× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Jagannath of tradition and glory in 184 years
google_news print-icon

ঐতিহ্য ও গৌরবের জগন্নাথ ১৬৪ বছরে

ঐতিহ্য-ও-গৌরবের-জগন্নাথ-১৬৪-বছরে
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ছবি
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ২০ অক্টোবরকে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গৌরব ও সাফল্যের ১৬ বছরে ক্যাম্পাসের অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রসারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এক অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন করে আসছে। ১৮৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্ম স্কুলের পরিবর্তিত রূপই এখনকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। ২০০৫ সালে কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বীকৃতি পায় দেশের অন্যতম প্রাচীন এ বিদ্যাপীঠ। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সাফল্যের ১৬ বছর পূর্ণ করে ১৭ বছরে পা দিয়েছে জগন্নাথ। পাশাপাশি ১৬৪ বছরে পা দিচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ২০ অক্টোবরকে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গৌরব ও সাফল্যের ১৬ বছরে ক্যাম্পাসের অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রসারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এক অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন করে আসছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস।

১৮৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্ম স্কুলের পরিবর্তিত রূপই এখনকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ১৮৭২ সালে বালিয়াটির জমিদার কিশোরী লাল রায় তার বাবা জগন্নাথ রায় চৌধুরীর নামে এই বিদ্যাপীঠের নামকরণ করেন। ১৮৮৪ সালে এটি একটি দ্বিতীয় শ্রেণির কলেজ ও ১৯০৮ সালে প্রথম শ্রেণির কলেজে পরিণত হয়।

এই সময় এটিই ছিল ঢাকার উচ্চ শিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে জগন্নাথ কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কার্যক্রম বন্ধ করে ইন্টারমিডিয়েট কলেজে অবনমিত করা হয়।

ঐতিহ্য ও গৌরবের জগন্নাথ ১৬৪ বছরে

তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের ডিগ্রির শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গ্রন্থাগারের বইপুস্তক ও জার্নাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার সাজাতে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ গ্রন্থাগারের ৫০ ভাগ বই দান করা হয়। পুরান ঢাকার নারী শিক্ষায় বাধা দূর করতে ১৯৪২ সালে সহশিক্ষা চালু করা হয়। ১৯৪৮ সালে তা বন্ধ করে দেয়া হয়।

পরে ১৯৪৯ সালে আবার এই কলেজে স্নাতক পাঠ্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬৩ সালে অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান পুনরায় সহশিক্ষা চালু করেন। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি সরকারীকরণ করা হলেও পরের বছরেই আবার এটি বেসরকারি মর্যাদা লাভ করে। ২০০৫ সালে মহান জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাসের মাধ্যমে এটি একটি পরিপূর্ণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়।

পূর্বতন জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থীরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে গণ্য হন। তাদের নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। ২০০১-০২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রথম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সনদ লাভ করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০০৫-২০০৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান।

ঐতিহ্য ও গৌরবের জগন্নাথ ১৬৪ বছরে

বিশ্ববিদ্যালয়টি ১১ দশমিক ১১ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদে ৩৬টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউটে প্রায় ৬৭৯ শিক্ষক, ১৩ হাজার ১৬৫ শিক্ষার্থী, ৬৮৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নতুন হলেও প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে সুদীর্ঘ দেড় শ বছরেরও পুরোনো ইতিহাস। বাংলদেশের ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬ দফা ও ১১ দফার আন্দোলন এবং ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুথান ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলনের ইতিহাসে জগন্নাথের অবদান কখনও অস্বীকার করার মতো নয়।

পাকিস্তান আমলে সরকারবিরোধী আন্দোলন করায় প্রতিষ্ঠানটিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় তৎকালীন সরকার।

ভাষা আন্দোলনে জগন্নাথ

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একাট্টা হয়ে জগন্নাথের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বরাবরের মতোই ছিল উল্লেখ করার মতো। ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে সংশোধনী প্রস্তাব বাতিল হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রদের মিছিলের মাধ্যমে ঢাকায় প্রথম প্রতিক্রিয়া শুরু হয় ২৬ ফেব্রুয়ারি। এসব প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ঢাকা শহরের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেন। ভাষা আন্দোলনের সময় জগন্নাথ ও মেডিক্যাল কলেজে আলাদা করে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে উঠেছিল।

