দিনভর উঠানামা করে প্রধান সূচকের সামান্য পতনে পুঁজিবাজারের লেনদেন তলানিতে নেমেছে। প্রায় চার মাসের সর্বনিম্ন লেনদেনে এটা স্পষ্ট যে, নতুন বিনিয়োগ না করে অপেক্ষায় আছে বিনিয়োগকারীরা।
সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া দর সংশোধনে শতাধিক কোম্পানির শেয়ারদর ১৫ থেকে ৪০ শতাংশ কমে যাওয়ার কারণে এমনিতেই বহু বিনিয়োগকারীর টাকা আটকে গেছে। তার ওপর জুনে অর্থবছর শেষ হওয়া অনেকগুলো কোম্পানির লভ্যাংশ না দেয়া, বেশ কিছু কোম্পানির লভ্যাংশ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের হতাশার ছাপ পুঁজিবাজারে স্পষ্ট।
গত সপ্তাহের শেষ তিন কর্মদিবসে টানা সূচক বৃদ্ধিতে সংশোধন অবসানের যে আশা করা হচ্ছিল, তা যে আপাতত হয়নি, তা রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসেই স্পষ্ট।
৬১.৪১ পয়েন্ট সূচক পড়ার পর সোমবার একবার সূচক বাড়ে তো একবার কমে। দিনশেষে ২.৯ পয়েন্ট কমে সূচক আবার সাত হাজারের নিচে নেমে আসে।
গত ৩০ মে ১০ বছরের মধ্যে সূচক প্রথমবারের মতো ছয় হাজার পয়েন্ট ছোঁয়ার পর এক মাস ধরে যে ‘ছয় হাজারের লড়াই’ চলেছিল, এবার তা ‘সাত হাজারের লড়াইয়ে’ পরিণত হলো কি না, তা নিয়ে জিজ্ঞাসা আছে।
দিনশেষে ১৩৩টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২০৫টির দর। আর লেনদেন নেমে এসেছে গত ৭ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন অবস্থানে।
সেদিন লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ২৬৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। প্রায় চার মাস পর লেনদেন দাঁড়াল ১ হাজার ২৭৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
দুইশ কোম্পানির পতনের মধ্যেও ওয়ালটন, বেক্সিমকো ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো, ইবিএল, ফরচুন সুজ, সোনালী পেপার, শাহজিবাজার পাওয়ার, জেএমআই সিরিঞ্জ, শেফার্ড ও মালেক স্পিনিং এর কারণে বড় দরপতন হয়নি।
এই ১০টি কোম্পানির দর বৃদ্ধিতেই সূচক বেড়েছে ২৯.৭৪ পয়েন্ট।
অন্যদিকে গ্রামীণ ফোন, আইসিবি, রবি, ব্র্যাক ব্যাংক, লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট, ইউনাইটেড পাওয়ার, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, আরএ কে সিরামিক, সাবমেরিন কোম্পানি ও আইডিএলসি ফাইন্যান্সের দরপতনের কারণ সূচক কমেছে সবচেয়ে বেশি। এই ১০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমার কারণে পড়েছে ২২.৫০ পয়েন্ট।
আগের তিন কর্মদিবসের মতো আবার সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বস্ত্র খাতে। বিমা খাতেও দিনটি ভালো গেছে। খাদ্য, ওষুধ ও রসায়ন, বিবিধ ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা।
বিনিয়োগ এখন বস্ত্রমুখি
গত সপ্তাহের শেষ দুই দিনের মতো চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই দিনই সব খাতকে ছাড়িয়ে বস্ত্র খাতে সবচেয়ে বেশি লেনদেনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির মধ্যেও এই খাতের একাধিপত্যের বিষয়টি উঠে এসেছে।
দিনের সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির ৫টিই ছিল এই খাতের। লেনদেন হয়েছে ২২৫ কোটি টাকা, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হওয়া বিবিধ খাতের তুলনায় প্রায় ৮০ কোটি টাকা বেশি।
দিনের সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলসের শেয়ারের দর বেড়েছে ৯.৭১ শতাংশ। কোম্পানিটি লোকসান করেও শেয়ার প্রতি ৩০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়ার পর ব্যাপক আগ্রহী হয়ে উঠেছে বিনিয়োগকারীরা।
শেয়ার প্রতি ১০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়া আলহাজ্ব টেক্সটাইলের দর বেড়েছে ৮.৪৪ শতাংশ। শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়ার ঘোষণায় এক দিনে ৬৭ শতাংশ দাম বেড়ে যাওয়ার পরদিনও প্রায় ১০ শতাংশ দাম বাড়া হামিদ ফেব্রিক্সের দর আরও বেড়েছে ৮.০৩ শতাংশ। শেয়ারে ২৫ পয়সা এবং প্রতি ২০০ শেয়ারে ৫টি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করা শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজের দর বেড়েছে ৭.৫৫ শতাংশ।
লোকসান থেকে বের হয়ে এসে লভ্যাংশ ঘোষণা করা সাফকো স্পিনিংয়েও শেয়ারদর ২৩ শতাংশ বাড়ার পরদিন বেড়েছে আরও ৭.৩২ শতাংশ।
বিমারও ভালো দিন
