করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশকে আরও ২৫ মিলিয়ন বা আড়াই কোটি ডলার অর্থ সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির মাধ্যমে এ সহায়তা দেয়া হবে।
বাংলাদেশ যেন জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা ও অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারে এবং টিকা নিরাপদে সংরক্ষণ, পরিবহন ও ব্যবস্থাপনায় কোল্ড চেইন সরঞ্জাম কিনতে পারে, সে জন্য এ অর্থ দেয়া হচ্ছে।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বুধবারের বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বাংলাদেশকে টিকা কার্যক্রম সম্প্রসারণে সহায়তা করার পাশাপাশি গুরুতর অসুস্থ রোগীদের আরও কার্যকরভাবে চিকিৎসা দেয়ায় স্বাস্থ্যসেবা দানকারীদের সক্ষম করে তুলবে। একই সঙ্গে এ অর্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে সেবার মান বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সরকার করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ১২ কোটি ১০ লাখ ডলারের বেশি অর্থ সহায়তা দিয়েছে। বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাংলাদেশ সরকার ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বলেন, নতুন আর্থিক সহায়তা বাংলাদেশকে এ বছরের শেষ নাগাদ ৪০ শতাংশ মানুষকে টিকাদানের লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করবে।
মাঙ্কি বা বানরের সঙ্গে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ার তেমন কোনো সম্পর্ক না থাকলেও কিছু দেশে বানরকেই এ জন্য দায়ী করা হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে আর কোনো উপায় না পেয়ে এবার ভাইরাসটির নাম বদলে দিতে চায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও)।
দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের জন্য অবিতর্কিত নাম বাছাইয়ের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। এ নিয়ে ওয়েবসাইটে দেয়া যাচ্ছে পরামর্শ।
জেনেভায় সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ফাদেলা চাইব এ কথা জানিয়েছেন বলে মঙ্গলবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ফাদেলা চাইব বলেন, মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসের নামকরণ আগেই হয়েছে। এখন অমর্যাদাকর নয় এমন একটি নাম খুঁজছি আমরা।
তিনি বলেন, কোনো জাতিগত গোষ্ঠী, অঞ্চল, দেশ বা প্রাণীর প্রতি যেন কোনো অপরাধ করা না হয়, সে জন্যই ভাইরসাটির নতুন নাম খোঁজা হচ্ছে।
সম্প্রতি মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের জন্য বানরকে দায়ী করে এই প্রাণী নিধনের খবর মিলেছে ব্রাজিলসহ অনেক দেশে। এরপরই ভাইরাসের নতুন নামকরণ নিয়ে ভাবতে শুরু করে স্বাস্থ্য সংস্থা।
১৯৫৮ সালে ডেনমার্কে গবেষণার জন্য রাখা বানরের মধ্যে প্রথম শনাক্ত হয় এক ভাইরাস, যার নাম দেয়া হয় মাঙ্কিপক্স।
এত বছর ধরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ততটা গুরুতর না হলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে এই ভাইরাস নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দেয় সম্প্রতি।
গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে মাঙ্কিপক্সকে বিশ্বজুড়ে গণস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও। সবশেষ করোনাসহ ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সাতবার বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সংস্থাটি।
চিকেন পক্সে আক্রান্ত হলে জ্বর, মাথাব্যথা, পেশিব্যথা এবং শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। চিকেন পক্স পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য। কয়েক দিনের মধ্যেই আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যায়। বর্তমানে ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কিপক্সের সঙ্গে গুটি বসন্ত ও চিকেন পক্স উভয়েরই মিল রয়েছে।
মাঙ্কিপক্সে প্রাণহানির সংখ্যা খুবই কম। এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ ঘটলেও তা সীমিত। কাঠবিড়ালি, গাম্বিয়ান ইঁদুর, ডর্মিসের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির বানরসহ কিছু প্রাণীর মধ্যে মাঙ্কিপক্স পাওয়া গেছে।
তবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া কঠিন। এর সংক্রমণ সাধারণত ফ্লুইড ট্রান্সফার, ঘা, দূষিত পোশাক বা দীর্ঘস্থায়ী মুখোমুখি যোগাযোগ কিংবা সহাবস্থানের মাধ্যমে ঘটে, যা শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়।
আরও পড়ুন:শনাক্তের হার বিবেচনায় দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত। সংক্রমণের নিম্নমুখীতার মধ্যেও দেশে গত একদিনে ২৫৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তবে মৃত্যু হয়েছে একজনের। আর শনাক্তের হার আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক শূন্য নয়ে।
