তৃতীয় ধাপে ১ হাজার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোট শুরু হচ্ছে আজ। সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
দ্বিতীয় ধাপের আগে-পরে ব্যাপক সহিংসতা ও প্রাণহানির পর এ পর্যায়ের ভোটে রক্তপাত বন্ধে ব্যবস্থার কথা বলেছেন নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। সে আশ্বাসের বাস্তবায়ন দেখা যাবে ভোট শুরু হলেই।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী তৃতীয় ধাপে এক হাজার সাতটি ইউপিতে ভোট হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু নানা কারণে সাত ইউপিতে ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
একই দিনে অষ্টম ধাপে ৯টি পৌরসভায়ও ভোট হবে। ভোট নেয়া হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। নীলফামারীর জলঢাকা ও কক্সবাজার পৌরসভায় শুধু কাউন্সিলর পদে ভোট হবে।
এর আগে প্রথম ধাপে গত ২১ জুন ২০৪ ইউপি ও ২০ সেপ্টেম্বর ১৬০ ইউপির ভোট হয়। দ্বিতীয় ধাপে ৮৪৬ ইউপির ভোট হয় ১১ নভেম্বর।
তৃতীয় ধাপে ১০০০ ইউপির ভোট হচ্ছে আজ। চতুর্থ ধাপে ৮৪০ ইউপিতে ভোট হবে ২৬ ডিসেম্বর। পঞ্চম ধাপে ৭০৭ ইউপিতে ভোট হবে ৫ জানুয়ারি।
তৃতীয় ধাপের এ নির্বাচনে ৫৬৯ জন প্রার্থী এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যানের সংখ্যা ১০০। এ ছাড়া সাধারণ সদস্য ৩৩৭ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীর সংখ্যা ১৩২।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয় শুক্রবার এসব তথ্য জানিয়েছে।
ইসি জানায়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীদের বাদ দিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫০ হাজার ১৪৬ প্রার্থী। চেয়ারম্যান পদে মাঠে আছেন ৪ হাজার ৪০৯ জন। সংরক্ষিত সদস্যপদে ১১ হাজার ১০৫ এবং সাধারণ সদস্যপদে ৩৪ হাজার ৬৩২ জন ভোটে লড়াই করছেন।
মোট ১০ হাজার ১৫৯টি কেন্দ্রে হবে ভোট। এগুলোতে মোট ভোটকক্ষের সংখ্যা ৬১ হাজার ৮৩০টি। ৩৩টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট হবে।
১ হাজারটি ইউপিতে ভোটার সংখ্যা ২ কোটি ১৪ লাখ ৯ হাজার ২৭৮ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ কোটি ২১ লাখ ৫ হাজার ৪২৩। নারী ভোটার ৯৯ লাখ ৩২ হাজার ৫৩০ জন। এর বাইরে ট্রান্সজেন্ডার ভোটার আছেন ১৯ জন।
ভোটের নিরাপত্তা
ভোটের সার্বিক পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ জন সদস্য রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশের একজন এসআই বা এএসআই বা নায়েক থাকবেন। আর পুলিশের কনস্টেবল থাকবেন চারজন। অস্ত্রসহ পিসি ও এপিসি মর্যাদার আনসার থাকবেন দুজন। লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার-ভিডিপি সদস্য থাকবেন ১৫ জন। তাদের মধ্যে নারী থাকবেন ৭ জন। বাকি ৮ জন পুরুষ।
পুলিশ, এপিবিএন ও আনসার ব্যাটালিয়নের সমন্বয়ে গঠিত একটি মোবাইল ফোর্স প্রতি ইউনিয়নে আর স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে প্রতি তিন ইউনিয়নে একটি।
প্রতি উপজেলায় র্যাবের মোবাইল টিম থাকবে দুটি আর স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে একটি। প্রতি উপজেলায় বিজিবির মোবাইল টিম থাকবে দুই প্লাটুন। স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে এক প্লাটুন।
প্রতিটি উপকূলীয় উপজেলায় কোস্ট গার্ডের মোবাইল ফোর্স দুই প্লাটুন এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে এক প্লাটুন।
ভোটের আগের দুই দিন, ভোটের দিন ও পরের দিন মিলে চার দিন মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একই পদ্ধতিতে প্রতি উপজেলায় ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন তিনজন। আর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন একজন।
কদিন ধরেই দাবদাহে পুড়ছে দেশ। দিনভর তীব্র তাপপ্রবাহ। অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এ অবস্থায় জামালপুর, নাটোর ও কুমিল্লায় হিট স্ট্রোকে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
জামালপুরে ব্যবসায়ীর মৃত্যু
জামালপুরের ইসলামপুরে চলমান তীব্র তাপদাহে হিট স্ট্রোক করে গোলাম রাব্বানী নামের এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ওই ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়।
