গাজীপুর মহানগরের আটটি থানা ও একটি সাংগঠনিক থানায় স্বেচ্ছাসেবকদলের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটিতে দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান ও কর্মীদের পদ পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
৩ অক্টোবর গাজীপুর মহানগরের এসব কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর গত এক সপ্তাহ ধরে মহানগরীর টঙ্গী, কোনাবাড়ি, বাসন, সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ ও ঝাড়ু মিছিল করেছেন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি আরিফ হোসেন হাওলাদার ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শাহীনের বহিষ্কারের দাবিও জানিয়েছেন তারা।
পদবঞ্চিতদের অভিযোগ, দলের দুঃসময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে যারা রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন, মিথ্যা মামলা ও কারাগারে থেকেছেন তাদেরকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান ও সরকারদলের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে।
তাদের দাবি, আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বিতর্কিতদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা-কর্মীরা জানান, নতুন এসব কমিটির ঘোষণার চারটিতে মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর রয়েছে। বাকি পাঁচটি কমিটি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদলের দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলামের স্বাক্ষরে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তারা আরও জানান, এসব কমিটিতে অন্তত এক ডজনের বেশি বিতর্কিত ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন। এমনকি কেউ কেউ আছেন তারা জানেনই না তাদেরকে কমিটিতে রাখা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মী বিষোদগার করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা। মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে বিষয়টি সমাধানে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদলের কাছে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জানান, টঙ্গী পূর্ব থানা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক করা হয়েছে আরিফুল হক প্রধান সুবেলকে। তার বাবা অবিভক্ত টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বজলুল হক মন্টু প্রধান।
এ ছাড়া সুবেলের চাচাতো ভাই লিটন প্রধান টঙ্গী থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি। তার আপন ছোট ভাই প্রিন্স প্রধান টঙ্গী থানা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী।
বিভিন্ন সময় টঙ্গী থানা যুবলীগ নেতা বিল্লাল হোসেন মোল্লা ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মামুন মোল্লার সঙ্গে মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নেওয়ার ছবিও পাওয়া যায় সুবেলের। করোনার সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে দেয়া ত্রাণ বিতরণেও দেখা গেছে তাকে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে সুবেলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্টু প্রধান আমার বাবা নয়। আমি অনেক অসুস্থ। পরে কথা বলব।
এ কথার পরই ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন সুবেল। পরে আর কল ধরেননি তিনি।
টঙ্গী পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবকদলের কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে মনির হোসেনকে। তার বড় ভাই হারুন অর রশিদ ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। এর আগে টঙ্গী থানা ছাত্রলীগের স্কুল ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন হারুন। তৎকালীন সময়ে টঙ্গী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের হাতের কব্জি কেটে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে হারুনের বিরুদ্ধে।
মনির হোসেন বলেন, ‘আমার ভাই হারুন অর রশিদ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এক সময় ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন, কিন্তু আমি কখনও ছাত্রলীগ করিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগ করার সময় আমার ভাইকে ছাত্রদল নেতা ও চাঁদাবাজ দেলোয়ার কুপিয়ে আহত করে। পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে আমার ভাই দেলোয়ারের হাতের কব্জি কেটে নেয়। আর আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যেসব ছবি ফেসবুকে ছড়িয়েছে সেগুলো কোনো রাজনৈতিক মিছিলের ছবি না।’
টঙ্গী পূর্ব থানা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য রেজাউল ইসলাম রাসেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের কেক কেটে উদযাপন করেছেন। এ নিয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মহানগরীর ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক মনির হোসেন সাগরের সঙ্গে কেক কাটছেন তিনি।
টঙ্গী পূর্ব থানা স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুকলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে রয়েছে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ। গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণের সঙ্গে নানা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে দেখা গেছে মুকলেছুরকে।
