এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে স্থানীয় অনেক নেতা নির্বাচন করলেও জেলা বা উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের দেখা যায়নি তাদের পক্ষে প্রচারে। অন্য দলগুলোও এই নির্বাচন নিয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি।
অন্যদিকে এই নির্বাচন ঘিরে আটঘাট বেঁধে মাঠে নামে আওয়ামী লীগ। তৃণমূলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে নির্বাচন করা হয় প্রার্থী। যারা বিদ্রোহী হয়েছেন তাদের করা হয়েছে বহিষ্কার। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের দেখা গেছে মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার চালাতে।
এত সবের পরও ভোটে কাঙ্ক্ষিত ফল পায়নি ক্ষমতাসীন দলটি। দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বৃহস্পতিবার সিলেট বিভাগের ৪৩ ইউনিয়নের মধ্যে ২৩টিতে হেরেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। ফাঁকা মাঠেও কেন হোঁচট খেতে হলো আওয়ামী লীগকে- এ নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চলছে জোর আলোচনা।
দলটির স্থানীয় নেতারা বলছেন, প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল, বিদ্রোহী প্রার্থীদের থামাতে না পারা ও গ্রামের মানুষের সঙ্গে নেতাদের দূরত্ব তৈরি হওয়াসহ বেশ কিছু কারণে বেশির ভাগ ইউনিয়নে পরাজয় মেনে নিতে হয়েছে নৌকার প্রার্থীদের।
সিলেট বিভাগের ৪৪টি ইউনিয়নের মধ্যে সংঘাতের কারণে একটি ইউনিয়নের ফল স্থগিত করা হয়েছে। বাকি ৪৩ ইউনিয়নের মধ্যে ২০টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী, ১২টিতে স্বতন্ত্র, ১০টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এবং একটিতে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ী ১২ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ১০ জন আবার বিএনপির, দুজন জামায়াত নেতা।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আলমগীর আহমদ। বিএনপির এই নেতা পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮১ ভোট। তার নিকটতম আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ইলিয়াসুর রহমানের পক্ষে গেছে ৩ হাজার ৮৭৯ ভোট। আর আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. মুল্লুক হোসেন পেয়েছেন ২ হাজার ৬১ ভোট। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দুই নেতার মোট ভোট বিজয়ী প্রার্থীর চেয়ে ৬৫৯ বেশি। এভাবে বিদ্রোহী থাকা সব ইউনিয়নেই ভাগ হয়েছে আওয়ামী লীগের ভোট। সিলেট জেলার ১৫টি ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার ভোট হয়। এর ১০টিতে ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। দল থেকে বহিষ্কার করেও তাদের দমাতে পারেনি আওয়ামী লীগ।
ফল ঘোষণার পর দেখা গেছে, ১৫ ইউনিয়নের ১০টিতেই পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। ৫টি স্বতন্ত্র হয়ে লড়া বিএনপি নেতারা, ৪টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা ও একটিতে জামায়াত নেতা জয় পেয়েছেন।
প্রার্থী বাছাইয়ে ভুলের কারণেও অনেক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন বলে মনে করেন পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ইলিয়াসুর রহমান। তিনি বলেন, ‘প্রার্থী বাছাই যে ভুল ছিল, তা ফলাফল দেখেই বোঝা যাচ্ছে।’
এ অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। নিউজবাংলাকে শুক্রবার তিনি বলেন, ‘ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা কমিটির নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। যাকে সবচেয়ে যোগ্য ও জনপ্রিয় মনে করা হয়েছে, তাকেই মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।’
বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচনে বেশির ভাগ ইউনিয়নে হেরে যাওয়ার প্রসঙ্গে শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিএনপির কথা ও কাজে মিল নেই। তারা ডুবে ডুবে জল খায়। প্রতীক দেয় না বটে, তবে প্রার্থী দেয় ঠিকই।’
তিনি আরও বলেন, ‘জনগণ ভোট দেয়নি বলে আমাদের অনেক প্রার্থী বিজয়ী হতে পারেননি। প্রার্থীরা ভোট নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসতে পারেননি। এটা তাদের ব্যর্থতা।’
বিদ্রোহী প্রার্থীদের ঠেকাতে না পারা প্রসঙ্গে শফিক বলেন, ‘দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় সবাই এখন নিজেকে নেতা মনে করছেন। সবাই নির্বাচন করতে চান। মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হয়ে যান। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ছিলাম। তাদের দল থেকে বহিষ্কার করেছি। কিন্তু কাউকে তো আর জোর করে আমরা বসিয়ে দিতে পারি না। প্রার্থী হওয়া তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।’
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অনেক ইউনিয়নে প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল ছিল। কিছু ক্ষেত্রে বিতর্কিতদেরও প্রার্থী করা হয়েছে। বিদ্রোহীদের ঠেকাতে দলের উদ্যোগ ছিল দায়সারা। অনেক ক্ষেত্রে দলের নেতারা বিদ্রোহীদের মদদও দিয়েছেন। এসবের প্রভাবও পড়েছে ফলে।’
জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যম সারির এই নেতা বলেন, ‘দল দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকায় তৃণমূলের সাধারণ মানুষজনের সঙ্গে নেতাদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। নেতারা এখন আর জনসম্পৃক্ত নন। ফলে ভোটাররা তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও দল আর নেতাদের ব্যর্থতায় ভোটে হারতে হচ্ছে।’
এই নেতার বক্তব্যের সত্যতা মিলেছে ভোটের ফলেও। সিলেটের সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন। কিন্তু ভোটে তিনি হেরে গেছেন জামায়াতের স্থানীয় নেতা আবদুল মনাফের কাছে।
পুরো বিভাগেই ইউপি নির্বাচনের ফলে এমন উদাহরণ রয়েছে অনেক।
সিলেট সদর উপজেলার ৫ ইউনিয়নের মধ্যে সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান হিরণ মিয়া, কান্দিগাঁওয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা আবদুল মনাফ, জালালাবাদে আওয়ামী লীগের ওবায়দুল্লাহ ইসহাক ও হাটখোলায় খেলাফত মজলিসের মাওলানা রফিকুজ্জামান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের মধ্যে ইসলামপূর পূর্ব ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা আলমগীর হোসেন আলম, তেলিখালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ আলফু, ইছাকলসে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাজ্জাদুর রহমান, উত্তর রণিখাইয়ে আওয়ামী লীগের ফয়জুর রহমান ও দক্ষিণ রণিখাইয়ে আওয়ামী লীগের ইকবাল হোসেন ইমাদ বিজয়ী হয়েছেন।
বালাগঞ্জের ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে সদর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা মো. আব্দুল মুনিম, পূর্ব গৌরীপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান মুজিব, পশ্চিম গৌরীপুরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আবদুর রহমান মাখন, বোয়ালজোড়ে আওয়ামী লীগের আনহার মিয়া, দেওয়ানবাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির নাজমুল আলম ও পূর্ব পৈলনপুরে আওয়ামী লীগের শিহাব উদ্দিন জয় পেয়েছেন।
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ৫ ইউনিয়নের মধ্যে একটিতে বিজয়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থী। উপজেলার সাগরনাল ইউপিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুন নূর, পূর্বজুড়ী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ওবায়দুল ইসলাম রুহেল, পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনফর আলী, জায়ফরনগর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা মাসুম রেজা ও গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নে বিএনপি নেতা আব্দুল কাইয়ুম বিজয়ী হয়েছেন।
সুনামগঞ্জের ছাতকের ১০ ইউনিয়নের মধ্যে চারটিতে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বাকি ৭টির মধ্যে ৩টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী, দুটিতে স্বতন্ত্র হয়ে লড়া বিএনপি নেতা ও একটিতে জামায়াত নেতা বিজয়ী হয়েছেন।
উপজেলার ছৈলা আফজালাবাদ ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে গয়াছ আহমদ, গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউনিয়নে সুন্দর আলী, কালারুকা ইউনিয়নে অদুদ আলম ও উত্তর খুরমা ইউনিয়নে বিলাল আহমদ বিজয়ী হয়েছেন।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে ছাতক সদর ইউনিয়নে সাইফুল ইসলাম, দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নে জয়নাল আবেদীন ও জাউয়া বাজার ইউনিয়নে আব্দুল হক নির্বাচিত হয়েছেন।
উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নে বিএনপি নেতা নুরুল আলম ও চরমহল্লা ইউনিয়নে আবুল হাসনাত ও ইসলামপুর ইউনিয়নে জামায়াত নেতা সুফি আলম সোহেল জয় পেয়েছেন।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এম আবুল হোসেন, নরসিংপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী নুর উদ্দিন আহমদ, দোয়ারা সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল হামিদ, মান্নারগাঁও ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া বিএনপি নেতা ইজ্জত আলী, পান্ডারগাঁও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল ওয়াহিদ, দোহালিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শামীমুল ইসলাম শামীম, লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জহিরুল ইসলাম, বোগলাবাজার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মিলন খান এবং সুরমা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এম এ হালিম বীর প্রতীক নির্বাচিত হয়েছেন।
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে ৫টি ইউনিয়নের ৩টিতে চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। একটিতে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। একটির ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে।
আজমিরীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আশরাফুল ইসলাম মোবারুল, বদলপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সুসেনজিৎ চৌধুরী, কাকাইলছেও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মিসবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া ও শিবপাশা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নলিউর রহমান তালুকদার বিজয়ী হন। সংঘর্ষের জেরে এই উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের ফল স্থগিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য