সিএনজি বা ডিজেলের বিতর্কে না গেলেও রাজধানীতে বাস ভাড়া বাড়িয়ে যে হারে নির্ধারণ করা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি হারে আগেই আদায় করছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। এখন আরও বেশি আদায় করার পর সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে কোনো কোনো রুটে দ্বিগুণ, কোনো কোনো গন্তব্যে তিন গুণ আদায় করা হচ্ছে।
ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর পর বাসমালিকরা ধর্মঘটে গিয়ে চাপ দেয়ার পর দূরপাল্লায় ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১ টাকা ৪২ পয়সা থেকে ১ টাকা ৮০ পয়সা আর নগর পরিবহনে ১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে বড় বাসে ২ টাকা ১৫ পয়সা ও মিনিবাসে ২ টাকা ৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়।
আগেই জানিয়ে দেয়া হয়, এই বর্ধিত ভাড়া কার্যকর হবে কেবল ডিজেলচালিত বাসের ক্ষেত্রে। সিএনজিচালিত বাসে তা কার্যকর হবে না।
কিন্তু দেখা গেছে, এখন সব বাসকে ডিজেলচালিত দাবি করে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। আর ভাড়া এতটাই বেশি নেয়া হচ্ছে, তাতে দেখা যায়, কিলেমিটার ২ টাকা পড়ছে না, ৪ টাকা বা তার চেয়ে বেশি পড়ে যাচ্ছে।
বর্ধিত বাসভাড়া নিয়ে যাত্রীরা প্রতিবাদ করছেন, তর্ক করছেন, কিন্তু সুবিধা করতে পারেননি। কারণ, পরিবহন শ্রমিকরা মানতে রাজি নয়। আর যেতেই হবে, সব বাসেই একই চিত্র, এ কারণে যাত্রীরাও মেনে নিয়েই ক্ষোভ ঝাড়ছেন মন্তব্যে।
এই অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের দিন সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত আদায় করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন তারা।
কিন্তু এই ধরনের হুঁশিয়ারি বারবার দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। কখনও কিছুই করা যায়নি। নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিআরটিএ এ বিষয়ে পরিবহন মালিকদের জবাবদিহির আওতায় আনতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
যাত্রীদের পক্ষে সোচ্চার সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই প্রসঙ্গে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকার ভাড়া নির্ধারণ করেছে কিলোমিটার হিসাবে। আর ঢাকা মহানগরে সেটি আদায় করা হচ্ছে ওয়েবিল হিসাবে। যখন ওয়েবিল হিসেবে ভাড়া আদায় করা হয়, তখন কিলোমিটারের হিসাবে যায় না। ফলে আমি যদি ৫ কিলোমিটার পথে যাতায়াত করি, আমাকে কখনও ১০ কিলোমিটার পথের ভাড়া দিতে হয়। আর সেই ভাড়াও নির্ধারণ করা হয় দূরত্বের তুলনায় বেশি।’
নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজকে আমি শাহবাগ থেকে সাইনবোর্ড আসার পথে রজনীগন্ধা পরিবহনে উঠলাম। শাহবাগ থেকে সাইনবোর্ডের দূরত্ব হলো ১৫ কিলোমিটার। সরকারের বর্ধিত ভাড়া অনুসারে ৩২ টাকা ভাড়া আসার কথা। যাওয়ার সময় ভাড়া নেয়া হয়েছে ৪৫ টাকা আবার আসার পথে ভাড়া নেয়া হয়েছে ৪০ টাকা। এটাই চিত্র রাজধানীজুড়ে, এটাই চিত্র দেশজুড়ে।’
তিনি বলেন, ‘ভাড়া নির্ধারণের সময় আমাদেরকে এই ধরনের কথাগুলো বলারও সুযোগ দেয়া হয়নি। আমাদেরকে বাদ দিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে বলে আমরা মনে করি।’
