ভোটের পরেও সহিংসতা থামছে না শরীয়তপুর সদর উপজেলায়। ভোট বৃহস্পতিবার শেষ হলেও এর জেরে রোববার পর্যন্ত দুই ইউনিয়নে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে আতঙ্কিত গ্রামবাসী, অনেকে গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছেন।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৫টি ইউপির সঙ্গে তুলাসা ও ডোমসারে ভোট হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। এর মধ্যে তুলাসায় চেয়ারম্যান হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জামাল হোসাইন। মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনে স্বতন্ত্র হয়ে লড়েছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বর্তমান চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম।
স্থানীয় সুত্র জানিয়েছেন, নির্বাচনে জামালকে সমর্থন দিয়েছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব মোর্শেদ টিপু। তিনিও জানিয়েছেন, তার কর্মী-সমর্থকরা জামালের পক্ষে কাজ করেছেন।
জামাল বিজয়ী হওয়ার পর তুলাসায় জাহিদুলের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, তাদের ওপর হামলাও হয়েছে কয়েক দফায়। জাহিদুলের অভিযোগ, জয়ের পর জামালের অনুসারীরাই এই হামলা চালিয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় সবশেষ হামলার ঘটনাটি ঘটে। ইউনিয়নের লতাবাগ ও উপরগাঁও গ্রামে ১১টি বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। জাহিদুল জানান, সেই বাড়িগুলো তার সমর্থকদের।
এর আগে ভোটের দিন ও পরদিন গুড়িপাড়া, বাইশরশি ও দক্ষিণ গোয়ালদি গ্রামে হামলা চালানো হয় অন্তত ৫০টি বাড়িঘরে। এসব ঘরের লোকজন বলছেন, জাহিদুলকে সমর্থন দেয়ায় এই হামলা হয়েছে।
এসব গ্রামের লোকজন আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে যাচ্ছেন।
লতাবাগ গ্রামের অঞ্জনা বেগম বলেন, ‘টিপু মাদবর লোকজন সব পাঠাইছে। আমরা আনারস করছি (জাহিদুলের নির্বাচনি প্রতীক)। এইডা আমাকে দোষ। আমরা কেন্দ্রেও যাইতে পারি নাই। হুমকির ভয়। হেয়ার পরেও আমাগো নির্যাতন করতাছে, অত্যাচার করতাছে। ঘর বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট করতাছে। সোনা-গয়না যা ছিল সব লইয়া গেছে। ইজ্জতের ভয়ে আমরা পলাইয়া আছিলাম।’
একই গ্রামের তাসলিমা বেগম বলেন, ‘৫০-৬০ জন আইছিল। সবার হাতেই ডাল, সরকি ও স্যান ছিল। ভয়ে মাইয়া লইয়া বাইরে পলাইছি। ইচ্ছামত ঘর কোপাইয়া গেছে। কইছে অর বাহেরে পাইলে মাইরা হালাইবো। অহন আমরা ভয়ে আছি। পুলিশ তো কিছু করতাছে না।’
পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদুল বলেন, ‘প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছিল। নির্বাচনের দিন থেকে এর পরেও বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি মিলে হামলা করে এখন আমার সমর্থকদের গ্রামছাড়া করা হচ্ছে। কেউ মামলা করারও সাহস পাচ্ছে না।’
জেলা বিএনপি নেতা মাহাবুব মোর্শেদ টিপু তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ‘এসব হামলা-ভাঙচুর পূর্ববর্তী হামলা-ভাঙচুরের ধারাবাহিকতা মাত্র। আমি আমার সমর্থকদের শান্ত থাকার অনুরোধ করেছি। এই মুহূর্তে আমার কর্মী-সমর্থকরা কোনো ধরনের হামলা-ভাঙচুরে যাচ্ছে না। আমি যেহেতু নির্বাচন করিনি, আমার সর্মথকরা আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছে। এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।’
তুলাসা ইউপির বিজয়ী চেয়ারম্যান জামাল বলেন, ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমার জয়কে অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। এজন্যই এ ধরনের কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। তবে আমার কর্মী, সমর্থক ও আমি এ ধরনের ঘটনায় জড়িত নই।’
নির্বাচনের জেরেই এসব সহিংসতা জানিয়ে শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিনই পুলিশ টহলে আছে। বিজয়ী এবং পরাজিত উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। যাদের যাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে, তারা অভিযোগ করলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে, রোববার দুপুরে সংহিসতার ঘটনা ঘটেছে ডোমসার ইউনিয়নে। সেখানে নির্বাচনে বিজয়ী ও পরাজিত সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন।
ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তেঁতুলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ওসি আক্তার হোসেন।
তিনি জানান, বিজয়ী ও পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকরা জড়ো হয়েছে জেনে পুলিশ দুই পক্ষকে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তারপরও তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ককটেল বিস্ফোরণ ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার আজগর আলী খান বলেন, ‘নির্বাচন চলাকালে তারা (পরাজিত সদস্য প্রার্থী মতিউর রহমান ছৈয়ালের সমর্থকরা) আমার সমর্থকদের মারধর করেছেন। নির্বাচনের পর তারা আমাদের এলাকায় যেতে দিচ্ছিলেন না। প্রতিবাদে জনসাধারণ ক্ষুব্ধ হয়ে জড়ো হয়েছিল। তখন তারা অতর্কিত হামলা করেছেন।’
জবাবে মতিউর রহমান ছৈয়াল বলেন, ‘আজগর খান বিজয়ী হয়েই আমার সমর্থকদের ওপর হামলা করেছেন।’
এসব ঘটনা অপ্রত্যাশিত জানিয়ে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘কোনো সংঘাতই সুখকর নয়। কোনো সংঘর্ষ-হামলা আওয়ামী লীগ সমর্থন করে না।
‘গত কয়েক দিনের তুলাসারে সব ঘটনা দল পর্যবেক্ষণ করেছে। একই সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এ সব ঘটনা থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হয়েছে। ওই এলাকার আওয়ামী লীগের নেতারা এ সব ঘটনা বন্ধে অনুরোধ জানিয়েছেন। পাশাপাশি হামলা সংঘর্ষ ভাঙচুর বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আর যাতে কোনো ধরনের সংঘর্ষ-সংঘাত না ঘটে সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সজাগ রয়েছে।’
তৃণমূলে দ্বিতীয় ধাপের এই নির্বাচনে প্রচারকালেই বিভিন্ন জেলায় সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ভোটের দিন বৃহস্পতিবারও ঝড়েছে ছয় প্রাণ। আহত হয়েছে শতাধিক। বিভিন্ন জেলায় নির্বাচনকেন্দ্রীক সহিংসতা চলে শুক্র ও শনিবারও।
আরও পড়ুন:কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
মন্তব্য