ভিক্টর পরিবহনে রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে বাড্ডা পর্যন্ত বাস ভাড়া নেয়া হতো ১০ টাকা। বাসটি চলে সিএনজিতে। ফলে ডিজেলের দাম বাড়ানোর কারণে বাস ভাড়া বাড়লে এই বাসটিতে ভাড়া বাড়ার কোনো কারণ ছিল না।
কিন্তু চালকের সহকারী গন্তব্য প্রতি ৫ টাকা বা ১০ টাকা বেশি চাইছিলেন।
একজন যাত্রী প্রসঙ্গটা তুললেন। বলেন, ‘তোমার বাস তো মিয়া সিএনজিতে চলে। বেশি ভাড়া চাইছ কেন।’
অন্য এক যাত্রী বলেন, ‘তাই তো, সিএনজির বাসে তো ভাড়া বাড়েনি। কেন বাড়তি ভাড়া দেব।’
যে কিশোর ভাড়া কাটছিল, সে বলে, ‘আমার বাস যদি তেলে না চলে, তাইলে জুতা দিয়া বাড়ি দিবেন।’
বাসগুলো এমনিতে ডিজেলচালিতই। কিন্তু সিএনজিতে চালানোর জন্য কনভার্ট করা হয়। আর এই ধরনের গাড়িতে স্টিয়ারিংয়ের পাশে একটি আলাদা বাটন থাকে। সেগুলোতে সিএনজির পরিমাণ কত আছে, তার নির্দেশ থাকে।
ওই বাসেও সেই বাটনটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। চালকের সহকারীকে সেটি দেখালে সে মানতেই চাইছিল না। আবার বলে, ‘এইডা যে তেলের গাড়ি, সেইটা গাড়ির শব্দ শুইন্যা বোঝেন না? গ্যাসের গাড়িতে এই শব্দ হয়?’
মিরপুর থেকে সদরঘাটে চলা বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসেও দেখা গেল একই চিত্র। বাসের ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। সকালে ভাড়া দাবি করা হয় ৪৫ টাকা।
এক যাত্রী প্রশ্ন তোলেন, এই বাস তো সিএনজিচালিত।
চালক বলেন, ‘ট্যাংকি খুইল্যা দেহেন, আমাগো বাস সিএনজিতে চলে, নাকি ডিজেলে চলে।’
ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী ফারুক আহমেদ চিৎকার করে কন্ডাক্টরকে বলেন, ‘এক টাকাও ভাড়া বেশি দেব না।’
অনেক তর্কাতর্কির পর ৫ টাকা কম দিয়ে ৪০ টাকা ভাড়া দেন তিনি।
গত বুধবার রাতে ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে শুক্রবার থেকে ধর্মঘটে যান বাসমালিকরা।
তিন দিনের দুর্ভোগের পর রোববার সন্ধ্যায় যখন বাস ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা আসে, তার পর থেকেই যাত্রী পরিবহন শুরু হয়।
সড়ক পরিবহন খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সঙ্গে মালিকদের বৈঠক শেষে বাস ভাড়া ২৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে স্পষ্টতই জানানো হয়, এই বর্ধিত ভাড়া সিএনজিচালিত বাসের জন্য নয়।
তবে বাস মালিকদের নেতা খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সেখানে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে করে বসেন অদ্ভুত দাবি। তিনি বলেন, অল্প কিছু বাস সিএনজিতে চলে। সেগুলোতেও বর্ধিত হারে ভাড়া কার্যকর না করা উচিত হবে না।
তবে এত দিন জানা যাচ্ছিল, ঢাকায় অল্প কিছু বাসই ডিজেলে চলে। আর ২০১৫ সালে যখন সিএনজির দাম বাড়ানোর কারণে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়, তখন সব বাস সিএনজিতে চলে এমন কথা বলেই বাসমালিকরা ভাড়া বাড়ান।
এবার ঘটল উল্টো ঘটনা। সকাল থেকেই সব বাস বাড়তি ভাড়া আদায় করা শুরু করে। যাত্রীরা প্রশ্ন তুলতেই চালক ও সহকারী দাবি করতে থাকেন, তাদের বাস চলে ডিজেলে।
মিরপুর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত বাসে ১৫ টাকার জায়গায় ২০ টাকা ভাড়া দিতে বাধ্য হওয়া নাহিয়ান আরেফীন জানতেন, সেই বাস সিএনজিতেই চলে। তিনি চালকের সহকারীকে সে কথা বললেনও। কিন্তু মানাতে পারলেন না।
নিউজবাংলাকে নাহিয়ান বলেন, ‘কী বলব ভাই, যখন সিএনজির দাম বাড়ল তখন দেখলাম সব বাসই সিএনজিচালিত হয়ে গেল। এখন আবার ডিজেলের দাম বাড়ল, কী একটা অবস্থা! নগদের ওপর সব বাস ডিজেলের হয়ে গেল! এও সম্ভব!’
