× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Love for dogs
google_news print-icon

কুকুরের জন্য ভালোবাসা

কুকুরের-জন্য-ভালোবাসা
ছবিতে মৌসুমীর কোলে এই লিনিসকেই দেখা যাচ্ছে। ছবি: নিউজবাংলা
প্রমিক্সকো গ্রুপের চেয়ারম্যান মৌসুমী ইসলাম বলেন, ‘লিনিস আমার প্রিয় কুকুর ছিল। চিকিৎসকরা তাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কিছুই করার ছিল না। লিনিসকে বাঁচানো যায়নি।’

একটি কুকুর কোলে নিয়ে হাউমাউ করে কাঁদছেন এক নারী। পাশেই টেবিলের পাশে দাঁড়ানো চিকিৎসক হতাশায় মাথা নিচু করে আছেন।

পেছনে আরও কয়েকজনের হতাশ দৃষ্টি। এমনই একটি ছবি শুক্রবার রাতে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে ছবিটি কোনো হাসপাতাল বা অপারেশন থিয়েটারের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কুকুর কোলে নিয়ে কান্না করা নারীর নাম মৌসুমী ইসলাম। তিনি প্রমিক্সকো গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এলডি ভেটেরিনারি হসপিটাল ও ডে কেয়ার সেন্টারের চেয়ারম্যান।

তার পোষা বেশ কয়েকটি কুকুরের মধ্যে একটির নাম লিনিস। ছবিতে মৌসুমীর কোলে এই লিনিসকেই দেখা যাচ্ছে।

কুকুরের জন্য ভালোবাসা

লিনিস তিব্বতের লাসা এপসো প্রজাতির কুকুর। দেশে এসব কুকুর খুব একটা দেখা যায় না। তবে কেউ কেউ শখের বসে পোষেন এই প্রাণীটি।

দুই সপ্তাহ আগে ব্রেস্ট ক্যানসার ধরা পড়ে লিনিসের। ঢাকায় বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় এই কঠিন অসুখের কথা।

এর মধ্যে মৌসুমী যোগাযোগ করেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ড. বিবেক চন্দ্র সূত্রধরের সঙ্গে।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাধারণত ব্রেস্ট ক্যানসার হলেও কুকুর ছয় মাসের মত বাঁচে। কিন্তু লিনিসের সারা শরীরে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছে। তার বাঁচার সম্ভাবনা ২ থেকে ৩ মাস। বিষয়টি ওনাকে জানিয়েছি।’

কুকুরের জন্য ভালোবাসা

তিনি বলেন, আবার অপারেশনের মাধ্যমে এটাকে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করা যেতে পারে। কিন্তু সফল হওয়ার নিশ্চয়তা ছিল না।

‘বিষয়টা ওনাকে জানাই, উনি চেষ্টা করার অনুরোধ করেন। আমরা সাত জন সার্জন মিলে কুকুরটিকে বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা করেছি। তিন ঘণ্টার অপারেশন। সবকিছু সফলভাবে শেষ হয়েছে। অপারেশন শেষে লিনিস জেগে উঠেছিল, কিন্তু ফুসফুস বিকল হয়ে যাওয়ায় অক্সিজেন নিতে পারছিল না। ধীরে ধীরে পালস রেট কমতে থাকে, কুকুরটি মারা যায়।’

এ বিষয়ে প্রমিক্সকো গ্রুপের চেয়ারম্যান মৌসুমী ইসলাম বলেন, ‘লিনিস আমার প্রিয় কুকুর ছিল। চিকিৎসকরা তাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কিছুই করার ছিল না। লিনিসকে বাঁচানো যায় নি।’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Syndicate behind Chasiks 20 Ghat Khas collection

চসিকের ২০ ঘাটে ‘খাস কালেকশন’, নেপথ্যে সিন্ডিকেট

চসিকের ২০ ঘাটে ‘খাস কালেকশন’, নেপথ্যে সিন্ডিকেট চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন কর্ণফুলীর একটি ঘাটে যাত্রী পারাপার। ছবি: নিউজবাংলা
উচ্চ আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকায় পহেলা বৈশাখে ২০ ঘাটের ইজারা হয়নি। আর এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে চসিকের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা ইজারালোভী সিন্ডিকেটকে সহায়তা করছেন। আর সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।

কর্ণফুলীর সল্টগোলা-ডাঙারচর ঘাটসহ ২০টি নদী পারাপার ঘাট ইজারা না হওয়ায় নামমাত্র ‘খাস কালেকশন’ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) বিরুদ্ধে। এতে করে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

চসিক রাজস্ব শাখার কর্মকর্তারা স্থানীয় পর্যায়ের পুরনো ইজারাদারদের সঙ্গে আঁতাত করে খাস আদায়ে উঠেপড়ে লেগেছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার মেয়রের নামও ভাঙাচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চসিকের এসব ঘাট দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ যাত্রীসহ পণ্য আনা-নেয়া করা হয়। ঘাটগুলো নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকায় ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখে ২০ ঘাটের ইজারা দেয়া সম্ভব হয়নি।

ঘাট ইজারা না হওয়াটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে চসিকের রাজস্ব শাখা ‘খাস কালেকশন’ আদায়ের দিকে হাঁটছে। এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা সরকারি অর্থ হাতিয়ে নিতে ইজারালোভী সিন্ডিকেটকে সহায়তা করছেন। খাস কালেকশনের নামে রাজস্ব আদায় কম দেখানোর সুযোগ তৈরি করছেন তারা।

