× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
There is a doctor in the 31 bed hospital
google_news print-icon

৩১ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক থাকেন ‘একজন’

৩১-শয্যার-হাসপাতালে-চিকিৎসক-থাকেন-একজন
নেত্রকোণার ৩১ শয্যার এই হাসপাতালে চিকিৎসক থাকেন মাত্র একজন। ছবি: নিউজবাংলা
নেত্রকোণার খালিয়াজুরী উপজেলার বাসিন্দাদের অভিযোগ, উপজেলা হাসপাতালে কাগজে-কলমে পাঁচজন চিকিৎসক থাকলেও বাস্তবে দেখা মেলে মাত্র একজনের। কর্মরত চিকিৎসকরা সেখানে সপ্তাহভিত্তিক পালা করে থাকেন। সেই একজন চিকিৎসক দিয়েই চলে গোটা উপজেলার লক্ষাধিক বাসিন্দার চিকিৎসা।

নেত্রকোণার বানিয়াহাটি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা অমলেন্দু দেব রায় কিছুদিন আগে প্রস্রাবজনিত সমস্যা নিয়ে সকাল ৭টার দিকে গিয়েছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে দেখেন, পুরো হাসপাতালেই নেই কোনো চিকিৎসক। ওয়ার্ডবয় আর চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা চালাচ্ছেন জরুরি বিভাগ।

অমলেন্দু রায়ের অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে কর্মচারীরা হাসপাতালের কোয়ার্টারে থাকা এক চিকিৎসককে ফোন করলে তিনি কিছু ওষুধের কথা বলে দেন। তবে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অমলেন্দু নিজেই পরে ফোন করেন চিকিৎসককে। এর ঘণ্টাখানেক পর ওই চিকিৎসক হাসপাতালে গিয়ে তার সঙ্গে রীতিমতো দুর্ব্যবহার করেন।

ঘটনাটি নেত্রকোণার হাওরদ্বীপ খ্যাত খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। লক্ষাধিক জনসংখ্যার দুর্গম উপজেলাটিতে এটিই একমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্র। তবে চিকিৎসক ও কর্মচারীর সংকট, চিকিৎসা সরঞ্জামাদির অভাব এবং অবহেলা ও নানা অব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি থেকে স্থানীয়রা ন্যূনতম সেবাও পাচ্ছেন না।

সাধারণ চিকিৎসার জন্যও তাদের নির্ভর করতে হচ্ছে জেলা সদর বা কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহের হাসপাতালগুলোর ওপর। অথচ অবকাঠামোর দিক দিয়ে খালিয়াজুরী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি অন্য অনেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চেয়ে উন্নত।

৩১ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক থাকেন ‘একজন’
২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপহার হিসেবে একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স দেন, কিন্তু নেই কোনো চালক

৩১ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির এটির নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করা হয় প্রায় দুই যুগ আগে। এ হাসপাতালে রোগীদের সেবা নিশ্চিতে চিকিৎসকের ১০টি পদ থাকলেও আছেন পাঁচজন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, হাসপাতালে কাগজে-কলমে পাঁচজন চিকিৎসক থাকলেও বাস্তবে দেখা মেলে মাত্র একজনের। কর্মরত চিকিৎসকরা সেখানে সপ্তাহভিত্তিক পালা করে থাকেন। সেই একজন চিকিৎসক দিয়েই চলে গোটা উপজেলার লক্ষাধিক বাসিন্দার চিকিৎসা।

আধুনিক জীবনযাত্রা এবং প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুযোগ না থাকায় চিকিৎসক-কর্মচারীদের কেউই সেখানে থাকতে চান না। কাউকে সেখানে নিয়োগ দেয়া হলেও তদবির করে কিছুদিনের মধ্যেই অন্য স্থানে বদলি হয়ে যান।

