পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে সাতক্ষীরা পৌরসভায় জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। পৌর শহরের প্রায় অর্ধেক এলাকায় ছয় মাস ধরে পানি জমে আছে।
ঘরের ভেতরও পানি থাকায় রান্নাসহ গৃহস্থালির কাজে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ। কোমর পর্যন্ত পানিতে নেমে যাতায়াত করতে হচ্ছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ অন্যদের।
দেখা গেছে, সাতক্ষীরা পৌরসভায় বসবাসরত তিন লক্ষাধিক বাসিন্দার মধ্যে এক তৃতীয়াংশেরই বসবাস জলাবদ্ধ এলাকায়। শহরের ইটাগাছা, কামালনগর, মধুমোল্লারডাঙ্গী, বকচরা, রইচপুর, বদ্দীপুর কলোনি ও বাকাল এলাকার অধিকাংশ স্থানেই আটকে আছে পানি।
কোনো কাজে বাড়ির বাইরে যেতে হলেও তাদের প্রায় কোমর সমান পানি পার হয়ে যেতে হচ্ছে। এক বাসা থেকে অন্য বাসায় যেতে অনেকে ব্যবহার করছেন ভেলা।
দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা চললেও জলাবদ্ধতা নিরসনে কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
বদ্দীপুর কলোনি এলাকার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের জীবন তো খুবই ভয়াবহ। পানি স্থায়ীভাবে দাঁড়িয়ে আছে। ঘের মালিকরা শক্তপাড় দিয়ে বসে আছে। পানি সরার লাইন নেই।
‘স্থানীয় সংসদ সদস্য কোনো ব্যবস্থা নেন না। মেয়রও কোনো ব্যবস্থা নেন না। রাস্তার পুরোটাই পানি। সেখানে কচুরিপনা জন্মেছে।’
একই এলাকার বাসিন্দা মাহফুজা খাতুন বলেন, ‘আমরা অনেক কষ্টে আছি। উঠানে পানি, রাস্তায় পানি, ঘরেও পানি। বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে খুবই কষ্টে আছি। পানি সরছে না শুধু ঘেরের কারণে।
‘ছোটবেলায় দেখেছি, ড্রেন দিয়ে পানি নদীতে পড়ত। এখন যাওয়ার রাস্তা নেই। যেখানকার পানি সেখানেই ঠাঁই দাঁড়িয়ে, বরং বাইরের পানি ভেতরে ঢুকছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পৌরসভার বাসিন্দা। শহরে বাস করার চেয়ে আমাদের তো ইউনিয়নে বাস করা ভালো ছিল।’
কলেজ রোড এলাকার আসমা খাতুন বলেন, ‘আমরা এই পৌরসভার মধ্যে খুব কষ্টে আছি। এখানে রান্নার সমস্যা, খাওয়ার সমস্যা, বাথরুমের সমস্যা, সবখানে সমস্যা। গ্যাসে একবার কোনো রকমে রান্না করছি। পানিতে ডুবে আছি। ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই আমাদের।’
সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী হাফসা খাতুন জানায়, সড়কগুলো পানিতে ডুবে থাকে। হাঁটতে গেলে কাপড় ভিজে যায়। খুব কষ্ট করে তাদের স্কুলে যাওয়া-আসা করতে হয়।
কাটিয়া মাঠপাড়া এলাকার লতিফুর রহমান বলেন, ‘পানি বেতনা নদীতে যায় না। প্রতিবার বাঁধ বেঁধে পাম্প লাগিয়ে সেচ দেয়া হয়। এবার পানি বেশি। কারো কোনো অনুদান আমরা পাই না। অনেকেই ছবি তুলে নিয়ে যায়, কিন্তু কোনো কাজ হয় না। কাউন্সিলরদের বললে তারা বলে, দেখব, কিন্তু দ্যাখে না।’
জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আলী নুর খান বাবুল বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে ১৩ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছি। শহরে জলাবদ্ধতার দুটি কারণ। একটি হলো অপরিকল্পিত চিংড়ি ঘের, অপরটি নদী ভরাট।
‘এত দুর্ভোগ, কোনো জনপ্রতিনিধির মাথাব্যথা নেই। ভোট এলে প্রতিশ্রুতি। ভোট শেষে কারো মনে থাকে না। এই প্রতিশ্রুতির মধ্যে সাতক্ষীরাবাসী ৬ বছর ধরে আছে।’
সাতক্ষীরা শহরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত প্রাণসায়র খাল। এই খালকে বেতনা ও মরিচ্চাপ নদীর সঙ্গে সংযুক্ত করলে সমস্যার সমাধান হবে বলে জানান স্থানীয়রা।
জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বাবলা বলেন, ‘প্রাণসায়র খাল দক্ষিণে মরিচ্চাপে মিশিয়ে দিলে এবং পূর্বে ও উত্তরে বেতনার সঙ্গে মিশিয়ে দিলে জলাবদ্ধতার সমাধান হবে। এ ছাড়া ব্যক্তিকে সচেতন হতে হবে এবং ড্রেনেজ সিস্টেমে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।’
