× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Coffee cultivation in the hills
google_news print-icon

পাহাড়ের বুকে কফি চাষ

কফি ফল
গাছে ধরে আছে কফি ফল। ছবি: নিউজবাংলা
চাষিরা জানান, দেশে রোবস্ট ও অ্যারাবিক নামে দুই ধরনের কফি চাষ হচ্ছে। এসব কফির খোসাসহ প্রতি কেজি বিক্রি হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। একটি গাছে বছরে ৫ কেজি থেকে সর্বোচ্চ ১৫ কেজি পর্যন্ত কফি ফল পাওয়া যায়। একবার ফলন দেয়া শুরু করলে একটানা ৪০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত কফি পাওয়া যায়।

পানীয় হিসেবে কফি সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও কফির জনপ্রিয়তা কম নয়। শহরের পাশাপাশি গ্রামেও বাড়ছে চাহিদা।

তবে দেশে পাওয়া অধিকাংশ কফিই আমদানি করা। সেই জায়গা থেকে সরে নিজেরাই কফির চাহিদা মেটানোর সুযোগ নিয়ে এসেছে দেশের পার্বত্যাঞ্চল।

ভালো দাম পাওয়ায় পার্বত্যাঞ্চলে অনেকেই জুমের চাষের পরিবর্তে করছেন কফির আবাদ। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সফলতা এসেছে বান্দরবান জেলায়।

স্থানীয়রা জানান, বান্দরবানে জুম চাষের জমি দিন দিন কমে যাওয়ায় অনেক চাষিই এখন ঝুঁকছেন ফলদ ও অর্থকরী ফসলের দিকে। সেখান থেকেই এসেছে কফি চাষের ধারণা। কারণ বান্দরবানের পরিবেশ কফি চাষের জন্য উপযোগী।

বান্দরবান জেলা শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতায় চিম্বুক পাহাড়ে কফি চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নের জাল বুনছেন ঙুই ইন ম্রো, ইয়াঙ সম ম্রো, রুম ক্লাম ম্রো, মেন রুম ম্রো, রেন নক ম্রোসহ অনেকে।

কফি চাষি ঙুই ইন ম্রো নিউজবাংলাকে জানান, গত বছর ২০০ টাকা কেজি দরে ১৫ কেজি কফি বিক্রি করেছিলেন। চলতি বছর তার আরও প্রায় ২০০ কফি গাছে ফলন এসেছে। এ বছর ৩০-৪০ কেজি কফি পাওয়ার আশা করছেন।

যদি প্রতি গাছ থেকে দুই কেজি করে কফি পান; কেজি ২০০ টাকা হিসেবে তার আয় হবে দুই লাখ টাকা।

কফি চাষের বিষয়ে তিনি জানান, কফির চারা লাগানোর দুই বছর থেকে ফলন দেয়া শুরু করে। তৃতীয় বছর থেকে পুরোদমে ফল দেয়। গাছ ৭০ থেকে ৮০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।

পাহাড়ের বুকে কফি চাষ

সাধারণত জানুয়ারিতে ফুল আসে, সপ্তাহখানেক পর ফলে পরিণত হয়। নভেম্বরের শেষ দিকে কফি ফল পাকা শুরু করে। এরপরই তারা ফল সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত শুরু করেন।

নিজের বাগান নিয়ে ঙুই ইন ম্রো বলেন, ‘বর্তমানে এক একরের বাগানে আমার এক হাজার গাছ আছে। সব গাছ থেকেই ফলন পাওয়ার অপেক্ষা করছি। পাশাপাশি আরও ৩-৪ হাজার গাছ লাগাতে চাচ্ছি। তবে চারা পাচ্ছি না। এ জন্য কৃষি বিভাগের সহযোগিতা দরকার।’

চিম্বুক ও ফারুক পাড়ায় পরিদর্শনে দেখা যায়, আম, জাম্বুরা বিভিন্ন ফলদ বাগানের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে কফি চাষ করা হচ্ছে।

পাহাড়ের বুকে কফি চাষ

চাষিরা জানান, কফির চারা বর্ষা মৌসুমে রোপণ করতে হয়। গাছের ছায়া ও মাটির আর্দ্রতা লাগে। আবার বেশি ছায়া হলেও ফলন কম হয়। সে জন্য রোদও লাগে। ফলদ গাছের সঙ্গে কফিগাছের জন্য উপযোগী রোদ-ছায়ার পরিবেশ পাওয়া যায়।

