ভিক্টর পরিবহনে রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে বাড্ডা পর্যন্ত বাস ভাড়া নেয়া হতো ১০ টাকা। বাসটি চলে সিএনজিতে। ফলে ডিজেলের দাম বাড়ানোর কারণে বাস ভাড়া বাড়লে এই বাসটিতে ভাড়া বাড়ার কোনো কারণ ছিল না।
কিন্তু চালকের সহকারী গন্তব্য প্রতি ৫ টাকা বা ১০ টাকা বেশি চাইছিলেন।
একজন যাত্রী প্রসঙ্গটা তুললেন। বলেন, ‘তোমার বাস তো মিয়া সিএনজিতে চলে। বেশি ভাড়া চাইছ কেন।’
অন্য এক যাত্রী বলেন, ‘তাই তো, সিএনজির বাসে তো ভাড়া বাড়েনি। কেন বাড়তি ভাড়া দেব।’
যে কিশোর ভাড়া কাটছিল, সে বলে, ‘আমার বাস যদি তেলে না চলে, তাইলে জুতা দিয়া বাড়ি দিবেন।’
বাসগুলো এমনিতে ডিজেলচালিতই। কিন্তু সিএনজিতে চালানোর জন্য কনভার্ট করা হয়। আর এই ধরনের গাড়িতে স্টিয়ারিংয়ের পাশে একটি আলাদা বাটন থাকে। সেগুলোতে সিএনজির পরিমাণ কত আছে, তার নির্দেশ থাকে।
ওই বাসেও সেই বাটনটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। চালকের সহকারীকে সেটি দেখালে সে মানতেই চাইছিল না। আবার বলে, ‘এইডা যে তেলের গাড়ি, সেইটা গাড়ির শব্দ শুইন্যা বোঝেন না? গ্যাসের গাড়িতে এই শব্দ হয়?’
মিরপুর থেকে সদরঘাটে চলা বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসেও দেখা গেল একই চিত্র। বাসের ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। সকালে ভাড়া দাবি করা হয় ৪৫ টাকা।
এক যাত্রী প্রশ্ন তোলেন, এই বাস তো সিএনজিচালিত।
চালক বলেন, ‘ট্যাংকি খুইল্যা দেহেন, আমাগো বাস সিএনজিতে চলে, নাকি ডিজেলে চলে।’
ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী ফারুক আহমেদ চিৎকার করে কন্ডাক্টরকে বলেন, ‘এক টাকাও ভাড়া বেশি দেব না।’
অনেক তর্কাতর্কির পর ৫ টাকা কম দিয়ে ৪০ টাকা ভাড়া দেন তিনি।
গত বুধবার রাতে ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে শুক্রবার থেকে ধর্মঘটে যান বাসমালিকরা।
তিন দিনের দুর্ভোগের পর রোববার সন্ধ্যায় যখন বাস ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা আসে, তার পর থেকেই যাত্রী পরিবহন শুরু হয়।
সড়ক পরিবহন খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সঙ্গে মালিকদের বৈঠক শেষে বাস ভাড়া ২৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে স্পষ্টতই জানানো হয়, এই বর্ধিত ভাড়া সিএনজিচালিত বাসের জন্য নয়।
তবে বাস মালিকদের নেতা খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সেখানে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে করে বসেন অদ্ভুত দাবি। তিনি বলেন, অল্প কিছু বাস সিএনজিতে চলে। সেগুলোতেও বর্ধিত হারে ভাড়া কার্যকর না করা উচিত হবে না।
তবে এত দিন জানা যাচ্ছিল, ঢাকায় অল্প কিছু বাসই ডিজেলে চলে। আর ২০১৫ সালে যখন সিএনজির দাম বাড়ানোর কারণে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়, তখন সব বাস সিএনজিতে চলে এমন কথা বলেই বাসমালিকরা ভাড়া বাড়ান।
এবার ঘটল উল্টো ঘটনা। সকাল থেকেই সব বাস বাড়তি ভাড়া আদায় করা শুরু করে। যাত্রীরা প্রশ্ন তুলতেই চালক ও সহকারী দাবি করতে থাকেন, তাদের বাস চলে ডিজেলে।
মিরপুর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত বাসে ১৫ টাকার জায়গায় ২০ টাকা ভাড়া দিতে বাধ্য হওয়া নাহিয়ান আরেফীন জানতেন, সেই বাস সিএনজিতেই চলে। তিনি চালকের সহকারীকে সে কথা বললেনও। কিন্তু মানাতে পারলেন না।
নিউজবাংলাকে নাহিয়ান বলেন, ‘কী বলব ভাই, যখন সিএনজির দাম বাড়ল তখন দেখলাম সব বাসই সিএনজিচালিত হয়ে গেল। এখন আবার ডিজেলের দাম বাড়ল, কী একটা অবস্থা! নগদের ওপর সব বাস ডিজেলের হয়ে গেল! এও সম্ভব!’