মাছের ঘেরের কারণে পানি নিষ্কাশন বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে জানালে তিনি বলেন, ‘পানি সরতে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে এটা ঠিক। আবার নিচু এলাকায় মাছ চাষে অনেকে উৎসাহিত হচ্ছে। তবে সবার উচিত পৌরবাসির স্বার্থে ঘের বেঁধে মাছ চাষ না করা।’
পৌরসভার মেয়র তাশকিন আহমেদ চিশতি জানান, জলাবদ্ধতা সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রধান সমস্যা। পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করছেন। শিগগিরই একটা ভালো ফল পাবেন বলে আশা করছেন।
সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ৪৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। এই টাকাটা কাজে লাগালে পৌরসভা বা শহরের নিম্নাঞ্চল জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পাবে। তবে খনন কাজটা হতে হবে যথাযথ।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, নদীভরাট শহরে জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ। বেতনা ও মরিচ্চাপ নদী খনন করা হলে জলাবদ্ধতা থাকবে না।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শহরের পানি সরবে কীভাবে? নিচু জমি উঁচু করে ঘর-বাড়ি করলে পানি সরার জায়গা থাকে না। শহরের পানি যায় বেতনা ও মরিচ্চাপ দিয়ে। আর উত্তর দিকের পানি সরত সোনাই নদী দিয়ে। সোনাই নদী ভরাট হয়ে গেছে। সেখানকার পানির লেভেল সাধারণ এলাকা থেকে উঁচুতে থাকে।
‘শহরের দিকের পানি সরে বেতনা-মরিচ্চাপে। সেটাও ভরাট হয়ে আছে। ফলে পানি না সরে বিভিন্ন দিকে প্লাবন ডেকে আনে। বেতনা-কপোতাক্ষ-মরিচ্চাপের সংযোগ খাল অধিকাংশ দখল হয়ে গেছে। উচ্ছেদ করতেও সময় লাগবে। সব মিলিয়ে সমম্বিত একটা উদ্যোগ দরকার। তবে বেতনা ও মরিচ্চাপ খনন করা গেলে জলাবদ্ধতা সমস্যার ৭০ শতাংশ সমাধান সম্ভব হবে বলে মনে করি।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে চারজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পতেঙ্গা থানাধীন ১৫ নম্বর ঘাটে নোঙর করা একটি ফিশিং বোটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন- ৫৫ বছর বয়সী জামাল উদ্দিন, ৪৫ বছর বয়সী মাহমুদুল করিম ও মফিজুর রহমান এবং ২৮ বছর বয়সী এমরান। এদের মধ্যে প্রথম তিনজনের শরীরের ৮০-৮৫ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে। অন্যজনের শরীর পুড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ।
চমেক হাসপাতালে বার্ন ও ক্যাজুয়ালটি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আহত চারজনের মধ্যে তিনজনের বড় ধরনের বার্ন হয়েছে। এই ধরনের রোগীদের অবস্থা ভালো থাকে না।’
চট্টগ্রাম সদরঘাট নৌ-থানার ওসি একরাম উল্লাহ বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারে ইঞ্জিন থেকে সৃষ্ট আগুনে ৪ জন দগ্ধ হয়েছে। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ প্রকাশ্যে দুর্নীতি করার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে লালপুর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যের এক পর্যায়ে দুর্নীতি করার ঘোষণা দেন এ সংসদ সদস্য।
তার বক্তব্যের অংশবিশেষের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
প্রকাশিত ওই ভিডিওতে আবুল কালাম আজাদকে বলতে শোনা যায়, ‘পাঁচটা বছর (২০১৪-২০১৮) বেতন ভাতার টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না; আগামীতেও থাকবে না। এবার (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা আমি তুলব। যেভাবেই হোক তুলবই। এতটুক অনিয়ম আমি করবই। এটুকু অন্যায় করব, আর করব না।’
প্রকাশ্যে সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আখতার। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। উনার বক্তব্য উনি বলেছেন, এখানে আমার কোনো কথা নেই।’
