পুঁজিবাজারের সংশোধনের মধ্যে এবার পর পর চার দিন সূচকের পতনে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাসে চিড় আরও বড় হলো। বিপরীতে তৈরি হলো উদ্বেগ।
এমন ঘটনা দেশের পুঁজিবাজারে সহসা ঘটে এমন নয়। সব শেষ গত ১৫ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি টানা ৬ কর্মদিবস সূচক কমেছিল। এরপর সর্বোচ্চ তিন কর্মদিবস টানা সূচক কমেছে দুই বার।
গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া দর সংশোধন চতুর্থ সপ্তাহে গিয়েও থামার নাম নেই। বরং সূচক ও শেয়ারের দর কমার পাশাপাশি গতি কমছে লেনদেনেও।
মোট লেনদেন কমে গেছে দেড় হাজার কোটি টাকার নিচে। গত ২৭ জুলাইয়ের পর প্রথমবারের মতো এই ঘটনা ঘটল। সেদিন লেনদেন ছিল ১ হাজার ৩৬০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার মিলিয়ে টানা পাঁচ কর্মদিবস লেনদেন হলো দুই হাজার কোটি টাকার নিচে। গত ২৯ জুলাইয়ের পর এমনটি আর দেখা যায়নি।
প্রথম তিন সপ্তাহে স্বল্প মূলধনি ও লোকসানি কোম্পানির শেয়ারদর বেশি পড়লেও চতুর্থ সপ্তাহে এসে এতদিন যেসব বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, সেগুলোর মধ্যে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো ও ওরিয়ন ফার্মা ছাড়া বাকিগুলোতে লেগেছে সংশোধনের হাওয়া।
এমনকি গত ৫ এপ্রিল লকডাউন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বাজারে লেনদেন বন্ধ হয়ে যাবে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার সময় বাজারে ধস নামলেও পর পর চার দিন সূচক পড়েনি।
গত সপ্তাহের শেষে দর সংশোধন শেষ হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে লেনদেন শেষ হয় ৭ হাজার ৩৪২ পয়েন্টে। চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন সূচক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে ৭ হাজার ৩৬৭ পয়েন্ট হলেও পুঁজিবাজারে উচ্ছ্বাস ছিল না। কারণ, সূচক বাড়ে মূলত কয়েকটি বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ারদরে উল্লম্ফনে। পক্ষান্তরে দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির তুলনায় দর পতন হওয়া কোম্পানির সংখ্যা ছিল দ্বিগুণেরও বেশি।
এরপর সোমবার থেকে প্রতিদিনই সূচক কমেছে আগের দিনের চেয়ে বেশি। ১১ অক্টোবর সূচক আগের দিনের চেয়ে কমে ২২ পয়েন্ট। তার পর দিন সূচক কমে আরও ৩২ পয়েন্ট।
বুধবার আরও বড় পতনে ছড়ায় উদ্বেগ। সেদিন সূচক থেকে নাই হয়ে যায় ৬৫ পয়েন্ট।
বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরুতে অন্যান্য দিনের মতোই সূচক বেড়ে গেলেও বেলা দেড়টা নাগাদ ৫৩ পয়েন্টের পতনে তৈরি হয় উদ্বেগ। কারণ, সে সময় শেয়ারদর ক্রমেই কমছিল আর সূচকের পতনের গতি ছিল অনেক বেশি।
তবে শেষ এক ঘণ্টায় উত্থানে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে লেনদেন শেষ হওয়ার আট মিনিট আগে সূচকের অবস্থান হয় আগের দিনের সমান। শেষ আট মিনিটে খানিকটা কমে যাওয়ায় ৫ পয়েন্ট কমে সূচকের অবস্থান দাঁড়ায় ৭ হাজার ২৪৩ পয়েন্টে।
এ নিয়ে চার দিনে সূচক কমল ১২৪ পয়েন্ট।
সব মিলিয়ে ১১৪টি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২১৯টির দর।
বড় মূলধনিতে মিশ্রাবস্থা
গত এক মাস ধরে সূচক উত্থান পতনে প্রধান ভূমিকায় থাকা কোম্পানিগুলোর লেনদেনে মিশ্রাবস্থা দেখা গেছে।
এর মধ্যে টানা উত্থানে থাকা ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানির শেয়ার দর আরও বেড়েছে। টানা ছয় কর্মদিবস বেড়ে শেয়ার দর এখন দাঁড়িয়েছে ৭১৯ টাকা ৮০ পয়সা। এই কোম্পানিটির শেয়ার দর এক শতাংশ বাড়ার কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ৩.৩৮ শতাংশ।
৬ কর্মদিবসের মধ্যে চার কর্মদিবস দর হারিয়ে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে ৯৩ টাকায় নেমে আসা লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টের শেয়ার দর ২ টাকা ৯০ পয়সা বাড়ার কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ২.৯৭ পয়েন্ট।
বাজারে দর সংশোধনীর মধ্যে সূচক বাড়াতে ভূমিকা রাখা আইসিবির শেয়ার দর সকালে কমেও পরে বেড়েছে। একইভাবে কমে গিয়ে বেড়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার দর।
