শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন। পরিবার নিয়ে নিজ ঘরে বা বাইরে গিয়ে সবার সঙ্গে মিলেমিশে হইহুল্লোড়। দুপুর গড়ালেই পেটের চিৎকার-চেঁচামেচি। খাবার তো খেতেই হয়, ঘরে থাকুন আর বাইরে।
কিন্তু এই খাবারের তালিকায় কী রাখবেন আর কী রাখবেন না, তা নির্ভর করছে কতটা খরচের ভার নিতে পারবেন।
এমন বক্তব্যে আতঙ্কেরও কিছু নেই। বাজারের সবকিছুর দাম যে আকাশচুম্বী তা কিন্তু নয়।
গত দুই সপ্তাহ আগে বাজারে হইচই ফেলে দেয়া পেঁয়াজের দাম আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। ৭০-৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজের দাম এখন ৬০-৬৫ টাকা।
চাইলে আরও কমে পাওয়া যাবে, তবে সে ক্ষেত্রে নিজের পছন্দ করে বেছে নেয়া বা মান যে খুব ভালো হবে তার নিশ্চয়তা নেই। এমন ধরনের পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৮ টাকা কেজিতে।
সরকারি বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে। আগের সপ্তাহে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকায়। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়।
এর মধ্যে আবার আমদানি করা পেঁয়াজের দাম দেশি পেঁয়াজের তুলনায় কিছুটা কম। এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।
পেঁয়াজের পর তেলের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে এখন নতুন আলোচনা।
আগের সপ্তাহে লিটারপ্রতি তেলের দাম নির্ধারণ করায় এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। টিসিবির হিসাবে গত এক মাসে খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৪.৯১ শতাংশ। তবে সপ্তাহের ব্যবধানেও বেড়েছে দর। সয়াবিনের লিটারপ্রতি দর ১৩৫ টাকা থেকে বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪২ টাকায়। আর পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৭২০ টাকায়। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৬৮০ টাকা।
পাম অয়েল খোলা বিক্রি হচ্ছে ১২৮ টাকায়। আগের সপ্তাহে এটি ছিল ১২৫ টাকা।
মালিবাগ বাজারে ক্রেতা আসাদুল্লাহ দরদাম সম্পর্কে বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে, তবে এখনও সহনীয় পর্যায়ে নেই।’
বাজারে অনেক আগে থেকেই আগমনের অপেক্ষায় থাকা শীতের সবজি বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে সারা বছর পাওয়া যায় এমন সবজি তো আছেই।
মাছ-মাংসের দরদাম অনেক আগে থেকেই স্থির। তবে মুরগির বাজারে যেন হঠাৎ করে দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আগের সপ্তাহেও একই অবস্থা ছিল।
ফলে সাধ আর সাধ্য মিলিয়ে অনায়াসে আজকের দিনে বাজার করে নিতে পারেন।
রাজধানীর খিলগাঁও কাঁচাবাজারের ভেতরে সবজির খুব বেশি আয়োজন নেই। তবে ভ্যান আর রাস্তার দুই পাশে সারি সারি সবজি বিক্রেতার যেন দম ফালানোর সুযোগ নেই।
খিলগাঁও বাগানবাড়ি বাজারেও একই অবস্থা। এখানে স্থায়ী বাজার না হলেও প্রতিদিনই বসে অস্থায়ী বাজার। আর সরকারি ছুটির দিন শুক্রবার যেন এ বাজারেও ক্রেতার অভাব পড়ে না।
বাসাবো কাঁচাবাজার, মালিবাগ রেলগেট বাজারেও নানা পদের সবজি, মাছ, মাংসের কোনো কমতি নেই।
তবে দাম বৃদ্ধির বিষয়ে খুচরা বাজারের বিক্রেতাদের যে দাবি তাও ফেলে দেয়ার নয়। কারওয়ান বাজার বা যাত্রাবাড়ী থেকে যে সবজি বা মাছ পাইকারি দরে নিয়ে আসা হয় বিক্রি জন্য, তার পরিবহন খরচ অনেক বেড়েছে, যা যোগ হচ্ছে পণ্যমূল্যের সঙ্গে।
বাসাবো বাজারের মাসুদ ট্রেডার্সের বিক্রেতা ইব্রাহিম বলেন, ‘চকবাজার, বাবুবাজার থেকে আগে যে পণ্য রিকশা বা ভ্যানে ২০০ টাকায় আনা যেত, এখন সেটিতে দিতে হচ্ছে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। ফলে পাইকারি বাজারে যে পণ্যের দাম ১০ টাকা, সেটি নিয়ে আসার পরই হয়ে যাচ্ছে ১৩ টাকা। তার সঙ্গে লাভ, কর্মচারীর বেতন যোগ হলে পাইকারি দামের কথা আর বিবেচনা করা যায় না।’
খিলগাঁও কাঁচাবাজারের বিক্রেতা আসলাম আলম বলেন, ‘কারওয়ান বাজারের দাম এখানে বলে লাভ নেই। কারওয়ান বাজারে মুলা পাওয়া যায় ৫ টাকা কেজিতে। কিন্তু সেই মুলার বস্তা এখানে নিয়ে আসতে যে খরচ হয় সেটি উঠাতে হলে দাম ২০ টাকার কম রাখা সম্ভব নয়।’