ঐতিহ্য ও গৌরবের জগন্নাথ ১৬৪ বছরে

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করে ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত প্রথম পুস্তিকা ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন’ এবং সাব-টাইটেল ছিল ‘কি ও কেন’? যার লেখক ছিলেন জগন্নাথের সাবেক শিক্ষার্থী অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।

মাতৃভাষা বাংলার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে প্রথম শহীদ হন জগন্নাথের ছাত্র রফিক উদ্দিন আহমদ। ৫২ সালে তিনি জগন্নাথের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে প্রথম যে ১০ জন ১৪৪ ধারা ভেঙে ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র প্রখ্যাত কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হান।

ভাষাসৈনিক মো. আবদুল জলিল এই প্রতিষ্ঠানে ছাত্র থাকা অবস্থায় ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ৫২ সালে জগন্নাথ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক শফিউদ্দিন আহমদকে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করায় কারাবরণ করতে হয়।

ভাষাসৈনিক অজিত কুমার গুহ ১৯৪৮ সালের ১৬ আগস্ট জগন্নাথে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়ে একটানা প্রায় ২০ বছর কর্মরত ছিলেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের একজন বলিষ্ঠ সংগঠক হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জাতীয় অধ্যাপক ড. সালাহউদ্দীন আহমেদসহ অন্য শিক্ষকরা এখান থেকেই ছাত্রদের ভাষা আন্দোলনে উৎসাহিত করতেন। নুরু মোল্লা ১৯৫০ সালে এই প্রতিষ্ঠানে পড়ার সময় ‘সর্বদলীয় সেন্ট্রাল কমিটি অব অ্যাকশন’ নামে একটি কমিটি হয়। তিনি ওই কমিটির সদস্য ছিলেন।

ঐতিহ্য ও গৌরবের জগন্নাথ ১৬৪ বছরে

জগন্নাথের সাবেক শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশের অন্যতম সংবিধানপ্রণেতা এম. আমিরুল ইসলাম ১৯৫২ সালে চলমান ভাষা আন্দোলন ও পাকিস্তান গণপরিষদে লিয়াকত আলী খানের প্রস্তাবিত ‘বেসিক প্রিন্সিপল রিপোর্ট’-এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতেও ভাষা আন্দোলনে জগন্নাথের অবদানের প্রমাণ পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘‘১৯৪৮ সালের ১১ মার্চকে ‘বাংলাভাষা দাবি’ দিবস ঘোষণা করা হলো। সামান্য কিছুসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাড়া শতকরা ৯০ ভাগ ছাত্র এই আন্দোলনে যোগদান করল। জগন্নাথ কলেজ, মিডফোর্ড মেডিক্যাল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বিশেষ করে সক্রিয় অংশগ্রহণ করল।’’

সাবেক এমপি মরহুম আবদুর রব, মৃণাল বারড়ি ও খলিলুর রহমানের মতো জগন্নাথের নাম না জানা অসংখ্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।

’৬২ থেকে ’৬৬-তে জগন্নাথ

১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনের বীজ মূলত জগন্নাথ ও ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাস থেকেই বপন করা হয়। ঐতিহাসিক শিক্ষা আন্দোলনের নেতা হায়দার আকবর খান বলেন, ‘যতদূর মনে পড়ে জগন্নাথ কলেজ ও ঢাকা কলেজের কয়েকজন ছাত্র প্রথমে ছাত্রদের সমস্যার দিকে দৃষ্টিপাত করে কলেজ থেকেই আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটায়। পরবর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা এই আন্দোলনটি আঁকড়ে ধরেন।’

তৎকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত ছয় দফা আন্দোলনেও জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষিত হলে তার সমর্থনে সফল হরতাল পালনে ভূমিকা পালন করে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মুজিব বাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান কাজী আরেফ আহমেদ ও চিত্রনায়ক ফারুক।

৬ দফায় জগন্নাথ

১৭ জানুয়ারি ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হলে জগন্নাথ ছাত্র সংসদের উদ্যোগেই প্রথম প্রতিবাদ সভা হয়। বঙ্গবন্ধু জেল থেকে ছাড়া পেয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জগন্নাথ কলেজের ছাত্রদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘ আই অ্যাম অ্যাট দ্যা ডিসপোজল অব দ্যা স্টুডেন্টস অব জগন্নাথ কলেজ’।

