিবছর এপ্রিল মাসে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হলেও এ বছর করোনা মহামারির কারণে এই পাবলিক পরীক্ষা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নেয়ার ঘোষণা দেয় সরকার।
স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাত জীবাণুমুক্ত করা এবং তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাখা হয়েছে আইসোলেশন রুমও।
কেন্দ্র এলাকায় অভিভাবকদের বাড়তি চাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এর অংশ হিসেবে পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থী ও কেন্দ্রের কর্মী ছাড়া অন্য কাউকে পরীক্ষাকেন্দ্রের ২০০ গজের ভেতরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৮ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫২ জন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, এবার সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষা দেবে ১১ লাখ ৩৮ হাজার ১৭ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৫ লাখ ৬৩ হাজার ১১৩ জন এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৯০৪ জন।
মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষা দেবে ১ লাখ ১৩ হাজার ১৪৪ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৬১ হাজার ৭৩৮ জন এবং ছাত্রী ৫১ হাজার ৪০৬ জন।
এইচএসসি (বিএম/ভোকেশনাল) পরীক্ষা দেবে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫২৯ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৪ হাজার ৮২৭ জন এবং ছাত্রী ৪৩ হাজার ৬৪২ জন।
আন্তশিক্ষা বোর্ড থেকে জানা যায়, এবার এইচএসসি-সমমান পরীক্ষার জন্য ১৫ লাখ ৫৮ হাজার শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেছিল। সে হিসাবে এ বছর এইচএসসিতে ঝরে পড়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৩১০ জন। এবার ৯ হাজার ১৮৩টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ২ হাজার ৬২১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবেন।
কবে কোন পরীক্ষা
২ ডিসেম্বর: পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত), সাধারণ বিজ্ঞান এবং খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র (রসায়ন), সাধারণ বিজ্ঞান এবং খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র (জীববিজ্ঞান), খাদ্য ও পুষ্টি প্রথম পত্র, লঘু সংগীত (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
৫ ডিসেম্বর: যুক্তিবিদ্যা প্রথম পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং হিসাববিজ্ঞান প্রথম পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
৬ ডিসেম্বর: পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং সাধারণ বিজ্ঞান এবং খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র (খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান), খাদ্য ও পুষ্টি দ্বিতীয় পত্র, লঘু সংগীত (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
৭ ডিসেম্বর: যুক্তিবিদ্যা দ্বিতীয় পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং হিসাববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
৮ ডিসেম্বর: রসায়ন (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং শিশু বিকাশ প্রথম পত্র, উচ্চাঙ্গ সংগীত (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
৯ ডিসেম্বর: ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি প্রথম পত্র, ইতিহাস প্রথম পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন প্রথম পত্র, ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা প্রথম পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
১২ ডিসেম্বর: রসায়ন (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং শিশু বিকাশ দ্বিতীয় পত্র, উচ্চাঙ্গ সংগীত (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
১৩ ডিসেম্বর: ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি দ্বিতীয় পত্র, ইতিহাস দ্বিতীয় পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন দ্বিতীয় পত্র, ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা দ্বিতীয় পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
১৫ ডিসেম্বর: জীববিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র, উচ্চতর গণিত প্রথম পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং গৃহ ব্যবস্থাপনা ও শিশুবর্ধন এবং পারিবারিক সম্পর্ক (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র, গৃহ ব্যবস্থাপনা ও পারিবারিক জীবন প্রথম পত্র, ইসলাম শিক্ষা প্রথম পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
১৯ ডিসেম্বর: পৌরনীতি ও সুশাসন প্রথম পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা প্রথম পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
২০ ডিসেম্বর: জীববিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র, উচ্চতর গণিত দ্বিতীয় পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং গৃহ ব্যবস্থাপনা ও শিশু বর্ধন এবং পারিবারিক সম্পর্ক (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র, গৃহ ব্যবস্থাপনা ও পারিবারিক জীবন দ্বিতীয় পত্র, ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
২১ ডিসেম্বর: পৌরনীতি ও সুশাসন দ্বিতীয় পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা দ্বিতীয় পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
২২ ডিসেম্বর: ভূগোল (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং আরবি প্রথম পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
২৩ ডিসেম্বর: ভূগোল (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং আরবি দ্বিতীয় পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
