বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ হচ্ছে জানিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।
তিনি জানান, খালেদা জিয়ার রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত প্রযুক্তি নেই বলেই দিন দিন তার অবস্থা খারাপ হচ্ছে। অতি দ্রুত তাকে বিদেশে নেয়া প্রয়োজন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) শনিবার শহীদ ডা. মিলন দিবসের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য আয়োজন করে এ আলোচনা সভার।
এতে দেয়া বক্তব্যে ফখরুল বলেন, ‘এখানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যে অসুখ, সেই অসুখটা হচ্ছে প্রধানত তার পরিপাকতন্ত্রে। তার অনেক অসুখ। এখন যেটা তার জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে, সেটা হচ্ছে তার পরিপাকতন্ত্র থেকে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন ঠিক কোন জায়গায় তার রক্তপাত হচ্ছে, এটাকে বের করার জন্যে আমাদের ডাক্তাররা, বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ডাক্তার তারা, গত কয়েক দিন ধরে তারা বিভিন্ন রকম কাজ করছেন। চিকিৎসার যে পদ্ধতি আছে, সেই পদ্ধতিতে তারা করেছেন, কিন্তু একটা জায়গায় এসে তারা এগোতে পারছেন না।
‘কারণ আর সেই ধরনের কোনো টেকনোলজি বাংলাদেশে নাই, যে টেকনোলজি দিয়ে তারা সঠিক জায়গায় পৌঁছাতে পারেন, যে কারণে ডাক্তাররা বারবার বলছেন যে, তাকে একটা অ্যাডভান্স সেন্টারে নেয়া দরকার যেখানে এই ডিভাইসগুলো আছে, এই টেকনোলজিগুলো আছে, সেই যন্ত্রপাতিগুলো আছে। সেখানে গেলে তার যে সঠিক রোগ, সেই রোগের জায়গাটা তারা ধরতে পারেন।’
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্যের ব্যাপার যে, আমাদের দেশে যারা সরকারি দলের রাজনীতি করছেন, তাদের ন্যূনতম রাজনৈতিক শিষ্টাচার তো নেই, তাদের মানবিক বোধ তো নেই। আর নিজের সম্পর্কে তাদের এত বেশি দাম্ভিকতা যে, তারা যেকোনো ব্যক্তি সম্পর্কে, বিশেষ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে কটূক্তি করতে এতটুকু দ্বিধা করেন না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারা একবারও মনে করেন না যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হচ্ছেন সেই মহিয়সী নারী যিনি ১৯৭১ সালে তার স্বামী যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তখন তার শিশুপুত্রকে হাতে ধরে পালিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন এবং সেখানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে ক্যান্টনমেন্টের কারাগারে ছিলেন। অর্থাৎ দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে তার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।’
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে খালেদা জিয়ার ভূমিকা তুলে ধরেন ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের প্রতীক; স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক।’
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে সব শ্রেণির মানুষকে, সব পেশার মানুষকে, সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ আমি আগেই বলেছি, স্বৈরাচার আর ফ্যাসিবাদ এক নয়। এই ফ্যাসিবাদ আরও ভয়ংকর। ইতিমধ্যে আমাদের সকল অর্জন তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।
‘ইতিমধ্যে আমরা স্বাধীনতার যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, যে আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। ইতিমধ্যে আমাদের নতুন প্রজন্মের যে সম্ভাবনা আছে, তাকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে, অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে, স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে তারা। আসুন গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হই।’
শারীরিক বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন জানিয়ে তাকে দ্রুত বিদেশ নিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছেন বিএনপি নেতারা।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শুক্রবার নিয়মিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া তিনজনই নারী। একই সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যত্র হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮৬ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৫১৭ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৫ হাজার ৭০ জন।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় দেশে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৫৭০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে দু’জন পুরুষ ও বাকি তিনজন নারী।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫১৪ জন। একই সময়ে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৮৮৪ জন।
চলতি বছরে দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু পাঁচশ’ ছাড়িয়ে গেল। সবশেষে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৬২৯ জন।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সোমবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও তিনজন নারী।
এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট মারা গেছেন ৫০৪ জন। তাদের মধ্যে ২৪৫ জন পুরুষ ও ২৫৯ জন নারী। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩ হাজার ৬৮৫ জন।
আর সবশেষ এই ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৮৪২ জন ডেঙ্গু রোগী।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার এই সময়কালে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৮২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৭৭ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৪০৫ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৪৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১ ডিসেম্বর রোববার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯২ হাজার ৩৫১ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বুধবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৩৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম বৃহস্পতিবার এক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮৬ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৫৪৭ জন রোগী।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।
আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯০ হাজার ৪৪০ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে একদিনে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৮৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দেশে এসব মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তির ঘটনা ঘটেছে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৩২ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৩৫৬ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ নভেম্বর বুধবার পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৮৯ হাজার ৬০৩ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব মৃত্যুর পাশাপাশি ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৯০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম মঙ্গলবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬০ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ৪৩০ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৮৮ হাজার ৭১৫ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
মন্তব্য