৪৮ বছর বয়সী রব্বানী উপজেলার চিনাডুলি ইউনিয়নের পশ্চিম গিলাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা। তিনি গুঠাইল বাজারে কাঁচামালের ব্যবসা করতেন।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, কয়েক দিনের চলমান তীব্র তাপদাহের কারণে এদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাড়িতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন গোলাম রাব্বানী। পরে তাকে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এএএম আবু তাহের বলেন, ‘গোলাম রাব্বানীকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। অতিরিক্ত গরমে হিট স্ট্রোকেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে আমার ধারণা।’
বড়াইগ্রামে কৃষকের মৃত্যু
নাটোরের বড়াইগ্রামে কৃষিখেতে কাজ করার সময় হিট স্ট্রোক করে রকুল হোসেন নামের এক কৃষকের মুত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের সাতইল বিলে এই ঘটনা ঘটে।
৩০ বছর বয়সী রকুল উপজেলার গাড়ফা উত্তরপাড়া গ্রামের হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চান্দাই ইউপি চেয়ারম্যান শাহানাজ পারভীন বলেন, ‘সকাল থেকে জমিতে কাজ করছিল কৃষক রকুল হোসেন। এক পর্যায়ে তীব্র দাবদাহ সহ্য করতে না পেরে তিনি পাশের জলাশয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু সেখানে পোঁছানোর আগেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি দেখতে পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।’
বুড়িচংয়ে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
তীব্র গরমে কাজ করতে গিয়ে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে হিট স্ট্রোক করে মজিবুর রহমান নামের এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বুড়িচং উপজেলা সদরের ব্যবসায়ী মো. রুহুল আমিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
৪৫ বছর বয়সী মজিবুর রহমান উপজেলার জগতপুর গ্রামের আলফাজ উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, এদিন সকাল নয়টার দিকে রুহুল আমিনের বাড়িতে কাজ করতে যান মজিবুর। কিছুক্ষণ পর ভবনের বেইজ কাটার সময় হিটস্ট্রোক করেন তিনি। স্থানীয়রা তাকে সঙ্গে সঙ্গে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বুড়িচং থানার এসআই মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মরদেহের গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ফলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি স্ট্রোক করে মারা গিয়েছেন। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে।’
গত ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহ সারা দেশে এখনও অব্যাহত রয়েছে। শনিবার থেকে টানা তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারির পর নতুন করে সোমবার (২২ এপ্রিল) আবারও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এসময় বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল, কলেজ, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও। আদালতেও আইনজীবীদের কালো পোশাক পরা শিথিল করা হয়েছে।
এই আবহাওয়া চলতি মাসজুড়ে অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ঈশ্বরদীতে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন অর্থাৎ সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খুলনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শনিবার মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যশোরে। সেদিন চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রাও ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুসারে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
প্রান্তিক জনগণের যাতায়াত সুবিধা এবং গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের স্বার্থে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার কালীগঙ্গা নদীর ওপর ৩৬৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করা হয়। তবে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় কাজে আসছে না সরকারের ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি। সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়কের অভাবে দুই বছর ধরে কালীগঙ্গায় ঠাঁই দাড়িয়ে আছে সেটি।
উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ঘিওরের সিংজুরী ইউনিয়নের বৈকুণ্ঠপুর কালীগঙ্গা নদীর ওপর ৩৬৫ মিটার দৈর্ঘের সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অরিয়েন্ট ট্রেডিং অ্যান্ড বিল্ডারস এবং মেসার্স কহিনুর এন্টাইপ্রাইজ। সংযোগ সড়ক ছাড়াই ২০২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়।
এরপর সংযোগ সড়ক নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের জন্য প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২৩ সালের ৯ মার্চ পর্যন্ত। প্রথমার্ধে সেতু নির্মাণের ব্যয় ৩০ কোটি থাকলেও পরবর্তীতে সংযোগ সড়ক ও বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের আরও পাঁচ কোটি টাকা বাড়ানো হয়। এরপর সেতু ও সংযোগ সড়কসহ যাবতীয় উন্নয়নকাজের ব্যয় ধরা হয় ৩৫ কোটি ৬০ লাখ ৪৫৪ হাজার টাকা। তবে সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণের সময় বাড়ানো হলেও নির্ধারিত সময়ের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও ব্যবহারোপযোগী হয়নি সেতুটি।
স্থানীয় মির্জাপুর এলাকার কৃষক খোরশেদ আলম বলেন, ‘সেতুটির নির্মাণ দেখে ভাবছিলাম, আমাদের দীর্ঘ দিনের কষ্ট দূর হবে, কিন্তু ব্রিজের দুই পাশে রাস্তা না থাকায় আমরা কেউ সেতুটি ব্যবহার করতে পারি না। আগের মতো নৌকায় করেই খেতের ফসল আনতে হচ্ছে। আমাগো মনের আশা মনেই রইল। তাহলে সরকার এত টাকা দিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করল কেন?’
আরেক কৃষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘সেতুর পাশে আমার দেড় শতাংশ কৃষিজমি আছে। সেতুর রাস্তার জন্য আমার জমি নিতে চাইছে। এলাকার মানুষের ভালোর জন্য আমার জমি দিতে চাইছিলাম। দীর্ঘদিন ধরে খালি শুনতেছি, আমাগো জমি অধিগ্রহণ করা হবে, কিন্তু জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় জমিতে আগের মতো ইরি ধানের আবাদ করছি।’
স্থানীয় বালিয়াবাধা এলাকার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণের পর একদিনের জন্যও কেউ সেতুটি ব্যবহার করতে পারে নাই। সেতুটি ব্যবহার করতে পারলে সেতুর আশপাশের অন্তত ৫০টি গ্রামের কৃষক ও সাধারণ মানুষ উপকৃত হতো।
‘সেতুটি ব্যবহারের উপযোগী না হওয়ায় আমাদের ও আশপাশের এলাকার মানুষকে ১৫ কিলোমিটার ঘুরে জেলা শহরে যেতে হচ্ছে। আমাদের দাবি, দ্রুত ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে সেতুটি ব্যবহারের উপযোগী করবে সরকার।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মাসুদ মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেতু নির্মাণের পর সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার জমির মালিকদের বাধার মুখে পড়ে কাজ বন্ধ করতে হয়েছে। এখন সংযোগ সড়কের জায়গা বুঝে পেলেই আমরা কাজ শুরু করব। আর সংযোগ সড়কের কাজ করতে আমাদের সময় লাগবে ৪-৫ মাস। আমরা যত দ্রুত পারব, তত দ্রুত কাজ শুরু করব।’
এ বিষয়ে ঘিওর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে নিউজবাংলা।
তিনি বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণের জন্য প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই ভূমি জটিলতা কেটে যাবে এবং সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য খোঁজ খবর নিচ্ছে।’
ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে মানিকগঞ্জ ডেপুটি রেভিনিউ কালেক্টর এল এ শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মামুনুর রশিদ বলেন, ‘সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ৪.৯৬ শতাংশ ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান। ইতোমধ্যে ভূমি মালিকদের ৭ ধারা নোটিশ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে খুব দ্রুত ভূমির মালিকদের তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।’