আগের দিন ঢালাও পতন হলেও খাতটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই খাতের ১৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমার বিপরীতে বেড়েছে ৩১টি কোম্পানির দর। লেনদেন হয়েছে ১২৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
আগের দিন ৭টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমে ৪৪টির দর। সেদিন লেনদেন হয় ১১৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ সার্বিকভাবে লেনদেন কমলেও বিমা খাতে আগ্রহ বেড়েছে।
এই খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের দর, ৫.৮৬ শতাংশ। রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৩.৩৯ শতাংশ। নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৩.১৫ শতাংশ।
ব্যাংক-আর্থিক খাতে পতন
গত দুই সপ্তাহ ধরে ব্যাংক খাতে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক দেখা গেলেও সেই আগ্রহে ভাটা দেখা গেছে। এই খাতের ৩২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে কেবল ৩টির, কমেছে ২২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৭টির দর। লেনদেন হয়েছে ১২৬ কোটি ৬ লাখ টাকা। আগের কর্মদিবসে লেনদেন ছিল ২৩৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
তবে বরাবরের মতোই দর বৃদ্ধি ও কমার হার খুব একটা বেশি নয়। সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া ইবিএলের বেড়েছে ১ টাকা ২০ পয়সা। অন্য দুই কোম্পানি ব্যাংক এশিয়ার ডাচ্-বাংলার শেয়ারদর বেড়েছে ১০ পয়সা করে।
অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি দর হারানো ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারদর কমেছে এক টাকা, আল আরাফাহ ও পূবালী ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ৫০ পয়সা, ৪০ পয়সা করে কমেছে এবি ও এনআরবিসির দর। বাকিগুলোর দর কমেছে ১০ থেকে তিন পয়সা।
ব্যাংকের চেয়ে বেশি পতন হয়েছে আরও বেশি। এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকিগুলোর মধ্যে কেবল বিডি ফাইন্যান্সের শেয়ারদর বেড়েছে ৮০ পয়সা। দুটির দর ছিল অপরিবর্তিত, কমেছে বাকি ১৯টিরই দর।
সবচেয়ে বেশি পতন হওয়া মাইডাস ফাইন্যান্স এই খাতেরই কোম্পানি, যার দর কমেছে ৮.৩৭ শতাংশ। এছাড়া বে লিজিংয়ের দর ৩.৯০ শতাংশ, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের দর ৩.৫৭ শতাংশ, ফিনিক্স ফাইন্যান্সের দর কমেছে ৩.৩৬ শতাংশ।
চার খাতে মিশ্র প্রবণতা
ওষুধ ও রসায়ন খাতের একটি কোম্পানির শেয়ারদরে লেনদেন বন্ধ। বাকিগুলোর মধ্যে ১৫টির দাম বেড়েছে, কমেছেও সমান সংখ্যক কোম্পানির। লেনদেন হয়েছে ১৪০ কোটি ৯০ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
দিনের সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড বিবিধ খাতে থাকার সুবাদে এই খাতটি লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। হাতবদল হয়েছে মোট ১৪৫ কোটি ১০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১৪১ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
এই খাতের ১৪টি কোম্পানির মধ্যে বেড়েছে ৬টির দর, কমেছে ৭টির, একটির দর পাল্টায়নি।
খাদ্য খাদের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১১টির, কমেছে ৮টির, একটির দর ছিল অপরিবর্তিত। শেয়ারে সাড়ে ১২ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণার পর টানা তিন কর্মদিবস দর হারানো ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি এদিন হারানো দর থেকে ৮ টাকা ৬০ পয়সা ফিরে পেয়েছে।
খাতটিতে লেনদেন কমেছে। হাতবদল হয়েছে মোট ৪৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৬৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১১ কোম্পানির মধ্যে বেড়েছে ৭টির দর, কমেছে ৪টির। হাতবদল হয়েছে মোট ৪১ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৪৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সেদিন একটির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছিল ৯টির দর।
জ্বালানি-সিমেন্টে আগ্রহ কমছেই
জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ একটিও পছন্দ করেননি বিনিয়োগকারীরা। শেয়ারগুলোর দর হারানো অব্যাহত আছে, পাশাপাশি কমছে লেনদেন।