২৭ ডিসেম্বর: অর্থনীতি প্রথম পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং ব্যাবহারিক শিল্পকলা এবং বস্ত্র ও পোশাক শিল্প (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
২৮ ডিসেম্বর: সমাজবিজ্ঞান প্রথম পত্র, সমাজ কর্ম প্রথম পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং ক্রীড়া (তত্ত্বীয়) প্রথম পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
২৯ ডিসেম্বর: অর্থনীতি দ্বিতীয় পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং ব্যাবহারিক শিল্পকলা এবং বস্ত্র ও পোশাক শিল্প (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
৩০ ডিসেম্বর: সমাজবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র, সমাজ কর্ম দ্বিতীয় পত্র (সকাল ১০টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) এবং ক্রীড়া (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র (২টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত)।
পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনা
০১. করোনা মহামারির কারণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
০২. পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে।
০৩. পরীক্ষার সময় হবে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। পরীক্ষার দিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র এবং ওএমআর শিট বিতরণ করা হবে। সকাল ১০টায় বহুনির্বাচনি প্রশ্নপত্র বিতরণ। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে বহুনির্বাচনি উত্তরপত্র সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ।
০৪. দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনি শিট বিতরণ। দুপুর ২টায় বহুনির্বাচনি প্রশ্নপত্র বিতরণ। দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে বহুনির্বাচনি উত্তরপত্র সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ।
০৫. পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর তিন দিন আগে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছ থেকে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। দেড় বছর পর ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয়েছে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।
আরও পড়ুন:এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট না হওয়া শিক্ষার্থীদের খাতা চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু হয়েছে।
আজ শুক্রবার থেকে আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুধু টেলিটক সিম ব্যবহার করে ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের জন্য নির্ধারিত আবেদন ফি লাগবে ১৫০ টাকা।
পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে- RSC<Space> Board Name (First 3 letters)<Space>Roll<Space>Subject Code লিখে পাঠিয়ে দিতে হবে ১৬২২২ নাম্বারে। একাধিক Subject Code Type এর ক্ষেত্রে কমা (,) ব্যবহার করতে হবে। যেমন-১০১,১০২,১০৩।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যায় বড় ধরনের অবনতি লক্ষ করা গেছে। গত বছরের শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এবার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক-তৃতীয়াংশেরও নিচে।
ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাত্র ৯৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। অথচ, গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৬৮টি। সেই হিসাবে এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেছে ১ হাজার ৯৮৪টি।
অন্যদিকে, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গতবছর শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১টি। সে হিসেবে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৮৩টি।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফল প্রকাশ করেছে।
বিগত বছরগুলোর মতো এবার ফল প্রকাশ ঘিরে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা রাখা না হলেও সার্বিক বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার সভাকক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কথা বলেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবির।
এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ১০ এপ্রিল। পরীক্ষা শেষ হয় ১৩ মে। চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ১ হাজার ৫৩৮ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন।
এ ছাড়াও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় এক লাখ পরীক্ষার্থী কম ছিল। এবার ফল তৈরি হয়েছে বাস্তব মূল্যায়ন নীতিতে।
এ বছর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৮টি কেন্দ্রে বিদেশি পরীক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন, পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
৮টি কেন্দ্র থেকে মোট ৪২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন।
তাদের মধ্যে ৩৭৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন আর অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৫৪ জন। ১টি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
এবার সারাদেশে মোট পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন এক লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জনে। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আর জিপিএ ফাইভ পেয়েছিল এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন।
এ বছর সারা দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। মোট উপস্থিতি ছিল ১৯ লাখ আট হাজার ৮৬ জন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তেরো লাখ তিন হাজার ৪২৬ জন।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। এ বোর্ডে সারাদেশে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৬ জন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে গড় পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। সে হিসাবে পাসের হার অনেক কমেছে।