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ঠেকাতে না পারার বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া নিলে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আমিসহ ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করছি। যাত্রীদের কাছ থেকে ঘোষিত ভাড়ার চেয়ে বাড়তি ভাড়া না নেয়া হয়, এ বিষয়টি তারা দেখছে।’
প্রতিবার যখন অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়, তখন বিআরটিএ এই পদ্ধতিতেই কাজ করে। কিন্তু কখনও তা বাড়তি ভাড়া আদায় ঠেকাতে পারেনি।
বিআরটিএ এর আগেও ভাড়া ঠিক করেছে, সেটি কখনও কার্যকর করতে পারেনি। নিউজবাংলা ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটের বিভিন্ন গন্তব্যের ভাড়া হিসাব করে দেখেছে, নতুন যে হারে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি টাকা আগে থেকেই নেয়া হয়। এখন সেই বাড়তি টাকার চেয়ে বেশি আদায় করা হচ্ছে।
এভাবে ১০/১২ জন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ঢাকা শহরের পয়েন্টে দাঁড়িয়ে বাড়তি ভাড়া আদায় ঠেকাতে না পারার প্রসঙ্গটি তুললে বিআরটিএ চেয়ারম্যান তোলেন জনবল সংকটের বিষয়টি।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাইলেই সারা দেশে একযোগে মনিটরিং করতে পারব না। চট্টগ্রামে ৩ জন ও ঢাকাতে ১০, এই ১৩ জন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে চলছে মনিটরিং।
নির্ধারিত হারের দ্বিগুণ আদায়
রাজধানীর সাতরাস্তা থেকে গুলিস্তানের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটারেরও কম। বিআরটিএ বাস ভাড়া ২৬.৫ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়ার পরেও এই দূরত্বের ভাড়া হয় ১০ টাকা। কিন্তু অনাবিল পরিবহনে আগে থেকেই আদায় হতো ১৫ টাকা। এবার আদায় করা হচ্ছে ২০ টাকা।
৪ দশমিক ৬ কিলোমিটারের জন্য এই ভাড়া নেয়া হলে কিলোমিটার প্রতি পড়ে ৪ টাকা ৩৪ পয়সা।
কেউ যদি মগবাজার নামতে চায়, তাহলেও তার কাছ থেকে ২০ টাকাই আদায় করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কিলোমিটার প্রতি ভাড়া পড়ে ১০ টাকার মতো। কারণ, এই পথটার দূরত্ব তখন হয় ২ কিলোমিটারের কিছুটা বেশি।
গন্তব্য স্বল্প দূরত্বের হলে অবশ্য ২ টাকা ১৫ বা ২ টাকা ৫ পয়সা কিলোমিটারের হিসাবটা আর খাটে না। তখন মিনিবাসে সর্বনিম্ন ভাড়া ৮ টাকা আর বড় বাসে ১০ টাকার হিসাব পড়ার কথা। কিন্তু যেসব বাস সর্বনিম্ন ভাড়া আগে আদায় করত ১০ টাকা, তারা এখন নিচ্ছে ২০ টাকা।
হাতিরঝিলের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটারেরও কম। নতুন হারে এই পথে ভাড়া হয় ১০ টাকার কিছু বেশি। কিন্তু আগেই নেয়া হতো ১৫ টাকা, অর্থাৎ কিলোমিটারে তিন টাকা, এখন নেয়া হচ্ছে ২০ টাকা, অর্থাৎ কিলোমিটারে চার টাকা।
বৈশাখী পরিবহনে আগারগাঁও থেকে মহাখালী পর্যন্ত ৬.৮ কিলোমিটার দূরত্বে আগেই ভাড়া নেয়া হতো ২০ টাকা, অর্থাৎ কিলোমিটার প্রতি ৩ টাকা করে। সোমবার এই পথে ৩০ টাকা ভাড়া চাইতেই যাত্রীরা ক্ষেপে উঠেন। পরে ২৫ টাকা ভাড়া নেন শ্রমিকরা। অর্থাৎ কিলোমিটারে ভাড়া পড়ে ৩ টাকা ৬৭ পয়সা।
একই বাসে আগারগাঁও থেকে বাড্ডা পর্যন্ত দূরত্ব হয় ১০.২ কিলোমিটার। আগে ভাড়া নেয়া হতো ৩০ টাকা। এখন নেয়া হচ্ছে ৪০ টাকা। অর্থাৎ কিলোমিটারে প্রায় চার টাকা।
শ্যামলীর শিশুমেলা থেকে এস এম লাভলী পরিবহনে উঠেছেন পারভেজ আহমেদ। যাবেন কমলাপুর। ভাড়া তুলছিলেন ইসহাক মিয়া। তিনি চাইলেন ৪৫ টাকা।
দুজনের মধ্যে ঝগড়া বাধল। যাত্রী পারভেজ বলছেন, ‘কথা এত টাকা বাড়ছে কীভাবে। ৩০ টাকা ছিল।’
কিন্তু ইসহাক মিয়া বলেন, ‘আগে ৩৫ টাকা আছিল। আপনি, সব্বাইরে জিগান। আমি ক্যা বেশি ভাড়া নিমু?’
