× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Shahidunnabi murder There is no charge sheet in more than a year
google_news print-icon

শহীদুন্নবী হত্যা: ১ বছরেও অভিযোগপত্র নেই, জামিনে শতাধিক

শহীদুন্নবী-হত্যা-১-বছরেও-অভিযোগপত্র-নেই-জামিনে-শতাধিক
স্বামীর ছবির পাশে শহীদুন্নবীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার। ছবি: নিউজবাংলা
লালমনিরহাটে শহীদুন্নবী হত্যায় তিন মামলায় এজাহারনামীয় ১১৪ আসামি ও তদন্তে পাওয়া ২০ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি ও পাটগ্রাম থানার পুলিশ। তবে গ্রেপ্তার সেই ১৩৪ জনের মধ্যে বিভিন্ন সময় হাইকোর্ট থেকে জামিনে রয়েছেন ১২১ আসামি। মামলা তদন্তে দীর্ঘসূত্রতায় হতাশা জানিয়েছে শহীদুন্নবীর পরিবার।

লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে পবিত্র কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে আবু ইউনুস মো. শহীদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার নৃশংস ঘটনার এক বছরেও অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ।

গত বছরের ২৯ অক্টোবর খুন হন শহীদুন্নবী। দেশজুড়ে আলোচিত সেই ঘটনার বিচার কবে শুরু হবে, জানেন শহীদুন্নবীর স্ত্রী ও দুই সন্তান।

শহীদুন্নবী হত্যার ঘটনায় তিনটি মামলার তদন্ত করছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তবে একটির অভিযোগপত্র দিতে পারেনি সংস্থাটি।

এসব মামলায় এজাহারনামীয় ১১৪ আসামি ও তদন্তে পাওয়া ২০ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি ও পাটগ্রাম থানা পুলিশ। তবে গ্রেপ্তার সেই ১৩৪ জনের মধ্যে বিভিন্ন সময় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন ১২১ আসামি।

লালমনিরহাট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আকমল হোসেনের দাবি, মামলাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় সব দিক বিবেচনা করে তদন্ত করতে সময় বেশি লাগছে। শিগগিরই অভিযোগপত্র দেয়া হবে।

ঘটনার শুরু যেভাবে

শহীদুন্নবী জুয়েল ও তার বন্ধু সুমন রুবাইয়্যেত গত বছরের ২৯ অক্টোবর লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে গিয়েছিলেন ব্যক্তিগত কাজে। ওই দিন বুড়িমারী জামে মসজিদে আসরের নামাজ পড়তে যান দুই বন্ধু। শহীদুন্নবী নামাজ শেষে তিলাওয়াতের জন্য মসজিদের তাক থেকে কোরআন নিতে গেলে সেটি তার পায়ের ওপর পড়ে।

এতে মসজিদের মুসল্লিরা ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর শুরু করেন শহীদুন্নবীকে। মসজিদের বাইরে এনে বেদম মারধর করার সময় প্রচার করা হয়, তিনি কোরআন অবমাননা করেছেন।

বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হাফিজ উদ্দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে শহীদুন্নবীকে উদ্ধার করে পরিষদ ভবনে নিয়ে যান। তবে উত্তেজিত জনতা কোরআন অবমাননার স্লোগান দিতে দিতে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ঘিরে ফেলে।

বুড়িমারী ইউপির চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাদ, পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মোহন্ত, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।

এরই মধ্যে শহীদুন্নবী ও তার বন্ধু সুমনকে পরিষদের একটি কক্ষে ঢুকিয়ে তালা মেরে রক্ষার চেষ্টা করা হয়। তবে উত্তেজিত জনতা পরিষদের গ্রিল ও ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। পরে শহীদুন্নবী ও সুমনের কক্ষের তালা ভেঙে তাদের পেটানো শুরু হয়।

এর মধ্যে পাটগ্রাম থানার ওসি সুমন কুমার মোহন্ত পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় সুমনকে সরিয়ে নিতে পারলেও শহীদুন্নবীকে সেখানেই পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ টেনেহিঁচড়ে শহরের বাঁশকল মোড়ে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা।

এ ঘটনায় পরে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজাহান মামলা করেন।

বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদে ভাঙচুর করে শহীদুন্নবীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাদ।

শহীদুন্নবী হত্যা: ১ বছরেও অভিযোগপত্র নেই, জামিনে শতাধিক
পুড়িয়ে দেয়া মরদেহটি এতটাই বিকৃত হয়েছিল যে ময়নাতদন্ত করাও সম্ভব হয়নি

