দেশে কোনো সুশাসন নেই মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সরকার মানুষকে পিষ্ট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি করেছে।
রাজধানীর বেইলি রোডের সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের সামনের সড়কে দোকান ও সাধারণ মানুষের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে লিফলেট বিতরণকালে এসব কথা বলেন রিজভী।
লিফলেট বিতরণ শেষে বেইলি রোডে এক সংক্ষিপ্ত পথসভায় সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘আজকে কেরোসিন ডিজেল ও এলপি গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখানে জনগণের কোনো মতামত নেয়া হয়নি। অবৈধ পার্লামেন্ট যখন যেভাবে পারছে গায়ের জোরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি করছে। জনগণের অভিমতের কোনো মূল্য দিচ্ছে না তারা। এরকমই একটি সরকার আজকে ক্ষমতায় বসে আছে।
‘আজকে তারা (সরকার) বড় বড় কথা বলে। আর তারা বলে পলাতক আসামি দিয়ে কি দল চলে? আরে আজকে দেশে যদি সুশাসন থাকতো তাহলে যারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন তারা আজকে কারাগারে থাকতো। অথচ আজকে বিচারে যাদের জেল হতো, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতো তারাই আজকে দস্যুর মতো ক্ষমতা দখল করে বড় বড় কথা বলছে। যারা গণতন্ত্র ও মানুষের পক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আজকে তারা কথা বলে।’
বেগম খালেদা জিয়াকে গণতন্ত্রের প্রতীক ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ উল্লেখ করে রিজভী বলেন, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে জোর করে বন্দি রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জনগণকে পিষ্ট করে তাদেরকে পদদলিত করে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। আজকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে রয়েছে ডিজেল ও কেরোসিন এবং গ্যাস। আজকে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে আজকে কৃষকের ব্যয় বেড়ে যাবে। সব ধরনের খাদ্যদ্রব্য ও কৃষি পণ্যের দাম বাড়বে।’
পথ সভায় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক আবদুস সালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহাতাব, সদস্য সচিব মো. আব্দুর রহিম, নাদিম চৌধুরী, অধ্যক্ষ সেলিম মিয়া, জাকির হোসেন খান, ওমর ফারুক পাটোয়ারী, জাহাঙ্গীর আলম সনি, সাইফুল ইসলাম রাশেদ, সাইদুল ইসলাম টুলু, কবির উদ্দিন মাস্টার, হান্নান মল্লিক, জহিরুল ইসলাম বাশার, শরীফুর রহমান রিপন, হেমায়েত উদ্দিন হিমু, তানভীর আহমেদসহ আরও অনেকে।
গণহত্যা দিবসে শনিবার সন্ধ্যায় আলোক প্রজ্বালন করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে এই আয়োজনে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়েছে।
আলোক প্রজ্বালন-পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ।
বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘শহীদদের স্বপ্ন এখনও পূরণ হয়নি। দেশে এখন পাকিস্তানি ভাবাদর্শ ও অর্থনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে, ধনবৈষম্য ও শ্রেণি বৈষম্য প্রতীয়মান। দেশে ২২ পরিবারের জায়গায় ৯৪ হাজারের বেশি কোটিপতি সৃষ্টি হয়েছে। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্রের অঙ্গীকার থেকে দূরে সরে গেছে শাসক গোষ্ঠী।
‘গণতন্ত্র হরণ করা হয়েছে, সমাজতন্ত্র নির্বাসিত। অন্যদিকে রাষ্ট্রধর্ম সংবিধানে জেঁকে বসেছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসাজশে শিক্ষাব্যবস্থা ও পাঠ্যসূচি সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হচ্ছে।’
বক্তারা দেশের বাম-প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্নীতি-লুটপাটের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে একাত্তরের চেতনায় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করার আহ্বান জানান। সে সঙ্গে অবিলম্বে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ ও গণহত্যা দিবসকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানান তারা।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিনকে দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য করা হয়েছে৷
শনিবার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি লেলিনকে পৌঁছে দেয়া হয়েছে৷
নূহ-উল-আলম লেনিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আমাকে আজ (শনিবার) এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, লেলিন দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের মুখপত্র উত্তরণ-এর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এর আগে দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক এবং সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সংলাপের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চিঠিকে ‘অতীতের মতো ভোট করার লেটেস্ট কৌশল’ বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ইসির এই চিঠির বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে দলের স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হবে।
শনিবার মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা আয়োজন করে বিএনপি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) দেয়া চিঠির প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কমিশনের কিছু করার ক্ষমতা নেই। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তাই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের ঘোষণা দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘অতীতে কেউ ভোট দিতে পেরেছেন? আগের মতো ভোট আর চলবে না। জাপানের রাষ্ট্রদূত তো বলেই ফেললেন যে, বাপের জন্মে শুনিনি যে আগের রাতে ভোট হয়। ওই জন্য এখন আবার নতুন নতুন কৌশল। তার মধ্যে লেটেস্ট কৌশল হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের চিঠি।’
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বৃহস্পতিবার বিকেলে ডিও পত্রের মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
ওই চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কোনো ক্ষমতা আছে নাকি? সে পারবে এই প্রশাসনকে সোজা করতে?’
