প্রচার ও ভোটে সহিংসতা-প্রাণহানির মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষ হলেও থেমে নেই সংঘর্ষ। ভোট গণনার সময়, ফল ঘোষণার পর এমনকি ভোটের পরদিনও কয়েক জেলায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
তৃণমূল পর্যায়ের এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ব্যাপক। তবে সহিংসতার ঘটনায় ভোটের পরিবেশ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
মাদারীপুরের কালকিনি ও ডাসার উপজেলায় শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন এক অন্তঃসত্ত্বাসহ ১০ জন।
কালকিনির সাহেবরামপুর ও লক্ষ্মীপুর এবং ডাসারের বালীগ্রাম ও নবগ্রাম ইউনিয়নে এই সংঘর্ষ হয়েছে। আহতদের কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসব এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা।
কালকিনির লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে সকাল ১০টার দিকে সংঘর্ষে জড়ায় নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মৌসুমী হক ও পরাজিত প্রার্থী তোফাজ্জেল হোসেন গেন্দু কাজীর সমর্থকরা। ভাঙচুর করা বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। এ সময় আহত হন অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূসহ পাঁচজন।
একই উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহিম মুরাদ সরকারের সমর্থকদের প্রায় ৩০ বাড়িতে ভোররাতে ভাঙচুর চালানো হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, হামলাকারীরা পরাজিত নৌকার প্রার্থী কামরুল হাসান সেলিমের সমর্থক।
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসতিয়াক আসফাক রাসেল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচনের পর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা আছে।
ডাসার থানা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নে দুপুরে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বিভূতি ভূষণ বাড়ৈর সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বিজয়ী চেয়ারম্যান দুলাল তালুকদারের সমর্থকরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন ৫ জন।
একই উপজেলার বালীগ্রাম ইউনিয়নে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী তুষার হোসেনের সমর্থকদের সঙ্গে বিজয়ী প্রার্থী মজিবর খানের সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে সন্ধ্যায়।
বৃহস্পতিবার মাদারীপুরের এই দুই জেলার ১২টি ইউনিয়নে ভোট হয়েছে। তাতে চেয়ারম্যান পদে ৯ ইউনিয়নেই স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। তিনটিতে জয় পেয়েছেন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
ভোটের পরদিন ভোরে সংঘর্ষ হয় শরীয়তপুর সদরেও। উপজেলার তুলাসার ইউনিয়নে শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম ফকিরের সমর্থকদের বেশ কিছু ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
জাহিদুলের অভিযোগ, বিজয়ী চেয়ারম্যান জামাল হোসাইনের সমর্থকরা এই হামলা চালিয়েছেন।
জাহিদুল বলেন, ‘আজকে সুবহে সাদিকের সময় যখন মানুষ ঘুমন্ত, সেই অবস্থায় নৌকা মার্কার সমর্থিত সন্ত্রাসী বাহিনীর তাণ্ডবে তুলাসার ইউনিয়নের শতাধিক ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। শত শত বোমা ফাটানো হয়। জনগণের অপরাধটা কী?
‘এই জনগণ আমাকে ভোট দিতে চেয়েছিল বলে এটাই যদি তাদের অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে আমার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন, গণতন্ত্রের জন্য ভোটের জন্য ভাতের জন্য আমাদের দিয়ে আপনি লড়াই করিয়েছিলেন কেন? এই জনগণকে রক্ষা করার জন্য আপনার কাছে আমি বিনীত অনুরোধ করছি।’
জাহিদুলের অভিযোগ, প্রশাসনের লোকজনকে খবর দেয়া হলেও দুজন পুলিশ ছাড়া কেউ ঘটনাস্থলে আসেনি।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত আফজাল হোসেন বলেন, ‘গতকাইল রাইতে বিজয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী জামাল আমাগো গালাগালি কইরা গেছে। সকালে ঘুমাইয়া রইছে এমন সময় ওনার নির্দেশে রেজাউল মুন্সির নেতৃত্বে লাডি, স্যান, ডাল, বোম লইয়া হামলা করছে। ঘুমের থেকে উইট্টা কিছু বুঝার আগেই দেহি সব তছনছ কইরা থুইয়া গেছে। আমাগো কী অপরাধ? নির্বাচন শেষ এখন আবার এমন অত্যাচার কেন? আমরা কি এই দ্যাশের নাগরিক না?’
