টানা পতনের মধ্যে থাকা পুঁজিবাজারে পরপর দুই দিনের উত্থানে বিনিয়োগকারীদের মনের চাপ কাটল অনেকটাই।
সপ্তাহের দুই কর্মদিবসে সূচক এক শর বেশি পয়েন্ট পড়ে যাওয়ায় তৈরি হওয়া উৎকণ্ঠার মধ্যে মঙ্গলবারই ৬৮ পয়েন্ট বৃদ্ধির দিন কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে পেয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। পরদিন তা বাড়ল ১১৪ পয়েন্ট।
দুই দিনে সূচকের ১৮২ পয়েন্ট উত্থান বিনিয়োগকারীদের মনে চিড় ধরা আত্মবিশ্বাস অনেকটাই ফিরিয়ে আনবে।
এক দিনে বেড়েছে ৩০১টি কোম্পানির শেয়ার দর। ক্রমেই নিম্নমুখী লেনদেনেও কিছুটা হলেও গতি এসেছে। অর্থাৎ বাড়তি দামেও শেয়ার কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
গত বছরের জুন থেকে পুঁজিবাজারে যে উত্থান দেখা দেয়, তাতে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সূচক বাড়ে সাড়ে তিন হাজার পয়েন্টের বেশি। এই পুরোটা সময় যে টানা উত্থান হয়েছে, এমন নয়। জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত টানা বাড়ার পর ওই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সংশোধনে সূচক কমে সাড়ে আট শ পয়েন্ট।
এরপর ৫ এপ্রিল থেকে ৩০ মে পর্যন্ত আরেক দফা উত্থানে সূচক বাড়ে এক হাজার পয়েন্টের মতো। এরপর এক মাসে একই বৃত্তে ঘুরপাক খেয়ে জুনের শেষ থেকে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত আরেক দফা উত্থানে সূচক বাড়ে এক হাজার পয়েন্টের বেশি।
১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সংশোধনে বেশির ভাগ কোম্পানি দর হারালেও বড় মূলধনি কিছু কোম্পানির উত্থানের কারণে সূচকে প্রভাবটা দেখা যায়নি এক মাস। কিন্তু অক্টোবরের শেষ সময় থেকে বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোও দর হারাতে থাকলে সূচক পড়ে যায় ৫০০ পয়েন্টে বেশি। আর এতে তৈরি হয় আতঙ্ক।
এর মধ্যে টানা সাত দিন সূচকের পতনে যে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়, তখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি অংশীজনদের নিয়ে বসে। এরপর টানা চারদিন সূচকের উত্থান হলেও গত সপ্তাহ এবং চলতি সপ্তাহের দুই দিনে সাত কর্মদিবসের ৬ দিন বড় পতনে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ওঠেন বিনিয়োগকারীরা।
এর মধ্যে সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমতে কমতে এক হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি নেমে আসে।
দর সংশোধন আর কত দিন চলবে, এই প্রশ্নের মধ্যে মঙ্গলবার ঘুরে দাঁড়ানো পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের ততটা আস্থা দিতে পারেনি এ কারণে যে, পতনের মধ্যে এ ধরনের উত্থান প্রায়ই দেখা যায়।
তবে বুধবারের পরিস্থিতিটা একেবারেই ভিন্ন। দিনটা শুরুই হয় ৪০ পয়েন্টের বেশি সূচক বেড়ে। শেয়ার দর বৃদ্ধির হারও ছিল ভালো।
দুই ঘণ্টা পর দুপুর ১২টায় সূচক আগের দিনের চেয়ে ১১০ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে থাকে। এরপর কিছুটা কমলেও শেষ বেলায় আরেক দফা বাড়ে।
দিন শেষে সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৮২ পয়েন্ট। আর লেনদেন দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৬৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এতদিন সূচক পতনের কারণে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। একই সঙ্গে সেসব কোম্পানির শেয়ার বিনিয়োগ সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ একটি পতনের পর এমন উত্থান হওয়াটা স্বাভাবিক।’
