গত দেড় বছরে পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বেশি হারে দর বৃদ্ধি পাওয়া বেক্সিমকো লিমিটেডের আরও সোয়া কোটির মতো শেয়ার অক্টোবরে কিনেছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। আগের মাসে তারা ৪৪ লাখ শেয়ার বিক্রি করলেও চার মাসে কিনেছে সাড়ে ১১ কোটির বেশি শেয়ার।
গত বছরের জুলাইয়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ১৩ টাকা। সেটি এখন ছাড়িয়ে গেছে ১৭০ টাকা। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পুঁজিবাজারে দর সংশোধনে বেশির ভাগ কোম্পানি ব্যাপক হারে দর হারালেও এই সময়েও বেড়েছে শেয়ার দর।
২০২০ সালের জুনে অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের ২২ দশমিক ৪১ শতাংশ ধারণ করেছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। আর ওই বছরের জুলাই থেকে শেয়ার দরের উত্থান শুরু হয়। আর দাম একপর্যায়ে সেপ্টেম্বরে ৩০ টাকা, ডিসেম্বরের শুরুতে ৫০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। সেখানে কয়েকটির ঘুরপাক খাওয়ার পর জানুয়ারিতে আবার ৭০ আর ফেব্রুয়ারিতে ৯০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
এরপর সেখান থেকে এপ্রিল নাগাদ নেমে আসে ৭০ টাকার নিচে। আর মে মাসের মধ্যে আবার তা ৯০ টাকার ঘরে ওঠে।
চলতি বছরের জুন ও জুলাই মাসে দাম ৯০ টাকার ঘরে ঘুরপাক খেয়ে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ লেনদেন হচ্ছিল।
উত্থানের এই সময়ে বেক্সিমকোর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বিপুলসংখ্যক শেয়ার বিক্রি করেছে।
গত বছরের জুন শেষে মোট শেয়ারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হিস্যার চেয়ে চলতি বছরের জুন শেষে তা কমে যায় প্রায় ৯ শতাংশ। গত ৩০ জুন মোট শেয়ারের ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ ধারণ করে থাকে তারা।
অর্থাৎ এক বছরে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। সব মিলিয়ে শেয়ার সংখ্যা ৭ কোটি ৭০ লাখ ২৮ হাজার ৪২৯টি।
এরপর চলতি বছরের জুলাই থেকে চিত্র ঘুরে যায়। শেয়ার দরও বাড়তে থাকে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বেক্সিমকোর শেয়ারে হিস্যাও বাড়াতে থাকে।
প্রথম এক মাস শেয়ার দর সেভাবে না বাড়লেও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মালিকানা বাড়ে ব্যাপক হারে। গত ৩০ জুন শেয়ার দর ছিল ৮৯ টাকা ৫০ পয়সা, সেখান থেকে এক মাস পর ২৯ জুলাই তা গিয়ে দাঁড়ায় ৯১ টাকা ৩০ পয়সায়।
ওই মাস শেষে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হিস্যা বেড়ে হয় ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ। অর্থাৎ এক মাসেই বাড়ে ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ।
অর্থাৎ এই মাসে কোম্পানিটির ৪ কোটি ৩ লাখ ১০ হাজার ৬৬৮টি শেয়ার কেনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।
পরের মাস আগস্টে দাম আরও বাড়ে, আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনাও বাড়িয়ে দেয়। এই মাস শেষে শেয়ার দর বেড়ে হয় ১০৭ টাকা ২০ পয়সা।
শেয়ার দর ১৫ টাকা ৯০ পয়সা বাড়ার মাসে বেক্সিমকোর মোট শেয়ারের ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ বা ৬ কোটি ৮৯ লাখ ৬৬ হাজার ২৯৫টি কেনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।
এরপর সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর এক মাসে শেয়ার দর আরও বাড়ে। তবে এই মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার না কিনে বিক্রি করেছে।
সেপ্টেম্বর শেষে শেয়ার দর আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১৩৭ টাকা ২০ পয়সা। এই মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হিস্যা কমে শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ। মোট শেয়ারের ২৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ মালিকানা থাকে তাদের হাতে।
অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের এই সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৪৯০টি শেয়ার বিক্রি করেছে।
অক্টোবরে বেক্সিমকোর শেয়ার দর দেয় আরেক লাফ। এই মাস শেষে দর বেড়ে হয় ১৬৩ টাকা ১০ পয়সা। আগের মাসে শেয়ার বিক্রি করলেও দাম বাড়িয়ে আবার শেয়ার কেনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।
এই মাস শেষে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হিস্যা বেড়ে হয়েছে ২৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। অর্থাৎ এই এক মাসে মোট শেয়ারের ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ, অর্থাৎ এক কোটি ২১ লাখ ৮০ হাজার ৮৩২টি শেয়ার কিনেছে তারা।
