মমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদে টানা ১৪ বছর ধরে চেয়ারম্যান ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জমির উদ্দিন। তার মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টি থেকে ভোটের লড়াইয়ে জয়ী হন পুত্রবধূ সুলতানা আক্তার কল্পনা।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে রংপুর সদর উপজেলার ১ নম্বর মমিনপুর ইউনিয়নে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জমিরের দুই ছেলে।
কল্পনার স্বামী ফজলার রহমান পেয়েছেন জাতীয় পার্টির দলীয় প্রতীক লাঙ্গল ও তার ছোট ভাই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুল ইসলাম প্রামাণিক লড়ছেন ঢোল প্রতীকে।
দুই ভাইয়ের চেয়ারম্যান পদে লড়াই নিয়ে এলাকায় চলছে বেশ আলোচনা। রোববারের ভোটে দুই ভাইয়ের কে জয়ী হবেন বা আদৌ কেউ জয় পাবেন কি না তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
মমিনপুর বাজারের মোস্তাকিম হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাই-ভাই ভোট করছে। শুক্রবার পর্যন্ত সকালে আইছে এক ভাইয়ের লোক, বিকালে আইছে আরেক ভাইয়ের লোক। কাকে ভোট দেমো সেটা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীও আছে। আমরা পড়ছি বিপদে, কাকে ছাড়ি কাকে ভোট দেই!’
দক্ষিণ মমিনপুর মিলের বাজার এলাকার আব্দুল লতিফ বলেন, ‘কয়েক বছর থাকি তো ওরা চেয়ারম্যানি করোচে (করছে)। এবার দুই ভাই দাঁড়াইচে। আরও পাঁচজন আছে। মানুষ সিদ্ধান্ত নিতে পারোচে (পারছে) না। শোনোচি (শুনছি) খালি টাকার খেলা হওচে (হচ্ছে)।’
সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ফজলার ও কামরুল বাদে বাকি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত রেজাউল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ফজলুল হক, আওয়ামী লীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত আনারস প্রতীকের মিনহাজুল ইসলাম, মোটরসাইকেল প্রতীকের জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী রেজাউল করিম ও ঘোড়া প্রতীকের ফরহাদ হোসেন চৌধুরী।
নির্বাচনের বিষয়ে ফজলার রহমান বলেন, ‘ভোটে ভাই ভাই বলতে কিছু নাই। সে তার ভোট করছে, আমি আমার ভোট করছি। তবে এই এলাকা লাঙ্গলের। গতবার লাঙ্গলের কাছে নৌকা হেরেছে। এবার প্রশাসন কোনো ডিস্টার্ব না করলে লাঙ্গলের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।’
কামরুল বলেন, ‘বাবা চেয়ারম্যান ছিলেন। এলাকায় তিনি অনেক সম্মানি ছিলেন। আমি ভোট করতে চাইনি, সাধারণ মানুষের কারণে দাঁড়াতে হয়েছে। যেহেতু ভোটাররাই আমাকে দিয়ে ভোট করাচ্ছে তাই তারা আমার সম্মান রাখবে। মানুষের কাছ থেকে বেশ সাড়া পাচ্ছি।’
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, নির্বাচন নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ভোটের সুন্দর পরিবেশ আছে। কোনো প্রার্থীর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সব প্রার্থী সহযোগিতা করলে সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট সম্ভব।
আরও পড়ুন:চলতি বছরে দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু পাঁচশ’ ছাড়িয়ে গেল। সবশেষে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৬২৯ জন।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সোমবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও তিনজন নারী।
এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট মারা গেছেন ৫০৪ জন। তাদের মধ্যে ২৪৫ জন পুরুষ ও ২৫৯ জন নারী। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩ হাজার ৬৮৫ জন।
আর সবশেষ এই ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৮৪২ জন ডেঙ্গু রোগী।
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের পল্লীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বন্দুকযুদ্ধে ১১ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের রাড়ইল গ্রামে এই সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ মুহিবুর রহমান চৌধুরী, আঞ্জু চৌধুরী, সোহেল চৌধুরী, জুয়েল চৌধুরী, আকমল চৌধুরী, কনর চৌধুরী, শুভ চৌধুরী, ইসলাম উদ্দিন চৌধুরী, জাবেদ চৌধুরী, তাসিম চৌধুরী, রাবেল চৌধুরী, জুবেদ চৌধুরী ও মুর্শেদ চৌধুরীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গ্রামবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাড়ইল গ্রামে আনু মিয়া চৌধুরী ও নানু মিয়া চৌধুরীর সঙ্গে একই গ্রামের জসীম উদ্দিন চৌধুরী ও সুমন চৌধুরীর লোকজনের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে একাধিকবার বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। একে অপরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা-মোকাদ্দমাও দায়ের করেছে।