সূচকের উত্থানে প্রধান ভূমিকায় ছিল আইসিবির দর বৃদ্ধি। গত সেপ্টেম্বরের দর থেকে ৫০ টাকার বেশি হারিয়ে ফেলা কোম্পানিটির শেয়ার এক দিনেই বেড়েছে ৫.৫৭ শতাংশ। এতে সূচক বেড়েছে ৮.৬৩ পয়েন্ট।
এ ছাড়া ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, বাজার সংশোধনের মধ্যেও দর বাড়া বেক্সিমকো লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মা, লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, রবি, বিকন ফার্মা ও বিএসআরএম লিমিটেডের দর বৃদ্ধি সূচকের উত্থানে ছিল প্রধান ভূমিকায়।
এই ১০টি কোম্পানিই সূচকে যোগ করেছে ৪৮.৯৩ পয়েন্ট।
এদিন সাতটি কোম্পানির দর ৯ শতাংশের বেশি, চারটির দর ৮ শতাংশের বেশি, তিনটির দর ৭ শতাংশের বেশি, ৯টির দর ৬ শতাংশের বেশি, ১৬টির দর ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে ২৬টির দর, ৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে আরও ৩৩টির দর।
অন্যদিকে লভ্যাংশ সমন্বয়ের কারণে শেয়ার দর কমা ডরিন পাওয়ার, ফরচুন সুজ, পূবালী ব্যাংক, এনআরবিসি, জেনেক্সিল ইনফোসিস, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ব্যাংক এশিয়া ও হামিদ ফেব্রিক্সের শেয়ার দর কমায় সূচক কিছুটা কমেছে।
এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৪.৪৭ পয়েন্ট।
সিমেন্ট, প্রকৌশল, আর্থিক, খাদ্য, জ্বালানি, বিমা, তথ্যপ্রযুক্তি, বিবিধ, ওষুধ ও রসায়ন, বস্ত্র, এমনকি মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতেও দর বেড়েছে। তবে উত্থানের এমন দিনেও ব্যাংকে দিনটি খুব একটি ভালো গেছে এমন নয়। শেয়ার দর বাড়লেও দর বৃদ্ধির হার ছিল খুবই কম।
লেনদেনে শীর্ষে যেগুলো
বুধবার লেনদেনে শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার। দর বেড়েছে ২.৪১ শতাংশ।
বেক্সিমকো গ্রুপের বেক্সিমকো ফার্মা মঙ্গলবার দেশের বাজারে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিভাইরাস ওরাল পিল বা মুখে খাওয়ার ওষুধ ‘এমোরিভির‘ বাজারজাত শুরু করেছে।
যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে কোম্পানিটির শেয়ারে। কোম্পানিটিতে লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। লেনদেনে শীর্ষ দশ কোম্পানির মধ্যে কোম্পানিটির অবস্থান ছিল চতুর্থ। লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১.৫২ শতাংশ।
লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে ছিল ওষুধ খাতের ওরিয়ন ফার্মা। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৫.২০ শতাংশ, লেনদেন হয়েছে মোট ৬১ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টের শেয়ার দর বেড়েছে ৩.২৭ শতাংশ। লেনদেন হয়েছে মোট ৪৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
ব্যাংক খাতের আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার ছিল লেনদেনর শীর্ষ পাঁচে। দর বৃদ্ধির হার ছিল ২.২০ শতাংশ। হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ৪২ লাখ ৯৬ হাজার ২৮৪টি।
কাট্টালি টেক্সটাইলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকার। আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ডেল্টা লাইফ, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, সাইফ পাওয়ারটেক ছিল সবচেয়ে বেশি লেনদেনের তালিকায়।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ দশে যেগুলো
সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে তথ্য প্রযুক্তি খাতের এডিএন টেলিকমের। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৭৯ শতাংশ। শেয়ার দর ৫৮ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৩ টাকা ৯০ পয়সা। কোম্পানিটির মোট ৫ লাখ ২৭ হাজার ৮৫৫টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে ছিল সদ্য লেনদেনে আসা সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স। টানা চার দিন দিনের সর্বোচ্চ দামে লেনদেন হওয়া কোম্পানিটির শেয়ার দরে যোগ হয়েছে ৯.৭৭ শতাংশ। তবে লেনদেন হয়েছে কেবল ১ হাজার ২২০টি।
তৃতীয় অবস্থানে ছিল ইসলামী ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, যার শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯.৭১ শতাংশ।
ওষুধ খাতের এডভেন্ট ফার্মার দর ৯.৭০ শতাংশ, ডমিনেজ স্টিলের দর বেড়েছে ৯.৬৭ শতাংশ। এছাড়া এ তালিকায় ছিল আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আমান ফিড।
ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন ক্যাপিটালের শেয়ার দর ৮.৯১ শতাংশ, বিমা খাতের ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের দর ৮.৮১ শতাংশ, তুংহাই নিটিংয়ের দর বেড়েছে ৮.৪৭ শতাংশ।
দর পতনে থাকা শীর্ষ ১০
দরপতনের শীর্ষে ছিল মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের ইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর দাম কমেছে ৩.৭৯ শতাংশ।
এ ছাড়া মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের দর ৩.০৬ শতাংশ, হামিদ ফেব্রিক্সের দর ২.৯৪ শতাংশ, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের দর ২.৯০ শতাংশ কমেছে।
ইস্টার্ন ক্যাবল, ফরচুর সুজ, পদ্মা লাইফ, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স ও জিবিবি পাওয়ার ছিল দরপতনের শীর্ষ তালিকায়।
এই তালিকার শীর্ষে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ডরিন পাওয়ারকে দেখালেও কোম্পানিটির ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার সমন্বয় হয়েছে। রেকর্ড ডেটে শেয়ারদর ছিল ৭৪.৮ টাকা। বোনাস সমন্বয়ে দাম দাঁড়ায় ৬৮ টাকা। দিন শেষে দাম দাঁড়ায় ৬৯ টাকা ১০ পয়সা।
অর্থাৎ সমন্বয়ের পর ১.৬১ শতাংশ দর বেড়েছে। কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি দেড় টাকা নগদ লভ্যাংশও দিয়েছে।
আরও পড়ুন:প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ না থাকাকে দেশের পুঁজিবাজারের চলমান তারল্য সংকটের মূল কারণ হিসেবে দেখছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান (সালমান এফ রহমান)।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেটের একটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রাকচারাল ডিফেট (কাঠামোগত দুর্বলতা) রয়ে গেছে। আমরা অনেকেই অনেক কথা বলি কিন্তু এসব দুর্বলতা সমাধানে যেসব কাজ করা দরকার আমরা তা করছি না।’
বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), দৈনিক সমকাল এবং চ্যানেল ২৪-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ২০২৩-২৪ প্রাক-বাজেট আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সালমান এফ রহমান।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি এ বিনিয়োগ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি এনালাইসিস করে দেখেছি যে, আমাদের দৈনিক যে লেনদেন এতে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ হচ্ছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের। আর ৫ থেকে ১০ শতাংশ হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। আইসিবি টোটালি ইনঅ্যাকটিভ (নিষ্ক্রিয়), এছাড়া সিটি ব্যাংক ও অন্যান্য বিনিয়োগকারী ব্যাংক রয়েছে তারা দৈনিক লেনদেনের ৫ শতাংশ অংশগ্রহণ করছে। মূল সমস্যাটা এই জায়গাতেই।’
