১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা জাতীয় চার নেতাকে। বঙ্গবন্ধুর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী জাতীয় চার নেতা হলেন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামান।
এ হত্যাকাণ্ডের আড়াই মাস আগে ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে সপরিবারে হত্যা করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয় তার চার বিশ্বস্ত সহযোগীকে।
এ হত্যাকাণ্ড স্মরণে প্রতি বছর ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
১৯৭৫ সালের ৪ নভেম্বর ওই সময়ের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের নাম উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, তার নেতৃত্বে চার-পাঁচ জন সেনাসদস্য কারাগারে ঢুকে চার নেতাকে হত্যা করেন। গুলি করে নেতাদের হত্যা করা হয়। পরে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
রাজনীতির নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর মামলার রায় ঘোষণা করে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত। রায়ে পলাতক আসামি রিসালদার (ক্যাপ্টেন) মোসলেহ উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও দফাদার মো. আবুল হাশেম মৃধাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। সাবেক মন্ত্রী কে এম ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, নুরুল ইসলাম মঞ্জুর ও তাহেরউদ্দিন ঠাকুরকে খালাস দেয়া হয়। এরপর বিষয়টি উচ্চ আদালতে গড়ায়। ২০১৩ সালে আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে এর বিচারকাজ শেষ হয়।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আলাদা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করার পাশাপাশি জাতিকে নেতৃত্বহীন করার লক্ষ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর স্বাধীনতা বিরোধী চক্র কারাবন্দি অবস্থায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ঘাতকচক্রের উদ্দেশ্য ছিল দেশে অগণতান্ত্রিক স্বৈরশাসনের উত্থানের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের চেতনা থেকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে মুছে ফেলা।
তিনি বলেন, ‘ঘাতকচক্রের সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর আদর্শ চির অম্লান থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেয়া বাণীতে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও জাতীয় চার নেতার জঘন্য হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী পরাজিত শক্তি ও দেশবিরোধী চক্র বাংলার মাটি থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম চিরতরে মুছে ফেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস এবং বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। ঘাতকদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা।’
গণতন্ত্র বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির যে কোনো অপতৎপরতা ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে।’
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি
আওয়ামী লীগ মনে করে, জাতীয় চার নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ও চেতনাকে নির্মূল করা। কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের সুদীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম আর আত্মত্যাগের বিনিময়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর খুনিচক্র এবং তাদের হত্যার রাজনীতি পরাজিত হয়েছে।
যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালনে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ। তবে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গতবারের মতো এবারও জেলহত্যা দিবসের কর্মসূচি নেয়া হয়েছে সীমিত পরিসরে।
বুধবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে সংগঠনের সব পর্যায়ের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন করবে আওয়ামী লীগ।
সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।
সকাল ৯টায় রাজধানীর বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের কালরাতে নিহত সকল শহীদ ও কারাগারে নির্মমভাবে নিহত জাতীয় নেতাদের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাতেরও আয়োজন করা হয়েছে।
এ সময় রাজশাহীতে জাতীয় নেতা শহীদ কামারুজ্জামানের কবরে ফুলেল শ্রদ্ধা, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও মোনাজাত করা হবে।
সকাল ১১টায় জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভারও আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ।
এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সকল সাংগঠনিক জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন শাখা এবং সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, সমর্থক এবং সর্বস্তরের জনগণকে ৩ নভেম্বর যথাযথ মর্যাদা ও শোকাবহ পরিবেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলহত্যা দিবস পালনে আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আরও পড়ুন:বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ই-মেইল সার্ভার হ্যাক হলেও তাতে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তাছাড়া ওই ঘটনায় হ্যাকাররা কোনো ধরনের টাকাপয়সাও দাবি করেনি। এমন দাবি সম্পর্কিত কোনো তথ্য বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে নেই।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী রোববার এমনটা দাবি করেছেন।
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ শীর্ষক স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিমান প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিউল আজিম বলেন, ‘ই-মেইল সার্ভার হ্যাক হলেও এ নিয়ে টাকা চাওয়ার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।’
রাষ্ট্রীয় শতভাগ মালিকানাধীন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ই-মেইল সার্ভার হ্যাক হয় ১৭ মার্চ। সেদিন বেলা সোয়া ২টার দিকে সার্ভার হাতিয়ে নিয়ে হ্যাকাররা বিমানকে প্রথম নিজেদের দাবির কথা জানায়।
বিমান সূত্রে জানা যায়, ২১ মার্চ হ্যাকাররা জানায় যে তাদের কাছে বিমানের ১০০ গিগাবাইটের বেশি ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্য রয়েছে। এ ছাড়া বিমানের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক থেকে অনেক ডেটা তারা ডাউনলোড করে রেখেছে। বিমান তাদের দাবি মেনে না নিলে তারা নিজেদের ব্লগে এগুলো প্রকাশ করে দেবে।
২২ মার্চ বিকেলে হ্যাকাররা বিমানকে আরেকটি বার্তা পাঠায়। ওই বার্তায় বলা হয়, ‘গণমাধ্যমে আপনারা বলছেন যে কোনো তথ্য ফাঁস হয়নি। কিন্তু আপনারা ভুল।’
ফ্লাইট, বিমানের যাত্রী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাসপোর্টের তথ্যসহ আরও বেশকিছু তথ্য হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বলে হ্যাকাররা বিমানকে জানায়।
জানা যায়, ১০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে হ্যাকাররা বিমানের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করে। অন্যথায় সব তথ্য ফাঁস করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয় তারা।
এ ঘটনার ছয় দিন পর ২৩ মার্চ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিমান তাদের ই-মেইল সার্ভার র্যানসমওয়্যার দ্বারা আক্রান্তের কথা জানায়।
