বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের হবিগঞ্জ অংশে ‘মাদক কারবারি’ ও ‘চোরাকারবারিদের বাড়ি’ চিহ্নিত করে লাল সাইনবোর্ড বসিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
এমন উদ্যোগে মাদক ও চোরাচালান কমবে বলে মনে করছে বিজিবি। তবে আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী ও অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, এর কোনো আইনি বৈধতা নেই। এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন।
বিজিবি বলছে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ও চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত রয়েছে কয়েকটি চক্র। নানা কৌশলে তারা এই অপরাধ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিভিন্ন সময় চক্রের সদস্যদের আটক করে মামলা দিলেও কারাগার থেকে বেরিয়ে ফের তারা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন।
দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বলছে, বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেও মাদক এবং চোরাচালান বন্ধ করা যায়নি। এ অবস্থায় অপরাধে জড়িতদের চিহ্নিত করতে বাড়ির সামনে সাইনবোর্ড বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়।
বাহিনীটির হিসাবে, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে মাধবপুর সীমান্ত পর্যন্ত অন্তত দেড় শ বাড়ির আশপাশে এমন সাইনবোর্ড বসানো হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কোনো বাড়ির সামনে ‘এটি মাদক ব্যবসায়ীর বাড়ি’ আবার কোনোটিতে ‘এটি চোরাকারবারির বাড়ি’ লেখা সাইনবোর্ড রয়েছে। লাল রঙের সাইনবোর্ডের ওপর সাদা অক্ষরগুলো দূর থেকেই পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। সম্প্রতি এমন কিছু ছবি ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়ে।
বিজিবি ৫৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এস এন এম সামীউন্নবী চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শ্রীমঙ্গল উপজেলা থেকে চুনারুঘাট হয়ে মাধবপুর সীমান্ত পর্যন্ত আমার অধীনে। এই জায়গাগুলোতে অন্তত দেড় শ বাড়িতে এমন সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে বিজিবির মামলা আছে তাদের বাড়িতেই মূলত সাইনবোর্ডগুলো লাগানো হয়েছে। পুলিশের মামলাকে আমরা কাউন্ট (হিসাব) করিনি।’
তিনি বলেন, ‘অনেক চেষ্টার পরেও তাদের অপরাধজগৎ থেকে বের করা যাচ্ছে না। তাই সামাজিকভাবে চাপের মুখে থাকলে অপরাধমূলক কাজ ছেড়ে দিতে পারে, এই চিন্তা থেকেই সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বা তারা এ কারবার থেকে সরে এলে সাইনবোর্ডগুলো খুলে নেয়া হবে।’
সমালোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এসব সমালোচনায় আমি কান দিই না। আমি আইন শক্ত করেই এই কাজে নেমেছি। সুতরাং সমালোচনায় কিছু আসে যায় না।’
একজনের জন্য পুরো পরিবার কেন চিহ্নিত হবে, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পরিবারের ওই সদস্য কেন মাদক বা চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত? এর দায় পুরো পরিবারের ওপর পড়ে।’
এ বিষয়ে হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হাফিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা মাদক কারবারির বাড়ি, চোরাকারবারির বাড়ি, ডাকাতের বাড়ি এভাবে চিহ্নিত করে সাইনবোর্ড লাগানোর বৈধতা নেই। অপরাধ কর্মকাণ্ডের স্থানগুলো চিহ্নিত করতে পারে। এভাবে বাড়িঘর চিহ্নিত করা এককথায় আইনের ব্যত্যয়। এটা করতে হলে সংসদে আইন পাস করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘একজনের অপরাধের শাস্তি পুরো পরিবারকে দেয়া যাবে না। এই অপমান ওই পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে। আর একজনের অপরাধের শাস্তি যদি পুরো পরিবার পায়, তাহলে সমাজ এবং রাষ্ট্রকে এর দায় নিতে হবে।’
তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘সীমান্তে চোরাকারবারি ঠেকাতে না পারার ব্যর্থতার দায় কী বিজিবির নেই?’
