ভিক্টর পরিবহনে রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে বাড্ডা পর্যন্ত বাস ভাড়া নেয়া হতো ১০ টাকা। বাসটি চলে সিএনজিতে। ফলে ডিজেলের দাম বাড়ানোর কারণে বাস ভাড়া বাড়লে এই বাসটিতে ভাড়া বাড়ার কোনো কারণ ছিল না।
কিন্তু চালকের সহকারী গন্তব্য প্রতি ৫ টাকা বা ১০ টাকা বেশি চাইছিলেন।
একজন যাত্রী প্রসঙ্গটা তুললেন। বলেন, ‘তোমার বাস তো মিয়া সিএনজিতে চলে। বেশি ভাড়া চাইছ কেন।’
অন্য এক যাত্রী বলেন, ‘তাই তো, সিএনজির বাসে তো ভাড়া বাড়েনি। কেন বাড়তি ভাড়া দেব।’
যে কিশোর ভাড়া কাটছিল, সে বলে, ‘আমার বাস যদি তেলে না চলে, তাইলে জুতা দিয়া বাড়ি দিবেন।’
বাসগুলো এমনিতে ডিজেলচালিতই। কিন্তু সিএনজিতে চালানোর জন্য কনভার্ট করা হয়। আর এই ধরনের গাড়িতে স্টিয়ারিংয়ের পাশে একটি আলাদা বাটন থাকে। সেগুলোতে সিএনজির পরিমাণ কত আছে, তার নির্দেশ থাকে।
ওই বাসেও সেই বাটনটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। চালকের সহকারীকে সেটি দেখালে সে মানতেই চাইছিল না। আবার বলে, ‘এইডা যে তেলের গাড়ি, সেইটা গাড়ির শব্দ শুইন্যা বোঝেন না? গ্যাসের গাড়িতে এই শব্দ হয়?’
মিরপুর থেকে সদরঘাটে চলা বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসেও দেখা গেল একই চিত্র। বাসের ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। সকালে ভাড়া দাবি করা হয় ৪৫ টাকা।
এক যাত্রী প্রশ্ন তোলেন, এই বাস তো সিএনজিচালিত।
চালক বলেন, ‘ট্যাংকি খুইল্যা দেহেন, আমাগো বাস সিএনজিতে চলে, নাকি ডিজেলে চলে।’
ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী ফারুক আহমেদ চিৎকার করে কন্ডাক্টরকে বলেন, ‘এক টাকাও ভাড়া বেশি দেব না।’
অনেক তর্কাতর্কির পর ৫ টাকা কম দিয়ে ৪০ টাকা ভাড়া দেন তিনি।
গত বুধবার রাতে ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে শুক্রবার থেকে ধর্মঘটে যান বাসমালিকরা।
তিন দিনের দুর্ভোগের পর রোববার সন্ধ্যায় যখন বাস ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা আসে, তার পর থেকেই যাত্রী পরিবহন শুরু হয়।
সড়ক পরিবহন খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সঙ্গে মালিকদের বৈঠক শেষে বাস ভাড়া ২৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে স্পষ্টতই জানানো হয়, এই বর্ধিত ভাড়া সিএনজিচালিত বাসের জন্য নয়।
তবে বাস মালিকদের নেতা খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সেখানে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে করে বসেন অদ্ভুত দাবি। তিনি বলেন, অল্প কিছু বাস সিএনজিতে চলে। সেগুলোতেও বর্ধিত হারে ভাড়া কার্যকর না করা উচিত হবে না।
তবে এত দিন জানা যাচ্ছিল, ঢাকায় অল্প কিছু বাসই ডিজেলে চলে। আর ২০১৫ সালে যখন সিএনজির দাম বাড়ানোর কারণে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়, তখন সব বাস সিএনজিতে চলে এমন কথা বলেই বাসমালিকরা ভাড়া বাড়ান।
এবার ঘটল উল্টো ঘটনা। সকাল থেকেই সব বাস বাড়তি ভাড়া আদায় করা শুরু করে। যাত্রীরা প্রশ্ন তুলতেই চালক ও সহকারী দাবি করতে থাকেন, তাদের বাস চলে ডিজেলে।
মিরপুর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত বাসে ১৫ টাকার জায়গায় ২০ টাকা ভাড়া দিতে বাধ্য হওয়া নাহিয়ান আরেফীন জানতেন, সেই বাস সিএনজিতেই চলে। তিনি চালকের সহকারীকে সে কথা বললেনও। কিন্তু মানাতে পারলেন না।
নিউজবাংলাকে নাহিয়ান বলেন, ‘কী বলব ভাই, যখন সিএনজির দাম বাড়ল তখন দেখলাম সব বাসই সিএনজিচালিত হয়ে গেল। এখন আবার ডিজেলের দাম বাড়ল, কী একটা অবস্থা! নগদের ওপর সব বাস ডিজেলের হয়ে গেল! এও সম্ভব!’
