করোনা পরীক্ষায় জালিয়াতির মামলায় জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও তার স্বামী প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে আরও দুজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
তারা হলেন জেকেজিতে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করানো মো. জাকারিয়া ও তার স্ত্রী হাসিনা আক্তার।
সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম সাদবির ইয়াসির আহসান চৌধুরীর আদালতে আদালতে সাক্ষ্য দেন তারা।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান সাক্ষীদের আদালতে সহায়তা দেন। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ ও কনক কান্তি ভৌমিক তাদের জেরা করেন।
এ নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৪৩ সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্য শেষ হলো। আগামী ১০ নভেম্বর পরবর্তী সাক্ষীর তারিখ ঠিক করেছে আদালত।
সোমবার বেলা আড়াইটার পর আদালতে সাক্ষ্য শুরু হয়। বিকেল ৪টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ ও জেরা চলে।
এর আগে কাশিমপুর কারাগার থেকে ডাক্তার সাবরিনাসহ তিন নারী আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এ ছাড়া কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আরিফুল হক চৌধুরীসহ ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করলেও তা পরীক্ষা না করে ২৭ হাজার মানুষকে রিপোর্ট দেয় ডা. সাবরিনা ও তার স্বামীর প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথকেয়ার। এ অভিযোগ পেয়ে গত বছর ২৩ জুন অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেয়া হয়।
রাজধানীর তেজগাঁও থানার মামলায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী গত বছর ৫ আগস্ট চার্জশিট দেন। ২০ আগস্ট সাবরিনাসহ ৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। চার্জশিটের অন্য আসামিরা হলেন- ডা. সাবরিনার স্বামী আরিফুল চৌধুরী, সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির ও তার স্ত্রী তানজীনা পাটোয়ারী, জেকেজি হেলথকেয়ারের নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইন্সেসের স্বত্বাধিকারী জেবুন্নেছা রিমা, বিপ্লব দাস ও মামুনুর রশীদ। তারা সবাই কারাগারে আছেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর আব্দুল গনি রোডে শিক্ষা ভবনের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন তার দুই বন্ধু।
মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর আহত অবস্থায় তাদের তিন জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার দুই ঘণ্টা পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুহাইমিনুল ইসলাম সিফাতের মৃত্যু হয়।
সিফাত কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া এলাকার হাফেজ খন্দকারের ছেলে। তিনি পরিবারের সঙ্গে ক্যান্টনমেন্ট মাটিকাটা এলাকায় থাকতেন। বিএএফ শাহীন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অপেক্ষায় ছিলেন সিফাত।
বুধবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, ‘সিফাত ও তার বন্ধুরা মিলে দুটি মোটরসাইকেলে চড়ে পুরান ঢাকায় যাচ্ছিলেন তেহারি খেতে। সিফাতের মোটরসাইকেলে ছিলেন তার দুই বন্ধু মেহেদী হাসান ও শাকিল। শিক্ষা ভবনের সামনে যাওয়ার পর তাদের মোটরসাইকেলটি আইল্যান্ডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে রাস্তায় ছিটকে পড়ে। তখন চলন্ত একটি লরির চাকায় চাপা পড়েন সিফাত। পথচারীরা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
ঘটনার পর লরিটি জব্দ করা হয়েছে এবং এর চালক মাসুম হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত পোস্তগোলা ব্রিজে আগামী ১ জুলাই থেকে টোল নেয়া হবে না বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে টোল দিতে হবে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে।
প্রতিবেদনের বিষয়টি উল্লেখ করে বুধবার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চে এটি উপস্থাপন করা হবে।
