বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বসার দুই দিন আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিএসইসির বৈঠকের পর দিন পুঁজিবাজারে পতন থেমেছে। তবে লেনদেনের পৌনে দুই ঘণ্টায় সূচক যতটা বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল, দিন শেষে সেখান থেকে অনেকটাই কমেছে।
বাজার নিয়ে আস্থাহীনতার কারণে নতুন বিনিয়োগে যেতে চাইছেন না বিনিয়োগকারীরা। বরং হাতে থাকা শেয়ারের দর আরও কমে যাবে, এই আশঙ্কায় কম দামে হলেও ছেড়ে দিতে চাইছে বহুজন। এই অবস্থায় লেনদেন একেবারে তলানিতে নেমেছে।
মাস তিনেক আগে এক ঘণ্টায় যতটুকু লেনদেন হতো, সারা দিনে সাড়ে চার ঘণ্টাতেও অতটা লেনদেন দেখা যায়নি।
দিন শেষে লেনদেন কোনো রকমে সাতশ কোটির ঘর অতিক্রম করে। হাতবদল হয় ৭০৮ কোটি ১৮ লাখ ৯৬ হাজার টাকা।
১৪৬ কর্মদিবসের মধ্যে সবচেয়ে কম লেনদেন দেখল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। এর চেয়ে কম লেনদেন হয় গত ১৯ এপ্রিল। সেদিন হাতবদল হয় ৬৯৭ কোটি ২৯ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার আড়াইশর বেশি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়লেও সূচকে অতটা প্রভাব পড়েনি মূলত বেক্সিমকো গ্রুপের কারণে। গ্রুপের দুই প্রধান কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড ও বেক্সিমকো ফার্মার টানা দরপতনে সূচক থেকে কমে গেছে ১০ পয়েন্ট। এই দুটি কোম্পানি ছাড়া দর হারানো অন্য কোম্পানিগুলো সূচক সেভাবে কমাতে পারেনি।
বিপরীতে ব্যাংক ও আর্থিক খাত, প্রকৌশল, খাদ্য বিমা, ওষুধ ও রসায়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির দর বৃদ্ধির কারণে টানা ছয় কর্মদিবস পর অবশেষে থামল পুঁজিবাজারের দরপতন।
গত সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস ২১ নভেম্বর থেকে শুরু হয় সূচকের টানা পতন। এ নিয়ে ছয় দিনেই সূচক পড়ল ৩১৮ পয়েন্ট।
এর আগে গত ১৬ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা ছয় দিন পতন হয় ৬ কর্মদিবস।
গত দুই বছরে এর চেয়ে বেশি পতন চলতি বছরের ১০ থেকে ১৯ অক্টোবর দেখা দিয়েছিল। সে সময় টানা সাত কর্মদিবস সূচক পড়ে ৩৪৭ পয়েন্ট।
গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া দর সংশোধনের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেশ কিছু পদক্ষেপ বাজারে অর্থপ্রবাহ কমিয়ে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোতে তাদের বিনিয়োগের তথ্য প্রতিদিন জানানোর নির্দেশ দেয়া ছাড়াও শেয়ার মূল্য বেড়ে যাওয়ার পর বিনিয়োগসীমা এক দিনের জন্য অতিক্রম করে যাওয়ার পর বেশ কিছু ব্যাংককে জরিমানা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ব্যাংক বন্ডে যে বিনিয়োগ করবে, তা তার বিনিয়োগসীমার মধ্যে হবে।
এর মধ্যে মিউচ্যুয়াল ফান্ড পরিচালনা করা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির লেনদেনের তথ্যও প্রতিদিন জানানোর আদেশ এসেছে, যে আদেশ আসার পর বিএসইসি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দিয়ে বলেছে, এটা তারা পারে না।
ওয়ান ব্যাংকের লভ্যাংশ ইস্যুতে দুই পক্ষের মধ্যে মতভিন্নতা ছিল আগে থেকেই। সেই সঙ্গে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা ক্রয়মূল্য নাকি বাজারমূল্যে হবে- এ নিয়ে মতপার্থক্য প্রায় এক দশক ধরেই। বাজারমূল্য বিনিয়োগসীমা নির্ধারণ করায় পুঁজিবাজারে অযাচিত ক্রয়চাপ তৈরি হয় আর গত মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে দুই পক্ষের বৈঠক শেষে বিএসইসি জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রয়মূল্যে বিনিয়োগসীমা নির্ধারণে রাজি হয়েছে। কিন্তু আট মাসেও সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপে পুঁজিবাজারে অর্থপ্রবাহ কমে আসার পর গত বৃহস্পতিবার দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। আগমী মঙ্গলবার এই বৈঠক হবে, এমন খবর আসার পরও রোববার বড় দরপতনে দেখা দেয় আতঙ্ক।