টানা দুই কর্মদিবস হল্ডেট হওয়ার পর তৃতীয় দিনে ৬.০৪ শতাংশ বেড়েছে এনআরবিসির শেয়ার দর। ওয়ালটন, সামিট পাওয়ার, ফরচুর সুজ ও গ্রামীণ ফোনের শেয়ারদর বেড়েছে।
অন্যদিকে কমেছে স্কয়ার ফার্মা, বিকন ফার্মা, ইউনাইটেড পাওয়ার, রবি, ইবিএল, অলিম্পিক, বিএসআরএম লিমিটেড, বিএসআরএম স্টিল, আইএফআইসি ও ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার দর। তবে দরপতনের হার খুব একটা বেশি ছিল না।
আগ্রহ বাড়ছে ব্যাংকে
চলতি সপ্তাহে পুঁজিবাজারে টানা দরপতনে ব্যাংক খাতে লেনদেন বেড়ে চলেছে। মোট লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ৫০০ কোটি টাকার মতো কম হলেও ব্যাংক খাতে লেনদেন কমেছে সামান্যই। আগের দিন এই খাতে হাতবদল হয়েছিল ১৯৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। সেটি কমে হয়েছে ১৯৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এই লেনদেনের মধ্যে অবশ্য ৭২ কোটি ৯৩ লাখ টাকাই হয়েছে এনআরবিসিতে।
তবে লেনদেনে আগ্রহ দেখা গেলেও কোম্পানিগুলো শেয়ার দর হারানোর প্রবণতা থেকে বের হতে পারেনি।
৯টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৯টির দর। অপরিবর্তিত ছিল বাকি চারটির।
আগের দুই দিনের ধারাবাহিকতায় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এনআরবিসির দর। ৬.০৪ শতাংশ বেড়ে ২৯ টাকা ৮০ পয়সা থেকে শেয়ার দর বেড়ে হয়েছে ৩১ টাকা ৬০ পয়সা। বেড়েছে ১ টাকা ৮০ পয়সা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেড়েছে লোকসানি আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, যার দর বেড়েছে ৩.৭০ শতাংশ। এ ছাড়া সাউথইস্ট ও ইউসিবির শেয়ার দর বেড়েছে ১০ পয়সা করে।
ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক খাতে লেনদেনের পাশাপাশি শেয়ারদর কমেছে। এই খাতে ৬টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার বিপরীতে কমেছে ১৫টির দর। অপরিবর্তিত ছিল একটির। লেনদেন হয়েছে ৬৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১১১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
চুপসে গেছে বিমার বেলুন
আগের দিন ৫১টি বিমা কোম্পানির মধ্যে ৫০টির শেয়ার দর বৃদ্ধি, সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধির তালিকায় এই খাতের প্রাধান্যের পর বিনিয়োগকারীদের মনে যে আশার সঞ্চার হয়েছিল, তা চুপসে গেছে পরদিনই।
৫১টি কোম্পানির মধ্যে দুটি দর বেড়েছে সামান্য। একটি দর ধরে রাখতে পেরেছে, কমেছে বাকি ৪৮টির দর।
গ্রিনডেল্টার শেয়ার দর ১ টাকা ২০ পয়সা, ডেল্টা লাইফের শেয়ার দর বাড়ে ৮০ পয়সা।
অন্যদিকে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের দর ৩.২৩ শতাংশ, রিপাবলিকের দর ২.৯৪ শতাংশ, নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্সের দর ২.৮৭ শতাংশ, কন্টিনেন্টালের দর ২.৮৬ শতাংশ, ক্রিস্টাল ও প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের দর ২.৮০ শতাংশ করে, জনতা ইন্স্যুরেন্সের দর ২.৬৯ শতাংশ, পিপলস ইন্স্যুরেন্সের দর ২.৬২ শতাংশ, ইস্টল্যান্ডের দর ২.৫৬ শতাংশ, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ২.৫ শতাংশ কমেছে।
দাম বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় প্রাধান্য বস্ত্রের
বড় খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো দিন গেছে বস্ত্র খাতে। লেনদেন কমলেও এই খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৯টির, দর ধরে রাখতে পেরেছে ৮টি আর কমে ২১টির দর।
মোট হাতবদল হয়েছে ১৩৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১৮৭ কোটি টাকা।
দাম বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় ছিল এই খাতের আলিফ ম্যানুফেচকারিংয়ের দর। আগের দিনের চেয়ে ৯.৫৭ শতাংশ বেড়ে ১৮ টাকা ৮০ পয়সা থেকে শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ৬০ পয়সা।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ দশে এই খাতের আরও দুটি কোম্পানির নাম ছিল। এর মধ্যে উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানি সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের দর বেড়েছে ৮.৩৩ শতাংশ। এই কোম্পানিটিকে অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আলিফ।