তিনি বলেন, টেন্ডারের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে টোল আদায় করা হচ্ছিল। এ কারণে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে টোল আদায় বন্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে, ১ জুলাই থেকে পোস্তগোলা ব্রিজের জন্য আলাদা করে টোল দিতে হবে না। শুধু এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের জন্য টোল দিতে হবে।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চাপায় সায়েম নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ৮ বছর বয়সের শিশুটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়ত।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে লালখা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনার পর চিকিৎসক রাত সোয়া ৮টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিশুটির চাচা আহমেদ আলী বলেন, ‘আমার ভাতিজা মাদ্রাসা থেকে ফেরার সময় বাসার সামনে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ওকে চাপা দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ওকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে এলে চিকিৎসক জানান যে সে ইতিমধ্যে মারা গেছে।’
আহমেদ আলী জানান, তাদের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থানার সোনামুখী গ্রামে। শিশুটির বাবার নাম মোহাম্মদ আলী। সে মা-বাবার একমাত্র সন্তান। পরিবারটি ফতুল্লার লালখা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সোহাগ নামে পুলিশের একজন কনস্টেবল প্রাণ হারিয়েছেন। যাত্রাবাড়ী এসি পেট্রলের বডিগার্ড ছিলেন।
যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগ এলাকায় মঙ্গলবার রাতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন কনস্টেবল সোহাগ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। সেখানে রাত পৌনে ১০টাযর দিকে চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে।
সাংগঠনিক শক্তিতে ভর করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। আর মানুষের কাছে ভোট চাওয়ার বিনিয়োগ হিসেবে প্রচারে পদ্মা সেতু নির্মাণসহ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে গুরুত্ব দিয়েছেন তারা।
রাজধানীর মিরপুরে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে মঙ্গলবার কাফরুল থানা এবং ৪, ১৪, ১৬ ও ৯৪ নম্বর ওয়ার্ডের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে এমন মত ব্যক্ত করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘এ বছরের শেষের দিকে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন হবে। আর আগামী বছরের শেষের দিকে হবে জাতীয় নির্বাচন। সুতরাং নতুন যারা দায়িত্বে আসবেন তাদের ওপর এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বর্তাবে। সেই দায়িত্ব সবাইকে নিয়ে যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
‘ইতোমধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগ বিভিন্ন ইউনিট, থানা ও ওয়ার্ডের সম্মেলন করেছে। নতুন নেতৃত্ব এই কাজ সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাহলে সংগঠন শক্তিশালী ও গতিশীল থাকবে। আর তা আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হতে সহায়ক হবে।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘যারা দুর্দিনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে, সেই কর্মীদেরকে কমিটিতে স্থান দিন।’
তিনি বলেন, দেশে এখনও ষড়যন্ত্র চলছে। পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সারাবিশ্বকে তাক লাগিয়ে সেই সেতু নির্মাণ ও উদ্বোধন করেছেন। আজ সারাদেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে। স্বাধীনতাবিরোধী চক্র বিএনপি-জামায়াত সেই উন্নয়ন দেখতে পায় না। তাই সেসব উন্নয়ন মানুষের সামনে বার বার তুলে ধরতে হবে।’
সম্মেলন উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কাফরুল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল মোস্তফা।
