কম সুদের বলে বিদেশি ঋণ গ্রহণ করা ব্যবসায়ীরা ডলারের দর বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন। ফলে দেশি ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে সুদ-আসলে যে টাকা পরিশোধ করতে হতো, এখন তাদের পরিশোধ করতে হবে তার চেয়ে বেশি।
দেশে বাড়ছে শিল্প উৎপাদন। উন্মোচন করা হচ্ছে সম্ভাবনার নতুন দ্বার। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থায়ন এখনও বড় চ্যালেঞ্জ। অর্থায়নের জন্য দেশি উৎসের পাশাপাশি এখন বেশিসংখ্যক উদ্যোক্তা বিদেশি ঋণে ঝুঁকছেন।
বলা হচ্ছে দেশের তুলনায়, বিদেশি ঋণে সুদহার কম। তবে ঋণের অর্থ ডলার বা অন্য কোনো মুদ্রায় দেশে আসে আর তা পরিশোধও করতে হয় বিদেশি সেই মুদ্রায়। এ কারণে বিদেশি মুদ্রার বিনিময় হার যদি বেড়ে যায়, তাহলে ঋণগ্রহীতাদের বেশি দামে তা কিনতে হবে। ফলে তাদের প্রত্যাশিত অর্থের চেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হতে পারে।
এই ঘটনাটিই ঘটছে সম্প্রতি। টানা কয়েক বছর টাকার সঙ্গে বিদেশি মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকলেও এখন পরিস্থিতি অন্য রকম। ডলারের দর হঠাৎ করেই এখন চড়া। আন্তব্যাংকে প্রতি ডলার বিনিময় হার এখন ৮৫.৮০ টাকা। তবে বছর কয়েক আগেও ছিল ৭৬ থেকে ৭৭ টাকা।
ফলে সে সময় যারা ঋণ নিয়েছেন ঋণগ্রহীতাদের প্রত্যাশিত অর্থের চেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে।
পাঁচ বছর আগেও ২০১৬ সালের এপ্রিলে ৭৬ টাকা ৬০ পয়সাতেও ডলার কিনতে পারা গেছে। প্রায় তিন বছর ঘুরে-ফিরে একই দর ছিল। তবে সে সময়ের চেয়ে ১০ শতাংশের বেশি মূল্য হারায় টাকা।
ফলে ৫ বছর আগে যারা বিদেশ থেকে ঋণ এনেছেন, তাদের বিনিময় হারের কারণে ১০ শতাংশ বেশি টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। এর সঙ্গে আছে সুদহার।
আবার ঋণ দেশে ডলারে এলেও ব্যাংকব্যবস্থা থেকে বাংলাদেশি মুদ্রাতেই তা পান উদ্যোক্তারা। এখানেও ডলারপ্রতি ২০ থেকে ৩০ পয়সা কমিশন কেটে রাখা হয়। আবার ঋণ পরিশোধে ডলার কেনার সময়ও অতিরিক্ত ২০ থেকে ৩০ পয়সা বেশিতে কিনতে হয়।
বছর পাঁচেক আগেও বাংলাদেশে ব্যাংক ঋণের সুদহার ১২ শতাংশের বেশি থাকায় বিনিময় হার বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি নিয়েও বিদেশি ঋণে ঝুঁকতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা।
তবে এখন দেশে ব্যাংক ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। ভালো ঋণদাতা ও বড় অঙ্ক হলে এর চেয়ে কম সুদেও ঋণ দেয়া হচ্ছে।
ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদেশি ঋণে উদ্যোক্তাদের লাভ কমে যাবে। ডলারের দর বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো বিদেশি ঋণ আকর্ষণীয় থাকবে না। কারণ ঋণ ডলারে শোধ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক চাপ দিয়ে ব্যাংকব্যবস্থায় ডলারের দর স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু বাজার থেকে (কাব মার্কেট) ডলার কিনতে হলে চড়া দাম দিতে হবে। আবার সব সময় পাওয়াও যাবে না।’
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদেশি ঋণ অনেক হিসাব-নিকাশ করে দেয়া হয়। আমরা চেষ্টা করি যত কম এ ঋণ দেয়া যায়। দেশি ঋণ নিতে হলে ৮ থেকে ৯ শতাংশ সুদ দিতে হচ্ছে, কিন্তু বিদেশি ঋণ ৩ বা ৪ শতাংশে পাওয়া যাচ্ছে।
‘তবে বিদেশি ঋণে যে সব সময়ই লাভ হবে, এমন নয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ক্ষতিও হয়। বর্তমানে ডলারের দর ঊর্ধ্বমুখী। ডলারের দাম যদি বাড়তে থাকে তাহলে বিদেশি ঋণ উদ্যোক্তাদের জন্য ক্ষতির কারণ। সে ক্ষেত্রে ঝুঁকিতে পড়বে।’
বর্তমানে দেশীয় ঋণের চাহিদাও বেড়েছে বলে জানান এই ব্যাংকার। বলেন, ‘করোনার কারণে ঋণের চাহিদা কম ছিল। তখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে করপোরেট ঋণ ৬ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন ঋণের চাহিদা বেড়েছে। ফলে ৯ শতাংশের কম সুদে ঋণে এখন ঋণ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।’
ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) সাবেক প্রেসিডেন্ট শামস মাহমুদ বলেন, ‘মুদ্রার বিনিময় হার যেকোনো সময় বেড়ে যেতে পারে, এই বিষয়টি তাদের মাথায় থাকে। এ কারণে এসব ঋণ তারা দ্রুত পরিশোধ করার চেষ্টা করেন। তবে ডলারের দর এখন কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বেচাকেনা করে নিয়ন্ত্রণ করছে।’
কবে থেকে এই সুযোগ
বিদেশ থেকে দেশি উদ্যোক্তাদের ঋণ সংগ্রহের সুযোগ প্রায় চার দশক আগেই করে দেয়া হয়েছে।
১৯৮৫ সালে ‘অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট’ নামে ব্যাংকের আলাদা বিভাগ গঠন করা হয়। বর্তমানে ৩৬টি ব্যাংক এই বিভাগ গঠন করে ঋণ বিতরণ করছে।
প্রথম দিকে তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা এ সুবিধা নিলেও পরে অন্য খাতের উদ্যোক্তারাও এই সুবিধা নিতে শুরু করেন।
চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি বিদেশি ঋণ নেবার পথ আরও প্রশস্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে বিদেশি মালিকানাধীন সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানও মূল কোম্পানি (প্যারেন্ট) থেকে ঋণ নিতে পারবে। তবে এ সুবিধা ট্রেডিং ব্যবসার জন্য প্রযোজ্য হবে না। উৎপাদন ও সেবা কার্যক্রম শুরু থেকে ছয় বছর পর্যন্ত এ সুবিধা নেয়া যাবে। আগে এ সুবিধা তিন বছর পর্যন্ত নেয়া যেত।
মোট বিদেশি ঋণ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকের অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটে ব্যক্তি বা বেসরকারি পর্যায়ে মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা।
২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে ঋণ ছিল ৬৩ হাজার দুই কোটি টাকা।
অর্থাৎ ছয় মাসে ঋণ ১০ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকা বেড়েছে।
২০১৯ সালের শেষের দিকে ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশে নেমে আসার পরই মূলত বিদেশি ঋণের প্রতি ঝোঁক কমতে শুরু করে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এ ঋণ ছিল ৬০ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। পরের বছরের জুন পর্যন্ত ঋণ বেড়ে হয় ৬৩ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা।
অর্থাৎ সুদহার ৯ শতাংশ কার্যকর হওয়ার পর বিদেশি ঋণ বাড়ার বদলে কমেছে।
বিদেশ থেকে বেসরকারি খাতের নেয়া ঋণের মধ্যে সাড়ে ২১ শতাংশই হলো বাণিজ্যিক ঋণ। বাকি ঋণের মধ্যে আছে বহুপাক্ষিক, দ্বিপাক্ষিক ও সরবরাহকারী ঋণ।
ঋণে ঝুঁকিও আছে
বিদেশি ঋণ নিয়ে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম)। শিরোনাম ছিল ‘প্রসপেক্টাস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ অফ শর্ট টার্ম ফরেন কারেন্সি ফিন্যান্সিং অব ব্যাংকস’।
এতে বলা হয়, ক্রমবর্ধমান এ ঋণ বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেনে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
গবেষণা অনুযায়ী বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের বড় উৎসে পরিণত হয়েছে জার্মানি। দেশে আসা মোট ঋণের প্রায় ১৪ ভাগ ঋণই আসছে দেশটি থেকে।
লাইবর (লন্ডনের শীর্ষ ১৫ ব্যাংকের আন্ত লেনদেনে সুদহার) রেটের সঙ্গে ৩ ও ৩ দশমিক ৯ শতাংশ সুদে এসব ঋণ নেয়া হয়।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইউরো ও বাংলাদেশি ব্যাংকের সুদহারে নেয়া হয়েছে। এখন লাইবর রেট বৃদ্ধি ও টাকার বিপরীতে ডলারের দর বৃদ্ধিতে এসব ঋণ পরিশোধে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর বড় ধরনের চাপ তৈরি হতে পারে।
ঋণ যেভাবে নেয়া যায়
বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নিতে বড় জোগানদাতা বা মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে দেশে কার্যরত বিদেশি ব্যাংকের শাখাগুলো।
এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে এইচএসবিসি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। অন্যদিকে দেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে শীর্ষপর্যায়ে রয়েছে ইস্টার্ন, সিটি, ব্র্যাক, এবি ও ইসলামী ব্যাংক।
অগ্রণী, আল-আরাফাহ, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা, ডাচ্-বাংলা, এক্সিম, আইএফআইসি, যমুনা, মার্কেন্টাইল, মিডল্যান্ড, মধুমতি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ন্যাশনাল, এনসিসি, ওয়ান, প্রিমিয়ার, প্রাইম, পূবালী, শাহজালাল, সোশ্যাল ইসলামী, সাউথইস্ট, স্ট্যান্ডার্ড, ট্রাস্ট, ইউসিবি, উত্তরা, সিটি এনএ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অফ সিলন, স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া ও উরি ব্যাংকের মাধ্যমেও এ ঋণ দেয়া হয়।
হঠাৎ চড়া ডলার দর
অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে বৈদেশিক মুদ্রার বাজার। বিশেষ করে ডলারের দর হঠাৎ তেজিভাব দেখা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১৬ নভেম্বর আন্তব্যাংক বিনিময় হার ছিল প্রতি ডলার ৮৫.৮০ টাকা। অথচ ছয় মাস আগেও ১৬ জুনে প্রতি ডলারের মূল্য ছিল ৮৪.৮০ টাকা। ছয় মাসে ডলারের বিপরীতে টাকার ১ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়েছে।
এমন অবস্থায় টাকার অবমূল্যায়ন ঠেকাতে নভেম্বরের মাত্র ১৬ দিনেই ৩২৩ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বছরের জুলাই পর্যন্ত ২০৫ মিলিয়ন ডলার কিনেছিল।
ডলার বিক্রির কারণে অক্টোবরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৬ বিলিয়ন ডলার থেকে ৪৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।
বাজারে নগদ ডলারের চাহিদা বেশি হওয়ায় কার্ব মার্কেটেও ডলারের দাম বেড়েছে। এক বছর আগে কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম ব্যাংক রেটের কাছাকাছি ছিল। অর্থাৎ ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ৯০ পয়সা। এখন তা বেড়ে গড়ে ৯২ থেকে ৯৩ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। গত এক বছরে এর দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ।
টাকার দরপতন যদি না থামে, তাহলে বিদেশি ঋণদাতাদের আরও বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হবে ভবিষ্যতে।