ছাত্রীদের পাসের হার ৭১.০৩ শতাংশ এবং ছাত্রদের পাসের হার ৬৫.৮৮ শতাংশ। সেই হিসাবে এবারও পাসের হারে এগিয়ে রয়েছেন ছাত্রীরা। এ নিয়ে টানা ১০ বছর এসএসসিতে পাসের হারে এগিয়ে ছাত্রীরা।
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি (SEU) সামার সেমিস্টার ২০২৫-এ ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে ২ ও ৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস দুইদিনব্যাপী নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক স্কুলের উদ্যোগে চারটি পৃথক সেশনের মাধ্যমে আয়োজিত এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক যাত্রাকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
২ জুলাই প্রথম সেশনে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (SSE) এর অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডেটাসফট সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মঞ্জুর মাহমুদ। একই দিনে দ্বিতীয় সেশনে SSE-এর আওতাধীন আর্কিটেকচার, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE), এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। এ সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (IEB)-এর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহিউদ্দিন আহমেদ (সেলিম)।
৩ জুলাই তৃতীয় সেশনে স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (SASS) অর্থনীতি, ইংরেজি ও বাংলা বিভাগের নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানায়। এ সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এবং SANEM-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক বাজিউল হক খোন্দকার।
সেদিনই চতুর্থ ও শেষ সেশনে সাউথইস্ট বিজনেস স্কুল (SBS) তাদের বিবিএ ও এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. মাহবুবুর রহমান, এফসিএ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিটি ব্যাংক পিএলসি-এর সিএফও। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা এবং নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জনের আহ্বান জানান।
সবগুলো সেশনে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। এছাড়া প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. মোফাজ্জল হোসেন এবং রেজিস্ট্রার মেজর জেনারেল মো. আনোয়ারুল ইসলাম, SUP, ndu, psc (অব.) শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। বিভিন্ন সেশনে সংশ্লিষ্ট স্কুলের ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যানগণও উপস্থিত ছিলেন।
এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল নতুন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ, মূল্যবোধ ও বিভিন্ন সুবিধার সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেওয়া, যাতে তারা একটি প্রাণবন্ত বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করতে পারে।
৪৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভাইভা শুরু হবে আগামী ৮ জুলাই থেকে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পিএসসি।
এবার চাকরি প্রত্যাশীরা তাদের আবেদনের পছন্দক্রম পরিবর্তন করতে পারবেন কিংবা আবেদনের ক্রমও বহাল রাখতে পারবেন সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করার আগে। তবে পছন্দক্রম পরিবর্তনের ফরমটি তাৎক্ষণিক চাকরিপ্রার্থীদের সরাসরি হাতে সরবরাহ করা হবে এবং তা পূরণ করে সাক্ষাৎকার বোর্ডে জমা দিতে হবে।
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় সাময়কিভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ ক্যাডারে ২০৬ জন, সাধারণ ও কারিগরি /পেশাগত উভয় ক্যাডারে ১৮১ জন এবং শুধু কারিগরি/পেশাগত ক্যারের পদগুলোর ৬৫ জনসহ মোট ৪৫২ জন প্রার্থীর সাক্ষাৎকারের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে, যা কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশে চীন দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে চীন সফরে যোগদান করবেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। আগামী ৬ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত (ভ্রমণ সময় ব্যতীত) মোট ৬ দিনের সফরে যাচ্ছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত পহেলা জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এএসএম কাশেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভ্রমণ সংক্রান্ত সকল খরচ বাংলাদেশে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন দূতাবাস বহন করবেন। এতে বাংলাদেশ সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আর্থিক সম্পৃক্ততা থাকবেন না। মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগদান করবেন। ভ্রমণের একটি প্রতিবেদন তাঁর প্রত্যাবর্তনের ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। এছাড়া উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইয়াকুব আলী উপাচার্যের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন।
ইবি উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) গোলাম মাহফুজ মঞ্জু জানান, উপাচার্যের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৬ তারিখে উপাচার্যের সফরে যাবেন। তিনি উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির চেয়ারম্যানের অধীনে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যাচ্ছেন।
ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানান, ‘উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির অধীনে একটা বড় প্রতিনিধিদল নিয়ে চীন সফরে যাওয়া হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) উপাচার্যগণ সঙ্গে থাকবেন।
মন্তব্য