এ ছাড়া পাঁচটি ইউনিয়ন সাব-সেন্টারের জন্য পাঁচজন মেডিক্যাল অফিসার থাকার কথা থাকলেও সেই পদগুলোও খালি পড়ে আছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, চিকিৎসকের পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদও এক-তৃতীয়াংশ খালি। কর্মকর্তা-কর্মচারীর ৮৬টি পদের বিপরীতে আছেন ৩২ জন। গুরুত্বপূর্ণ অনেক পদ দীর্ঘদিন ধরে খালি।

সবশেষ হাসপাতালটিতে নার্সের ১৪ পদের বিপরীতে ছিলেন ৯ জন। মাসখানেক আগে তাদের সবাইকে অন্য স্থানে বদলি করা হয়েছে। এরই মধ্যে তিনজন চলে গেছেন। নতুন কেউ না আসায় বাকিরা যেতে পারছেন না।

৩১ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক থাকেন ‘একজন’
নৌকায় অথবা কাদাপানি মাড়িয়ে প্রসূতিরা সেবা নিতে গেলেও পড়েন নানা বিড়ম্বনায়। ছবি: নিউজবাংলা

এ ছাড়া চারজন মিডওয়াইফের জায়গায় আছেন দুজন। উপসহকারী মেডিক্যাল অফিসারের দুটি পদে একজনও নেই। দুজন ফার্মাসিস্টের জায়গায় আছেন একজন। রেডিওগ্রাফারের পদ মাত্র একটি, সেটিও শূন্য।

মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের (ল্যাবরেটরি) দুটি পদেও কেউ নেই। কাগজপত্রে একজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল) কাজ করলেও তিনি প্রায় এক যুগ ধরে প্রেষণে অন্য হাসপাতালে দায়িত্বে আছেন। ওয়ার্ডবয়ের তিনটি পদে আছেন একজন। আয়া ও বাবুর্চির দুটি করে পদ থাকলেও বাস্তবে একজনও নেই।

ভয়াবহ তথ্য হচ্ছে, পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পাঁচ পদের সবই শূন্য। অফিস সহায়কের পাঁচটি পদেও কেউ নেই।

আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ করা কিছু জনবল দিয়ে চালানো হচ্ছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কিছু দায়িত্ব। তবে নানা অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

হাসপাতালের চিকিৎসা যন্ত্রগুলোও ব্যবহার হয় না ঠিকমতো। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, শুরু থেকেই হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি অকেজো। রেডিওগ্রাফার না থাকায় তা মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয় না। আল্ট্রাসনোগ্রাফির মেশিনটি সচল থাকলেও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক না থাকায় সেটি বাক্সবন্দি।

মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ল্যাবরেটরি) না থাকায় প্যাথলজি বিভাগটিও কবে থেকে বন্ধ কেউ বলতে পারেননি।

সড়কের দুরবস্থার কারণে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো অ্যাম্বুলেন্স নেই। তবে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপহার হিসেবে একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স দেন, কিন্তু চালকের কোনো পদ সৃষ্টি করা হয়নি।

৩১ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক থাকেন ‘একজন’
বছরের প্রায় ছয় মাস ক্লিনিকগুলোর চারপাশ অথৈ পানিতে নিমজ্জিত থাকে

স্থানীয় উপজেলা পরিষদ অস্থায়ীভাবে একজন চালক নিয়োগ করলেও অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ এবং ওঠা-নামায় সমস্যার কারণে এটি সচরাচর ব্যবহার করেন না কেউ। এ ছাড়া কম পানির রাস্তায়ও এটি চলে না।

তারা আরও জানান, হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিন এক থেকে দেড় শ রোগী চিকিৎসা ও পরামর্শ নিতে আসেন। কখনও চিকিৎসক, আবার কখনও নার্স বা অন্য কর্মচারীরা তাদের চিকিৎসা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ভর্তি করা রোগীর সংখ্যা থাকে সব সময়ই অনেক কম। গড়ে আট-দশজন। তাদের মধ্যে কিছুসংখ্যক আবার বিভিন্ন মামলার আসামি। মেডিক্যাল সার্টিফিকেট নিতে তারা ভর্তি থাকেন।

পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় বেশি জটিল বা সংকটাপন্ন রোগীরা কখনই ভর্তি হতে আসেন না। চলে যান জেলা সদরে অথবা ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জে।

উপজেলার মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার চিত্র আরও করুণ। ছয় ইউনিয়নে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকার কথা থাকলেও মেন্দিপুর ইউনিয়ন ছাড়া আর কোথায়ও তা নেই। একমাত্র ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতেও নেই কোনো চিকিৎসক।

কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা থেকেও বঞ্চিত খালিয়াজুরীর হাওরের বাসিন্দারা। ছয় ইউনিয়নে ১৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ১০টি। এসব ক্লিনিকে ১৮ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র সাতজন।

অবকাঠামোগত অসুবিধার কারণেও এসব ক্লিনিক থেকে প্রয়োজনীয় সেবা পান না রোগীরা। দাউদপুর, পাঁচহাট, আদমপুর ও নাজিরপুর গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর চারপাশে কোনো রাস্তাই নেই। প্রায় ছয় মাস ক্লিনিকগুলোর চারপাশ অথৈ পানিতে নিমজ্জিত থাকে। নৌকায় অথবা কাদাপানি মাড়িয়ে প্রসূতিরা সেবা নিতে গেলেও পড়েন নানা বিড়ম্বনায়।

খালিয়াজুরী উপজেলা সদরের নাগরিক অধিকার আন্দোলনের কর্মী স্বাগত সরকার শুভ বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এ উপজেলার বাসিন্দাদের জরুরি ও জটিল চিকিৎসার একমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্র। এখানে আর কোনো বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্র নেই। এমনকি একটি প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারও নেই গোটা উপজেলায়।

‘তাই প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করে এখানকার প্যাথলজি, আল্ট্রাসনোগ্রাফি ও এক্স-রে বিভাগটি চালুর পাশাপাশি চিকিৎসকদের শূন্য পদগুলো পূরণ করা অত্যন্ত জরুরি।’

উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মহসিন মিয়া বলেন, ‘দিনের বেলায় ডেকেডুকে হলেও অন্তত একজন চিকিৎসক পাওয়া যায়, কিন্তু রাতে নার্স-কর্মচারীরা ছাড়া আর কোনো ভরসা মিলে না। এ কারণে রাতে কেউ অসুস্থ হলে তার স্বজনদের মারাত্মক দুশ্চিন্তা ও দুর্ভোগে পড়তে হয়।

‘গভীর রাতে হাওরের অথৈ জলরাশি বা দুর্গম পথ মাড়িয়ে ছুটতে হয় জেলা সদর বা আশপাশের উপজেলায়, যা দুঃখজনক। বিশেষ করে প্রসূতি নারীদের নিয়ে প্রায়ই এমন বিপাকে পড়তে হয়।’

খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আতাউল গণি উসমানী বলেন, ‘জনবলের অভাবই এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সংকট।’

এ ছাড়া কর্মরত চিকিৎসকদের পালাক্রমে দায়িত্ব পালনের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘দুর্গম এই জনপদে থাকা-খাওয়ার কোনো সু-ব্যবস্থা নেই। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় একেকজনকে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাই তারা সপ্তাহে পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করেন।’

জেলা সিভিল সার্জন সেলিম মিঞা বলেন, ‘খালিয়াজুরীসহ হাওরাঞ্চলের প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই জনবল সংকট রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। এ ছাড়া এই দুর্গম জনপদে কেউ থাকতে চায় না। কাউকে এখানে নিয়োগ দেয়া হলে যোগদানের কিছুদিনের মধ্যেই বদলির জন্য তদবির শুরু করেন।

‘অনেকে রাজনৈতিক তদবিরে বদলি হয়ে চলে যান। তবে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে কিছু জনবল নিয়ে আমরা সংকট সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। তা ছাড়া শূন্য পদগুলোতে নিয়োগের জন্যও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছি।’

