সারা দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জেরে হওয়া মামলায় এখন পর্যন্ত ২৬৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সম্প্রতি কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়ার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় মন্দির ও বাড়িঘর ভাঙচুর এবং হামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬০টি মামলা হয়েছে। আর এই মামলাগুলোয় আসামি করা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪৯ জনকে।
সবশেষ রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দুদের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সে ঘটনায় ৪৫ জনকে গ্রেপ্তারের কথা সোমবার দুপুরে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
কুমিল্লা
কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘিরপাড়ে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগের জেরে সহিংসতার ঘটনায় ৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ৩ কাউন্সিলরসহ ১ হাজার ৫৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা এসব মামলায় সোমবার দুপুর পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৪ জনকে।
কুমিল্লা জেলা পুলিশের ডিআইও-ওয়ান মনির আহমেদ এ তথ্য নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পূজামণ্ডপে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি, সদর দক্ষিণ ও দাউদকান্দি থানায় ৮টি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোতোয়ালিতে ৪০ এবং সদর দক্ষিণে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নোয়াখালী
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় ১৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২৮৫ জনের নাম উল্লেখসহ ৫ হাজার আসামি করা হয়েছে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) শহীদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলাগুলোতে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৯০ জনকে। ১০টি মামলার বাদী পুলিশ।
বাকি ছয় মামলার বাদী ক্ষতিগ্রস্ত মণ্ডপ, পূজা কমিটির সদস্য, একটি পূজা ঘরের মালিক ও ইসকন মন্দিরের এক অধ্যক্ষ।
বরিশাল
বরিশালের গৌরনদীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি পোস্টে আপত্তিকর কমেন্ট করার অভিযোগে তিনটি মন্দির ও কয়েকটি বসতঘর ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়।
গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে বাড়িতে হামলার ঘটনায় সুভাষ বৈদ্য বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৬০ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেন।
পরে রোববার রাতে মামলার ৪ নম্বর আসামি সুজন ঢালীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠান।
বাগেরহাট
কুমিল্লার ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার রাত ১০টার দিকে বাগেরহাটের শরণখোলায় মিছিল করে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করে একটি মহল। এ সময় চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান জানান, এলাকায় উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার চারজনকে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট আদালতের মাধমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পাবনা
পাবনায় কৈটোলা পূজামণ্ডপে দুর্বৃত্তদের হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের চেষ্টার অভিযোগে অজ্ঞাত ৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মনাকষা ইউনিয়নের মনাকষা বৃন্দাপাড়া মণ্ডপে হামলার ঘটনায় মামলা করে মণ্ডপ কর্তৃপক্ষ।
মণ্ডপের সাধারণ সম্পাদক সুবির চন্দ্র সাহা বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ শতাধিক অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে বৃহস্পতিবার বিকেলে মামলা করেন।
শিবগঞ্জ থানার ওসি ফরিদ হোসেন জানান, মণ্ডপে হামলার মামলায় এজাহারে নাম থাকা তিনজনসহ ১০ যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
সিলেট
কুমিল্লার ঘটনায় বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সিলেট বিভাগের ৬টি উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর করা হয়। এ তিন দিনে বিভাগের অন্তত ১৭টি মণ্ডপ ও মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলা করা হয় পুলিশের ওপরও। বিপুলসংখ্যক লোককে আসামি করা হলেও এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২১ জনকে।
সিলেটের জকিঞ্জের কালিগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন। এ ঘটনায় ৪৫০ জনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাসেম জানান, মামলায় এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সিলেট নগরের আখালিয়ার হালদারপাড়ায় ভাটি বাংলা অগ্রদূত যুব সঙ্ঘের মণ্ডপে শুক্রবার হামলার ঘটনায় শনিবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করে।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান জানান, এ মামলায় ৪২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। রোববার সকাল পর্যন্ত এ মামলায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুর চালায় স্থানীয় পাঞ্জারাই জিকে ওয়াই দাখিল মাদ্রাসার ছাত্ররা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নবীগঞ্জ থানার ওসিসহ ২০ জন আহত হন।
এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানার এসআই অমিতাভ বাদী হয়ে ১২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে জানিয়েছেন নবীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলাম।
মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কর্মদা ইউনিয়নে বুধবার রাতে ৩টি মন্দিরে হামলার ঘটনায় ৪০০ জনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, পূজামণ্ডপে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় ২২ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০০ জনকে আসামি করে তিনটি মামলা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওই রাতেই উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের মঈডাইল ও কামারছড়ায় পূজামণ্ডপ ভাঙচুরের অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমলগঞ্জ থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান।
তিনি বলেন, একটিতে সাতজন এবং অন্যটিতে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। দুই মামলায় এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে দুইজন। আসামিদের বেশির ভাগই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামের উলিপুরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জেরে ৫টি মামলা হয়েছে।
রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জাহিদুল ইসলাম জানান, এলাকায় উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
গাজীপুর
গাজীপুরে তিনটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় কাশিমপুর থানায় তিনটি মামলায় ৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রতিটি মামলায় ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবে খোদা জানান, এসব মামলায় ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের মধ্যে ১৮ জনকে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার বাকি দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মুন্সিগঞ্জ
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রাশুনিয়া ইউনিয়নে ধানিয়াপাড়া এলাকায় মহাশ্মশান কালীমন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় শনিবার দুপুরে একটি মামলা হয়েছে। তবে এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
সিরাজদিখান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজগর হোসেন নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জে কালীমন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় ৯ জনের নামসহ ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে।
করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামছুল আলম সিদ্দিকী নিউজবাংলাকে জানান, মন্দির পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরেন্দ্র চন্দ্র বর্মন শুক্রবার রাতে মামলা করেন। এ মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফেনী
ফেনীতে মন্দির ভাঙচুর ও শহরের ট্রাংক রোডে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে।
পুলিশ সদস্যকে আহত, বিস্ফোরক ও ভাঙচুরের অভিযোগে ফেনী মডেল থানায় করা মামলা দুটিতে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন ফেনী মডেল থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মো. মনির হোসেন।
তিনি জানান, এক মামলায় অজ্ঞাত ২০০ থেকে ২৫০ জন এবং আরেক মামলায় অজ্ঞাত ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
তবে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে এক ছাত্রকে আটক করেছে র্যাব। তাকেই এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন র্যাবের ফেনী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি অধিনায়ক জোনায়েদ জাহেদী।
মাদারীপুর
মাদারীপুরের কালকিনিতে ধর্মীয় সহিংসতার জেরে তৌহিদি জনতার ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দিলে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হন।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে কালকিনি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাঈদ বাদী হয়ে অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হয়েছে।
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসতিয়াক আসফাক রাসেল জানান, পুলিশের কাজে বাধা প্রদান ও সংঘর্ষের ঘটনায় ৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চার হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রংপুর
রংপুরের পীরগঞ্জে রোববার রাতে এক হিন্দুপাড়ায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সে ঘটনায় সোমবার দুপুর পর্যন্ত ৪৫ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
পীরগঞ্জে হামলায় ২০টি বাড়িঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে সচিব সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা যে কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) করেছি, সে কর্মপরিকল্পনাটা আপনাদের জানাবো। আমি ঢাকার বাইরে থাকায় একটু পিছিয়ে পড়েছি। এটা আমার টেবিলে এখন আছে। আগামীকাল পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করেন।’
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব আজ এক বৈঠকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে কমিশন।
এখন যেকোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
উল্লেখ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংস্কার, বিধিমালা ও নীতিমালা জারি, প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড নিবন্ধন ও পোষ্টাল ব্যালট পদ্ধতি ও নির্বাচনী সরঞ্জাম কেনাকাটা বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে রোডম্যাপে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
যে কোনো সময় এই নির্বাচনের রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে পারে ইসি।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন।
বৈঠকে কর্মপরিকল্পনার (রোডম্যাপ) অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। এখন, যে কোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসি’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
এদিকে সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ইসি’র শুনানি আজ বিকেলে শেষ হচ্ছে।
শুনানি শেষে বিকেলে সার্বিক বিষয় নিয়ে ইসি’র সিনিয়র সচিব আকতার আহমেদের ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা ব্রিফিংয়ে আসব। তখন সীমানার শুনানির বিষয়টির পাশাপাশি এ বিষয়টিও (রোডম্যাপ) দেখা যাবে।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তা বৈঠক করেন।