এদিন এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম হারিয়েছে ১৫টি, বেড়েছে কেবল ৬টি আর অপরিবর্তিত ছিল ২টির দাম। লেনদেন হয়েছে ৫৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৯৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
গত মাসে হঠাৎ করে চাঙা হয়ে উঠা সিমেন্ট খাত এই মাসে এসে দর হারাচ্ছে। সেই সঙ্গে কমছে লেনদেন। এক দিনে প্রায় তিনশ কোটি টাকারও হাতবদল হওয়া খাতটিতে আজ লেনদেন হয়েছে ৩৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা মাত্র। আগের দিন লেনদেন ছিল ৪৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
সাতটি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২টির, কমেছে ৫টি।
একই প্রবণতা প্রকৌশল খাতেও। এই খাতেও লেনদেন কমছে, দর হারাচ্ছে কোম্পানির শেয়ার। আজ হাতবদল হয়েছে ৭২ কোটি ১৭ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১১৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
বেড়েছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারদর। বিপরীতে কমেছে ২৮টির, একটির দর পাল্টায়নি।
আর দারুণ লভ্যাংশ ঘোষণার পর ঘুমিয়ে যাওয়া মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত আড়মোড়া ভাঙতেই পারছে না। এই খাতে মাত্র ৪টির দর বাড়ার বিপরীতে কমে গেছে ১৪টির দর। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ২০ লাখ টাকা।
আগের দিন লেনদেন ছিল ১৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২ দশমিক ৯০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৯৮ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৩ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৭৪ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৫ দশমিক ১০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬২৫ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে মোট ১ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ২০ জনের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব জব্দ করেছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশে বৃহস্পতিবার তাদের বিও হিসাব স্থগিত করেছে বিএসইসি।
নির্দেশনায় বিএসইসি যাদের বিও হিসাব জব্দ করেছে তারা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তার স্ত্রী লুতফুল তাহমিনা খান, ছেলে সফি মুদাসসের খান ও মেয়ে শাফিয়া তাসনিম খান; সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, তার স্ত্রী নুরুন ফাতেমা হাসান ও মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদ; সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও তার স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকা; সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ও তার স্ত্রী শারমিন মুস্তারি; সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, তার স্ত্রী রুখমিলা জামান চৌধুরী, তার আত্মীয় জারা জামান, বোন রোকসানা জামান চৌধুরী, ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও মেয়ে জেবা জামান চৌধুরী।
এছাড়া পিরোজপুর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ, তার স্ত্রী উম্মে কুলসুম, ছেলে সাম্মাম জুনাইদ ইফতির বিও হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন থেকে টানা চার দিন পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে দেখা যায় দেশের পুঁজিবাজারকে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও নতুন উদ্যমে শুরু করার প্রত্যয় চোখে পড়ে। অনেকে নতুন করে কিছু পুঁজি বিনিয়োগে এনেছেন। অনেকে আবার শেয়ার কিনে রাখতে অন্যদের পরামর্শ দিয়েছেন।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধারণা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে পুঁজিবাজারে সুদিন ফিরবে। তবে সেই সুদিনের দেখা মিলছে না। ওই চার কর্মদিবসের পর থেকে পরের পাঁচ কর্মদিবসের গল্পটা পুরনো হতাশার।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইতে চার কর্মদিবসে ৭৮৬ পয়েন্ট সূচক বাড়ার পর বিনিয়োগকারীরা উৎফুল্ল হয়ে উঠেছিল। এরপর ৮ কর্মদিবসে সূচক পড়ল ৪০৮ পয়েন্ট। এর মধ্যে পাঁচদিনেই পড়ল ৩৪৫ পয়েন্ট।
সবশেষ বুধবারের পতন ছিলো অনেকটাই অনাকাঙ্ক্ষিত। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক হারিয়েছে ১০৮ পয়েন্ট।