আরও বক্তব্য দেন মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেসবাউল হোসেন সাচ্চু, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক, মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী রহিমা আক্তার সাথী, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার বাপ্পীসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
দ্বিতীয় অধিবেশনে থানা এবং ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী আগ্রহীদের জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করা হয়।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহার নিয়ে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষ করেও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানালেন না প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বলেছেন, দলগুলোর মতামত তারা লিপিবদ্ধ করেছেন। কতগুলো আসনে ইভিএমে ভোট নেয়ার সামর্থ্য আছে, সেটি পর্যালোচনা করবেন, এরপর সিদ্ধান্ত নেবেন।
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগসহ ১০ দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপর শেষে এই কথা জানান সিইসি। আগের দুই দফার মতো এই পর্বেও আমন্ত্রণ পেয়েও কয়েকটি দল সংলাপে আসেনি। তৃতীয় দফায় এই সংখ্যাটি ৪।
নিবন্ধিত ৩৯টি দলের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণ রক্ষা করে ইভিএম যাচাই করতে আসে মোট ২৮টি দল।
আলোচনার সূচনা বক্তব্যে সিইসি বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব নেই, কিছুদিন পর থেকেই ইভিএম নিয়ে কথাবার্তা পত্রপত্রিকায় চাউর হয়েছিল। আমাদের শুরুতে ইভিএম সম্পর্কে সে রকম ধারণা ছিল না। আমাদের ব্যক্তিগত ধারণাও ছিল না। আমরা ইতোমধ্যেই ইভিএম নিয়ে অনেক কাজ করেছি। এখন আমাদের মোটামুটি ধারণা আছে।
তিনি বলেন, ‘এর আগে আমরা দুটি সংলাপ করেছি। অনেকেই কিন্তু ইভিএমের পক্ষে বলেছেন। অনেকে সলুশন দিয়ে বলেছে, আরও উন্নত প্রযুক্তিসহ ইভিএম যদি ক্রয় করা যায় তাহলে আর ভালো হয়। আবার অনেকে সরাসারি বলেছেন, তারা ইভিএমে নির্বাচনে যাবেন না। আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব। কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন করবো সেটা আমাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
সিইসি বলেন, ‘আমরা ইভিএমের অন্ধ গ্রাহক ছিলাম না। সব আলোচন লিপিবদ্ধ করেছি। আমাদের সামর্থ্য কতগুলো তা দেখব। এরপর সিদ্ধান্ত নেব। সম্পূর্ণ বা ফিফটি ফিফটি করব কি-না সে সিদ্ধান্ত নেব।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনে সনাতন পদ্ধতির পাশাপাশি ভোটগ্রহণে ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি না, এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি আছে। বিএনপি এবং তার জোটের শরিকদের ধারণা, ইভিএমে ভোট কারচুপি করা যায়। তাই তারা ব্যালটের ভোটের পক্ষে।
অবশ্য বিএনপি এবং সমমনারা বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনেই না আসার ঘোষণা দিয়েছে।
সিইসি অবশ্য মনে করে, ইভিএম দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ বা হ্যাকিং সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘ইভিএমের সঙ্গে ইন্টারনেটের কোনো সম্পর্ক নাই বিধায় হ্যাকিংয়ের কোনো সম্ভাবনা নাই।’
এই বিষয়টি নিয়ে নানা গুজব নিজেও শুনেছেন এবং এক সময় বিশ্বাসও করতেন বলেও জানান সিইসি। বলেন, ‘গুজব শুনতে খুব ভালা লাগে। আমার জীবনও ওভাবে কেটেছে। এখন যখন আমাকে নিয়ে কথা শুনি সেগুলো কিন্তু সত্য না। অথচ আমি আগে এভাবেই গুজবই বিশ্বাস করতাম। আসলে মানুষের স্বভাবটাই হচ্ছে গুজবটা খুব শুনতে ভালো লাগে।’
নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে আবার সংলাপ
আগামী জাতীয় নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনায় বসার আগ্রহের কথাও জানান সিইসি। বলেন, ‘ঈদের পরপরই আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করব, তখন সকল নিয়ে আলোচনা করব।
তিনি জানান, ভোট নিয়ে তাদের বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য নেই। বলেন, ‘আমরা কিন্তু কোনো বাজে মতলব নিয়ে আসিনি বা আমাদের কোনো পক্ষ থেকে এই ধরনের কোনো আশ্বাসও কেউ দেন ননি। কোনো রাজনৈতিক চাপ আমাদের ওপর নেই।