আনু চৌধুরীর করা একটি মামলায় মঙ্গলবার সকালে তদন্তে যায় দিরাই থানা পুলিশ। তদন্ত শেষ করে পুলিশ গ্রাম থেকে ফেরার পর উভয় পক্ষের লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘন্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষে ২৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আহতদের দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রশান্ত দাস গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে রেফার করেন।
ডা. প্রশান্ত সাগর দাস বলেন, আহতদের শরীরে ছররা গুলির চিহ্ন রয়েছে।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি শুনেছি সাতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারে গ্রামে অভিযান চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনে করা মামলায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) দুই শিক্ষার্থীর ৩০ বছরের সাজা হয়েছিল। তবে ছাত-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট প্রেক্ষাপট বদলে যাওয়ার পর কারা অভ্যন্তরে তারা অনশন শুরু করেন। বিষয়টি জানতে পেরে তাদেরকে আইনি সহায়তা দেয়া শুরু করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
ইতোমধ্যে ওই দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মোট পাঁচ মামলার মধ্যে দুটিতে জামিন মিলেছে। তবে এখনই মুক্তি মিলছে না তাদের। অন্যান্য মামলা থেকে জামিন পেলেই তারা কারামুক্ত হবেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
খুলনার মহানগর দায়রা জজ মো. শরীফ হোসেন হায়দার গত রোববার ওই দুই শিক্ষার্থীর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট বেগম আক্তার জাহান (রুকু)। মামলাটি পরিচালনায় সার্বিক সহযোগিতা করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল সেল।
চার বছরেরও অধিক সময় ধরে কারাবন্দি ওই দু’জন হলেন- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিনের ’১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী নুর মোহাম্মাদ অনিক ও পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের ’১৭ ব্যাচের মো. মোজাহিদুল ইসলাম।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খানজাহান আলী থানা কৃষক লীগ কার্যালয় ও ৫ ডিসেম্বর আড়ংঘাটা থানার গাড়ি রাখার গ্যারেজে বোমা বিস্ফোরণের মামলায় ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি এই দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পরে সোনাডাঙ্গা থানায় বিস্ফোরক আইন এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আরও দুটি মামলা করা হয়। একই সময়ে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার একটি মামলায় তাদেরকে আসামি করা হয়।
মামলাগুলোর মধ্যে তাদের দু’জনকে সোনাডাঙ্গা থানার বিস্ফোরক আইনের মামলায় ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় আদালত। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অপর মামলায় তাদের দুজনের ১০ বছরের সাজা হয়েছে।
এছাড়া খুলনার খানজাহান আলী ও আড়ংঘাটা থানা এবং ময়মনসিংহ জেলায় তাদের বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা রয়েছে, যেগুলো আদালতে বিচারাধীন। এর মধ্যে খানজাহান আলী ও আড়ংঘাটা থানার মামলা দুটিতে তারা জামিন পেয়েছেন।
কারাবন্দী দুই শিক্ষার্থীর উদ্ধৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে দীর্ঘ ১৭ দিন বগুড়া ডিবি হেফাজতে নিয়ে গুম করে নির্যাতন করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা-বানোয়াট মামলা দেয়া হয়েছে।
তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিগত সরকারের দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে জনমত গড়ে তোলার কারণে এ প্রহসনের মামলার শিকার হয়েছেন। তারা এখন মুক্তি চান। মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত তারা কারা অভ্যন্তরে অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম জানান, তাদের অনশনের বিষয়টি জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমন্বয়কের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। পরবর্তীতে কারাবন্দি দুই শিক্ষার্থীর জামিনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে লিগ্যাল সেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা পরিচালনার জন্য সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট বেগম আক্তার জাহানকে নিযুক্ত করা হয়।