তিনি বলেন, ‘এমন কোনো বাস দেখলাম না আজকে যে সিএনজিতে চলে। এতগুলা বাসের ইঞ্জিন কীভাবে এক রাতে চেঞ্জ হয়ে গেল ভাই মাথাতেই ঢুকছে না। এটা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা ছাড়া আর কিছুই নয়৷ সরকারের এটা দেখা উচিত৷’
লাব্বাইক বাসের যাত্রী আরমান আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো বাস সিএনজিচালিত না ডিজেলচালিত এটা বোঝা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হয়, এটা সরকারের মনিটর করা উচিত যে, কোন বাস সিএনজিচালিত আর কোন বাস ডিজেলচালিত। তাহলে যাত্রীদের এমন দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।’
যাত্রীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০১৫ সালে সিএনজির মূল্য যখন বাড়ল, তখন বাসমালিকরা বলল, তাদের মাত্র ২ শতাংশ বাস তেলে চলে। এ কথা বলে তারা ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে বাস ভাড়া বাড়িয়ে নিল। এখন যখন ২০২১ সালে এসে তেলের দাম বাড়ল, তখন তারা আবার বলে, তাদের মাত্র ২ শতাংশ গাড়ি সিএনজিতে চলে।’
তিনি বলেন, ‘এই ইস্যুটি এখন সুরাহার দাবি রাখে। তাই ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে এই বর্ধিত ভাড়া স্থগিত রেখে একটা সার্ভে হওয়া প্রয়োজন। তারপরে এই ভাড়া কার্যকর করা যেতে পারে।’
উপায় কী?
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলাম, ডিজেলচালিত ও সিএনজিচালিত বাসের সামনে স্টিকার সাঁটানো প্রয়োজন। আজকে যখন ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির পর পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হলো, সারা দেশে সিএনজিচালিত, অকটেনচালিত সব ধরনের যানবাহনের ভাড়া বেড়ে গেছে। সুযোগসন্ধানী পরিবহন মালিকরা এই সুযোগটা নিয়েছে।’
তবে বিআরটিএর এই ধরনের কোনো উদ্যোগ বা চিন্তা নেই। উল্টো সংস্থাটির চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বিষয়টি ছেড়ে দিলেন যাত্রীদের ওপর।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিএনজির সিলিন্ডার তো গাড়িতেই থাকে। যাত্রীরা একটু কষ্ট করে দেখে নিয়ে তারপর ভাড়া দিলেই হয়।’
যাত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যখন ভাড়া দেবেন, অবশ্যই একটু দেখে নিয়েন, বাসটি সিএনজিচালিত না ডিজেলচালিত। এরপর ভাড়া দেবেন।’
এটা যাত্রীদের দায়িত্ব কি না, এমন প্রশ্নে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজধানীতে অসংখ্য পরিবহন রয়েছে। চাইলে বিআরটিএর একার পক্ষে বাড়তি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। আমরা মাঠে আছি। এই কাজে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন:ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, ন্যায্য নগর গঠনে ভূমিকা রাখবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি। শুধু সরকার বা সিটি কর্পোরেশন নয়, নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে ন্যায্য নগর প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আজ সোমবার গুলশানের নগর ভবনে অনুষ্ঠিত ডিএনসিসি এবং বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর যৌথ আয়োজনে ‘ন্যায্য নগর গঠনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভূমিকা’ শীর্ষক একটি পলিসি ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রশাসক।
স্টেট ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকী এর সভাপতিত্বে পলিসি ডায়ালগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ঢাকা শহরের বেশ কিছু পরিকল্পিত এলাকা আছে যেখানে বিল্ডিংগুলোর উচ্চতা কাছাকাছি, ফলে সেই বিল্ডিংগুলোর সোলার ক্লিয়ারেন্স অনেক বেশি। সেই এলাকাগুলোতে পরিকল্পিতভাবে সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে নিজস্ব বিদ্যুতের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব। পাশাপাশি ঢাকার আশপাশের উদ্ধারকৃত নদীর পাড়কে কাজে লাগিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব। তিনি জানান, রুফটপ সোলার প্যানেল ব্যবহারকারীদের হোল্ডিং ট্যাক্স এর ওপর ৫ শতাংশ কর রেয়াত দেয়ার কথা ভাবছে সিটি কর্পোরেশন।
