টানা ছয়দিন দরপতনের পর একদিন সূচক বাড়লেও পরের দিনই আবার সেই হতাশার বৃত্তে পুঁজিবাজার। টানা দরপতনের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বিএসইসির বৈঠকের দিনও বড় দরপতন দেখল বিনিয়োগকারীরা। এ নিয়ে আট কর্মদিবসের মধ্যে সাত দিনই সূচকের পতন হলো।
বেলা তিনটায় দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। গত বৃহস্পতিবার এই বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত জানানোর পর থেকেই এক ধরনের আশা নিরাশার দোলাচল তৈরি হয়।
তবে এর মধ্যেও রোববার বড় পতনে তৈরি হয় আতঙ্ক। সেদিন পতন গিয়ে ঠেকে টানা ৬ দিনে। সপ্তম দিন সোমবার বাজার ঘুরে দাঁড়িয়ে উত্থানের ইঙ্গিত দিয়েও ধরে রাখতে পারেনি। এক পর্যায়ে সূচক ৭১ পয়েন্ট বেড়ে শেয়ার কেনাবেচা হতে থাকলেও পরে দিন শেষে ২১ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয় লেনদেন।
মঙ্গলবার বৈঠকের দিন সকালে অল্প কিছু সময়ের জন্য সূচক বেড়ে লেনদেন হতে থাকলেও গত প্রায় আড়াই মাসের এক সাধারণ চিত্রের মতোই অর্ধেক বেলা শেষে পতন দিয়ে শেষ হয় লেনদেন।
দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সাড়ে তিন মাস আগের অবস্থানে নেমে দিন শেষে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৭০৩ পয়েন্টে। আগের দিনের চেয়ে ৯২ পয়েন্ট হারিয়ে গেছে সূচক থেকে।
এর চেয়ে কম সূচক ছিল ১২ আগস্ট। তখন অবস্থান ৬ হাজার ৬৯৯ পয়েন্ট থাকলেও পুঁজিবাজারে হতাশা ছিল না। বরং শেয়ারদর ও লেনদেন ক্রমেই বাড়তে থাকায় বিনিয়োগাকারীরা এক দশকের হতাশা কাটিয়ে আশান্বিত হয়ে উঠতে থাকে।
সূচক কমার দিন লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। তিন কর্মদিবস পর আবার তা এক হাজার কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করতে পেরেছে। তবে সেটি ক্রয় চাপে নয়, সেটি নিশ্চিত। বিক্রয় চাপ বেশি থাকায় শেয়ারদর পড়ার পর সে সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন ব্যক্তি শ্রেণির বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।
আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৭০৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা, যা ছিল ১৪৬ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
আড়াইর বেশি শেয়ারের দরপতনের দিন ৮০টির মতো কোম্পানির দর বৃদ্ধি হয়েছে। এমন দিনে এমন কোনো খাত ছিল না যার বিনিয়োগকারীরা হাসিমুখে ঘরে ফিরবে। তবে তুলনামূলক কিছুটা স্বস্তিতে ছিল ব্যাংক খাতের শেয়ারধারীরা। যেসব শেয়ার দর হারিয়েছে সেগুলো শতকরা হিসেবে দর হারিয়েছে কমই।
গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া বাজার সংশোধনের সময় দরপতন মোটেও অস্বাভাবিক ঠেকেনি। এর কারণ, এক বছরে মূল্য সূচক বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার পর কিছুটা সংশোধন স্বাভাবিক হিসেবেই ধরে নিয়েছিলেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
আশা করা হয়েছিল, সংশোধন শেষে বাজার আবার উত্থানে ফিরবে এবং বিনিয়োগকারীরা তাদের হারানো টাকা ফিরে পাবে। কিন্তু সেটি হয়নি, উল্টো ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মধ্যে মতভিন্নতার খবর প্রকাশ্যে চলে আসার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়। দিনের পর দিন হতাশা এক পর্যায়ে তৈরি করে আতঙ্ক।
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা গণনা, এই বিনিয়োগসীমায় বন্ডে বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্তি নিয়ে মতভিন্নতা ছাড়াও অবণ্টিত মুনাফায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা আসবে কি না, এ নিয়ে আগে থেকেই টানপড়েনের মধ্যে সম্প্রতি যোগ হয়েছে মিউচ্যুয়াল ফান্ড পরিচালনাকারী অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির লেনদেনের তথ্য চাওয়া।