বর্তমান ডিএসইর প্রধান সূচকটি নেমে এসেছে পাঁচ হাজার ৬০৬ পয়েন্টে। তবে সবচেয়ে বেশি হতাশা ছড়াচ্ছে মোট লেনদেনের পরিমাণ। সরকার পতনের পর একদিনে লেনদেন উঠে এসেছিলো দুহাজার কোটি টাকা, যা বর্তমানে নেমে এসেছে চার ভাগের এক ভাগে। সবশেষ কর্মদিবসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৩৬ কোটি টাকার।
হঠাৎ এমন দরপতনে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। প্রতিদিনই তাদের বিনিয়োগের অর্থ কমে আসছে।
ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী জসিম উদ্দিনের ব্যাখা ছিলো এমন- ‘আমরা তো ভাবছিলাম আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন হবে না। গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সেটা করেও দেখাতে পারেনি। একের পর এক দুর্নীতি আর লুটপাটে বাজার থেকে নিঃস্ব হতে হয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।
‘সবার মধ্যে আশা ছিলো ওদের পতনের পর পুঁজিবাজার অনেক উপরে উঠবে। প্রথম কয়েকদিন হলোও তাই। তবে এখন কী যে হচ্ছে বুঝতে পারছি না। সকাল শুরু হলেই দেখি পতন আর পতন। এগুলো আর কত দেখতে হবে। নতুন সরকারের উচিত আগে পুঁজিবাজার ঠিক করা।’
বুধবার দেখা যায়, লেনদেনে অংশ নেয়া প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের দর কমেছে। অংশ নেয়া কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১১টির, কমেছে ৩৭১টির। আর অপরিবর্তিত ছিলো ১২টি কোম্পানির শেয়ার দর।
হতাশ আরেক বিনিয়োগকারী আনিস বলেন, ‘আমাদের কী করা উচিত তা জানি না ভাই। হতাশ হয়ে সবাই মার্কেট ছাড়তেছে। ভাবলাম সরকার পরিবর্তন হইছে, তাই অনেক দিন পর কিছু শেয়ার কিনলাম। তবে যা হচ্ছে তাতে আবার হতাশ হলাম।’
অন্তর্বর্তী সরকারের বেছে নেয়া মাশরুর রিয়াজ বিএসইসির চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর গত সোমবার নেতৃত্বে আসেন খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তিনি নেতৃত্বে আসার পর টানা তিন কর্মদিবসেই দরপতন হল পুঁজিবাজারে।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন ড. এম মাশরুর রিয়াজ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ড. এম মাশরুর রিয়াজকে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল। তবে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট দু-একটি গোষ্ঠী তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকার তথা সালমান এফ রহমানের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার শুরু করে।
গত ১৩ আগস্ট তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন হলেও মাশরুর রিয়াজকে বিএসইসিতে যোগ দিতে দেখা যায়নি। পরে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, তার বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখছেন। তবে সরকারের খতিয়ে দেখার আগেই মাশরুর রিয়াজ নিজে থেকেই বিএসইসি চেয়ারম্যান পদে যোগ না দেয়ার কথা জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়কে।
ড. এম মাশরুর রিয়াজ বাংলাদেশের একজন অর্থনীতিবিদ। তিনি পলিসি এক্সচেঞ্জ নামক একটি গবেষণা সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি বিশ্বব্যাংকেও চাকরি করেছেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান পদে যোগ না দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সামনে বহু গবেষণার কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমি এই সময়টাকে কাজে লাগাতে চাই। দেশের অর্থনীতি নিয়ে একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে ভূমিকা রাখতে চাই।
‘বিশেষ করে সামষ্ট্রিক অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও আর্থিক খাত নিয়ে নীতি প্রণয়ন ও সংস্কার বাস্তবায়নে ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে। এসব বিবেচনায় আমি বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এর আগে একটি ছবিকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাশরুর রিয়াজকে আগের সরকারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে তুলে ধরেন অনেকে। এরপর বিএসইসির কিছু কর্মকর্তাও তাকে নিয়ে আপত্তি তোলে। তবে এরপর আবার তারা তাদের আপত্তি তুলে নেয়। এসব কারণে যোগদানে অনিচ্ছুক কিনা- এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান মাশরুর রিয়াজ।