ওই দিন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছিলেন, বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে ইসি সচিব ব্রিফ করবেন।
গত ১৮ আগস্ট ইসি’র সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়ে ছিলেন, ‘একটা কর্মপরিকল্পনার (নির্বাচনী রোডম্যাপ) বিষয়ে বলেছিলাম, আমরা এই সপ্তাহে এটা করবো। কর্মপরিকল্পনার তো আমাদের আন্তঃঅনুবিভাগ সম্পর্কিত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে। কর্মপরিকল্পনার ড্রাফ্ট করা হয়েছে। ড্রাফ্টটি এখন কমিশনে দিয়ে আমরা অ্যাপ্রুভ করবো।’
শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধনের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি)-এর ৮৯তম সভায় শ্রমিক, মালিক ও সরকারের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত এক বছরের পর্যালোচনা ও সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার এক হোটেলে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, "শ্রমিক ও মালিক পক্ষের পরামর্শের ভিত্তিতে শ্রম আইন যুগোপযোগী করা হবে। এটি বাংলাদেশের শ্রমখাতের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।’
সভায় শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। একটি সুসমন্বিত ও আন্তর্জাতিক মানের শ্রম আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা উপস্থিত সকলেই করেন। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ সভায় সংশোধিত শ্রম আইন দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেওয়া হয়।
সভায় বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন দূতাবাস, কানাডা হাই কমিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর প্রতিনিধিরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত জনাব লুৎফে সিদ্দিকী।
এছাড়াও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এর নির্বাহী পরিচালক এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)-এর সভাপতি, টিসিসি সদস্যবৃন্দের মধ্যে তাসলিমা আক্তার, কোহিনুর মাহমুদ, বাবুল আকতার , নাজমা আক্তার, রাজেকুজ্জামান রতন, এডভোকেট আতিকুর রহমান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংশোধনী বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে আরও গতিশীল ও আন্তর্জাতিক মানসম্মত করবে এবং শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সারাদেশে কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত প্রযুক্তি সুবিধাপ্রাপ্ত লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবেলায় নীতিগত সুপারিশ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা একথা বলেন।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে প্রযুক্তিগত সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে নারীদের সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এ সকল অপকর্ম প্রতিরোধে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাল্য বিয়ের সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। এর মূল কারণ হচ্ছে মোবাইল নামক যন্ত্রটি। মোবাইল প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে ছোট ছোট মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
মেয়েরা অবুঝ এজন্য অভিভাবকদেরকে এ বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে। যাতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী সহিংসতা শিকার না হয়।
উপদেষ্টা বলেন, জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা, নারী পক্ষ, হিউম্যান রাইটস বাংলাদেশ, সাইবার টিনস ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), ব্র্যাকসহ বাইশটি সংগঠন আজ নারী নির্যাতন প্রতিরোধে একযোগে কাজ করছে। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
উপদেষ্টা বলেন এই ২২ টি সংগঠনের প্ল্যাটফর্মে যে সমস্ত শিক্ষিত তরুন যুবক যুবতীরা আছেন তাদেরকে টেকনোলজির মাধ্যমে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন ব্যক্তিগত এবং সামাজিক ও পরিবারের সচেতনতাই পারে একটি মেয়েকে নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে। এজন্য সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে।
ইলিশের উৎপাদন একদিকে কমছে, এতে প্রাকৃতিক কারণও রয়েছে। নদীর নাব্যতা কমে যাচ্ছে, মেঘনা নদীর অববাহিকায় দূষণের মাত্রা বেড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টি না হলে ইলিশ মাছ ডিম পাড়তে পারে না। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকৃতিক কারণ ও তথাকথিত উন্নয়নের কারণে নদী ভরাট ও দখল হয়ে যাচ্ছে। এমন মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার। বরিশাল ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত উপকূলীয় এলাকার মহিষের চারণভূমি ও উন্নয়নের সমস্যা এবং সাধন শীর্ষক জাতীয় কর্মশালা-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ইলিশ একটি মাইগ্রেটরি মাছ এটি সমুদ্র থেকে নদীতে আসে এবং আবার ফিরে যেতে হয়। কিন্তু বর্তমানে তা হচ্ছে না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ঝাটকা নিধন। কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী অভিযান চালালেও এটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা যায়নি। এছাড়া অবৈধ জালের ব্যবহার ইলিশের প্রাপ্যতা কমাচ্ছে। তবে এসবের বিরুদ্ধে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।
তিনি জানান,খুব শীঘ্রই ঢাকায় একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে নদী থেকে মাছ ধরে হাত বদলের সিন্ডিকেট বন্ধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সরাসরি বাজারে মাছ পাবে এবং সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে আসবে।