সবশেষ এই নির্দেশ আসার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দিয়ে বিএসইসি বলেছে, তারা এভাবে সরাসরি তথ্য চাইতে পারে না। কোনো তথ্য দরকার পড়লে যেন বিএসইসির মাধ্যমে চাওয়া হয়।
এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে তথ্য আসে যে, মতভিন্নতা নিয়ে বৈঠকে বসবে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এই সিদ্ধান্ত আসার পর সাপ্তাহিক কর্মদিবস শুক্র ও শনিবার বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নানা আলোচনা-ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের জন্ম নেয়।
কিন্তু কোনো কিছু্ বাজারে চিড় ধরা মনোবল ফেরাতে পারেনি। উল্টো শেয়ার কেনা বন্ধ রেখে কম দামে হলেও শেয়ার বিক্রি করে দিতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। এই বিষয়টি দরপতনকে আরও তরান্বিত করে। যারা লোকসানে শেয়ার বিক্রি করতে রাজি ছিলেন না, তাদের পোর্টফোলিওর আকার দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে। এর মধ্যে যারা মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ার কিনেছেন, তাদের অবস্থান আরও খারাপ। পুনর্বিনিয়োগ করতে না পারলে শেয়ার বিক্রি করে দিতে বাধ্য হতে থাকেন হাজার হাজার বিনিয়োগকারী।
আজকের এই দরপতনে প্রধান ভূমিকা ছিল গ্রামীণ ফোনের। ৩.২২ শতাংশ শেয়ারদর কমায় সূচক থেকে হারিয়ে গেছে ২৩.০৬ পয়েন্ট। গত পাঁচ কর্মদিবসে শেয়ারদর ১০ শতাংশের বেশি পড়ে যাওয়া বহুল আলোচিত বেক্সিমকো লিমিটেডের দর কমায় সূচক কমেছে ৮.৭৭ পয়েন্ট।
৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ, প্রথম প্রান্তিকে অভাবনীয় আয়, মালিকপক্ষের তিন কোটি টাকার শেয়ার কেনার ঘোষণায় শেয়ারদর ১৮৫ টাকা ছাড়িয়ে ২০০ টাকার দিকে ছুটছিল। সেখান থেকে নেমে শেয়ারদর এখন ১৫০ টাকার আশেপাশে। গত ২১ অক্টোবর শেয়ারদর দেড়শ টাকা ছাড়নোর পর এতটা নিচে নামেনি কখনও।
শেয়ারদর দেড়শ টাকা ছাড়ানোর পর এমনও দিন গেছে যেদিন সাড়ে তিনশ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে একটি কোম্পানিরই। দুইশ বা আড়াইশ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে, এমন দিন গেছে অনেক। অর্থাৎ উচ্চমূল্যেই শেয়ার লেনদেন হয়েছে বেশি। এ কারণে এই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা ভীষণ হতাশ।
একই গ্রুপের আগের কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার দর নেমে এসেছে ২০০ টাকার নিচে। গত ১ সেপ্টেম্বর শেয়ারদর ২০০ টাকার ঘর অতিক্রম করার পর এই প্রথমবার এই ঘটনা ঘটল।
স্কয়ার ফার্মা, রবি, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি, লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট, ইউনাইটেড পাওয়ার, ওয়ালটনের মতো শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানির দরপতনের কারণে সূচক কমেছে সবচেয়ে বেশি। দর কমে ৩০ টাকার নিচে নেমে এসেছে এনআরবিসি।
এর বিপরীতে যেসব কোম্পানি সূচক বাড়াতে পেরেছে, সেগুলোর সংখ্যা যেমন কম, তেমনি দর বৃদ্ধির হার কম থাকায় সেগুলো সূচকে পয়েন্ট যোগ করতে পেরেছে খুবই কম। সবচেয়ে বেশি সূচক বাড়ানো ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর ৮.১৮ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচকে যোগ হয়েছে কেবল ২.৫২ পয়েন্ট।
সবচেয়ে বেশি সূচক বাড়ানো ১০টি কোম্পানি কেবল গ্রামীণ ফোনের দরপতনজনিত কারণে সূচকের পতনই ঠেকাতে পারেনি।
দর দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি একমি পেস্ট্রিসাইডস ও সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সকে পেছনে ঠেলে দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছ ওরিয়ন ইনফিউশন। কোম্পানিটির শেয়ারদর আগের দিন ছিল ৮২ টাকা ৫০ পয়সা। ৯.৯৩ শতাংশ বেড়ে উঠে এসেছে ৯০ টাকা ৭০ পয়সায়।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সেনাকল্যাণের শেয়ারদর সর্বোচ্চ পরিমাণ বাড়ল টাকা ১৮ কর্মদিবস। কোম্পানিটির লেনদেন শুরু হয় গত ৭ নভেম্বর। ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত হয়ে দাম উঠেছে ৫৪ টাকা ২০ পয়সা। তবে এখনও বলার মতো শেয়ার লেনদেন হয়নি। আজই সর্বোচ্চ সংখ্যক ৭৪ হাজার ৭৪৫টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