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন বলেন, ‘বিজিবি যেটা করছে সেটা একেবারেই ঠিক করেনি। একজনের জন্য পুরো পরিবারকে এভাবে চিহ্নিত করা যাবে না। এই পরিবারগুলোতে শিশুরা থাকতে পারে, বিবাহ উপযুক্ত তরুণ-তরুণী থাকতে পারে। তারা হয়তো মাদক ও চোরাকারবারির বিরোধিতা করছে। তাদের এখন ভালো জায়গায় বিয়ে হবে না। এমনকি মানুষ তাদের খারাপ চোখে দেখবে, এড়িয়ে চলবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে আইন আছে। প্রচলিত আইনে মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারিদের বিচার হবে। আমি মনে করি, এটা বিচারের আগে আরেকটি বিচার হয়ে গেল।’
সিলেটের মানবাধিকারকর্মী ও নর্থ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ডিন এমাদউল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আদালত থেকে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগে কাউকেই মাদক কারবারি বা চোরকারবারি বলা যাবে না। আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে নিবারণমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আইনে রয়েছে, থানায় যেমন অপরাধীদের ছবি টাঙানো থাকে। তবে কোনো অবস্থাতেই একজনের অপরাধের জন্য পুরো পরিবারকে হেনস্তা বা হেয় করা যাবে না। এমনটি করা হলে অপরাধীকে চিহ্নিত করার নামে আসলে আরেকটি অপরাধই করা হয়।’
সিলেটের নাগরিক সংগঠক আব্দুল করিম কিম বলেন, ‘এটা ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন। মাদক কারবারি হোক, চোরাকারবারি হোক আর ডাকাত হোক, কারও বাড়িকে এভাবে চিহ্নিত করে সমাজের কাছে আজীবনের জন্য দণ্ডিত করা কোনো বিচারেই ন্যায়সংগত নয়। এভাবে একজনের অপরাধের জন্য বাড়ির সবাইকে হেয় করাটাও অপরাধ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তারা যেমন অপরাধী, তেমনি তাদের বাড়ির সামনে এই ধরনের সাইনবোর্ড বসিয়ে বিজিবিও অপরাধ করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধীকে ধরবে এবং আইনের মধ্যে থেকে বিচারের মুখোমুখি করবে। কিন্তু এ কারণে অপরাধীর পরিবারের অন্য সদস্যকে হয়রানি বা এমন কোনো কাজ করা যাবে না, যার ফলে সমাজ তাদের অন্যভাবে দেখে।
তিনি আরও জানান, আদালতে প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত কেউ অপরাধী হয় না।
এ বিষয়ে বিজিবির অপারেশন শাখার পরিচালক লেফেটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় মাদক কারবারিদের চিহ্নিত করে তার বাসায় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়ার কার্যক্রম সামনেও চলবে। তবে কেউ যেন অন্যায়ভাবে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন না হয়, সেজন্য আমরা আরও একটু বেশি সতর্ক থাকছি। মাদকসেবী আর মাদককারবারি এক বিষয় নয়।
‘মাদক কারবারিদের চিহ্নিত করতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে সমন্বিতভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই কাজ করছে। অন্যসব বাহিনীর মতো আমরাও মাদক কারবারিদের নিয়ন্ত্রণ করতে এই কাজ করছি। এটি কোনো আইনের প্রয়োগ নয় বরং আমরা এই প্রক্রিয়ায় সমাজে মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি করতে চাচ্ছি।’
এই কার্যক্রমে পুরো পরিবার বা নিরীহ কেউ সমাজে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি মাদক কারবার করছে এবং তার পরিবার জানার পরও তাকে সেপথ থেকে ফিরিয়ে না এনে সায় দিয়ে যাচ্ছে সেই পরিবারও তো সমানভাবে অপরাধী। এমন হলে তার পরিবারকে দায় নিতে হবে। আমরা অনুসন্ধান করে যেসব মাদক কারবারিদের পেছনে পরিবারের মদদ আছে, সেসব বাড়িতে সাইনবোর্ড লাগাচ্ছি।
‘মানবাধিকারকর্মীরা বিষয়কে তাদের দৃষ্টিতে একভাবে দেখলেও অপরাধ দমনে আমাদের কিছু স্টেপতো নিতে হবেই, তারমানে এই না যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানবাধিকারের জায়গাটা রক্ষা করে না। এটা পুরোপুরি জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম। যেখানে শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নয় জনগণও অংশ নিচ্ছে।’
আরও পড়ুন:কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
মন্তব্য