এ সময় দলের নেতাকর্মীরা ‘ন ‘না’স্লোগান দিতে থাকলে তিনি বলেন, ‘সঠিক কথা। এই নির্বাচন কমিশন চিঠি-টিঠি দিয়ে অযথা কেন হয়রান হচ্ছে। আপনারা ভদ্রলোকের মতো থাকতেন, ভদ্রলোকের মতো থাকেন, বেতন-টেতন নেন।’
ইসিকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ইভিএম দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারছেন না। অতীতে নির্বাচন কমিশন ট্রেনিং বাবদ কোটি কোটি টাকা খেয়ে ফেলেছে। আপনারা এরকম কিছু আছে কিনা সেগুলো দেখেন। অযথা জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আপনারা এসব কথা বলে নিজেদের খাটো করবেন না।’
তিনি বলেন, ‘সংকট একটাই, তা হলো নির্বাচনকালীন সরকারে কে থাকবে? নির্বাচনকালে আওয়ামী লীগ থাকলে সেই ভোট কোনোদিনই সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ হবে না। এটা প্রমাণিত। শুধু জাতীয় সংসদে নয়, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোর ক্ষেত্রেও তাই।
‘সুতরাং এসব অযথা এক্সারসাইজ না করে আসল জায়গায় আসেন। আসল জায়গাটা হচ্ছে, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে হবে। সেটা নিয়ে কাজ করুন, সেটা নিয়ে কথা বলুন, সেটা নিয়ে ঘোষণা দিন। অন্য কোনো কিছু দেশের মানুষ মেনে নেবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মানুষ ন্যায্যমূল্যে চাল-ডাল-তেল কেনার জন্য ট্রাকের পেছনে লাইন দিচ্ছে। অনেকে আবার পাচ্ছেও না। আবার তারা (সরকার) পাতাল রেল করছে। পূর্বাচলের ওই জায়গায় পাতাল রেল করা কি খুব বেশি প্রায়োরিটি হয়ে গেছে? কোনোটাই না। প্রায়োরিটি দেয়া দরকার চাল, ডাল, তেল, লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণকে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ হবে। ৫১ বছরে পর এসেও অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হয় যে স্বাধীনতার মূল চেতনা, মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন আজকে ধুলিসাৎ হয়ে গেছে।
‘একটি দল ক্ষমতায় থাকার জন্য স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট প্রক্রিয়ায় এদেশের মানুষের কথা বলার অধিকার, গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক অধিকারকে লুট করে বাংলাদেশকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গিয়ে সারা বিশ্বে লজ্জ্বায় ফেলে দিয়েছে।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমীরুল ইসলাম খান আলিমের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ।
আরও পড়ুন:বিএনপি রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘দলটি রমজানেও মানুষকে স্বস্তি দিতে চায় না। রমজান মাসে কর্মসূচির নামে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।’
রাজধানীর মিণ্টো রোডের সরকারি বাসভবনে শনিবার দুপুরে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অতীতে আমরা কখনও পবিত্র রমজান মাসে আন্দোলনের ঘোষণা দেখিনি। সবাই রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে বিরত থাকে। রমজানে ইফতার পার্টি হয়, সেখানে কথাবার্তা হয় এবং অন্যান্য কর্মসূচি হয়। বিএনপির কর্মসূচি দেখে মনে হচ্ছে তারা রমজানের পবিত্রতাটাও নষ্ট করতে চায়।’
রমজানে দেশে পণ্যের যথেষ্ট মজুদ থাকার পরও যারা দাম বাড়াচ্ছে তাদেরকে গণবিরোধী হিসেবে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্যি যে রমজান কিংবা কোনো উৎসব-পার্বণ এলে আমাদের দেশের কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা করতে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়।
‘রমজান সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী আমদানি ও উৎপাদননির্ভর সব পণ্যের সরবরাহ যাতে ঠিক থাকে সে ব্যবস্থা করেছেন। ফলে খাদ্যপণ্যের মজুদ এখন শুধু যথেষ্টই নয়, বরং প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। রমজানে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।’
তিনি বলেন, রমজানে যারা দাম বাড়াবে তাদের বিরুদ্ধে সরকার ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিচ্ছে। প্রয়োজনে শাস্তির বিধান রাখা হবে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে, বাজার মনিটর করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে জনগণকেও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।