আর কোরআন অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে শহীদুন্নবীকে পিটিয়ে ও মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় তার চাচাতো ভাই হত্যা মামলা করেন।

তিন মামলায় ১১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক শ মানুষকে আসামি করা হয়। এসব মামলায় পরে এজাহারনামীয় ১১৪ আসামি ও তদন্তে পাওয়া ২০ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি ও পাটগ্রাম থানার পুলিশ।

তবে বিভিন্ন সময় হাইকোর্টের আদেশে ৩ মামলায় ১২১ আসামি জামিনে ছাড়া পান বলে জানিয়েছেন আদালত পুলিশের উপপরিদর্শক মো. আবু মুসা।

মেলেনি কোরআন অবমাননার প্রমাণ

ওই ঘটনার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক টি এম মুমিনকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করে জেলা প্রশাসন। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের পক্ষেও একটি তদন্ত কমিটি করা হয়।

দুই কমিটির সরেজমিনে তদন্তে বলা হয়, বুড়িমারীতে কোরআন অবমাননার মতো কোনো ঘটনাই ঘটেনি। শহীদুন্নবী জুয়েলকে কোরআন অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে হত্যা ও মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়।

পরিবার জানে না মামলার অগ্রগতি

শহীদুন্নবী হত্যার পরদিন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ক্রাইম সিনের সদস্যরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। পরে ওই ঘটনায় হওয়া তিনটি মামলায় তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ডিবি পুলিশকে।

এক বছর পরও মামলা তিনটির তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন ডিবি পুলিশের কর্মকর্তারা।

তবে মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানে না শহীদুন্নবীর পরিবার। কবে বিচার শুরু হতে পারে তাও জানেন না স্বজনরা।

শহীদুন্নবীর মেয়ে জেবা তাসনিয়া অনন্যা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত বছর বুড়িমারীতে নির্মমভাবে আমার বাবাকে মেরে পুড়িয়ে ফেলা হলো। এখনও আমরা তার বিচার পাইনি। আমরা বাবার হত্যাকারীদের উপযুক্ত বিচার চাই। সরকারের কাছে আমার এটাই চাওয়া যেন আমার বাবা হত্যার সুষ্ঠু বিচার হয়।’

শহীদুন্নবী হত্যা: ১ বছরেও অভিযোগপত্র নেই, জামিনে শতাধিক
নিহত শহীদুন্নবী। ছবি: নিউজবাংলা

শহীদুন্নবীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এক বছরে আমি তো কোনো বিচার পাইলাম না। আমার স্বামীর তো কোনো অপরাধ ছিল না। সে তো নিরপরাধ ছিল। সে তো কাজে গিয়েছিল সেখানে।

‘সে একখানে যেতেই পারে। মিথ্যা অপপ্রচার করে তাকে মেরে ফেলা হলো, আবার পুড়িয়ে ফেলা হলো। আমার স্বামী হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

আসামিদের জামিনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শুনলাম যে আসামিরা জামিন পাচ্ছে। আবার ধরতেছেও। তাতে তো কোনো সুষ্ঠু বিচার হলো না।

‘এখনও তো চার্জশিট দেয়নি। আমি শুনতেছি এখনও ওই অবস্থায় আছে। তদন্তে কোনো অগ্রগতি নাই। আসামিরা ছাড়া পাচ্ছে। সরকার তো কিছুই করল না।’

শহীদুন্নবী হত্যা: ১ বছরেও অভিযোগপত্র নেই, জামিনে শতাধিক
লালমনিরহাটের পাটগ্রামে ঘেরাও করে রাখা জায়গাটিতে হত্যার পর পুড়িয়ে দেয়া হয় শহীদুন্নবীকে। ছবি: শাহজাহান সাজু

শহীদুন্নবীর বড় বোন হাসনা আক্তার বলেন, ‘আমার ভাই হত্যার বিচার এখনও আমরা পাইনি। দুই-একজনকে জিজ্ঞেস করা হলে তারা বলেন, হবে, হচ্ছে। ওর হয়ে পাটগ্রাম থানায় যিনি মামলা করেছেন তিনিও বলেন, হবে, হচ্ছে; তদন্ত চলছে।

