‘এই স্বাধীনতা পূর্ণ হবে না যদি এ দেশের মানুষ, যারা আমার যুবক শ্রেণি আছে, তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়। এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না পায়।’
দেশে কর্মসংস্থান ও খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কথাগুলো বলেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি যে বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে এ মন্তব্য করেন, সেই বাস্তবতার সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের পার্থক্য অনেক।
তখন উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তার ঘাটতি ছিল। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ছিল চাকরি। এখন প্রেক্ষাপট বদলেছে। দেশের যে ৫ কোটি ৩০ লাখ তরুণ জনগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে হাঁটছেন, তাদের কাছে চাকরি একমাত্র বিকল্প নয়।
বর্তমান সরকারের নির্বাচনি ইশতেহারের অন্যতম অঙ্গীকার ‘তারুণ্যের শক্তি, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি’। সরকারের নানামুখী উন্নয়ন তৎপরতার ওপর দাঁড়িয়ে সে লক্ষ্যে হাঁটা শুরু করেছে দেশ।
এখন এই বিপুলসংখ্যক তরুণের অনেকেই চাকরির খোঁজার পরিবর্তে নিজের দক্ষতা, যোগ্যতা ও উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগাচ্ছেন। নিজেই নিজের কর্মসংস্থান তৈরি করছেন তারা। পাশাপাশি অসংখ্য বেকারের চাকরিরও সংস্থান করছেন। কর্মমুখী শিক্ষাও রপ্ত করেছেন অনেকে, যা বেসরকারি বিভিন্ন উৎপাদনশীল খাতে তাদের ভালো মানের চাকরি পেতে কাজে লাগছে।
এ ছাড়া বিপুল বিনিয়োগের মাধ্যমে চাকচিক্যময় শো-রুম খুলে ব্যবসার ধারণাতেও এসেছে পরিবর্তন। তরুণ উদ্যোক্তাদের অনেকেই এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ব্যবসা করছেন। ওয়েবসাইটে খুলে বসেছেন বিচিত্র পণ্যের পসরা। গ্রাহকের কাছে পণ্য পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজন হচ্ছে ডেলিভারিম্যানের। কর্মসংস্থানে দেশে এটিও একটি নতুন ধারণা ও বিপুল সম্ভাবনার নাম।
আত্ম-কর্মসংস্থানে আরেকটি নতুন ধারণা যুক্ত হয়েছে মোটর সাইকেল বা মোটরগাড়িতে রাইডশেয়ারিং। এ খাতে সারা দেশে কয়েক লাখ কর্মসংস্থান এরই মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। আউটসোর্সিংয়ে ৬ লাখের বেশি দক্ষ আইটি ফ্রিল্যান্সারের আত্ম-কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে দেশে।
উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে ডেইরি, পোল্ট্রি, কৃষি, নার্সারি, মোবাইল সার্ভিসিং, ব্লক, বাটিক, স্ক্রিন প্রিন্টিং, ফ্যাশন ডিজাইনিং, ক্যাটারিং, বিউটিফিকেশন, গৃহসজ্জা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, ওয়েল্ডিং, ফটোগ্রাফি, সোলার প্যানেল স্থাপনসহ বিভিন্ন খাতে।
অর্থাৎ তরুণদের মধ্যে এখন চাকরি করার বদ্ধমূল ধারণায় পরিবর্তন এসেছে।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর করা শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, দেশে ৬০ শতাংশ চাকরিজীবী কাজ করেন ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন ১৪ শতাংশ।
সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে হাতেগোনা কয়েক হাজার সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা বেড়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে তা প্রায় ২০ লাখে দাঁড়ায়, তবে কর্মসংস্থান বিবেচনায় সরকারি খাতের অবদান ৪ শতাংশের কম। অথচ বছরে প্রায় ২০ লাখ তরুণ নতুন করে শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে।
এদের অনেকেই সরকারি চাকরি খোঁজার পেছনে এখন আর বছরের পর বছর সময় নষ্ট করতে রাজি নন। তারা হয় নিজেরাই উদ্যোক্তা হচ্ছেন অথবা স্বনির্ভর কোনো কাজে যুক্ত হচ্ছেন। বাকিরা বেসরকারি খাত কিংবা ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান যোগ দিচ্ছেন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বৃহৎ, কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭৮ লাখ ১৩ হাজার। এগুলোর মালিকদের ৯৯ শতাংশই উদ্যোক্তা।
অন্যদিকে দেশে বেসরকারি খাতে এখন প্রায় ৫ কোটি মানুষ কাজ করছে। ছোট-বড় ব্যবসায়ী সৃষ্টি হয়েছে সাড়ে ৩ কোটি।
কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যক্তি মালিকানার কিংবা বেসরকারি খাতের এই উত্থানের বড় শক্তি ছিল দেশের যুব সমাজের চাকরিপ্রার্থী না হয়ে চাকরিদাতা হওয়ার মনোভাব। আজকের অর্থনীতিতে তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।