গত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসেই বেক্সিমকোর ১১ কোটি ৬৮ লাখ ১৩ হাজার ৩০৬টি শেয়ার কিনেছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। এই সময়ে শেয়ার দর বেড়েছে ৭৩ টাকা ৬০ পয়সা।
আগ্রহ কেন
এক যুগ আগে পুঁজিবাজারে মহাধসের আগেও অন্যান্য কোম্পানির মতো বেক্সিমকোর শেয়ার দরেও ব্যাপক উত্থান হয়েছিল।
সেই ধসের আগে বেক্সিমকোর শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৪৫ টাকার বেশি। সেটি এক দশক ধরেই ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। এর মধ্যে ২০২০ সালে এই সময়ের সর্বনিম্ন আয় করে কোম্পানিটি। ওই বছর শেয়ারপ্রতি আয় হয় ৫১ পয়সা।
২০২০ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকেও আয় আহামরি কিছু হয়নি। এই তিন মাসে শেয়ারপ্রতি আয় হয় ১৪ পয়সা। কিন্তু এরপর করোনার মধ্যে পরিস্থিতি ঘুরে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই) বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ আয় করে কোম্পানিটি। আর এই সুরক্ষাসামগ্রী তৈরির জন্য প্রায় ৯০০ কোটি টাকায় পিপিই পার্ক তৈরি করে বেক্সিমকো।
রপ্তানি শুরু করার পর গত ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার আনুষ্ঠানিকভাবে এই পার্ক উদ্বোধন করেন। সেদিন জানানো হয়, এই পার্ক থেকে যুক্তরাষ্ট্র বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকার পিপিই ও অন্যান্য সুরক্ষাসামগ্রী কিনবে।
এই বিষয়টি ছাড়াও বেক্সিমকোর দুটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ পাওয়াও শেয়ার দর উত্থানে ভূমিকা রেখেছে।
এসব পণ্য রপ্তানিতে ভর করে পাশাপাশি অন্য আয় যোগ হওয়ায় গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৭৮ পয়সা, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তৃতীয় প্রান্তিকে ১ টাকা ৯২ পয়সা এবং এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি ৪ টাকা ৩০ পয়সা আয় করে কোম্পানিটি।
অর্থাৎ প্রতি প্রান্তিকেই কোম্পানিটির আয় আগের তুলনায় বাড়ছে। আর গত জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৭ টাকা ৫৩ পয়সা আয় গত অন্তত আট বছরের সর্বোচ্চ।
বেক্সি পাওয়ার নামে বেক্সিমকোর সহযোগী প্রতিষ্ঠান দুটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কাজ পেয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নে একটি ২৮০ মেগাওয়াট ও পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় নির্মিত হচ্ছে ৫৫ মেগাওয়াটের আরও একটি কেন্দ্র।
এর মধ্যে গাইবান্ধার কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে তিস্তা সোলার লিমিটেড আর পঞ্চগড়েরটি নির্মাণ করছে করতোয়া সোলার লিমিটেড নামে কোম্পানি। এই দুটি কোম্পানির ৭৫ শতাংশের মালিক বেক্সিমকোর সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেক্সি পাওয়ার। বেক্সি পাওয়ারের ৭৫ শতাংশের মালিক আবার বেক্সিমকো লিমিটেড।
এই দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে উৎপাদনে আসবে।
এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের অর্থায়নের জন্য বেক্সিমকো ৩ হাজার কোটি টাকার সুকুক বন্ড ছেড়েছে। শুরুতে বিনিয়োগকারীরা এই বন্ড কিনতে চাননি সেভাবে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক পরে জানায়, তারা বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারবে এবং এরপর বন্ডের সাবস্ক্রিপশন প্রায় শেষ হয়ে এসেছে বলে বেক্সিমকোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী কারা
পুঁজিবাজারে ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি সক্রিয় অংশগ্রহণ করে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। পুঁজিবাজারে তাদের সবচেয়ে দক্ষ বিনিয়োগকারী হিসেবে দেখা হয়।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হচ্ছে মূলত অনুমোদিত স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংক ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য বা ব্রোকারেজ হাউস।
ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, কাস্টডিয়ান, ট্রাস্টি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোও পুঁজিবাজারের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে পরিচিত।
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক বা তফসিলি ব্যাংক পুঁজিবাজারে যে বিনিয়োগ করে থাকে তাদেরও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বেক্সিমকোর শেয়ারে এই ব্যাপক আগ্রহের বিষয়ে ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে সবচেয়ে দক্ষ বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বেক্সিমকোর ক্ষেত্রেও হয়তো তাদের কোনো হিসাব-নিকাশ আছে, ফলে এখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ছে।’
তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ছে বলেই কোম্পানির শেয়ারে লাভ হবে- এই ধারণা না করতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রতি পরামর্শ দেন তিনি। বলেন, ‘তাদের যে লোকসান হয় না সেটি কিন্তু নয়।’
দেবব্রত বলেন, ‘বেক্সিমকোর ব্যবসার যে অগ্রগতি সেটি পুরোটাই দৃশ্যমান। এ ছাড়া করোনার সময় যেসব সেক্টর সবচেয়ে ভালো ব্যবসা করছে, তার মধ্যে আছে এরা।
‘বিশেষ করে বেক্সিমকো লিমিটেডের পুঁজিবাজারে যে দাপট তার মূল কারণ হচ্ছে সুকুক। সুকুকের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা যেভাবে লাভবান হবেন, সেটির আরও প্রচারণার প্রয়োজন ছিল। সুকুক নতুন প্রোডাক্ট হওয়ায় প্রথম দিকে ধাক্কা লেগেছিল। কিন্ত এখন বিনিয়োগাকরীরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হচ্ছেন। ফলে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।’
আরও পড়ুন:ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের উত্থান-পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। ডিএসইতে টাকার অঙ্কে লেনদেন নামমাত্র বেড়েছে।
বুধবার ডিএসইতে ৩৮২ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন থেকে ১১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা বেশি লেনদেন হয়েছে। মঙ্গলবার ডিএসইতে ২৭২ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৪৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ২০৬পয়েন্টে।
এদিন ডিএসইতে ৩০৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৮০টির, কমেছে ২৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯৮টির।
আরেক বাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। সিএসইতে ৫ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টানা পতন চলছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্য দিবসে সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা দু’দিন পতন দেখল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা। সূচকের সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও।
ডিএসই’র তথ্যমতে, মঙ্গলবার ১০ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট সূচক কমে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ডিএসইতে ২৭২ কোটি ৫ লাখ ৫১ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। এটা আগের দিনের চেয়ে ৪৫ কোটি ৫৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা কম। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩১৭ কোটি ৬০ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এর আগে ২৩ মার্চ পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছিল ২৮৬ কোটি ৯৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকার শেয়ার।
তথ্যমতে, মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৮৫টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ২৮টির এবং কমেছে ৫৬টির। শেয়ার দর পরিবর্তন হয়নি ২০১টির।
এদিন ডিএসইতে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। সে সুবাদে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের শীর্ষে স্থান পায়। এদিন ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ২০ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইউনিক হোটেল ১৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, সী পার্ল বিচ ১৮ কোটি ২২ লাখ টাকা, আরডি ফুড ১২ কোটি ১৬ লাখ টাকা, জেনেক্স ইনফোসিস ১২ কোটি ৯ লাখ টাকা, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, শাইনপুকুর ৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, আলহাজ্ব টেক্সটাইল ৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা এবং আমরা নেটওয়ার্ক ৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ২২ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবস সোমবার ৭ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১০১টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১৯টির, কমেছে ৩৪টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪৮টির।
আরও পড়ুন:দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সব মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। তবে টাকার অংকে লেনদেন বেড়েছে ৩০ কোটি।