আরও পড়ুন:শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে গত ০২ জুন, সোমবার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতি।
জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গোলাম মরতুজা, মোঃ ফয়েজ আলম ও মোঃ আশরাফুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আবেদিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভা সঞ্চালনায় ছিলেন কার্যকরী সভাপতি শাহ জাহান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এস. এফ. এম. মুনির হোসেন, সহসভাপতি মজিবুর রাহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ছানোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। আবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। ট্রেড লাইসেন্স নিতেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দাখিলের বাধ্যবাধকতায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্রের বাধ্যবাধকতায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। এত দিন ৪৬টি সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা ছিল।
এখন ১১ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্র দাখিল করলেই হবে। ওই ১১টি সেবা হলো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে; সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রাপ্তিতে; সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ারের নতুন লাইসেন্স গ্রহণে; ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়নে; চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, অ্যাকচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণে; পাঁচ লাখ টাকার অধিক পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়; এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মচারীর কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তিতে; ত্রি-চক্র মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নে; ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
আজ সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ১২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।
তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, ২০১৫ সালের পর এখন পর্যন্ত বেতন কাঠামো প্রণীত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।
ঘরে বসে যেসব ক্রেতারা কেনাকাটা করতে চান, তাদের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটা আগামী অর্থবছর থেকে খানিকটা ব্যয়বহুল হতে পারে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ই-প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় থেকে কমিশনের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্যের দাম বেশি হতে পারে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ভ্যাটের হার ছিল ৫ শতাংশ।
জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে ভিন্ন আঙ্গিকে পেশ হলো বাজেট। এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট উপস্থাপন করার পর ৩০ জুন তা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করা হবে।
তবে অতীতের রেওয়াজ মেনে বাজেট ঘোষণার পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বাজেট নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া পুরো জুন মাসজুড়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে সরকারের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করায় এবং সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তার এ বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে আমাদের সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে তখন আমাদের সামনে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরে মানুষকে স্বস্তি দেয়া।
তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সাথে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।’
মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করেছি।
১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আর্থিক অস্থিরতা সামাল দিতে গঠিত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। এর মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মুদ্রানীতি সমন্বয় সাধন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। বহু দেশ সংকটে পড়ে এই সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে- কেউ সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে, কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদি ঋণনির্ভরতার ফাঁদে পড়ে গেছে।
আজ, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য ক্রমশ পশ্চিমকেন্দ্রীকতা থেকে সরে পূর্ব ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন আইএমএফ তার প্রাসঙ্গিকতা ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে এক নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন।
ঋণ সহায়তা, নাকি ঋণের ফাঁদ?