এদিকে মাশরুর রিয়াজ যোগ দেবেন না জানতে পেরে নতুন করে বিএসইসির চেয়ারম্যান খুঁজতে শুরু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে অনেকের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে বলেও জানা গেছে।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরদিন থেকে টানা তিনদিন ব্যাপক উত্থান হয় দেশের দুই পুঁজিবাজারে। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইতে গত সপ্তাহের শেষ তিনদিনে সাধারণ সূচক বেড়েছে প্রায় ৭ শ’ পয়েন্ট। পাশাপাশি লেনদেনেও বেশ গতি দেখা গিয়েছিলো সেই কয়েক দিনে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতেও বাজারে ছিলো তেজিভাব। রোববার প্রথম কর্মদিবসে লেনদেন ছাড়িয়ে যায় দুই হাজার কোটি টাকার ঘর। এদিনও ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে প্রায় ৯০ পয়েন্ট। টানা চারদিন উড়তে থাকা পুঁজিবাজার ধাক্কা খায় সোমবার এসে। সেদিন সকালে সূচকের উত্থান হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বিক্রির চাপে কমতে থাকে মূল্যসূচক। সোমবারের ধারা অব্যাহত ছিলো মঙ্গলবারেও।
এদিন সকাল থেকেই কমতে থাকে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স। দুপুরে কিছুটা উত্থান হলেও দিনশেষে সূচকটি ৬৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান নিয়েছে ৫ হাজার ৮ শ ৬৭ পয়েন্টে। এ নিয়ে টানা দুই দিনে সূচকটি কমেছে ১৪৭ পয়েন্ট।
ডিএসইতে এদিন মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৫ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট, যা তার আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১ শ ২৮ কোটি টাকা কম। প্রধান সূচকের পাশাপাশি এদিন কমেছে অপর দুই সূচক ডিএস-৩০ ও ডিএসইএস।
লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির দরপতন হয়েছে এদিন। ১০৬ টি প্রতিষ্ঠানের দর বাড়ার বিপরীতে কমেছে ২৬৯ টির আর অপরিবর্তিত দেখা গেছে ২৪ টি কে।
পুঁজিবাজারের মঙ্গলবারের আচরণকে স্বাভাবিক দর সংশোধন বলে মনে করছেন সাধারণ বিনিয়োগকারিরা। অনেকেই গত কয়েকদিনে দর বাড়তে দেখে মুনাফার জন্য হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করেছেন বলেও জানিয়েছেন।
জাহিদ হোসেন নামে পুঁজিবাজারের এক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘স্বাভাবিক নিয়মেই বাজার সংশোধন হয়েছে। এখানে ভয় পাওয়ার কারণ নাই। ৮০০ সূচক বাড়ার পর দুইশ কমবে এটাই স্বাভাবিক, বরং না কমলেই বুঝতাম ব্যাপারটা অস্বাভাবিক।’
আরেক বিনিয়োগকারী ইন্দ্রজিৎ বলেন, ‘অনেকদিন ধরে কোন শেয়ার বিক্রি করি না লোকসান ছিলো বলে। এখন দেখলাম কিছুটা হলেও লোকসান কমে এসেছে। আবার টাকারও দরকার ছিলো। তাই কিছু শেয়ার আজকে বিক্রি করলাম।’
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ এম মাশরুর রিয়াজ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক এই কর্মকর্তা বর্তমানে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আজ মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘ড. এম মাশরুর রিয়াজকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন ১৯৯৩ এর ধারা ৫ ও ৬ বিধান প্রতিপালন ও উক্ত আইনের ধারা ৫(২) অনুসারে তাকে আগামী চার বছরের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হলো।’
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে দেশের আর্থিক খাতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পর পদত্যাগ করেছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। শনিবার তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে ই-মেইলে তার পদত্যাগপত্র পাঠান।