আরও পড়ুন:চরম আবহাওয়ার খবরে বরাবরই শিরোনামে থাকে চুয়াডাঙ্গার নাম। চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমেও শুরু থেকে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়ে আসছে এই জেলায়। অতি তীব্র তাপপ্রবাহের পর এখানে মঙ্গলবার ছিল তীব্র তাপপ্রবাহ। তবে সোমবারের তুলনায় এদিন কয়েক ডিগ্রি কমেছে তাপমাত্রা।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল থেকে সূর্যের চোখ রাঙানিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জেলার জনপদ। দিনের মতোই থাকছে রাতের তাপমাত্রা। বাতাসে আগুনের হল্কা। গরমে একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ। পুকুর ও সেচ পাম্পের পানিতে গোসল করে শান্তি খুঁজছেন অনেকে। দিন ও রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে এখানকার জনজীবন।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তালতলা গ্রামের কৃষক ফজলুল হক বলেন, ‘এই তাপে মাঠে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। ভ্যাপসা গরমে কৃষি কাজ করা যাচ্ছে না। ধানে বেশি সেচ লাগছে। কিন্তু সেচ পাম্পে পানিও ঠিকমতো উঠছে না। বিদ্যুতের ভোগান্তি তো আছেই।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ (মঙ্গলবার) তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। তবে বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। তীব্র তাপদাহ আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।’
চট্টগ্রামে চিকিৎকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস এবং বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নতুন রোগীর সেবা কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রয়েছে।
দুজন চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এ ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখা জানিয়েছে, পূর্ব-ঘোষিত এ কর্মসূচি পালন শুরু হয় মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে যা চলবে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ ফয়সল ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘সকাল ৬টা থেকে আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি পালন শুরু হয়েছে। দাবি মানা না হলে সামনে আরও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে, তবে বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকে আগে ভর্তি হওয়া রোগীর চিকিৎসা সেবা চলবে।’
চট্টগ্রামের পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে ডা. রক্তিম দাশের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি ও শহরে মেডিক্যাল সেন্টার হসপিটালে ডা. রিয়াজ উদ্দিন শিবলুর ওপর হামলাকারীদের জামিন বাতিলের দাবিতে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) থেকে কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএমএ চট্টগ্রাম শাখা।
এর মধ্যে গত শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা চট্টগ্রামের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে চমেক হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন করে আন্দোলনের এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:ঝিনাইদহ জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন ভোরের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক রোকনুজ্জামান মিলন। আনসারের জেলা কমান্ড্যান্ট সোহাগ হোসেন ও মহেশপুর উপজেলা টিআই হুসাইনসহ আনসার সদস্যরা তাকে মারধর করে একটি ঘরে আটকে রাখেন। পরে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন।
সংবাদকর্মীরা জানান, ৮ মে অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আনসার অফিসে নির্বাচনকালীন অস্থায়ী সদস্য নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। সেই খবর সংগ্রহের জন্য সাংবাদিক রোকনুজ্জামান মিলন সেখানে গেলে তার সঙ্গে অসদাচরণ করেন জেলা কমান্ড্যান্ট সোহাগ। এক পর্যায়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে ঝিনাইদহে কর্মরত সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত হয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জেলায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা।
ভুক্তভোগী রোকনুজ্জামান মিলন বলেন, ‘আমি সংবাদ সংগ্রহের জন্য ওই অফিসের বাইরে অপেক্ষা করছিলাম। জেলা কমান্ড্যান্ট সোহাগ হোসেন এক নারীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছিলেন। আমি এগিয়ে গেলে আমাকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন সোহাগ।