পলিসি ডায়ালগের মূল প্রবন্ধে ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, জীবনের মান সূচকে ঢাকা শহর শেষ দিক থেকে ৪র্থ, বিশ্বের সবচেয়ে ধীর গতির শহর, বায়ু দূষণের তালিকায় শীর্ষে, দূষিত শহরের তালিকায় ৬ষ্ঠ, বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকার ১ম সারিতে, বিশ্বে যানজটের সূচকে ৫ নম্বরে, পৃথিবীর ৪র্থ ঘনবসতিপূর্ণ শহর, শব্দ দূষণেও শীর্ষে ঢাকা এবং স্বাস্থ্যসেবার সূচকে শেষের দিকে। আর এই দূষণগুলো থেকে পরিত্রাণের অন্যতম উপায় হতে পারে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এর প্রেসিডেন্ট পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, পরিবহন ও শিল্পখাতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে আমরা একটি সুস্থ ও সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।
ডায়ালগে আরও অংশ নেন ডিএনসিসি এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক এবং চেয়ারম্যান ড. এম. শহীদুল ইসলাম, (বিআইপি) এর উপদেষ্টা বোর্ডের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন, বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির সাবেক ডিন ড. ইজাজ হোসে, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ গবেষণা কেন্দ্রের (সিথ্রিইআর) সমন্বয়ক (অপারেশনস) মিসেস রৌফা খানম, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, (ডব্লিউবিবিটি) এর পরিচালক গাউস পিয়ারী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশেদুজ্জামান মজুমদার, ব্যারিস্টার নেওয়াজ মোরশেদ, ইয়ুথনেট গ্লোবাল এর সমন্বয়ক সোহানুর রহমান, বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর রিসার্চ লিড ইঞ্জি. মারজিয়াত রহমান, ব্রাইটার্সের চেয়ার ফারিহা সুলতানা অমি, ইকো-নেটওয়ার্ক গ্লোবালের নির্বাহী পরিচালক শামীম আহমেদ মৃধা, ন্যাকমের পরিচালক রাশিদুজ্জামান আহমেদ, পিওর আর্থ বাংলাদেশের কনসালটেন্ট আহমেদ শামীম আল রাজি, সাসটেইনেবল রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটেন্সি লিমিটেডের (এসআরসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু জুবায়ের, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের গবেষণা ও বাস্তবায়ন প্রধান মো. ইকবাল ফারুক, ও. ক্রিডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাত হোসেন, সচেতন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, বারসিকের প্রজেক্ট ম্যানেজার কামরুজ্জামান সাগর, ইকিউএমএস কনসাল্টিংয়ের টেকনিক্যাল ম্যানেজার (টেস্টিং) আহমেদ জুবায়ের, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, অ্যাকশন এইডের প্রোগ্রাম অফিসার হামিদুল ইসলাম এবং মিশন গ্রিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি।
ন্যায্য নগর গঠনে ভূমিকা রাখবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি: ডিএনসিসি প্রশাসক
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, ন্যায্য নগর গঠনে ভূমিকা রাখবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি। শুধু সরকার বা সিটি কর্পোরেশন নয়, নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে ন্যায্য নগর প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আজ সোমবার গুলশানের নগর ভবনে অনুষ্ঠিত ডিএনসিসি এবং বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর যৌথ আয়োজনে ‘ন্যায্য নগর গঠনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভূমিকা’ শীর্ষক একটি পলিসি ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রশাসক।