তারা আরও জানান, দেশে রোবস্ট ও অ্যারাবিক নামের দুই ধরনের কফি চাষ হচ্ছে। এসব কফির খোসাসহ কেজি বিক্রি হয় ২০০-২৫০ টাকায়। একটি গাছ থেকে বছরে ৫ কেজি থেকে সর্বোচ্চ ১৫ কেজি পর্যন্ত কফি ফল পাওয়া যায়। একবার ফলন দেয়া শুরু করলে একটানা ৪০-৫০ বছর পর্যন্ত কফি পাওয়া যায়।

বান্দরবান জেলায় কফি চাষের অগ্রপথিক হিসেবে পরিচিত তৈদু রাম ত্রিপুরা ১২ বছর ধরে কফি চাষ নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, নেপাল, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে কফি চারা উৎপাদন-রোপণ, পরিচর্চা, উৎপাদন ও বিপণন সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে কফি চাষ করেছেন।

তৈদু রাম জানান, সারা বিশ্বে কফির দাম মূলত একই রকম থাকার কারণে সিন্ডিকেটের প্রভাব নেই। এ কারণে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পেয়ে থাকেন। দেশে একমাত্র কফি ক্রয়-বিক্রয় প্রতিষ্ঠান নর্দান অ্যান্ড কফি রোস্ট কোম্পানির সঙ্গে তিনি স্থানীয় কফি চাষিদের যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন।

এখন চাষিরা কফি খোসাসহ প্রতি কেজি ২০০ টাকা এবং খোসা ছাড়া ৩৫০ টাকা করে বিক্রি করছেন।

দেশে কফি আমদানির বিষয়ে তিনি জানান, দেশে কফির চাহিদা প্রতি তিন মাসে ৫-৬ টন। দেশে চাহিদার তুলনায় কফি উৎপাদন হয় খুবই কম। এ জন্য ইথিওপিয়া, ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কফি আমদানি করা হয়।

বালাঘাটা হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক উদ্যানতত্ত্ববিদ ড. সাফায়েত আহমদ সিদ্দিকী জানান, এখন পর্যন্ত এ কেন্দ্র থেকে ৬৫ জন চাষিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করা হয়েছে ৯ হাজার ৭৫০টি অ্যারাবিক কফির চারা।

বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এস এম শাহ্ নেয়াজ জানান, প্রাকৃতিক পরিবেশ, জলবায়ু ও মাটির কারণে পাহাড়ি এলাকা কফি চাষের উপযোগী। বিশেষ করে পরিকল্পিতভাবে লাগানো পুরোনো আমবাগানে কফি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। কারণ কফিগাছের ছায়ায় ভালো হয়।

তিনি আরও জানান, বান্দরবান সদর, রুমা, রোয়াংছড়ি, থানছি ও লামা উপজেলায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ১৪৬ হেক্টর জমিতে কফি চাষ করা হয়েছে। জেলায় পূর্ণ বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষ হচ্ছে ২০০ একর জায়গায়। ফল পাওয়া যাচ্ছে ২০ হেক্টর জায়গায়। এসব জমি থেকে গত বছর খোসাসহ কফি উৎপাদন করা হয়েছে ৩৪ টন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে এখন পর্যন্ত ৬২৫ জন কৃষককে দেয়া ৩৭ হাজার ২০০ চারা। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাদের দেয়া হয়েছে কৃষি উপকরণ। এ ছাড়া গত বছর যেখানে ৪৮টি কফি চাষের কৃষি প্রদর্শনী প্লট ছিল, এ বছর তা বেড়ে হয়েছে ২১৫টি।

কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য পান, সে জন্য কফি প্রক্রিয়াকরণ মেশিনও দেয়া হয়েছে। আর বান্দরবানে কফি ফ্যাক্টরি স্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশের মানুষ কফি পানে অভ্যস্ত কম হওয়ার কারণে উৎপাদিত কফি বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করা সম্ভব। প্রচুর মানুষেরও কর্মসংস্থান হবে। সেই লক্ষ্য পূরণে বান্দরবান কৃষি বিভাগ চাষিদের সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Awami League people are provoking Hindus Jamaat Secretary