ফরিদা আক্তার বলেন, উপকূল এলাকায় মহিষের চারণভূমি সংকুচিত হয়ে গেছে। আমরা গবেষণায় দেখেছি এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে। বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও নির্মিত হচ্ছে। আমাদের দেশে গরু, ছাগল ও মহিষ পালন অন্তত মানুষের খাদ্য ও জীবন রক্ষার জন্য জরুরি। চারণভূমি বিষয়ে আমরা দেখছি যে অনেক কিছু পরিকল্পনা বিহীনভাবে তৈরি হচ্ছে। এতে মহিষের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তবে সঠিক নীতি ও ব্যবস্থা নিলে এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,পিকেএসএফ উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, জিজেইউএস নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন। সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. ওমর ফারুক, প্রেসিডেন্ট।
বক্তারা বলেন, নদী ও সমুদ্রের টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। মৎস্যজীবী, প্রশাসন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান একত্রিতভাবে কাজ করলে মাছ চাষ ও সংরক্ষণ কার্যকর হবে।
এছাড়া তারা বলেন, উপকূলীয় এলাকায় মহিষ পালনের সম্ভাবনা অনেক, তবে জলবায়ু পরিবর্তন, চারণভূমির অভাব ও বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা খাতটির উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। গবেষণা ও আধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মহিষ পালনকে লাভজনক ও টেকসই খাতে রূপান্তর করা সম্ভব।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান এর সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক শ্রম মান বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শ্রম সচিব বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ৩৬টি কনভেনশন ও একটি প্রটোকল অনুমোদন করেছে। আইএলও সংবিধান অনুযায়ী, অনুমোদিত ও অননুমোদিত উভয় ধরনের সনদের প্রয়োগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা সকল সদস্য রাষ্ট্রের জন্য বাধ্যতামূলক। এই কমিটি আইএলও কনভেনশন ১৪৪-এর বাধ্যবাধকতার আলোকে বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনে মালিকপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর মতামত, পরামর্শ ও সুপারিশ নিশ্চিত করবে।
সচিব আরও উল্লেখ করেন যে, আইএলও এর ১১টি কনভেনশন (C-01, C-14, C-19, C-81, C-89, C-100, C-106, C-111, C-118, C-138, MLC-2006) নিয়ে আলোচনা করা হয়। এগুলোর মধ্যে C-81 (শ্রম পরিদর্শন), C-100 (নারী ও পুরুষের সমান পারিশ্রমিক), C-111 (কর্মসংস্থান ও পেশায় বৈষম্য) এবং C-138 (ন্যূনতম কাজের বয়স) বিষয়ক চূড়ান্ত প্রতিবেদন আইএলও সংবিধানের ২২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে খুব দ্রুত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার জেনেভাস্থ প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে।
সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রতিনিধি নিরান রাজমুঠান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, ইমপ্লোয়ার্স ফেডারেশন এর প্রতিনিধি , ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি , বেপজা প্রতিনিধি , NCCWE এর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, গবাদিপশু পালন প্রোটিন ঘাটতি নিরসন, মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষা এবং জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য। অথচ অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে চারণভূমির হ্রাস হচ্ছে, ফলে মহিষের মতো মূল্যবান সম্পদ ক্ষতির মুখে পড়ছে।
আজ সকালে বরিশাল ক্লাবে অনুষ্ঠিত “উপকূলীয় এলাকার মহিষের চারণভূমি ও উন্নয়নের সমস্যা এবং সমাধান” শীর্ষক জাতীয় কর্মশালা ২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ বাফেলো এসোসিয়েশন, গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজিইউএস) এবং কোস্টাল ভেট সোসাইটি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, সঠিক নীতি নির্ধারণ ও আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের মাধ্যমে এখনো অনেক চরাঞ্চল রক্ষা করা সম্ভব। মহিষ পালন বাড়াতে পারলে জাতীয়ভাবে মাংস ও দুধ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা যাবে।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মহিষের চারণভূমি দ্রুত কমে যাচ্ছে। অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণ এবং এমনকি সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর উপজেলায় বৃহৎ গরুর বাথান ভরাট করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিও উঠছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি প্রশ্ন তোলেন, শুধু একটি ডিগ্রি অর্জনের উদ্দেশ্যে গরুর বাথান ধ্বংস করা দেশের সামগ্রিক কল্যাণে কতটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে? তিনি আরও বলেন, মহিষের স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয় বিবেচনায় উপকূলীয় এলাকায় স্পিডবোটভিত্তিক ভেটেরিনারি ক্লিনিক স্থাপন করা প্রয়োজন।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, বর্তমানে গবাদিপশুর চারণভূমি কমে যাওয়া এবং খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মহিষসহ অন্যান্য গবাদিপশুর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ ও টেকসই চারণভূমি উন্নয়ন অপরিহার্য। পাশাপাশি মহিষের উৎপাদন বৃদ্ধি ও জাতীয়ভাবে মাংস ও দুধ উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানান তারা।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বাফেলো এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ওমর ফারুক।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লুসিকান্ত হাজং, পিকেএসএফ-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, জিজিইউএস-এর নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্হানীয় খামারীরা কর্মশালায় অংশ গ্রহণ করেন।
মন্তব্য