‘আসামিরা ধরা পড়লেও আবার বিভিন্ন জায়গা থেকে খোঁজ নিয়ে দেখি জামিনে মুক্ত হচ্ছে। এটা খুব দুঃখজনক ও মর্মান্তিক।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবাই সমবেদনা জানায়, দুঃখ প্রকাশ করে; আসলে দুঃখ প্রকাশ শুধু মুখের ভাষায়। এর সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে না। আমার জোর দাবি সুষ্ঠু বিচার, সুষ্ঠু তদন্তসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

ভালো নেই শহীদুন্নবীর স্ত্রী-সন্তান

শহীদুন্নবীর রংপুরের শালবনের বাড়িতে বুধবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, সুনসান নীরবতা। দুই সন্তানের চিন্তায় ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত জেসমিন আরা মুক্তা।

তিনি জানান, তাদের মেয়ে অনন্যা এ বছর রংপুর ক্যান্টপাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছে। তবে টাকার অভাবে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া আর কোনো পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।

ছেলে আবু তাহের মো. আশিকুন নবী অরণ্য একই বিদ্যালয়ে পড়ছে সপ্তম শ্রেণিতে। তবে বেতন এবং টিউশনফি দিতে পারছেন না তিনি।

মুক্তা বলেন, ‘জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলছি। আমরা বড় অসহায়। না পারছি খেতে, না পারছি ছেলে-মেয়েদের পড়াতে। কখনও কখনও ছেলে-মেয়ের মুখের দিকে তাকাতে পারি না।

‘শহীদুন্নবীকে হত্যা করার পর রংপুর ডিসি অফিস থেকে ২০ হাজার আর লালমনিরহাট ডিসি অফিস থেকে ২০ হাজার-এই ৪০ হাজার টাকা আমি সহযোগিতা পেয়েছি। গচ্ছিত কোনো অর্থ নেই যে চলব। শুধু আল্লাহ ধৈর্য দিয়েছেন বলেই আজও বেঁচে আছি।’

প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটা চাকরির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ডিগ্রি পাশ করেছি। আমার অসহায় ছেলে-মেয়েদের দিকে তাকিয়ে আমার জন্য একটা চাকরির খুব প্রয়োজন। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এতটুকুই চাই। জীবন বাঁচাতে এতটুকু না হলে আর বাঁচতে পারি না।’

সুষ্ঠু তদন্ত দাবি

মূল আসামিদের পরিবর্তে অন্যদের গ্রেপ্তারের অভিযোগ এনে সুষ্ঠু তদন্তের দাবিও তোলা হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও শহীদুন্নবী হত্যা মামলার আসামি হাফিজ উদ্দিনের দাবি, মসজিদে কোরআন অবমাননার জন্য একজনকে পেটানোর তথ্য পেয়ে তিনি সেখানে গিয়ে শহীদুন্নবীকে উদ্ধার করে পরিষদ ভবনে আনেন। ইউনিয়ন পরিষদে ইউএনও ও পুলিশের সামনেই শহীদুন্নবীকে হত্যা করা হয়।

তিনি বলেন, ‘আমি তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলাম, পরে দেখি আমি আসামি। আমি দুবার জেলে যাই। দুবারেই জামিনে মুক্তি লাভ করি। অথচ আসল আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার চাই।’

বুড়িমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাদ বলেন, ‘মামলার একদিকে যেমন তদন্ত চলছে, অন্যদিকে আসামিরা হাইকোর্ট থেকে জামিনেও মুক্তি পাচ্ছে। আবার নতুন করে গ্রেপ্তারও হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এ চাঞ্চল্যকর মামলাটির চার্জশিট দেয়নি পুলিশ। এখনও প্রকাশ্যে মূল আসামিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে।

‘কিন্তু পুলিশ কী করছে? মিথ্যা ও নিরপরাধ মানুষদের ধরছে। এটি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘শহীদুন্নবীকে বাঁচানোর জন্য আমার ইউপি সদস্য হাফিজ মেম্বার মসজিদ থেকে তাকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে এলো, অথচ তাকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করল। এ মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে সঠিক আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

কী বলছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

বুড়িমারী নিশৃংসতার ঘটনায় তিন মামলা শুরুতে থানা পুলিশ তদন্ত করলেও এখন তার দায়িত্বে রয়েছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

এ বিষয়ে জানতে হত্যা মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের মোবাইল ফোনে দুই দিন ধরে কল করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে মামলার বাদী সাইফুর রহমানকে বিপ্লবকে তিনি জানিয়েছেন, দ্রুত এই মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হবে।

