ভোটের পরেও সহিংসতা থামছে না শরীয়তপুর সদর উপজেলায়। ভোট বৃহস্পতিবার শেষ হলেও এর জেরে রোববার পর্যন্ত দুই ইউনিয়নে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে আতঙ্কিত গ্রামবাসী, অনেকে গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছেন।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৫টি ইউপির সঙ্গে তুলাসা ও ডোমসারে ভোট হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। এর মধ্যে তুলাসায় চেয়ারম্যান হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জামাল হোসাইন। মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনে স্বতন্ত্র হয়ে লড়েছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বর্তমান চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম।
স্থানীয় সুত্র জানিয়েছেন, নির্বাচনে জামালকে সমর্থন দিয়েছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব মোর্শেদ টিপু। তিনিও জানিয়েছেন, তার কর্মী-সমর্থকরা জামালের পক্ষে কাজ করেছেন।
জামাল বিজয়ী হওয়ার পর তুলাসায় জাহিদুলের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, তাদের ওপর হামলাও হয়েছে কয়েক দফায়। জাহিদুলের অভিযোগ, জয়ের পর জামালের অনুসারীরাই এই হামলা চালিয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় সবশেষ হামলার ঘটনাটি ঘটে। ইউনিয়নের লতাবাগ ও উপরগাঁও গ্রামে ১১টি বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। জাহিদুল জানান, সেই বাড়িগুলো তার সমর্থকদের।
এর আগে ভোটের দিন ও পরদিন গুড়িপাড়া, বাইশরশি ও দক্ষিণ গোয়ালদি গ্রামে হামলা চালানো হয় অন্তত ৫০টি বাড়িঘরে। এসব ঘরের লোকজন বলছেন, জাহিদুলকে সমর্থন দেয়ায় এই হামলা হয়েছে।
এসব গ্রামের লোকজন আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে যাচ্ছেন।
লতাবাগ গ্রামের অঞ্জনা বেগম বলেন, ‘টিপু মাদবর লোকজন সব পাঠাইছে। আমরা আনারস করছি (জাহিদুলের নির্বাচনি প্রতীক)। এইডা আমাকে দোষ। আমরা কেন্দ্রেও যাইতে পারি নাই। হুমকির ভয়। হেয়ার পরেও আমাগো নির্যাতন করতাছে, অত্যাচার করতাছে। ঘর বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট করতাছে। সোনা-গয়না যা ছিল সব লইয়া গেছে। ইজ্জতের ভয়ে আমরা পলাইয়া আছিলাম।’
একই গ্রামের তাসলিমা বেগম বলেন, ‘৫০-৬০ জন আইছিল। সবার হাতেই ডাল, সরকি ও স্যান ছিল। ভয়ে মাইয়া লইয়া বাইরে পলাইছি। ইচ্ছামত ঘর কোপাইয়া গেছে। কইছে অর বাহেরে পাইলে মাইরা হালাইবো। অহন আমরা ভয়ে আছি। পুলিশ তো কিছু করতাছে না।’
পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদুল বলেন, ‘প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছিল। নির্বাচনের দিন থেকে এর পরেও বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি মিলে হামলা করে এখন আমার সমর্থকদের গ্রামছাড়া করা হচ্ছে। কেউ মামলা করারও সাহস পাচ্ছে না।’
জেলা বিএনপি নেতা মাহাবুব মোর্শেদ টিপু তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ‘এসব হামলা-ভাঙচুর পূর্ববর্তী হামলা-ভাঙচুরের ধারাবাহিকতা মাত্র। আমি আমার সমর্থকদের শান্ত থাকার অনুরোধ করেছি। এই মুহূর্তে আমার কর্মী-সমর্থকরা কোনো ধরনের হামলা-ভাঙচুরে যাচ্ছে না। আমি যেহেতু নির্বাচন করিনি, আমার সর্মথকরা আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছে। এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।’
তুলাসা ইউপির বিজয়ী চেয়ারম্যান জামাল বলেন, ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমার জয়কে অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। এজন্যই এ ধরনের কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। তবে আমার কর্মী, সমর্থক ও আমি এ ধরনের ঘটনায় জড়িত নই।’
নির্বাচনের জেরেই এসব সহিংসতা জানিয়ে শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিনই পুলিশ টহলে আছে। বিজয়ী এবং পরাজিত উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। যাদের যাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে, তারা অভিযোগ করলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে, রোববার দুপুরে সংহিসতার ঘটনা ঘটেছে ডোমসার ইউনিয়নে। সেখানে নির্বাচনে বিজয়ী ও পরাজিত সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন।
ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তেঁতুলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ওসি আক্তার হোসেন।
তিনি জানান, বিজয়ী ও পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকরা জড়ো হয়েছে জেনে পুলিশ দুই পক্ষকে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তারপরও তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ককটেল বিস্ফোরণ ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার আজগর আলী খান বলেন, ‘নির্বাচন চলাকালে তারা (পরাজিত সদস্য প্রার্থী মতিউর রহমান ছৈয়ালের সমর্থকরা) আমার সমর্থকদের মারধর করেছেন। নির্বাচনের পর তারা আমাদের এলাকায় যেতে দিচ্ছিলেন না। প্রতিবাদে জনসাধারণ ক্ষুব্ধ হয়ে জড়ো হয়েছিল। তখন তারা অতর্কিত হামলা করেছেন।’