চসিকের ২০ ঘাটে ‘খাস কালেকশন’, নেপথ্যে সিন্ডিকেট
একটি ঘাটে ইজারাদারের টোল আদায়ের ঘর। ছবি: নিউজবাংলা

এই খাস কালেকশনকে রাজস্ব ফাঁকির কৌশল হিসেবে অভিহিত করেছে পাটনিজীবী একাধিক সমিতি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দু’জন পুরনো ইজারা ব্যবসায়ী বলেন, খাস কালেকশনে টাকা আদায় কম দেখানো গেলে পরবর্তী বছরের ইজারা মূল্য কমানোর আইনগত পথ সৃষ্টি হয়। এছাড়া একাধিকবার খাস কালেকশনে পরের বছর আইনগত ঝামেলা এড়িয়ে কম টাকায় ইজারা নিতে পারেন ব্যবসায়ীরা। এভাবেই কিছু অসৎ কর্মকর্তার কারসাজিতে কয়েক বছর পর পর গুরুত্বপূর্ণ ঘাটগুলোর ইজারা মূল্য কমে যায় এবং সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়।

তারা বলেন, এই পদ্ধতিতে সরকারি কোষাগারে নামমাত্র অর্থ জমা হলেও বড় অংকের টাকা চলে যাবে চসিক সিন্ডিকেটের পকেটে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এ বছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হবে চসিক কিংবা সরকার।

তথ্য সূত্রে জানা যায়, হাইকোর্ট বিভাগের রিট (১৫১৬৩/২৩) পিটিশনের কারণে এবার বাংলা ১৪৩১ সনে চসিক নিয়ন্ত্রণাধীন ঘাটগুলোর ইজারা স্থগিত রয়েছে। ঘাটে ঘাটে আবার কানাঘুষাও চলছে যে এসব চসিকেরই কৌশল। কেননা এতে কপাল খুলে যায় একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা ও চসিক-সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেটের।

চসিকের নিয়ন্ত্রণাধীন ঘাটগুলো হলো- পতেঙ্গা ১৫ নম্বর ঘাট, সল্টগোলা ঘাট, বাংলাবাজার ঘাট, নয়ারাস্তা পাকা পুলঘাট, সদরঘাট, ফিশারীঘাট, নতুনঘাট, এয়াকুব নগর লইট্যা ঘাট, পতেঙ্গা ১৪ নংম্বর ঘাট ও গুচ্ছগ্রাম ঘাট, ১১ নম্বর মাতব্বর ঘাট, ১২ নম্বর তিনটিংগা ঘাট, ৭ নম্বর রুবি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি সংলগ্ন ঘাট, ৯ নম্বর বিওসি ঘাট, অভয় মিত্র ঘাট, চাক্তাই খালের পাশে পানঘাট থেকে গাইজ্জের ঘাট, পতেঙ্গা চাইনিজ ঘাট, বাকলিয়া ক্ষেতচর ঘাট, চাক্তাই ঘাট ও চাক্তাই লবণ ঘাট।

চসিকের ২০ ঘাটে ‘খাস কালেকশন’, নেপথ্যে সিন্ডিকেট

চলতি বছরে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ঘাটের সম্ভাব্য ইজারা মূল্য ছিল- পতেঙ্গা ১৫ নম্বর ঘাট ২ কোটি ৬৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা, সল্টগোলা ঘাট ৫৭ লাখ ৩২ হাজার ১০০ টাকা, বাংলাবাজার ঘাট ২৪ লাখ ৪ হাজার ৬০০ টাকা, সদরঘাট ২১ লাখ ৯৭ হাজার ১২৪ টাকা, ফিশারি ঘাট ২৪ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা, পতেঙ্গা ১৪ নম্বর ঘাট ও গুচ্ছগ্রাম ঘাট ৪২ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা, ১১ নম্বর মাতব্বর ঘাট ৮৭ লাখ ৩২ হাজার ৪০০ টাকা এবং ৯ নম্বর বিওসি ঘাট ৩৫ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ টাকা।

হিসাব করলে দেখা যায়, পতেঙ্গা ১৫ নম্বর ঘাটের সম্ভাব্য ইজারা মূল্যের সঙ্গে ২০ শতাংশ ভ্যাট যোগ করলে মোট ইজারা দাঁড়ায় ৩ কোটি ২৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এতে দৈনিক কিস্তি পড়ে ৮৮ হাজার ৬০২ টাকা। অনুরূপভাবে সল্টগোলা ঘাটের দৈনিক কিস্তি ১৮ হাজার ৮৪৫ টাকা।

এভাবে প্রতিটি ঘাটে দৈনিক ১০ হাজার থেকে ৮৮ হাজার টাকার মতো ইজারা আদায় হওয়ার কথা। কিন্তু অতি কৌশলে চসিকের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে দৈনিক মাত্র ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার নামমাত্র মূল্যে খাস কালেকশন আদায়ের প্রক্রিয়া নিচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

অভয় মিত্র ঘাটের খাস কালেকশনকারী মো. আবুল জানান, দৈনিক দু’হাজার টাকা হিসাবে তিনি এই ঘাট নিয়েছেন। বাংলাবাজার ঘাটের লোকমান দয়াল জানান, দৈনিক সাড়ে ৫ হাজার টাকায় তিনি এই ঘাট দেখাশোনা করছেন।