লালমনিরহাট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি স্যারের দিক নির্দেশনায় আমরা জেলা পুলিশের সদস্যরা প্রথম থেকেই তদন্ত কাজে সহায়তা করছি। একটি গোয়েদা সংস্থা এ তদন্ত কাজ করছে এবং জেলা পুলিশ সুপার সেটিকে তদারক করছে।

‘তদন্ত কাজ প্রায় শেষের দিকে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দেব, যাতে কোনো নিরপরাধ লোক এ মামলায় হয়রানির শিকার না হয়।’

শহীদুন্নবী হত্যা মামলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আকমল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ মামলাটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ জন্য মামলাটি একটু দীর্ঘায়িত হচ্ছে। খুব দ্রুত এ মামলার চার্জশিট দেয়া হবে বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ।’

মামলার তদন্ত দীর্ঘায়িত হওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বক্তব্য সঠিক নয়। মামলাটি চাঞ্চল্যকর বলে সঠিকভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করায় এটি দীর্ঘায়িত হচ্ছে। যারা প্রকৃত আসামি তাদের সঠিক বিচারের আওতায় আনা হবে।

‘চার্জশিট এলেই আমরা মামলাটির বিচারকাজ তাড়াতাড়ি শুরু করতে পারব। সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে আসামিদের সাজাও নিশ্চিত করা যাবে। প্রকৃত আসামিরা শাস্তি পাবেই।’

আরও পড়ুন:
বুড়িমারী নির্মমতা: এক আসামির জামিন বহাল
বুড়িমারী নির্মমতা: চার আসামির জামিন
বুড়িমারী নির্মমতা: এক আসামির জামিন
বুড়িমারী নৃশংসতা: গ্রেপ্তার আরও এক আসামি
বুড়িমারী বর্বরতা: আত্মগোপনে থাকা ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

মন্তব্য

আরও পড়ুন

কুমিল্লায় ৪ জনের নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত

কুমিল্লায় ৪ জনের নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত

কুমিল্লায় চার জনের শরীরে নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে এক নারী চিকিৎসকসহ তিনজন পুরুষ রয়েছেন।

শনিবার (১৪ জুন) কুমিল্লা সিটি স্ক্যান এমআরআই স্পেশালাইজড অ্যান্ড ডায়ালাইসিস সেন্টারে করোনা পরীক্ষা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

করোনায় আক্রান্তরা হলেন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আবদুল মোমিন (৭০), কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার ডা. সানজিদা (৩০), বুড়িচং উপজেলার মো. হেলাল আহমেদ (৩৮) এবং সদর উপজেলার মো. ইবনে যুবায়ের (৩৯)।

সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির বলেন, গত তিন দিনে কুমিল্লায় ১৩ জন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা কয়। পরীক্ষা শেষে তাদের মধ্যে চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বাকিদের নগরীর একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নমুনা পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

তিনি বলেন, চারজনই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দুজন এরই মধ্যে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় চলে গেছেন।

তবে আরেকজনের বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি সিভিল সার্জন।

করোনার প্রথম ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর এতদিন কুমিল্লায় নতুন করে কেউ শনাক্ত হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু এখন আবার নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি দ্বিতীয় ধাপের শুরু হতে পারে এবং এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In Chittagong six days Karona identifies 3 

চট্টগ্রামে ছয় দিনে করোনা শনাক্ত ৯ 

চট্টগ্রামে ছয় দিনে করোনা শনাক্ত ৯ 

চট্টগ্রামে নতুন করে আরো একজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত ছয় দিনে মোট ৯ জনের শরীরে এ ভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার সকাল আটটা) ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। ৪০ বছর বয়সী আক্রান্ত ওই ব্যক্তি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেহাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তিনি শুক্রবার নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা করান। সেখানেই তার শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়।

এদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্ত নয়জনের মধ্যে পুরুষ ৫ জন এবং নারী ৪ জন। এদের মধ্যে ৭ জন নগরের এবং ২ জন উপজেলার বাসিন্দা।

অন্যদিকে, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত বেসরকারি পর্যায়ে করোনা শনাক্তকরণের পরীক্ষা চালু আছে। তবে শিগগিরই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) আরটি–পিসিআর পরীক্ষা শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Daudkandi Upazila Health Complex was injured in the fire