আওয়ামী লীগের লোকেরা হিন্দুদের উস্কানি দিচ্ছে: জামায়াত সেক্রেটারি

আওয়ামী লীগের লোকেরা হিন্দুদের উস্কানি দিচ্ছে: জামায়াত সেক্রেটারি সোমবার মুন্সীগঞ্জে জামায়াতের ইউনিয়ন সম্মেলন এবং গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি: নিউজবাংলা
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে জামায়াত যৌক্তিক সময় দিতে রাজি। একটা নির্বাচন দিতে ন্যূনতম যতটুকু সংস্কার দরকার তা করতে হবে।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘জুডিশিয়াল ক্যু করে অন্তর্বর্তী সরকারকে সরানোর ষড়যন্ত্র থেকে ছাত্র-জনতা রক্ষা করেছে। ফ্যাসিবাদের বিদেশি বন্ধুরা প্রতি-বিপ্লবের ইন্ধন দিচ্ছে।’

সোমবার মুন্সীগঞ্জ শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে ইউনিয়ন সম্মেলন এবং গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারকে অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর নানা দাবি তোলা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন, ১৫ বছর আপনারা কোথায় ছিলেন? দেশের মানুষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও তাদের মন্দির পাহারা দিচ্ছে। হিন্দু ভাইদের আন্দোলনে উস্কানি দিচ্ছে আওয়ামী লীগের লোকেরা।’

নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে জামায়াত যৌক্তিক সময় দিতে রাজি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সংস্কার করে অতি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে তা না খুব শর্ট না খুব লং। ফ্যাসিবাদের পেতাত্মারা অনেক ক্ষেত্রে এখনও রয়েছে। তাই একটা নির্বাচন দিতে ন্যূনতম যতটুকু সংস্কার দরকার তা করতে হবে। রাতের ভোট দিনে আর হতে দেবে না বাংলাদেশের মানুষ।’

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের উল্লেখ করে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘তাদের কথা ইতিহাসে লেখা থাকবে। স্বৈরশাসক থেকে মুক্ত হয়ে মানুষ ঈদের আনন্দ করেছে। কিন্তু শহীদদের পরিবারগুলো ঘরের কোণায় কান্নায় জর্জরিত ছিলো।

‘অনেকে আহত হয়েছে। কে হাত-কেউ কেউ চোখ হারিয়েছে। প্রয়োজনে বিদেশে নিয়ে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারের ঘোষণা যেন মিডিয়ায় সীমাবদ্ধ না থাকে। শহীদের কাছে আমরা ঋণী। সেই ঋণ আমাদেরকে শোধ করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত সাতজনের পরিবারকে জামায়াতের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা করে অনুদান দেয়া হয়।

মুন্সীগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আ. জ. ম রুহুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মো. সাইফুল আলম খান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুল জব্বার ও ইসলামী ছাত্রশিবির মুন্সীগঞ্জ জেলার সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম।

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশে ঘৃণা-বিভাজনের রাজনীতি কবর দিন: জামায়াত আমির
জামায়াত শিবির নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন বাতিল
দাবি-দাওয়া নিয়ে এতদিন কেন কথা বলেননি: জামায়াতের আমির
জামায়াত নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার হচ্ছে মঙ্গলবার
জনগণ আর কোনো জালিম সরকার দেখতে চায় না: শফিকুর রহমান

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Gomra village of Kankrol

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’ ঝিনাইগাতির গোমড়া গ্রাম জুড়ে কাঁকরোল বাগানের সবুজ সৌন্দর্য। ছবি: নিউজবাংলা
ভারতের মেঘালয় রাজ্যঘেঁষা গারো পাহাড়ের জেলা শেরপুর। এখানে ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের একটি গ্রাম ‘গোমড়া’। এই গ্রামের চারশ’ একর জমিতে প্রায় ১২শ’ কৃষক কাঁকরোল চাষকে তাদের জীবিকার অবলম্বন হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

নানা ধরনের সবজির মধ্যে বিশেষ একটি জায়গা দখল করে আছে ‘কাঁকরোল’। আর ব্যাপকভাবে এই সবজির চাষ হচ্ছে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার পাহাড়ি গ্রাম গোমড়ায়। গ্রামটিতে বসবাসকারী সবাই বিভিন্ন সবজির আবাদ করেন, যার মধ্যে কাঁকরোল অন্যতম। তাই গোমড়া গ্রামটি এখন ‘কাঁকরোল গ্রাম’ নামে পরিচিতি পেয়েছে।