আরও পড়ুন:
প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের ৭ বছরেও চালু হয়নি শিশু হাসপাতাল
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরেই রোগীদের নিয়ে দালালদের টানাহ্যাঁচড়া
বঙ্গবন্ধু কর্নারের সামনে গ্যারেজ, আসবাবের স্তূপ
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে হুইলচেয়ার আটকে রাখা নারী কে?
সরকারি হাসপাতালে ৯৭ শতাংশ রোগী ওষুধ পায় না

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Gosipur Jalsuka road work has not been completed in 6 months 

গোসাইপুর-জালশুকা সড়কের কাজ ১১ মাসেও শেষ হয়নি! 

গোসাইপুর-জালশুকা সড়কের কাজ ১১ মাসেও শেষ হয়নি! 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার গোসাইপুর-জালশুকা সড়কের নির্মাণ কাজ ১১ মাসেও শেষ হয়নি। অথচ ঠিকাদারের শর্ত অনুসারে এ কাজ নয় মাসে শেষ করার কথা। অভিযোগ রয়েছে- ঠিকাদার লোকমান হোসেন এ সড়কের বক্সকাটিং করে ১১ মাস ধরে ফেলে রেখেছেন। তার স্বেচ্ছাচারিতা ও গাফিলতে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। উল্লেখ্য তিতাস নদীর উত্তর পাড়ে বড়াইল ইউনিয়নের একটি গ্রাম গোসাইপুর। গ্রামের পশ্চিম অংশে বাজার। বাজারের পূর্ব দিকে দিয়ে চলে গেছে গোসাইপুর-জালশুকা সড়কটি। এ বাজারের যাতায়াতের জন্য রাধানগর, চরগোসাইপুর, জালশুকা, বড়াইল, মেরাতুলী গ্রামের মানুষেরাও সড়কটি ব্যবহার করে।

গোসাইপুর বাজারের মুদি মালের ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন বলেন-"আমার গ্রামের বাড়ি জালশুকা । প্রতিদিন এ সড়কে বাজারে আসি। সড়কটি বর্ষাকালে বৃষ্টি হলেই পানি ও কাঁদা মিলে চলাচলে অযোগ্য হয়ে যায়"। বড়াইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বাসার বলেন-"পূর্ব অঞ্চলের জনগণের জন্য এই রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গোসাইপুর বাজার ও রাধানগর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজে আসা-যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। সড়কটির কাজ শেষ না হওয়ার কারণে জনগণের যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে"। গোসাইপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার ডা. হুমায়ুন কবীর বলেন-"সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত চলাচলে ভোগান্তির শেষ নেই। নির্মাণ কাজ করতে এসে ঠিকাদার আর কাজ করছেন না। এখন বর্ষার বৃষ্টির কারনে মোড়ে মোড়ে রাস্তা ভেঙে মাটি পড়ে যাচ্ছে। যাত্রীরা পা পিছলে পড়ে যাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না শিক্ষার্থীরাও"। কাজ বন্ধ থাকার বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন- "সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে আমি কয়েকবার তাগিদ দিয়েছি"। এ বিষয়ে ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব হোসেন বলেন-"এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে"। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব চৌধুরী বলেন-"এই সড়কের কাজ বন্ধ থাকার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি দ্রুত সময়ে কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করব"।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The bridge is not working in the mustard house

সরিষাবাড়ীতে কাজে আসছে না অর্ধকোটি টাকায় নির্মিত ব্রিজ

ভোগান্তিতে ৭ গ্রামের মানুষ
সরিষাবাড়ীতে কাজে আসছে না অর্ধকোটি টাকায় নির্মিত ব্রিজ