চসিক নীতিমালায় ঘাট ইজারা কিংবা খাস আদায়ে সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক নিবন্ধিত স্থানীয় পাটনিজীবী সমিতিকে ঘাট পরিচালনার দায়িত্ব দেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু খাস আদায়ের জন্য স্থানীয় পাটনিজীবী সমিতিগুলো মেয়রের কাছে ধর্না দিয়েও সাড়া না পায়নি। অনন্যোপায় হয়ে তারা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন কিংবা মানববন্ধন কর্মসূচির চিন্তা-ভাবনা করছে বলে জানা গেছে।

সল্টগোলা ডাঙ্গারচর পাটনিজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সাম্পান মাঝিরা সাম্পান চালিয়ে বউ-বাচ্চা নিয়ে দুমুঠো ডাল-ভাত খেতে চাই। আমরা চাই কেউ আমাদের পেটে লাথি না মারে। টোল কিংবা খাস কালেকশন যে আদায় করবে করুক, আমরা এই ঘাটের মাঝি; আমরা যাত্রী পারাপার করতে চাই।

‘বর্তমানে সাড়ে ৭ হাজার টাকা করে খাস কালেকশন দিচ্ছি। এখনও চসিক থেকে কেউ আসেনি। আমরা সরকারি রেজিস্ট্রেশনধারী পাটনিজীবী সমিতি। কিন্তু বাইরের কিছু লোক ঘাট দখলের পাঁয়তারা করছে ঘাটে চাঁদাবাজি করার জন্য। আমরা এসব হতে দেব না।’

বেশিভাগ ঘাটের ইজারাদার আব্দুল শুক্কুর প্রকাশ তেল শুক্কুর বলেন, ‘আমরা কয়েকটি ঘাটের খাস কালেকশন করতেছি। ১৫ দিন পর পর সিটি করপোরেশনে টাকা দিতে হয়।’

চসিকের ২০ ঘাটে ‘খাস কালেকশন’, নেপথ্যে সিন্ডিকেট

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আইন কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘কিছু পাটনিজীবী সমিতি মিলে হাইকোর্টে রিট করে স্টে-অর্ডার করেছে; যাতে ইজারা টেন্ডার বন্ধ থাকে। সে কারণে ঘাটগুলোর ইজারা বন্ধ রয়েছে। আমরা ডকুমেন্টস সংগ্রহ করছি। শিগগিরই রিট শুনানি করে নতুন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আর বর্তমানে ঘাটগুলো বিভিন্নজনকে বিভিন্নভাবে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এস্টেট শাখা ভালো বলতে পারবে।’

চসিকের রাজস্ব কর্মকর্তা সাব্বির রাহমান সানি বিশেষ ট্রেনিংয়ে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে চসিকের সহকারী এস্টেট অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমাদের আইন শাখা কাজ করছে। শিগগিরই হাইকোর্টের স্টে-অর্ডারটি ব্যাকেট করা হবে। তারপর ঘাটগুলোর টেন্ডার কল করা হবে। বর্তমানে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব লোকজন ঘাটগুলো দেখাশোনা করছে। আর সল্টগোলা ডাঙারচর ঘাটে লোকজন গেছে।’

চসিক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (সিআরও) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশ মানতে হবে। কিছু করার নেই। খাস কালেকশনে ঘাট চলছে। যেহেতু আদালতের নির্দেশে স্থগিত ইজারা। রিট শুনানির জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। কিন্তু এভাবে খাস কালেকশন চলতে থাকলে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আসবে না সেটাও সত্য।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The whole family got lost while bringing relief tins
ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ১৪

ত্রাণের টিন আনতে গিয়ে হারিয়ে গেল পুরো পরিবার

ত্রাণের টিন আনতে গিয়ে হারিয়ে গেল পুরো পরিবার বাসের সঙ্গে পিকআপের সংঘর্ষে নিহতদের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: নিউজবাংলা
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি পরিবারের জন্য ত্রাণ হিসেবে কয়েক বান্ডিল টিন সহায়তার বরাদ্দ আনেন মিলন। মঙ্গলবার পিকআপে করে নিজের পরিবারের সদস্য ও আশপাশের গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে সেই টিন আনতে যাচ্ছিলেন ফরিদপুরে। পথে দুর্ঘটনায় স্ত্রী, দুই শিশু পুত্রসহ চিরতরে হারিয়ে গেলেন তিনি।

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের ছত্রকান্দা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা তারা মিয়ার সন্তান রাকিবুল ইসলাম মিলন চাকরি করতেন ঢাকায় সচিবালয়ে লিফটম্যান হিসেবে।

সম্প্রতি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি পরিবারের জন্য ত্রাণ হিসেবে কয়েক বান্ডিল টিন সহায়তার বরাদ্দ আনেন মিলন। মঙ্গলবার সকালে একটি পিকআপে করে নিজের পরিবারের সদস্য ও আশপাশের গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে সেই টিন আনতে যাচ্ছিলেন ফরিদপুরের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে। কিন্তু ত্রাণের সেই টিন আর আনা হলো না মিলনের।

পথিমধ্যে বাসের সঙ্গে তাদের বহনকারী পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে মিলন ছাড়াও তার স্ত্রী সুমি বেগম, দুই শিশু সন্তান আবু রায়হান ও আবু সিনান রুহানসহ ১৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিলনের মা খুড়িয়া বেগম। এ দুর্ঘটনায় মিলনের নানী শাশুড়ি মর্জিনা বেগমও প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি একই গ্রামের ওহাব মোল্লার স্ত্রী।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবরে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ মর্গে আনা হলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