দামদর
এদিকে মসলার বাজারে দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৮০ টাকায়। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৬০-৮০ টাকা। আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকায়।
শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিতে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ২০০ টাকা। হলুদ দেশি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়, আগের সপ্তাহে একই দরে বিক্রি হয়েছে হলুদ।
আদা দেশি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়, আর আমদানি করা আদা মান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায়। জিরা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা, এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ২০০ টাকা, ধনে ১৪০ টাকা, তেজপাতা ২০০ টাকা কেজিতে।
মাছের বাজারে রুই বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা কেজি, তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি, কাতল ৩০০ টাকা কেজি, শিং ৪০০ টাকা কেজি, পাঙাশ ১৪০ টাকা কেজি, কাচকি ৪০০ টাকা কেজি, চাষের কই ২৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৪৫০ টাকা কেজি।
ব্রয়লারের মুরগির বাজারে এখনও সেই উত্তাপ পাওয়া যায়। এক মাস আগেও যে ব্রয়লারের মুরগি পাওয়া যেত ১৫০ টাকা কেজিতে, এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজিতে। দেশি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে ৩২০ টাকা।
সবজির বাজারে শুক্রবারকেন্দ্রিক শসা, টম্যাটোর বাড়তি চাহিদা থাকে। ফলে স্বাভাবিক সময়ে যে দামে বিক্রি হয় এই পণ্যগুলো, এদিন একটু বেশি দামই হাঁকেন বিক্রেতারা।
বাজারে পাকা টম্যাটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, কাঁচা টম্যাটো ১০০ টাকা। আর শিম বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে।
ছোট আকারের ফুলকপি কিনতে হবে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে।
এর মধ্যে পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। আর লালশাক ১৫ থেকে ২০ টাকায়। ডাটাশাকের আঁটি ১৫ টাকা আর বড় আকারের ডাটা আঁটি পাওয়া যাবে ২৫ টাকায়। লাউশাক পাওয়া যাবে ৪০ টাকা আঁটি, মুলাশাকের আঁটি ২০ টাকা জোড়া।
এ ছাড়া চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, উস্তে ৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা, বেগুন কেজি ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচা মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা আর ধনে পাতা ১১০ টাকায়।
গতকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে বন্ধ থাকার পর আজ রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে মেট্রোরেল। তবে মেট্রোতে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না।
রোববার সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, আজ (রোববার) প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলছে। আগামীকাল সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে।
গত মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না। মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে যাত্রীদের যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রীর কাছে কাঁচা বা রান্না করা মাংস পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ আটকে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মীদের এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় কোরবানির দৃশ্য চোখে পড়েছে।
গতকাল শনিবার ঈদের প্রথম দিন ব্যস্ততা ও চাপ সামলাতে না পেরে কিংবা কসাই সংকটের কারণে যারা কোরবানি করতে পারেননি আজ রোববার ঈদের দ্বিতীয় দিনে তারা পশু কোরবানি করছেন। নগরীর পুরান ঢাকা, লালবাগ, টিকাটুলী, মুগদা এবং বাসাবো এলাকায় সকাল থেকেই কোরবানির পশু জবাই ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের ব্যস্ত দৃশ্য চোখে পড়েছে।
পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি বাসার সামনে পলিথিন টানিয়ে পশু কোরবানির প্রস্তুতি চলছে। আবার অনেকেই ইতোমধ্যে পশু কোরবানি সম্পন্ন করেছেন। তার কিছু দূরেই রাস্তার পাশে কয়েকজন তরুণ মাংস কাটছেন, পাশে দাঁড়িয়ে কসাই নির্দেশনা দিচ্ছেন। কিছু দূরে শিশু-কিশোররা দাঁড়িয়ে কোরবানির দৃশ্য দেখছে। লালবাগের বউবাজার, টিকাটুলীর জনবহুল গলি, মুগদা ও বাসাবোর অভ্যন্তরীণ বেশকিছু সড়কেও একই চিত্র দেখা যায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল ঈদের দিন কসাই সংকট এবং সময় ও প্রস্তুতির অভাবে কোরবানি করতে না পেরে অনেকেই আজ করছেন। কারও কারও গরু হাট থেকে বাড়ি পৌঁছেছে ঈদের দিন রাতে। আবার কেউ কেউ ইচ্ছে করেই ভিড় এড়িয়ে আজ কোরবানি করছেন, যাতে সময় নিয়ে কাজ করতে পারেন।
এদিকে আজও পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় সিটি করপোরেশনের তৎপরতা দেখা গেছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, কোরবানির দ্বিতীয় দিনেও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলছে। ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, যেসব এলাকায় আজ কোরবানি হচ্ছে, সেখানে আমরা নির্ধারিত পয়েন্টে কর্মী পাঠিয়ে বর্জ্য অপসারণ করছি। ঈদের তিন দিনই আমরা মাঠে থাকব।
ধর্মীয় দিক থেকে ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ১১ জিলহজও কোরবানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের বর্ণনায় এ দিনটি মর্যাদাপূর্ণ বলে উল্লেখ রয়েছে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন হলো কোরবানির দিন, এরপরের দিনটি। তাই অনেকেই আজও কোরবানি করছেন। শরিয়ত অনুযায়ী ১০ থেকে ১২ জিলহজ, মোট তিন দিন কোরবানি করার বিধান রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে যে কোনো দিন কোরবানি দেওয়া বৈধ, তবে প্রথম দিন কোরবানি করা সবচেয়ে উত্তম। সময়মতো কোরবানি না হলে তার পরিবর্তে সদকা করারও নির্দেশ রয়েছে।
ঈদুল আজহায় এবার টানা ১০দিন ছুটিতে রাজধানী ছেড়ে নিজ বাড়িতে ঈদ কাটাতে গেছেন অনেকে। অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন ঢাকায় মানুষজন অনেক কম। তাছাড়া, যানবাহনও কম। তবে কম মানুষ কিংবা কম যানবাহনের ধোঁয়াও ঢাকার বাতাসের মানে তেমন পরিবর্তন আনতে পারেনি।
আজ রোববার ঈদের দ্বিতীয় দিনে অনেকটা ফাঁকা ঢাকার বাতাস সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১১টা ২৮ মিনিটে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ১৩০, এই স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ৫ম স্থানে অবস্থান করছে ঢাকা। তাই ঢাকায় অবস্থানরত সংবেদনশীলরা রয়েছেন ঝুঁকিতে।
প্রথমত, ঢাকায় মানুষ কম এখন, যান চলাচলও নেই তেমন। আবার মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাতও হয়েছে টানা কয়েকদিন। তা সত্ত্বেও বাতাসের মানের অবনতি নিয়ে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিন ১৬৬ স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে চিলির সান্তিয়াগো, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি ও যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েট। শহর দুটির স্কোর ১৫৩ ও ১৪৫।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে ‘মাঝারি’, আর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
