টানা তিন দিন দরপতনের পর পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে তো পারলই না, উল্টো বড় দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মনে আতঙ্ক আরও বড় করে তুলেছে।
গত সপ্তাহ থেকে পুঁজিবাজার টেনে তোলা ব্যাংক খাতে ঢালাও পতনের দিন এমন কোনো খাত ছিল না, যা নিয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে থাকা যায়।
বিমা, আর্থিক, প্রকৌশল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, ওষুধ ও রসায়ন খাতেও দেখা দিয়েছে প্রায় একই ধরনের চিত্র।
শেষের ১৫ মিনিটের লেনদেন মোট লেনদেন হাজার কোটি টাকার ঘরে নিয়ে গেছে। তবে একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল গত ২৮ এপ্রিলের ৯৪০ কোটি ৩২ লাখ টাকার স্মৃতি বুঝি ফিরে আসবে।
আগের টানা তিন দিনে সূচক যতটা পড়েছিল, চতুর্থ দিন বুধবার এক দিনেই সূচক পড়ল তার চেয়ে বেশি। ৯৫ পয়েন্ট পতনে সূচক নেমে গেলে ৭ হাজার পয়েন্টের নিচে।
দিন শেষে বেড়েছে কেবল ৭৫টি কোম্পানির দর, বিপরীতে কমেছে ২৫৯টির। দর ধরে রাখতে পেরেছে ৩১টি।
দিন শেষে সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯১৭ পয়েন্টে, যা গত ১০ নভেম্বরের পর সর্বনিম্ন অবস্থান।
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবিসি), লাফার্জ হোলসিম, রবির মতো কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দরপতন সূচক পতন ত্বরান্বিত করেছে।
এ ছাড়া ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার দর ১.১৪ শতাংশ পতনের কারণে সূচকের পতন হয়েছে ৭.৬৩ শতাংশ। স্কয়ার ফার্মার শেয়ার দর ১.৭০ শতাংশ পতনের কারণে সূচক কমেছে ৬.৫২ শতাংশ।
সূচক পতনের পেছনে যে ১০টি কোম্পানির সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল, তার মধ্যে ব্যাংক খাতের ছিল ৪টি। এই চারটি ব্যাংকের শেয়ারের দর পতনে সূচক কমেছে ১১.০৫ শতাংশ।
পাশাপাশি যেসব কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে সূচক উত্থানে প্রচেষ্টায় ছিল তার মধ্যে প্রথমে ছিল গ্রামীণফোন, যার শেয়ার দর দশমিক ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি সূচকে উত্থান হতে ২.৩৫ শতাংশ চেষ্টায় ছিল।
লেনদেনে খাতভিত্তিক বিবেচনায় দর বৃদ্ধিতে এগিয়ে ছিল বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো। স্বল্প মূলধনি ও লোকসানি বা বন্ধ কিছু কোম্পানির শেয়ার দর বাড়তে দেখা গেছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে ব্যাংক খাত নিয়ে বিনিয়োগকারীদের যে আগ্রহ তৈরি হয়েছিল, এক দিনেই তা পরিণত হয়েছে হতাশায়। তালিকাভুক্ত ৩২টি ব্যাংকেরই শেয়ার দর এক দিনে কমার বিষয়টি সহসা দেখা যায় না, যেটি ঘটেছে আজ।
দর বৃদ্ধিতে ১০ কোম্পানি
এর মধ্যে শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানি ছিল চারটি। এগুলোর দাম ১০ শতাংশ বা আশপাশে বেড়েছে।
দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির মধ্যে শীর্ষে ছিল প্রকৌশল খাতের জেড ক্যাটাগরির সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ। ৯.৯২ শতাংশ দর বৃদ্ধির মাধ্যমে সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকা কোম্পানিটির মোট লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ১০ লাখ ৮০ হাজার ৭৭৮টি শেয়ার।
সদ্য তালিকাভুক্ত দুটি কোম্পানি ছিল এই তালিকায়। এর মধ্যে একমি পেস্টিসাইডস ও সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই বাড়ছে সর্বোচ্চ পরিমাণে। তবে এখনও বলার মতো লেনদেন হয়নি।
কোম্পানি দুটির শেয়ার বিক্রিতে বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ ছিল। একমি পেস্টিসাইডসে ১৬৩টি শেয়ার আর সেনাকল্যাণের ১ হাজার ৬১৬টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
এ ছাড়া ৮ শতাংশ পর্যন্ত দর বেড়েছে একটির। আর ৬ শতাংশ পর্যন্ত দর বেড়েছে তিনটির। ৫ শতাংশের কোনো কোম্পানি না থাকলেও ৪ শতাংশের বেশি দর বেড়েছে তিনটির।
তারপর দর বৃদ্ধির তালিকায় থাকা তিনটি কোম্পানি ছিল বস্ত্র খাতের। তবে শীর্ষ দর বৃদ্ধিতে বস্ত্র খাতের ছিল আরও একটি কোম্পানি। তসরিফার দর বেড়েছে ৯.৫৭ শতাংশ। মিথুন নিটিংয়ের দর বেড়েছে ৮.৭৭ শতাংশ আর মুন্নু ফেব্রিক্সের বেড়েছে ৬.৮৭ শতাংশ। প্যারামাউন্ড টেক্সটাইলের শেয়ার দর বেড়েছে ৪.৮৮ শতাংশ।
দর বৃদ্ধিতে থাকা অপর কোম্পানিগুলোর মধ্যে ছিল সিমেন্ট খাতের এমআই সিমেন্ট, যার দর বেড়েছে ৬.৩৮ শতাংশ। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের জিলবাংলা সুগার মিলের শেয়ার দর বেড়েছে ৪.৯৮ শতাংশ।