বক্তব্যর বিষয়ে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার বক্তব্যে এটা বোঝাতে চেয়েছি যে, অনেকেই এরকম করে। আমার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি জেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক। সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্যে তার সহকারী এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা দুর্নীতিতে উৎসাহিত হবেন। এটা একদিকে যেমন পরিষ্কারভাবে শপথের লংঘন, অন্যদিকে নির্বাচনি বিধিরও লংঘন।
‘নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী, নির্বাচনি প্রচারকাজে একজন সংসদ সদস্য ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন না।’
সংসদ সদস্যের কাছে গঠনমূলক বক্তব্যেরও প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশপথে যানজট নিরসনে ও পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক ও ফুটপাত থেকে শতাধিক হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।
প্যানেল মেয়র তসলিম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্থায়ী কিছু ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা করে আসছেন। এতে করে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পথচারীদের সুবিধার্থে যানজট দূর করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান।
উচ্ছেদ অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ মো. তসলিম মিয়া ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানাসহ থানা পুলিশ ও পৌরসভার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠির রাজাপুরে নদীর তীর থেকে এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো যুবকের মামুন হোসেন, যার বয়স ২৫ বছর। তিনি রাজাপুরের পশ্চিম সাতুরিয়া গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে।
ভ্যানচালক মামুন দুই দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন জানিয়ে রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে সাতুরিয়া গ্রামের ইদুরবাড়ি এলাকায় কচা নদীর তীর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। লাশের ময়নাতদন্তসহ পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে এটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেটি তদন্তে বের হবে।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পূর্ব পূয়ালী গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে রাব্বি হাওলাদার।
২৫ বছর বয়সী রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট। ডাক্তারের পরামর্শ তার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রাব্বির কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য এতো টাকা লাগবে শোনার পর থেকেই তার কৃষক বাবা সাহায্যের জন্য ছুটছেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বিত্তবানদের কাছে। কেন না তার সবকিছুই বিক্রি করে দিলেও এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি জোগাড় করার সামর্থ্য হচ্ছে না।
রাব্বি বর্তমানে ঢাকার মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন অবস্থায় কৃষক বাবা তার সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। দেশের বিত্তবানরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই হয়ত বেঁচে যাবে তার সন্তান।
রাব্বির পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাব্বি হাওলাদার কয়েক মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (সেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসক তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল রাব্বির, কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরই মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওপরে শুধু হাসপাতাল ও ওষুধের বিল দিতে হয়েছে। দরিদ্র এই পরিবারটি আত্মীয়স্বজনসহ সবার সহায়তায় ওই বিল দেয়া সম্ভব হয়।