একিউআই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে একযোগে কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কোরবানির বর্জ্য দ্রুত অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শন করার জন্য কলাবাগান শিশু পার্ক সংলগ্ন সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) পরিদর্শন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এ সময় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মানিত সচিব জনাব মো: রেজাউল মাকছুদ জাহেদী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা বলেন, শহরে কোরবানির বর্জ্য পরিষ্কার করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সময়মতো বর্জ্য অপসারণ না হলে দুর্গন্ধ ছড়ায়, এমনকি রোগ-জীবাণু সৃষ্টি হতে পারে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ১২ ঘন্টা সময়ের মধ্যেই সকল বর্জ্য অপসারণ করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে উপদেষ্টা বলেন এ বছর কোরবানির বর্জ্যের কারণে নগরবাসীর ঈদ আনন্দ বাঁধাগ্রস্ত হবে না।
কোরবানির বর্জ্য অপসারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রায় ১০০০০ হাজারের অধিক জনবল মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। ২০৭টি ডাম্প ট্রাক, ৪৪টি কম্পেক্টর, ৩৯টি কন্টেইনার ক্যারিয়ার, ১৬টি পে-লোডারসহ বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমে ৭৫টি ওয়ার্ডে মোট ২০৭৯টি যানবাহন নিয়োজিত রয়েছে।
কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম ব্যবস্থাপনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জরুরি পরিচালন কেন্দ্রে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপিত হয়েছে এবং সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।
পরিদর্শনকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টার একান্ত সচিব জনাব মো: আবুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মোঃ মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
কোরবানিঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে শসা ও কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। শসার দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আর কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। তবে ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা কমেছে। এছাড়া বেশিরভাগ সবজি ও মুরগির দাম অপরিবর্তত রয়েছে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতারা শসা বিক্রি করছেন ৬০ থেকে ৯০ টাকা প্রতি কেজি। দুদিন আগেও ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে শসা। এছাড়া কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ আজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। তবে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিমের দাম কমে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা হয়েছে আজ।
‘কোরবানির ঈদের সময় শসার চাহিদা বেশি থাকে, তাই দামও বেড়ে যায়। এবারও তাই হয়েছে। আড়তে গিয়ে তো আমরা শসা খুঁজেই পাচ্ছিলাম না’— শসার দাম বাড়ার কারণ হিসেবে রামপুরার এক ব্যবসায়ী এমন মন্তব্য করেন।
রামপুরার ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দুদিন আগেও আমরা শসার কেজি ৪০ টাকা বিক্রি করেছি। আজ আড়তেই দেশি শসার কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। হাইব্রিড শসার দাম একটু কম আছে। ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি কিনে তো আর ৯০ টাকার নিচে বিক্রি করা যায় না। তাই ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করছি।’
একই বাজারের ব্যবসায়ী মো. মিলন বলেন, ‘কোরবানির ঈদের সময় সব বাড়িতেই মাংস রান্না হয়। মাংসের সঙ্গে সালাদ সবার প্রিয়। তাই কোরবানির ঈদের সময় কাঁচা মরিচ, শসা, লেবু ও টমেটোর চাহিদা বেশি থাকে। চাহিদা বেশি থাকায় এসব পণ্যের দাম বেড়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘বাজারে লেবু ও টমেটোর সরবরাহ ভালো। তাই এ দুটি পণ্যের দাম বাড়েনি। তবে কাঁচা মরিচ ও শসার সরবরাহ কম। তাই দামও বেড়েছে। গতকাল শসার কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি করেছি, আজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা কাঁচা মরিচ আজ ১২০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। কারণ, আমাদেরই কিনতে হয়েছে অনেক বেশি দামে।’