এ তালিকায় তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের একটি কোম্পানি ছিল। অগ্নি সিস্টেমসের শেয়ার দর বেড়েছে ৪.৩৯ শতাংশ। কোম্পানির মোট হাতবদল হয়েছে ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৬২২টি শেয়ার।
দর পতনের ১০
দর পতনের শীর্ষে ১০ কোম্পানির মধ্যে প্রথমেই ছিল মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এলআর গ্লোবাল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটপ্রতি দর কমেছে ১০ শতাংশ। ইউনিটিপ্রতি দর ৯ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৮ টাকা ১০ পয়সা।
তবে এই ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৫১ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণার পর রেকর্ড ডেটের পর প্রথম কর্মদিবস ছিল আজ। নগদ লভ্যাংশ সমন্বয়ের কথা না থাকলেও বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে এই প্রবণতা আবার দেখা গেল।
এক দিনে ১০ শতাংশের বেশি দর কমা সম্ভব ছিল না আর এই সর্বোচ্চ পরিমাণে দর কমার পরেও ফান্ডটির ক্রেতা ছিল খুবই কম।
ফান্ডটির ৬৬ হাজার ৫৩২টি ইউনিট হাতবদল হয়েছে, যার বাজারমূল্য ছিল ৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকা।
বিষয়টি বাদ দিলে বলা যায় সবচেয় বেশি কমেছে কাট্টলি টেক্সটাইলের শেয়ার দর। ৯.০৬ শতাংশ কমে ২১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৮৬টি শেয়ার হাতবদলের মাধ্যমে মোট লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স বা বিআইএফসির দর কমেছে ৮.৬৯ শতাংশ। জেমিনি সি ফুডের শেয়ার দর কমেছে ৮.০৪ শতাংশ। কোম্পানিটির মোট ১ লাখ ১৭ হাজার ৯০৬টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। লেনদেন হয়েছে মোট ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে অর্থবছর সমাপ্তের প্রায় ১০ মাস পর লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানো প্রিমিয়ার লিজিং কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে ৭.৯২ শতাংশ।
লোকসানে থাকার পরও লভ্যাংশ ঘোষণার পর লাফ দেয়া হামিদ ফেব্রিক্সের শেয়ার দর আরও কমেছে ৬.৮৪ শতাংশ।
ব্যাংক খাতের আইএফআইসির দর কমেছে ৪.৯৫ শতাংশ। ২০ টাকা ২০ পয়সার শেয়ার কমে হয়েছে ১৯ টাকা ২০ পয়সা।
ব্যাংকটির ৩ কোটি ৪৫ লাখ ৩৮ হাজার ৯৬১টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে যার বাজারমূল্য ছিল ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
ব্যাংক খাতের আরেক প্রতিষ্ঠান এনআরবিসির শেয়ার দরও আবার ৪.৯০ শতাংশ কমেছে। হাতবদল হয়েছে ৭০ লাখ ২৮ হাজার ৩০টি শেয়ার। যার বাজারমূল্য ছিল ২২ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এ ছাড়া গোল্ডেনসনের শেয়ার দর ৪.৮৮ শতাংশ, সালভো কেমিক্যালের দর ৪.৮৭ শতাংশ, রেনউইক যজ্ঞেশ্বরের দর কমেছে ৪.৭০ শতাংশ।
লেনদেনের শীর্ষে ১০
এদিন লেনদেনের শীর্ষে ছিল ওয়ান ব্যাংক। যার মোট ৫ কোটি ৬৩ লাখ ৪ হাজার ৮০০টি শেয়ার হাতবদলের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ১০৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
লেনদেনে এগিয়ে থাকলেও এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে দশমিক ২ শতাংশ। শেয়ার দর ১৮ টাকা ৭০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৮ টাকা ৫০ পয়সা।
তারপরই ছিল বিবিধ খাতের বেক্সিমকো লিমিটেড, যার লেনদেন হয়েছে ১০৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৬১ লাখ ৭ হাজার ১১৬টি।
ব্যাংক খাতের আরেক কোম্পানি আইএফআইসি ব্যাংকের মোট লেনদেন হয়েছে ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, হাতবদল হয়েছে ৩ কোটি ৪৫ লাখ ৩৮ হাজার ৯৬১টি।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের লেনদেন হয়েছে ৫৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৩ কোটি ৬১ লাখ ৭৩ হাজার ৯৮৫টি।
বিমা খাতের ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪২ কোটি ৭১ লাখ টাকার। হাতবদল হয়েছে ২০ লাখ ১৭ হাজার ৩৮৬টি শেয়ার।
প্যারামাউন্ড টেক্সটাইলের লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৩৮ লাখ ৪১ হাজার ১৩৩টি শেয়ার।
সাইফ পাওয়ারটেকের শেয়ার দর কমেছে দশমিক ৩ শতাংশ। কোম্পানিটির লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৬২ লাখ ৯৬ হাজার ৮৫৩টি শেয়ার।
এদিন ব্যাংক খাতের এনআরবিসি ও ফরচুর সুজ ছিল লেনদেনে শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য