সেই সন্ধ্যাতেই বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম দেখা করেন অর্থ সচিবের কাছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের বিষয়ে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন। বন্ডে বিনিয়োগ যেন পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার বাইরে থাকে, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আলাদাভাবে বসতে মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেন তিনি।
এই বৈঠকের খবর গণমাধ্যমে আসার পর সোমবার সূচক বেড়েই শুরু হয় লেনদেন। বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে আগের দিনের তুলনায় ৭১ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল। তখন মনে হচ্ছিল, আগের ছয় দিনের চাপ থেকে বুঝি মুক্তি মিলবে। কিন্তু শেয়ারদর বেড়ে যাওয়ার পর বিক্রয় চাপ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে বেলা ২টা ৭ মিনিটে সূচক দিনের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে ৬৫ পয়েন্ট কমে লেনদেন হতে থাকে।
সে সময় সূচক আগের দিনের চেয়ে বেশি ছিল কেবল ৫ পয়েন্ট। আশঙ্কা করা হচ্ছিল, পতনে টানা সাত দিনের পতনের বেদনাদায়ক স্মৃতি বুঝি আবার ফিরে আসে। তবে দিন শেষে সেখান থেকে কিছুটা বেড়ে লেনদেন শেষ হয় ৬ হাজার ৭৯৫ পয়েন্টে, যা আগের দিনের চেয়ে ২১ পয়েন্ট বেশি।
সূচকে সবচেয়ে বেশি প্রভাব যেসব কোম্পানির
সূচক বাড়ানোয় প্রধান ভূমিকায় ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশ বা আইসিবি। শেয়ারদর ৩.৩৬ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ৪.৭ পয়েন্ট।
ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারদর ২.২৩ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ২.১৩ পয়েন্ট, আইএফআইসি ব্যাংকের দর ২.২৩ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ১.০৯ পয়েন্ট।
এছাড়া লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট, ইউনাইটেড পাওয়ার, পাওয়ারগ্রিড, ইসলামী ব্যাংক, জেনেক্স ইনফোসিস, আইপিডিসি ও পূবালী ব্যাংকের শেয়ারদর বাড়ায় সূচকে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট যোগ হয়েছে।
এই ১০টি কোম্পানির কারণে সূচক বেড়েছে ১১.৪০ পয়েন্ট।
বিপরীতে কেবল বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর ২.৭৬ শতাংশ কমার কারণে সূচক পড়েছে ৫.০৪ পয়েন্ট। একই গ্রুপের আরেক কোম্পানি বেক্মিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের দর ২.৫৮ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ৩.০২ পয়েন্ট।
রেনাটা, গ্রামীণ ফোন, বিকন ফার্মা, মবিল যমুনা, মেঘটা পেট্রলিয়াম, সোনালী পেপার ও ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি শেয়ারের দর কমার কারণেও সূচক থেকে কমেছে কিছু পয়েন্ট।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানির কারণে সূচক কমেছে ১১.৮৯ পয়েন্ট।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি একমি পেস্ট্রিসাইডস ও সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স আবারও দর বৃদ্ধির শীর্ষ দুই কোম্পানি হিসেবে উঠে এসেছে।
গত ১৪ নভেম্বর তালিকাভুক্ত হওয়ার পর টানা ১২ কর্মদিবস শেয়ারদর যত বাড়া সম্ভব, বাড়ল ততটাই। গত দুই কর্মদিবস ধরে লেনদেনের গতি বেশ ভালো।
