সিএনজি বা ডিজেলের বিতর্কে না গেলেও রাজধানীতে বাস ভাড়া বাড়িয়ে যে হারে নির্ধারণ করা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি হারে আগেই আদায় করছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। এখন আরও বেশি আদায় করার পর সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে কোনো কোনো রুটে দ্বিগুণ, কোনো কোনো গন্তব্যে তিন গুণ আদায় করা হচ্ছে।
ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর পর বাসমালিকরা ধর্মঘটে গিয়ে চাপ দেয়ার পর দূরপাল্লায় ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১ টাকা ৪২ পয়সা থেকে ১ টাকা ৮০ পয়সা আর নগর পরিবহনে ১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে বড় বাসে ২ টাকা ১৫ পয়সা ও মিনিবাসে ২ টাকা ৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়।
আগেই জানিয়ে দেয়া হয়, এই বর্ধিত ভাড়া কার্যকর হবে কেবল ডিজেলচালিত বাসের ক্ষেত্রে। সিএনজিচালিত বাসে তা কার্যকর হবে না।
কিন্তু দেখা গেছে, এখন সব বাসকে ডিজেলচালিত দাবি করে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। আর ভাড়া এতটাই বেশি নেয়া হচ্ছে, তাতে দেখা যায়, কিলেমিটার ২ টাকা পড়ছে না, ৪ টাকা বা তার চেয়ে বেশি পড়ে যাচ্ছে।
বর্ধিত বাসভাড়া নিয়ে যাত্রীরা প্রতিবাদ করছেন, তর্ক করছেন, কিন্তু সুবিধা করতে পারেননি। কারণ, পরিবহন শ্রমিকরা মানতে রাজি নয়। আর যেতেই হবে, সব বাসেই একই চিত্র, এ কারণে যাত্রীরাও মেনে নিয়েই ক্ষোভ ঝাড়ছেন মন্তব্যে।
এই অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের দিন সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত আদায় করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন তারা।
কিন্তু এই ধরনের হুঁশিয়ারি বারবার দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। কখনও কিছুই করা যায়নি। নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিআরটিএ এ বিষয়ে পরিবহন মালিকদের জবাবদিহির আওতায় আনতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
যাত্রীদের পক্ষে সোচ্চার সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই প্রসঙ্গে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকার ভাড়া নির্ধারণ করেছে কিলোমিটার হিসাবে। আর ঢাকা মহানগরে সেটি আদায় করা হচ্ছে ওয়েবিল হিসাবে। যখন ওয়েবিল হিসেবে ভাড়া আদায় করা হয়, তখন কিলোমিটারের হিসাবে যায় না। ফলে আমি যদি ৫ কিলোমিটার পথে যাতায়াত করি, আমাকে কখনও ১০ কিলোমিটার পথের ভাড়া দিতে হয়। আর সেই ভাড়াও নির্ধারণ করা হয় দূরত্বের তুলনায় বেশি।’
নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজকে আমি শাহবাগ থেকে সাইনবোর্ড আসার পথে রজনীগন্ধা পরিবহনে উঠলাম। শাহবাগ থেকে সাইনবোর্ডের দূরত্ব হলো ১৫ কিলোমিটার। সরকারের বর্ধিত ভাড়া অনুসারে ৩২ টাকা ভাড়া আসার কথা। যাওয়ার সময় ভাড়া নেয়া হয়েছে ৪৫ টাকা আবার আসার পথে ভাড়া নেয়া হয়েছে ৪০ টাকা। এটাই চিত্র রাজধানীজুড়ে, এটাই চিত্র দেশজুড়ে।’
তিনি বলেন, ‘ভাড়া নির্ধারণের সময় আমাদেরকে এই ধরনের কথাগুলো বলারও সুযোগ দেয়া হয়নি। আমাদেরকে বাদ দিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে বলে আমরা মনে করি।’
