× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The door of mango export is opening
google_news print-icon

আম রপ্তানির দুয়ার খুলছে

আম-রপ্তানির-দুয়ার-খুলছে
বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন আশা জাগাচ্ছে আম। ছবি: নিউজবাংলা
আম উৎপাদনে বিশ্বে সপ্তম হলেও এ ফল রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। ২০১৯ মৌসুমে মাত্র ১০০ টন আম রপ্তানি হয়েছিল, যার পরিমাণ ছিল সাড়ে ৪ কোটি ১১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। পরের বছর ২০২০ মৌসুমে সেই রপ্তানি এক লাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭০০ হাজার টন। দেশে আসে ৭০ কোটি ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা।

আম উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে সপ্তম। এবার দেশে প্রায় ১৫ লাখ টন আম উৎপাদিত হয়েছে। অথচ আম রপ্তানিতে অনেক পিছিয়ে আছে দেশ।

দীর্ঘদিন ধরে আম রপ্তানির কথা বলা হলেও কার্যকর কোনো ফল আসেনি। নামমাত্র কিছু আম রপ্তানি হয়ে আসছিল। সেগুলোও প্রবাসী বাংলাদেশি ক্রেতাদের জন্য রপ্তানি করছিলেন হাতে গোনা কয়েকজন রপ্তানিকারক।

কিন্তু সেই চিত্র এবার বদলে যেতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন আশা জাগাচ্ছে আম। ইতোমধ্যে রপ্তানিতে চমক দেখাতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। ২০১৯ মৌসুমে মাত্র ১০০ টন আম রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশ। প্রতি টন ৪ হাজার ৮০০ ডলার হিসাবে টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ছিল সাড়ে ৪ কোটি ১১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। পরের বছর ২০২০ মৌসুমে সেই রপ্তানি এক লাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭০০ হাজার টন। দেশে আসে ৭০ কোটি ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা।

চলতি ২০২১ মৌসুমে ৫ হাজার টন আম রপ্তানির লক্ষ্য ধরেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ২০০ টন ইতোমধ্যে রপ্তানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। দেশে এনেছেন ৫০ কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রা।

দেশে প্রতিবছর মে থেকে শুরু হয় আমের মৌসুম। অক্টোবর পর্যন্ত ভরা মৌসুম থাকে। এর পরেও প্রক্রিয়াজাতকৃত আম রপ্তানি করে থাকেন রপ্তানিকারকরা। এই মৌসুমের পুরো হিসাব পাওয়া গেলে আম রপ্তানি থেকে এবার ২০০ কোটি টাকার বেশি বিদেশি মুদ্রা দেশে আসবে বলে আশা করছেন রপ্তানিকারকরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘আম কূটনীতির’ সুফল পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। রপ্তানিতে উল্লম্ফন ঘটছে। আগামী দিনগুলোতে এই বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশার কথা শুনিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী, কৃষি অর্থনীতিবিদ ও রপ্তানিকারকরা।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, গত অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে সিঙ্গাপুরে ১০ হাজার ডলারের আম রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরে একই সময়ে সিঙ্গাপুর ছাড়াও এশিয়া এবং ইউরোপের আরও ১৪টির বেশি দেশে আম রপ্তানি হয়েছে।

বাংলাদেশ আম উৎপাদনে বিশ্বে সপ্তম হলেও পণ্যটি রপ্তানি আয়ের দিক থেকে একদমই তলানিতে ছিল। বাংলাদেশের চেয়েও কম পরিমাণ আম উৎপাদন করে অনেক দেশ এ ফল রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা আয় করছে।

আম রপ্তানির দুয়ার খুলছে

ফলের মধ্যে দেশে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় আম। বছর বছর এই উৎপাদন বাড়ছে। তাই দেশের মানুষের পুষ্টির অন্যতম উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে আম।

দেশে আমের উৎপাদন

শুধু পরিমাণের দিক থেকে আম বাংলাদেশের প্রধান ফল হয়েছে, তা নয়। দেশের অন্তত ছয়টি জেলার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক কৃষিপণ্য হয়ে উঠেছে আম। বছর বছর নতুন নতুন আমবাগান হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে আম উৎপাদিত হয়েছে ১২ লাখ ২২ হাজার টন। দেশে ২ লাখ ৩৫ হাজার একর জমিতে আমবাগান রয়েছে। প্রতিটি গাছে গড়ে ৭৭ কেজি করে আম উৎপাদিত হয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশে আমের উৎপাদন ২৪ লাখ টনের মতো। প্রতিবছর প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার আমের বাণিজ্য হয়। আম উৎপাদন থেকে শুরু করে বিপণন, মোড়কীকরণ ও পরিবহন মিলিয়ে এক বিশাল বাজার গড়ে উঠেছে। প্রতিবছর এপ্রিলে কাঁচা আম বাজারে আসা থেকে শুরু হয়। চলে সেপ্টেম্বরে আশ্বিনা আম বিপণন শেষ হওয়া পর্যন্ত।

অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষিপণ্যের মধ্যে দেশে প্রতিবছর সবচেয়ে বেশি হারে বাড়ছে আমের উৎপাদন। ফলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে আম রপ্তানির সুযোগও তৈরি হয়েছে।

বিশ্বে সপ্তম বাংলাদেশ

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদিত হয় ভারতে। বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ফল উৎপাদনের একটি হিসাব দেয়া আছে। ২০১৯ সালের এই হিসাবে আম ও পেয়ারার উৎপাদন একসঙ্গে দেখানো হয়েছে। সে হিসাব অনুযায়ী, ভারতে ওই বছর উৎপাদন ছিল প্রায় ২৬ কোটি টন।

আম-পেয়ারা উৎপাদনে শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকায় ভারত ও বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, চীন, মেক্সিকো, পাকিস্তান, মালাবি, ব্রাজিল, থাইল্যান্ড ও মিসর। ওই তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশে আম-পেয়ারার উৎপাদন প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ টন।

কেন ফলের রাজা আম

দেশে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হওয়া ফল আম। বিবিএসের হিসাবে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হওয়া ১০টি ফল হলো আম, কলা, কাঁঠাল, তরমুজ, পেয়ারা, আনারস, বরই, জাম্বুরা, লিচু ও আমড়া।

উৎপাদনে আম শুধু এগিয়ে নয়, ব্যবধানও অনেক বেশি। আমের উৎপাদন ১২ লাখ টন, পেছনে থাকা কাঁঠালের উৎপাদন ১০ লাখ টনের মতো। এ ছাড়া কলা ৮ লাখ টন, তরমুজ আড়াই লাখ টন, পেয়ারা সোয়া ২ লাখ টন ও আনারস ২ লাখ টনের কিছু বেশি উৎপাদিত হয়।

আম কূটনীতির সুফল

আম রপ্তানির ক্ষেত্রে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে রপ্তানিযোগ্য উন্নত জাতের আমের অভাব। স্থানীয় আমের জাতগুলোর ‘শেলফ লাইফ’ কম, অর্থাৎ তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া মানসম্মত কৃষি পদ্ধতির চর্চা, আন্তর্জাতিক মানের প্যাকেজিংয়ের অভাব এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি আমের ব্র্যান্ডিং-সংকটের কারণে এতদিন আম রপ্তানিতে সুফল আসেনি।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, গত মৌসুমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে উপহার হিসেবে আম পাঠানোর খবর বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের আমের ব্র্যান্ডিং সৃষ্টিতে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। তারপর থেকেই বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশি আমের রপ্তানি অর্ডার বাড়তে থাকে। এতেই রপ্তানির তলানি থেকে গা ঝাড়া দিয়ে ওঠার ইঙ্গিত মিলছে।

আম রপ্তানির দুয়ার খুলছে

বাংলাদেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম জাহঙ্গীর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সত্যিই বিশ্ববাজারে আমের চাহিদা বেড়েছে। দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক। তার বিচক্ষণতার কারণেই আম রপ্তানির একটি ভালো সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আশা করছি, এই সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে পারব।

‘তবে আম রপ্তানির ক্ষেত্রে কয়েকটি প্রতিবন্ধকতা আছে। সমুদ্রপথে জাহাজে আম রপ্তানি করা যায় না। সব আমই আকাশপথে (বিমান) পাঠাতে হয়। কিন্তু বিমান ভাড়া অনেক বেশি। পাশের দেশ ভারত ও থাইল্যান্ডের চেয়ে দ্বিগুণের মতো। এত বেশি বিমান ভাড়া দিয়ে আম রপ্তানি করে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা যায় না।

‘এ ছাড়া বিমানবন্দরে স্ক্যানিং মেশিন প্রায় নষ্ট থাকে। তাতে রপ্তানিও বন্ধ থাকে। এর আগে টানা কয়েক মাস স্ক্যানিং মেশিন নষ্ট ছিল। মাঝে চালু হলেও গত তিন দিন ধরে আবার নষ্ট। বন্ধ আছে শাকসবজি, ফলমূলসহ সব ধরনের রপ্তানি।’