টঙ্গী পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হান্নানকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী হাসান উদ্দিনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টারের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা গেছে।
গাজীপুর মহানগর বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের সহসভাপতি হাফিজুর রহমানও পদ পেয়েছেন বাসন থানা স্বেচ্ছাসেবকদলের কমিটিতে।
মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক আশিককে কাশিমপুর থানা স্বেচ্ছাসেবকদলের কমিটিতে ৪ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। অথচ আশিক জানেন না তাকে কমিটিতে রাখা হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবকদলের কমিটিতে পদ দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্টও দিয়েছেন আশিক। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের একাধিক ব্যক্তিকে কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার অভিযোগ পদবঞ্চিতদের।
অভিযোগের বিষয়ে গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি আরিফ হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘যারা বিক্ষোভ করছে তারা স্বেচ্ছাসেবকদল করে না। কেউ কেউ থাকতে পারে। হয়তো তারা কাঙ্ক্ষিত পদ পায়নি। এরা আওয়ামী লীগের এজেন্টও হতে পারে।’
আওয়ামী পরিবারের ছেলে সুবেল প্রধানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দলে এমন কোনো গঠনতন্ত্র নাই যে কারও বাবা-দাদা অন্য দল করলে সে স্বেচ্ছাসেবকদল করতে পারবে না৷ প্রত্যেকটি থানায় ৩১ সদস্য বিশিষ্ট সীমিত কমিটি করা হয়েছে৷ অনেককেই কমিটিতে রাখা সম্ভব হয়নি। আর যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সেসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদলের সহসভাপতি ও ঢাকা বিভাগীয় দলের প্রধান আবুল কালাম আজাদের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
গাজীপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব সোহরাব উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অঙ্গসহযোগী সংগঠনের কমিটির ব্যাপারে আমাদের মতামত নেওয়া হয় না। এ ক্ষেত্রেও আমাদের কোনো সুপারিশ নেওয়া হয়নি। স্বেচ্ছাসেবকদলের বিভাগীয় ও কেন্দ্রীয় কমিটি যাচাই-বাছাই করে কমিটি দিয়েছে।
‘এখানে মহানগর বিএনপির ভূমিকা নেই। আমরা কমিটিকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের রাগ-অভিমান নিরসনের চেষ্টা করছি। সঠিক নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার জন্য আমরা কেন্দ্রকে জানিয়েছি। আশা করছি খুব শিগগিরই বিষয়টা সমাধান হয়ে যাবে।’
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিজানুর রহমান রিপন (৪৮) নামের এক স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর ও লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটেছে। মিজানুর রহমান রিপন ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে।
গত রবিবার সন্ধার দিকে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ বাজারে এই ঘটনা ঘটে। মিজানুর রহমান রিপন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমর সংবাদ পত্রিকার দৌলতপুর উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি নিউজ বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে কাজ করে আসছেন। এঘটনায় ওই দিন রাতে ভূক্তভুগী নিজে বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
এযাহার সূত্রে জানাযায়, গত ৮ জুন উপজেলার তারাগুনিয়া থানার মোড় এলাকার তারাগুনিয়া ক্লিনিকে আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রশুতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি সহ উপজেলার বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী সংবাদ প্রকাশ করে। তারি জের ধরে উপজেলা বাজারে থাকা সরকার নিষিদ্ধ ক্লিনিক বেবি নার্সিং হোম এর মালিক আহসান হাবিব কালুর ছোট ছেলে খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারে তাকে মারধর করে।
এবিষয়ে মিজানুর রহমান নামের ওই গণমাধ্যম কর্মী বলেন, গতকাল বিকেলে আমি উপজেলা বাজারে বাড়ির দৈনন্দিন বাজার করছিলাম এসময় খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারের বেবী ক্লিনিক মালিকের ছেলে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় সে আমাকে বলে আমার হাসপাতালে যে ডাক্তার আসে সেই ডাক্তারের নামে তুরা নিউজ করেছিস বলে আমার উপর হামলা চালিয়ে বেদড়ক মারধর করে। এঘটনার পর আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
গণমাধ্যম কর্মীকে মারধরের বিষয়ে, দৌলতপুর উপজেলার একজন প্রবীন গণমাধ্যম কর্মী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে এটি কখনই কাম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া উচিৎ।
এঘটনায় দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হুদা জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অভিযুক্ত খালিদ হাসান আর্জু
মন্তব্য