‘আমি সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে অন্য আসনার সদস্যরা আমাকে টেনে-হিঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে কিল-ঘুষি মারেন। আমাকে সেখানে এক ঘণ্টা আটকে রাখার পর মোবাইল ফোন ফেরত দেয়া হয়। পরে মোবাইলে সহকর্মীদের ফোন করলে তারা এসে আমাকে উদ্ধার করেন। আমি ওই কর্মকর্তাসহ ঘটনায় জড়িত অন্যদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জেলা কমান্ড্যান্ট সোহাগ হোসেন বলেন, ‘যেভাবে বলা হচ্ছে তেমন কিছু ঘটেনি। সে প্রথমে পরিচয় না দেয়ায় তাকে রুমের মধ্যে বসিয়ে রেখেছিলাম। তাকে মারধর বা লাঞ্ছিত করা হয়নি।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লার বুড়িচং সীমান্তে ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছেন।
উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের চড়ানল তেঁতুলতলা সীমান্তে সোমবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত বিল্লাল হোসেন (২৮) রাজাপুর ইউনিয়নের লড়িবাগ এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিল্লাল হোসেন ভারত থেকে অবৈধ পথে চিনি ও অন্য পণ্য ওঠা-নামার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সোমবার রাত ৮টার দিকে তেঁতুলতলা সীমান্ত দিয়ে আসা চিনি নামানোর সময় বিএসএফের সদস্যরা গুলি করে তাকে। তার শরীরে ৩০টির মতো ছররা (ছোট গুলি) গুলি লাগে।
পরে বিল্লালকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। গুলিতে তার চোখ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন জানান, গুলিতে আহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। সীমান্তের ঘটনা সম্পর্কে বিজিবি বলতে পারবে।
বিজিবির সংকুচাইল বিওপির কামান্ডার ফারুক কামাল জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তারা এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বিনা ধান-২৫ এর পরীক্ষামূলক চাষাবাদে সফলতা পাওয়া গেছে। স্বল্প সময়ে ধানের বাম্পার ফলনে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে এ ধান উৎসাহ-উদ্দীপনা যুগিয়েছে।
নতুন উদ্ভাবিত প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ধান বোরো জাতের বিনা ধান-২৫। উচ্চ ফলনশীল হলেও ধানটি হাইব্রিড নয় বলে দাবি করা হচ্ছে। বাসমতি চালের বিকল্প হিসেবে এ ধানের চাষ বাড়লে দেশে চিকন চালের আমদানি কমতে পারে বলে দাবি কৃষি বিভাগের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের জলালপুর গ্রামে এ বছর বিনা ধান-২৫ এর পরীক্ষামূলক চাষাবাদ করা হয়েছে। মুন্সীবাজার ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মো. নওরোজ মিয়াসহ এলাকার তিনজন কৃষক চার একর জমিতে বিনা ধান-২৫ এর চাষাবাদ করেছেন।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, বিনা ধান-২৫ বোরোর উন্নতমানের নতুন একটি জাত। নতুন উদ্ভাবিত এই ধানের জাতটি সর্বাধিক লম্বা ও সরু। এর চালের আকার চিকন ও লম্বা। বিদেশ থেকে যে বাসমতি চাল আমদানি করা হয় এটাও অবিকল সেই চালের মতো। এজন্য এই চালের চাহিদা ক্রেতাদের কাছে বেশি।
এর বাজারমূল্যও বেশ ভালো জানিয়ে সূত্র আরও জানায়, উৎপাদন ব্যয় অন্য ধানের মতোই। তবে ফলন অন্য ধানের চেয়ে ভালো হওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। দেশের চাহিদা পুরণের পাশাপাশি এই ধান রপ্তানিও করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কৃষক নওরোজ মিয়া বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২৫ মণ ধান পাওয়ার আশা করছি। এই প্রথম নতুন জাতের বিনা ধান-২৫ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি শীষে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০টি ধান ধরেছে।
‘অন্যান্য জাতের তুলনায় বিনা ধান-২৫ জাতে শীষ প্রতি ধানের পরিমাণও বেশি। চাষাবাদে আশানুরূপ ফলন হওয়ায় নিজেকে আরও উদ্বুদ্ধ করে তুলছে বলে মনে হচ্ছে।’
কমলগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দেব বলেন, ‘পরীক্ষামূলক চাষাবাদে এবং কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাম্পার ফলন হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ধান কাটা হবে।’
মন্তব্য