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, সেই সময় (নির্বাচনকালীন সরকার) সরকার থাকবে কিন্তু আওয়ামী লীগ থাকবে না। সরকার আর আওয়ামী লীগ এক না। আমরা সরকারের কাছে আমরা হেল্প নেব, আওয়ামী লীগের কাছ থেকে কোনো হেল্প নেবো না। প্রশ্নই আসে না।
‘কাজেই আমরা বিশ্বাস করি, সরকার এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে যে বিভাজনটা আছে, সেই বিভাজনইটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি উচ্চারণ করতে শুনেছি। উনি এ ব্যাপারে খুবই স্পষ্ট, সরকারের তরফে থেকে আমাদেরে সহায়তা দেয়া হবে।’
নির্বাচন কমিশন সেই সহায়তা পাওয়ার অধিকারী জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘যে সহায়তা আমরা প্রাপ্য, সেই সহায়তা আমাদের দিতে হবে। সেই সহায়তা যদি দেয়া না হয়, সুন্দর ইলেকশন হয়ত হবে না।’
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের কামনাও করছেন সিইসি। বলেন, ‘নির্বাচন মাঠে সবাই থাকবেন। বিভিন্ন পার্টির উপস্থিতি কিন্তু এক ধরনের ভারসাম্য সৃষ্টি করে নির্বাচনের মাঠে।
সংলাপে কাদেরকে পেয়ে অভিভূত
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আসা প্রতিনিধি দলে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের থাকবেন- এটা ভাবতে পারেননি সিইসি। বলেন, ‘আজকে আপনারা বড় বড় দলের অনেকেই এসেছে। মাননীয় মন্ত্রী স্বয়ং নিজেই এসেছেন, যেটা আমি প্রত্যাশাও করেনি। আপনি এসেছেন আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।’
আওয়ামী লীগ নেতাকে উদ্দেশ করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা আশা করব, আপনারা সরকারে থেকে আমাদেরকে সরকারি সাহায্য সহায়তা দেবেন। আমরাও যে সহায়তা চাইব, তাও সাগ্রহে প্রদান করবেন।’
এ সময় কাদের বলেন, তারা নির্বাচনে কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন।
তখন সিইসি বলেন, ‘যাক আপনি বলেছেন, এজন্য আমরা আশ্বস্ত বোধ করছি এবং এই আশ্বাসটা নিয়ে আমরা আগামীতে কাজ করে যাব। নির্বাচনের মাঠে এটা একটা সামগ্রিক একটা বিষয়, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সামষ্টিক একটা বিষয়। কাজেই আমাদের ওপর ছেড়ে দিলে হবে না।’
সংলাপে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব, মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকায় আরেক কমিশনার রাশিদা সুলতানা উপস্থিত ছিলেন না।
আরও পড়ুন:গাড়ির হর্ন দেয়ায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ছেলের গাড়িচালককে মারধরের অভিযোগে করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ২৮ জুলাই দাখিল করা হবে।
মঙ্গলবার মামলার এজাহার গ্রহণ শেষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ দিন ধার্য করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম।
এর আগে মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী গাড়িচালক নজরুল ইসলাম রাজধানীর ওয়ারী থানায় মামলা করেন।
মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ কর্মী কৌশিক সরকার সাম্যসহ অজ্ঞাত চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্ত সাম্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের অনুসারী।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গাড়িচালক নজরুল ইসলাম ২৬ জুন বঙ্গভবন থেকে রাষ্ট্রপতির নাতি ইসা আব্দুল্লাহকে (৮) প্রাইভেট পড়তে দিয়ে বঙ্গভবনে ফিরছিলেন। তিনি ওয়ারীর চামু ডেল্টার মোড় থেকে টিপু সুলতান রোডের মাথায় পৌঁছার পর গাড়ির হর্ন দেন। এ সময় আসামি কৌশিক সরকার সাম্য মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। হর্ন দেয়ার পর সাম্য উত্তেজিত হয়ে গাড়ির দিকে তেড়ে আসেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে চালকের মুখে থুতু নিক্ষেপের পর গাড়ির পেছনে জোরে লাথি মারেন সাম্য।
এমন আচরণের পর সাম্যর পরিচয় জানার চেষ্টা করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত চার-পাঁচজনকে ডেকে আনেন। এ সময় সাম্যসহ অন্যরা নজরুলের মুখ ও পিঠে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন এবং হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান।
মন্তব্য