রোববারও শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ৩২। একদিনের ব্যবধানে তা কমেছে দশমিক ২৩ ভাগ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সোমবার পাঠানো বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লাখ ৯ হাজার ১২৯ জন। আর একজনের মৃত্যুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৯ হাজার ৩১৪ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড থেকে সেরে উঠেছেন ৪১৫ জন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৫১ হাজার ৭৩৭ জন।
৬ হাজার ৩৩৬টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন শনাক্ত ২৫৯ জনের মধ্যে ১৫৩ জনই ঢাকার বাসিন্দা। আর যিনি মারা গেছেন তিনি গাজীপুরের বাসিন্দা। মারা যাওয়া এই নারীর বয়স ৬০-৭০ বছরের মধ্যে। তিনি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণের পর ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তা নিয়ন্ত্রণে আসে। মার্চের শেষে আবার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। সেটি নিয়ন্ত্রণে আসে গত ৪ অক্টোবর।
গত ২১ জানুয়ারি দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ দেখা দেয়। প্রায় তিন মাস পর ১১ মার্চ নিয়ন্ত্রণে আসে। তিন মাস করোনা স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতিতে ছিল। এরপর ধারাবাহিকভাবে বাড়তে শুরু করে সংক্রমণ।
তবে করোনার চতুর্থ ঢেউ সামলে ভাইরাসটিকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন:নবজাতকের জন্য বিশেষ সেবা ইউনিট চালুর মাধ্যমে শিশু মৃত্যু কমিয়ে এসডিজির লক্ষ্য অর্জনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মানিকগঞ্জে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের পুরনো ভবনে শনিবার নবজাতক শিশুর জন্য বিশেষ সেবা ইউনিটের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে ভূমিষ্ঠ হওয়া এবং বিভিন্ন রোগ ও অল্প ওজন নিয়ে জন্ম নেয়া শিশুদের পরিচর্যায় হাসপাতালে বিশেষ একটি ব্যবস্থা দরকার হয়। আর সেই ব্যবস্থাই হলো নবজাতক শিশুর বিশেষ সেবা ইউনিট (স্ক্যানু)। এখানে কিছুদিন রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। এর মাধ্যমে শিশুটির জীবন রক্ষা পায়।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে সদ্যোজাত প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে ৩২টির মৃত্যু হয়। এসডিজির লক্ষ্য অর্জন করতে হলে এই সংখ্যা ১২টিতে নামিয়ে আনতে হবে। সেই লক্ষ্যে মানিকগঞ্জে নবজাতক শিশুর বিশেষ সেবা ইউনিট (স্ক্যানু) স্থাপন করা হয়েছে।’
‘ইতোমধ্যে দেশের ৫০টি হাসপপাতালে স্ক্যানু স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলা হাসপাতালে এটি স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে শিশু মৃত্যুর হার কমে আসবে এবং আমাদের এসডিজি অর্জন সহজ হবে।’
মায়েদের উদ্দেশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সদ্যোজাত দুর্বল ও অসুস্থ শিশুকে দ্রুত স্ক্যানুতে নিয়ে আসুন। তাহলে শিশুটির সুচিকিৎসা হবে এবং জীবন রক্ষা পাবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, মহাপরিচালক (এমসিটিবি) প্রফেসর ডা. শাকিল আহম্মেদ, মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাকির হোসেন ও সিভিল সার্জন মোয়োজ্জেম আলী খান চৌধুরীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:জোলজেন্সমা জিন থেরাপির ওষুধ নিয়ে লিভার জটিলতায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই ওষুধকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ওষুধ বলা হয়ে থাকে।
ওষুধ প্রস্তুতকারক সুইস ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান নোভারটিস বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, দুই শিশুর মেরুদণ্ডের পেশীর জটিলতার (অ্যাট্রোফি, বংশগত রোগ) কারণে তাদের জোলজেন্সমা জিন থেরাপি দেয়া হয়েছিল।
এ ওষুধে যেহেতু লিভারের ক্ষতির ঝুঁকি থাকে, তাই ওই দুই শিশুকে লিভারের ক্ষতি রোধ করতে কর্টিকোয়েস্টেরয়েড নামের হরমোনও দেয়া হয়। এরপরেও এই দুই শিশুর মৃত্যু হয়।
তবে এই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছিল কীনা তা নিশ্চিত হয়া যায়নি।
দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনার ঘটেছে রাশিয়াতে ও কাজাখস্তানে।
সুইস প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ওষুধের বাজার ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের এই বিষয়ে অবগত করা হয়েছে।
জোলজেন্সমা এমন একটি ওষুধ যা প্রতি রোগীর জন্য ২০ লাখ ডলার ব্যয় হয় এবং এই ওষুধটি এই পর্যন্ত ২ হাজার ৩০০ রোগীর ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে।