এছাড়া তুংহাইয়ের দর ৩.০৩ শতাংশ, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৫.৯৮ শতাংশ, ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের দর ২.৯৮ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিংয়ের দর ২.৮০ শতাংশ বেড়েছে।
আবার দরপতনের শীর্ষ তালিকাতেও এই খাতের কোম্পানিরই আগ্রহ দেখা গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর হারানো এইচআর টেক্সটাইলের শেয়ার দর কমেছে ৭.৭১ শতাংশ।
এছাড়া দুলামিয়া কটনের দাম ৪.৫৮ শতাংশ, ঢাকা ডায়িংয়ের দাম ২.৮০ শতাংশ, আরএন স্পিনিংয়ের দর ২.৭৭ শতাংশ, প্রাইম টেক্সটাইলের দর কমেছে ২.৬৪ শতাংশ।
খাদ্য খাতে তুলনামূলক ভালো দিন, পতন কম ওষুধ ও প্রকৌশলে
দরপতনের দিনে খাতওয়ারি হিসাব করলে দিনটি খারাপ যায়নি খাদ্য খাতে। এই খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১১টির, কমেছে ৮টির। একটির দর পাল্টায়নি।
সবচেয়ে বেশি বেড়েছে উৎপাদন চালুর অপেক্ষায় থাকা এমারেল্ড অয়েল, যার দর বেড়েছে শেয়ার প্রতি ২ টাকা ২০ পয়সা বা ৬.৩৯ শতাংশ।
লাভেলো আইসক্রিমের দর ৫.১১ শতাংশ, জিলবাংলা সুগার মিলের দর ৪.৩৬ শতাংশ বেড়েছে।
এই খাতের সবচেয়ে আলোচিত কোম্পানি ব্রিটিশ আরেরিকান ট্যোবাকোর শেয়ার দর বেড়েছে ৪ টাকা ৩০ পয়সা।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ৬৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৭৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
গত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। তবে আগের দিনের তুলনায় অনেক কমেছে তা। দিন শেষে হাতবদল হয়েছে ১৯৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ২৪১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
তবে দর বৃদ্ধির হার খুব বেশি নয়। সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোহিনুর ক্যামিকেলের দর বেড়েছে ২.২৭ শতাংশ।
এই খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে বেড়েছে ১২টির দর, কমেছে ১৫টির। তিনটির দর ছিল অপরিবর্তিত আর একটির লেনদেন দীর্ঘদিন ধরেই স্থগিত।
প্রকৌশল খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৭টির, কমেছে ২০টির দর। অপরিবর্তিত ছিল বাকি ৫টির।
এই খাতেও লেনদেন কমে গেছে। হাতবদল হয়েছে ১০১ কোটি ১৯ লাখ টাকা যা আগের দিন ছিল ১৩৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬.১৫ শতাংশ বেড়েছে বিডি ল্যাপসের দর। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩.৪৮ শতাংশ দর বেড়েছে নাহি অ্যালুমিনিয়ামের দর।
এই খাতে সবচেয়ে বেশি ৩.৩২ শতাংশ কমেছে রেনউইক যগেশ্বরের দর।
অন্যান্য খাতের লেনদেন
তথ্য প্রযুক্তি খাতের মোট লেনদনে হয়েছে ১৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। লেনদেনে ৩টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। কমেছে ৮টির।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মোট লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা। লেনদেনে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৫টি ফান্ডের দর বেড়েছে, কমেছে ১৯টির।
বিবিধ খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ১০৭ কোটি ০৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। লেনদেনে এ খাতের ৫টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে, কমেছে ৮টির।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫ দশমিক ১৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ২৪৩ দশমিক ২৬ পয়েন্টে।
শরিয়াভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস দশমিক ৮৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৬৭ দশমিক ৪৩ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭১৯ দশমিক ১৩ পয়েন্টে।
দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
মন্তব্য