স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ভোট ১১ নভেম্বর। প্রথম ধাপের নির্বাচনে সহিংসতার পর দেশের ৮৪৮টি ইউপিতে এক দিন পরই হতে যাওয়া ভোট নিয়েও তৈরি হয়েছে নানা উৎকণ্ঠা।
প্রচারের সময়ই বিভিন্ন ইউপিতে সহিংসতা উত্তাপ ছড়িয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচনি সহিংসতায় নরসিংদীতে চারজন, মাগুরায় চারজন ও মেহেরপুরে দুজন নিহত হয়েছেন। বিভিন্ন ইউপিতে প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কয়েক শ।
এ ছাড়া ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাশাপাশি প্রচারের বাধা দেয়া ও সহিংস আচরণের অভিযোগ তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। ভোট সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে তাদের শঙ্কায় হাওয়া দিয়েছেন নৌকা ছাড়া অন্য প্রতীকে ভোট দিতে না দেয়ার হুমকি দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক নেতার বক্তব্য।
দলীয় সিদ্ধান্তে এবার ইউপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কয়েকটি ইউপিতে বিএনপি নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও দলের প্রতীকে ভোট করছেন না কেউ।
সেদিক থেকে এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জন্য মাঠ অনেকটাই ফাঁকা। তবে বিএনপি সরে দাঁড়ালেও নৌকার প্রার্থীদের মাথাব্যথা হয়ে উঠেছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। অধিকাংশ ইউপিতেই নৌকার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগেরই বিদ্রোহী প্রার্থী। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের মধ্যেই অনেক ইউপিতে সহিংসতা হয়েছে।
নিউজবাংলার মাগুরা, সাতক্ষীরা, পাবনা, রাজবাড়ী ও শেরপুর জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে উঠে এসেছে এমন চিত্র।
মাগুরায় চার খুনের সেই ইউপিতে অনেকেই ঘরছাড়া
মাগুরার জগদল ইউনিয়নে প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে সহিংসতায় নিহত হয়েছেন চারজন। সেই ঘটনার পর পাল্টাপাল্টি মামলায় ওই এলাকার অনেকেই ঘরছাড়া।
তবে ভোটের আগে ফিরে আসা কয়েকজন জানিয়েছেন, ওই ইউপি অনেকটাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। ভোট দিতে তারা ফিরে এসেছেন। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ভোটের দিন ওই এলাকায় র্যাব, বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
জগদল ইউনিয়ন ছাড়া মাগুরা সদর উপজেলার আরও ১২ ইউপিতে ভোট হবে একই দিন। শেষ মুহূর্তে প্রচারে ব্যস্ত এসব ইউপির চেয়ারম্যান ও সাধারণ সদস্য প্রার্থীরা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চেয়ে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তারা।
মঙ্গলবার উপজেলার আঠারখাদা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার সব জায়গায় প্রার্থীদের ব্যানার ঝুলছে। বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে চলছে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ।
তবে এসব ইউপিতে প্রার্থীরা ভোট নিয়ে জানিয়েছেন মিশ্র প্রতিক্রিয়া। গোপালগ্রাম, কুচিয়ামোড়া, মঘিসহ প্রায় সব ইউনিয়নে সরকারদলীয় প্রার্থীরা জানিয়েছেন নির্বাচনের পরিবেশ ঠিক আছে। তবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাবি, প্রচারে নানা বাধার মুখে পড়ছেন তারা।
এদিকে বর্তমান সদস্যরাও প্রার্থী হয়ে প্রচারে ব্যস্ত থাকায় ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ করেছেন কয়েকজন।
কামারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে স্থানীয় রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘সকাল থেকে পরিষদে বসে আছি। একটা জন্মনিবন্ধন করা লাগে, কিন্তু কেউ আসছে না ভোটের জন্য। ভোট শেষে আসতে কয়।’
মাগুরার জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল ইসলাম জানান, ভোট সামনে রেখে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রতি কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার, গ্রামপুলিশ, র্যাব ও বিজিবির টহল থাকবে। আশা করছেন ভোট সুষ্ঠু হবে।
সাতক্ষীরায় ১৩ ইউপির ১২টিতে আ.লীগের বিদ্রোহী
সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থীতে অস্বস্তিতে পড়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। দল থেকে বহিষ্কার করেও সরানো যায়নি বিদ্রোহী প্রার্থীদের। উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ১২টিতেই বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন আওয়ামী লীগের।
এ ছাড়া আট ইউনিয়নে বিএনপির নেতা-কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে তিনজন এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন থেকে তিনজন চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন।
অন্য দলের প্রার্থীর পাশাপাশি নিজের দলের ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ায় জয় নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। জয়ের পথে বিদ্রোহী প্রার্থীরাই তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রশিদ জানান, বিদ্রোহী প্রার্থীদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জেতাতে উপজেলা ও জেলা আওয়ামী জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
গোয়ালন্দে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের
দ্বিতীয় ধাপে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় ভোট হচ্ছে দুই ইউনিয়নে। উপজেলার ছোটভাকলা ও উজানচর ইউপি দুটিতেই ভোট সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
ছোটভাকলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ফের নৌকার প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আমজাদ হোসেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী।
মোহাম্মদ আলী দীর্ঘদিন গোয়ালন্দ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের মতো দায়িত্বশীল ব্যক্তি যদি বক্তব্যে বলেন, যেকোনো মূল্যে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। এতে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি না হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
তার কর্মীরা স্বাভাবিকভাবে ভোট চাইতেও পারছেন না বলে অভিযোগ করেন মোহাম্মদ আলী।
উজানচর ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন ফকির বলেন, ‘আমি এই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান। তারপরও আমাকে ভোটাদের কাছে যেতে বিভিন্নভাবে বাধা দেয়া হচ্ছে। আমার কর্মীরা ভোট চাইতে গেলে সেখানে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়, সেখানে আর তারা ভোট চাইতে পারে না। এটা কেমন নির্বাচন হচ্ছে?’
