আলোচনার পর আলোচনা। তারপরও কোনো সমাধান নেই। বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত মে মাসে। ছয় মাস অতিবাহিত হলেও বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আবার চালু হবে কি হবে না এ নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে টাকা হারিয়ে শেয়ারধারীরা হতাশ।
খুলনা পাওয়া কোম্পানি বা কেপিসিএল নামে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সৃষ্ট জটিলতার এখনও অবসান হয়নি।
এই অবস্থায় গত দুই মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে প্রায় ৩৭ শতাংশ এবং এই দর ক্রমেই নিম্নমুখী। বিনিয়োগকারীরা তাদের প্রশ্নের জবাব না পেয়ে পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক বিভিন্ন ফেসবুক পেজে প্রায়ই কোম্পানির মেয়াদ বাড়ানোর অগ্রগতির খবর আছে কি না, এই প্রশ্ন রাখছেন।
যে আইনের অধীনে ভাড়াভিত্তিক বা কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে অনুমোদন দেয়া হয়, সেগুলোর মেয়াদ বাড়ানোর বিলে জাতীয় সংসদ সায় দিয়েছে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে। কিন্তু এর পরে দুই মাসেও কেপিসিএলসহ চার কোম্পানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানোর আলোচনা চুক্তিতে আসতে পারেনি।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণ কবে হবে, সে জন্য তারা প্রশ্ন করে যাচ্ছেন, কিন্তু কোম্পানি বা সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য আসছে না।
এর মধ্যে সামিট পাওয়ারের পক্ষ থেকে পুঁজিবাজারে দুইবার মূল্য সংবেদনশীল তথ্য দিয়ে জানানো হয়েছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানানো হয়েছে। তবে কেপিসিএলের পক্ষ থেকে কোনো বার্তাই দেয়া হচ্ছে না।
গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক হিসাব প্রকাশের সময় কেপিসিএলের আয় নিয়ে প্রশ্ন আছে। কোম্পানিটি মার্চ শেষে তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি আয় করেছিল শেয়ারে ২ টাকা ৬২ পয়সা। এরপর আরও দুই মাস চলেছে দুই বিদ্যুৎকেন্দ্র। পাশাপাশি সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পায়রার ৩৫ শতাংশের মালিকানার বিপরীতে লভ্যাংশও যোগ হয়েছে।
কোম্পানিটি গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ইউনাইটেড পায়রা শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ১০ পয়সা করে লভ্যাংশ ঘোষণা করায় কেপিএসএলের আয় হয়েছে ১৫ কোটি ৬ লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকা।
অথচ কোম্পানিটি চূড়ান্ত আয় দেখিয়েছে শেয়ারপ্রতি ৮৭ পয়সা। অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে শেয়ারপ্রতি লোকসান দেখানো হয়েছে ১ টাকা ৭৫ পয়সা।
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্তও শেয়ারপ্রতি ১০ পয়সা লোকসান দেখিয়েছে কোম্পানিটি। গত বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৯১ পয়সা।
মেয়াদ বাড়ানোর চু্ক্তির অগ্রগতি কী, জানতে চাইলে কেপিসিএলের কোম্পানিটির সচিব মোজাম্মেল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগে যেমন ছিল এখনও তেমনি আছে। বিশেষ কোনো খবর আসলে তা অবশ্যই বিনিয়োগকারীদের জানানো হবে।’
গত ২১ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ ভবনে কেপিসিএল, সামিট ছাড়াও ওরিয়ন ও ডাচ্-বাংলা পাওয়ারের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগের বৈঠক হয় কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানোর আলোচনা নিয়ে।
সরকার এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মেয়াদ দুই বছর বাড়াতে রাজি। তবে আগের মতো বিদ্যুৎ না কিনলে কেন্দ্রের ভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে চাইছে না। তবে কোম্পানিগুলো ন্যূনতম চার্জ চাইছে। সেটি না দিলে নির্দিষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎ কেনার গ্যারান্টি চাইছে তারা। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেয়াদ বাড়ানোর যে ফাইলে সই করেছেন, তাতে কোনো ধরনের শর্ত ছাড়া অনুমোদন দেয়ার কথা বলা আছে।
তবে বৈঠকে কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে এ ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎ কেনার জন্য গ্যারান্টি চাওয়া হয়। তারা বলেছে, ক্যাপাসিটি চার্জ না থাকলে এই বিষয়ে আগে থেকে সিদ্ধান্ত না হলে তাদের পক্ষে কোম্পানি চালানো কঠিন।
দুই পক্ষের মধ্যে এই মতভিন্নতা মেটাতে আবার বৈঠকের কথা বলা হয় দুই মাসের সেই আলোচনা শেষে। কিন্তু এরপর অনানুষ্ঠানিকভাবে কথাবার্তা হলেও আনুষ্ঠানিক আলোচনার তারিখ এখনও পড়েনি।
বিদ্যুতের দামসহ আরও বেশ কিছু বিষয়েও সমঝোতায় আসা যায়নি। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিদ্যুতের দাম কমাতে চাইছে। তাদের যুক্তি হলো, কেন্দ্রগুলো গত ১০ বছরে যে ব্যবসা করেছে, তাতে তাদের কেন্দ্র স্থাপনের ব্যয় উঠে এসেছে। এখন ইউনিটপ্রতি দাম কমাতে হবে।
এরপর চারটি কোম্পানির পক্ষ থেকে সরকারকে একটি রেট দেয়া হয়েছে, তবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সেই রেট মানতে চাইছে না। তারা দাম আরও কম দিতে চায়।