এই ওষুধটি যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৯ সালে দুই বছরেরও কম বয়সী শিশুদের প্রয়োগের অনুমোদন পায় এবং ২০২০ সালে কিছু শর্তসাপেক্ষে ইইউতেও অনুমোদন পেয়েছে। ওষুধটি ইনজেকশন দিয়ে শিরায় প্রয়োগ করা হয়।
আরও পড়ুন:দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এখন অনেকাংশে নিয়ন্ত্রিত। সংক্রমণের নিম্মমুখীতার মধ্যেও দেশে গত এক দিনে ২১৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে দুই জনের। আর শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৭৫।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে।
নতুন শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লাখ ৮ হাজার ৫০০ জন।
আর দুইজনের মৃত্যুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৯ হাজার ৩১২ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড থেকে সেরে উঠেছেন ৩৫০ জন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৩৮৭ জন।
নতুন শনাক্ত ২১৮ জনের মধ্যে ১৩০ জন ঢাকার বাসিন্দা। মারা যাওয়া দুই জনের একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার, অপরজন বগুড়ার বাসিন্দা।
মৃতদের মধ্য একজন পুরুষ এবং একজন নারী। তাদের প্রত্যেকেই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণের পর ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তা নিয়ন্ত্রণে আসে। মার্চের শেষে আবার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। সেটি নিয়ন্ত্রণে আসে গত ৪ অক্টোবর।
গত ২১ জানুয়ারি দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ দেখা দেয়। প্রায় তিন মাস পর ১১ মার্চ নিয়ন্ত্রণে আসে। তিন মাস করোনা স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতিতে ছিল। এরপর ধারাবাহিকভাবে বাড়তে শুরু করে সংক্রমণ।
তবে করোনার চতুর্থ ঢেউ সামলে ভাইরাসটিকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন:স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে তথ্য ছড়িয়ে পড়া এবং অসংখ্য মামলার মুখোমুখি হওয়ার পর এবার বিশ্বজুড়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক স্বাস্থ্যসেবা পণ্য উৎপাদক প্রতিষ্ঠান জনসন অ্যান্ড জনসনের শিশুদের জন্য তৈরি ট্যালকম পাউডার।
উৎপাদক দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অবশ্য আগেই বন্ধ হয়েছে এই পণ্য বিক্রি, এবার অন্য দেশেও এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। ২০২৩ সাল থেকে এই পাউডার আর বাজারে মিলবে না।
সারাবিশ্বের পরিস্থিতি মূল্যায়নের প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
বৃহস্পতিবার জনসন অ্যান্ড জনসনের বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী বাজার মূল্যায়নের অংশ হিসেবে কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে এই পাউডার বিক্রি করা হয়েছে৷
এর আগে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জনসনের ট্যালকম পাউডারের একটি নমুনা পরীক্ষা করলে তাতে কার্সিনোজেনিক ক্রিসোটাইল ফাইবারের অস্তিত্ব মেলে। এটি এক ধরনের অ্যাসবেস্টস, যা ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে।
ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বাজার থেকে ট্যালকমভিত্তিক বেবি পাউডার প্রত্যাহার করে নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
জনসন অবশ্য দাবি করে, ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার পর ওই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তাই বাধ্য হয়েই পণ্য প্রত্যাহার করা হয়।
জনসন কোম্পানির শিশুদের তৈরি সাবান, শ্যাম্পু, লোশন ও পাউডারসহ বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশেও ব্যাপক জনপ্রিয়। অনেকে নিরাপদ মনে করেই এসব পণ্য কেনেন। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপে যে পাউডার বিক্রি হয় তা মূলত তৈরি হয় ভারতে।
বেবি পাউডার বিক্রি করতে গিয়ে প্রায় ৩৮ হাজার মামলার মুখোমুখি হতে হয়েছে জনসনকে। গুনতে হয়েছে জরিমানাও। তবে বরাবরের মতো এবারও অভিযোগ অস্বীকার করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
জনসন বিবৃতিতে বলেছে, কয়েক দশকের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এই পাউডারকে নিরাপদ এবং অ্যাসবেস্টস মুক্ত বলে প্রমাণ করেছে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে রয়টার্সের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭১ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে বেশ কয়েক দফা পরীক্ষায় অ্যাসবেস্টসের উপস্থিতি ধরা পড়লেও তা গোপন করে বিক্রি চালিয়ে গেছে জনসন অ্যান্ড জনসন।