আইনজীবী গত ১ ডিসেম্বর জামিন শুনানিতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার দুই শিক্ষার্থীর বর্তমান শারীরিক অসুস্থতার বিষয় তুলে ধরেন। পরে সার্বিক দিক বিবেচনা করে আদালত তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করে।
গাজীপুরের টঙ্গীতে তুরাগ নদের তীরে পাঁচদিনের জোড় ইজতেমা আজ মঙ্গলবার সকালে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। মোনাজাত পরিচালনা করেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা।
মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা আয়োজেনের সাফল্য কামনা করে দোয়া করা হয়। সকাল ৯টা ৫ মিনিটে শুরু হয়ে ৯টা ২০ মিনিটে মোনাজাত শেষ হয়।
ঢাকা, গাজীপুর ও আশপাশের এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি সকাল থেকে ময়দানে এসে মোনাজাতে শরিক হন। আর এর মধ্য দিয়ে তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ (শুরায়ি নেজাম)-এর পাঁচ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।
তুরাগ তীরে এর আগে আজ ফজর থেকে হেদায়েতি বয়ান চলে। বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান। বয়ান তরজমা করেন মাওলানা আব্দুল মতিন।
বয়ানে আল্লাহপাকের রাস্তায় তাবলিগকারীদের জন্য দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য দেয়া হয়। এরপর নসিহতমূলক বক্তব্য পেশ করেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বি মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা। তার বক্তব্য তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের।
জোড় ইজতেমা চলাকালে অসুস্থতা ও বার্ধক্যজনিত কারণে চারজন মুসল্লি মারা গেছেন। তারা হলেন- সিরাজগঞ্জ সদর থানার মো. শহিদুল ইসলাম, ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার দুলালী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম আকন্দ, রংপুর কোতোয়ালি থানার বৌরাগীপাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে হায়দার আলী ও দিনাজপুর সদরের মস্তপুর গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে কাউসার আলী।
আরও পড়ুন:নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুরে জমি জবরদখল করে লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে ইটের প্রাচীর নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি হলেন আবদুল হামিদ, যার বাড়ি উপজেলার হরিরামপুর এলাকায়।
গত ৫ নভেম্বর সকাল ৯টায় জমিটি দখলে নেয়ার অভিযাগ রয়েছে আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান।
জমির মালিক দাবিদার রেজাউল মাসুদ স্বপনের বাড়ি নজিপুর সরদারপাড়ায়।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর সরদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা কলিমুদ্দীন সরদার তার জীবদ্দশায় মোট ৪৬ শতক জমির মধ্যে আইয়ুব আলী দেওয়ানের কাছে ১৯৮৮ সালে ৪৬৫১ নম্বর দলিলে ১৪ শতক ও ৪৯৩৫ নম্বর দলিলে ১৪ শতক বিক্রি করেন। এ ছাড়া তিনি আছির উদ্দিনের কাছে ১৯৮৭ সালে ৮৯৯৫ নম্বর দলিলে ১৩ শতক, নজির হোসেনের কাছে একই বছরে ৯৬০৫ নম্বর দলিলে ২দশমিক ৫ শতক এবং ৯৬১০ নম্বর দলিলে ২ দশমিক ৫ শতক জমি বিক্রি করেন। এরপর দখলশূন্য অবস্থায় তিনি মারা যান।
আবদুল হামিদ মূলধনী কলিমুদ্দিন সরদারের মৃত্যুর ২৫ বছর পর তার ছেলে তৈফুর সরদারের কাছ থেকে ২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ৪৬৮৭ নম্বর দলিলে ১১৩ নম্বর খতিয়ানে হাল ২৮৪ নম্বর দাগে ৪৬ শতক জমির মধ্যে ৬ শতক জমি কবলা দলিল করে বিষয়টি গোপন রাখেন। দীর্ঘ ১২ বছর পর গত ৫ নভেম্বর সকাল ৯টায় নজিপুর সরদারপাড়া মৌজার হাল ২৮৪ দাগের জমির দলিল দেখিয়ে একই মৌজার হাল ২৮৫ দাগের (২৮৪ দাগের পাশের) ১০ শতক জমিতে থাকা বাগানের গাছ কেটে নিয়ে যান আবদুল হামিদ। তিনি ৮ শতক পরিমাণ জমি দখলে নেন। এরপর সেখানে ইট দিয়ে প্রাচীর দিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে জমির আসল মালিক দাবি করা রেজাউল মাসুদ স্বপন প্রতিকার চেয়ে আবদুল হামিদ ও তৈফুর সরদারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন, কিন্তু এরপরও জমিতে কাজ করছেন আবদুল হামিদ।