১১ দফার অন্যতম দাবি ছিল তৎকালীন জগন্নাথ কলেজসহ সকল প্রাদেশিকীকরণ কলেজসমূহ পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া। ১৯৬৯-এর গণ-অভুত্থানে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের বিরোধিতায় কলেজটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সরকার বাধ্য হয়।

মহান মুক্তিযুদ্ধে জগন্নাথ

সর্বশেষ মহান মুক্তিযুদ্ধের ফল হিসেবে মূলত বাংলাদেশ নামের স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

২৫ মার্চ ১৯৭১, পাক বাহিনীর অপারেশন সার্চলাইট মিশনের প্রথম দিকে হামলা চালানো হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, ইকবাল হল ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনে। শুরু হয় গণহত্যা।

জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থীরা হল থেকে বের হয়ে পুরান ঢাকার রাজপথে প্রতিবাদ শুরু করেন। পুরান ঢাকা নিজেদের দখলে নিতে ক্যাম্পাসে তৈরি হয় হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প।

প্রতিদিন পুরান ঢাকার মুক্তিকামী মানুষ ধরে এনে হত্যা করার পর গণকবর দেয়া হয় এই ক্যাম্পাসে। ৮ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে কর্তৃপক্ষ সে সময়কার ছাত্রসংসদ কার্যালয়ের সামনে গণকবর খনন করে সাতটি কঙ্কালসহ ছেঁড়া কাপড়, জুতা ইত্যাদি উদ্ধার করে।

যুদ্ধের পর দৈনিক পূর্বদেশ ও দৈনিক বাংলা পত্রিকায় জগন্নাথে পাক বাহিনীর নির্যাতন ও গণহত্যার ওপর প্রতিবেদন ছাপানো হয়। প্রতিবেদনে ভয়াবহ নারী নির্যাতন ও বিপুলসংখ্যক লোকের কঙ্কাল পাওয়ার খবর প্রকাশ পায়।

মুক্তিযুদ্ধে জগন্নাথের বহু ছাত্র ও শিক্ষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন। যাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বিখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম) ও গণিত বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান ড. আবুল কালাম আজাদ।

বিজয় লাভের আগ মুহূর্তে আবুল কালাম আজাদকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। যিনি আমাদের মাঝে এখনও ফিরে আসেননি। মুক্তিযুদ্ধে এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র মিরাজ, আজমল, নজরুল ও শাহাবুদ্দিন শহীদ হন।

জগন্নাথের গুচ্ছ ভাস্কর্য

স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর সংঘটিত অর্বণনীয় নির্যাতন এবং গণহত্যার চিত্র তুলে ধরে শহীদদের স্মরণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ নির্মাণ করা হয় মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ও একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত যা দেশের একমাত্র গুচ্ছ ভাস্কর্য।

২০১০ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি অনুদান বহাল রাখতে রাজপথে নেমে এসেছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তুমুল আন্দোলনের মুখে জগন্নাথসহ ৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারি অনুদান বহাল রাখতে মহান জাতীয় সংসদে বিল পাস করা হয়।

জগন্নাথের কৃতি ব্যক্তিত্ব

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব কৃতি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর নাম গর্ব করে বলতেই হয় তারা হলেন শিক্ষক হাসান হাফিজুর রহমান, আলাউদ্দিন আল আজাদ, শওকত আলী, আখতারুজ্জামন ইলিয়াস, ইতিহাসবিদ ড. মাহমুদুল হাসান, সাংবাদিক রাহাত খান, আ ন ম বজলুর রহমান, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য।

সংগীতশিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী, ড. শামসুজ্জামান খান, হায়াৎ মাহমুদ, বিক্রমপুরের ইতিহাসখ্যাত লেখক শ্রী যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত, গবেষক গোলাম মুরশিদ ও মির্জা হারুন-অর রশিদ, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ, ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন আহমদও ছিলেন জগন্নাথের কৃতি ব্যক্তিত্ব।

কথাশিল্পী ও চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হান, প্রখ্যাত আয়ুর্বেদ শাস্ত্র বিশারদ যোগেশচন্দ্র ঘোষ, শিক্ষাবিদ ড. আনিসুজ্জামান, সাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হক, ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়া সাঁতারু ব্রজেন দাস, বাঙালি কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনও ছিলেন বিশ্ববিদ্যায়টির কৃতি শিক্ষার্থী।