বোয়ালমারীর ছত্রকান্দা গ্রামটি আলফাডাঙ্গা উপজেলার সীমান্তঘেঁষা। তাদের ডাকঘর এই আলফাডাঙ্গাই। এ তথ্য জানিয়ে রাকিবুল ইসলাম মিলনের মামাতো ভাই নুরুজ্জামান খসরু বলেন, ‘কয়েকটি দরিদ্র পরিবারের জন্য ত্রাণের টিনের ব্যবস্থা করে সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসে মিলন। সকালে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হয়। তার আগে গত রাতে সবশেষ কথা হয়েছিল তার সাথে। বলেছিল, ত্রাণের টিনগুলো বুঝিয়ে দিয়ে ওই পথেই চলে যাবে ঢাকা। কিন্তু এটিই তার শেষ যাওয়া হয়ে গেল।’

খসরু জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা তারা মিয়ার তিন ছেলের মধ্যে রাকিবুল ইসলাম মিলন ছিলেন মেঝো। তার বড় ভাই ফরিদুল ইসলাম একজন স্কুল শিক্ষক। আর ছোট ভাই হাবিবুর রহমান মাস্টার্স পাস করে আলফাডাঙ্গা সদরে ফোন-ফ্লেক্সির দোকান করেন।

আট বছর আগে আলফাডাঙ্গার বানা ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের রোকায়েশ মোল্লার মেয়ে সুমিকে বিয়ে করেন মিলন।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফরিদপুরের কানাইপুরের দিগনগর এলাকায় বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত হন।

আরও পড়ুন:
ফরিদপুরের দুর্ঘটনার যেসব কারণ জানা গেল
ফরিদপুরে পিকআপে বাসের ধাক্কায় নিহত ১৩

মন্তব্য

বাংলাদেশ
8 arrested with weapons in special army operation in Bilaichhari

বিলাইছড়িতে বিশেষ সেনা অভিযানে অস্ত্রসহ আটক ৮

বিলাইছড়িতে বিশেষ সেনা অভিযানে অস্ত্রসহ আটক ৮ ছবি: আইএসপিআর
আটককৃত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে ৯টি এলজি, ১৯টি এলজি কার্টিজ, ২টি মোবাইল ফোন এবং ২টি আইডি কার্ড জব্দ করা হয়েছে।

রাঙামাটির বিলাইছড়িতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ৮ জনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিলাইছড়ি উপজেলার ধুপানিছড়া পাড়া থেকে তাদের আটক করা হয়।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এদিন সকালে সেনাবাহিনীর বান্দরবান রিজিয়নের অন্তর্গত ১৬ বেঙ্গল কর্তৃক ধুপানিছড়া পাড়া এলাকায় সুংসুংপাড়া আর্মি ক্যাম্পের মেজর রাজীবের নেতৃত্বে একটি টহল দল অভিযান পরিচালনা করে। কেএনএফ সন্ত্রাসীদের অবস্থানের খবরের প্রেক্ষিতে এ অভিযান চালানো হয়। পরে সেনা সদস্যদের অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ৮ জন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আটককৃত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে ৯টি এলজি, ১৯টি এলজি কার্টিজ, ২টি মোবাইল ফোন এবং ২টি আইডি কার্ড জব্দ করা হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আটককৃতদের বিলাইছড়ি থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে আইএসপিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন:
মেয়াদোত্তীর্ণ পাউডার দিয়ে সফট ড্রিংকস বানানো কারখানা সিলগালা
ময়মনসিংহে তিন হাসপাতাল এক ক্লিনিক সিলগালা
অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় পুরান ঢাকার ৪ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
পেশাগত দক্ষতা দিয়ে সেনাবাহিনী বিদেশেও সুনাম অর্জন করেছে: সেনাপ্রধান
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দুই কোরের সদস্যদের প্রস্তুত হতে বললেন সেনাপ্রধান

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The causes of the Faridpur accident were known

ফরিদপুরের দুর্ঘটনার যেসব কারণ জানা গেল

ফরিদপুরের দুর্ঘটনার যেসব কারণ জানা গেল অতিরিক্ত গতি থাকায় সংঘর্ষে দুমড়ে মুচড়ে যায় যানবাহন দুটির সামনের অংশ। ছবি: নিউজবাংলা
সরেজমিনে ঘুরে প্রাথমিকভাবে দুর্ঘটনার বেশ কয়েকটি কারণ খুঁজে পেয়েছে নিউজবাংলা। অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো, মহাসড়কে উল্টো লেনে গাড়ি চালানো ও এবড়ো খেবড়ো সড়কের কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

ফরিদপুরের কানাইপুরে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। দুর্ঘটনায় এক পরিবারের চার সদস্যসহ মোট ১৪ জন নিহত হয়েছেন। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন আরও দুজন।

মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কের কানাইপুরের দিগনগর তেঁতুলতলায় ঢাকা থেকে মাগুরা অভিমুখী ইউনিক পরিবহনের একটি বাস ও পিকআপের সংঘর্ষে সড়কেই ঝরে পড়ে ১১ প্রাণ। হাসপাতালে নেয়ার পর আরও তিনজনের মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দেবে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার।