উপস্থিত অন্যরাও জানালেন, ১০ টাকা ভাড়া বাড়িয়েছে। তবুও পারভেজ আহমেদ বলতে থাকলেন, ‘এরা সুযোগ পাইলেই বেশি ভাড়া নেয়। আর আজকে তো আরও বেশি সুযোগ পাইছে।’
পরে অবশ্য ৪৫ টাকাই দিলেন পারভেজ।
এই পথের দূরত্ব ৯ দশমিক ৪ কিলোমিটার। ৪৫ টাকা ভাড়া আদায় হলে প্রতি কিলোমিটারে পড়ে ৪ টাকা ৭৮ পয়সা।
কেউ যদি পল্টন বা গুলিস্তানও নামতে চান, তাহলে দূরত্ব দুই কিলোমিটার কমে গেলেও ভাড়া তাকে একই দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া ঠিক হয় কিলোমিটারে ৬ টাকার বেশি।
খিলক্ষেত থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত দূরত্ব হয় ১৪.৫ কিলোমিটার। নতুন হারে ভাড়া হয় ৩০ টাকা। কিন্তু ভিক্টর পরিবহনে এই পরিমাণ টাকা আগেই আদায় করা হতো, এখন আরও বাড়িয়ে নেয়া হচ্ছে ৪০ টাকা।
একই বাসে গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ৩.৩ কিলোমিটারের জন্য আগে ভাড়া নেয়া হতো ১০ টাকা। এখন তা নেয়া হচ্ছে ১৫ টাকা। অর্থাৎ আগে থেকেই বর্তমান হারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হতো। এখন নেয়া হচ্ছে আরও বেশি।
ফার্মগেট থেকে মিরপুর ১০ পর্যন্ত পথের দূরত্ব ৬.৪ কিলোমিটার। আগে থেকেই ভাড়া নেয়া হতো ১৫ টাকা, এখন তা আরও বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে।
ফার্মগেট থেকে শ্যাওড়াপাড়া পর্যন্ত দূরত্ব ৪.৩ কিলোমিটার। আর ফার্মগেট থেকে মিরপুর-১২ পর্যন্ত দূরত্ব ৮.৭ কিলোমিটার। কিন্তু পুরো পথেরই ভাড়া আদায় করা হচ্ছে একই।
আসলে ফার্মগেট থেকে মিরপুর-১২ পর্যন্ত দূরত্বের ভিত্তিতে ভাড়া নির্ধারণ করে আদায় করা হচ্ছে পথের পুরোটার জন্য।
খিলক্ষেত থেকে বনানীর কাকলী মোড় পর্যন্ত ৫.৫ কিলোমিটার দূরতে আগে কোনো বাস নিত ১০ টাকা, কোনো বাস ১৫ টাকা। যেসব বাস এতদিন ১০ টাকা নিত, তারা এখন আদায় করছে ১৫ টাকা, যেসব বাস নিত ১৫ টাকা, তারা আদায় করছে ২০ টাকা।
সোহেল আহমেদ নামে একজন মনজিল পরিবহনে এই পথ পাড়ি দেন। তিনি বলেন, ‘হেলপার ২০ টাকা চাইছিল। আমি ১৫ টাকা দিয়েছি। কিন্তু সে ২০ টাকাই আদায় করার চেষ্টা করেছে।’
বিস্ময়কর হচ্ছে, একই বাসে সোহেলকে ফেরার পথে ভাড়া দিতে হয়েছে ১০ টাকা বেশি। আগে এই পথে ভাড়া নিত ২০ টাকা, সেটি এবার বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৫ টাকা।
এই বাসটি যায় আবদুল্লাহপুরের কামারপাড়া পর্যন্ত। কাকলী থেকে যেখানেই যাত্রী নামুক না কেন, তাকে পুরো পথের ভাড়াই দিতে হয়। এখানে কিলোমিটারের কোনো হিসাব নেই।
মোহাম্মদ মাসুদ বাংলামটর থেকে এস এম লাভলী পরিবহনে উঠেছেন। তার সেলুন মৌচাকে। মগবাজার ফ্লাইওভার পার হওয়ার পর বাস কনট্রাকটার ইসহাক মিয়া ১৫ টাকা ভাড়া চাইতেই তিনি বলতে শুরু করলেন, ‘এইটুকু রাস্তা ১৫ টাকা! দেশটাই মগের মুল্লুক হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে “জুলাই ২০২৪: বিপ্লব ও ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান” শীর্ষক এক সেমিনার আজ ২১ আগস্ট ২০২৫ বৃহস্পতিবার বিভাগীয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহার সভাপতিত্বে সেমিনারে জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. এনামুল হক বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, জুলাই শুধু একটি গণ-অভ্যুত্থান নয়, বরং এটি বৃহৎ পরিবর্তনের একটি সম্ভাবনার প্রতীক। এর মাধ্যমে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, একারণে কাজে-কর্মে, চলনে-বলনে সর্বত্র তাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
আজ সোমবার, সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস। আজ সকালে ঢাকার আকাশে উঁকি দিয়েছে রোদ। বৃষ্টি কমে রোদ উঠতেই ঢাকার বাতাসের মানে অবনতি দেখা গেছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৬৬। বায়ুমান সূচক অনুযায়ী, এই স্কোর নিয়ে শহরটির বাতাসের মান ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হয়েছে।
গতকাল একই সময়ে ঢাকার বাতাসের মান ছিল ‘ভালো’, দূষণ-মান ছিল ৫০। এই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার ৭৪তম স্থানে নেমে গিয়েছিল ঢাকা। তবে আজ আবার তালিকার ২৬তম স্থানে উঠে এসেছে শহরটি।
এদিকে, গতকালের তুলনায় পাকিস্তানের লাহোরের বাতাসের মানে উন্নতি দেখা গেছে। ৮৩ স্কোর নিয়ে তালিকার ১২ তম স্থানে রয়েছে লাহোর। তবে ভারতের দিল্লির বায়ুদূষণ আজও অব্যাহত রয়েছে। ১২৩ স্কোর নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি।
একই সময়ে ১৬৬ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরবের রিয়াদ এবং ১৪৯ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কঙ্গোর কিনশাসা।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