বাড়ছে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে বছরে যোগ হচ্ছে প্রায় ৫০ হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। এসব উদ্যোক্তার সংখ্যাগরিষ্ঠই তরুণ বা যুবশ্রেণি। তাদের অনেকেই বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে স্বপ্নের কথা বলছেন খোলামেলা। তাদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, তারা চাকরিপ্রার্থী হতে চান না; উদ্যোক্তা হতে চান। তারা চান অন্যকে চাকরি দিতে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আসলে উদ্যোক্তা হওয়ার মতো সেই মেধা, উৎকর্ষ, প্রশিক্ষণ এবং ঝুঁকি নেয়ার অদম্য সাহস তাদের ছিল বলেই নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও দেশে বেসরকারি খাতের আজকের এ অবস্থানে আসা সম্ভব হয়েছে।
‘তবে তরুণ উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক এবং সম্ভাবনময় শ্রেণিকে বাধাহীন এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি এবং তাদের সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে ওঠার মতো অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। এ জন্য সরকারসহ খাত সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থা ও সংগঠনগুলোকেও নীতিগতভাবে বিভিন্ন সুবিধা তৈরি করে দিতে হবে।’
ঢাকা চেম্বার নতুন উদ্যোক্তা তৈরির একটি প্রকল্প নিয়েছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) নতুন উদ্যোক্তা গড়ে তুলছে। একই সঙ্গে এসএমই ফাউন্ডেশন থেকেও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারাও প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্যোক্তা তৈরি করছে।
উদ্যোগী নারীদের সংগঠিত ও প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলছে জয়ীতা ফাউন্ডেশন। উইমেন চেম্বার থেকেও নারী উদ্যোক্তাদের নানাভাবে সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান মাইডাস থেকেও ছোট উদ্যোক্তাদের নানাভাবে সহায়তা দিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন কর্ম সৃজন প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ এলাকায় ছোট ছোট উদ্যোক্তা গড়ে তুলছে।
এ ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় পাহাড়ি এলাকায় ছোট ছোট উদ্যোক্তাদের সহায়তা দিয়ে তাদের বিকাশের সুযোগ করে দিচ্ছে। দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও তাদের ঋণ সহায়তা দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ১০০ কোটি টাকার একটি তহবিলও গঠন করেছে।
কী বলছেন সংশ্লিষ্টরা
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেন, ‘যুব উদ্যোক্তাদের জন্য যদি যুব ব্যাংক বা অন্য কোনো বিশেষায়িত ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে তার মাধ্যমে স্বল্প সুদে নমনীয় শর্তে ঋণ দেয়া হয় এবং সাফল্য বিবেচনায় পর্যায়ক্রমে ওই ঋণের পরিমাণ বাড়ানো হয়, তাহলে ২০৩০ সাল নাগাদ দেশে লাখ লাখ উদ্যোক্তা তৈরি হবে।’
এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবং দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতার তাগিদে জীবনমুখী কর্মসংস্থানের জন্যই তরুণদের মধ্যে তাদের ভবিষ্যত নির্মাণের ভাবনায় একটা বদ্ধমূল পরিবর্তন এসেছে। এটা যতটা না পারিবারিক, তার চেয়ে বেশি তারুণ্যনির্ভর ও প্রযুক্তিসই মানসিকতা ধারণ করার কারণে।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের সবার উচিত এ যুব প্রজন্মকে অর্থনৈতিক কার্যকর ধারায় সম্পৃক্ত করা। অর্থাৎ কর্মসংস্থান সৃষ্টির চেষ্টার চেয়ে উদ্যোক্তা তৈরির চেষ্টাই অর্থনীতিতে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে পারে। এ লক্ষ্যে অব্যাহতভাবে নানামুখী উদ্যোগে যুবকদের সম্পৃক্ত করার এখনই সময়।’
দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা নিজেরাই নিজেদের কর্মসংস্থান তৈরি করছে জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘এর পাশাপাশি বেকার যুব সমাজের জন্যও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাত।’
তিনি বলেন, ‘এ খাতের উন্নয়নে সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে এসএমই ফাউন্ডেশন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সারা দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পণ্য উৎপাদন, বাজার সংযোগ সৃষ্টি এবং দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে তারা। এসব উদ্যোগের ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য আজ সারা বিশ্বে রপ্তানি হচ্ছে। করোনার মধ্যেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ও গ্রামে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।’
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের তরুণ ও যুব সমাজ এখন চাকরি খুঁজছে না, নিজেরাই চাকরি দেয়ার ব্যবস্থা করছে। আগে বলা হতো লেখাপড়া করে যে গাড়ি ঘোড়ায় চড়ে সে। এর বদলে এখন বলতে হয় উদ্যোক্তা হয় যে, গাড়ি-ঘোড়া বানায় সে।’