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সংযোগ সড়ক ও রাস্তা না থাকায় কাজে আসছে না প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজ। ফলে চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হয় ৫ গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের। এমন ব্রিজের দেখা মিলেছে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর আদ্রা গ্রামের ফসলের মাঠে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ব্রিজটি। ব্রিজ নির্মাণ করা হলেও এখন পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচলের জন্য নির্মিত হয়নি সড়ক। ফলে কোনো কাজেই আসছে না সাতপোয়া ইউনিয়নের, চর রৌহা, আকন্দপাড়া, মাজারিয়া ও খামার মাগুরাসহ পার্শ্ববর্তী মাদারগঞ্জ উপজেলার আরও ২টি গ্রামের জনসাধারণসহ হাজারও মানুষের।

সংযোগ সড়ক না থাকায় প্রতিদিন এসব এলাকার ফসলের মাঠের আল দিয়ে দুর্ভোগের মধ্যে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। ব্রিজটি নির্মাণের দীর্ঘদিন পার হলেও এটি এখনো জনগণের চলাচলের জন্য ব্যবহারযোগ্য হয়ে ওঠেনি। ব্রিজের দুই পাশে কাঁদা ও অসমতল জমির কারণে শিশু, বৃদ্ধ এমনকি সাধারণ পথচারীদেরও চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এছাড়া কৃষকদের আবাদি ফসল আনা-নেওয়া বা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতেও হয়েছে চরম দুর্ভোগ।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হাসানুর কবীর স্বপন, মাসুদ রানা, চান মিয়া, ছমিরন বেওয়া বলেন, ব্রিজটি নির্মাণের খবরে আমরা এলাকাবাসীরা খুবই খুশি হয়েছিলাম। ভেবে ছিলাম আমাদের কয়েক গ্রামের দীর্ঘদিনের চলাচলের দুর্ভোগ লাঘব হবে। কিন্তু ব্রিজটি নির্মাণের এতদিন পার হলেও সড়ক না থাকায় এটি আমাদের কোনো কাজে আসছে না। আমরা দাবি জানাই অতি দ্রুত আমাদের চলাচলের সুবিধার্থে ব্রিজটির দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী শওকত জামিল বলেন, ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যেই ব্রিজটি ও সড়কের কথা জানতে পেরেছি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। ওই এলাকার মানুষদের চলাচলের দুর্ভোগ লাঘবে মাটি কেটে রাস্তা উঁচু করে ব্রিজের সঙ্গে সংযোগ রাস্তা নির্মাণ করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The unemployed people are lost in employment
কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার সংশ্লিষ্টরা

হারিয়ে যাচ্ছে বর-কনের বাহন পালকি

হারিয়ে যাচ্ছে বর-কনের বাহন পালকি গ্রামবাংলার ঐতিহ্য পালকি। ছবি: নিউজবাংলা

পালকি ছিল এক সময় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য, বর-কনের বাহন। এটা ছাড়া বিয়ের কথা ভাবাই যেত না। সারা দেশের মতো রূপগঞ্জেও একই অবস্থা ছিল। কালের বির্বতনে চিরায়ত গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ধারক পালকি রূপগঞ্জে আজ আর চোখে পড়ে না। পালকি এখন মিউজিয়াম পিস হয়ে কালের সাক্ষী হয়ে আছে জাদুঘরে। বেহারাদের সুর করে সেই গ্রাম ঘুরে মাঠ-ঘাট-প্রান্তর পেরিয়ে গন্তব্যের কাছে দূর থেকে সেই ছয় বেহারাদের আর দেখা যাচ্ছে না। তাদের ছন্দিত লয়ে হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে এ গাঁ থেকে ওগাঁয়ে নাইয়র, বিয়ের কনে বর কিংবা মান্যগন্য ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়ার এ চক্রবিহীন যান সম্ভবত তার অন্তিম যাত্রা করেছে। ছন্দের জাদুকর সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ভাষায়, রবীন্দ্রনাথের কবিতায়, হেমন্তের গানে কিংবা ভুপেন হাজারিকার মাদল তালে চলা পালকি এখন ঐতিহ্যের খাতায় নাম লিখিয়েছে।