নতুন টিনের ঘর দিয়েছেন মালা বেগম। ঘরের সেই টিনের বেড়া কুপিয়ে টেনে ভেঙে ফেলা হয়েছে। তছনছ করা হয়েছে আসবাব।
মালা বলেন, ‘সকালবেলা ডাল স্যান লইয়া বাইরাইছে। আমরা ঘরের থেইক্কা কেউ বাইরাই নাই। এরপর বোমা ফাইছে, ইট মারছে। ইটে আমার ননদ ও শাশুড়ি ব্যথা পাইছে। হেইয়ার পর গরের ভিতর ডুইকা জিনিস যা আছিল আর টাকা সব লইয়া গেছে গা। আর যাওনের সময় ব্যারাগোরা সব কোপাইয়া ভাইঙ্গা থুইয়া গেছে। আমরা এইয়ার বিচার চাই।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে পালং মডেল থানার উপপদির্শক রোমন জানান, কারা হামলা করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার ১০টি ইউপিতে বৃহস্পতিবার ভোট হওয়ার কথা ছিল। স্বাক্ষর জাল করে সদস্যদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের অভিযোগে চিতলিয়া ইউনিয়নের নির্বাচন ৮ অক্টোবর বাতিল করে কমিশন।
নয়টি ইউনিয়নের মধ্যে দুইটিতে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায় সাতটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ভোট হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটিতেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর তিনটি ইউনিয়নে শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সংঘর্ষ হয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৫ জন, ভাঙচুর হয়েছে শতাধিক বাড়িঘর।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রথীন্দ্রনাথ রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টায় সাজাইল ইউনিয়নে বিজয়ী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের সমর্থকরা এলাকায় বিজয় মিছিল বের করেন। এতে পরাজিত নৌকার প্রার্থী কাজী জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থকরা হামলা চালান। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা, ঢাল-সড়কি ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। এ সময় ভাঙচুর করা হয়ে বাড়িঘরও।
সংঘর্ষে আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন দুই পক্ষের অন্তত ২৫ জন। পুলিশ গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি শান্ত করে।
কাশিয়ানীর বুথপাশা ও পিংগুলিয়া গ্রামেও পরাজিত নৌকা ও বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া রাতইল ইউনিয়নের পাথরঘাটা ও ধানকোড়া গ্রামে নৌকা ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর সাতটি ইউনিয়নে ভোট হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটিতে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। দুটিতে নৌকার প্রার্থী জয় পেয়েছেন।
শেরপুর সদরের কামারেরচর ইউনিয়নেও শুক্রবার সংঘর্ষ হয়েছে, আহত হয়েছেন প্রায় ১১ জন।
সদর থানার ওসি মনসুর আহমেদ জানান, কামারেরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন জেলা যুবলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান। বৃহস্পতিবার নির্বাচনে মেম্বার পদপ্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মুক্তার ও আহসান হাবিবের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ কারণে ওই কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত করা হয়।
এরই জেরে শুক্রবার সকালে মোস্তাফিজুরের সমর্থকরা আহসান হাবিবের এলাকায় হামলা চালালে আহত হন অন্তত ১১ জন।
ওসি আরও জানান, আশঙ্কাজনক অবস্থায় সুজন, নয়ন ও শাহী নামের তিনজনকে জামালপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
পটুয়াখালীর গলাচিপার চরকাজল ইউনিয়নে শুক্রবার সকালে হামলা হয়েছে বিজয়ী নৌকার প্রার্থী সাইদুর রহমান রুবেল মোল্লা ও তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর। রুবেলের বাড়িতে দুটি হাতবোমার বিস্ফোরণ হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যদের বাড়িতে ইটপাটকেল ছোড়া হয়েছে।
এ সময় আহত হয়েছেন অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামে দিনভর সহিংসতায় ১০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত ৬ জনকে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। পরে দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গলাচিপা থানার ওসি শওকত আনোয়ার ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চেয়ারম্যান রুবেলের অভিযোগ, পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থী শাহীন গাজী ও তার সমর্থকরা এই হামলা চালিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে শাহীন গাজীর মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের জামির্ত্তা ইউনিয়নে শুক্রবার ভোরে নৌকা প্রতীকের এক কর্মীর বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগী খোকন মিয়া নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হালিকের কর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছেন।
সিঙ্গাইরের শান্তিপুর পুলিশ ফাঁড়ি তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ খালিদ মনসুর জানান, শুক্রবার ভোর পৌনে ৪টার দিকে খোকন মিয়ার আধাপাকা গোয়ালঘরে আগুন লাগে। স্থানীয়রা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আনতে গোয়ালে থাকা দুটি গরু ও সেখানে রাখা তার মোটরসাইকেলটিও পুড়ে যায়।
খোকন মিয়ার অভিযোগ, নৌকার পক্ষে কাজ করায় নির্বাচনে জয়ী নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল হোসেনের লোকজন এই কাজ করেছে।
ভোট চলাকালে বৃহস্পতিবার দিনভর সংঘর্ষ হয়েছে ফেনী, সাতক্ষীরা, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, লালমনিরহাট, শরীয়তপুর, নারায়ণগঞ্জ, নোয়াখালী, যশোর, শেরপুরসহ নানা জেলায়।
এর মধ্যে নরসিংদীতে তিনজন এবং কুমিল্লা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে তিনজন নিহত হয়েছেন। ভোট শেষে গণনার সময় ও এরপর সন্ধ্যায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে মেহেরপুর, হবিগঞ্জ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এসব ঘটনাকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বললেও নির্বাচনকে স্বতঃস্ফূর্ত এবং উৎসবমুখর বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীতে সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংয়ে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতিতে স্বতঃস্ফূর্ত এবং উৎসবমুখর পরিবেশে গতকাল (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে কিছু প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, অনেকে আহত হয়েছে। এ হতাহতের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
সারা দেশে তৃণমূল পর্যায়ে নির্বাচনকে ঘিরে যে উৎসবমুখরতা তৈরি হয়েছে, তা ধরে রাখতে সবাইকে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘পরবর্তী ধাপের নির্বাচনে যাতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ ধরে রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।’
প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন মাদারীপুর থেকে সাগর হোসেন তামিম, শরীয়তপুর থেকে কাজী মনিরুজ্জামান, গোপালগঞ্জ থেকে মোজাম্মেল হোসেন মুন্না, শেরপুর থেকে শাহরিয়ার শাকির, মানিকগঞ্জ থেকে আজিজুল হাকিম ও পটুয়াখালী থেকে জাকারিয়া হৃদয়।
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য