ভারতের মেঘালয় রাজ্যঘেঁষা গারো পাহাড়ের জেলা শেরপুর। এখানে ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের একটি গ্রাম ‘গোমড়া’। এই গ্রামের চারশ’ একর জমিতে প্রায় ১২শ’ কৃষক কাঁকরোল চাষকে তাদের জীবিকার অবলম্বন হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’

সরজমিনে জানা যায়, এই এলাকায় কয়েক বছর আগেও পানি ও বিদুতের অভাবে বহু জমি পতিত ছিলো। এখন এ দুটি সুবিধা পাওয়ায় আর পতিত পড়ে থাকছে না এসব জমি। কৃষি বিভাগের সহায়তা ও পরামর্শে গ্রামের প্রায় সবাই নিজের কিংবা অন্যের জমি বর্গা নিয়ে মৌসুমী সবজি চাষ করছেন।

শরৎ ঋতুর এই সময়টাতে পুরো এলাকার সবজির ক্ষেত কাঁকরোলে ছেয়ে গেছে। যদিও এসব ক্ষেতে গরম ও শীতের আগাম সবজি বেশি আবাদ করেন স্থানীয়রা। এখানকার উৎপাদিত সবজির মান ভালো হওয়ায় স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। স্থানীয় বাজারে কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।

গোমড়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগে এই এলাকায় পানির জন্য প্রায় সব জমিই পতিত থাকতো। কিন্তু এখন বিদ্যুৎ আসায় পানি সমস্যার সমাধান হয়েছে। আবাদের আওতায় এসেছে অনেক জমি।

‘আমরা মৌসুমভিত্তিক সবজির আবাদ করে থাকি। আমরা এখন সবজির মধ্যে কাঁকরোল লাগিয়েছি। সবজি আবাদ করে এলাকার কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।’

কৃষক হরমুজ আলী বলেন, ‘এটা পাহাড়ি এলাকা। এই এলাকায় আমরা সবজির আবাদই করি। আমি ৫০ শতাংশ জমিতে কাঁকরোল লাগাইছি। আমি এবার কাঁকরোল বিক্রি করে অনেকটা লাভবান হয়েছি। পোলাপানের লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছি। পাঁচ সদস্যের সংসার চলছে এই সবজি আবাদ করেই।’

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’

কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমরা পাহাড়ের মানুষ। আগে কী যে কষ্ট করছি! মানষের জমিতে সারাদিন কাম করে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পাইছি। কোনো কোনোদিন কামও পাইতাম না। এই টাকা নিয়া বাজার করবার গেলে কষ্ট হইছে। এখন বাড়ির পাশে রহমত ভাইয়ের জমিন বাগি (বর্গা) নিয়া শুরু করছি কাঁকরোলের চাষ। এখন আল্লাহর রহমতে নিজেরা ভালা আছি।’

তবে স্থানীয় চাষিদের অভিযোগ রয়েছে গ্রামের রাস্তা-ঘাট কাঁচা নিয়ে। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় সবজির ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

কৃষক হারুন মিয়া বলেন, ‘আমাদের এদিকে কাঁচা রাস্তা হওয়ায় আমরা সবজি বাজারে তুলতে পারি না। নিলেও খরচ অনেক পড়ে যাওয়ায় লাভ কম হয়। সময়মতো বাজারে না নেয়ায় সঠিক দামও পাই না। আমরা কৃষকরা অবহেলিত।’

কৃষক খাইরুল বলেন, ‘এই এলাকার গ্রামীণ রাস্তাগুলো পাকা করলে আমাদের খুব উপকার হবে। আমরা কৃষকরা সবজি আবাদ করে দামটা বেশি পাইতাম। খারাপ রাস্তায় সব গাড়ি সহজে আসবার চায় না। আসলেও ভাড়া বেশি পইড়া যায়। এজন্য লাভটা কম হয়।’

যেভাবে চাষ

কাঁকরোলের বীজ কাঁকরোল গাছের নিচে হয়ে থাকে, যা দেখতে মিষ্টি আলুর মতো। মার্চ ও এপ্রিলে এই সবজির চাষ করা হয়। চারা গজানোর ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যেই এর ফলন পাওয়া সম্ভব। কাঁকরোল লতানো গাছ। স্ত্রী ফুল ও পুরুষ ফুল একই গাছে হয় না। তাই বাগানে দু’ধরনের গাছ না থাকলে পরাগায়ন ও ফলন কম হয়।