লেখক ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সদ্য সাবেক সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দীন আহমেদ রাজু, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র সাইদ খোকন, অর্থনীতিবিদ ভবতোষ দত্ত, লেখক কাজী মোতাহার হোসেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ আর ইউসুফ, গায়ক ফকির আলমগীর, কিরণ চন্দ্র রায়, হায়দার হোসেন ও বিপ্লব, অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান, জাহিদ হাসান, মীর সাব্বির, ফারুক ও প্রবীর মিত্র এবং জাদুকর জুয়েল আইচও জগন্নাথের কৃতি শিক্ষার্থী।

ক্রীড়া ক্ষেত্রে জগন্নাথ

ক্রীড়া ক্ষেত্রেও একসময় খ্যাতি ছিল এই বিদ্যাপীঠের। এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আন্তবিশ্ববিদ্যালয়, আন্তকলেজে ধারাবাহিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন ছাড়াও শিক্ষার্থীরা জয় করেছিলেন রোনাল্ডসে শিল্ড, স্যার এ এফ রহমান শিল্ড, ফিরোজ নূন কাপসহ একাধিক টুর্নামেন্ট। এই বিদ্যাপীঠেরই শিক্ষার্থী ব্রজেন দাস ৬ বার ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে গড়েছেন বিশ্ব রেকর্ড।

তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই জানেন না ক্রীড়ায় তাদের এই গৌরবের কথা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়াজগৎ আজ অনেকটাই মলিন। ক্রীড়াচর্চার পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় বড় পর্যায়ে সাফল্য দেখাতে পারছেন না জবিয়ানরা। ২০১৯ এসএ গেমসে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম স্বর্ণপদক জয়ী মারজান আকতার প্রিয়া এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানেরই শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

শুধু বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জবির পরিমাপ করা যাবে না। জবিকে জ্ঞানের সূর্য বলা যায়। যা ১৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কেবল জ্ঞানের আলো দিয়েই যাচ্ছে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, দেশকে উজাড় করে দিলেও বলার মতো দেশ জবিকে কিছুই দেয়নি।

জগন্নাথকে এখনও অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের লজ্জা বহন করতে হয়। অবকাঠামোগত সমস্যা ও বাজেট বৈষম্যের শিকার বিশ্ববিদ্যালয়টি। ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য নেই পর্যাপ্ত পরিবহন ও ক্যান্টিন সুবিধা।

তবে খুশির বিষয় এই যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গত ৯ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক। যার মাধ্যমে কেরানীগঞ্জে প্রায় ২০০ একর জায়গার ওপর নির্মিত হবে আধুনিক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

আবাসিক ব্যবস্থা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একমাত্র অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এই অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তকমা ঘুচিয়ে ক্যাম্পাসের বিপরীত পাশে বাংলাবাজারসংলগ্ন ছাত্রীদের জন্য ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল’ নামে ১৬ তলাবিশিষ্ট ১ হাজার আসনের একটি হলের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। তবে উদ্বোধন হলেও এখনও চালু হয়নি হলটি।

আবাসন ও যানবাহন সমস্যায় জর্জরিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মনোবল, সাহস ও পরিশ্রমী মানসিকতা অবাক করে অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের। ব্যয়বহুল ঢাকা শহরের মেস-বাসা-বাড়িতে কষ্টে দিন পার করা সত্ত্বেও তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে সর্বদা মাতিয়ে রাখেন।

উচ্চ শিক্ষার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

শুধু আন্দোলন আর সংগ্রামেই থেমে নেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নিজেদের জানান দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন জবির শিক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীরা।

শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টির সকল বিভাগে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু রয়েছে। অনেক আগেই ইউজিসির প্রতিবেদনে এ-গ্রেড ভুক্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি।

বিসিএসসহ সকল প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরিতে সক্ষমতা অর্জন করেছেন এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ভর্তি পরীক্ষায় গোপন বার-কোড পদ্ধতি চালু করার মাধমে জালিয়াতি রোধে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আর ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রথমবারের মতো চালু হয় লিখিত ভর্তি পরীক্ষা।