সত্যিকার অর্থে আম রপ্তানি বাড়াতে হলে সরকারের শীর্ষ মহলকে এসব বিষয়ে নজর দেয়ার পরামর্শ দেন জাহঙ্গীর হোসেন।

এই অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা কৃষিবিদ মনজুরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আম রপ্তানিতে যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তা মূলত প্রধানমন্ত্রীর আম কূটনীতির কারণেই হয়েছে।’

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের আম অত্যন্ত সুস্বাদু হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে এর কোনো পরিচিতি ছিল না। ফলে রপ্তানি অর্ডারও আগে মিলত না। এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত ও পাকিস্তানের সরকারপ্রধানকে আম উপহার দেয়ার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও প্রচার পেয়েছে। এতে বাংলাদেশের আমের ব্র্যান্ডিং হওয়ায় এ বছর রপ্তানি অনেক বেড়েছে।’

আগামী তিন বছরে সরকার ১ লাখ টন আম রপ্তানির লক্ষমাত্রা ঠিক করেছে জানিয়ে মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমের দিকে সুনজর দিলে ভবিষ্যতে এ খাত থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা অর্জন সম্ভব।’

মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘আগামী মৌসুম সামনে রেখে অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে সাতক্ষীরা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও দিনাজপুরের প্রায় ১০০ বাগানকে ক্লাস্টার করে গ্রুপ গ্রুপ করে আলাদা করে গিয়ে আম চাষের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এসব বাগানে যে আম উৎপাদিত হবে, তা শুধু রপ্তানি করা হবে।’

আম রপ্তানির দুয়ার খুলছে

এ ব্যবস্থা বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়াতে সহায়তা করবে বলে জানান তিনি।

আম রপ্তানিকারক লি এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার আবুল হোসেন বলেন, ‘গত মৌসুমে বাংলাদেশের আমের ব্যাপক চাহিদা ছিল ইউরোপের দেশগুলোতে। কিন্তু আমাদের রপ্তানি সক্ষমতা থাকলেও এয়ারলাইনসের সমস্যার কারণে আমরা খুব বেশি রপ্তানি করতে পারিনি। পাকিস্তান প্রতিবছর ১ লাখ টনের বেশি আম রপ্তানি করে। এয়ারলাইনসের সমস্যা দূর হলে আমরাও ১ লাখ টন আম রপ্তানি করতে পারব।'

২০২০ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি আম রপ্তানি হয়েছে ইতালি ও যুক্তরাজ্যে। ইতালিতে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৮৯২ ডলার এবং যুক্তরাজ্যে ১২ হাজার ১০৫ ডলার। এ ছাড়া নেদারল্যান্ডসে ৫ হাজার ৬১৫ ডলার, অস্ট্রিয়ায় ৫ হাজার ৩৯৮ ডলারের আম রপ্তানি করে বাংলাদেশ।

চলতি ২০২১ মৌসুমের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে সবচেয়ে বেশি আম রপ্তানি হয়েছে যুক্তরাজ্যে, ৫ লাখ ৬ হাজার ৪৮৭ ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭১ হাজার ৮৭৪ ডলারের আম রপ্তানি হয়েছে কুয়েতে।

এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত, কানাডা, জার্মানি, ইতালি, সৌদি আরব, সুইডেন, ভারত, সোয়াজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নেপাল, সুইডেন ও সিঙ্গাপুরেও রপ্তানি হয়েছে বাংলাদেশের আম।

গত জুলাই মাসে কৃষি মন্ত্রণালয়ে ‘আম রপ্তানি বৃদ্ধিতে করণীয়’ বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আমচাষিসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা অংশ নেন। সভায় দেশে নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম চাষ এবং আমের আন্তর্জাতিক বাজার অনুসন্ধানের ওপর জোর দেয়া হয়।

ওই সভায় জানানো হয়, ২০২০ সালে থাইল্যান্ড বিশ্বের সর্বোচ্চ ৭৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের আম রপ্তানি করেছে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত ১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার ও পাকিস্তান ১০ কোটি ১০ লাখ ডলারের আম রপ্তানি করেছে। সেখানে বাংলাদেশ মাত্র ৫০ হাজার ডলারের (৪২ লাখ টাকা) আম রপ্তানি করেছে, যার বড় অংশ মূলত প্রবাসী বাংলাদেশি ক্রেতাদের জন্য রপ্তানি করা।