চাষে খরচ ও লাভ কেমন

কৃষকেরা বলছেন, কাঁকরোল চাষে বিঘাপ্রতি খরচ পড়ে ৩০ থেকে ৪০ হাজার। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘায় খরচ লাখ টাকার উপরে লাভ হয়ে থাকে।

কাঁকরোলের উপকারিতা

কাঁকরোল অত্যন্ত পুষ্টিকর সবজি৷ এতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ক্যালসিয়াম, লৌহ, ফসফরাস, ক্যারোটিন, আমিষ, ভিটামিন এ, বি ও সি এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে৷ কাঁকরোলে ভিটামিন সি থাকায় শরীরের টক্সিন দূর করে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

কাঁকরোলে আছে বিটা ক্যারোটিন ও আলফা ক্যারোটিন, যা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না; ত্বককে করে উজ্জ্বল। এছাড়া কাঁকরোলের ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’

ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন দিলদার জানান, পাহাড়ের পাদদেশে কাঁকরোলের পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের সবজির আবাদ হয়ে থাকে। সবজি চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। এই সবজি কৃষক সরাসরি ঢাকার বাজারে পাঠাচ্ছে। সবজির মান ভালো হওয়ায় কৃষক দামও পাচ্ছে ভালো।

‘আমি মনে করি অন্যান্য কৃষি উদ্যোক্তা জমি ফেলে না রেখে মৌসুমভিত্তিক সবজি আবাদ করলে অবশ্যই লাভবান হবে। এ বছর এই উপজেলায় ৭০ হেক্টর জমিতে কাঁকরোলের আবাদ হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতসহ উফশী চার ধানে নতুন সম্ভাবনা
পেঁয়াজ কেন আমদানি করতে হয়, জানালেন কৃষিমন্ত্রী
তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টিতে পঞ্চগড়ে মরিচচাষীদের স্বপ্নভঙ্গের শঙ্কা
দাবদাহ বাড়াচ্ছে পানির সংকট, আম-লিচু চাষিদের মাথায় হাত
বোরো উৎসবে মেতেছে কুমিল্লা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The Achin tree fell in the storm

ঝড়ে ভেঙে পড়ল সেই অচিন বৃক্ষ

ঝড়ে ভেঙে পড়ল সেই অচিন বৃক্ষ নাটোরের সিংড়া উপজেলার দুলশী গ্রামের শতবর্ষী অচিন বৃক্ষটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে বৃক্ষপ্রেমিরা ছুটে আসতেন। ছবি: সংগৃহীত
নাটোরের সিংড়া উপজেলার দুলশী গ্রামের শতবর্ষী অচিন বৃক্ষটি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে বৃক্ষপ্রেমিরা ছুটে আসতেন। এটির ফলের ঘ্রাণ খিরের মতো হওয়ায় স্থানীয়রা গাছটির নাম ‘খিরির গাছ’ রেখেছিল। আর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নামকরণ করা হয়েছিল ‘বৃক্ষ মানিক’।

নাটোরের সিংড়া উপজেলার দুলশী গ্রামের শতবর্ষী অচিন বৃক্ষটি ঝড়ে ভেঙে পড়েছে। গাছটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে বৃক্ষপ্রেমিরা ছুটে আসতেন। শনিবার রাতে ঝড়ে গাছটি ভেঙে পড়ে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের দুলশী নামক স্থানে উঁচু ঢিবিতে শতবর্ষী গাছটি ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। এই গাছে ফলের স্বাদ অনেকটা ক্ষিরের মতো। তাই স্থানীয়রা এই বৃক্ষের নাম দিয়েছিল ‘খিরির গাছ’।

ঝড়ে ভেঙে পড়ল সেই অচিন বৃক্ষ
নাটোরের সিংড়া উপজেলার দুলশী গ্রামের শতবর্ষী অচিন বৃক্ষটি শনিবার রাতে ঝড়ে ভেঙে পড়ে। ছবি: নিউজবাংলা

আর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অচেনা এই গাছটির নামকরণ করা হয় ‘বৃক্ষ মানিক’।