তবে সরেজমিনে ঘুরে প্রাথমিকভাবে দুর্ঘটনার বেশ কয়েকটি কারণ খুঁজে পেয়েছে নিউজবাংলা। অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো, মহাসড়কে উল্টো লেনে গাড়ি চালানো ও এবড়ো খেবড়ো সড়কের কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। ফরিদপুর পুলিশ সুপার, ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ম্যানেজার ও স্থানীয়দের দাবি অন্তত তা-ই।

দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, ‘দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও পিকআপ দুটিরই অতিরিক্ত গতি ছিল। আর পিকআপচালক তার নির্দিষ্ট লেন ছেড়ে বিপরীত লেনে চলে আসেন। এ কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বাসের চালক ফিট ছিলেন কি না, পিকআপটির চালকের লাইসেন্স ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।’

ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার সুবাস বাড়ৈ বলেন, ‘গাড়িটি (বাস) ওভার স্পিডে (অতিরিক্ত গতি) চলছিল। এ কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।’

দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই শেখ লিমনের বাড়ি। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এখানে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে কিছু বিট ও তার পাশে গর্ত আছে, রাস্তাও এবড়ো থেবড়ো। ঈদের আগেও এখানে বিশ-বাইশটি ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। সকালে ওই বিটের কাছেই দুর্ঘটনা ঘটে।’

দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার জানান, নিহতদের দাফনের জন্য নগদ ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। নিহতদের স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের পরবর্তীতে ৫ লাখ এবং গুরুতর আহতদের ৩ লাখ টাকা করে প্রদান করা হবে।

আরও পড়ুন:
ফরিদপুরে পিকআপে বাসের ধাক্কায় নিহত ১৩

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Kumargaon power station is the reason for repeated fire

কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে যে কারণে বার বার অগ্নিকাণ্ড

কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে যে কারণে বার বার অগ্নিকাণ্ড সিলেটের কুমারগাঁওয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রে সোমবার সকালে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের তৎপরতা। ছবি: নিউজবাংলা
কেপিআইভুক্ত দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনায় এ নিয়ে চার বছরে তিনবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো। আগেরবার অগ্নিকাণ্ডেরর পর গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি আজও। ফলে অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনার ঝুঁকিও দূর হয়নি।

আবার‌ও আগুনে পুড়লো সিলেটের কুমারগাঁওয়ে অবস্থিত বিদ্যুতের ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র। সোমবার সকালে লাগা এই আগুনে সিলেট নগর ও আশপাশের এলাকার লক্ষাধিক গ্রাহককে প্রায় ছয় ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকতে হয়েছে।

এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে এ নিয়ে গত চার বছরে তিনবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো। কেপিআইভুক্ত দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনায় কেন বার বার আগুনের ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও।

২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডে এই উপকেন্দ্রে ব্যাপক ক্ষতি হয়। ওই সময় সিলেট নগরীসহ আশপাশের এলাকায় টানা ৩১ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। তারও আগে ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে।

প্রথমবারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্য কারণ অনুসন্ধানে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। ২০২১ সালের ১১ জানুয়ারি ওই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে ১৯৬৭ সালে স্থাপিত উপকেন্দ্রটির প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন না করা এবং কর্তৃপক্ষের সঠিক পরিকল্পনা ও যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাবকে দায়ী করা হয়। একইসঙ্গে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়। সেই সুপারিশগুলো আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রহমত উল্লাহ্ মো. দস্তগীরকে আহ্বায়ক করে গঠিত সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সুপারিশে বলা হয়, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশের (পিজিসিবি) নিয়ন্ত্রণাধীন ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের ইকুইপমেন্টসের কন্ট্রোল ও প্রটেকশনের জন্য ডিসি সিস্টেম (ডিসি সোর্স ব্যাটারি, চার্জার ও ডিস্ট্রিবিউশন প্যানেল) এবং বিউবোর নিয়ন্ত্রণাধীন ৩৩ কেভি বাস ও ইকুইপমেন্টসের কন্ট্রোল ও প্রটেকশনের জন্য ডিসি সিস্টেম জরুরিভিত্তিতে সম্পূর্ণ পৃথক করা প্রয়োজন।

এছাড়া ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন, জরুরিভিত্তিতে গ্রাউন্ডিং সিস্টেম বৃদ্ধিপূর্বক যথাযথ মানে উন্নয়ন/সম্প্রসারণ করা, ভূগর্ভস্থ কন্ট্রোল ক্যাবলিং সিস্টেম জরুরিভিত্তিতে সংস্কার করা, ফল্ট লেভেল নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ১৩২ কেভি ও ৩৩ কেভিতে প্যারালালে সংযুক্ত পাওয়ার ট্রান্সফরমারগুলো জরুরিভিত্তিতে পৃথক করা এবং পাওয়ার ট্রান্সফরমার, কারেন্ট ট্রান্সফরমার, পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার, সার্কিট ব্রেকার ইত্যাদি অতি গুরুত্বপূর্ণ ইকুইপমেন্টগুলো উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন।