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের ফ্রন্টিয়ার মার্কেটে দৈনিক লেনদেনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ থাকে ৯০ শতাংশ আর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী থাকে ১০ শতাংশ।’
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘আমি আজকেও এটা শুনেছি যে, কথার কথায় সবাই বলে ছোট বিনিয়োগকারীদের আমাদের বাঁচাতে হবে। ছোট বিনিয়োগকারীকে রক্ষা করা তো সরকারের দায়িত্ব না। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের এখানে বিনিয়োগ করাই উচিত না। তাদের উচিত প্রাতিষ্ঠানিক মাধ্যমে বিনিয়োগ করা।
‘এখানে আমরা শুধু ব্রোকারকে ব্যবহার করি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে, কিন্তু বিনিয়োগের সিদ্ধান্তগুলো একজন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী হিসেবে আমি নিজে নিচ্ছি। আর যখনই আমার ভুলের কারণে আমি লস করি তখন দায়িত্বটা সরকারে হয়ে যাবে। বাহ খুব সুন্দর।’
প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, ‘এই স্ট্রাকচারাল ডিফেটটা (কাঠামোগত দুর্বলতা) যদি আমরা না ঠিক করতে পারি, তাহলে আমাদের পুঁজিবাজার বড় করা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।’
সালমান এফ রহামন বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি বিশ্বব্যাপী সমস্যা। রিজার্ভের সমস্যা সমাধানে আমরা আমদানি কমাতে সক্ষম হয়েছি। আগামী জুনে রিজার্ভ নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে, আইএমএফ ঋণ দেবে না বিভিন্ন আশঙ্কা করেছিলেন অনেকে। কিন্তু আইএমএফ থেকে ঋণ পাওয়া গেছে। প্রথম দফায় ঋণ ছাড়ও হয়েছে। ব্যাংক সুদের হার সীমা তুলে দেওয়া হচ্ছে। ম্যাক্রো ইকোনমিতে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে আমরা সঠিক পথেই আছি।’
তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার চাঙা করতে বন্ড মার্কেটকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সব পণ্যে প্রণোদনা দিতে হবে। আমরা অনেক দেশ, এমনকি উন্নত দেশের তুলনায় ভালো আছি। বেসরকারি খাতের সহযোগিতায় আমরা অনেক ভালো পজিশনে আছি। কৃষি, প্রবাসী আয় ও রপ্তানি খাতের কারণে আমাদের পজিশন ধরে দেখতে পেরেছি।’
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত বিশ্বের মধ্যেই কম। ট্যাক্স নেট ও জিডিপি বাড়াতে হলে অটোমেশনের বিকল্প নেই। কাঠামোগত সমস্যা আছে, তা হচ্ছে পরোক্ষ করের নির্ভরশীলতা। এটা কমাতে হবে। প্রত্যক্ষ কর বাড়াতে হবে। বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা এখনো রাজস্ব আদায়ে কাস্টমসের নির্ভরতা বেশি। এটা কমাতে হবে।
‘ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন যদি ২০১৪ সালে করতে পারতাম তাহলে এই সেক্টর নিয়ে এতো প্রশ্ন উঠতো না। কর আইন সহজ করতে হবে। কর নেট বৃদ্ধির কথা বলি, কিন্তু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কর দিতে চায় না। এটাই বাস্তবতা। সবাই করের আওতায় না এলে করনেট বৃদ্ধি কীভাবে হবে? ব্যবসায় লাভ করছে, কিন্তু কর দিতে সমস্যা কোথায়? সব জায়গায় কর অব্যাহতি দিলে কর কোথা থেকে আসবে।’
মেনমেইড ফাইবারে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে মেনমেইড ফাইভার মেনমেইড ফাইভার শুরু করেছি। এতদিন আমরা কী করলাম? ইয়াংওয়ান ২০ বছর আগে এগুলো করেছে। বর্তমানে তারা বিলিয়ন ডলারের মেনমেইড করতেছে, তাদের কি ইনসেন্টিভ দেয়া হইছে? তাহলে আমরা কেন এতদিন বসে রইলাম?’