আগের দিন প্রথমবারের মতো উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ার লেনদেন হয়। সেদিন হাতবদল হয় ২ লাখ ২৪ হাজার ৭১৬ টি শেয়ার। এবার আরও বেড়ে লেনদেন হয়েছে ৯ লাখ ২৬ হাজার ৩০৩টি।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সেনাকল্যাণের শেয়ারদর সর্বোচ্চ পরিমাণ বাড়ল টাকা ১৭ কর্মদিবস। কোম্পানিটির লেনদেন শুরু হয় গত ৭ নভেম্বর। ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত হয়ে দাম উঠেছে ৪৯ টাকা ৩০ পয়সা। তবে এখনও বলার মতো শেয়ার লেনদেন হয়নি। আজই সর্বোচ্চ সংখ্যক ৪২ হাজার ৯০৭টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা একটিভ ফাইন কেমিক্যালসের দর বেড়েছে ৯.৬৭ শতাংশ। পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করার পর ফ্যামিলি টেক্স উঠে এসেছে সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির চতুর্থ স্থানে। আগের দিন শেয়ারদর ছিল ৪ টাকা ৪০ পয়সা। বাড়ার সুযোগ ছিল ৪০ পয়সা। বেড়েছেও তা। শতকরা হিসেবে বেড়েছে ৯.০৯ শতাংশ।
বস্ত্র খাতেরই আরেক কোম্পানি জেনারেশন নেক্সটের দর ৮.৯২ শতাংশ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের এএফসি অ্যাগ্রোর দর ৮.৭৫ শতাংশ, দেশবন্ধু পলিমানের দর ৮.৭১ শতাংশ, শ্যামপুর সুগারের দর ৮.১০ শতাংশ আর সালভো ক্যামিকেলের দর বেড়েছে ৭.৭১ শতাংশ।
সব মিলিয়ে ৯ শতাংশের বেশি শেয়ারদর বেড়েছে ৪টি কোম্পানির, ৮ শতাংশের বেশি বেড়েছে আরও ৪টির দর।
এ ছাড়া ২টি কোম্পানির দর ৭ শতাংশের বেশি, ৩টি কোম্পানির ৫ শতাংশের বেশি, ৫টি কোম্পানির ৪ শতাংশের বেশি, ১৩টি কোম্পানির দর ৩ শতাংশের বেশি, ৫৬টি কোম্পানির দর বেড়েছে ২ শতাংশের বেশি।
দরপতনের শীর্ষ ১০
এই তালিকায় শীর্ষে ছিল এমারেল্ড অয়েল যার দর কমেছে ৩.৯২ শতাংশ। চার বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ কোম্পানিটি সম্প্রতি উৎপাদনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। এই উৎপাদন শুরুর ঘোষণা ছিল গত ১ সেপ্টেম্বর থেকেই। তবে নানা জটিলতায় তা করা যায়নি।
এ কারণে শেয়ারদর ৪৪ টাকা থেকে কমে ৩১ টাকায় নেমে এসেছিল। সম্প্রতি গণমাধ্যমের খবরে এসেছে যে, আগের মালিকের শেয়ার হস্তান্তরসহ নানা জটিলতার অবসান হয়েছে। এই খবরে শেয়ারদর ৩১ টাকা থেকে বেড়ে আবার ৩৬ টাকা হয়ে যায়। তবে আজ কিছুটা কমে দাম দাঁড়িয়েছে ৩৪ টাকা ৩০ পয়সা।
লোকসানে থেকেও শেয়ার প্রতি ১০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করা বিচ হ্যাচারির দর কমেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩.৭৪ শতাংশ।
এছাড়া সুঋদ ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৩.৬৩ শতাংশ, আমামিট সিমেন্টের দর ৩.৬০ শতাংশ, দেশ গার্মেন্টসের দর ২.৯৯ শতাংশ, কুইন সাউথ টেক্সটাইলের দর ২.৯৭ শতাংশ, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের দর ২.৭৬ শতাংশ, বেক্সিমকো লিমিটেডের দর ২.৭৫ শতাংশ, বেক্সিমকো ফার্মার দর ২.৫৭ শতাংশ ও ইনডেক্স অ্যাগ্রোর দর কমে ২.০৪ শতাংশ।
লেনদেনের শীর্ষ ১০
টানা চার কর্মদিবস দরপতন হওয়া বেক্সিমকো লিমিটেড লেনদেনের শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে। তবে কিছুদিন আগে নিয়মিত দুই থেকে তিনশ কোটি টাকার বেশি টাকার শেয়ার হাতবদল হলেও তা নেমে এসেছে একশ কোটি টাকার নিচে। হাতবদল হয়েছে ৮৩ কোটি ৩৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
লেনদেনের দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল জেনেক্স ইনফোসিস, যার ৫৮ কোটি ৯৫ লাখ ২৫ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়।
বেক্সিমকো ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক, ডেল্টা লাইফ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, আইএফআইসি ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, ফরচুন সুজ ও এএফসি অ্যাগ্রো ছিল সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০টি কোম্পানি।
এই ১০টি কোম্পানিতেই হাতবদল হয়েছে৩২৫ কোটি ৯২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪৬.০২ শতাংশ।
সব মিলিয়ে শীর্ষ ২০ কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে ৪০৭ কোটি ৫৯ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫৭.৫৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য