আইসিটি খাতে ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ লক্ষাধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন জানান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬৪ লাখ ৬৭ হাজার ৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এদের থেকে ২২ লাখ ৮০ হাজার ১৫৩ জন আত্মকর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে তারা যাতে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে ওঠতে পারেন, সে জন্য যুব ঋণ সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অনলাইনভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম যুব পাইকারি সেল ডটকম যুবাদের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি বাজারজাত করতেও ভূমিকা রাখছে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজার সদর উপজেলা ও উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসের ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককূল এলাকায় পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
উখিয়া উপজেলার ১৪ নম্বর হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়।
সদরে প্রাণ হারানো তিনজন হলেন দক্ষিণ ডিককূলের মিজানুর রহমানের স্ত্রী আঁখি মনি (২১) এবং তার দুই শিশু মিহা জান্নাত নাঈমা (৫) ও লতিফা ইসলাম (১)।
উখিয়ায় নিহত তিনজন হলেন ১৪ নম্বর হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-২ ব্লকের কবির আহমেদের ছেলে আবদুর রহিম, আবদুল হাফেজ ও আবদুল ওয়াহেদ।
ঝিলংজা ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান সিকদার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে ভারি বৃষ্টি হওয়ার সময় মিজানুর রহমানের বাড়ির ওপর বিকট শব্দে আকস্মিক পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে। এতে গৃহকর্তাসহ পরিবারের চারজন মাটিচাপা পড়ে। পরে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেশীরা মিজানুরকে জীবিত উদ্ধার করে। এরপর স্থানীয়রা মাটি সরিয়ে অপর তিনজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।’
এ ইউপি সদস্য আরও জানান, মিজানের বাড়িটি খাড়া পাহাড়ের পাদদেশে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে যায়। পরে মধ্যরাতে অব্যাহত ভারি বর্ষণের সময় পাহাড় ধসে বাড়ির ওপর চাপা পড়ে।
এদিকে পাহাড়ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী।
তিনি ভুক্তভোগী পরিবারকে ৭৫ হাজার টাকা অনুদান দেন।
এ বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দৌজা নয়ন বলেন, ‘অব্যাহত ভারি বর্ষণে উখিয়ার ১৪ নম্বর হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে তিনটি বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে মাটি চাপায় একই পরিবারের তিন সহোদরের মৃত্যু হয়েছে। ‘পরে খবর পেয়ে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা বিধ্বস্ত ঘরবাড়িতে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে মাটি সরিয়ে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে।’
অন্যদিকে গত বুধবার থেকে কক্সবাজারে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। টানা বৃষ্টিতে বৃহস্পতিবার জেলা শহরসহ অর্ধশতাধিক গ্রামে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে অনেকের বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। এতে এলাকায় দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৭ ঘণ্টায় মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪০১ মিলিমিটার। চলতি মৌসুমে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
আরও পড়ুন:কক্সবাজার সদরে পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার ঝিলংঝা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককুল এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো তিনজন হলেন দক্ষিণ ডিককুলের মিজানুর রহমানের স্ত্রী আঁখি মনি এবং তাদের দুই মেয়ে শিশু মিহা জান্নাত নাঈমা ও লতিফা ইসলাম।
পাহাড় ধসে প্রাণ হারানো আঁখির শ্বাশুড়ি জানান, রাত দুইটার দিকে ভারি বৃষ্টির সময় মিজানের বাড়ির দিক থেকে বিকট শব্দ শুনতে পান তারা। গিয়ে দেখেন পাহাড় ধসে সপরিবারে মাটিচাপা পড়েছেন মিজান।
তিনি আরও জানান, তাৎক্ষণিকভাবে মিজানকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও বাকিদের ক্ষেত্রে তা সম্ভব হয়নি। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, মিজানের বাড়িটি পাহাড়ের পাদদেশে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে যায়। গভীর রাতে পাহাড় ধসে তার বাড়িতে পড়ে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল গনি ওসমানী জানান, পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়।