‘কেউ যেন পণ্যের সংকট তৈরি ও অযথা দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করতে না পারে সে ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রিপোর্টিং করাসহ গণমাধ্যমও ভূমিকা রাখতে পারে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশে সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী সব অপশক্তির মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার দল বিএনপিও পাকিস্তানের দালাল পার্টি। তাদের চেতনায় রয়েছে পাকিস্তান। এদেরকে প্রতিহত, প্রতিরোধ ও পরাজিত করতে হবে।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে ‘২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস’-এর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রশ্ন তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবসে বিএনপির কোনো কর্মসূচি নেই কেন? একাত্তরের গণহত্যার জন্য একটিবারের জন্যও পাকিস্তান দুঃখ প্রকাশ করেনি, ক্ষমা চায়নি। উপরন্তু তারা ৩/৪ লাখ মানুষ আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়নি। অথচ এদেশে এখনও কেউ কেউ বলেন, পাকিস্তান আমল ভালো ছিল। তারা আসলে পাকিস্তানের সেবাদাস, পাকিস্তানের দালাল।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরসহ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর যুবলীগের সাবেক সভাপতি নোমান আল মাহমুদ।
আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড সভা শেষে শনিবার দুপুরে এ তথ্য জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
গণভবনে এ সভার সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভায় ওবায়দুল কাদের ছাড়াও মনোনয়ন বোর্ডের অন্যান্য সদস্য, আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমদের। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।
চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে উপনির্বাচন হবে আগামী ২৭ এপ্রিল।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, এ আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ২৭ মার্চ; বাছাই ২৯ মার্চ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ৫ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ হবে ৬ এপ্রিল।
আরও পড়ুন:আগামী নির্বাচন নিয়ে মতামত দিতে বিএনপিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, সেটি আকস্মিক নয় বলে দাবি করেছেন কমিশনার মো. আহসান হাবিব।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হঠাৎ করে হয়নি। কমিশন সার্বিকভাবে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগেও বিএনপিকে একাধিকবার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।’
এ কমিশনার বলেন, ‘বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের কথা অনুধাবন করে আলোচনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে আসছে। ইসি মনে করে বিএনপির মতো নিবন্ধিত অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক না হোক, অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময় হতেই পারে।
‘বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা হলেও কমে যাবে। তাই আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য বিএনপিকে অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময় এবং আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছারই বহিঃপ্রকাশ।’
সিইসির চিঠি
আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য বিএনপিকে ২৩ মার্চ চিঠি দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
চিঠিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দলীয় অন্য নেতা এবং প্রয়োজনে সমমনা দলগুলোর নেতাসহ আমন্ত্রণ জানানো হয়।
চিঠিতে সিইসি লিখেন, ‘২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন করে আসছি। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সংসদ নির্বাচনের কথা অনুধাবন করে আসছে।’
চিঠিতে বর্তমান ইসি ও আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বর্তমান কমিশনের প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আপনারা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও আপনাদের এমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কৌশলের বিষয়ে কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই।’
চিঠিতে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হলেও কমিশন মনে করে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক না হোক, অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা বা মতবিনিময় হতে পারে। আপনাদের নির্বাচন কমিশনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সদয় সম্মত হলে দিনক্ষণ আলোচনা করে নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রত্যুত্তর প্রত্যাশা করছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য