সেই ন্যাংটা পুঁটো ছেলেটা আর বলে না পালকি চলে পালকি চলে.....আদুল গাঁয়ে যাচ্ছে কারা হনহনিয়ে। রবি ঠাকুরের ‘বীর পুরুষ’ কবিতার খোকা তার মাকে পালকিতে নিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতদের সাথে লড়ে যখন ওরা আসে তেড়ে ‘হারে রে রে’ বলে। সেই ভীষণ যুদ্ধের বর্ণনাও দিতে পারে না মাকে। মাও বলতে পারে না, ভাগ্যেস খোকা ছিল তার সঙ্গে। দাদা তার সদ্য বিয়ে হওয়া দিদিকে আর বলে না, আর কটাঁ দিন থাক না দিদি, কেঁদে কেটে কঁকিয়ে, দুদিন বাদে তো নিয়েই যাবে পালকি করে সাজিয়ে। ‘মৈমনসিং গীতিকার’ দেওয়ানা মদিনা ও ছুটবে না পালকিতে আবের পাংখা নিয়ে আর পালকি বহরের সেই পরিচিত দৃশ্য এখন আর দেখা যায় না।

আধুনিক যোগাযোগের গোগ্রাসে পালকি হারিয়ে যাচ্ছে বিস্মৃতির অতল তলে প্রাচীন বাংলার এ বাহনটি। এক সময় গ্রাম-বাংলার হাটবাজারে পালকি সাজিয়ে রাখা হত। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার আগেই পালকিওয়ালাদের কাছে ছুটে যেতেন বরের লোকজন। পালকি কাঠ দিয়ে তৈরি করা হতো। ছয়জন মিলে পালকি বহন করতো। সামনে পেছনে দুজন ও মাঝখানে দুজন করে পালকি কাঁদে নিত। প্রথমে বরকে পালকিতে করে তার নিজ বাড়ি থেকে কনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হতো। বিয়ের কার্যক্রম সম্পূর্ণ হওয়ার পর বর-কনেকে এক সঙ্গে আবার বরের বাড়িতে নিয়ে আসতো।

আসলে পালকি নামটির উৎপত্তি ফারসি ও সংস্কৃত উভয় ইন্দো ভারতীয় ভাষা থেকে আর সেই সঙ্গে ফরাসি থেকেও। পল্লীকবি জসিম উদ্দিন তাঁর স্মৃতি কথায় এ গাঁ থেকে ওগাঁয়ে যাওয়া বেহারাদের পালকি নিয়ে চলার যে বিবরণ দিয়েছেন তা আমাদের আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। বিলুপ্ত এ পালকি এখন বিভিন্ন জাদুঘরে শোভা পাচ্ছে। বিয়ে বাড়িতে নব বর-বধুদের আনা নেয়ায় পালকি ব্যবহার করা হতো। চক্রযানের বিপ্লবে পালকির জায়গা দখল করে নিয়েছে আধুনিকতার এ যুগে প্রাইভেটকার, নোহা, বাস ও মাইক্রোবাস। হালের লাঙ্গল যেমন গ্রামেও অচল তেমনি ধনী গরিব নির্বিশেষে সকলের নানা অনুষ্ঠানে ব্যবহার করছে আধুনিক যান্ত্রিক যানবাহন। এসব যানের রমরমা ব্যবসাও এ কারণেই জমে ওঠেছে।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় ইদানিং বর-কনের বাহনে যোগ হয়েছে হেলিকপ্টারও। রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া এলাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে বর যাত্রা গিয়েছেন সফিক মিয়া। হেলিকপ্টারে বর-কনে বহনের ঘটনা তখন পুরো এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ছড়ায় বলা হতো বউ সাজবে কালকি, চড়বে সোনার পালকি! সোনার বরনী কন্যা এখন আর পালকিবদ্ধ পরিবেশে যাবে না, উঠবে আসল বা নকল ফুলের সাজানো এয়ারকন্ডিশন গাড়িতে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bus in Pabna Truck driver killed in a collision with truck

