ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ৩৪৯ সদস্য নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। আংশিক কমিটির ৪৫ মাস পর দেয়া এ পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়েও বড়।
২০১৯ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ৩০১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির থেকেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সদস্যসংখ্যা ৪৮টি বেশি।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য রোববার ছাত্রলীগের ফেসবুক আইডি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার এ পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করেন। তাদের মধ্যে রোববার রাতে ২৯৫ জন ও সোমবার দুপুরে ৫৪ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
শুধু আকারে বড় নয়, এ কমিটিতে উপসম্পাদক পদই দেয়া হয়েছে ১৩৬ জনকে। এ ছাড়া ৯০ জনকে সহসভাপতি এবং সহসম্পাদক করা হয়েছে ৫৯ জনকে।
অভিযোগ উঠেছে, কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন বিবাহিত, অছাত্র, মাদকসেবী, প্রবাসী, ব্যবসায়ী, রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় এবং বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িতরাও।
জেলা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা জানান, ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের ১০ দিন পর রবিউল হোসেন রুবেলকে সভাপতি ও শাহাদাৎ শোভনকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রলীগের সাত সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এক বছর মেয়াদের সেই কমিটির ৩ বছর ৯ মাস পর দেয়া হলো পূর্ণাঙ্গ এ কমিটি।
দীর্ঘ প্রতীক্ষিত হলেও কমিটি হওয়ার পরই এর আকার ও পদ পাওয়া নেতা-কর্মীদের নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। এ ছাড়া মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের ভাদুঘর থেকে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলও করেছেন।
স্থানীয় ছাত্রলীগের এক নেতা নিউজবাংলাকে জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহসভাপতি পদ পাওয়া আমির হামজা ভূঁইয়া নাহিদের বয়স বেশি। সহসভাপতি মোবারক হোসেন মোবাইল ব্যবসায়ী ও এক কন্যাসন্তানের বাবা।
এ ছাড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অন্তত অর্ধশতাধিক বিবাহিতকে পদ দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তার।
সহসভাপতি হওয়া শাফি আলম এবং উপ-ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে জুবায়েরের একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে আমি বাকরুদ্ধ। মন চায় পদত্যাগ করি। এত বড় কমিটি দিয়ে কী করব জানি না।’
একাধিক নেতা-কর্মী তুলেছেন টাকার বিনিময়ে কমিটি দেয়ার অভিযোগ।
শুধু নেতা-কর্মী নন, সাধারণ মানুষও মেতেছেন আলোচনা-সমালোচনায়। শহরের বিভিন্ন চায়ের স্টলে কমিটির উদ্ভট আকার নিয়ে চলছে বিতর্ক। অধিকাংশেরই মত, এত সদস্যের কমিটি তারা জীবদ্দশায় দেখেননি।
রিকশাচালক হামিদ মিয়া বলেন, ‘আমি বাপ শহরের শেরপুর থাকি। বয়স হইয়া গেছেগা ৬০ বছর। বলতে ডর কিতা। ছাত্রলীগের পুলাপাইন তো সব জায়গায় ভেজাল করে।
‘অহন হুনি ২০০-র উফরে লোক আছে কমিটিত। হগলেই নেই হইব। বালা কইডা নেতা রাইক্কা বাহিডিরে (বাকিগুলোরে) বাদ দেলাইলেই কইলাম হয়।’
এক ফুল বিক্রেতা বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগের হগল মিছিলো ছোড ছোড (ছোট ছোট) পুলাপাইন দেহি। তারা কেমনে রাজনীতি করে বুঝি না। বয়স তো অনেক হইসে, অনেকতা বুঝি। কিন্তু ভাই সব কতা কওন যানা অহন দুনিয়াত।’
কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ে বড় কমিটি দেয়ায় সমালোচনায় যোগ দিয়েছে শিক্ষিত সমাজও। তাদের অভিযোগ, যারা ওয়ার্ড কমিটিতে আসার যোগ্য না, তাদেরও জেলা কমিটিতে পদ দেয়া হয়েছে। রাজনীতির পদ এখন অনেকটাই সস্তা হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন বলেন, ‘কেন্দ্রীয়ভাবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে থাকা কারও বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হবে।’
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে এত বড় কমিটি জমা দিইনি। তবে কমিটিতে পদ পাওয়া ছাত্রলীগ সদস্যের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের বিষয়ে যদি কেউ সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ
বিশাল আকৃতির কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন পদবঞ্চিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের ভাদুঘর থেকে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের প্রধান ভাদুঘর, কাউতলী, কলেজপাড়া, কালীবাড়ি মোড়, টিএ রোড ও হাসপাতাল মোড় ঘুরে জেলা প্রেস ক্লাবের সামনে শেষ হয়।
সেখানে সমাবেশে সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের কমিটি সংশোধনের জন্য সাত দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হয়।
পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা জানান, তারা চান জেলা ছাত্রলীগ একটি পরিচ্ছন্ন ও ছাত্র-জনতার কমিটি হোক। যারা রোদে-বৃষ্টিতে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, যারা রাজপথে বিএনপির আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মাঠে ছিল, তাদের এই কমিটিতে মূল্যায়ন করা হয়নি।
ছাত্রলীগের কমিটি সংশোধন করে বিবাহিত, অছাত্র, মাদক ব্যবসায়ীদের সরাতে হবে। আগামী সাত দিনের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের এই কমিটি সংশোধন করা না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তারা অভিযোগ করেন, বিবাহিত, অছাত্র, মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক মামলার আসামি প্রায় ১০০ জন এই কমিটিতে পদ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে মাদক ব্যবসায়ী ১০-১২ জন, বিবাহিত ২০-২৫ জন, অছাত্র ৮-১০ জন এবং ছাত্রদলের কমিটি থেকে এসেছেন ৫-৭ জন।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আইয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্ত করে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানাধীন সাজেকে শ্রমিকবাহী ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