খিলগাঁওয়ে শসা কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গত মঙ্গলবার শসা কিনেছি ৪০ টাকা কেজি দরে, আজ এক লাফে ৯০ টাকা হয়ে গেছে। হুট করে এভাবে দাম বাড়া ঠিক না। যারা বাজার তদারকির দায়িত্বে আছেন তাদের বিষয়টা দেখা উচিত।’
এদিকে দুদিন আগে ১৩০ টাকা ডজন ডিম বিক্রি হলেও আজ ১২০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও আলু, রসুন, পেঁয়াজ, আদা আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে দুদিনে ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা কমেছে। ডিমের চাহিদা কম থকায় এই দাম কমেছে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ডিমের দাম আরও একটু কমতে পারে। কারণ শনিবার কোরবানি হওয়ার পর সবার ঘরে ঘরেই মাংস থাকবে। দুই-তিনদিন মানুষ মাংস খাবে বেশি। এ সময় অন্য খাবারের চাহিদা কম থাকবে। তবে ঈদের দুই-তিনদিন পর ডিম এবং কাঁচা সবজির দাম বেড়ে যেতে পারে।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ সবজি। পটল, চিচিঙ্গা ও ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। কাঁকরোল, বরবটি, কচুর লতি, করলা, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। এছাড়া পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি।
মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনে স্থায়ী ২টিসহ মোট ২২টি পশুর হাটে শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে। পশুর হাটগুলোতে দামও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে বলে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার থেকে রাজধানীর দুই সিটিতে পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে পশুর হাট বসেছে। পবিত্র ঈদুল আযহার চার দিন আগে থেকে রাজধানীতে পশুর হাট বসে। ঈদের দিনও কোরবানির পশু কেনাবেচা হয়। সব মিলিয়ে পাঁচ দিন হাটগুলো জমজমাট থাকে। মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিক হাট বসলেও মূলত কয়েকদিন আগে থেকেই হাটগুলোতে আসতে শুরু করেছে পশুর পিকআপ ও ট্রাক।
ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত হাট থাকলেও এখন আর ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। হাটে ঘুরে ফিরে দর-দামে মিলে গেলেই নিয়ে নিচ্ছেন পছন্দের পশুটি।
ঈদের আর মাত্র মাঝে একদিন বাকী। রাজধানীজুড়ে মানুষ ও কোরবানির পশুতে একাকার। কয়েকদিন লাগাতার বৃষ্টির কারণে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং বেপারীদের জন্য হাটের কাদা কিছুটা অস্বস্তির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে।
ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট সংলগ্ন খালি জায়গায় বসেছে একটি পশুর হাট। এই পশুর হাটে পর্যাপ্ত গরু, ছাগল, ভেড়া। শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে। গতকাল পর্যন্ত পশুর দাম একটু কম থাকলেও আজ দাম কিছুটা চড়া। তবে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মতে দাম এখনো সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।
বুধবার হাটে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হাট ভর্তি বিভিন্ন জাতের দেশীয় ছোট, মাঝারি ও বড় জাতের অসংখ্য গরু উঠেছে, হাটে ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে, পশুর হাটে আসা অধিকাংশ ক্রেতাই স্থানীয়ভাবে খামারে লালন-পালন করা দেশি গরুই পছন্দ করছেন। অনেক ক্রেতা মনে করছেন শেষ দিনে দাম কমে যাবে। তখন কোরবানির পশু তারা সস্তায় কিনবেন। তবে বেশিরভাগ ক্রেতাই আজকের মধ্যেই পশু কিনে নেবেন বলে বাসস’কে জানান।
এই হাটে গরু নিয়ে আসা পাইকার মোস্তফা মাতাব্বর, মো. রাসেল ও রফিক নামে তিনজন গরু ব্যবসায়ী বাসস’কে বলেন, এবছর পশুর হাটে ভারতীয় গরু নেই। হাটে যেসব ক্রেতা আসছেন তারা দেশীয় জাতের এবং স্বাভাবিক খাবার দিয়ে খামারে লালন-পালন করা গরুই বেশি পছন্দ করছেন। হাটে গরুর সরবরাহ বেড়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ হাটে এলেও দর-দাম করেই তাদের পছন্দের গরু কিংবা ছাগলটি ক্রয় করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। সেই সাথে বাজারে বড় গরুরও কমতি নেই। তবে ছোট ও মাঝারি জাতের গরুর চাহিদা বেশি।