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ঠেকাতে না পারার বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া নিলে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আমিসহ ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেট রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করছি। যাত্রীদের কাছ থেকে ঘোষিত ভাড়ার চেয়ে বাড়তি ভাড়া না নেয়া হয়, এ বিষয়টি তারা দেখছে।’
প্রতিবার যখন অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়, তখন বিআরটিএ এই পদ্ধতিতেই কাজ করে। কিন্তু কখনও তা বাড়তি ভাড়া আদায় ঠেকাতে পারেনি।
বিআরটিএ এর আগেও ভাড়া ঠিক করেছে, সেটি কখনও কার্যকর করতে পারেনি। নিউজবাংলা ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটের বিভিন্ন গন্তব্যের ভাড়া হিসাব করে দেখেছে, নতুন যে হারে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি টাকা আগে থেকেই নেয়া হয়। এখন সেই বাড়তি টাকার চেয়ে বেশি আদায় করা হচ্ছে।
এভাবে ১০/১২ জন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ঢাকা শহরের পয়েন্টে দাঁড়িয়ে বাড়তি ভাড়া আদায় ঠেকাতে না পারার প্রসঙ্গটি তুললে বিআরটিএ চেয়ারম্যান তোলেন জনবল সংকটের বিষয়টি।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাইলেই সারা দেশে একযোগে মনিটরিং করতে পারব না। চট্টগ্রামে ৩ জন ও ঢাকাতে ১০, এই ১৩ জন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে চলছে মনিটরিং।
নির্ধারিত হারের দ্বিগুণ আদায়
রাজধানীর সাতরাস্তা থেকে গুলিস্তানের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটারেরও কম। বিআরটিএ বাস ভাড়া ২৬.৫ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়ার পরেও এই দূরত্বের ভাড়া হয় ১০ টাকা। কিন্তু অনাবিল পরিবহনে আগে থেকেই আদায় হতো ১৫ টাকা। এবার আদায় করা হচ্ছে ২০ টাকা।
৪ দশমিক ৬ কিলোমিটারের জন্য এই ভাড়া নেয়া হলে কিলোমিটার প্রতি পড়ে ৪ টাকা ৩৪ পয়সা।
কেউ যদি মগবাজার নামতে চায়, তাহলেও তার কাছ থেকে ২০ টাকাই আদায় করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কিলোমিটার প্রতি ভাড়া পড়ে ১০ টাকার মতো। কারণ, এই পথটার দূরত্ব তখন হয় ২ কিলোমিটারের কিছুটা বেশি।
গন্তব্য স্বল্প দূরত্বের হলে অবশ্য ২ টাকা ১৫ বা ২ টাকা ৫ পয়সা কিলোমিটারের হিসাবটা আর খাটে না। তখন মিনিবাসে সর্বনিম্ন ভাড়া ৮ টাকা আর বড় বাসে ১০ টাকার হিসাব পড়ার কথা। কিন্তু যেসব বাস সর্বনিম্ন ভাড়া আগে আদায় করত ১০ টাকা, তারা এখন নিচ্ছে ২০ টাকা।
হাতিরঝিলের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটারেরও কম। নতুন হারে এই পথে ভাড়া হয় ১০ টাকার কিছু বেশি। কিন্তু আগেই নেয়া হতো ১৫ টাকা, অর্থাৎ কিলোমিটারে তিন টাকা, এখন নেয়া হচ্ছে ২০ টাকা, অর্থাৎ কিলোমিটারে চার টাকা।
বৈশাখী পরিবহনে আগারগাঁও থেকে মহাখালী পর্যন্ত ৬.৮ কিলোমিটার দূরত্বে আগেই ভাড়া নেয়া হতো ২০ টাকা, অর্থাৎ কিলোমিটার প্রতি ৩ টাকা করে। সোমবার এই পথে ৩০ টাকা ভাড়া চাইতেই যাত্রীরা ক্ষেপে উঠেন। পরে ২৫ টাকা ভাড়া নেন শ্রমিকরা। অর্থাৎ কিলোমিটারে ভাড়া পড়ে ৩ টাকা ৬৭ পয়সা।
একই বাসে আগারগাঁও থেকে বাড্ডা পর্যন্ত দূরত্ব হয় ১০.২ কিলোমিটার। আগে ভাড়া নেয়া হতো ৩০ টাকা। এখন নেয়া হচ্ছে ৪০ টাকা। অর্থাৎ কিলোমিটারে প্রায় চার টাকা।
শ্যামলীর শিশুমেলা থেকে এস এম লাভলী পরিবহনে উঠেছেন পারভেজ আহমেদ। যাবেন কমলাপুর। ভাড়া তুলছিলেন ইসহাক মিয়া। তিনি চাইলেন ৪৫ টাকা।
দুজনের মধ্যে ঝগড়া বাধল। যাত্রী পারভেজ বলছেন, ‘কথা এত টাকা বাড়ছে কীভাবে। ৩০ টাকা ছিল।’
কিন্তু ইসহাক মিয়া বলেন, ‘আগে ৩৫ টাকা আছিল। আপনি, সব্বাইরে জিগান। আমি ক্যা বেশি ভাড়া নিমু?’