জবাবে মতিউর রহমান ছৈয়াল বলেন, ‘আজগর খান বিজয়ী হয়েই আমার সমর্থকদের ওপর হামলা করেছেন।’
এসব ঘটনা অপ্রত্যাশিত জানিয়ে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘কোনো সংঘাতই সুখকর নয়। কোনো সংঘর্ষ-হামলা আওয়ামী লীগ সমর্থন করে না।
‘গত কয়েক দিনের তুলাসারে সব ঘটনা দল পর্যবেক্ষণ করেছে। একই সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এ সব ঘটনা থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হয়েছে। ওই এলাকার আওয়ামী লীগের নেতারা এ সব ঘটনা বন্ধে অনুরোধ জানিয়েছেন। পাশাপাশি হামলা সংঘর্ষ ভাঙচুর বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আর যাতে কোনো ধরনের সংঘর্ষ-সংঘাত না ঘটে সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সজাগ রয়েছে।’
তৃণমূলে দ্বিতীয় ধাপের এই নির্বাচনে প্রচারকালেই বিভিন্ন জেলায় সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ভোটের দিন বৃহস্পতিবারও ঝড়েছে ছয় প্রাণ। আহত হয়েছে শতাধিক। বিভিন্ন জেলায় নির্বাচনকেন্দ্রীক সহিংসতা চলে শুক্র ও শনিবারও।
আরও পড়ুন:তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। চুয়াডাঙ্গায় টানা চার দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অসনীয় গরমে অতিষ্ঠ পাবনার জনজীবনও। শনিবার জেলার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা পাবনা জেলায় চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ।
হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদায় গ্রামে মাঠে কাজ করার সময় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার ঠাকুরপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে।
এছাড়া পাবনা শহরে হিটস্ট্রোক করে একজন মারা গেছেন। শনিবার দুপুরে পাবনা শহরের রূপকথা রোডে চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় হিটস্ট্রোক করেন তিনি। তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃত সুকুমার দাস পাবনার শহরের শালগাড়িয়া জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।
শনিবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলেও দাবি করছে দপ্তরটি।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমানবলেন, ‘কয়েকদিন থেকে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। এদিন এখানে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অঞ্চলে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।’
দিন ও রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় অতিষ্ঠ এই অঞ্চলের জনজীবন। দিনের বেলায় একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। শহর-গ্রামের রাস্তাঘাট ফাঁকা।
শ্রমজীবী মানুষগুলো বেশি বিপাকে পড়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে তারা কাজে বেরুতে পারছে না। ধান কাটার মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু সূর্যের প্রখর তাপের কারণে শ্রমিকরা মাঠে যেতে সাহস পাচ্ছে না।
দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডে ভ্যানচালক করিম আলী বলেন, ‘জীবনে আমি এত তাপ দেখিনি। ছেমায় গিয়িও শান্তি নেই। যে তাপ পড়চি তাতে মানুষ রাস্তায় বের হচ্চি না। আমাদের ভাড়াও কমি গিচে।’
এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে বলায় জনসাধারণকে সচেতন করতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে পথচারী ও এলাকাবাসীকে সতর্ক করছে জেলা প্রশাসন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, কয়েকদিন ধরেই পাবনায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস । এর আগে চলতি বছরে জেলায় এতোটা বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়নি। ঈশ্বরদীসহ আশপাশের এলাকাজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে তীব্র গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। তীব্র এই তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন শ্রমজীবী মানুষ। জীবন-জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদে কাজ করতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের। বাইরে বের হওয়ার সময় অনেকেই ছাতা নিয়ে বের হচ্ছেন।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের বালুচরে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে প্রবাসীকে হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি করেছেন স্বজন ও স্থানীয়রা।
উপজেলার চরপানিয়া এলাকায় শনিবার বেলা ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে অংশ নেন নিহতের স্ত্রী-সন্তানসহ শতাধিক মানুষ।