আমুলিয়া হাটে পাবনা থেকে গরু নিয়ে আসা সালাম বেপারী বলেছেন, পরিবহনে করে গরুর নিয়ে আসা, হাটে তোলা, খাওয়ানো ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলা- এই পুরো সময়টা জুড়ে তাদের হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়া সব সময় গরুর দড়ি ধরে থাকা, তাকে সামলানো এবং গরুর গোবর তোলাসহ নানা কারণে হাতও পরিচ্ছন্ন রাখা যাচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম উত্তর শাহজাহানপুর রেলগেট সংলগ্ন হাটে এসেছেন গরু কিনতে, তিনি বাসস’কে বলেছেন, আগামী ৭ জুন পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আযহা। তাই চেষ্টা করছি আজকের মধ্যেই পছন্দের গরুটি কিনে নিতে। তিনি জানান, ‘যতটুকু ঘুরে দেখেছি, আমার কাছে মনে হয়েছে- এবার গরুর দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু কমই আছে।’
গরুর পাশাপাশি হাটে প্রচুর ছাগল, ভেড়াও উঠেছে। ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে কোরবানির একটি ছাগল ক্রয় করা সম্ভব।
এই হাটের ক্রেতা মিজানুর রহমান বাসস’কে জানান, রাজধানীর গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন শুধু ছোট সাইজের গরুগুলো বিক্রি হচ্ছে বেশি। এছাড়া বাজারে প্রচুর পরিমাণ ছাগলও উঠেছে। বেচাকেনাও বেশ জমে উঠেছে। ছোট খাসির দাম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। মাঝারি খাসি ২০-২৫ হাজার এবং বড় জাতের খাসি ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
রাজধানীর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব সংলগ্ন মাঠেও পর্যাপ্ত পশু এসেছে। হাটের জন্য নির্ধারিত স্থান ছাড়াও অলিগলি পর্যন্ত গরু-ছাগল চলে এসেছে। এই হাটে গরু কিনতে এসেছেন তরিকুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা। তিনি জানান, এবার হাটে প্রচুর কোরবানির পশু এসেছে। ছোট, বড়, মাঝারি সব প্রজাতির গরু, ছাগল এসেছে, দামও অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু কম।
আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোরবানির পশুর হাট ঘুরে দেখে যায়, কোরবানির পশু রাখার জন্য তৈরি করা হচ্ছে প্যান্ডেল। বিশাল মাঠ জুড়ে প্যান্ডেল তৈরিতে বাঁশ, রশি ও ত্রিপল টানানো হয়েছে। মাঠ ঘুরে দেখা যায় গরুর ব্যাপারী ও শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গাবতলী পশুর হাটে ভারতের রাজস্থান থেকে আনা উট তোলা হয়েছে। উট দেখতে ভিড় করছে দর্শনার্থী ও ইউটিউবাররা।
মেরুল বাড্ডা কাঁচা বাজার সংলগ্ন পশুর হাটের ইজারাদার মাহমুদুল হাসান বাসস’কে জানান, হাটে এবার দেশি গরুর প্রাধান্যই বেশি। হাটে গরুতে সয়লাব হয়ে গেছে। প্রচুর পরিমাণ গরু উঠেছে। তবে, পশুর হাটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। আশা করছি, আজ ও শুক্রবার আবহাওয়া ভালো থাকলে বিকেল থেকে হাটে পশুর বেচাকেনা তুলনামূলকভাবে বাড়বে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কোরবানির পশু আসা অব্যাহত রয়েছে। হাটে নিরাপত্তার কোনো অভাব নেই বলে জানান তিনি।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বাসস’কে জানান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় গাবতলীর স্থায়ী হাটসহ ১৩টি হাট এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় সারুলিয়া স্থায়ী পশুর হাটসহ ৯টি হাট বসেছে। তবে এ বছর আদালতের নির্দেশনার কারণে আফতাবনগর ও মেরাদিয়ায় হাট বসেনি।
