বাংলাদেশে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। একই সঙ্গে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডায়াবেটিস আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যাও। দেশে ১ কোটির বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এর মধ্যে ৫ শতাংশই শিশু। এই হার প্রতিনিয়ত আরও বাড়ছে বলে দাবি করেছেন ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় নিয়োজিত একাধিক বিশেষজ্ঞ।
তাদের মতে, অতিরিক্ত নগরায়ন, জীবনযাপন ও খাদ্যাভাসে পরিবর্তন, কায়িক পরিশ্রমের অভাব এবং অতিমাত্রায় মোবাইলে আসক্তির কারণে শিশুদের মধ্যে ডায়াবেটিসের হার উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এটি কমাতে বাচ্চাদের খেলাধুলা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, দৌড়ঝাঁপ ছাড়াও দাঁত ও মুখের যত্ন নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। এমনকি রোগটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সময়মতো চিকিৎসা নিতেও বলছেন চিকিৎসকরা।
ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগের অধ্যাপক ফারুক পাঠান বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে শিশুদের ডায়াবেটিস বেশি দেখা যাচ্ছে। করোনার মধ্যে এই হার আরও বেড়েছে। আমাদের পর্যবেক্ষণ বলছে, আগের চেয়ে শিশুদের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের হার কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।’
শিশুদের ডায়াবেটিসের সঠিক পরিসংখ্যান জানতে অনলাইন নিবন্ধনের মতো একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
তিনি বলেন, ‘টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশের কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। তারা ডাক্তারের কাছে আসেন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার পাঁচ-ছয় বছর পর। এ দেশের মানুষের আয়ুষ্কাল ৭৩ বছর হলেও ডায়াবেটিস রোগীর আয়ুষ্কাল ৬৩ বছর। শুধু ডায়াবেটিস থাকার কারণেই জীবন থেকে তাদের ১০ বছর ‘নেই’ হয়ে যায়। এই ১০ বছর তারা পরিবার, সমাজ ও দেশকে দিতে পারতেন।’
ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, ‘দেশে ১ কোটি ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগী। এর মধ্যে ৫ শতাংশ শিশু জুভেনাইল বা টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। শিশুদের শরীরে ইনসুলিনের অভাবে এই রোগ দেখা দেয়। ইনসুলিন ছাড়া এসব শিশু বাঁচে না। তবে আক্রান্ত এসব শিশুর বেশির ভাগই সচেতনতার অভাবে ইনসুলিন পাচ্ছে না। আর্থিক সামর্থ্য না থাকার কারণেও অনেক মা-বাবা তাদের সন্তানদের ইনসুলিন দিতে পারছেন না। তবে তাদের জন্য বিনা মূল্যে ইনসুলিন দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।’
অপ্রতুল চিকিৎসক, ব্যাহত স্বাস্থ্যসেবা
দেশে ১ কোটির বেশি ডায়াবেটিস রোগী থাকলেও তাদের চিকিৎসায় মাত্র ১৫০ জন এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট (ডায়াবেটিস ও হরমোন বিশেষজ্ঞ) রয়েছেন। এ হিসাবে প্রতি ৬৬ হাজার রোগীর সেবায় চিকিৎসক মাত্র একজন। আর মোট জনসংখ্যার হিসাবে প্রতি ১২ লাখ মানুষের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ রয়েছেন।
গ্রামেও ডায়াবেটিসের উদ্বেগ
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগের প্রধান ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ বলেন, ‘গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা পরিবর্তন হয়েছে। শহরের মানুষের সঙ্গে তাদের মাঝেও কায়িক পরিশ্রমের হার প্রতিনিয়ত কমছে। আগে প্যাডেলের মাধ্যমে রিকশা-ভ্যান চললেও সেগুলোও এখন অটো হয়েছে। এতে উদ্বেগজনক হারে গ্রামেও সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে ডায়াবেটিসের প্রকোপ বাড়ছে।’
২০১৮ সালে দেশের সব উপজেলায় ডায়াবেটিস নিয়ে জরিপ চালিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেখানে দেখা যায়, শহর ও গ্রামের মানুষের মাঝে আক্রান্তের পার্থক্য খুব বেশি নয়। শিক্ষিত কিংবা অল্প শিক্ষিত মানুষের মধ্যেও বড় পার্থক্য দেখা যায়নি। যাদের মধ্যে ধূমপান ও অস্বাভাবিক জীবনযাপন ও শারীরিক পরিশ্রমের হার কম তাদের মাঝে ডায়াবেটিসে ভোগার হার অন্যদের থেকে কিছুটা বেশি।