গাছটিতে ফল ধরলেও সেই ফলের বীজ থেকে কোনো চারা জন্মানো সম্ভব হয়নি। প্রাকৃতিকভাবেও এটির কোনো বংশবিস্তার হয়নি। ফলে জন্ম নেয়ার পর থেকে একাই শত শত বছর ধরে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল গাছটি।

সবচেয়ে প্রাচীন এই বৃক্ষ ইতোমধ্যে নাটোর জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন। গাছটির উচ্চতা ছিল প্রায় ৫০ ফুট। গাছটি বিভিন্ন গবেষকও পরিদর্শন করেছেন। বিরল প্রজাতির এই গাছের সংখ্যা দেশে হাতেগোনা তিন থেকে চারটি রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা হান্নান হোসেন বলেন, “এই গাছের বয়স কত তা কেউ সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেন না। তারা ছোটবেলা থেকেই এ গাছটি দেখছেন। তার বাবাও দেখেছেন। তবে গাছটির বয়স অনেক হবে।

“জ্যৈষ্ঠ মাসে আঙ্গুর ফলের মতো ফল ধরে। খেতেও খুব সুস্বাদু। ফলের ঘ্রাণ খিরের মতো হওয়ায় স্থানীয়রা গাছটির নাম ‘খিরির গাছ’ রেখেছিল। এ গাছটি দেখতে বহু দূর থেকে মানুষ আসতেন। অনেকে এখানে এসে মানতও করতেন।”

হাবিবুর রহমান নামে স্থানীয় আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই গাছটি একইরকম দেখেছি। আসলে এটির সঠিক বয়স কেউ জানে না। বাবা-দাদারা গল্প করেন। তারাও ছোট বেলা থেকেই গাছটি দেখেছেন।

‘তবে গাছটি বিশাল, যা খুব কমই দেখা যায়। অনেকে পরিবার নিয়ে দেখতে আসতেন গাছটি। গাছটি ভেঙে পড়ায় পুরো গ্রামের মানুষ বেদনাহত হয়েছেন। তারা স্বজন হারানোর মতো বেদনা অনুভব করছেন।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Journalist Mozammel Babu Shyamal Dutta along with four detained at the border

সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু, শ্যামল দত্তসহ চারজন সীমান্তে আটক

সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু, শ্যামল দত্তসহ চারজন সীমান্তে আটক সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত। কোলাজ: নিউজবাংলা
পুলিশ জানায়, রোববার রাতে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার জন্য প্রাইভেটকারে চারজন ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত সীমান্তে আসেন। স্থানীয়রা টের পেয়ে একাত্তর টিভির এমডি মোজাম্মেল হক বাবু, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার মাহবুবুর রহমান ও কার চালক সেলিমকে আটক করে। আটক চারজন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার সময় একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোজাম্মেল বাবু ও দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তসহ চারজনকে আটক করেছে জনতা। সূত্র: ইউএনবি

রোববার রাতে সীমান্ত এলাকা থেকে স্থানীয় জনতা তাদের আটক করে ধোবাউড়া থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে।

সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু, শ্যামল দত্তসহ চারজন সীমান্তে আটক
এই প্রাইভেট কারে ধোবাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেছিলেন আটক চারজন। ছবি: নিউজবাংলা

পুলিশ জানায়, রাতে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার জন্য তিনজন যাত্রী নিয়ে একটি প্রাইভেটকারের চালক ধোবাউড়া সীমান্তে আসেন। স্থানীয় জনতা টের পেয়ে একাত্তর টেলিভিশনের এমডি মোজাম্মেল হক বাবু, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার মাহবুবুর রহমান ও সেলিম নামে প্রাইভেটকারের চালককে আটক করে স্থানীয় লোকজন। আটক চারজন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চান মিয়া খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে দেননি।

এর আগে গত ৬ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তকে স্ত্রী-কন্যাসহ ইমিগ্রেশন থেকে ফেরত পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন:
পালানোর সময় সিলেট সীমান্তে ভাইসহ আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার
১৪ শ’ কোটি টাকার ঋণখেলাপি আনসারুল বিমানবন্দরে আটক
ওসমানী বিমানবন্দর থেকে আওয়ামী লীগের দুই নেতা আটক
যশোর জেলা ছাত্রলীগ সম্পাদক ভারতে পালানোর সময় বেনাপোলে আটক
কক্সবাজারের সাবেক এমপি বদি চট্টগ্রামে আটক