ডিসিসিআই সভাপতি সামীর সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, সাবেক সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:দেশের পুঁজিবাজারে সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবস বুধবার সূচক ও লেনদেনে ভাটা পড়েছে। আজ সূচক কমার সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবার সব সূচকের পতন হয়। আজ প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ১৬ দশমিক ২৬ পয়েন্ট হারায়। সূচকটি অবস্থান নেয় ৬ হাজার ২০৬ পয়েন্টে।
‘ডিএসইএস’ ৩ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক ৫ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমেছে।
সূচকের পতনের সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেনও কমে। আজ ৩২৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়, যা গত ১৭ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
ডিএসইতে ৩১২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়। এর মধ্যে ২১৩টি কোম্পানির শেয়ারদরই ছিল অপরিবর্তিত। দর বেড়েছে ১৭ কোম্পানির, বিপরীতে ৮২ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে।
অপর বাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়। সিএসইতে ৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে মঙ্গলবার নামমাত্র লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, এদিন ৩৪৯ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বেশি। আর এই সামান্য লেনদেন বৃদ্ধিতেও আগের দিনের সূচকের সঙ্গে যোগ হয়েছে ১৮ দশমিক ৭২ পয়েন্ট। বর্তমানে ডিএসইএক্স অবস্থান করছে ৬ হাজার ২২২ পয়েন্টে।
জানা গেছে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৫৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ২২০ পয়েন্টে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২৫ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮৭টির, কমেছে ১৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২৪টির।
অপর শেয়ারবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৮২ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৫৭টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫০টির দর বেড়েছে, কমেছে ১২টির এবং ৯৫টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে ১২ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো তাদের খেলাপি ঋণের হিসাব ঠিকমতো দেখাচ্ছে না। খেলাপি ঋণ হিসাবের আন্তর্জাতিক আইন মানা হলে ব্যাংকগুলোর সম্পদ আরও কম হতো। কিন্তু ব্যাংকগুলো সেই আইন না মেনে নিজেদের সম্পদ বাস্তবের চেয়ে বেশি দেখাচ্ছে।
ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) চেয়ারম্যান মো. হামিদ উল্লাহ ভূঁঞা সোমবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
পুঁজিবাজারভিত্তিক সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিট্যাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) দেশের পুঁজিবাজার নিয়ে ‘সিএমজেএফ টক’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে।
হামিদ উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশে আইএফআরএস মেনে হিসাব রাখার কথা। কিন্তু দেশের ব্যাংক খাতে আইএফআরএস ৯-এর নিয়ম মানা হচ্ছে না। বাংলাদেশে আইএফআরএস-এর সব আইন মানলে ব্যাংকের সম্পদ ৪০ শতাংশ অবলোপন করতে হবে বা কমে যাবে।
‘আইএফআরএস হচ্ছে হিসাব রক্ষণের আন্তর্জাতিক নিয়ম। এই নিয়মগুলো বিশ্বের সব দেশের কোম্পানি মেনে চলে, যাতে আর্থিক প্রতিবেদনগুলো স্বচ্ছ হয়।
‘আইএফআরএস-এর ৯ নম্বর আইনটিতে বলা আছে- কিভাবে একটি কোম্পানি তাদের আর্থিক দায় ও আর্থিক সম্পদের হিসাব রাখবে। ব্যাংক যে ঋণগুলো দেয় সেগুলো তাদের হিসাব বইয়ে আর্থিক সম্পদ হিসেবে থাকে। আন্তর্জাতিক মান ব্যবহার করলে এই ঋণ বা আর্থিক সম্পদ অনেক কম দেখাতে হতো।’
এফআরসি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিবেদনে জালিয়াতি ঠেকাতে ২০১৫ সালে গড়ে তোলা হয় ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি)। এখন যদি কোনো হিসাব নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আর্থিক প্রতিবেদনে জালিয়াতি করতে সাহায্য করে তাকে শাস্তির আওতায় আনা যায়।