আইএমএফ সাধারণত এমন শর্তে ঋণ দেয়, যার মধ্যে থাকে কঠোর ব্যয়সংযম, ভর্তুকি হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারমুখী সংস্কার; কিন্তু এই শর্তগুলো অনেক সময় জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্থানীয় শিল্প ধসে পড়ে, বৈষম্য বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতা এর এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ২০১৮ সালে আইএমএফ ইতিহাসের বৃহত্তম ঋণ প্যাকেজ ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করে। ফল ছিল বিপরীত- মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, দারিদ্র্য আরও বেড়ে যায় এবং দেশটি আবার মন্দার মুখে পড়ে।
এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে শুধু অর্থনৈতিক সমীকরণ দিয়ে কোনো দেশের সামাজিক বাস্তবতা নির্ধারণ চলে না।
আইএমএফের নীতিনির্ধারণ কাঠামো এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শক্তির ভারসাম্যের প্রতিচ্ছবি। উন্নত দেশগুলো (বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন) সংগঠনের ভোটের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত। এই গণতান্ত্রিক ঘাটতি আজ দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গভীর অসন্তোষ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে।
বিকল্প প্রতিষ্ঠানের উত্থান
এই প্রেক্ষাপটে বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন- নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (NDB), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এবং ল্যাটিন আমেরিকান রিজার্ভ ফান্ড (FLAR) নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে। (NDB) এর সহায়তা তুলনামূলকভাবে শর্তমুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক। এখানে প্রতিটি দেশের ভোটের ও প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ আছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও আগ্রহী করে তুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শুধু আর্থিক বিকল্প নয়- এরা এক নতুন উন্নয়ন দর্শনের বাহক। সেই দর্শনে উন্নয়ন নির্ধারিত হয় স্থানীয় বাস্তবতা ও প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে, বাইরের চাপ বা রূঢ় শর্ত নয়।
বিশ্ব আজ বহুমেরু। অর্থনৈতিক শক্তি ছড়িয়ে পড়ছে নানা অঞ্চলে। এই বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আইএমএফকে নিজস্ব কাঠামো ও দর্শনে রূপান্তর আনতে হবে। প্রয়োজন গভর্ন্যান্সের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে সমান অংশগ্রহণ, এবং সর্বোপরি সহানুভূতিশীল ঋণ নীতিমালা।
আইএমএফ যদি সত্যিই বৈশ্বিক আর্থিক স্থিতিশীলতার অভিভাবক হতে চায়, তাহলে তাকে হতে হবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক, এবং আঞ্চলিক বাস্তবতাসম্মত এটি শুধু আইএমএফের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন নয়; এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্ন।
জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচার হওয়া অর্থ জব্দ কর তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার পরমর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময়ে এবারের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর এফডিসিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচারকৃত অর্থ জব্দের মাধ্যমে বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করলে তা হতে পারে এবারের বাজেটের একটি অভিনব উৎস।’
‘গত সরকারের রেখে যাওয়া বিদেশি ঋণের চাপ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এই সরকারের এই সময়ে অন্যতম সাফল্য ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করে বিদেশি ঋণের চাপ কমিয়ে আনা,’ যোগ করেন তিনি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ঋণ বিলিয়ন ডলার করে বছর বছর বাড়ছিল। সামগ্রিকভাবে এই সরকারের সাফল্যের জায়গাটা হলো বহির্খাত, রেমিট্যান্স, রপ্তানি, দায়-দেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, মজুদ বাড়ানো ও টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল রাখা।’
তবে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এবং করের আওতা বাড়ানোর মতো নতুন কোনো কিছু না থাকায় এবারের বাজেটে কোনো চমক থাকছে না।’
‘যে প্রকল্পগুলো সরকারের কাছে আছে, তা অতিমূল্যায়িত ও তার ৪০ শতাংশ ব্যয়ই ভুয়া। আগের যে প্রকল্পগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হতো, সেগুলো অব্যাহত আছে,’ বলেন তিনি।
সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘রাজস্ব ব্যয় সঠিকভাবে না করলে করদাতাদের উৎসাহ থাকে না। আমাদের কর কাঠামো বৈষম্যনির্ভর। আমাদের বৈদেশিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা অর্জিত হলেও ব্যক্তি খাতে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ এখনো আশানুরূপ অর্জিত হয়নি।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বিতর্ক সংগঠন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
মন্তব্য