মন্তব্য

বাংলাদেশ
3 were injured in the attack by outsiders at the concert of the student movement in Madaripur

মাদারীপুরে ছাত্র আন্দোলনের সংগীতানুষ্ঠানে ‘বহিরাগতদের’ হামলা, আহত ৩

মাদারীপুরে ছাত্র আন্দোলনের সংগীতানুষ্ঠানে ‘বহিরাগতদের’ হামলা, আহত ৩ রোববার মাদারীপুর শিল্পকলা একাডেমীতে হামলার পর সেনাবাহিনী ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ছবি: নিউজবাংলা
আয়োজকদের একজন আব্দুর রহিম বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সম্পৃক্তদের নিয়েই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু কয়েকজন নিজেদের ছাত্র আন্দোলনের কর্মী দাবি করে হামলা করেছে, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগের কর্মী। আমরা এদের বিচার দাবি করছি।’

মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত কাওয়ালি অনুষ্ঠানে বহিরাগতদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। ছাত্র আন্দোলনের তিনজন আহত হয়েছেন। পরে সেনাবাহিনী ও সদর থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পণ্ড হয়ে যায় অনুষ্ঠান।

রোববার বিকেলে মাদারীপুর শিল্পকলা একাডেমীতে দু’দফায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও আয়োজকরা জানান, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে কাওয়ালি সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

রোববার বেলা ২টার দিকে শিল্পকলা একাডেমীতে অনুষ্ঠান শুরুও হয়। হঠাৎ জুবায়ের আহমেদ নাফিজ, মুন্না কাজীসহ বেশকিছু লোক অনুষ্ঠানস্থলে এসে আয়োজকদের ওপর হামলা করে। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী নেয়ামত উল্লাহ ও আশিকুল তামিম আশিক আহত হন। সেনাবাহিনী ও সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

তবে অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়। বিষয়টি সমাধানের জন্যে দুপক্ষের লোকজন নিয়ে বসেও কোনো ফল আসেনি। পরে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফেরার পথে ইখতিয়ার আহমাদ সাবিদ নামে আরেকজন আয়োজককে ইট দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ। পরে আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আয়োজকদের একজন আব্দুর রহিম বলেন, ‘যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে সম্পৃক্ত রয়েছে, তাদের নিয়েই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু কয়েকজন নিজেদের ছাত্র আন্দোলনের কর্মী দাবি করে অনুষ্ঠানে আমাদের ওপর হামলা করে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগের কর্মী রয়েছে। আমরা এদের বিচার দাবি করছি।’

তবে হামলাকারী জুবায়ের আহমেদ নাফিজ দাবি করেছেন, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন। তাকে না জানিয়ে কাওয়ইল গানের আয়োজন করায় বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখা হয়েছে।

মাদারীপুর সদর থানার ওসি এইচএম সালাউদ্দিন বলেন, ‘অনুষ্ঠানস্থলে আসার আগেই হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে আসার পর আর কোনো ঘটনা ঘটেনি। আহতরা অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে মামলা নেয়া হবে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Hasina ran away leaving the leaders to avenge her fathers death Mamunul Haque

বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতেই নেতাদের রেখে পালিয়েছেন হাসিনা: মামুনুল হক

বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতেই নেতাদের রেখে পালিয়েছেন হাসিনা: মামুনুল হক রোববার ঠাকুরগাঁওয়ে পাবলিক ক্লাব মাঠে গণসমাবেশে বক্তব্য দেন মামুনুল হক। ছবি: নিউজবাংলা
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারাই শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছিলেন। এ কারণে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কীভাবে প্রতিশোধ নেয়া যায় সেই চিন্তা শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছিলেন।’

শেখ হাসিনা তার বাবার মৃত্যুর চূড়ান্ত প্রতিশোধ নিয়ে দেশে ছেড়ে পালিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক। তিনি বলেছেন, প্রতিশোধের অংশ হিসেবেই আওয়ামী লীগের নেতাদের রেখে তিনি ভারতে পালিয়েছেন।