১৮৯৪ সাল থেকে বিক্রি শুরু হওয়া জনসনের বেবি পাউডার বিশ্বজুড়ে বহু পরিবারের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
দেশে করোনার বুস্টার ডোজ টিকা কার্যক্রমে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা পিছিয়ে রয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণে ছেলে-মেয়ে প্রায় সমান থাকলেও বুস্টার ডোজে মেয়েরা পিছিয়ে রয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে অনেক মেয়ে বুস্টার ডোজ নিচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ৫ থেকে ১১ বছরের শিশুদের করোনা টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এ সময় পরীক্ষামূলকভাবে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী ১৬টি শিশুকে করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘টিকা কার্যক্রম পরিচালনায় আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম হয়েছি। সারাবিশ্ব আমাদের প্রশংসা করছে। অনেক দেশ এখনও ১০ থেকে ৱ১৫ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পারেনি। কিন্তু বাংলাদেশ টিকা দিয়ে মানুষকে সুরক্ষায় নিয়ে এসেছে। মৃত্যুও শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। আমরা একদিনে এক কোটি বিশ লাখ টিকা দিয়েছি। টিকায় আমাদের সক্ষমতা আছে। বিশ্ববাসী জানে আমরা টিকা দিতে পারি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই একটা চেইন মেইনটেইন করে টিকা দিয়েছি। ঝুঁকি বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্বদের আগে টিকা দিয়েছি। ফ্রন্টলাইনারদেরও আগে দিয়েছি। সবশেষে এখন শিশুদের টিকা হাতে পেয়েছি। তাই কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি।’
শিশুদের টিকাদান প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিকের দুই কোটি ২০ লাখ শিশুকে টিকা দিতে হবে। এই শিশুদের জন্য প্রায় ৪ কোটি ৪০ লাখ টিকা লাগবে। ইতোমধ্যে ৩০ লাখের মতো টিকা পাওয়া গেছে। বাকি টিকা যুক্তরাষ্ট্র সরকার কোভ্যাক্সের মাধ্যমে দেবে বলে নিশ্চিত করেছে।
‘এই টিকা শিশুদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। খুবই নিরাপদ। যুক্তরাষ্ট্রে এই টিকা দেয়া হচ্ছে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর অনুমোদন দিয়েছে। যে টিকাগুলো এসেছে সেগুলো দুই মাসের ব্যবধানে দিতে হবে। ২৫ আগস্ট থেকে পুরোদমে শিশুদের টিকা দেয়া হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিশুরা এমনিতেই করোনা থেকে নিরাপদ ছিল। এখন পর্যন্ত দেশে ২৯ হাজার লোক মারা গেছেন। তাদের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশই ৫০ বছরের বেশি বয়সী। এই তালিকায় তরুণদের সংখ্যাও খুবই কম। তবে দেশে করোনায় ৫ থেকে ১১ বছরের কেউ মারা গেছে এমন খবর এখনও শোনা যায়নি।’
বক্তব্য শেষে মন্ত্রী শিশুদের টিকা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি রাজেন্দ্র বোহরা, ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট প্রমুখ।
শিশুদের মধ্যে প্রথম টিকা নিল নীধি নন্দিনী: ৫ থেকে ১১ বছরের শিশুদের মধ্যে করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে আবুল বাশার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নীধি নন্দিনী। বৃহস্পতিবার বিআইসিসিতে শিশুদের করোনা টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের উপস্থিতিতে প্রথম টিকা নেয় এই শিক্ষার্থী। এরপর একে একে অন্য শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হয়।
টিকা নেয়া শিক্ষার্থীরা হলো- দ্বিতীয় শ্রেণির সৌম্য দ্বীপ দাস, চতুর্থ শ্রেণির মো. আবু সায়েম ফাহিম, পঞ্চম শ্রেণির বিকাশ কুমার সরকার, তৃতীয় শ্রেণির সাইমুন সিদ্দিক, তৃতীয় শ্রেণির মো. আরাফাত শেখ, আকিব আহমেদ সায়ন, চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহমুদ হোসেন ও আল-আমিন, তৃতীয় শ্রেণির শামীমা সিদ্দিকা তাসিন, রুপা আক্তার, হুমায়রা আফরিন তামান্না, চতুর্থ শ্রেণির তাসলিমা আক্তার, সানজিদা আক্তার, মোছা. নুসরাত জাহান আরিন এবং প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী হীরা আক্তার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা টিকা ব্যবস্থপনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক বলেন, ‘দেশে বর্তমানে শিশুদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ফাইজারের করোনা টিকা মজুত আছে ৩০ লাখ। এ মাসের ২৮ তারিখের মধ্যে আরও ৭০ লাখ টিকা আমাদের হাতে আসবে। আমরা একসঙ্গে অনেক বেশি করোনা টিকা আনব না। চাহিদা দেখেই টিকা আনা হবে। পরবর্তী সময়ে ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হবে শিশুদের প্রথম ডোজের টিকা কার্যক্রম। এর দুই মাস পর দেয়া হবে দ্বিতীয় ডোজ।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য