বাংলাদেশের জন্ম ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই ইতিহাস থেকে অবশ্যই আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। তবেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সার্থকতা লাভ করবে।

আরও পড়ুন:
জগন্নাথে ছাত্রদল-ছাত্রলীগের হাতাহাতি, আহত দুই
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শুরু রোববার, প্রস্তুত জগন্নাথ
জগন্নাথে করোনার টিকা দেয়া শুরু ২১ অক্টোবর
২১ অক্টোবর জগন্নাথের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের সিদ্ধান্ত
ছুটির দিনেও পরীক্ষা জবিতে

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
If the health of the institution is not good the education system of the country will not improve the VC of the National University in Jamalpur

প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্য যদি ভালো না হয় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হবেনা; জামালপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি

প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্য যদি ভালো না হয় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হবেনা; জামালপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর এ এস এম আমানুল্লাহ বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সত্তুর শতাংশ উচ্চশিক্ষা নিয়ন্ত্রণ করে। এই প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্য যদি ভালো না হয় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হবে না।
জামালপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত জামালপুর শেরপুর জেলার কলেজ সমূহের অধ্যক্ষ উপাধ্যক্ষ ও শিক্ষকগণের সাথে শিক্ষার মান উন্নয়ন বিষয়ক মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের মিলনায়তনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ মনিটরিং এন্ড ইভালুয়েশন দপ্তরের আয়োজনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হারুন অর রশিদ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর এ এস এম আমানুল্লাহ, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর মো: নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আফসানা তাসলিম। এ সময় তিনি আরো বলেন, উন্নত দেশগুলোতে যেখানে মোট জিডিপির তিন থেকে পাঁচ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেখানে বাংলাদেশে মাত্র এক দশমিক পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয় যা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য খুবই অপ্রতুল। এখান থেকে বিশ্বমানের নাগরিক গড়ে তোলা সম্ভব নয়। শিক্ষাব্যবস্থায় মোট জিডিপির পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়ার সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। এ ছাড়াও তিনি প্রাইমারি শিক্ষা ব্যবস্থার উপর কিছু পরিবর্তন আনার কথা বলেন না। মত বিনিময় সভায় জামালপুর শেরপুর জেলার কলেজসমূহের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষসহ শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
National University Vice Chancellor is working to build skilled human resources to address challenges

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ গড়তে কাজ করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়: উপাচার্য

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ গড়তে কাজ করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়: উপাচার্য

অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে স্নাতকে (অনার্স) তথ্য প্রযুক্তি ও ইংরেজি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

আধুনিক পাঠ্যক্রম প্রণয়নের পাশাপাশি তা বাস্তবায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজে গতকাল বুধবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের এটুআই প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ এসব কথা বলেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষাক্রমের আইসিটি বিষয়ের ‘টিচিং, লার্নিং অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট স্ট্র্যাটেজি’ শীর্ষক এ কর্মশালার প্রথম সেশনে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক মো. রশিদুল মান্নাফ কবীর।

উপাচার্য বলেন, কলেজগুলোতে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষাদানে শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যা রয়েছে। এ বিষয়ে সহায়তার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সব টেকনিক্যাল কলেজ ও কম্পিউটার কাউন্সিলের সাথে আলোচনা করছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের কলেজ শিক্ষার্থীদের মেধার ঘাটতি নেই। সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে তারা সহজেই তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে উঠবে।

শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক, সময়োপযোগী ও কর্মমুখী তথ্য প্রযুক্তি পাঠ্যক্রম প্রণয়নে সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম ও শিক্ষাবিদদের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ।

কর্মশালার দ্বিতীয় সেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম।

দিনব্যাপী এ কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন কলেজের ৮টি বিভাগের ৪০ জন তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ড. নাজমা তারা এবং মির্জা মোহাম্মদ দিদারুল আনাম।

এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The High Court order is suspended on September 7 the Daksu elections

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতই থাকছে, ৯ সেপ্টেম্বরই ডাকসু নির্বাচন

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতই থাকছে, ৯ সেপ্টেম্বরই ডাকসু নির্বাচন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতই রেখেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে আর কোনো বাধা রইল না।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে রায়ে বলা হয়েছে।