তিনি ভারি বর্ষণের এ সময়ে পাহাড়ে বসবাসকারী সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন:ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মেঘনা-গোমতী সেতুর পশ্চিম পাশের ঢালে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত হয়েছেন।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার পালগিরি গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকার জাহিদ হোসেন জিতু (২৩) ও তার খালাত ভাই মোটরসাইকেলের চালক তানভীর আহম্মেদ রনি (২৬)।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা-গোমতী সেতুর পশ্চিম পাশে গজারিয়া অংশের ঢালে গাড়ির চাপায় দুজন নিহত হন। রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে কয়েকজন ব্যক্তি দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।
নিহত জাহিদ হোসেনের বাবা দুলাল মিয়া বলেন, ‘ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে সন্ধ্যায় তারা গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে বের হয়। আমি তাদের নিষেধ করেছিলাম; তারা শোনেনি। রাত ১০টার দিকে খবর পেলাম সড়ক দুর্ঘটনায় দুজনই মারা গেছে।’
দুর্ঘটনায় দুজনের প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত করে গজারিয়ার ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) রিয়াদ হোসেন বলেন, ‘তারা একটি গাড়িকে ওভারটেক করে সামনে আগাতে চাইলে পেছন থেকে আরেকটি গাড়ি তাদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেলটি গজারিয়ার ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে রয়েছে।
‘নিহতদের লাশ দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। ঘাতক গাড়িটিকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তিনটি ইউনিটের ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিট থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছে।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৩২ মিনিটে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। ওই ইউনিটটি ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন হলেও সেটি থেকে রাতে প্রাথমিকভাবে ৭০ থেকে ৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর থেকে জাতীয় গ্রিডে যোগ করা হচ্ছে। এটি চালু রাখতে ৮০০ থেকে ৯০০ টন কয়লা প্রয়োজন হয়।
প্রধান প্রকৌশলী জানান, ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ২ নম্বর ইউনিট বন্ধ রয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর ইলেকট্রো হাইড্রোলিক ওয়েল পাম্প নষ্ট হওয়ায় ৩ নম্বর ইউনিটটিও বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি জানান, ১ নম্বর ইউনিটটি অনেক দিনের পুরোনো। গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে সংস্কারকাজের জন্য সেটিও বন্ধ করা হয়েছিল। মেরামত শেষে বৃহস্পতিবার রাতে সেটি চালু করা হয়েছে।
এ কর্মকর্তা আরও জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে। তারা ১৫ দিন সময় চেয়েছে। চীন থেকে মেশিন এলেই ৩ নম্বর ইউনিট চালু করা সম্ভব হবে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকার ধারণ করেছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানায়।
বার্তায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশের দক্ষিণপূর্বাংশ ও তৎসংলগ্ন উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও আরও ঘনীভূত হতে পারে।
‘এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।’
সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
‘উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:আগামী একশ’ দিনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থা।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এই পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।
উপদেষ্টা বলেন, আগামী ১০০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারকে দক্ষ ও জনবান্ধব করার উদ্যোগ নেয়া হবে। স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠন এবং গণমাধ্যম কর্মী (চাকরির শর্তাবলী) আইন ও সম্প্রচার আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য দপ্তর/সংস্থার সাংগঠনিক কাঠামোর আইনি সংস্কারে উদ্যোগ নেয়া হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য আইন, বিধি ও নীতিমালার প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে।
তিনি জানান, এই সময়ের মধ্যে সাংবাদিকদের বেতন কাঠামোর যৌক্তিক সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
চলচ্চিত্র নির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করা এবং ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক ডিজিটালাইজেশনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ঘোষিত রোডম্যাপে একশ’ দিনের মধ্যে অনলাইন নিউজ পোর্টালের লাইসেন্স প্রদান নীতিমালা যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেয়া হবে। এছাড়া বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনের চারটি শূন্য পদ পূরণ করা হবে।