স্টেট ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকী এর সভাপতিত্বে পলিসি ডায়ালগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ঢাকা শহরের বেশ কিছু পরিকল্পিত এলাকা আছে যেখানে বিল্ডিংগুলোর উচ্চতা কাছাকাছি, ফলে সেই বিল্ডিংগুলোর সোলার ক্লিয়ারেন্স অনেক বেশি। সেই এলাকাগুলোতে পরিকল্পিতভাবে সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে নিজস্ব বিদ্যুতের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব। পাশাপাশি ঢাকার আশপাশের উদ্ধারকৃত নদীর পাড়কে কাজে লাগিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব। তিনি জানান, রুফটপ সোলার প্যানেল ব্যবহারকারীদের হোল্ডিং ট্যাক্স এর ওপর ৫ শতাংশ কর রেয়াত দেয়ার কথা ভাবছে সিটি কর্পোরেশন।
পলিসি ডায়ালগের মূল প্রবন্ধে ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, জীবনের মান সূচকে ঢাকা শহর শেষ দিক থেকে ৪র্থ, বিশ্বের সবচেয়ে ধীর গতির শহর, বায়ু দূষণের তালিকায় শীর্ষে, দূষিত শহরের তালিকায় ৬ষ্ঠ, বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকার ১ম সারিতে, বিশ্বে যানজটের সূচকে ৫ নম্বরে, পৃথিবীর ৪র্থ ঘনবসতিপূর্ণ শহর, শব্দ দূষণেও শীর্ষে ঢাকা এবং স্বাস্থ্যসেবার সূচকে শেষের দিকে। আর এই দূষণগুলো থেকে পরিত্রাণের অন্যতম উপায় হতে পারে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এর প্রেসিডেন্ট পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, পরিবহন ও শিল্পখাতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে আমরা একটি সুস্থ ও সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।
ডায়ালগে আরও অংশ নেন ডিএনসিসি এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক এবং চেয়ারম্যান ড. এম. শহীদুল ইসলাম, (বিআইপি) এর উপদেষ্টা বোর্ডের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন, বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির সাবেক ডিন ড. ইজাজ হোসে, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ গবেষণা কেন্দ্রের (সিথ্রিইআর) সমন্বয়ক (অপারেশনস) মিসেস রৌফা খানম, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, (ডব্লিউবিবিটি) এর পরিচালক গাউস পিয়ারী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশেদুজ্জামান মজুমদার, ব্যারিস্টার নেওয়াজ মোরশেদ, ইয়ুথনেট গ্লোবাল এর সমন্বয়ক সোহানুর রহমান, বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর রিসার্চ লিড ইঞ্জি. মারজিয়াত রহমান, ব্রাইটার্সের চেয়ার ফারিহা সুলতানা অমি, ইকো-নেটওয়ার্ক গ্লোবালের নির্বাহী পরিচালক শামীম আহমেদ মৃধা, ন্যাকমের পরিচালক রাশিদুজ্জামান আহমেদ, পিওর আর্থ বাংলাদেশের কনসালটেন্ট আহমেদ শামীম আল রাজি, সাসটেইনেবল রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটেন্সি লিমিটেডের (এসআরসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু জুবায়ের, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের গবেষণা ও বাস্তবায়ন প্রধান মো. ইকবাল ফারুক, ও. ক্রিডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাত হোসেন, সচেতন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, বারসিকের প্রজেক্ট ম্যানেজার কামরুজ্জামান সাগর, ইকিউএমএস কনসাল্টিংয়ের টেকনিক্যাল ম্যানেজার (টেস্টিং) আহমেদ জুবায়ের, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, অ্যাকশন এইডের প্রোগ্রাম অফিসার হামিদুল ইসলাম এবং মিশন গ্রিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করতে ডিএনসিসি ও ডিএমপি যৌথভাবে কাজ করছে। ঢাকা শহরের ভিতরে অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে শিগগিরই অভিযান শুরু হবে।
তিনি জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা করেছে। শিগগিরই রাতে অভিযান করে এগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণকাজের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। ডিএনসিসির ৬, ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডের আওতাধীন এলাকায় ৭টি প্যাকেজে মোট ২০ কিলোমিটার রাস্তা, ৩৪ কিলোমিটার নর্দমা ও ১৫ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকার বাড়ির মালিক সমিতিকে অনুরোধ করব আপনারা আপনাদের এলাকায় অবৈধ অটোরিকশা ঢুকতে দেবেন না। আপনাদের আবাসিক এলাকাগুলো যে পরিকল্পনা করে করা হয়েছে, সেই পরিকল্পনার বাহিরে কিছু করতে দেবেন না। আবাসিক এলাকায় কোনো বাণিজ্যিক কাজ করতে দেবেন না। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আপনারা স্থানীয় কমিউনিটি সোচ্চার হলে অবৈধ অটোরিকশা, অবৈধ হকার বন্ধ করা সহজ হবে।’
নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে অনুরোধ করব আপনারা বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানি থেকে প্লট কেনার আগে মৌজা ম্যাপ চেক করে দেখবেন জলাধার কিনা। জলাধার হলে দয়া করে সেই প্লট কিনবেন না। জলাধার হলে পরবর্তী সময় সেই প্লট পেতে ঝামেলা হবে।’
তিনি বলেন, ‘সবাই একসময় ভাবতেন পল্লবী ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় কোনোদিন পাকা রাস্তা হবে না। এই এলাকায় শুধু গোডাউন ভাড়া দেওয়া হতো একসময়। পরিকল্পিতভাবে মাঠের জায়গা রাখা হয়নি, কোনো গাছ লাগানো হয়নি। ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ভিতর দিয়ে খাল ছিল। আমরা নাগরিক সমাজ আন্দোলন করেছি সেই খাল উদ্ধারের জন্য, মামলা পর্যন্ত করা হয়েছিল। ৭টি প্যাকেজের নির্মাণকাজ শেষ হলে এই এলাকার যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হবে এবং জলাবদ্ধতাও দূর হবে।’
মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে রাজধানীর তেজগাঁও প্রধান সড়ক অবরোধ করে রেখে প্রতিবাদ করছেন কোহিনুর ক্যামিকেল কোম্পানির কারখানার শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরের পর থেকে সড়কটি বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছুটে এসেছেন। কিন্তু এখনো পরিস্থিতি শান্ত হয়নি।
কারখানার কসমেটিকস বিভাগের বাবু নামে এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে শ্রমিকরা প্রতিবাদ করেন।পরে তারা প্রধান সড়কে নেমে বিক্ষোভ ও অবরোধ করেন।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শতশত মানুষ। মহাখালী থেকে আসা যাওয়ার সড়কটি বন্ধ হয়ে গেছে।
শ্রমিকদের দাবি হচ্ছে, সেই কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার পাশাপাশি তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এই মুহূর্তে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছুটে এসেছেন। তাদের মধ্য থেকে একজন তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছেন। বারবার তাদের আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু এখনো পরিস্থিতি শান্ত হয়নি।
তারা আরও বলেন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ঠিক বিপরীত পাশে সড়কে কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানির অবস্থান। সেই কারখানাটির গেটের সামনে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন। বিকেল ৪ টা ৫০ মিনিটে সেনাবাহিনীর একজন অফিসার এসে তাদের সাথে কথা বলেন। এ সময় তাকে বলতে শোনা যায়, কারখানাটির কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন। সেই ব্যক্তিকে চাকরি থেকে অপসারণের পাশাপাশি আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।
এমন বিষয় জানানোর পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা কারখানাটির সামনের সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন ভাঙচুর বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মহাখালী জোনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (ট্রাফিক) দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তা ব্লকের কারণে তেজগাঁও সাত রাস্তাসহ আশেপাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সাধারণ মানুষের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করারও আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ভর্তুকি মূল্যে পাটের ব্যাগ দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করা হবে।’