হ্যাকাররা বিমানের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করেছে- এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিমান প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘হ্যাকাররা টাকা দাবি করেছে বলে যে কথাটা উঠেছে সেটি সঠিক নয়। এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। এ বিষয়ে বিমান আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। টাকা দাবি করার এ খবর ভিত্তিহীন। এ ধরনের কোনো প্রমাণ আমাদের কাছে নেই।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাকাররা ফায়ারওয়ালের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। এ কারণে তারা বেশি ক্ষতি করতে পারেনি। তারা তেমন কোনো তথ্য নিতে পারেনি। সাইবার অ্যাটাক হলে যা কিছু করতে হয় তা বিমানের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। জিডি করা হয়েছে, সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
৯ দিনেও কেন ই-মেইল সার্ভার হ্যাকারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা যায়নি- এমন প্রশ্নে এমডি শফিউল আজিম বলেন, ‘বিমানের পরিচালনায় বা অপারেশনাল কাজে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি, যথারীতি কাজ করছে। কোনো বিষয়ে অসুবিধা হয়নি। আজও কাজ চলছে। আমরা আশা করি আগামীকাল সোমবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে এ ঘটনার একটি পরিপূর্ণ চিত্র দিতে পারব।’
বিমান সাইবার হামলার শিকার হতে পারে- এমন আগাম সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে শফিউল আজিম বলেন, ‘এ ধরনের কোনো সতর্ক বার্তা দেয়া হয়নি। যৌথভাবে বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। এই দলের কাজ শেষ হলে জানা যাবে। তবে বিমানের বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি।’
বিমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাফিলতির কারণে হ্যাকাররা এ ঘটনা ঘটানোর সুযোগ পেয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিমানের এমডি বলেন, ‘আমাদের কোনো ঘাটতি থেকে থাকলে সেগুলো আমরা সামনে তুলে নিয়ে আসব। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা কিভাবে ঠেকানো যায় তা নিয়েও বিমান কাজ করবে।’
আরও পড়ুন:সৌদি আরবের রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযথ মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। অনু্ষ্ঠানে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রোববার সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মো. আবুল হাসান মৃধা। তিনি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে দূতাবাসে স্থাপিত অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর রিয়াদে বিভিন্ন সংগঠন ও বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পক্ষ থেকে অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক মিনিটের কম সময়ের ওই ভিডিওবার্তায় সরকারপ্রধান বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, আসসালামু আলাইকুম। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আমি দেশের ভেতরে এবং বাইরে বসবাসকারী বাংলাদেশের সকল নাগরিককে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করি এবং আমরা পাই স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ।
‘আমি শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জানাই সালাম। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে। আসুন জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ি। বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।’
মহান স্বাধীনতা দিবসে পুলিশ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে রোববার সকাল ৮টার দিকে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।
ওই সময় একটি সুসজ্জিত পুলিশ দল গার্ড অফ অনার দেয়; বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
প্রথমে পুলিশ স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান, ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, এসবির প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম ও র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
পরে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
এরপর বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও এসবিপ্রধান মো. মনিরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানসহ অ্যাসোসিয়েশনের অন্য নেতা, ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্ক (বিপিডব্লিউএন) নেতারা আলাদাভাবে পুলিশ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
দেশের সাতটি বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, বাকি অঞ্চলগুলোর আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে।
এতে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে জানানো হয়, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর বাইরে দেশের অন্যান্য জায়গার আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
ঢাকায় রোববার সন্ধ্যা ৬টা ১২ মিনিটে সূর্যাস্ত হবে জানিয়ে অধিদপ্তর বলেছে, সোমবার ঢাকায় সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ৫৬ মিনিটে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে বলা হয়, সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলীতে।
সংস্থাটির পূর্বাভাসে বলা হয়, শনিবার দেশের সর্বোচ্চ ৩৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়। রোববার দেশের সর্বনিম্ন ১৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
আরও পড়ুন:মহান স্বাধীনতা দিবসে ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবনে রোববার সকালে স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও সিলমোহর অবমুক্ত করেন তিনি।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা।
স্বাধীনতা দিবসে আগের বছরগুলোতেও স্মারক ডাকটিকিট, খাম ও সিলমোহর অবমুক্ত করেছেন সরকারপ্রধান।
ডাকটিকিট অবমুক্ত করার আগে ভোরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মহান স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রোববার ভোর ৫টা ৫৬ মিনিটে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান ফুলের তোড়া দিয়ে তাদের শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। ওই সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল অভিবাদন জানায়; বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ফের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তাদের পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারপর শ্রদ্ধা জানান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এরপর ১৪ দল নেতারা স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সংগঠন ও রাষ্ট্রীয় সংস্থার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সর্বস্তরের মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয় স্মৃতিসৌধ চত্বর।
২৬ মার্চ দিনটি বাঙালির কাছে একই সঙ্গে গৌরব ও শোকের। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শুরু করে গণহত্যা। ওই রাতেই বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, ‘আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন।’
ওই ঘোষণার পর ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের সিঁড়ি বেয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের বুকে অভ্যুদয় হয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের।
প্রতি বছর বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় দিনটি পালন করে জাতি।
মন্তব্য