রাজধানীর লালবাগের শহীদনগর এলাকায় গণপিটুনিতে তৌফিকুল ইসলাম নামে এক যুবকের (২৬) মৃত্যু হয়েছে। তিনি স্থানীয়ভাবে ‘কিলার বাবু’ ওরফে ‘টেরা বাবু’ নামেও পরিচতি।
রোববার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় সেনা সদস্যরা ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লালবাগ থানার ওসি মোস্তফা কামাল খান সমকালকে বলেন, ‘নিহত বাবুর বিরুদ্ধে চুরি ও মাদকের ১০-১২টি মামলা রয়েছে। তিনি এলাকার চিহ্নিত চোর এবং মাদক চোরাকারবারী। শনিবার রাত ২টার পরে শহীদ নগর এলাকায় লোকজন তাকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়।’
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে গত দুই দিনে ২ হাজার ২৪৬টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৯৯টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ঢাকা মহানগরীতে দরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষের জন্য ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে আজ সকাল থেকে।
ঢাকার সচিবালয়ের সামনে থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, ধোলাইপাড়, ধোলাইখাল, রামপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন নির্বাচিত ডিলাররা।
প্রতিটি ট্রাক থেকে দরিদ্র একটি পরিবার ২ কেজি ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল ন্যায্য মূল্যে কিনতে পারছেন।
টিসিবির উপ পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) উদ্যোগে রোববার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ভর্তুকি মূল্যে রাজধানীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। পণ্যগুলো হল ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল।
জানা যায়, ঢাকা মহানগরীতে আজ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন (শুক্রবার ছাড়া) টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ৬টি, কুমিল্লা মহানগরীতে ৩টি এবং ঢাকা জেলায় ৮টি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় ৪টি, পটুয়াখালী জেলায় ৫টি ও বাগেরহাট জেলায় ৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে আজ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১৯ দিন (শুক্রবার ছাড়া) পণ্য বিক্রি করা হবে।
দৈনিক প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫শ’ জন সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। একজন ভোক্তা একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২ লিটার ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল কিনতে পারবেন। ভোজ্যতেল ২ লিটার ২৩০ টাকা, চিনি ১ কেজি ৮০ টাকা এবং মসুর ডাল ২ কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হবে। যে কোনো ভোক্তা ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে ধাক্কামারা চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জুথী আক্তার শ্রাবন্তী ওরফে যুথী আক্তার জ্যোতি ওরফে লিমা আক্তার (২২) এবং শাহনাজ বেগম (৪২)।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে তেজগাঁও থানাধীন বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আসামিরা বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের সপ্তম তলার লিফটের সামনে কৌশলে এক নারীকে ধাক্কা মেরে তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা চুরি করে। এ সময় সন্দেহ হলে তিনি তার ব্যাগ পরীক্ষা করে টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর ভুক্তভোগী ও তার স্বামী চিৎকার দিলে শপিং মলের নিরাপত্তা প্রহরীরা এগিয়ে আসেন। তাদের সহায়তায় ওই দুই নারীকে আটক করা হয়। তবে তাদের সঙ্গে থাকা অপর দু’জন কৌশলে পালিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরও দুই নারী ভুক্তভোগী জানান, তাদের যথাক্রমে এক লাখ টাকা ও ৪.৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের টিকলি (মূল্য আনুমানিক ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা) এবং ১০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চুরির কথা স্বীকার করেছে।
তেজগাঁও থানা পুলিশ ও নারী পুলিশের সহায়তায় আসামি যুথী আক্তারের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে চুরি হওয়া নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্বর্ণের টিকলি উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, যুথী আক্তার আন্তঃজেলা পকেটমার চক্রের নেতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানানো হয়।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ২ হাজার ১৭২টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ২৮৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৭৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
মন্তব্য