ওই কমিটি আরও সুপারিশ করে- তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে দক্ষ কারিগরি জনবল দ্বারা দেশের সব গ্রিড উপকেন্দ্র ইন্সপেকশনের ব্যবস্থা করা, উপকেন্দ্রের সংরক্ষণ কাজগুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে তদারকি আরও জোরদার করা, উপকেন্দ্রের পরিচালন ও সংরক্ষণ কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য পিজিসিবি ও বিউবোর আলাদাভাবে জনবল পদায়ন করা এবং প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ জনবল সৃষ্টির ব্যবস্থা করা দরকার।

এছাড়া গ্রিড উপকেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ ইকুইপমেন্টগুলো নিয়মিত পরীক্ষা ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং এসব যন্ত্রপাতির জন্য হিস্ট্রি বুক সংরক্ষণ করা, জরুরিভিত্তিতে কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের বিকল্প সোর্স তৈরির সুপারিশ করা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে।

ওই প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, ‘প্রতিটি গ্রিড বা বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাইবার সিকিউরিটি ও ফিজিক্যাল সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণ করা প্রয়োজন। লোকবল স্বল্পতার দোহাই দেয়া হয়। কিন্তু নিজেদের আপগ্রেড করার বিষয়ে কাউকেই ততটা আন্তরিক মনে হয় না। রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের দায়িত্বহীনতা এই দুর্ঘটনার জন্য অনেকটাই দায়ী। সিলেট অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য জনগণের যে অবর্ণনীয় কষ্ট ও আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তার দায়ও এরা এড়াতে পারে না।’

তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রী।

সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা প্রসঙ্গে সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, ‘কিছু কিছু বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকিগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে। জেআইএস নির্মাণের কাজ চলমান। এটি বাজেটের অভাবে কিছুদিন বন্ধ ছিলো। এখন আবার শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে নিরাপত্তা অবস্থা আরও জোরদার হবে।’

তিনি বলেন, মূল সমস্যা হলো সমন্বয়হীনতা। এখানে পিজিসিবি ও পিডিবিসহ বেসরকারি আরও কয়েকটি বিদ্যুৎ কোম্পানির যন্ত্রপাতি রয়েছে। সবার মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজন। আমরা সবাইকে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চিঠি দিচ্ছি।

‘এটি পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্র হওয়ায় অনেক যন্ত্রপাতি পুরনো হয়ে গেছে। নতুন গ্রিড সাবস্টেশন হচ্ছে। কাজ শেষ হলে সেখান থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে।’

প্রসঙ্গত, সোমবার সকাল ৯টার দিকে কুমারগাঁও উপকেন্দ্রের ভেতরের ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩৩ কেভি লাইনের নিচে বিদ্যুতের হাইভোল্টেজের তার ছিঁড়ে স্পার্কিং হয়। ওই সময় নিচে ডাম্পিং করে রাখা পরিত্যক্ত এয়ার ফিল্টারে আগুন লেগে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট এসে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আগুন নেভাতে যাওয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা বেলাল হোসেন বলেন, ‘এয়ার ফিল্টারগুলো সেখানে রাখা ঠিক হয়নি। সেগুলো দাহ্য হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।’

কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন জানান, সোমবারের অগ্নিকাণ্ডের পর দুটি ফিডারের আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। তবে অন্য ফিডার থেকে কিছু এলাকায় ওই সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। বিকেলে ক্ষতিগ্রস্ত লাইন মেরামত করার পর সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।

আরও পড়ুন:
সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড, সরবরাহ বিঘ্নিত

মন্তব্য

বাংলাদেশ
13 more members of Myanmar Army and BGP are in Bangladesh

মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির আরও ১৩ সদস্য বাংলাদেশে

মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির আরও ১৩ সদস্য বাংলাদেশে প্রতীকী ছবি
বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকালে নতুন করে ১২ জন এবং দুপুরে আরও একজন পালিয়ে আসেন।

মিয়ানমারের চলমান গৃহযুদ্ধের জের ধরে মিয়ানমারের সেনা ও দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ১৩ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এ নিয়ে গত ৩ দিনে মিয়ানমার থেকে মোট ২৯ জন বাংলাদেশে এসেছেন।

বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মো. শরীফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকালে নতুন করে ১২ জন এবং দুপুরে আরও একজন পালিয়ে আসেন। এর মধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশফাড়ি সীমান্ত দিয়ে একজন, রেজুপাড়া সীমান্ত দিয়ে দুজন এবং জমছড়ি সীমান্ত দিয়ে ১০ জন বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।

এই ১৩ জনের সবাই দেশটির বিজিপি ও সেনা সদস্য, তবে কোন বাহিনীর কত জন সদস্য, তা নিশ্চিত করতে পারেননি এ কর্মকর্তা।

তিনি আরও জানিয়েছেন, তাদের কাছে থাকা অস্ত্রগুলো জমা নিয়ে বিজিবি নিজেদের হেফাজতে রেখেছে। পরে তাদের নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ১১ বিজিবি হেফাজতে রাখা হয়েছে।

এর আগে সোমবার দুপুরে বাইশফাড়ি সীমান্ত দিয়ে ২ সেনা সদস্য বাংলাদেশে আসেন। এছাড়া রোববার টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে আসেন বিজিপির আরও ১৪ জন সদস্য।

১১ বিজিবি হেফাজতে আগে থেকেই ১৮০ জন আশ্রিত রয়েছে। এ নিয়ে আশ্রিতের সংখ্যা দাঁড়াল ২০৯ জনে।