উপস্থিত অন্যরাও জানালেন, ১০ টাকা ভাড়া বাড়িয়েছে। তবুও পারভেজ আহমেদ বলতে থাকলেন, ‘এরা সুযোগ পাইলেই বেশি ভাড়া নেয়। আর আজকে তো আরও বেশি সুযোগ পাইছে।’
পরে অবশ্য ৪৫ টাকাই দিলেন পারভেজ।
এই পথের দূরত্ব ৯ দশমিক ৪ কিলোমিটার। ৪৫ টাকা ভাড়া আদায় হলে প্রতি কিলোমিটারে পড়ে ৪ টাকা ৭৮ পয়সা।
কেউ যদি পল্টন বা গুলিস্তানও নামতে চান, তাহলে দূরত্ব দুই কিলোমিটার কমে গেলেও ভাড়া তাকে একই দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া ঠিক হয় কিলোমিটারে ৬ টাকার বেশি।
খিলক্ষেত থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত দূরত্ব হয় ১৪.৫ কিলোমিটার। নতুন হারে ভাড়া হয় ৩০ টাকা। কিন্তু ভিক্টর পরিবহনে এই পরিমাণ টাকা আগেই আদায় করা হতো, এখন আরও বাড়িয়ে নেয়া হচ্ছে ৪০ টাকা।
একই বাসে গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ৩.৩ কিলোমিটারের জন্য আগে ভাড়া নেয়া হতো ১০ টাকা। এখন তা নেয়া হচ্ছে ১৫ টাকা। অর্থাৎ আগে থেকেই বর্তমান হারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হতো। এখন নেয়া হচ্ছে আরও বেশি।
ফার্মগেট থেকে মিরপুর ১০ পর্যন্ত পথের দূরত্ব ৬.৪ কিলোমিটার। আগে থেকেই ভাড়া নেয়া হতো ১৫ টাকা, এখন তা আরও বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে।
ফার্মগেট থেকে শ্যাওড়াপাড়া পর্যন্ত দূরত্ব ৪.৩ কিলোমিটার। আর ফার্মগেট থেকে মিরপুর-১২ পর্যন্ত দূরত্ব ৮.৭ কিলোমিটার। কিন্তু পুরো পথেরই ভাড়া আদায় করা হচ্ছে একই।
আসলে ফার্মগেট থেকে মিরপুর-১২ পর্যন্ত দূরত্বের ভিত্তিতে ভাড়া নির্ধারণ করে আদায় করা হচ্ছে পথের পুরোটার জন্য।
খিলক্ষেত থেকে বনানীর কাকলী মোড় পর্যন্ত ৫.৫ কিলোমিটার দূরতে আগে কোনো বাস নিত ১০ টাকা, কোনো বাস ১৫ টাকা। যেসব বাস এতদিন ১০ টাকা নিত, তারা এখন আদায় করছে ১৫ টাকা, যেসব বাস নিত ১৫ টাকা, তারা আদায় করছে ২০ টাকা।
সোহেল আহমেদ নামে একজন মনজিল পরিবহনে এই পথ পাড়ি দেন। তিনি বলেন, ‘হেলপার ২০ টাকা চাইছিল। আমি ১৫ টাকা দিয়েছি। কিন্তু সে ২০ টাকাই আদায় করার চেষ্টা করেছে।’
বিস্ময়কর হচ্ছে, একই বাসে সোহেলকে ফেরার পথে ভাড়া দিতে হয়েছে ১০ টাকা বেশি। আগে এই পথে ভাড়া নিত ২০ টাকা, সেটি এবার বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৫ টাকা।
এই বাসটি যায় আবদুল্লাহপুরের কামারপাড়া পর্যন্ত। কাকলী থেকে যেখানেই যাত্রী নামুক না কেন, তাকে পুরো পথের ভাড়াই দিতে হয়। এখানে কিলোমিটারের কোনো হিসাব নেই।
মোহাম্মদ মাসুদ বাংলামটর থেকে এস এম লাভলী পরিবহনে উঠেছেন। তার সেলুন মৌচাকে। মগবাজার ফ্লাইওভার পার হওয়ার পর বাস কনট্রাকটার ইসহাক মিয়া ১৫ টাকা ভাড়া চাইতেই তিনি বলতে শুরু করলেন, ‘এইটুকু রাস্তা ১৫ টাকা! দেশটাই মগের মুল্লুক হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর সদরঘাটের শ্যামবাজার ঘাটে একটি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ওই আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এমভি বাঙালি নামের লঞ্চটিতে কোনো যাত্রী ছিল না।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানিয়েছেন, দুপুর ১টা ৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চারটি ইউনিট। পরে যোগ দেয় আরও একটি ইউনিট।
তিনি জানান, দুপুর পৌনে ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। লঞ্চটির তৃতীয় তলায় আগুনের সূত্রপাত। আগুনের কারণ ও বিস্তারিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, লঞ্চটি নোঙর করা ছিল। হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) গেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা আমিরকে টাইগার গেটে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। খবর বাসসের