শনিবার (১৯ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে প্লাস্টিক দূষণ রোধে করণীয় সংক্রান্ত সেমিনার এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘পাটের ব্যাগ ব্যবহারে সচেতনতা তৈরির জন্য প্রচার কার্যক্রম চালানো হবে। পাটের ব্যাগ তৈরির সঙ্গে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। টেকসই ব্যবস্থার জন্য জেডিপিসি, এসএমইএফ, জয়িতা ফাউন্ডেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণ রোধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।’
‘প্লাস্টিকের বিকল্প নেই—এই ধারণা ঠিক নয়। সরকারের সব উদ্যোগ রাতারাতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, তবে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে,’ বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। অ
নুষ্ঠানে বক্তব্য দেন—পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, এনডিসি; ঢাকা নরওয়েজিয়ান দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান মারিয়ান রাবে ক্নাভেলসরুদ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ; ইউনিডোর বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. জাকি উজ জামান; ঢাকা মেডিকেল কলেজের ড. আফিয়া শাহনাজ; বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান।
সময় পরিবেশ উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ও শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করার আহ্বান জানান।
রাজধানীতে পরিচালিত পৃথক অভিযানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া এসব সংগঠনের সাম্প্রতিক ঝটিকা মিছিল নিয়ে সাধারণ জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানিয়েছে ডিএমপি। বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগ ও তাদের সমভাবাপন্ন বিভিন্ন সংগঠন ঝটিকা মিছিল করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তারা পুলিশের গতিবিধি অনুসরণ করে নির্দিষ্ট কোনো এলাকায় গাড়ি থেকে নেমে দুয়েক মিনিট মিছিল করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে এসব মিছিলের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে তাদের অস্তিত্ব জানান দেয়।
তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করা সম্ভব না হলেও পরবর্তীতে ছবি ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের মধ্যে অনেককেই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানায় ডিএমপি। পৃথক অভিযানে রাজধানীতে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ছয় সদস্য হলেন- পল্লবী থানা ছাত্রলীগের ৫ নং ওয়ার্ডের সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম নাইম, যাত্রাবাড়ী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রিপন হোসেন ফাহিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৯ নং ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি শেখ মো. সোহেল, বাড্ডা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক মো. সোহেল রানা, বাড্ডা থানার ৩৭ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়ামিন ও বাড্ডা ১২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল বাশার খান।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) পল্লবী থানার বাউনিয়া এলাকা থেকে আশরাফুল ইসলাম নাইমকে গ্রেফতার করে ডিবি-মিরপুর বিভাগ।
অন্যদিকে, মহানগর গোয়েন্দা সাইবার বিভাগের বিভাগের একটি দল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. রিপন হোসেন ফাহিমকে গ্রেফতার করে। ডিবি-ওয়ারী বিভাগ কদমতলী থানাধীন মোহাম্মদবাগ এলাকা থেকে শেখ মো. সোহেলকে গ্রেফতার করে।
এরপর শনিবার (১৯ এপ্রিল) ভোরে ডিবি সাইবারের একটি টিম রাজধানীর বাড্ডা থানার মধ্য বাড্ডা এলাকা থেকে মো. সোহেল রানা ও মোহাম্মদ ইয়ামিনকে এবং শাহ আলি এলাকা হতে অপর একটি টিম পৃথক অভিযান চালিয়ে আবুল বাশার খানকে গ্রেফতার করে।