এদিন আদালতে ঢাবির পক্ষে মোহাম্মদ শিশির মনির, রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এবং ডাকসুর জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদের পক্ষে ব্যারিস্টার ইমরান এ সিদ্দিকী শুনানি করেন।

ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত ছাত্র শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বামজোট মনোনীত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বিএম ফাহমিদা আলম এ রিট দায়ের করেন।

রিটে অভিযোগ করা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে এস এম ফরহাদ ‘ছাত্রলীগের কমিটিতে’ ছিলেন। এরপরও তিনি কীভাবে ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্যানেলে প্রার্থী হলেন— এমন প্রশ্ন তুলে তার প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করা হয়।

এরপর গেল সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ডাকসু নির্বাচন প্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি এস কে তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে কোন প্রক্রিয়ায় ডাকসু নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন, বাছাই ও চূড়ান্ত করা হচ্ছে এবং ভোটের প্রস্তুতির প্রক্রিয়া কী— এ বিষয়েও জানতে চান চাওয়া হয়।

তবে তার এক ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের আদালত ওই স্থগিতাদেশ দেন।

ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় পুনরায় মামলাটির বিষয়ে গতকাল (২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন নিয়ে চেম্বার জজ আদালতে গেলে এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শুনানির জন‍্য মামলার দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল।

জানা গেছে, নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারণ করা হয়। নির্বাচনে কেন্দ্রীয় এবং হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সদস্য পদে। এবার ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে মোট ২১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Ali Hussein who threatened to rape expelled from Dabi

ধর্ষণের হুমকি দেওয়া আলী হুসেনকে ঢাবি থেকে বহিষ্কার

ধর্ষণের হুমকি দেওয়া আলী হুসেনকে ঢাবি থেকে বহিষ্কার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে এক নারী শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আলী হুসেনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আলী হুসেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী এবং শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের বাসিন্দা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ ও হুমকি দেওয়ার ঘটনায় আলী হুসেনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে গঠিত প্রক্টরিয়াল সত্যানুসন্ধান কমিটির সুপারিশের আলোকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

এটি বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডারে প্রদত্ত প্রক্টরের এখতিয়ারভুক্ত সর্বোচ্চ শাস্তি বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

একই সঙ্গে আলী হুসেনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিষয়ক কমিটিতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Private teacher employee ordered the allowance within 6 months of retirement

বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসরের ৬ মাসের মধ্যে ভাতা দেওয়ার নির্দেশ

বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসরের ৬ মাসের মধ্যে ভাতা দেওয়ার নির্দেশ

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত ৫ লাখের বেশি শিক্ষক ও কর্মচারীকে অবসরের ৬ মাসের মধ্যে অবসরকালীন সুবিধা প্রদানের নির্দেশনা দিয়ে রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজি জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ ১৩ পৃষ্ঠার এ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ রায় প্রকাশ করেছেন।

রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত ৫ লাখের বেশি শিক্ষক ও কর্মচারীকে অবসরের ৬ মাসের মধ্যে অবসরকালীন সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজি জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

রায়ের সময় হাইকোর্ট বলেন, এটা চিরন্তন সত্য যে শিক্ষকরা রিটায়ারমেন্ট (অবসরকালীন) বেনিফিট (সুবিধা) পেতে বছরের পর বছর ঘুরতে হয়। এই হয়রানি থেকে তারা কোনোভাবেই পার পান না। একজন প্রাথমিকের শিক্ষক কত টাকা বেতন পান, সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে। এ জন্য তাদের অবসরভাতা ৬ মাসের মধ্যে দিতে হবে। এই অবসর ভাতা পাওয়ার জন্য শিক্ষকরা বছরের পর বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরতে পারে না বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত।

সেদিন রায়ের পর আইনজীবী ছিদ্দিক উল্যাহ মিয়া বলেন, সারাদেশে এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় ৫ লাখের বেশি শিক্ষক কর্মচারী অবসরকালীন সুবিধা পেতে ২০১৯ সালে একটি রিট দায়ের করেছিলাম। রিটে আমরা ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন থেকে ৬ শতাংশ কেটে নেওয়া হতো। সেই কর্তনকৃত টাকাসহ সুবিধান অবসরের পর দেওয়া হতো। এই অবস্থায় ২০১৭ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন করে ১০ শতাংশ কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্তে নেয়। ১০ শতাংশ কেটে নেওয়া হলেও ৬ শতাংশের যে সুবিধা দেওয়া হতো সেটাই বহাল রাখা হয়। যে কারণে আমরা রিট দায়ের করে বলেছি, যাতে ১০ শতাংশের সুবিধা দেওয়া হয়। এরপর এই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। সেই রুলের দীর্ঘ শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করা হয়।