পরিবারের এক সদস্যের ভাষ্য, পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় সৌদি আরব প্রবাসী মুজিবুরকে (৪৫)। এ ঘটনায় মামলা করা হলেও ঘটনায় জড়িত খাসকান্দি এলাকার জহির হোসেনকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। জহির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ফাঁসি দিতে হবে।
চরপানিয়া এলাকার একটি ক্ষেত থেকে গত ১০ মার্চ প্রবাসী মুজিবুরের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যায় অভিযুক্ত জহির হোসেন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গাড়ির চাপায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন একজন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কেওডালা এলাকায় শনিবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন ঝালকাঠি সদর উপজেলার খেজুরা এলাকার সুরেশ ডাকুয়া (৩৫) ও তার ছেলে লোকেশ ডাকুয়া (৯)। এ ঘটনায় আহত লোকেশ ডাকুয়ার মা নিপু রায় (৩০) বলে জানিয়েছেন কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক রেজাউল হক।
তিনি জানান, শুক্রবার রাতে স্বামী-সন্তানসহ নারায়ণগঞ্জে ‘বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী’ মন্দিরে পূজা করতে যান তারা। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্বামী স্ত্রী ও সন্তান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কেওঢালা এলাকা পার হচ্ছিলেন। এ সময় একটি গাড়ি তাদের চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, আহত অবস্থায় তিনজনকে স্থানীয়রা একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে লোকেশকে চিকিৎসক মৃত বলে জানান। সুরেশ ও নিপু রায়কে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে সুরেশ ডাকুয়ার মৃত্যু হয়।
কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক রেজাউল হক বলেন, ‘নিপু রায় ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি শঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে। নিহত দুইজনের মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
এ ঘটনায় মামলাসহ গাড়ি ও চালককে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:নওগাঁয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁর উদ্যোগে ১৯৭১ সালের অসহায় শরণার্থীদের দুর্ভোগ স্মরণে ‘রোড টু বালুরঘাট’ প্রতীকী পদযাত্রায় ফুটে উঠেছে নওগাঁয় রোড ধরে ভারতে পাড়ি দেয়া শরণার্থীদের দুর্দশার চিত্র।
ঐতিহাসিক ২০ এপ্রিলের এ দিনে ‘রোড টু বালুরঘাট’ স্মরণ করল নওগাঁবাসী। প্রায় ৬০ মিনিটে ৩ কিলোমিটার পদযাত্রায় যুদ্ধকালীন নওগাঁ রোডের শরণার্থীদের যুদ্ধ বিভীষিকা ও অবর্ণনীয় দুর্দশা তুলে ধরা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পর শনিবার বেলা ১১টার দিকে পাঁচ শতাধিক মানুষ নওগাঁ রোডে এ প্রতীকী পদযাত্রায় অংশ নেন। শহরের তাজের মোড় শহিদ মিনার পাদদেশ থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল মুক্ত মঞ্চ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
একুশে পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি এম আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে শরণার্থীদের প্রতীকী পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন উপদেষ্টা মইনুল হক দুলদুল, সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যক্ষ বিন আলী পিন্টু, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, সাইমা ফেরদৌসী, নাইস পারভীন, বিষ্ণু কুমার দেবনাথ, গুলশানারাসহ অনেকে।
এ সময় বক্তারা জানান, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের বর্বরোচিত অত্যাচার-নিপীড়ন ও গণহত্যা থেকে বাঁচতে যুদ্ধের শুরু থেকে বিশেষ করে ২০ এপ্রিল এই দিনে পায়ে হেঁটে নওগাঁর সড়ক পথে হাজার হাজার মানুষ শরণার্থী হিসেবে ভারতের বালুরঘাটে আশ্রয় নেন। চলার পথে সেই সময় পাকহানাদার ও দোসরদের আক্রমণে অনেকের মৃত্যু হয়। সে সব শরণার্থীদের ক্লান্তি ও দুর্ভোগ স্মরণে একুশে পরিষদ নওগাঁ ‘রোড টু বালুরঘাট’ প্রতীকী পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি এম আব্দুল বারী বলেন, ‘আমরা অনেকেই একাত্তরের ইতিহাস ভুলে গেছি। ৫৩ বছরের আগে কী ঘটেছিল। লাখ লাখ মানুষ নওগাঁ শহরের ওপর দিয়ে দেশ ছেড়েছিল দেশকে মুক্ত করার জন্য। চলার পথে সে সময় পাকহানাদার ও দোসরদের আক্রমণে অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। নওগাঁর মূল ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী এ জেলার সব তরুণ প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদের জানানোর লক্ষ্যেই আয়োজনটি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে জোর করে ধান কাটা বন্ধে উদ্যোগ নেয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলায় পুলিশের এক উপপরিদর্শক তথা এসআইসহ চারজন আহত হয়েছেন।
উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের পলশিয়া গ্রামে শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে শনিবার আদালতে পাঠায় পুলিশ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘পলশিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের কাজিম মন্ডল একদল সন্ত্রাসী নিয়ে একই গ্রামের সানু মিয়ার ডুব বিলের দুই বিঘা পাকা বোরো ধান কাটা শুরু করেন। সানু মিয়া ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে গোপালপুর থানার এসআই সাইফুল ইসলাম একজন কনস্টেবল নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। পুলিশ দেখে সস্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়।
‘তারা রামদা, লাঠি ও লোহার রড নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে সাব-ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলামের মাথা ফেটে যায়। কনস্টেবল শফিকুল ইসলামসহ সানু মিয়ার দুই আত্মীয় আহত হয়। আহতরা সবাই গোপালপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
গোপালপুর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘সাব-ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলামের মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই দেয়া হয়েছে।’
গোপালপুর থানার ওসি ইমদাদুল হক তৈয়ব বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। হামলার অভিযোগে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের পটিয়ার সড়কে শুক্রবার বিকেল ও রাতে দুটি দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।
বাস উল্টে হেলপার নিহত
পটিয়ার মনসা বাদামতলা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামমুখী একটি মিনিবাস বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে শুক্রবার বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে মহাসড়কের পাশে উল্টে যায়। ওই সময় বাসটির হেলপার রফিক (২৩) লাফ দিলে বাসের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারান তিনি।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার ওসি তৌফিকুল ইসলাম দুর্ঘটনার বিষয়টি জানিয়েছেন।
অটোরিকশায় বাসের ধাক্কায় দুজন নিহত
উপজেলার খরনা চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাসের ধাক্কায় দুজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।
নিহত দুজন হলেন চন্দনাইশ উপজেলার বৈলতলী এলাকার আবু বক্কর তাসিফ (১৮) ও কক্সবাজারের ঈদগাহ মধ্যম মাইজপাড়া এলাকার নুরুল আমিন (২৭)।
আহত চারজন হলেন বৈলতলীর রাকিব হোসেন (২০), মোহাম্মদ জাবেদ (১৯), মোহাম্মদ সিহাব (২২) ও চকরিয়ার অটোরিকশার চালক লিটন (৩৫)।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার ওসি তৌফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম অভিমুখী দ্রুতগামী মারসা পরিবহনের একটি বাস নম্বরবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়।
তিনি আরও জানান, স্থানীয়রা অটোরিকশার যাত্রীদের উদ্ধার করে চন্দনাইশের বিজিসি ট্রাস্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত চারজনকে হাসপাতালেই চিকিৎসা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:সুনামগঞ্জের ছাতকের ঐতিহ্যবাহী জাউয়া বাজার ইজারাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষের আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি ধারা জারি করা হয়েছে।
সংঘর্ষ এড়াতে শনিবার ভোর ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যধারার এক আদেশে ১৪৪ ধারা জারি করেন ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম মুস্তাফা মুন্না।
আদেশে বলা হয়েছে, “যেহেতু ছাতক উপজেলাধীন ‘জাউয়া বাজার’ ইজারাকে কেন্দ্র করে বিবাদমান পক্ষসমূহের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং এর ফলে আইন শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতিসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা বিদ্যমান রয়েছে মর্মে অফিসার ইন- চার্জ, ছাতক থানা, সুনামগঞ্জ থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গিয়েছে।
“সেহেতু সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে আমি গোলাম মুস্তাফা মুন্না, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ছাতক, সুনামগঞ্জ আমার উপর অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামী ২০ এপ্রিল সকাল ৬ ঘটিকা হতে রাত ১২ ঘটিকা পর্যন্ত জাউয়া বাজার এলাকা এবং তার আশেপাশের এলাকায় ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারা জারি করলাম।”
আদেশ অনুযায়ী, এ সময় উক্ত এলাকায় সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন, লাঠি বা দেশীয় কোনো অস্ত্র বহন বা প্রদর্শন, যে কোনো ধরনের মাইকিং বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার, পাঁচ বা তার অধিক সংখ্যক ব্যক্তির একসঙ্গে চলাফেরা, সভা সমাবেশ, মিছিল ইত্যাদি নিষিদ্ধ থাকবে।
মন্তব্য