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলশাদ বেগম জানান, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয় এমন কোনো কাজ কাউকেই করতে দেয়া হবে না।
শেরপুর সদরে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
শেরপুর সদরের ১৪টি ইউপিতে প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন। প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই সরকারি দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে জোর করে ভোট নেয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আর সরকারি দলের প্রার্থীরা বলছেন, উন্নয়নের স্বার্থেই জনগণ তাদের নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।
অভিযোগ ছাড়াও এই উপজেলায় এবার নৌকার প্রার্থীদের মাথাব্যথার বড় কারণ দলের বিদ্রোহী। তিন ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হওয়ায় চেয়ারম্যান পদে ভোট হবে ১১টিতে। এর মধ্যে ৯টিতেই আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। বাকি দুটিতে জাতীয় পার্টি ও বিএনপি সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ভোটারদের অনেকেও সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। চরশেরপুরের আলীমদ্দিন বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নে নিরপেক্ষ ভোট হবে না বলে হুনতাছি।’
বেতমারীর আফাজ মিয়া বলেন, ‘হুনতাছি আমাগোরে বলে ভোট দিবারি দিব না। তাইলে ইলেকশন দিয়ে নাব কী?’
চরমুচারিয়া ইউনিয়নের সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নিরপেক্ষ ভোট চাই। আমরা যেন আমাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারি।’
তবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার জানান, ভোট নিয়ে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট নেয়া হবে। জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারবেন।
পাবনায় চাচা-ভাতিজার লড়াই
পাবনার সুজানগর উপজেলার দুলাই ও আহমদপুর ইউনিয়নে প্রার্থী হয়েছেন চাচা-ভাতিজা। দুই ইউপিতে চাচা-ভাতিজার লড়াই বেশ জমে উঠেছে। একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুললেও ভোটের মাঠে প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
দুলাই ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এই ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম শাজাহান। এবারও তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। আর তার বিরুদ্ধে আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ভাতিজা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ।
সাইদুর বলেন, ‘চেয়ারম্যান থাকার সময় আমার চাচা দুর্নীতিতে জড়িয়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। প্রশাসনের তদন্তে এসব দুর্নীতি প্রমাণ হওয়ায় আমরা পারিবারিকভাবেই লজ্জায় পড়েছি।
‘দুলাই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় আমার মরহুম পিতা আজীবন কাজ করেছেন। পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্য রক্ষায় আওয়ামী লীগ কর্মীদের দাবিতে প্রার্থী হতে বাধ্য হয়েছি।’
চাচার বিরুদ্ধে বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে ভোটার ও কর্মীদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও করেন সাইদুর।
নৌকার প্রার্থী সিরাজুলের অভিযোগ, মনোনয়ন না পেয়ে ভাতিজা সাইদুর দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনের আগে থেকেই সাইদুল ষড়যন্ত্র করে তাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন।
আহমদপুর ইউনিয়নেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল আহমেদের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন ভাতিজা হিরা মিয়া। এ ইউপিতে এখন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হয়ে প্রচারে অংশ নিচ্ছেন।
ভাতিজা হিরা মিয়া চাচার বিরুদ্ধে প্রচারে বাধা দেয়ার অভিযোগ এনেছেন। আর চাচা ও নৌকার প্রার্থী কামাল আহমেদ তার বিরুদ্ধে এনেছেন সন্ত্রাসীদের দিয়ে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো অভিযোগ।
সুজানগর উপজেলায় এবার ভোট হচ্ছে ১০ ইউপিতে। তবে দুই প্রার্থী বহিরাগত সন্ত্রাসী আনার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি নির্বাচনি এলাকায় বহিরাগতদের আনাগোনায় সাধারণ মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে প্রায় সব ইউনিয়নেই। এসব সহিংসতায় নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর, গোলাগুলি ও পাল্টাপাল্টি হামলায় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।
শেষ মুহূর্তে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সাগরকান্দি, মানিকহাট, সাতবাড়িয়া, হাটখালি ও ভায়না ইউনিয়নে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ‘প্রতিটি সংঘর্ষের ঘটনাতেই পক্ষগুলো পরস্পরকে দোষারোপ করছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
‘বহিরাগত সন্ত্রাসীদের বিষয়েও অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে।’
প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন মাগুরা প্রতিনিধি ফয়সাল পারভেজ, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম শাওন, পাবনা প্রতিনিধি ইমরোজ খন্দকার বাপ্পি, রাজবাড়ী প্রতিনিধি রবিউল আওয়াল ও শেরপুর প্রতিনিধি শাহরিয়ার শাকির।
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য