রাব্বির মা রেভা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এভাবে আর কয়দিন চিকিৎসা করাতে পারব জানি না। কারণ আমাদের সামর্থ্য শেষ হয়ে এসেছে। শুধু টাকার অভাবে তাকে ভালো কোনো হাসপাতালেও নিতে পারছি না, কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপারেশনের ধকল সহ্য করার মতো সুস্থ অবস্থায় আনা খুব জরুরি।’
রাব্বির বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনাদের ভালোবাসা ও সাহায্য আমাদের খুব প্রয়োজন। কারণ শুধু টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার একমাত্র ছেলে অকালে ঝরে যাবে তা আমার জীবন থাকতে মানতে পারছি না।’
তাকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৯৭-২২৮৯৭৫ ও ০১৯৮৭-৩৬৬৫৬৮ (বিকাশ-পার্সোনাল) নাম্বারে পাঠাতে পারেন ও যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন:ফরিদপুর সদরে যৌনপল্লি থেকে দুই তরুণীকে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই পল্লির এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার রাতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত পারুল বেগম ওরফে পারু (৪৮) জেলার রথখোলা যৌনপল্লির বাসিন্দা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন আপন (৩০), জহির (৩০) ও ববি (৩৮)।
গ্রেপ্তার না হওয়া এ তিনজনের মধ্যে ববি যৌনপল্লির সর্দারনি হিসেবে পরিচিত। আপন ও জহিরের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানা এলাকা থেকে এক তরুণীকে গত ১০ মার্চ ঢাকায় নিয়ে আসেন আপন। দুই দিন সেখানে রেখে তাকে (তরুণী) তিন ব্যক্তির হাতে তুলে দেন তিনি। ওই তিন ব্যক্তি ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় তরুণীকে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। পরের দিন একটি সাদা কাগজে তরুণীর স্বাক্ষর নিয়ে জানানো হয়, এখন থেকে তিনি যৌনপল্লির লাইসেন্সধারী সদস্য।
এতে আরও বলা হয়, মেয়েটিকে পারুর বাসায় রেখে ববি ও অন্যদের মাধ্যমে জোর করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এর মাঝে মেয়েটি বাড়িতে যোগাযোগের জন্য একজন খদ্দেরকে তার ছোট বোনের মোবাইল নম্বর দেন। পরে ওই খদ্দেরের মোবাইল কলের মাধ্যমে মেয়েটির সন্ধান পায় তার পরিবার। এরপর তার মা ও ফুফা রথখোলায় এসে তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ যৌনপল্লিতে অভিযান চালানোর পর ফেনীর পূর্ব ছাগলনাইয়ার আরেক তরুণীও তাকে উদ্ধারে পুলিশের সাহায্য চান। ওই তরুণী জানান, তাকেও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ঢাকার মিরপুরের একটি বাসায় এক রাত রেখে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে বিক্রি করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান জানান, যৌনপল্লিতে তরুণীকে নেয়ার ঘটনায় তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে অভিযান চালিয়ে পারুল বেগম ওরফে পারুকে গ্রেপ্তার করে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
নোয়াখালীর কবিরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে সহোদর দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বপুর গ্রামের ছর আলী মাঝি বাড়ির পুকুরে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুই শিশু হলো সাত বছর বয়সী বিবি ফাতেমা বেগম ও তার চার বছরের ভাই আবিদ হোসেন। শিশুদ্বয় ছর আলী মাঝি বাড়ির আবদুল হাইয়ের সন্তান।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হুমায়ন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুই ভাই-বোন সকালে ঘরের পাশে পুকুরে দাঁত ব্রাশ করতে যায়। এ সময় হাত-মুখ ধোয়ার সময় একজন পুকুরে পড়ে গেলে আরেকজন উদ্ধার করতে পানিতে নামে।
‘পরে দুজনই পানিতে ডুবে যায়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য