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগুন, আহত ৩

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগুন, আহত ৩

কুমিল্লার দাউদকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দূর্ঘটনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। তবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোগীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে গিয়ে হাসপাতালের তিনজন কর্মী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা ছুটে আসে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আহতরা হলেন ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১৪জুন) বেলা ১১টায় দাউদকান্দি উপজেলা গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় ষ্টোর রুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে হাসাপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের এবং বহিঃবিভাগে চিকিৎসা সেবা প্রায় দুই ঘন্টা বন্ধ থাকে৷ খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ১১ টার দিকে হাসপাতালের তিনতলার ষ্টোর রুমে আগুনের ধোয়া দেখা যায়। ধোয়া দেখে পাশের ওয়ার্ডের রোগীর স্বজন ও নার্সরা আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করে। এ সময় হাসপাতালে থাকা রোগী ও তাদের স্বজনরা দৌঁড়াদৌড়ি শুরু করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পল্লী বিদ্যু ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা নামে তিন কর্মচারী আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মোঃ ইদ্রিস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসার পর স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। প্রাথমিক ধারনা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনে সূত্রপাত, পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে মূল কারণ জানা যাবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালের ৩য় তলায় ডেঙ্গু রোগীদের ওয়ার্ডের পাশের কক্ষে ষ্টোর রুমে ঔষধসহ রোগীদের সেবার কাজে ব্যবহৃত সব ধরনের মালামালের সাথে কিছু দামী সরঞ্জামও ছিল। ওই কক্ষে আগুনে অধিকাংশ মালামালই পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু মালামাল বের করতে পারলেও তা ভালো আছে কিনা পরবর্তীতে যাচাই করে বলেতে পারবো । আগুনে ক্ষতির পরিমান এখন নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আর আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং মালামাল বিশেষ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার বের করতে গিয়ে আমাদের আউটসোর্সিংয়ে কাজ করা তিনজন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন৷

মন্তব্য

বাংলাদেশ
What are the obstacles to the smuggling and the loot of the stone?
জাফলংয়ে হামলা

চোরাচালান ও পাথর লুট নির্বিঘ্ন করতেই কী পর্যটকদের বাধা?

চোরাচালান ও পাথর লুট নির্বিঘ্ন করতেই কী পর্যটকদের বাধা? জাফলংয়ের পাথুরে নদী। ছবি: নিউজবাংলা

ঈদের ছুটিতে সিলেটে বেড়াতে এসে হেনস্তার শিকার হয়েছেন পর্যটকরা। একদিনের ব্যবধানে জাফলংয়ে পর্যটকদের উপর হামলা ও কোম্পানীগঞ্জে পর্যটনকেন্দ্র থেকে পর্যটকদের বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। দুটি ক্ষেত্রেই পর্যটকদের বিরুদ্ধে অশ্লীলতা ও পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ তোলা হয়েছে। যদিও স্থানীয় একটি অংশের অভিযোগ, নির্বিঘ্নে চোরাচালান ও পাথর লুট করতেই পর্যটকদের বাধা দেয়া হচ্ছে। পর্যটক সমাগম বাড়লে লুটপাট ও চোরাকারবারে সমস্যা হয়। তাই পর্যটকদের আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে দাবি তাদের।

অশ্লীলতার অভিযোগ এনে সোমবার রাতে মৌলভীবাজারের রাজনগরে “রাজনগর রিসোর্ট এন্ড কফি হাউজে” তালা দিয়েছে স্থানীয় একদল লোক। এসময় স্থানীয় থানার পুলিশ সদস্যদেরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দুটি স্থান জাফলং ও কোম্পানীগঞ্জ। সবসময়ই এই দুই এলাকায় পর্যটকদের ভিড় থাকে। ঈদের মতো বড় ছুটিতে ভিড় কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সীমান্তবর্তী এই দুই এলাকা দিয়েই ভারত থেকে দেদারছে চোরাই পণ্য আসে। এছাড়া এসব এলাকার পাথুরে নদী ও ছড়া থেকে পাথর লুটপাটও নিত্তকার ঘটনা। গত বছরের ৫ আগস্টের পর চোরাচালান ও পাথর লুট অনেকটা বেড়ে গেছে। প্রশাসনও লুটপাটকারী ও চোরাকারবারীদের ঠেকাতে পারছে না।