তিনি বলেন, ‘এমন কোনো বাস দেখলাম না আজকে যে সিএনজিতে চলে। এতগুলা বাসের ইঞ্জিন কীভাবে এক রাতে চেঞ্জ হয়ে গেল ভাই মাথাতেই ঢুকছে না। এটা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা ছাড়া আর কিছুই নয়৷ সরকারের এটা দেখা উচিত৷’
লাব্বাইক বাসের যাত্রী আরমান আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো বাস সিএনজিচালিত না ডিজেলচালিত এটা বোঝা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হয়, এটা সরকারের মনিটর করা উচিত যে, কোন বাস সিএনজিচালিত আর কোন বাস ডিজেলচালিত। তাহলে যাত্রীদের এমন দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।’
যাত্রীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০১৫ সালে সিএনজির মূল্য যখন বাড়ল, তখন বাসমালিকরা বলল, তাদের মাত্র ২ শতাংশ বাস তেলে চলে। এ কথা বলে তারা ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে বাস ভাড়া বাড়িয়ে নিল। এখন যখন ২০২১ সালে এসে তেলের দাম বাড়ল, তখন তারা আবার বলে, তাদের মাত্র ২ শতাংশ গাড়ি সিএনজিতে চলে।’
তিনি বলেন, ‘এই ইস্যুটি এখন সুরাহার দাবি রাখে। তাই ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে এই বর্ধিত ভাড়া স্থগিত রেখে একটা সার্ভে হওয়া প্রয়োজন। তারপরে এই ভাড়া কার্যকর করা যেতে পারে।’
উপায় কী?
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলাম, ডিজেলচালিত ও সিএনজিচালিত বাসের সামনে স্টিকার সাঁটানো প্রয়োজন। আজকে যখন ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির পর পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হলো, সারা দেশে সিএনজিচালিত, অকটেনচালিত সব ধরনের যানবাহনের ভাড়া বেড়ে গেছে। সুযোগসন্ধানী পরিবহন মালিকরা এই সুযোগটা নিয়েছে।’
তবে বিআরটিএর এই ধরনের কোনো উদ্যোগ বা চিন্তা নেই। উল্টো সংস্থাটির চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বিষয়টি ছেড়ে দিলেন যাত্রীদের ওপর।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিএনজির সিলিন্ডার তো গাড়িতেই থাকে। যাত্রীরা একটু কষ্ট করে দেখে নিয়ে তারপর ভাড়া দিলেই হয়।’
যাত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যখন ভাড়া দেবেন, অবশ্যই একটু দেখে নিয়েন, বাসটি সিএনজিচালিত না ডিজেলচালিত। এরপর ভাড়া দেবেন।’
এটা যাত্রীদের দায়িত্ব কি না, এমন প্রশ্নে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজধানীতে অসংখ্য পরিবহন রয়েছে। চাইলে বিআরটিএর একার পক্ষে বাড়তি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। আমরা মাঠে আছি। এই কাজে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন:ঈদুল আজহায় টানা ছুটির মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকার বাতাস মোটামুটি স্বাস্থ্যকর ছিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিহীন শুষ্ক পরিবেশ আর ক্রমেই রাজধানীর পুরনো ভিড় বাড়তে থাকায় দূষণও বাড়ছে সমান তালে।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ফের শীর্ষস্থানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা। এ সময়ে ১৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহর ছিল বাংলাদেশের রাজধানী, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য যা অস্বাস্থ্যকর।
এ সময় ১৫৩ স্কোর নিয়ে শীর্ষ দূষিত শহর ছিল ইন্দোনেশিয়ার মেদান। এ ছাড়া ১২৬ ও ১২৪ স্কোর নিয়ে ঢাকার পরেই ছিল যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও মিসরের কায়রো।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
রাজধানীর উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদের’ এক পরিবেশকের এক কোটি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানায়, ‘আব্দুল খালেক নয়ন নগদের একজন পরিবেশক। তিনি উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি ফ্লাটে থাকেন। শনিবার সকালে তিনি তার চারজন এমপ্লয়িকে দুইটি মোটরসাইকেলযোগে বাসার পাশেই পরিবেশক অফিসে পাঠাচ্ছিলেন। সাথে এক কোটি টাকার বেশি ছিল।’
‘তাদের বহনকারী মোটরসাইকেল দুটি বারো নম্বর রোড ক্রস করে যখন তেরো নম্বর রোডে ঢুকছিল, তখন ওৎপেতে থাকা একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস তাদের গতি রোধ করে। মাইক্রোবাস থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত তিন থেকে চারজন নেমে এসে টাকার ব্যাগ বহনকারী মোটরসাইকেল আরোহীদের ধাওয়া করে।’
পুলিশ আরও জানায়, এদের মধ্যে একজন আরোহী দৌড়ে পালিয়ে গেলেও তিনজনকে টাকার ব্যাগসহ তারা মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরবর্তীতে তারা উত্তরা সতেরো নম্বর সেক্টরে নগদ মাইক্রোবাস থেকে তাদের ফেলে দিয়ে টাকার ব্যাগ সহ পালিয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে উত্তরা ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার মইদুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, ‘ঘটনার পরপরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিসিটিভির ফোটেজ সংগ্রহ করেছেন। ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
ঈদ উপলক্ষে লম্বা ছুটিতে বেশ কিছুদিন ধরে একপ্রকার ফাঁকা হয়ে গেছে শহর ঢাকা। সড়কগুলোতে নেই যানবাহনের চাপ; স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতও বন্ধ; রাস্তায় লোকজনও হাতেগোনা। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন বৃষ্টি কমে গেলেও রাজধানীর বাতাসের মানে খুব বেশি অবনতি হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল মাত্র ৬৬। আর দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান আরও অবাক হওয়ার মতো। প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় জায়গা করে নিলেও ঢাকার অবস্থান আজ ৫৫তম।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’। ঢাকার বাতাস আজ মাঝারি হলেও ‘ভালো’ থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