সরকারের প্রস্তুতি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা (এনসিডিসি) জানিয়েছে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৫০ ভাগেরই কোনো লক্ষণ থাকে না। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে চল্লিশোর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর ডায়াবেটিস পরীক্ষার জন্য দেশের সব সরকারি হাসপাতালে ব্যবস্থা রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বর্তমানে ১৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র আছে।
ডায়াবেটিসসহ সব অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনসিডিসি কর্নার স্থাপনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ১০০টি হাসপাতালে চালু হয়েছে। এ ছাড়া ৮টি মেডিক্যাল কলেজে এন্ডোক্রানোলজি বিভাগ তৈরি হয়েছে।
তবে নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনের পাশাপাশি সবার জন্য সেবা নিশ্চিত করতে পারলে এটি অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ জন্য দেশের তৃণমূল পর্যায়ে সেবা পৌঁছানোর কথা বলছেন তারা। একই সঙ্গে প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে ডিজিটাল ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিভাগকে আরও শক্তিশালী করার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১১ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব মৃত্যু হয়। আর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫৯ জন।
আজ শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মশাবাহিত রোগটিতে বরিশাল বিভাগে মারা গেছেন চারজন। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মারা গেছেন একজন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ১৫৯ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৫ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৪৪ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫ হাজার ৫৭০ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৫ শতাংশ নারী। আর মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ ও ৪৬ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮৮ জন।
বুধবার (১১ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ২৮৮ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৫ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৭৩ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫ হাজার ৩০৩ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ধানক্ষেতে কাজ করার সময় সাপের দংশনে আহত হয়েছেন মিলন আলী নামে এক কৃষক। পরে অন্য কৃষকরা তাকে উদ্ধার করে শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এ সময় মিলন আলী সাপটিও হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সোমবার দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের বোগলাউড়ি এলাকার একটি ধানক্ষেতে এ ঘটনা ঘটে। আহত মিলন আলী ওই এলাকার তোবজুল হকের ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিলন আলী বলেন, ‘সাপের ধরন চিহ্নিত করতে ও সঠিক চিকিৎসার জন্য সাপটি ধরে আমার ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে আসতে বলেছিলাম। তাই সে সাপটি ব্যাগে করে নিয়ে আসে। চিকিৎসকরা সাপটি দেখে রাসেল ভাইপার বলে নিশ্চিত করেছেন।’
শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মামুন কবির জানান, আক্রান্ত ব্যক্তি একটি সাপের বাচ্চাসহ হাসপাতালে আসেন। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তিনিশঙ্কামুক্ত। তারপরও আমরা ২৪ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’
মাদারীপুরের শিবচরে একই দিনে তিনজনকে সাপে দংশন করেছে। তাদের মধ্যে দুজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। অপরজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে শিবচর উপজেলার চর বাচামারা গ্রামের লোকমান খান বাড়ির পাশে বাদাম ক্ষেতে রাখা ঝাকার নিচ থেকে হাতে কাঁচি তুলছিলেন। এ সময় একটি সাপ তার হাতে দংশন করে। পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন যে তাকে বিষধর সাপে দংশন করেছে। চিকিৎসকরা তাকে এন্টিভেনম দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বজনদের অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর করতে বললে তারা অস্বীকার করেন। এজন্য স্বজনদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোগীকে ঢাকায় রেফার করা হয়।
অপরদিকে একই দিন দুপুরে উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের আলেপখাঁর খাঁড়াকান্দি গ্রামের শাহাবুদ্দিন হাওলাদার বাড়িতে পালা থেকে গরুর জন্য খড় বের করার সময় একটি সাপ তাকে দংশন করে। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