ডিএমপি জানায়, এসব সংগঠনের অপতৎপরতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সময় সাধারণ জনগণকে এসব সংগঠনের বিচ্ছিন্ন অপতৎপরতা সম্পর্কে অহেতুক আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ করেছে মহানগর পুলিশ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) আজ যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত মহাসড়কে এবং যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা হয়ে স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার উপস্থিতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছয়শত পরিচ্ছন্ন কর্মী এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ৬ টায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এবং যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা হয়ে স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত মহাসড়কে ও আইল্যান্ডে জমে থাকা দীর্ঘদিনের বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।
পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, মহাসড়কে ও মহাসড়কের আইল্যান্ডে দীর্ঘদিন ময়লা জমে থাকায় বায়ুদূষণসহ পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষতি হচ্ছিল। মহাসড়কটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীন হওয়ায় এখানে সিটি কর্পোরেশনের নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগের সুযোগ নেই।
পরিবেশ, বন ও জলাবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশনায় আজকের এই বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের ময়লা পরিষ্কারের ফলে এই মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা যেমন স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবেন, ঠিক তেমনি পরিবেশ দূষণ রোধ সম্ভব হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রশাসক বলেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএসসিসি এখন থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে খাল পুনরুদ্ধার ও ড্রেন পরিষ্কাার চলমান রয়েছে।
এছাড়া, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের খাল-ড্রেন উদ্ধার ও পরিষ্কারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ডেঙ্গু মৌসুম মোকাবিলার জন্য মশক কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু হয়েছে।
এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়মিত ভাবে লার্ভিসাইডিং এবং এডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রশাসক নগরবাসীর সচেতনতা ও সহযোগিতা কামনা করেন।
পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর বনানীতে নৌবাহিনী সদরদপ্তর ও আর্মি স্টেডিয়ামের মাঝামাঝি স্থানে শুক্রবার পোশাকশ্রমিক বহনকারী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাত নারী আহত হয়েছেন।
তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহত সাত শ্রমিক হলেন রাশেদা (২৮), লাকি আক্তার (৩৫), পারভিন বেগম (৩৪), নিলুফা আক্তার (৩০), হোসনেয়ারা (৩৫), রাশেদা আক্তার (৩১)।
আহত নারী শ্রমিকদের ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা ওই কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘নারী শ্রমিকরা গাজীপুরের কালীগঞ্জের পূর্বাচল অ্যাপারেল লিমিটেডের পোশাকশ্রমিক। আজ ভোরে ডিউটি শেষ করে সকালে ঢাকার দিকে যাওয়ার পথে চালক বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আর্মি স্টেডিয়াম ও নৌ বাহিনী সদরদপ্তরের মাঝামাঝি স্থানে বাসটি উল্টে যায়। এতে আহত হয় অনেকে। পরে আমরা খবর পেয়ে আহতদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই।
‘এদের মধ্যে গুরুতর আহত সাতজন শ্রমিককে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। তারা এখন চিকিৎসাধীন।’
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মোহাম্মদ ফারুক জানান, বনানীতে পোশাক শ্রমিকদের বাস দুর্ঘটনায় আহত সাতজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শ্রমিকদের কারও মাথায়, কারও শরীরে এবং পায়ে হাতে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলমান।বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য