সোমবার ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ১১ পয়েন্ট কমেছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৬ হাজার ২০৩ পয়েন্টে। একইসঙ্গে ‘ডিএস-৩০’ সূচক ২ পয়েন্ট কমে এবং ‘ডিএসইএস’ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে যথাক্রমে ২২১৫ ও ১৩৪৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এদিন ডিএসইতে ৩১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে ২৮৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ একদিনের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৩০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
ডিএসইতে মোট ২৮৩ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে দর বেড়েছে ২৮ কোম্পানির। দরপতন হয়েছে ৭২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮৩ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর।
অপর বাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। সিএসইতে ৭ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
মহান স্বাধীনতা দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) লিমিটেড।
ডিএসইর নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবুর নেতৃত্বে রোববার সকালে শহীদ বেদিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
নবনিযুক্ত পরিচালনা পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, মো. আফজাল হোসেন, রুবাবা দৌলা, ডিএসইর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক মো. শাকিল রিজভী, শরীফ আনোয়ার হোসেন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এম. সাইফুর রহমান মজুমদার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা সাত্তিক আহমেদ শাহ, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা খাইরুল বাসার, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. ছামিউল ইসলাম, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার, কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আসাদুর রহমান, উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান প্রমুখ।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ না থাকাকে দেশের পুঁজিবাজারের চলমান তারল্য সংকটের মূল কারণ হিসেবে দেখছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান (সালমান এফ রহমান)।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেটের একটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রাকচারাল ডিফেট (কাঠামোগত দুর্বলতা) রয়ে গেছে। আমরা অনেকেই অনেক কথা বলি কিন্তু এসব দুর্বলতা সমাধানে যেসব কাজ করা দরকার আমরা তা করছি না।’
বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), দৈনিক সমকাল এবং চ্যানেল ২৪-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ২০২৩-২৪ প্রাক-বাজেট আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সালমান এফ রহমান।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি এ বিনিয়োগ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি এনালাইসিস করে দেখেছি যে, আমাদের দৈনিক যে লেনদেন এতে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ হচ্ছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের। আর ৫ থেকে ১০ শতাংশ হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। আইসিবি টোটালি ইনঅ্যাকটিভ (নিষ্ক্রিয়), এছাড়া সিটি ব্যাংক ও অন্যান্য বিনিয়োগকারী ব্যাংক রয়েছে তারা দৈনিক লেনদেনের ৫ শতাংশ অংশগ্রহণ করছে। মূল সমস্যাটা এই জায়গাতেই।’
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের ফ্রন্টিয়ার মার্কেটে দৈনিক লেনদেনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ থাকে ৯০ শতাংশ আর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী থাকে ১০ শতাংশ।’
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘আমি আজকেও এটা শুনেছি যে, কথার কথায় সবাই বলে ছোট বিনিয়োগকারীদের আমাদের বাঁচাতে হবে। ছোট বিনিয়োগকারীকে রক্ষা করা তো সরকারের দায়িত্ব না। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের এখানে বিনিয়োগ করাই উচিত না। তাদের উচিত প্রাতিষ্ঠানিক মাধ্যমে বিনিয়োগ করা।
‘এখানে আমরা শুধু ব্রোকারকে ব্যবহার করি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে, কিন্তু বিনিয়োগের সিদ্ধান্তগুলো একজন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী হিসেবে আমি নিজে নিচ্ছি। আর যখনই আমার ভুলের কারণে আমি লস করি তখন দায়িত্বটা সরকারে হয়ে যাবে। বাহ খুব সুন্দর।’
প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, ‘এই স্ট্রাকচারাল ডিফেটটা (কাঠামোগত দুর্বলতা) যদি আমরা না ঠিক করতে পারি, তাহলে আমাদের পুঁজিবাজার বড় করা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।’