রোববার ঠাকুরগাঁওয়ে পাবলিক ক্লাব মাঠে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস জেলা শাখার আয়োজনে এক গণসমাবেশে মামুনুল হক একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতারাই শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছিলেন। এ কারণে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কীভাবে তার বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেয়া যায় সেই চিন্তা শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছিলেন।’

মামুনুল হক বলেন, শেখ হাসিনা তার পরিবারের কাউকে রাজনীতিতে আনেননি। কারণ দেশের মানুষের ওপর তার কোনো আস্থা ছিলো না। তার চিন্তায়ই ছিলো বাংলাদেশের রাজনীতির বারোটা বাজিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবেন।

‘প্রতিশোধের রাজনীতি করে দেশটাকে ধ্বংস করেছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য ছিলোনা। তিনি দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে আরেক দেশকে ট্রানজিট দিয়ে দেন। কারণ তিনি এ দেশের উন্নতি চাননি। দেশটাকে অঙ্গরাজ্যে পরিণত করাই ছিলো হাসিনার রাজনীতি।’

বাংলাদেশ খেলাফল মজলিস ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা সাঈদ আহমদ সাঈফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দীন আহমেদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা এনামুল হক মূসা।

বক্তব্য শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের জন্য দোয়া করা হয়।

আরও পড়ুন:
হাজার বছরে শেখ হাসিনার মতো নির্মম কারও জন্ম হয়েছে কি না, সন্দেহ মামুনুলের
আওয়ামী লীগ নাটকবাজ দল: মামুনুল হক
দুই মামলায় হেফাজত নেতা মামুনুলের জামিন বহাল
দুই মামলায় হেফাজতের মামুনুলের জামিন স্থগিত
আরও ৩ মামলায় জামিন পেলেন মামুনুল হক

মন্তব্য

বাংলাদেশ
A case of attempted murder of Yunus and Khaleda against Hasina
পদ্মা সেতুর নিচে চুবানো ও নদীতে ফেলে দেয়ার হুমকি

হাসিনার বিরুদ্ধে ইউনূস ও খালেদাকে হত্যাচেষ্টার মামলা

হাসিনার বিরুদ্ধে ইউনূস ও খালেদাকে হত্যাচেষ্টার মামলা শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২২ সালের ১৮ মে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে বলেন- ‘পদ্মা সেতুতে নিয়ে খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেওয়া উচিত। আর ড. ইউনূসকে পদ্মা নদীতে দুটি চুবানি দিয়ে সেতুর ওপর তোলা উচিত। এসব মন্তব্যের মাধ্যমে খালেদা জিয়া ও ড. ইউনূসকে হত্যার সুপ্ত ইচ্ছা ব্যক্ত করেন তৎকালীন সরকার প্রধান।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পদ্মা সেতুর নিচে চুবানো ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সেতু থেকে ফেলে দেয়ার হুমকির ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে রোববার মামলাটি দায়ের করেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি সৌরভ প্রিয় পাল।

বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একমাত্র আসামি করে মামলার আবেদন করা হয়।

আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বা সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা দিয়ে তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ১৮ মে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে নিয়ে খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেওয়া উচিত।’ একইসঙ্গে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধে চেষ্টার অভিযোগ তুলে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পদ্মা নদীতে দুটি চুবানি দিয়ে সেতুর ওপর তোলা উচিত বলে মন্তব্য করেন তৎকালীন সরকার প্রধান।

শেখ হাসিনা এসব মন্তব্যের মাধ্যমে বিষোদগার করে বেগম খালেদা জিয়া ও দেশের একমাত্র নোবেল লরিয়েট ড. ইউনূসকে হত্যার সুপ্ত ইচ্ছা ব্যক্ত ও মানহানি করেছিলেন। তিনি খালেদা জিয়া ও ড. ইউনূসকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়ে এবং হত্যার ষড়যন্ত্র করে, হত্যার জন্য প্ররোচনা দিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন তথা ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগের সন্ত্রাসীদের প্ররোচিত করেছিলেন।

আরও পড়ুন:
হাজার বছরে শেখ হাসিনার মতো নির্মম কারও জন্ম হয়েছে কি না, সন্দেহ মামুনুলের
নড়াইলে মাশরাফির বিরুদ্ধে মামলা
ফাইয়াজ হত্যায় হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলা
নোয়াখালীতে সাবেক এমপি একরামসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

মন্তব্য

p
উপরে