বিদ্যুৎকেন্দ্র নবায়ন নিয়ে এমন অনিশ্চয়তায় প্রতিনিয়ত দর হারাচ্ছে কেপিসিএল ও সামিট পাওয়ারের দর। এর মধ্যে সামিটের আরও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ পেরিয়ে গেছে। এটির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনও করা হয়েছে। কিন্তু সেটিও আটকে আছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে সমঝোতা প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত একজন নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে বলেছেন, এখন শীতকাল। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা কম। এই অবস্থায় সরকারেরও খুব একটা তাড়া নেই। তারা চেষ্টা করেছিলেন এই মাসের মধ্যে একটি সমঝোতায় আসতে। কিন্তু সেটি হচ্ছে না, এ বিষয়টি এখন নিশ্চিত প্রায়। এখন ডিসেম্বরে বৈঠকে বসার চেষ্টা করছেন তারা।
দর কমছে ক্রমাগত
গত ২১ সেপ্টেম্বর কেপিসিএলের শেয়ার দর একপর্যায়ে ওঠে ৫২ টাকা ৫০ পয়সা। তবে চুক্তি হচ্ছে না, এই বিষয়টি কোনোভাবে জানাজানি হয়ে যাওয়ার পরেই দাম কমে যায়। এরপর থেকে ক্রমাগত কমছে। পুঁজিবাজারে সাধারণত কোনো কোম্পানির শেয়ার দর প্রতিদিনই বাড়ে না বা প্রতিদিনই কমে না।
কেপিসিএলের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। সেদিনের পর মোট ৪৫ কর্মদিবস লেনদেন হয়েছে এখন পর্যন্ত। এর মধ্যে ৩২ কর্মদিবসই শেয়ার দর কমেছে, বেড়েছে ১১ কর্মদিবস আর দুই কর্মদিবস দাম ধরে রাখতে পেরেছে।
এই সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দর হারিয়েছে ১৯ টাকা ৪০ পয়সা বা ৩৬.৯৫ শতাংশ।
গত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৩৩ টাকা ১০ পয়সা।
এই দরই কেপিসিএলের সর্বনিম্ন দর নয়। চলতি বছর সব শেয়ারের বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার পর একপর্যায়ে শেয়ার দর ৩১ টাকা ৩০ পয়সায় নেমে আসে। সেটি গত ২৮ এপ্রিলের কথা।
সে সময় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কেপিসিএলের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনে ইতিবাচক সাড়া দিতে অনুরোধ করে সরকারকে বার্তা পাঠানোর খবরে শেয়ার দরে দেখা দেয় উত্থান।
তবে তখনও ৪৩ টাকায় ওঠার পর দাম আবার ৩৫ টাকার ঘরে নেমে আসে। এরপর সেপ্টেম্বরে কুইকরেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানোর বিলে সংসদ সায় দেয়াকে কেন্দ্র করে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শেয়ার দর আবার ৫০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
কেপিসিএলের মতোই আরেক বিদ্যুৎ কোম্পানি সামিট পাওয়ারের শেয়ারও দর হারাচ্ছে। গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৫ টাকা ২৫ পয়সা আয় করে সাড়ে ৩ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণার পরও শেয়ার দর ধরে রাখতে পারেনি।
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় কমে গেছে। এই তিন মাসে শেয়ারে আয় হয়েছে ১ টাকা ২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১ টাকা ২৯ পয়সা।
আয় কমার এই ব্যাখ্যায় সামিট জানিয়েছে, তাদের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আয় কমেছে।
গত তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪৯ টাকা ৭০ পয়সা থেকে নেমে এসেছে ৩৯ টাকা ২০ পয়সায়। এই সময়ে সর্বনিম্ন দর ছিল ৩৮ টাকা ৩০ পয়সা। তবে গত ২২ থেকে ২৪ নভেম্বর দর কিছুটা বাড়ে।
কেপিসিএলের আদ্যোপান্ত
২০১০ সালে পুঁজিবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি হয় গড়ে ২১১ টাকায়। এটি যে মেয়াদি বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর তা বন্ধ হয়ে যাবে, সে বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের কোনো ধারণা ছিল না।
কোম্পানিটির বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল মোট তিনটি। এর মধ্যে ২০১৮ সালে একটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ বিষয়টি নিয়ে জানতে পারে।
এরপর থেকে দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের আয়ে লভ্যাংশ পেয়ে আসছে বিনিয়োগকারীরা। এই দুটির মধ্যে ১১৫ মেগাওয়াটের কেপিসিএল-১-এর মেয়াদ শেষ হয় গত ৩১ মে। আর ৪০ মেগাওয়াটের নওয়াপাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হয় ২৮ মে।
গত ২০ মে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়াতে আমাদের চেষ্টা-তদবির অব্যাহত রয়েছে।’
মেয়াদ শেষে কেন্দ্র দুটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এই চেষ্টা তদবিরের কতটা এগোল, সে বিষয়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে এখনও বিনিয়োগকারীদের অস্পষ্টতায় রাখা হয়েছে।
গত ৩১ অক্টোবর তথ্য অনুযায়ী কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৯.৩৬ শতাংশ শেয়ার ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের কাছে ছিল ২০.৪৭ শতাংশ শেয়ার। আর দশমিক ১৮ শতাংশ আছে বিদেশিদের হাতে। কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে আছে মোট শেয়ারের ৬৯.৯৯ শতাংশ।
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য