‘এ মুহূর্তে আইএফআরএস-এর ৯ ধারা বাস্তবায়ন করা হলে ব্যাংকের সম্পদ ৪০ শতাংশ রাইট অফ (অবলোপন) করতে হবে। আমরা চাই এটি বাস্তবায়ন করা হোক। তাহলে ব্যাংকের প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে।’
রাজধানীর পল্টনে সিএমজেএফ-এর নিজস্ব কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি জিয়াউর রহমান। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।
হামিদ উল্লাহ ভূঁঞা বলেন, ‘খেলাপি ঋণ বছরের পর বছর টেনে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে। এই টাকা কি কখনো ফেরত পাওয়া যাবে? ব্যাংকগুলো যদি আদায় করতে সক্ষম হয় তাহলে সমস্যা নেই। তবে আমাদের দেশের সংস্কৃতিতে দেখি খেলাপি ঋণ আদায় করা যায় না। বরং ২ শতাংশ জমা দিয়ে এগুলোকে আবার নিয়মিত ঋণে কনভার্ট করা হয়।
‘এ ২ শতাংশ দিয়ে তো ইন্টারেস্ট (সুদ আয়) আসে না। কারণ ইন্টারেস্ট তার চেয়ে অনেক বেশি। অথচ রি-সিডিউল করে রেগুলার করা হচ্ছে। আর ওই ঋণখেলাপি তখন আরেক ব্যাংকে গিয়ে লোন নিচ্ছে।’
হামিদ উল্লাহ বলেন, ‘আমি মনে করি আইএফআরএস-৯ বাস্তবায়ন করা হোক। ব্যাংকের সব ফিগার রিটার্ন অফ করে ব্যাংক একটি সেটেলড পজিশনে আসুক। কিন্তু সম্ভব না। আমি অনেকবার চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এটা মেনেই নিচ্ছে না।’
এফআরসিতে নিবন্ধিত হতে হবে অডিটরদের
আগামী ৩০ মে-র মধ্যে অডিটরদের এফআরসিতে নিবন্ধিত হতে হবে। কোনো অডিটর নিবন্ধিত না হলে তিনি তালিকাভুক্ত কোম্পানিসহ জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠান অডিট করতে পারবে না।
এফআরসি চেয়ারম্যান বলেন, কোনো কোম্পানির রাজস্ব ৫০ কোটি টাকা বা তার বেশি হলে, সেই কোম্পানি জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কোম্পানি হিসেবে বিবেচিত হবে।
এ ধরনের প্রতিষ্ঠান আছে ৩ হাজার চার শ’র মতো। এর বাইরে আড়াই হাজারের মতো ক্ষুদ্র ঋণ দেয়া প্রতিষ্ঠান আছে। এগুলোও জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হবে। সব মিলিয়ে সাড়ে ৫ হাজারের মতো প্রতিষ্ঠান জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট হিসেবে বিবেচিত হবে। কোনো অডিটর এফআরসিতে তালিকাভুক্ত না হলে এসব প্রতিষ্ঠান অডিট করতে পারবে না।
নিয়ম মানছে না বিমা কোম্পানি
হামিদ উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘জীবন বিমা কোম্পানিগুলো কখনও প্রফিট অ্যান্ড লস অ্যাকাউন্ট করে না। তারা একটা অ্যাকাউন্ট করে, সেটি হলো রেভিনিউ অ্যাকাউন্ট। কিন্তু আইএএস ১-এ স্পষ্ট বলা আছে, আপনার কোম্পানির নেচার যাই হোক না কেন প্রফিট অ্যান্ড লস অ্যাকাউন্ট করতে হবে। কিন্তু এরা তা করে না। এমনকি আমরা চিঠি দিলে রেসপন্সও করে না।
‘অন্যান্য রেগুলেটর কিছুটা হলেও রেসপন্স করে। এই একটা সেক্টর, যেখান থেকে আমরা আজ পর্যন্ত কোনো রেসপন্স পাইনি।’
এফআরসিকে শক্তিশালী করা হচ্ছে
হামিদ উল্লাহ ভূঁঞা বলেন, এফআরসিতে জনবল নিয়োগ দেয়ার পর আমি প্রথম হাত দেব ক্যাপিটাল মার্কেটে। আমি ক্যাপিটাল মার্কেটের কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতার অবস্থা দেখতে চাই। ক্যাপিটাল মার্কেটের কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনে যদি ম্যানিপুলেশন হয় তাহলে অনেক মার্জিনাল ইনভেস্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিনিয়োগ সীমার অনেক নিচে বা তুলনামূলক সক্ষমতার কম শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা ব্যাংকগুলোর ওপর কঠোর হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এলক্ষ্যে মঙ্গলবার থেকে চিঠি ইস্যু করা হবে।
শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের মাধ্যমে সহায়তার প্রত্যাশা থাকে। কিন্তু ফেব্রুয়ারির তথ্য অনুযায়ী, অনেক ব্যাংকের বিনিয়োগ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সীমার তুলনায় কম। এই অবস্থায় ওইসব ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগে আনার জন্য পদক্ষেপ নিতে চিঠি ইস্যু করা হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংক ও লিজিং কোম্পানিগুলো একক হিসাবে মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫% ও সাবসিডিয়ারিসহ সমন্বিতভাবে ৫০% শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু অনেক ব্যাংক এর ধারে কাছেও নেই। অথচ ওইসব প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ারবাজার থেকে নিয়মিত অর্থ উত্তোলন করে ব্যবসার পরিধি বাড়িয়ে থাকে।
এবার তাতে অনীহা প্রকাশ করতে যাচ্ছে বিএসইসি।
বিএসইসির একটি সূত্রে জানা গেছে, শেয়াবাজার থেকে অর্থ নিয়ে ব্যাংকগুলো বড় হচ্ছে। কিন্তু শেয়ারবাজারে তাদের বিনিয়োগে অনীহা। তাই ওইসব প্রতিষ্ঠানের বন্ডেও অনীহা প্রকাশ করবে বিএসইসি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, কমিশন নিয়মিতভাবে ব্যাংকের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের বিষয়টি তদারকি করে। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারির তথ্য অনুযায়ি অনেক ব্যাংকের বিনিয়োগ সক্ষমতার বা বিনিয়োগ সীমার তুলনায় কম। কিন্তু শেয়ারবাজারের সহায়তায় ব্যাংকের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করা হয়। যে প্রত্যাশা পূরণে ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগে আনতে চিঠি দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, যেসব ব্যাংক শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সীমার অনেক তলনাতি বা তুলনামূলক কম বিনিয়োগ, সেসব কোম্পানির পারপিচ্যুয়াল ও সাবঅর্ডিনেটেড বন্ডে অনুমোদনের ক্ষেত্রে ধীরগতি নীতি অনুসরন করা হবে। আর যেসব প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ সীমার কাছাকাছি বিনিয়োগ, সেগুলোকে সুপার ফাস্ট (দ্রুত গতিতে) বন্ডের অনুমোদন দেওয়া হবে।
আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানে দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেনের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সোমবার বিএসইসির সহকারি পরিচালক মোসাভীর আল আশিকের সই করা এক চিঠিতে জানানো হয়েছে, রমজানে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা ২০ মিনিট পর্যন্ত দেশের দুই শেয়ারবাজার-ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন হবে। আর ক্লোজিং সেশন থাকবে ১টা ২০ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।
ওই চিঠিটি উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে সিডিবিএল ও সিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিএমবিএ, ডিবিএ, এএএমসি এবং সিএমএসএফের চেয়ারম্যান কাছে পাঠানো হয়েছে। এর কপি বিএসইসির কমিশনার, পরিচালক ও চেয়ারম্যানের পিএসের কাছেও দেয়া হয়েছে।
স্বাভাবিক সময়ে শেয়ারবাজারে সকাল ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত লেনদেন অনুষ্ঠিত হয়।
কয়েক দিন ৫০০ কোটি, ৬০০ কোটি ও ৭০০ কোটি টাকার ঘরে লেনদেন হয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার পুঁজিবাজারে লেনদেন কমে ফের নেমে এলো ৩০০ কোটি টাকার ঘরে।
লেনদেন কমার এ দিনে পতন হয়েছে মূল্যসূচকেরও।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারি ৩২৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। সেদিন সূচক ছিল ৬ হাজার ২১৯ পয়েন্ট।
সোমবার ডিএসইতে লেনদেন হয় ৩৪৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৫২ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার। আগের দিনের তুলনায় সোমবার ১০৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা কম লেনদেন হয়।
লেনদেন কমার পাশাপাশি আগের দিনের চেয়ে সূচক ৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ৬ হাজার ২০৪ পয়েন্টে।
ডিএসইতে ৩২০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল।
আজ দর বাড়া কোম্পানির সংখ্যা ৫১টি। দর কমেছে ৩৫টির; অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩৪টি কোম্পানির।
অপর পুঁজিবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের নামমাত্র উত্থানে লেনদেন শেষ হয়।
সিএসইতে ৮ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য