ওই ১৮০ জনের মধ্যে সেনাবাহিনীর ৩ জন সদস্য গত ৩০ মার্চ মিয়ানমার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে এদেশে আসেন। তার আগে ১১ মার্চ আশ্রয় নেন আরও ১৭৭ জন বিজিপি ও সেনাসদস্য।

এ ছাড়াও কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন, যাদের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন:
মিয়ানমারের ১৮০ সেনা ফিরে যাবে, তবে এখনই নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এবার বাংলাদেশে আশ্রয় মিয়ানমারের ২৯ সীমান্তরক্ষীর

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The youngest hero Prateek Shahiduls family has no permanent residence

সর্বকনিষ্ঠ বীর প্রতীক শহীদুলের পরিবারের নেই স্থায়ী নিবাস

সর্বকনিষ্ঠ বীর প্রতীক শহীদুলের পরিবারের নেই স্থায়ী নিবাস বীর প্রতীক শহীদুল ইসলামের পরিবার। ছবি: নিউজবাংলা
গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস তৈরি করে দেয়ার একটি প্রকল্প চলমান আছে। গোপালপুরে জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ৬২টি বীর নিবাস নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ছয়টি নির্মাণাধীন রয়েছে।’

‘রাজাকার-আলবদর থাকে আজ রাজপ্রাসাদে, আমি শহীদুল ইসলাম বীর প্রতীক থাকি একটা কুইড়াঘরে (কুঁড়েঘরে) তার কারণ কী?’

২০০৩ সালে ধারণ করা এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার সূতী গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে শহীদুল ইসলাম।

তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, ছোট থেকেই অনেক সাহসী ও বুদ্ধিমান ছিলেন শহীদুল। তাই তো দেশকে হানাদার মুক্ত করতে ১২ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন কাদেরিয়া বাহিনীর কমান্ডার আনোয়ার হোসেন পাহাড়ির অধীনে।

দেশের সর্বকনিষ্ঠ এ বীর প্রতীকের পরিবারের নেই স্থায়ী কোনো নিবাস। সন্তানদের জন্য নেই চাকরির ব্যবস্থা। তিনি কুলির কাজ ও খাবার হোটেলের কাজ করে কাটিয়েছেন জীবনের অধিকাংশ সময়।

নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ বীর প্রতীকের পরিবার বসবাস করছেন ঢাকার মিরপুর মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন প্রকল্পের সরকারি জমিতে। প্রথম সন্তান মুক্তা বেগম (৩৫) পেশায় গৃহিণী, স্বামীর বাড়ি রাজশাহীর নাটোরে। দ্বিতীয় সন্তান আক্তার হোসেন (৩২) পেশায় গাড়ি চালক, তৃতীয় সন্তান সোহাগ হোসেন (২৭) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সদ্য গ্রাজুয়েশন শেষ করেছেন, চতুর্থ সন্তান শিখা আক্তার (২০) ঢাকার একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভারতে ট্রেনিং চলাকালে সর্বকনিষ্ঠ হওয়ায় সহযোদ্ধারা তাকে লালু আর তার চেয়ে বয়সে বড় শ্যামলকে ভুলু নামে ডাকতে শুরু করেন। দেশে ফিরলে তার বুদ্ধিমত্তায় একাধিকবার মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণে বাঁচেন।

সেই ঘটনাই বর্ণনা করে তার পরিবার, কাদেরিয়া বাহিনীর কমান্ডারের নির্দেশে ছদ্মবেশ ধারণ করেন চতুর শহীদুল ইসলাম। কৌশলে এক রাজাকারের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে গোপালপুর থানা কম্পাউন্ডের, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বাংকারে ঢুকে পরেন। তার কৌশল ও দুঃসাহসিক গ্রেনেড হামলায় একাধিক বাংকার ধ্বংস করলে গোপালপুর থানা হানাদার মুক্ত হয়।

শহীদুলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বীর প্রতীক উপাধি লাভ করেন তিনি। রাইফেলের সমান উচ্চতা হওয়ায় ভারতে প্রশিক্ষণ চলাকালে তাকে স্টেনগান চালনা ও গ্রেনেড ছোঁড়ার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। কাদেরিয়া বাহিনী ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অস্ত্র সমর্পণের সময় সময় ১২ বছরের কিশোর শহীদুলের বীরত্বের কথা শুনে মুগ্ধ হয়ে তাকে কোলে তুলে নেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

ছবিটি সামরিক ও মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।

সর্বকনিষ্ঠ বীর প্রতীক শহীদুলের পরিবারের নেই স্থায়ী নিবাস
ছবি: সংগৃহীত

শহীদুলের জীবন সংগ্রাম

শৈশবে বাবা-মা আর মুক্তিযুদ্ধের সময় এক ভাই-এক বোনের মৃত্যু হলে দারিদ্র্যতায় উপায়ান্তর না দেখে মুক্তিযুদ্ধের পর দুই ভাইকে রেখে জীবিকার তাগিদে বাড়ি ছাড়া হন শহীদুল। ঢাকার সোয়ারীঘাটে বালু টানা, ঠেলা গাড়ি চালানো, রাজমিস্ত্রীর হেলপারের কাজ, শেষে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কুলির কাজ শুরু করেন।

একপর্যায়ে কুলির কাজ শেষে হোটেলে কাজ শুরু করেন। যাযাবর অবস্থায় বিয়েও করেন, এক মেয়ে ও এক ছেলের জন্ম নেয়া সেই সংসার স্থায়ী হয়নি।