সালমান এফ রহামন বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি বিশ্বব্যাপী সমস্যা। রিজার্ভের সমস্যা সমাধানে আমরা আমদানি কমাতে সক্ষম হয়েছি। আগামী জুনে রিজার্ভ নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে, আইএমএফ ঋণ দেবে না বিভিন্ন আশঙ্কা করেছিলেন অনেকে। কিন্তু আইএমএফ থেকে ঋণ পাওয়া গেছে। প্রথম দফায় ঋণ ছাড়ও হয়েছে। ব্যাংক সুদের হার সীমা তুলে দেওয়া হচ্ছে। ম্যাক্রো ইকোনমিতে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে আমরা সঠিক পথেই আছি।’
তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার চাঙা করতে বন্ড মার্কেটকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সব পণ্যে প্রণোদনা দিতে হবে। আমরা অনেক দেশ, এমনকি উন্নত দেশের তুলনায় ভালো আছি। বেসরকারি খাতের সহযোগিতায় আমরা অনেক ভালো পজিশনে আছি। কৃষি, প্রবাসী আয় ও রপ্তানি খাতের কারণে আমাদের পজিশন ধরে দেখতে পেরেছি।’
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত বিশ্বের মধ্যেই কম। ট্যাক্স নেট ও জিডিপি বাড়াতে হলে অটোমেশনের বিকল্প নেই। কাঠামোগত সমস্যা আছে, তা হচ্ছে পরোক্ষ করের নির্ভরশীলতা। এটা কমাতে হবে। প্রত্যক্ষ কর বাড়াতে হবে। বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা এখনো রাজস্ব আদায়ে কাস্টমসের নির্ভরতা বেশি। এটা কমাতে হবে।
‘ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন যদি ২০১৪ সালে করতে পারতাম তাহলে এই সেক্টর নিয়ে এতো প্রশ্ন উঠতো না। কর আইন সহজ করতে হবে। কর নেট বৃদ্ধির কথা বলি, কিন্তু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কর দিতে চায় না। এটাই বাস্তবতা। সবাই করের আওতায় না এলে করনেট বৃদ্ধি কীভাবে হবে? ব্যবসায় লাভ করছে, কিন্তু কর দিতে সমস্যা কোথায়? সব জায়গায় কর অব্যাহতি দিলে কর কোথা থেকে আসবে।’
মেনমেইড ফাইবারে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে মেনমেইড ফাইভার মেনমেইড ফাইভার শুরু করেছি। এতদিন আমরা কী করলাম? ইয়াংওয়ান ২০ বছর আগে এগুলো করেছে। বর্তমানে তারা বিলিয়ন ডলারের মেনমেইড করতেছে, তাদের কি ইনসেন্টিভ দেয়া হইছে? তাহলে আমরা কেন এতদিন বসে রইলাম?’
ডিসিসিআই সভাপতি সামীর সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, সাবেক সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:দেশের পুঁজিবাজারে সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবস বুধবার সূচক ও লেনদেনে ভাটা পড়েছে। আজ সূচক কমার সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবার সব সূচকের পতন হয়। আজ প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ১৬ দশমিক ২৬ পয়েন্ট হারায়। সূচকটি অবস্থান নেয় ৬ হাজার ২০৬ পয়েন্টে।
‘ডিএসইএস’ ৩ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক ৫ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমেছে।
সূচকের পতনের সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেনও কমে। আজ ৩২৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়, যা গত ১৭ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
ডিএসইতে ৩১২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়। এর মধ্যে ২১৩টি কোম্পানির শেয়ারদরই ছিল অপরিবর্তিত। দর বেড়েছে ১৭ কোম্পানির, বিপরীতে ৮২ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে।
অপর বাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়। সিএসইতে ৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে মঙ্গলবার নামমাত্র লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, এদিন ৩৪৯ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বেশি। আর এই সামান্য লেনদেন বৃদ্ধিতেও আগের দিনের সূচকের সঙ্গে যোগ হয়েছে ১৮ দশমিক ৭২ পয়েন্ট। বর্তমানে ডিএসইএক্স অবস্থান করছে ৬ হাজার ২২২ পয়েন্টে।
জানা গেছে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৫৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ২২০ পয়েন্টে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২৫ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮৭টির, কমেছে ১৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২৪টির।
অপর শেয়ারবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৮২ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৫৭টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫০টির দর বেড়েছে, কমেছে ১২টির এবং ৯৫টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে ১২ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য