চেয়ারম্যান পদ শূন্য হওয়ায় বর্তমান কমিশনার মোহাম্মদ মোহসীন চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রোববার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-সচিব ফরিদা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত এই আদেশ জারি করা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কমিশনার মোহাম্মদ মোহসীন চৌধুরী বিএসইসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে। বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের পদত্যাগপত্র দাখিলের তারিখ অর্থাৎ ১০ আগস্ট থেকে এই আদেশ কার্যকর হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম করোনা মহামারির শুরুতে অর্থাৎ ২০২০ সালে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান। করোনার ছোবলে ভঙ্গুর এক পুঁজিবাজারে সাময়িক গতি ফেরাতে প্রথম দিকে বেশকিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে দুর্বল শেয়ার যোগসাজশে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। পুঁজিবাজারে কয়েকটি কারসাজি চক্রকে ইন্ধন দেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০২৪ সালের ২৮ মে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি পক্ষের আপত্তি থাকার পরও চেয়ারম্যান হিসেবে পুনরায় নিয়োগ পান তিনি।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে পুঁজিবাজার। ফলে দীর্ঘ মন্দা কাটিয়ে বর্তমান পুঁজিবাজার বাধাহীন গতিতে ছুটে চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের উভয় পুঁজিবাজারে বিদায়ী সপ্তাহে (৫ থেকে ৮ আগস্ট) সূচকের রেকর্ড উত্থানে লেনদেন হয়েছে।
একইসঙ্গে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে বাজার মূলধন বেড়েছে ৯০ হাজার ৯৩২ কোটি ৫ টাকা। তবে আলোচ্য সময়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) টাকার পরিমাণে লেনদেন বাড়লেও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কমেছে।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা গেছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৩৩৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৩৯৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৯৪৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৩ হাজার ৯১৩ কোটি ৮ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৩৬৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৫০ হাজার ৫৪৫ কোটি ২ লাখ টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৯০.৮৭ পয়েন্ট বা ১১.০৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ২৩১.৮৮ পয়েন্ট বা ১২.২০ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ১৩২ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০৯.৫৩ পয়েন্ট বা ৯.৪০ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ২৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক ৭৪.৪৭ পয়েন্ট বা ৪.৯০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৪৬ পয়েন্টে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৩৯টির, দর কমেছে ১১টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৭টির। আর লেনদেন হয়নি ১৬টির।
অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ২৬০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩৯৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ১৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
গেল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২৭ হাজার ২৫২ কোটি ২৬ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৮৩৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৪০ হাজার ৩৮৭ কোটি ৩ লাখ টাকা কমেছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১ হাজার ৬৮০.৫২ পয়েন্ট বা ১১.১১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৭৯৯ পয়েন্টে। সিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক ১২.১৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৩৬৯ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স ১১.১৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ১৩২ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক ৮.৫০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৬ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স ২.১৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১১৪ পয়েন্টে।
গত সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩২৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২৫৬টির, দর কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টির শেয়ার ও ইউনিট দর।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য