পাবনায় বাস- ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত

পাবনায় বাস- ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত

মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোর সাড়ে চারটার দিকে পাবনা বাইপাস মহাসড়কের ইয়াকুব ফিলিং স্টেশন এর সামনে দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ট্রাকচালক সেলিম হোসেন (৩৮) মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের মৃত আব্দুল গনির ছেলে।

আহতরা হলেন- বাসের হেলপার তারেক (৩৫) ট্রাকের হেল্পার আলামিন (৩৫)। তাদের রাজশাহী মেডিকেল। কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ট্রাকচালক সেলিম সুনামগঞ্জ থেকে পাথর ভর্তি করে মাওয়া যাচ্ছিলেন।অপরদিক পাবনা এক্সপ্রেস বাসটি ঢাকা থেকে পাবনা বাস টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে হেলপার আলামিন গাড়ি গ্যারেজ করার জন্য দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে ইয়াকুব ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছালে ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

স্থানীয় লোকজন ফায়ার সার্ভিসকে জানালে তাৎক্ষিনক ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম আহত তিনজনকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ট্রাক চালক সেলিম কে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে আহত ট্রাকের হেলপার ও বাসের হেলপারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্থানান্তর করা হয়।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Two pirates with weapons in the Sundarbans 

সুন্দরবনে অস্ত্রসহ দুই ‘জলদস্যু’ আটক 

সুন্দরবনে অস্ত্রসহ দুই ‘জলদস্যু’ আটক 

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নজির গাজী (৪৯) ও দিদারুল ইসলাম (৩৮) নামে দুই ’জলদস্যুকে’ আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাত সাড়ে ৯টা ও ১১টার দিকে উপজেলার উপকুলবর্তী যতীন্দ্রনগর ও মীরগাং এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় আটক দুই জলদস্যুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা।

এর আগে সোমবার রাত আটটার দিকে সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে উঠে আসার সময় স্থানীয়দের ধাওয়ার মুখে অপর কয়েক সহযোগিসহ এসব জলদস্যুরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। আটকরা হলেন— শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের নওশাদ গাজী এবং আশাশুনি উপজেলার চাকলা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে দিদারুল ইসলাম।

আবু হামজা, সিদ্দিক হোসেন ও আকবর আলীসহ স্থানীয়রা জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে অপরিচিত পাঁচ/সাত জন ব্যক্তি সুন্দরবন তীরবর্তী যতীন্দ্রনগর বাজারে যায়। এসময় নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তারা মাইক্রো বা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের জন্য কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে নাম—পরিচয়সহ সুন্দরবন এলাকায় আসার কারণ জানতে চাইলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় যতীন্দ্রনগর বাজারে উপস্থিত লোকজন ধাওয়া করে দিদারুলকে ধরে পুলিশকে খবর দেয়। পরবর্তীতে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির ঘটনাস্থলে পৌঁছে নজীরকে আটকের পাশাপাশি তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই চক্রের ব্যবহৃত মাছ শিকারের নৌকার মধ্যে থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি দা উদ্ধার করে।

এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছে, জোনাব বাহিনী এখন সুন্দরবনে খুব বেশি তৎপর না। বরং নজীর, তার ভাই নবাব ও ছেলে আব্দুর রহিম এবং মুন্সিগঞ্জ আটিরউপর এলাকার আছাদুলসহ কয়েকজনকে নিয়ে জোনাবের নামে সুন্দরবনে দস্যুতায় লিপ্ত। সোমবার রাতে নজীর আলীকে আটকের পরপরই তার ছেলে আব্দুর রহিম ও ভাই নবাব ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।