ঢাকা উত্তরে অস্থায়ী ১২টি হাটের মধ্যে রয়েছে- ভাটারা সুতিভোলা খাল সংলগ্ন খালি জায়গা, উত্তরা দিয়াবাড়ীর ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টরের পাশের বউ বাজার এলাকার খালি জায়গা, মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, মোহাম্মদপুরের বছিলায় ৪০ ফুট সড়কের পাশের খালি জায়গা, ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদ্রাসা থেকে রানাভোলা স্লুইসগেট পর্যন্ত খালি জায়গা, অঞ্চল-৮ এর আওতাধীন ৪৪ নম্বর ওয়ার্ড কাঁচকুড়া বাজার সংলগ্ন রহমাননগর আবাসিক এলাকার খালি জায়গায়, খিলক্ষেত বাজার সংলগ্ন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এর নিচের খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের খালি জায়গা, মস্তুল চেকপোস্ট এলাকা, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল-৩ এর আওতাধীন ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব হাজি পাড়ার ইকরা মাদ্রাসার পাশের সংলগ্ন খালি জায়গা, ডিএনসিসি আওতাধীন কর্পোরেশনের অঞ্চল-৩ এর আওতাধীন ২১ নম্বর ওয়ার্ডের মেরুল বাড্ডা কাঁচা বাজার সংলগ্ন খালি জায়গা এবং মিরপুর কালশী বালুর মাঠের খালি জায়গা।
ঢাকা দক্ষিণে অস্থায়ী ৮টি হাটের মধ্যে রয়েছে- উত্তর শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘ ক্লাবের খালি জায়গা, পোস্তগোলা শ্মশান ঘাটের পশ্চিম পাশে খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ ও ছনটেক মহিলা মাদ্রাসার খালি জায়গা, সাদেক হোসেন খোকা মাঠের দক্ষিণ পাশের খালি জায়গা ও ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল, রহমতগঞ্জ ক্লাবের খালি জায়গা, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গা, আমুলিয়া আলীগড় মডেল কলেজের পাশের জায়গা এবং ইন্সটিটিউট অব লেদার টেকনোলজি মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা।
আগামী ৭ জুন (শনিবার) সারা দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। ঈদুল আজহায় প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পাঁচটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞিপ্তিতে জাতীয় মসজিদে ঈদ জামাতের সময়সূচিসহ বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
ফাউন্ডেশনের সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা শায়লা শারমীনের সই করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায় এবং পরবর্তী চারটি জামাত যথাক্রমে সকাল ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং বেলা পৌনে ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতি বছরের মতো এবারও জামাতগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন দেশের খ্যাতনামা আলেমরা।
প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন যাত্রাবাড়ীর তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. খলিলুর রহমান মাদানী এবং মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।
দ্বিতীয় জামাতে (সকাল ৮টা) ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মাওলানা আবু সালেহ পাটোয়ারী এবং মুকাব্বির থাকবেন জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. নাসির উল্লাহ।
তৃতীয় জামাতে (সকাল ৯টা) ইমামতির দায়িত্বে থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদ ও সংকলন বিভাগের সম্পাদক ড. মুশতাক আহমদ এবং মুকাব্বির থাকবেন জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. বিল্লাল হোসেন।
চতুর্থ জামাতে (সকাল ১০টা) ইমামতির দায়িত্বে থাকবেন ফাউন্ডেশনের মুফতি মো. আব্দুল্লাহ এবং মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররমের খাদেম মো. আমির হোসেন।
সবশেষ জামাতে (সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট) ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন এবং মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররমের খাদেম মো. জহিরুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, কোনো ইমাম অনুপস্থিত থাকলে তার পরিবর্তে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী লাইব্রেরিয়ান মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম ইমামতির দায়িত্ব পালন করবেন। আর বিকল্প মুকাব্বির হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন খাদেম মো. রুহুল আমীন।
মন্তব্য