পরবর্তী সময় কুমিল্লায় হোটেলে কাজ করা অবস্থায় সহকর্মীকে জীবনের সব ঘটনা খুলে বলেন। দুই সন্তানকে নিয়ে ওই সহকর্মীর সঙ্গে মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর চলে যান। ১৯৯৬ সালে সেই সহকর্মীর নিকটাত্মীয় মালা বেগমের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।

এ দম্পতির ছেলে সন্তান সোহাগ হোসেনের জন্মের পর সংসারে অভাব অনটন দেখা দেয়। ঢাকার পোস্তগোলায় নিজের খাবার হোটেল চালু করার কিছু দিনের মধ্যেই ১৯৯৮ সালে জটিল কিডনি রোগে আক্রান্তের কথা জানতে পারেন শহীদুল।

কোনো উপায় না পেয়ে কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ঢাকার বাসার ঠিকানা জোগাড় করে দেখা করেন। কাদের তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করান, উপস্থিত সহযোদ্ধাদের নির্দেশ দেন তার কাগজপত্র সংগ্রহ করতে। কাদেরিয়া বাহিনীর যোদ্ধা বীর প্রতীক আবদুল্লাহকে নির্দেশ দেন, ঢাকার মিরপুর মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন প্রকল্পে শহীদুলের পরিবারের জন্য জায়গা দিতে। সে অনুযায়ী তার পরিবারের ঠাঁই হয় সেখানে।

বীর প্রতীক খেতাব লাভ

চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হন শহীদুল ইসলাম। কাগজপত্র সংগ্রহের পর জানতে পারেন তিনি বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, তিনিই সর্বকনিষ্ঠ বীর প্রতীক। পরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক তাকে ৩০ হাজার টাকা অনুদান প্রদানের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে অপর দুইভাই তাকে খুঁজে পায়।

শহীদুলের চিরবিদায়

অসুস্থতার কারণে শেষ সময়ে কোনো কাজকর্ম করতে পারেননি শহীদুল। শুভাকাঙ্ক্ষীদের অর্থে চলেছে চিকিৎসা ও পরিবারের খরচ। ২০০৯ সালে ২৫ মে অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তাকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

পরিবারের বক্তব্য

বীর প্রতীক শহীদুল ইসলামে স্ত্রী মালা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার স্বামীর জীবদ্দশায় ভাতাপ্রাপ্ত ছিলেন না, তাই শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহায়তায় চিকিৎসা করাতে হয়েছে। উনার মৃত্যুর পর চার সন্তানকে অনেক কষ্টে লালনপালন করি। এরপর মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রীর কাছে গেলে ২০১৪ সালে দুই হাজার টাকা ভাতা চালু হয়।

‘মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন প্রকল্পের সরকারি জমিতে একাধিক রুম বানিয়ে ভাড়ার টাকায় সন্তানদের বড় করি। সন্তানদেরকে শিক্ষিত বানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার দাবি সন্তানদের জন্য উপযুক্ত চাকরি ও আমাদের স্থায়ী নিবাসের ব্যবস্থা করে দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তার নিজ এলাকার মানুষের থেকে সে তেমন মূল্যায়ন পায়নি, এই ক্ষোভে তিনি মৃত্যুর আগে কখনও গোপালপুর যাননি, তবে সন্তানদের নিয়ে আমি একাধিকবার গোপালপুর গিয়েছিলাম।’

সর্বকনিষ্ঠ বীর প্রতীকের সন্তান সোহাগ হোসেন বলেন, ‘মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি বাসস্থান। আমরা বিশেষ পরিবারের সন্তান হলেও ঢাকার মিরপুরে সরকারি জমিতে বসবাস করতেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবি, স্থায়ী বাসস্থান ও আমাদের জন্য উপযুক্ত চাকুরির ব্যবস্থা যেন উনি করেন।’

নিয়মিত সরকারি রেশন ও ভাতা পাচ্ছেন বলেও জানান তারা।

জনপ্রতিনিধিদের ভাষ্য

গোপালপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সমরেন্দ্রনাথ সরকার বিমল বলেন, ‘সূতী মীরপাড়ায় গোপালপুরের একমাত্র বীর প্রতীক শহীদুল ইসলামের জন্ম হলেও, এখানে তার বাড়ি-ঘর নেই। তার পরিবার এখানে এসে কিছু চায় নাই, তাই বীর নিবাসসহ অন্যান্য সুবিধাদি পায়নি। তার পরিবার বীর প্রতীক ভাতা পাচ্ছেন।’

গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস তৈরি করে দেয়ার একটি প্রকল্প চলমান আছে। গোপালপুরে জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ৬২টি বীর নিবাস নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ছয়টি নির্মাণাধীন রয়েছে।

‘উনাকে আবেদন করে রাখতে বলেন। পরের অর্থবছরে আবার যদি বরাদ্দ আসে তবে হয়ত এগুলো পাঠাতে পারব।’

আরও পড়ুন:
কুমিল্লায় ১৫০ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা
বীর নারী মুক্তিযোদ্ধারা পেলেন সম্মাননা
কিশোরী রানীর ভাতের পাতিলে লুকানো পিস্তল-গুলি
ডিসেম্বরকে ‘মুক্তিযোদ্ধা মাস’ চান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দাবি

মন্তব্য

p
উপরে