আম রপ্তানির দুয়ার খুলছে

আম রপ্তানি বাড়াতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘দেশের আমকে আমরা ব্যাপকভাবে বিশ্ববাজারে নিয়ে যেতে চাই। সে জন্য রপ্তানি বাধাগুলো চিহ্নিত করে তা নিরসনে কাজ চলছে। ইতিমধ্যে নিরাপদ আমের নিশ্চয়তা দিতে তিনটি ভ্যাকুয়াম হিট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে। উৎপাদন থেকে শিপমেন্ট পর্যন্ত আম নিরাপদ রাখতে উত্তম কৃষিচর্চা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেট দেয়ার কাজ চলছে।’

ফলে আগামী দিনগুলোতে আম রপ্তানির পরিমাণ অনেক বাড়বে বলে আশার কথা শোনান মন্ত্রী।

কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাদু আম উপহারের বিষয়টি এবার বেশ আলোড়ন তুলেছিল। শুধু প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত নয়, বিভিন্ন দেশের রাজা-বাদশাহ, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর জন্য উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছে ফলের রাজা আম।

এই আম উপহারের ফলে বাংলাদেশের সুস্বাদু আম নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও এসেছে বিষয়টি।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
On the occasion of the martyrdom anniversary of Shaheed President Ziaur Rahman
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে

জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতির আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতির আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে গত ০২ জুন, সোমবার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতি।

জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গোলাম মরতুজা, মোঃ ফয়েজ আলম ও মোঃ আশরাফুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আবেদিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভা সঞ্চালনায় ছিলেন কার্যকরী সভাপতি শাহ জাহান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এস. এফ. এম. মুনির হোসেন, সহসভাপতি মজিবুর রাহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ছানোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Return is not obligated to get a credit card and trade license purchased by savings

সঞ্চয়পত্র কেনা, ক্রেডিট কার্ড ও ট্রেড লাইসেন্স নিতে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা নেই

সঞ্চয়পত্র কেনা, ক্রেডিট কার্ড ও ট্রেড লাইসেন্স নিতে রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা নেই

১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। আবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। ট্রেড লাইসেন্স নিতেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দাখিলের বাধ্যবাধকতায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্রের বাধ্যবাধকতায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। এত দিন ৪৬টি সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা ছিল।

এখন ১১ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্র দাখিল করলেই হবে। ওই ১১টি সেবা হলো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে; সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রাপ্তিতে; সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ারের নতুন লাইসেন্স গ্রহণে; ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়নে; চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, অ্যাকচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণে; পাঁচ লাখ টাকার অধিক পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়; এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মচারীর কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তিতে; ত্রি-চক্র মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নে; ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Proposes to increase the special advantage of government employees in the budget

বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব

বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আজ সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ১২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, ২০১৫ সালের পর এখন পর্যন্ত বেতন কাঠামো প্রণীত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Online shopping will be more expensive

অনলাইন কেনাকাটা হবে আরও ব্যয়বহুল

অনলাইন কেনাকাটা হবে আরও ব্যয়বহুল

ঘরে বসে যেসব ক্রেতারা কেনাকাটা করতে চান, তাদের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটা আগামী অর্থবছর থেকে খানিকটা ব্যয়বহুল হতে পারে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ই-প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় থেকে কমিশনের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্যের দাম বেশি হতে পারে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ভ্যাটের হার ছিল ৫ শতাংশ।

জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে ভিন্ন আঙ্গিকে পেশ হলো বাজেট। এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট উপস্থাপন করার পর ৩০ জুন তা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করা হবে।

তবে অতীতের রেওয়াজ মেনে বাজেট ঘোষণার পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বাজেট নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া পুরো জুন মাসজুড়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Inflation will come down to 5 percent this June Finance Advisor 

চলতি জুনেই মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে : অর্থ উপদেষ্টা 

চলতি জুনেই মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে : অর্থ উপদেষ্টা 

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে সরকারের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করায় এবং সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তার এ বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে আমাদের সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে তখন আমাদের সামনে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরে মানুষকে স্বস্তি দেয়া।

তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সাথে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।’

মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করেছি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In the twilight of international finance the new challenge of IMF

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আর্থিক অস্থিরতা সামাল দিতে গঠিত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। এর মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মুদ্রানীতি সমন্বয় সাধন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। বহু দেশ সংকটে পড়ে এই সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে- কেউ সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে, কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদি ঋণনির্ভরতার ফাঁদে পড়ে গেছে।

আজ, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য ক্রমশ পশ্চিমকেন্দ্রীকতা থেকে সরে পূর্ব ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন আইএমএফ তার প্রাসঙ্গিকতা ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে এক নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন।

ঋণ সহায়তা, নাকি ঋণের ফাঁদ?