তৃতীয় অবস্থানে ছিল গত ১৪ নভেম্বর তালিকাভুক্ত একটি পেস্ট্রিসাইডস। টানা ১৩ কর্মদিবস শেয়ারদর যত বাড়া সম্ভব, বাড়ল ততটাই। গত তিন কর্মদিবস ধরে লেনদেনের গতিও বেশ ভালো।
আজ ৯.৭০ শতাংশ বেড়ে দাম দাঁড়িয়েছে ৩৩ টাকা ৯০ পয়সা। হাতবদল হয়েছে ১৯ লাখ ৫১ হাজার ২২২টি শেয়ার।
আগের দুই দিন হাতবদল হয় যথাক্রমে ২ লাখ ২৪ হাজার ৭১৬ টি ও ৯ লাখ ২৬ হাজার ৩০৩টি শেয়ার।
চতুর্থ অবস্থানে ছিল বিমা খাতের ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যার দর বেড়েছে ৮.১৮ শতাংশ। এ ছাড়া রেনউইক যগেশ্বরের দর ৬.৪০ তাংশ, ওয়ান ব্যাংকের দর ৬.৩৪ শতাংশ, মনস্পুল পেপারের দর ৬.০৭ শতাংশ বেড়েছে।
শীর্ষ দশের অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে এনভয় টেক্সটাইলের দর ৫.৫০ শতাংশ, আমান কটনের দর ৫.১০ শতাংশ এবং ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টের দর বেড়েছে ৪.৯৯ শতাংশ।
এ ছাড়া আরও ৫টি কোম্পানির দর ৪ শতাংশের বেশি, ৩টি কোম্পানির ৩ শতাংশের বেশি, ৭টি কোম্পানির ২ শতাংশের বেশি, ২৯টি কোম্পানির দর ১ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
দরপতনের শীর্ষ ১০
এই তালিকায় শীর্ষে ছিল আরামিট সিমেন্ট, যার দর কমেছে ৯.৮৯ শতাংশ। কোম্পানিটি বেশ কয়েক বছর পর মুনাফায় ফিরলেও লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর পর থেকেই দর হারাচ্ছে। সবশেষ দর দাঁড়িয়েছে ৩৩ টাকা ৭০ পয়সা।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা এইচ আর টেক্সটাইল দর হারিয়েছেন ৮.৪০ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ব্যাংক খাতের এনআরবিসির দর কমেছে ৬.৪৭ শতাংশ। চতুর্থ অবস্থানে থাকা সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৬.৪১ শতাংশ, পঞ্চম স্থানে থাকা ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স দর হারিয়েছে ৬.০২ শতাংশ।
এছাড়া সুঋদ ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৫.০৩ শতাংশ, জেনারেশন নেক্সটের দর ৪.৯২ শতাংশ, জেনেক্স ইনফোসিসের দর ৪.৯১ শতাংশ, শাহজিবাজার পাওয়ারের দর ৪.৮২ শতাংশ এবং মিথুন নিটিংয়ের দর কমেছে ৪.৭৬ শতাংশ।
আরও ৬টি কোম্পানি ৪ শতাংশের বেশি, ৩৩টি কোম্পানি ৩ শতাংশের বেশি, ৫৯টি কোম্পানি ২ শতাংশের বেশি, এবং ৯৪টি কোম্পানি ১ থেকে ২ শতাংশের মধ্যে দর হারিয়েছে।
লেনদেনের শীর্ষ ১০
সম্প্রতি তুমুল আলোচিত ওয়ান ব্যাংক উঠে এসেছে লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে। যে কোম্পানিটিতে এক মাস আগেও দিনে ১০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হতো না, সেই কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে ১৮৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকার। হাতবদল হয়েছে মোট ৯ কোটি ৪ লাখ ৬ হাজার শেয়ার।
টানা পাঁচ দিন দরপতন হওয়া বেক্সিমকো লিমিটেড ছিল লেনদেনের দ্বিতীয় অবস্থানে। হাতবদল হয়েছে মোট ৯৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা। লেনদেন হয়েছে ৬৩ লাখ ৬৭ হাজার ৮৩১ টি শেয়ার।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মায় লেনদেন হয়েছে ৪৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে আছে আইএফআইসি ব্যাংক, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, স্কয়ার ফার্মা, ওরিয়ন ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি জেনেক্স ইনফোসিস ও ফরচুর সুজ।
এই ১০টি কোম্পানিতেই হাতবদল হয়েছে ৫৮৬ কোটি ৬৮ লাখ ২ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫১.৫৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
মন্তব্য