জানা যায়, ঈদের পরদিন রোববার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের পাহাড় থেকে নেমে আসা পাথুরে ছড়া উৎমাছড়া পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় করেন অনেক পর্যটক। বিকেলে সেখানে কিছু সংখ্যক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও স্থানীয় কিছু লোক জড়ো হয়ে পর্যটকদের বের করে দেয়। এ রকম একটি ভিডিও সোমবার রাত থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। জড়ো হওয়া যুবকরা পর্যটকদের বিরুদ্ধে অশ্লীলতা, মদ্যপান ও এলাকার পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ করেন।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পর্যটকদের বের করে দেয়ার একটি ভিডিওতে এক যুবককে বলতে শোনা যায়, 'এই এলাকা আলিমদের এলাকা, দ্বীনদার এলাকা। কিন্তু এইখানে অনেকে অনেক পরিবেশে থেকে আসে। এসে মদ খায়, আরও অনেককিছু করে, এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়। তাই আমাদের আবেদন, আপনারা এখানে আর আসবেন না। তাছাড়া এটি পর্যটনভুক্ত এলাকাও নয়'।

ভিডিওতে আরও বলতে শোনা যায়, ‘এই এলাকার আলেম-ওলামা ও স্থানীয়রা সিদ্ধান্ত নিয়েছে উৎমাছড়াকে পর্যটন করা যাবে না। তাই আপনারা যারা এখানে এসেছেন দয়া করে এখান থেকে চলে যান। আপনারা এখানে থেকে এখানের পরিবেশ নষ্ট করবেন না। এই এলাকার পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য আমরা এখানে পর্যটকদের আসতে নিরুৎসাহিত করছি আজকের পর আপনারা এখানে আর কোনদিন আসবেন না’।

পর্যটকদের বের করে দেয়ার এই ভিডিও যুক্ত করে পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম ফেসবুকে লিখেন, ‘একদিকে চলবে পর্যটক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা অন্যদিকে পর্যটনে বাঁধা! দেশের ভেতরে সরকার ঘোষিত সংরক্ষিত এলাকা ও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী মালিকানাধীন জায়গা ব্যতীত কোথাও জনসাধারণের প্রবেশে বাঁধা দেয়া মানুষের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ। মানুষের চলাচলে বাঁধা প্রদান ও হুমকি প্রদান দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু সিলেটে এই অপরাধ ইতিপূর্বেও ঘটেছে।

কিম লিখেন, 'বছর কয়েক পূর্বে গোয়াইনঘাট উপজেলায় এক ঈদে মায়াবন নামে পরিচিত যুগীরকান্দি জলারবনে পর্যটকদের উপর হামলা করা হয়েছিল। এরপর থেকে ওই বনে কোন পর্যটক আর পা রাখেনি। স্থানীয় মাদ্রাসা ওই জলার বনের মাছ ভোগ করে বলে এখানে পর্যটক আসুক তা চায় না। অশ্লীলতার দোহাই দিয়ে যুগীরকান্দি বন বা মায়াবন সবার দৃষ্টির আড়ালে নিয়ে যাওয়া হয়। উতমাছড়ার পাথর লুটে ওই মাদ্রাসার সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তা জানা প্রয়োজন।'

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ বলেন, ‘উৎমাছড়ায় বেড়াতে যাওয়া জন্য নির্দিষ্ট কিংবা উপযুক্ত রাস্তা নেই। এ জন্য পর্যটকেরা স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর মাড়িয়ে যাতায়াত করেন। এতে তারা অসুবিধায় পড়েন। বৈঠকে এমন দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই এলাকায় মাদক সেবন ও অশ্লীলতা হয়, এমনটিও দাবি করা হয়েছে’।

উৎমাছড়ায় পর্যটকদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ‘এ অঞ্চলে এমন ঘটনা আগে কখনোই ঘটেনি। বিষয়টি ইউএনওকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তিনি তদন্ত করে দেখছেন। ইউএনও জানার চেষ্টা করছেন, বিষয়টি কী?’

এদিকে, সিলেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে পর্যটকদের উপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয় কিছু লোক। হামলাকারীরা চোরাকারবারের সাথে সম্পৃক্ত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। সোমবার বিকেলে জাফলং বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কবির হোসেন বলেন, স্থানীয় বখাটেরা পর্যটকদের ওপর হামলা করেছে। পরে সাংবাদিক ও ইউপি সদস্য মিলে ঘটনাস্থলেই বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, ‘তুচ্ছ বিষয় নিয়ে পর্যটকদের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গেই সমাধান হয়ে গেছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় অনেকের ভুল ধারণা হয়েছে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Hundreds of families on Shahpir Island are now sheltered
প্রবল জোয়ার ও টানা বৃষ্টি