আইএমএফ সাধারণত এমন শর্তে ঋণ দেয়, যার মধ্যে থাকে কঠোর ব্যয়সংযম, ভর্তুকি হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারমুখী সংস্কার; কিন্তু এই শর্তগুলো অনেক সময় জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্থানীয় শিল্প ধসে পড়ে, বৈষম্য বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতা এর এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ২০১৮ সালে আইএমএফ ইতিহাসের বৃহত্তম ঋণ প্যাকেজ ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করে। ফল ছিল বিপরীত- মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, দারিদ্র্য আরও বেড়ে যায় এবং দেশটি আবার মন্দার মুখে পড়ে।

এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে শুধু অর্থনৈতিক সমীকরণ দিয়ে কোনো দেশের সামাজিক বাস্তবতা নির্ধারণ চলে না।

আইএমএফের নীতিনির্ধারণ কাঠামো এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শক্তির ভারসাম্যের প্রতিচ্ছবি। উন্নত দেশগুলো (বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন) সংগঠনের ভোটের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত। এই গণতান্ত্রিক ঘাটতি আজ দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গভীর অসন্তোষ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার সন্ধিক্ষণে: আইএমএফের নতুন চ্যালেঞ্জ

বিকল্প প্রতিষ্ঠানের উত্থান

এই প্রেক্ষাপটে বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন- নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (NDB), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এবং ল্যাটিন আমেরিকান রিজার্ভ ফান্ড (FLAR) নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে। (NDB) এর সহায়তা তুলনামূলকভাবে শর্তমুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক। এখানে প্রতিটি দেশের ভোটের ও প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ আছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও আগ্রহী করে তুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শুধু আর্থিক বিকল্প নয়- এরা এক নতুন উন্নয়ন দর্শনের বাহক। সেই দর্শনে উন্নয়ন নির্ধারিত হয় স্থানীয় বাস্তবতা ও প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে, বাইরের চাপ বা রূঢ় শর্ত নয়।

বিশ্ব আজ বহুমেরু। অর্থনৈতিক শক্তি ছড়িয়ে পড়ছে নানা অঞ্চলে। এই বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আইএমএফকে নিজস্ব কাঠামো ও দর্শনে রূপান্তর আনতে হবে। প্রয়োজন গভর্ন্যান্সের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে সমান অংশগ্রহণ, এবং সর্বোপরি সহানুভূতিশীল ঋণ নীতিমালা।

আইএমএফ যদি সত্যিই বৈশ্বিক আর্থিক স্থিতিশীলতার অভিভাবক হতে চায়, তাহলে তাকে হতে হবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক, এবং আঞ্চলিক বাস্তবতাসম্মত এটি শুধু আইএমএফের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন নয়; এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্ন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
There is no new surprise in the budget Devpriya Bhattacharya

বাজেটে নতুন চমক থাকছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বাজেটে নতুন চমক থাকছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ছবি: সংগৃহীত

জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচার হওয়া অর্থ জব্দ কর তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার পরমর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময়ে এবারের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর এফডিসিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচারকৃত অর্থ জব্দের মাধ্যমে বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করলে তা হতে পারে এবারের বাজেটের একটি অভিনব উৎস।’

‘গত সরকারের রেখে যাওয়া বিদেশি ঋণের চাপ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এই সরকারের এই সময়ে অন্যতম সাফল্য ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করে বিদেশি ঋণের চাপ কমিয়ে আনা,’ যোগ করেন তিনি।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ঋণ বিলিয়ন ডলার করে বছর বছর বাড়ছিল। সামগ্রিকভাবে এই সরকারের সাফল্যের জায়গাটা হলো বহির্খাত, রেমিট্যান্স, রপ্তানি, দায়-দেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, মজুদ বাড়ানো ও টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল রাখা।’

তবে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এবং করের আওতা বাড়ানোর মতো নতুন কোনো কিছু না থাকায় এবারের বাজেটে কোনো চমক থাকছে না।’

‘যে প্রকল্পগুলো সরকারের কাছে আছে, তা অতিমূল্যায়িত ও তার ৪০ শতাংশ ব্যয়ই ভুয়া। আগের যে প্রকল্পগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হতো, সেগুলো অব্যাহত আছে,’ বলেন তিনি।

সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘রাজস্ব ব্যয় সঠিকভাবে না করলে করদাতাদের উৎসাহ থাকে না। আমাদের কর কাঠামো বৈষম্যনির্ভর। আমাদের বৈদেশিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা অর্জিত হলেও ব্যক্তি খাতে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ এখনো আশানুরূপ অর্জিত হয়নি।’

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বিতর্ক সংগঠন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।

মন্তব্য

p
উপরে