স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম (৪৮) বলেন, ‘জ্ঞান হওয়ার পর দেখে আসছি এই জমি রেজাউল মাসুদ স্বপনরা ভোগদখল করে আসছে। এক মাস আগে আবদুল হামিদ এই জমি দখল করে আম, কদম ও ইউক্যালিপটাসহ লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে ফেলে। এর আগে কখনও এই জমি নিয়ে ঝামেলা হতে দেখিনি।’
রেজাউল মাসুদ স্বপন বলেন, ‘আমার পৈত্রিক সূত্রে খতিয়ানভুক্ত ১০ শতক জমি ৬০ থেকে ৬৫ বছর থেকে ভোগদখল করে আসছি। এর মধ্যে দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলে ৫ নভেম্বর জোরপূর্বক ৮ শতক জমি দখল করে লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে স্থাপনা নির্মাণ করেন আবদুল হামিদ।
‘তাদের নিষেধ করা হলেও বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয়। সুরাহা পেতে আদালতে মামলা করেছি, কিন্তু তারপরও কাজ করছে।’
এ বিষয়ে আবদুল হামিদ বলেন, ‘২০১২ সালে জমি কিনা ছিল। খাজনা-খারিজ সব ঠিক করা আছে। বিএনপি করায় ওই জমিতে নামতে পারিনি। এখন দখলে নিয়ে কাজ করছি।
‘৮৪ দাগে আমার জমি কিনা আছে এবং ওই দাগই দখল করেছি, কিন্তু আদালত ৮৫ দাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।’
পত্নীতলা থানার ওসি শাহ মো. এনায়েতুর রহমান বলেন, ‘আদালত থেকে নোটিশ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে কোনো পক্ষই যেন কাজ করতে না পারে, নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আদালতে বিষয়টির সুরাহা না পর্যন্ত শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:নওগাঁর মহাদেবপুরে ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চালক ও হেলপার নিহত হয়েছেন।
অন্যদিকে জেলা শহরের পল্লী বিদ্যুতের সামনে পিকআপের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন এক পথচারী।
মহাদেবপুর উপজেলার রানীপুকুর এলাকায় মঙ্গলবার ভোরে ও শহরের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সামনে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দুটি দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রথম দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো দুজনের মধ্যে ট্রাকচালকের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি হলেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারনাই গ্ৰামের সামছুল আলমের ছেলে সুমন মিয়া (৪০)।
হেলপারের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
এদিকে পল্লী বিদ্যুতের সামনে নিহত ব্যক্তির নাম আবুল কাশেম (৭৫), যিনি সদর উপজেলার ভবানীগাছী দেওয়ানপাড়া গ্রামের প্রয়াত কুদরত প্রামাণিকের ছেলে।
নওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আবু বকর সিদ্দিক জানান, রাতে খড়বোঝাই একটি ট্রাক নওগাঁ থেকে রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিল। ভোরে নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের রানীপুকুর এলাকায় ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে ট্রাকে থাকা চালক ও হেলপার নিহত হন।
তিনি জানান, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত দুজনের মধ্যে চালকের নাম পরিচয় পাওয়া গেলেও হেলপারের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তার নাম ও পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
নওগাঁ সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু তাহের বলেন, ‘সকালে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সামনে রাস্তার এক পাশ দিয়ে হেটে বালুডাংগা বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিলেন বৃদ্ধ আবুল কাশেম। এ সময় নওগাঁ শহর অভিমুখী দ্রুতগতিতে আসা একটি পিকআপ তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই কাশেমের মৃত্যু হয়।
‘ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা ঘাতক পিআকআপটি আটকে দিলেও চালক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।’
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার এই সময়কালে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৮২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৭৭ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৪০৫ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৪৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১ ডিসেম্বর রোববার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯২ হাজার ৩৫১ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
মন্তব্য