তারা সেখানে একান্ত বৈঠকেও মিলিত হবেন। পরে তারা দুই দেশের মধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করবেন।
পিএমও ত্যাগের আগে আমির টাইগার গেটে রক্ষিত ভিজিটরস বুকেও সই করবেন। এরপর তিনি বঙ্গভবনে যাবেন যেখানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতার আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছেন।
সন্ধ্যায় আমির একটি বিশেষ বিমানে কাতারের উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে কাতারের আমির সোমবার দু দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা এসেছেন।
আগামী ২৬ এপ্রিলের (শুক্রবার) শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ স্থগিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু অনুমতি দেয়া হয়নি। ফলে সমাবেশ আপাতত স্থগিত। শান্তি সমাবেশের তারিখ পরে জানানো হবে।’
প্রসঙ্গতঃ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
রোববার (২১ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের ঘোষণা দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বেলা ৩টা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করা হবে।
অবশ্য এর আগে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ২৬ এপ্রিল বিকেলে নয়াপল্টনে সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। পরে তাপপ্রবাহের কারণ দেখিয়ে সোমবার তা স্থগিত করে দলটি।
রাজধানীর গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের সামনে থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে পাঠানো হয়।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আরিফ নেওয়াজ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন ফুটপাত থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করি,পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, আশেপাশের লোকদের সাথে কথা বলে জানতে পারি, মৃত ব্যক্তি ভবঘুরে প্রকৃতির ছিলেন। ভিক্ষাবৃত্তি করতেন এবং সেখানে ঘুমাতেন। তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি তবে জানার চেষ্টা চলছে।
এসআই বলেন, সিআইডির ক্রাইম সিনকে খবর দেয়া হয়েছে। ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে হয়তো তার পরিচয় জানা যেতে পারে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ মর্গে রাখা হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে নিম্ন মানে শীর্ষে না থাকলেও অস্বাস্থ্যকরই রয়ে গেছে ঢাকার বাতাস।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানি আইকিউ এয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল ৯টা ৫৯ মিনিটে ১২০ স্কোর নিয়ে ১২২টি শহরের মধ্যে বায়ুর নিম্ন মানে অষ্টম ছিল ঢাকা।
একই সময়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল নেপালের কাঠমান্ডু, চীনের বেইজিং, ও থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ দিনের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৭ গুণ বেশি।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
আজ সকাল ৯টা ৫৯ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১২০। এর মানে হলো ওই সময়টাতে সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ছিল ঢাকার বাতাস।