একই দিন সকালে উপজেলার সন্নাসীরচর ইউনিয়নের খাসচর বাচামারা গ্রামের মোসলেম কাজী বাড়ি সংলগ্ন খালের পানিতে পাট জাগ দিচ্ছিলেন। এসময় তাকে একটি সাপে দংশন করে। তার চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারজানা সুলতানা বলেন, সাপের দংশনে আহত তিনজন রোগী হাসপাতালে এসেছেন। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি দুজনকে বিষধর সাপে কাটেনি। তাই তাদেরকে এন্টিভেনম দেয়ার প্রয়োজন হয়নি। তবে তাদেরকে আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। অপরজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ওষুধপত্র, স্যালাইনসহ হাসপাতালে সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হলে এ বিষয়ে আরও উদ্যোগ নেয়া হবে।
রোববার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। খবর বাসসের
সামন্ত লাল সেন বলেন, সম্মিলিতভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি যথেষ্ট। ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দপ্তর এবং সিটি কর্পোরেশনের সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করা উচিত। শিগগিরই এ বিষয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করা হবে।
যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বন্ধে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা জোরদার করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করা উচিত।
জেনেভা সফর নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে ফাইলেরিয়া নির্মূল এবং বিশ্বে প্রথম কালাজ্বর নির্মূল করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ৭৭তম সাধারণ সভায় তার বক্তব্যে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। মহাপরিচালক বলেছেন, অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বাংলাদেশ হতে পারে একটি যথাযথ রোল মডেল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আর্থিক ব্যাবস্থাপনা ও অডিট অনুবিভাগ) মো. আব্দুস সামাদ প্রমুখ।
২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত হিসাবে এই তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এই সময়ের মধ্যে ৪৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি। এ পর্যন্ত ২৯ হাজার ৪৯৫ জন করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৭ হাজার ৮৮০ জন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, চিকিৎসকের ওপর কোনো আক্রমণ যেমন আমি সহ্য করব না, তেমন রোগীর প্রতি কোনো চিকিৎসকের অবহেলাও বরদাস্ত করা হবে না।
রোববার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত ৪১তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ও বিসিএস (পরিবার পরিকল্পনা) ক্যাডারে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের
সামন্ত লাল সেন বলেন, মন্ত্রী হিসেবে আমার বয়স মাত্র সাড়ে ৩ মাস। এই অল্প সময়ে আমি যেখানে গিয়েছি একটা কথাই বলেছি, আমি যেমন চিকিৎসকেরও মন্ত্রী, ঠিক তেমনি আমি রোগীদেরও মন্ত্রী। মন্ত্রী হিসেবে শুধু একটা প্রতিশ্রুতিই আমি দিতে পারি, তোমরা তোমাদের সর্বোচ্চ সেবাটুকু দিয়ে যাও, তোমাদের বিষয়গুলোও আমি দেখব।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এর সভাপতিত্বে ওরিয়েন্টেশনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আর বানু প্রমুখ।
নবনিযুক্ত চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ দেশের মানুষ অতি সাধারণ। তাদের চাওয়া-পাওয়াও সীমিত। ডাক্তারের কাছে এলে তারা প্রথমে চায় একটু ভালো ব্যবহার। একটু ভালো করে তাদের সাথে কথা বলা, একটু মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনা। এটুকু পেলেই তারা সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়া। আমি মনে করি সে স্বপ্ন পূরণ করার কারিগর হচ্ছো তোমরা। যারা আজকে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করতে যাচ্ছো। আমার বিশ্বাস, তোমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবে।
অনুষ্ঠানে ৪১তম বিসিএস স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ ক্যাডারে সহকারী সার্জন পদে ১০৩ জন, সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে ১৭১ জন এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে ১৫৩ জন যোগদান করেন।
মন্তব্য