টানা পতনের মধ্যে থাকা পুঁজিবাজারে পরপর দুই দিনের উত্থানে বিনিয়োগকারীদের মনের চাপ কাটল অনেকটাই।
সপ্তাহের দুই কর্মদিবসে সূচক এক শর বেশি পয়েন্ট পড়ে যাওয়ায় তৈরি হওয়া উৎকণ্ঠার মধ্যে মঙ্গলবারই ৬৮ পয়েন্ট বৃদ্ধির দিন কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে পেয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। পরদিন তা বাড়ল ১১৪ পয়েন্ট।
দুই দিনে সূচকের ১৮২ পয়েন্ট উত্থান বিনিয়োগকারীদের মনে চিড় ধরা আত্মবিশ্বাস অনেকটাই ফিরিয়ে আনবে।
এক দিনে বেড়েছে ৩০১টি কোম্পানির শেয়ার দর। ক্রমেই নিম্নমুখী লেনদেনেও কিছুটা হলেও গতি এসেছে। অর্থাৎ বাড়তি দামেও শেয়ার কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
গত বছরের জুন থেকে পুঁজিবাজারে যে উত্থান দেখা দেয়, তাতে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সূচক বাড়ে সাড়ে তিন হাজার পয়েন্টের বেশি। এই পুরোটা সময় যে টানা উত্থান হয়েছে, এমন নয়। জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত টানা বাড়ার পর ওই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সংশোধনে সূচক কমে সাড়ে আট শ পয়েন্ট।
এরপর ৫ এপ্রিল থেকে ৩০ মে পর্যন্ত আরেক দফা উত্থানে সূচক বাড়ে এক হাজার পয়েন্টের মতো। এরপর এক মাসে একই বৃত্তে ঘুরপাক খেয়ে জুনের শেষ থেকে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত আরেক দফা উত্থানে সূচক বাড়ে এক হাজার পয়েন্টের বেশি।
১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সংশোধনে বেশির ভাগ কোম্পানি দর হারালেও বড় মূলধনি কিছু কোম্পানির উত্থানের কারণে সূচকে প্রভাবটা দেখা যায়নি এক মাস। কিন্তু অক্টোবরের শেষ সময় থেকে বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোও দর হারাতে থাকলে সূচক পড়ে যায় ৫০০ পয়েন্টে বেশি। আর এতে তৈরি হয় আতঙ্ক।
এর মধ্যে টানা সাত দিন সূচকের পতনে যে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়, তখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি অংশীজনদের নিয়ে বসে। এরপর টানা চারদিন সূচকের উত্থান হলেও গত সপ্তাহ এবং চলতি সপ্তাহের দুই দিনে সাত কর্মদিবসের ৬ দিন বড় পতনে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ওঠেন বিনিয়োগকারীরা।
এর মধ্যে সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমতে কমতে এক হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি নেমে আসে।
দর সংশোধন আর কত দিন চলবে, এই প্রশ্নের মধ্যে মঙ্গলবার ঘুরে দাঁড়ানো পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের ততটা আস্থা দিতে পারেনি এ কারণে যে, পতনের মধ্যে এ ধরনের উত্থান প্রায়ই দেখা যায়।
তবে বুধবারের পরিস্থিতিটা একেবারেই ভিন্ন। দিনটা শুরুই হয় ৪০ পয়েন্টের বেশি সূচক বেড়ে। শেয়ার দর বৃদ্ধির হারও ছিল ভালো।
দুই ঘণ্টা পর দুপুর ১২টায় সূচক আগের দিনের চেয়ে ১১০ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে থাকে। এরপর কিছুটা কমলেও শেষ বেলায় আরেক দফা বাড়ে।
দিন শেষে সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৮২ পয়েন্ট। আর লেনদেন দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৬৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এতদিন সূচক পতনের কারণে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। একই সঙ্গে সেসব কোম্পানির শেয়ার বিনিয়োগ সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ একটি পতনের পর এমন উত্থান হওয়াটা স্বাভাবিক।’
সূচকের উত্থানে প্রধান ভূমিকায় ছিল আইসিবির দর বৃদ্ধি। গত সেপ্টেম্বরের দর থেকে ৫০ টাকার বেশি হারিয়ে ফেলা কোম্পানিটির শেয়ার এক দিনেই বেড়েছে ৫.৫৭ শতাংশ। এতে সূচক বেড়েছে ৮.৬৩ পয়েন্ট।
এ ছাড়া ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, বাজার সংশোধনের মধ্যেও দর বাড়া বেক্সিমকো লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মা, লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, রবি, বিকন ফার্মা ও বিএসআরএম লিমিটেডের দর বৃদ্ধি সূচকের উত্থানে ছিল প্রধান ভূমিকায়।
এই ১০টি কোম্পানিই সূচকে যোগ করেছে ৪৮.৯৩ পয়েন্ট।
এদিন সাতটি কোম্পানির দর ৯ শতাংশের বেশি, চারটির দর ৮ শতাংশের বেশি, তিনটির দর ৭ শতাংশের বেশি, ৯টির দর ৬ শতাংশের বেশি, ১৬টির দর ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে ২৬টির দর, ৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে আরও ৩৩টির দর।
অন্যদিকে লভ্যাংশ সমন্বয়ের কারণে শেয়ার দর কমা ডরিন পাওয়ার, ফরচুন সুজ, পূবালী ব্যাংক, এনআরবিসি, জেনেক্সিল ইনফোসিস, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ব্যাংক এশিয়া ও হামিদ ফেব্রিক্সের শেয়ার দর কমায় সূচক কিছুটা কমেছে।
এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৪.৪৭ পয়েন্ট।
সিমেন্ট, প্রকৌশল, আর্থিক, খাদ্য, জ্বালানি, বিমা, তথ্যপ্রযুক্তি, বিবিধ, ওষুধ ও রসায়ন, বস্ত্র, এমনকি মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতেও দর বেড়েছে। তবে উত্থানের এমন দিনেও ব্যাংকে দিনটি খুব একটি ভালো গেছে এমন নয়। শেয়ার দর বাড়লেও দর বৃদ্ধির হার ছিল খুবই কম।
লেনদেনে শীর্ষে যেগুলো
বুধবার লেনদেনে শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার। দর বেড়েছে ২.৪১ শতাংশ।
বেক্সিমকো গ্রুপের বেক্সিমকো ফার্মা মঙ্গলবার দেশের বাজারে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিভাইরাস ওরাল পিল বা মুখে খাওয়ার ওষুধ ‘এমোরিভির‘ বাজারজাত শুরু করেছে।
যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে কোম্পানিটির শেয়ারে। কোম্পানিটিতে লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। লেনদেনে শীর্ষ দশ কোম্পানির মধ্যে কোম্পানিটির অবস্থান ছিল চতুর্থ। লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১.৫২ শতাংশ।
লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে ছিল ওষুধ খাতের ওরিয়ন ফার্মা। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৫.২০ শতাংশ, লেনদেন হয়েছে মোট ৬১ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টের শেয়ার দর বেড়েছে ৩.২৭ শতাংশ। লেনদেন হয়েছে মোট ৪৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
ব্যাংক খাতের আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার ছিল লেনদেনর শীর্ষ পাঁচে। দর বৃদ্ধির হার ছিল ২.২০ শতাংশ। হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ৪২ লাখ ৯৬ হাজার ২৮৪টি।
কাট্টালি টেক্সটাইলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকার। আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ডেল্টা লাইফ, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, সাইফ পাওয়ারটেক ছিল সবচেয়ে বেশি লেনদেনের তালিকায়।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ দশে যেগুলো
সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে তথ্য প্রযুক্তি খাতের এডিএন টেলিকমের। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৭৯ শতাংশ। শেয়ার দর ৫৮ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৩ টাকা ৯০ পয়সা। কোম্পানিটির মোট ৫ লাখ ২৭ হাজার ৮৫৫টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে ছিল সদ্য লেনদেনে আসা সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স। টানা চার দিন দিনের সর্বোচ্চ দামে লেনদেন হওয়া কোম্পানিটির শেয়ার দরে যোগ হয়েছে ৯.৭৭ শতাংশ। তবে লেনদেন হয়েছে কেবল ১ হাজার ২২০টি।
তৃতীয় অবস্থানে ছিল ইসলামী ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, যার শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯.৭১ শতাংশ।
ওষুধ খাতের এডভেন্ট ফার্মার দর ৯.৭০ শতাংশ, ডমিনেজ স্টিলের দর বেড়েছে ৯.৬৭ শতাংশ। এছাড়া এ তালিকায় ছিল আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আমান ফিড।
ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন ক্যাপিটালের শেয়ার দর ৮.৯১ শতাংশ, বিমা খাতের ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের দর ৮.৮১ শতাংশ, তুংহাই নিটিংয়ের দর বেড়েছে ৮.৪৭ শতাংশ।
দর পতনে থাকা শীর্ষ ১০
দরপতনের শীর্ষে ছিল মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের ইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর দাম কমেছে ৩.৭৯ শতাংশ।
এ ছাড়া মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের দর ৩.০৬ শতাংশ, হামিদ ফেব্রিক্সের দর ২.৯৪ শতাংশ, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের দর ২.৯০ শতাংশ কমেছে।
ইস্টার্ন ক্যাবল, ফরচুর সুজ, পদ্মা লাইফ, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স ও জিবিবি পাওয়ার ছিল দরপতনের শীর্ষ তালিকায়।
এই তালিকার শীর্ষে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ডরিন পাওয়ারকে দেখালেও কোম্পানিটির ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার সমন্বয় হয়েছে। রেকর্ড ডেটে শেয়ারদর ছিল ৭৪.৮ টাকা। বোনাস সমন্বয়ে দাম দাঁড়ায় ৬৮ টাকা। দিন শেষে দাম দাঁড়ায় ৬৯ টাকা ১০ পয়সা।
অর্থাৎ সমন্বয়ের পর ১.৬১ শতাংশ দর বেড়েছে। কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি দেড় টাকা নগদ লভ্যাংশও দিয়েছে।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
মন্তব্য