রায়ে আদালত বলেছেন, ১০ শতাংশ কেটে নেওয়া হলেও তাদের যেন বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অবসরের ৬ মাসের মধ্যে যেন অবসরকালীন সুবিধা প্রদান করা হয়।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট প্রবিধানমালা, ১৯৯৯ এর প্রবিধান-৬ এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা প্রবিধানমালা, ২০০৫ এর প্রবিধান-৮ অনুযায়ী শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ২ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ কাটার বিধান ছিল। যার বিপরীতে শিক্ষকদের ট্রাস্টের তহবিল থেকে শিক্ষক ও কর্মচারীদের কিছু আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হতো। কিন্তু ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল উল্লিখিত প্রবিধানমালাগুলোর শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ২ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ কাটার বিধানগুলো সংশোধনপূর্বক ৪ শতাংশ এবং ৬ শতাংশ করে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ২ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ কাটার পরিবর্তে ৪ শতাংশ এবং ৬ শতাংশ কাটার বিধান করা হলেও ওই অতিরিক্ত অর্থ কাটার বিপরীতে শিক্ষক ও কর্মচারীদের কোনো বাড়তি আর্থিক সুবিধার বিধান করা হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারীদের এপ্রিল ২০১৯ মাসের বেতন হতে ৬ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ টাকা অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টে জমা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করেন।

ফলে অতিরিক্ত অর্থ কাটার বিপরীতে কোনো আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধি না করেই শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ৬ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ টাকা কাটার আদেশের কারণে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫ লাখ শিক্ষক ও কর্মচারীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে ক্ষুব্ধ হয়ে বিভিন্ন সময়ে অতিরিক্ত অর্থ কাটার আদেশ বাতিল করার জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে তারা বিভিন্ন সময়ে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষক ও কর্মচারীরা ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনটি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Daksu Election Case today is number one in the Appellate Division

ডাকসু নির্বাচন সংক্রান্ত মামলা আজ আপিল বিভাগে কার্যতালিকার এক নম্বরে

ডাকসু নির্বাচন সংক্রান্ত মামলা আজ আপিল বিভাগে কার্যতালিকার এক নম্বরে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল আবেদনের শুনানি আজ আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় এক নম্বরে রাখা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে সোমবার হাইকোর্ট ডাকসু নির্বাচন আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেন। তবে বিকেলে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ওই আদেশ স্থগিত করেন।

তাৎক্ষণিক হাতে লেখা আপিল আবেদনের ভিত্তিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব চেম্বার কোর্টে শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন।

চেম্বার আদালত একইসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করতে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপিল আবেদন করে। পরে চেম্বার আদালত বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠান।

সোমবার হাইকোর্ট বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ডাকসু নির্বাচন স্থগিত করেন।

ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত ডাকসু জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের শুনানিতে এই আদেশ দেন হাইকোর্ট। রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।

হাইকোর্ট আদেশে রিটকারী ও ডাকসু নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলমকে জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ডাকসুর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে দাখিল করতে বলা হয়।

এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Soon the stagnation of the educational institution will end Education adviser

শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অচলাবস্থার অবসান হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা

শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অচলাবস্থার অবসান হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা

দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যে অচলাবস্থা চলছে, শিগগিরই সে সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার।

মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে অচলাবস্থা চলছে, তা দুঃখজনক। এজন্য মন্ত্রণালয়ও উদ্বিগ্ন। তবে আলোচনা করেই এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। শিগগিরই এসব ঘটনার সমাধান হবে।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ফলে শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতি কারও কাম্য নয়। তবে সবকিছু আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।

চলমান সমস্যাগুলো দ্রুততম সময়ে সমাধান করা হবে এবং এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বস্ত করেন উপদেষ্টা।

মন্তব্য

p
উপরে