বাঘাইছড়ি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে জানান।
এর আগে বিকেলে সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ভাষ্য, খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্প ট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেতুর কাজে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয়জনের মৃত্যু হয়।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭ (সাত) বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৈয়দ সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রিপন চন্দ্র গোপের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬০ বছর বয়সী সৈয়দ সরাফত আলী রাজনগর থানার করিমপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা।
পিবিআই জানায়, শিশুটিকে বাঁশের বাঁশি বানিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে গত ১৪ এপ্রিল বেলা পৌনে দুইটার দিকে সৈয়দ সরাফত আলী তার বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে তিনি আত্নগোপন করেন।
অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গত প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পিবিআই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীর পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে। মামলার খুঁটিনাটি বিষয় বিবেচনায় রেখে নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে রুহুল আমিন নামে এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। বাবার নাম কোরবান আলী।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মধ্যে ট্রাক পরিদর্শন শেষে দুপুর পৌনে ১টার অফিস কক্ষে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল আমিন। সহকর্মীরা তাকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই মারা যান। হাসপাতালে যারা নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন, পানি খেতে চেয়েছিলেন।
তবে তার মৃত্যু যে হিট স্ট্রোকে হয়েছে এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। অন্য কোনো রোগেও তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এখন যেহেতু প্রচণ্ড গরম চলছে তাই এটার প্রভাব থাকতে পারে।
সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২৮৮ জন সদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিটিএ জেটি ঘাট থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের টাগবোটে তুলে দেয়া হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন জানান, গভীর সাগরে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে অপেক্ষায় থাকা মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ চিন ডুইনে তাদের তুলে দেয়া হবে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সেনা ও সীমান্তরক্ষীদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওই জাহাজ বুধবারই বাংলাদেশের জলসীমায় পৌঁছায়। ওই জাহাজে করেই ১৭৩ জন বাংলাদেশি ফিরে এসেছেন। যারা বিভিন্নভাবে মিয়ানমারে আটকা পড়েছিলেন বা সাজা পেয়ে জেলখানায় ছিলেন।
মিয়ানমার নৌবাহিনীর ওই জাহাজে করে দেশটির ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও বুধবার দুপুরে কক্সবাজার পৌঁছায়। পরে তারা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটালিয়নে বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর তারা মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের যাচাই-বাছাইসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।
বিজিবি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ১১টি বাসে করে মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ জেটি ঘাটে নিয়ে আসা হয়।
সেখানে আনার পর ইমিগ্রেশন ও ডকুমেন্টেশনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে শুরু হয় হস্তান্তর প্রক্রিয়া। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও কোস্ট গার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশশে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতসহ দেশটির প্রতিনিধি দলের কাছে তাদের হস্তান্তর করেন।
এরপর সকাল ৭টার দিকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কর্ণফুলি টাগবোটে তুলে দেয়া হয়। কোস্ট গার্ডের একটি ট্রলার টাগবোটটিকে পাহারা দিয়ে গভীর সাগরে নিয়ে যায়।
দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে, যার আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাতেও। সীমান্তের ওপারের মর্টার শেল ও গুলি এসে এপারে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
ওই সংঘাতের মধ্যে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ ৩৩০ জনকে প্রথম দফায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফেরত পাঠিয়েছিল সরকার।
তাদের মধ্যে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি ৩০২ জন, তাদের পরিবারের চার সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন।
এরপর বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্ত নিয়ে কয়েক দফায় আরো ২৮৮ জন সীমান্তরক্ষী ও সেনা সদস্য এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এবার তাদের ফেরত পাঠানো হলো।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বুধবার রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় দুটি ড্রেজার জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ।
মাওয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের যশিলদিয়ায় বুধবার রাত দেড়টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন করায় ওই দুটি ড্রেজার জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ড্রেজার জব্দ করার সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত ড্রেজার দুটির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য