এই সময়ে ৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত শহরের তালিকার ৫২তম স্থানে ছিল স্পেনের বার্সেলোনা, ৫০তম স্থানে সুইজারল্যান্ডের বেয়ার্ন, ৬৮ স্কোর নিয়ে ৪৯তম স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটি, ৭০ ও ৭১ স্কোর নিয়ে ৪৪ ও ৪৩তম স্থানে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি, ৭৩ স্কোর নিয়ে ৩৮তম স্থানে কানাডার টরেন্টো, ৮০ স্কোর নিয়ে ২৭তম দূষিত শহর শিকাগো, ৯৯ স্কোর নিয়ে ১৫তম স্থানে ইতালির রোম এবং ১২৮ স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে মিলান।
তবে ১৬৮ একিউইউ স্কোর নিয়ে এই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল ভারতের দিল্লি। ১৬২, ১৫৬ ও ১৩৭ স্কোর নিয়ে এর পরের তিন দূষিত শহর যথাক্রমে ইরাকের বাগদাদ, পাকিস্তানের লাহোর ও সৌদি আরবের রিয়াদ।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
এডিস মশার বিস্তার রোধে তাৎক্ষণিক ফল পেতে ১৪ জুন থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন(ডিএসসিসি) এলাকায় দ্বিগুণহারে কীটনাশক প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এডিস মশার বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও করোনা প্রতিরোধে ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর ওয়াসা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রমে (ফগার মেশিন দ্বারা পরিচালিত) বর্তমানে ব্যবহৃত ৩০ লিটার কীটনাশকের পরিবর্তে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থাৎ ৬০ লিটার কীটনাশক প্রতিদিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ছাড়া অঞ্চলভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠন ও জনবল ঘাটতি পূরণে উদ্যোগসহ জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় মশক কর্মীদের সকাল ও বিকেলে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা, সঠিক অনুপাতে কীটনাশক প্রয়োগ যাচাই, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং মশক কর্মী দ্বারা বাড়ির ভিতর, আঙিনা ও ছাদের জমানো পানিসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে অঞ্চল ভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া, ডেঙ্গু ও করোনা বিষয়ে ডিএসসিসি সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফারিয়া ফয়েজকে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসের মধ্যে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে নগর ভবনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রতিদিনের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের হালনাগাদ তথ্য ডিএসসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। মশক নিধনে জনবল ঘাটতি পূরণে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ ডেঙ্গু ও করোনা রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম মেহেদী হাসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সেলিম (৪৫), রফিক (৪০), সাদ্দাম (৩০), উজ্জ্বল (৩২) ও শামীম (২৫)।
গতকাল সোমবার (৯জুন) মোহাম্মদপুর থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদের মধ্যে রয়েছে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ১জন, মাদক মামলায় ১জন, দূস্যতার মামলায় ১জন এবং অন্যান্য মামলায় ২জন।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর পল্লবী থানার মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিহত ওই যুবকের নাম রাকিবুল হাসান সানি (২৯)। ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সকাল সাতটার দিকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছি। পরে মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদক বিক্রির আধিপত্য বিস্তার ও দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে রাতের আঁধারে হত্যাকারীরা কীভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে; তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, সানি একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গেল রমজান মাসেও একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র তার ওপর হামলা চালিয়েছিল।
ঘটনার পর থেকে মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং এলাকায় পুলিশ ও সিআইডি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
গতকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে বন্ধ থাকার পর আজ রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে মেট্রোরেল। তবে মেট্রোতে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না।
রোববার সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, আজ (রোববার) প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলছে। আগামীকাল সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে।
গত মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না। মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে যাত্রীদের যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রীর কাছে কাঁচা বা রান্না করা মাংস পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ আটকে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মীদের এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য