আরও পড়ুন:রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেটে চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে আহত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের বাম পায়ের কোনো আঙুলই রাখার সম্ভবনা নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রোববার ঢাকা মেডিক্যাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রধান অধ্যাপক ডা. বিধান সরকার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আহত অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের বাম পায়ের আঙুল যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে পাঁচটা আঙুলের কোনটাই রাখা সম্ভব না। এছাড়া ডান পায়ের বুড়ো আঙুল ও হালকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ডা. বিধান সরকার বলেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক্স বিভাগ, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ ও ক্যাজুয়ালটি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে দেখছেন। বর্তমানে তিনি অপারেশন থিয়েটারে আছেন। তবে তার অবস্থা স্ট্র্যাবল। এ ছাড়া বাম পায়ের পাতার টিস্যুগুলো নষ্ট হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে, রোববার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেটে চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে পায়ের আঙুল কাটা পড়ে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের (৬০)।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. মো. হারুন অর রশিদ জানান, দিনাজপুর ফুলবাড়িয়া গিয়েছিলেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। বিভিন্ন সময় কয়লা খনির শ্রমিকদের মৃত্যুতে দিনাজপুরে শনিবার একটি শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় অংশ নিতে গিয়েছিলেন তিনি। রোববার দিনাজপুরের ফুলবাড়ী থেকে থেকে ট্রেনে করে ঢাকায় ফিরছিলেন।
আনু মুহাম্মদের সাথে থাকা মো. মাহাতাব বলেন,‘ট্রেনটি খিলগাঁও ক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে গতি কমিয়ে দেয়। তখন সেখানে ট্রেন থেকে নামছিলেন তিনি। তবে নামার সময় তার পা পিছলে মাজা পর্যন্ত চাকার নিচে চলে যায়। এমন সময় ট্রেনটি চলতে শুরু করে। দেখতে পেয়ে দ্রুত ট্রেনের নিচ থেকে বের করতে করতে চাকার নিচে পায়ের আঙুলগুলো কাটা পরে।
দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল ক্যায়াজুয়ালিটি বিভাগের ১০৫ নম্বর কক্ষে আহত আনু মুহাম্মদকে অপারেশন থিয়েটার (ওটিতে) নেয়া হয়। দুই ঘণ্টা অস্ত্রোপচার শেষে দুপুর ২টা ১০ মিনিটে পোস্ট অপারেটিভ নেয়া হয় তাকে। তিনি বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে বাম পায়ের আঙুল কাটা পড়েছে তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের।
কমলাপুর যাওয়ার জন্য ট্রেনে ওঠার সময় রোববার বেলা ১১টার দিকে অসাবধানতাবশত পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক এ শিক্ষক।
পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় তাকে, যেখানে এই মুহূর্তে চিকিৎসা চলছে তার।
আনু মুহাম্মদকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থী মাহতাব বলেন, ‘খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় ধীরগতিতে চলা একটি ট্রেন কমলাপুরের দিকে যাওয়ার সময় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ওই ট্রেনে উঠতে যান। ওই সময় পা পিছলে চাকার নিচে পা চলে যায়। এতে তার বাম পায়ের আঙুল থেঁতলে যায় এবং কাটা পড়ে।’
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ সহকারী উপপরিদর্শক মাসুদ মিয়া বলেন, ‘খিলগাঁও রেলগেট থেকে ট্রেনে পায়ের আঙুল কাটা অবস্থায় আনু মুহাম্মদকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
মন্তব্য