শাহপরীর দ্বীপে শত শত পরিবার এখন আশ্রয়হীন

খোলা আকাশের নিচে জীবনযাপন
শাহপরীর দ্বীপে শত শত পরিবার এখন আশ্রয়হীন শাহপরীর দ্বীপ। ছবি: নিউজবাংলা

নাফ নদীর ভাঙন যেন থামছেই না। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জালিয়া পাড়ায় প্রতিদিনই নদীর গর্ভে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ভেঙে যাচ্ছে স্বপ্ন। কিছুদিন আগেও যেখানে ছিল ঈদের প্রস্তুতি, হাসি-আনন্দে মুখর পরিবার—আজ সেখানে কান্না আর হাহাকার। প্রবল জোয়ার ও টানা বৃষ্টির তোড়ে শত শত পরিবার এখন আশ্রয়হীন, চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে। বসতভিটা হারিয়ে কেউ খোলা আকাশের নিচে, কেউ গাছতলায় কিংবা নদীর পাড়েই মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজছে।

‘নাফের পানি ও তুফানে আমার ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। ঈদের দিনেও কোরবানি দিতে পারিনি, ছেলেমেয়েদের নতুন জামা কিনতে পারিনি। এর চেয়ে বড় কষ্ট কিছু হতে পারে না।’-বলেন ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা আবুল আলী। আলোকিত শহরের ঈদ আনন্দের বিপরীতে এই দ্বীপে নেই রান্নার হাঁড়ি, নেই নতুন জামার ঝলক, শুধু অসহায়ত্ব আর কান্নার সুর।

ভাঙনের মধ্যে দাঁড়িয়ে এক বৃদ্ধের আহাজারি

বৃদ্ধ আবুল আলী, কাঁপা গলায় হাতের ইশারায় দেখালেন যে জায়গাটিতে দাঁড়িয়ে আছেন, সেখানেই ছিল তার ছোট্ট ঘর। নাফের পানি একরাতে সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ঘর, চুলা, শোবার জায়গা, কিছুই নাই আর। কতবার ঘর তুলুম? আমাদের দেখার কেউ নাই। বারবার আশার বাণী শুনিয়েছেন প্রশাসন। কেউ আজো কিছু দেয়নি। তবে কিছু করবে এমন আশায় আছি।’

ঈদের রান্নাও থেমে গেছে

বৃদ্ধা চলেমা খাতুন বলেন, ‘নাফের পানি চুলোতে ঢুকে ভেঙ্গে গেছে। এখনো রান্না করতে পারি না। ঈদের দিনেও ছেলে-মেয়েদের মুখে ভাত দিতে পারি নাই। নতুন কাপড় তো দূরের কথা। কোরবানিও করা সম্ভব হয় নাই। সাহায্য আসলেও তা আমরা পাই না।’

শুধু আবুল আলী বা চলেমা খাতুনই নন, এমন গল্প আজ জালিয়াপাড়ার শত শত পরিবারের। ঈদের সময় যখন দেশের অন্যপ্রান্তে আনন্দে মুখর প্রতিটি বাড়ি, তখন এই দ্বীপে ঈদ মানে কষ্ট, ভাঙা ঘর, খালি পেট, আর ভেজা চোখ।

আশ্বাস, প্রতিশ্রুতি—কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নেই

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, বহুবার প্রশাসনের লোকজন এসেছেন, ছবি তুলেছেন, কথা দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে কোনো সহায়তা তারা পাননি। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন,

‘কেবল ছবি তুললে আর রিপোর্ট করলেই কি ঘর ফিরে পাই? আমরা তো বাস্তব সাহায্য চাই।’ এক দশকের বেশি সময় ধরে চলছে নদীভাঙনের আতঙ্ক। শাহপরীর দ্বীপে নাফ নদীর ভাঙন নতুন নয়। ২০১২ সালের ভয়াবহ সামুদ্রিক জোয়ারে এই দ্বীপের চারটি পাড়ার অনেক ঘরবাড়ি, মসজিদ, দোকান সাগরে বিলীন হয়ে যায়। নোনা পানি নষ্ট করে দেয় কৃষিজমি, নিশ্চিহ্ন হয় গ্রাম, গৃহহীন হয়ে পড়ে হাজারো মানুষ। কিন্তু এত বড় অভিজ্ঞতার পরও দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