চলমান প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে সম্পাদনে কিংবা প্রয়োজনীয় সংস্কার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) আয়বর্ধক কর্মসূচির জন্য বিজনেস সল্যুশন প্রোগ্রামের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন আইন, ১৯৫৭-কে যুগোপযোগী করা হবে।
বাংলাদেশ বেতার থেকে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের পথে শীর্ষক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ ছাত্র-জনতাকে নিয়ে এপিসোড প্রচার করা হবে।
বাংলাদেশ বেতারের অনিয়মিত শিল্পীদের অংশগ্রহণ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।
ঢাকাসহ সারাদেশে দেওয়াল লিখন, স্লোগান এবং গ্রাফিতি তুলে ধরে তথ্য বিবরণীমূলক অনুষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার করা হবে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ও আহত ছাত্রদের পরিবারকে নিয়ে ২০০টি ফিচার প্রকাশসহ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যুগোপযোগী করা হবে। তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে জনসচেতনতা তৈরিসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তৃণমূল পর্যায়ে প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।
পতিত সরকারের ২০০৯-২০২৪ সাল পর্যন্ত সব দুর্নীতি, অনাচার, দমন-পীড়ন, মানবতাবিরোধী অপরাধ, সাম্প্রতিক হত্যাযজ্ঞ ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে ডকুমেন্টারি তৈরির জন্য প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর যৌথভাবে কাজ করবে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সব শহীদের ওপর পরিচিতিভিত্তিক ডকুমেন্টারি নির্মাণ এবং দেওয়ালে অংকিত গ্রাফিতির ওপর চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর কর্তৃক অ্যালবাম তৈরি করা হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং রাষ্ট্র সংস্কারভিত্তিক ফিচার প্রকাশ করা হবে।
বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনে গণমাধ্যমসহ অন্যান্য অংশীজনের ভূমিকাভিত্তিক সেমিনার জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজন করা হবে।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড কর্তৃক সেন্সর্ড অবস্থায় থাকা চলচ্চিত্রসমূহ নীতিমালা ও যৌক্তিকতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে। চলচ্চিত্র বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি পুনর্গঠন করা হবে।
তথ্য উপদেষ্টা জানান, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ আইন ২০১৮-এর কতিপয় ধারা সংশোধন করে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ যুগোপযোগী করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। তথ্য কমিশনের বিদ্যমান চাকরির বিধিমালা যুগোপযোগী করা হবে।
আরও পড়ুন:চেক নিয়ে ঘুরছেন সাংবাদিকরা, অথচ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরার ব্যাংক একাউন্টে টাকা নেই। ব্যাংক থেকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে বার বার। এমন প্রতারণার প্রতিবাদে বসুন্ধরা সিটির সামনে মানববন্ধন করতে গিয়েও বাধার মুখে পড়েছেন সাংবাদিকরা। কেড়ে নেয়া হয়েছে ব্যানার।
চেক দেয়ার পরও প্রতারণা আর হয়রানির প্রতিবাদে আজ (বৃহস্পতিবার) প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের (ইডব্লিউএমজিএল) দৈনিক কালের কণ্ঠ, ডেইলি সান ও অনলাইন পোর্টাল বাংলানিউজ২৪ডটকম থেকে বিনা নোটিশে ছাঁটাই হওয়া সংবাদকর্মীরা।
ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদের তোয়াক্কা না করে নিজেদের মনগড়া হিসাবে ছাঁটাইকৃত শতাধিক কর্মীকে, দশ ভাগে বিভক্ত করে জানুয়ারি ২০২৪ থেকে দশটি চেক দেয় বসুন্ধরা। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে ব্যাংকে চেক জমা দিলে প্রতিষ্ঠানটির একাউন্টে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় নিজেদের পাওনা পাননি ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা। বার বার ব্যাংক থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে ইতোমধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান কালের কণ্ঠের ছাঁটাইকৃত সাংবাদিক লায়েকুজ্জামান।
পাওনা না পেয়ে অর্থাভাবে অনেকের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বসুন্ধরার চেক প্রতারণার শিকার অনেকের পক্ষে চিকিৎসা ব্যয় ও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এরই প্রতিকার চেয়ে আজ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়ে এসেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা। তাদের প্রত্যাশা, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হস্তক্ষেপে বসুন্ধরা গ্রুপ দ্রুতই পাওনা পরিশোধ করবে সাংবাদিকদের। হয়রানি আর ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলবে বঞ্চিত সংবাদকর্মীদের।
মন্তব্য