আটক নজীর আলীর ভাষ্য, তিনি সুন্দরবনের ত্রাস কুখ্যাত জোনাব বাহিনীর সদ্যদের উপরে তুলে দেওয়া এবং সুন্দরবনে নামিয়ে দেয়ার কাজ করেন। সোমবার ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে জোনাব বাহিনীর দুই সদস্যকে যতীন্দ্রনগর বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন। বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে যেয়ে মাছ শিকারের পাশাপাশি তারা পরিচিত জলদস্যুদের উপরে নিচে উঠানামার কাজ করেন বলেও দাবি তার। উপরে উঠে যাওয়া দুই জলদস্যু উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি তার নৌকার মধ্যে রেখে যায় বলেও তিনি দাবি করেন।

দিদারুল জানান, তিনি নজীর আলীর শ্রমিক হিসেবে সুন্দরবনে যাওয়া জেলেদের জিম্মি করারসহ মুক্তিপণ আদায়ের কাজ করেন। লোকারয়ে পৌঁছে দেওয়া দুই জলদস্যুকে সুন্দরবনের পুটেরদুনে এলাকা থেকে নিয়ে আসার কথাও নিশ্চিত করেন তিনি। তবে তার কাছে মোবাইলের পাওয়ার ব্যাঙ্কসহ নানান সরঞ্জামাদির বিষয়ে জানতে চাইলে নিরুত্তর থাকেন।

এদিকে অস্ত্র উদ্ধারসহ দু’জনকে আটকের বিষয়ে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, নজীরের দেওয়া তথ্যে নৌকায় থাকা ককসিটের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার হয়েছে। আটকের পর উভয়কে শ্যামনগর থানায় নেওয়া হয়েছে। তারা মাছ শিকারির ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করতেন বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাহিনীর নাম—পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

মন্তব্য

কুমিল্লায় ৪ জনের নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত

কুমিল্লায় ৪ জনের নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত

কুমিল্লায় চার জনের শরীরে নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে এক নারী চিকিৎসকসহ তিনজন পুরুষ রয়েছেন।

শনিবার (১৪ জুন) কুমিল্লা সিটি স্ক্যান এমআরআই স্পেশালাইজড অ্যান্ড ডায়ালাইসিস সেন্টারে করোনা পরীক্ষা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

করোনায় আক্রান্তরা হলেন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আবদুল মোমিন (৭০), কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার ডা. সানজিদা (৩০), বুড়িচং উপজেলার মো. হেলাল আহমেদ (৩৮) এবং সদর উপজেলার মো. ইবনে যুবায়ের (৩৯)।

সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির বলেন, গত তিন দিনে কুমিল্লায় ১৩ জন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা কয়। পরীক্ষা শেষে তাদের মধ্যে চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বাকিদের নগরীর একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নমুনা পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

তিনি বলেন, চারজনই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দুজন এরই মধ্যে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় চলে গেছেন।

তবে আরেকজনের বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি সিভিল সার্জন।

করোনার প্রথম ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর এতদিন কুমিল্লায় নতুন করে কেউ শনাক্ত হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু এখন আবার নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি দ্বিতীয় ধাপের শুরু হতে পারে এবং এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In Chittagong six days Karona identifies 3 

চট্টগ্রামে ছয় দিনে করোনা শনাক্ত ৯ 

চট্টগ্রামে ছয় দিনে করোনা শনাক্ত ৯ 

চট্টগ্রামে নতুন করে আরো একজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত ছয় দিনে মোট ৯ জনের শরীরে এ ভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার সকাল আটটা) ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। ৪০ বছর বয়সী আক্রান্ত ওই ব্যক্তি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেহাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তিনি শুক্রবার নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা করান। সেখানেই তার শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়।

এদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্ত নয়জনের মধ্যে পুরুষ ৫ জন এবং নারী ৪ জন। এদের মধ্যে ৭ জন নগরের এবং ২ জন উপজেলার বাসিন্দা।

অন্যদিকে, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত বেসরকারি পর্যায়ে করোনা শনাক্তকরণের পরীক্ষা চালু আছে। তবে শিগগিরই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) আরটি–পিসিআর পরীক্ষা শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম।

মন্তব্য

p
উপরে