তিনি বলেন, ‘এমন কোনো বাস দেখলাম না আজকে যে সিএনজিতে চলে। এতগুলা বাসের ইঞ্জিন কীভাবে এক রাতে চেঞ্জ হয়ে গেল ভাই মাথাতেই ঢুকছে না। এটা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা ছাড়া আর কিছুই নয়৷ সরকারের এটা দেখা উচিত৷’
লাব্বাইক বাসের যাত্রী আরমান আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো বাস সিএনজিচালিত না ডিজেলচালিত এটা বোঝা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হয়, এটা সরকারের মনিটর করা উচিত যে, কোন বাস সিএনজিচালিত আর কোন বাস ডিজেলচালিত। তাহলে যাত্রীদের এমন দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।’
যাত্রীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০১৫ সালে সিএনজির মূল্য যখন বাড়ল, তখন বাসমালিকরা বলল, তাদের মাত্র ২ শতাংশ বাস তেলে চলে। এ কথা বলে তারা ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে বাস ভাড়া বাড়িয়ে নিল। এখন যখন ২০২১ সালে এসে তেলের দাম বাড়ল, তখন তারা আবার বলে, তাদের মাত্র ২ শতাংশ গাড়ি সিএনজিতে চলে।’
তিনি বলেন, ‘এই ইস্যুটি এখন সুরাহার দাবি রাখে। তাই ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে এই বর্ধিত ভাড়া স্থগিত রেখে একটা সার্ভে হওয়া প্রয়োজন। তারপরে এই ভাড়া কার্যকর করা যেতে পারে।’
উপায় কী?
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলাম, ডিজেলচালিত ও সিএনজিচালিত বাসের সামনে স্টিকার সাঁটানো প্রয়োজন। আজকে যখন ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির পর পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হলো, সারা দেশে সিএনজিচালিত, অকটেনচালিত সব ধরনের যানবাহনের ভাড়া বেড়ে গেছে। সুযোগসন্ধানী পরিবহন মালিকরা এই সুযোগটা নিয়েছে।’
তবে বিআরটিএর এই ধরনের কোনো উদ্যোগ বা চিন্তা নেই। উল্টো সংস্থাটির চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বিষয়টি ছেড়ে দিলেন যাত্রীদের ওপর।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিএনজির সিলিন্ডার তো গাড়িতেই থাকে। যাত্রীরা একটু কষ্ট করে দেখে নিয়ে তারপর ভাড়া দিলেই হয়।’
যাত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যখন ভাড়া দেবেন, অবশ্যই একটু দেখে নিয়েন, বাসটি সিএনজিচালিত না ডিজেলচালিত। এরপর ভাড়া দেবেন।’
এটা যাত্রীদের দায়িত্ব কি না, এমন প্রশ্নে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজধানীতে অসংখ্য পরিবহন রয়েছে। চাইলে বিআরটিএর একার পক্ষে বাড়তি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। আমরা মাঠে আছি। এই কাজে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন:সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খানকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শাহবাগ থানার মামলায় আজ সোমবার রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খানসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আবু আলম শহীদ খান ১৯৯৬-২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৫৬৭টি মামলা করেছে ঢাকা
মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২০টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১৩৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, রোববার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
দূষিত বায়ুদূষণ বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫ বছর ৫ মাস কমিয়ে দিচ্ছে। বিষাক্ত বায়ুর এই প্রভাব রাজধানী ঢাকায় বিশেষভাবে তীব্র। বায়ুদূষণ এই শহরের মানুষের গড় আয়ু ৬ বছর ৯ মাস কমিয়ে দেয়।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের গত সপ্তাহের এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বাংলাদেশকে বায়ুদূষণে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ু দূষণ হলো আয়ুর জন্য সবচেয়ে বড় বহিরাগত হুমকি। বাংলাদেশে, যা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ।
রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশের ১৬ কোটির বেশি মানুষের সবাই এমন এলাকায় বাস করে, যেখানে বাতাসে ফাইন পার্টিকুলেট দূষণের বার্ষিক গড় মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা (৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার) এবং দেশের জাতীয় সীমা (৩৫ মাইক্রোগ্রাম) উভয়ই ছাড়িয়ে গেছে। রাজধানী ঢাকার মতো জায়গায় এই মাত্রা ৭৬ মাইক্রোগ্রামের ওপরে দেখা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিকা মেনে চললে বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫.৫ বছর বেশি হতে পারে।’
প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, সরকার সমস্যা সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বায়ুর মান দ্রুত খারাপ হচ্ছে।
ঢাকার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের। আমার সন্দেহ আছে, বিশ্বের আর কোনো দেশ এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সাক্ষী আছে কিনা।’
তিনি বলেন, ‘এখানে বায়ু দূষণ এতটাই মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে, এটি শনাক্ত করার জন্য কোনো গবেষণার প্রয়োজন নেই, কারণ এটি খালি চোখেই দেখা যায়।’
বাংলাদেশের শহরগুলোর বাসিন্দাদের জন্য ‘ধোঁয়াশা’ একটি নিত্যদিনের বাস্তবতা। প্রায় প্রতিদিন সকালেই তাদের ঢেকে রাখে এই ‘ধোঁয়াশা’। কিন্তু আরও বিপজ্জনক হলো, দূষণ যেগুলো চোখ দেখতে পায় না: কণা পদার্থ, PM2.5 — ২.৫ মাইক্রোমিটারের কম প্রশস্ত বায়ুবাহিত ক্ষুদ্র কণা- এগুলো ফুসফুস এবং রক্তপ্রবাহের গভীরে প্রবেশ করে মারত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
১৯৯০-এর দশকের শেষের দিক থেকে বাংলাদেশে PM2.5-এর মাত্রা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালে করোনা ভাইরাস মহামারির সময়ই কেবল এই মাত্রা কমেছিল। কিন্তু সেই প্রবণতা স্থায়ী হয়নি।
ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘গত বছরের AQLI রিপোর্টে, আমাদের গড় আয়ু ৪.৮ বছর কমেছে, এবং এই বছর তা ৫.৫ বছর হিসাবে রিপোর্ট করা হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। এটি দেখায় যে, রাষ্ট্র তার জনগণের সুরক্ষার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ এই প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেনি, যার অর্থ বাংলাদেশ সরকারও এই প্রতিবেদনের ফলাফলের সঙ্গে একমত। রাষ্ট্র এখানে দায়িত্ব এড়াতে পারে না।’
দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে তিনি জীবাশ্ম জ্বালানি এবং ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ার ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকে তালিকাভুক্ত করেন, বিশেষত ইটের জন্য কয়লা বা কাঠ পোড়ানো।
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর ঢাকার রাস্তায় অতিরিক্ত ১ লাখ যানবাহন চলাচল করে। এই যানবাহনগুলোর অনেকগুলো যথাযথ ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই চলে। এটি বায়ু দূষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণও আমাদের ওপর প্রভাব ফেলছে। খোলা জায়গায় পোড়ানোসহ সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবও একটি বড় কারণ।’
সর্বশেষ বায়ুদূষণ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় সরকার বছরের শেষ নাগাদ তার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদিও কাজটি সহজ নয়, তবুও পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ু মান ব্যবস্থাপনার পরিচালক ড. জিয়াউল হক স্বীকার করেছেন, ‘বায়ু দূষণের প্রতিটি উৎস’ বাংলাদেশের পরিবেশে বিদ্যমান।
তিনি আরব নিউজকে বলেন, ‘আমরা রাস্তা থেকে ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই যানবাহনগুলো সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু এই খাতে আমরা এখনো কোনো সাফল্য দেখতে পাচ্ছি না।’
ড. জিয়াউল হক বলেন, ‘যেসব বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বায়ুদূষণের জন্য দায়ী, আমরা তাদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের আওতায় আনব। তাদের কারখানার চুল্লিতে একটি যন্ত্র স্থাপন করা হবে এবং আমাদের কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয়ভাবে নির্গমনের ফলাফল নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবেন। যদি কোনো বিচ্যুতি পাওয়া যায়, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করব। ‘বাংলাদেশ পরিষ্কার বায়ু’ প্রকল্পের আওতায় আগামী দুই মাসের মধ্যে এই কাজ শুরু হবে।’
যদিও দূষণের সমস্ত উৎস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, তবুও কিছু উৎস এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে মোকাবিলা করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘ঢাকার ক্ষেত্রে আন্তঃসীমান্ত দূষণ ৩০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ বায়ুদূষণের জন্য দায়ী। এই পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকার ৩৫ শতাংশ বায়ু দূষণ দেশের বাইরে থেকে আসে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকার বায়ু দূষণের ২৯ শতাংশই বর্জ্য এবং জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর কারণে হয়। আমরা এই সমস্যাটি সঠিকভাবে সমাধান করতে পারিনি। আমাদের প্রচেষ্টা সেখানেই আছে।’
সূত্র: আরব নিউজ
রাজধানীর শাহবাগে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটেছে। এ ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
ব্যারিকেড ভেঙে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে অগ্রসর হতে চাইলে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে গেলে পুলিশের পক্ষ থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়।
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)- সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একদল শিক্ষার্থী সকাল ১০টার দিকে পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে সড়কে অবস্থান নেন। এতে শাহবাগ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে স্থাপিত ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ পানি ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দুই পুলিশ সদস্যও আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময় পুলিশ সদস্যদের সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। পরে বাধা পেয়ে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ের মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগ অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ‘মার্চ টু ঢাকা’ অনুযায়ী আজ (বুধবার) সকাল ১০টা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে জড়ো হন। এর ফলে সড়কটির যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩৪৪টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩১৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১১৪টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
রাজধানীর মুগদায় মায়ের সঙ্গে অভিমানে ইঁদুর মারার বিষ পান করে সামিয়া আক্তার (১৫) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সামিয়া মুগদা মাল্টিমিডিয়া স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ও উত্তর মান্ডার এলাকার আজিজুল হকের মেয়ে।
সামিয়ার ভাই সাহিম জানান, সামিয়া একটু রাগী স্বভাবের ছিল। রাতে মায়ের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে অভিমানে বাসায় রাখা ইঁদুর মারার বিষ পান করে। পরে দ্রুত ঢামেকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক মিয়া বলেন, ‘নিহত শিক্ষার্থীর মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি মুগদা থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
মন্তব্য