২০২৫ সালের এই ঈদুল আজহার সময়, ইতিহাস যেন আবার নিজের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে—আর এই পুনরাবৃত্তি শুধু কষ্টের, শুধু কান্নার। ধ্বংসের চিত্র এখনো স্পষ্ট জালিয়াপাড়ার বিভিন্ন স্থানে এখনো পড়ে আছে ভাঙা কাঠামো, উপড়ে যাওয়া গাছের শিকড়, পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া ঘরের চিহ্ন। পথচারীদের চোখে-মুখে শোক, মুখে একটাই প্রশ্ন—‘এই ভাঙন কি আর থামবে না?’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়া পাড়ায় যেসব বাংলাদেশি নাফ নদীর ভাঙনে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে তাদের তালিকা করে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The bodies of the EasyBike driver recovered from the Chandana River

চন্দনা নদী থেকে ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার

চন্দনা নদী থেকে ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার চন্দনা নদী থেকে মো. আসলাম প্রামানিক (৪২) নামে এক ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে কালুখালী থানা পুলিশ।
বুধবার (১১ জুন) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের চন্দনা ব্রিজের নিচ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আসলাম শেখ পাংশা উপজেলার চরলক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং পিয়ার আলী প্রামানিকের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসলাম শেখ গত মঙ্গলবার ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাত পর্যন্ত তিনি আর বাড়িতে ফেরেননি। বুধবার সকালে স্থানীয়রা চন্দনা ব্রিজের নিচে একটি মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে মরদেহটি আসলাম শেখের বলে শনাক্ত করেন।
এ বিষয়ে রাজবাড়ীর সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) দেবব্রত সরকার জানান, “প্রথমে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, ইজিবাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে আসলাম শেখকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
পুলিশ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Narayanganj battery chasit Atorixa and Microbes clash killed 2

নারায়ণগঞ্জে ব্যাটারী চা‌লিত অ‌টোরিক্সা ও মাই‌ক্রোবা‌সের মু‌খোমু‌খি সংঘর্ষ : নিহত ২

নারায়ণগঞ্জে ব্যাটারী চা‌লিত অ‌টোরিক্সা ও মাই‌ক্রোবা‌সের মু‌খোমু‌খি সংঘর্ষ : নিহত ২

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ব্যাটারী চা‌লিত অ‌টোরিক্সা ও মাই‌ক্রোবা‌সের মু‌খোমু‌খি সংঘর্ষে ২ জন নিহত হ‌য়ে‌ছে।

সোমবার রা‌তে উপ‌জেলার তারা‌বো এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘ‌টে। নিহতরা হলেন, তারা‌বো সুলতানবাগ এলাকার দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সাবেক রূপগঞ্জ প্র‌তি‌নি‌ধি মরহুম আবুল হাসান আসিফের ছেলে শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও অ‌টো‌রিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার রা‌তে তারা‌বো বিশ্ব‌রোড এলাকা থে‌কে অ‌টো‌রিক্সা যোগে তারা‌বো সুলতানবাগ এলাকার বা‌ড়ি‌তে ফির‌ছি‌লেন শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তা‌মিম সরকার (২৯)। প‌থিম‌ধ্যে সাই‌ফিং ফ্যাক্টরীর সাম‌নে এক‌টি হাই‌য়েস মাই‌ক্রোবা‌সের সা‌থে অ‌টো‌রিক্সা‌টির মু‌খোমু‌খি সংঘর্ষ হয়। সংঘ‌র্ষে অ‌টো‌রিক্সাটি দুম‌ড়েমুচ‌ড়ে যায়।

এ সময় ঘটনাস্থ‌লেই নিহত হয় অ‌টো‌রিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫) এবং আহত হয় অ‌টো‌রিক্সার যাত্রী শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তা‌মিম সরকার (২৯)। তা‌দের ম‌ধ্যে শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশ ও তার বন্ধু তা‌মিম সরকারকে গুরুত্বর আহত অবস্থায়

স্থানীয়রা উদ্ধার ক‌রে ঢাকা মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে নি‌য়ে গে‌লে চি‌কিৎসকরা শাহ‌রিয়ার হাসান আকাশকে মৃত ঘোষনা ক‌রেন।

এ ব্যাপা‌রে রূপগঞ্জ থানার অ‌ফিসার ইনচার্জ (ও‌সি) লিয়াকত আলী ব‌লেন, দূর্ঘটনার পর হাই‌য়েস মাই‌ক্রোবা‌সের চালক মাই‌ক্রোবাসটি নি‌য়ে পা‌লি‌য়ে যাওয়ায় তা‌কে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নি।

মন্তব্য

p
উপরে